ফেনীর রামপুরে দত্তক মেয়েকে নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় দত্তক মা-বাবাকে আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) আটক করেছে র্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের সদস্যরা।
র্যাব জানায়, পরপর চারটি ছেলে সন্তান হলেও ফেনী জেলার সদর থানাধীন রামপুরের জামাল উদ্দীন(৪৫) ও নাজমা বেগম(৪০) দম্পতির মনে কন্যা সন্তানের বাসনা প্রতিবেশিরা জানতো।
অন্যদিকে স্বামী পরিত্যক্তা অসহায় এক মা তার কন্যা সন্তানকে নিয়ে সমস্যায় পড়ে যায়।
বিষয়টি জামাল উদ্দীন-নাজমা বেগম দম্পতির কানে এলে ৫/৬ বছর পূর্বে তারা অসহায় মায়ের কাছে থেকে নিজেদের সন্তানের মত লালন পালন করার কথা বলে কন্যা সন্তানটিকে দত্তক নিয়ে আসে।
পরবর্তীতে দত্তক মেয়েটির সাথে তারা বাসার কাজের মেয়ের মতো আচরণ শুরু করে। শিশুটিকে থাকতে দেয়া হতো বারান্দার ছোট্ট অপরিচ্ছন্ন ঝুপরি ঘরে। তাকে দিয়ে ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া, আসবাবপত্র পরিষ্কার করানো ইত্যাদি সব কাজ করানো হতো।
প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাড়িতে থাকা মুরগীর খামারের অধিকাংশ কাজ দত্তক মেয়েকে দিয়ে করানো হতো। এগারো বছরের একজন শিশুকে দিয়ে এ সব কাজ করিয়েও জামাল উদ্দীন-নাজমা বেগম দম্পতি সন্তুষ্ট হতে পারেনি। কোন কাজে সামান্য ভুল হলেই নেমে আসতো নির্মম নির্যাতন।
নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় কাজে ভুলের জন্য জামাল উদ্দীন-নাজমা বেগম দম্পতি গতকাল বুধবার দিবাগত রাতেও এগারো বছরের দত্তক মেয়ে শিশুটির উপর নির্মম নির্যাতন চালায়। এতে মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। মারধরে জীবন নাশের আশংকা থাকায় দায় এড়াতে জামাল উদ্দীন-নাজমা বেগম দম্পতি আহত শিশুটিকে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে।
এই অমানবিক বিষয়টি র্যাব-৭ এর নজরে এলে আজ ৯ জুলাই বেলা এক ঘটিকায় গুরুতর আহত মেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে র্যাব-৭ এর সহায়তায় ফেনী সমাজসেবা মেডিকেল টিম ফেনী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে এবং শিশুটি বর্তমানে সমাজসেবা অধিদপ্তর, ফেনীর তত্ত্বাবধানে আছে।
এগারো বছরের শিশুকে নির্মম নির্যাতনের জন্য জামাল উদ্দীন(৪৫) এবং নাজমা বেগম(৪০) দম্পতিকে র্যাব-৭ আটক করে এবং শিশুটিকে নির্যাতনের বিষয়ে জানার জন্য জামাল উদ্দীন-নাজমা বেগম দম্পতিকে জিজ্ঞাসাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জামাল উদ্দীন-নাজমা বেগম দম্পতি মেয়ে শিশুটির উপর নিয়মিত নির্যাতনের কথা স্বীকার করে বলে নিশ্চিত করেছে র্যাব।
২৪ ঘণ্টা/এম আর
Leave a Reply