চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বোনের মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে পুলিশের এস আই রায়হান এজাহার মিয়া নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্ত্রী ও শ্বাশুড়ি।
নিহত যুবকের নাম এজাহার মিয়া (২৬)। সে ভাটিয়ারী ৪নং ওয়ার্ডের বালুর রাস্তা এলাকার মফিজুর রহমানের ছেলে বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলা ভাটিয়ারী কলেজ রোড এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
বর্তমানে নিহত যুবকের লাশ ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাখা হয়েছে। এসময় স্বজনদের আহাজারীতে পুরো এলাকাতে শুরু হয় শোকের মাতম।
জানা য়ায়, গত ১৩ অক্টোবর রাত তিনটার সময় ভাটিয়ারী কলেজ পাড়া এলাকার শারমিন আক্তার নামের এক মহিলার দ্বিতীয় তলা ঘর থেকে একটি মোবাইল চুরি হয়। মোবাইল চুরির সন্দেহে এজাহার মিয়াকে আটক করে স্থানীয় এলাকাবাসী। পরদিন স্থানীয় ইউপি পরিষদে শালিশের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা হয়ে যায়। আরো খবর : যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
এদিকে গতকাল সোমবার রাতে ভাটিয়ারী কলেজপাড়া এলাকায় বসবাসকারী ইকবাল পারভেজ রায়হান নামের পুলিশের এক এসআই তার বোনের মোবাইল চুরির অভিযোগ এজাহার মিয়াকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করতে থাকে। এসময় ঘটনাস্থলে এজাহার মিয়ার শ্বাশুড়ীও উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে এজাহার মিয়ার শ্বাশুড়ি ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, এসআই রায়হান মোবাইল চুরি করেছে এমন একটি অভিযোগে আমার মেয়ের জামাইকে ডেকে নিয়ে আমার সামনেই সারারাত অমানুষিক নির্যাতন করে। সকালে এজাহার মিয়াকে অর্ধ মৃত অবস্থায় একটি রিক্সায় করে এজাহার মিয়ার বাড়ির পাশে রেখে চলে যায়। এরপর আমি তাকে স্থানীয় বিএসবিএ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায়।
এজাহার মিয়ার স্ত্রী পপি আক্তার ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, আমার স্বামীকে অন্যায়ভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে, সে যদি অপরাধী হয়ে থাকে তাহলে তাকে পুলিশের কাছে দিতে পারতো।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এএসপি (সীতাকুণ্ড সার্কেল) শম্পা রানী সাহা।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শামীম শেখ ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে এমন সংবাদে ভাটিয়ারী ইউপি পরিষদে গিয়ে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করি। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লাশটি মর্গে প্রেরণ করেছি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাটিয়ারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নাজিম উদ্দিন বলেন- মোবাইল চুরির অভিযোগে এক যুবকে পিটুনী দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছে একজন পুলিশ সদস্যসহ কয়েকজন মিলে যুবকটিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তবে ওই পুলিশ সদস্য সীতাকুণ্ড থানার কেউ নয় জানিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন।
জানা যায়, অভিযুক্ত এসআই রায়হান খাগড়াছড়ি থানায় কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে পুলিশ লাইনে আছেন বলে জানান তার বোন শারমিন।
Leave a Reply