করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রামে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্টের উদ্বোধন

সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট সংযোজনসহ হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলার আওতায় আসলো নগরীর হালিশহরের প্রিন্স অব চিটাগং কমিউনিটি সেন্টারে অবস্থিত করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রাম।

করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ থাকা রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে বেসরকারী পর্যায়ে দেশের সর্বপ্রথম একশো শয্যার এই আইসোলেশন সেন্টারটিতে রোববার বিকালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্টের উদ্বোধন করা হয়েছে।

এখন থেকে এখানে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা মেশিনের মাধ্যমে তীব্র উপসর্গে ভূগতে থাকা করোনা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা হবে।

রোববার এই করোনা আইসোলেশন সেন্টারে চট্টগ্রামে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট এবং হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলার উদ্ভোধন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির।

এসময় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এএনএম মিনহাজুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রতিদিনের উপদেষ্টা সম্পাদক আয়ান শর্মা।

উদ্বোধনী অনু্ষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসার যে হাহাকার ছিল তা আমরা অতিক্রম করতে পেরেছি। বিভাগীয় ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সুষ্ঠ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রাম যেভাবে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে তাতে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগের হাত অনেক শক্তিশালী হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রামে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং সক্ষমতা অর্জনে হালিশহরের করোনা আইসোলেশন সেন্টারটি বিশাল ভূমিকা রাখছে। চট্টগ্রামের করোনা রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। এই আইসোলেশন সেন্টার থেকে বিগত একমাসে প্রচুর রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়াটা আমাদের আপনাদের সবার জন্য বিশাল অর্জন।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এএনএম মিনহাজুর রহমান বলেন, এই আইসোলেশন সেন্টার থেকে কোন রোগীকে এখনো ফিরিয়ে দেয়া হয়নি। যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে করোনা আইসোলেশন সেন্টারটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা অনেকটা পূর্ন হয়েছে। এখানে বিনামূল্যে করোনা রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি দামী ঔষধপত্র এবং খাবার বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। আজ থেকে ম্যানিফোল্ড অক্সিজেন ডেলিভারি সিস্টেম নিয়ন্ত্রিত সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন চালু হওয়াতে হাই ফ্লো ছাড়াও প্রতিজন রোগীকেই ১৫ লিটার/ মিনিট অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে এ সেন্টারটিতে। এছাড়াও মারাত্বক উপসর্গে ভোগা রোগীদের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি হাইফ্লো নেজাল ক্যানোলার মাধ্যমে প্রতি মিনিটে ৭০ থেকে ৮০ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ করা যাবে।

চট্টগ্রাম প্রতিদিনের উপদেষ্টা সম্পাদক ও প্রকাশক সাংবাদিক আয়ান শর্মা বলেন, এই আইসোলেসন সেন্টার পরিচালনায় যারা জড়িত আছেন তারা সবাই তরুন। সমাজের বিত্তশালী শ্রেনীর মানুষ না হয়েও তারা চট্টগ্রামের মানুষের চিকিৎসা সেবায় যেভাবে এগিয়ে এসেছে তা চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রামবাসীর জন্য একটা সৌভাগ্যের বিষয়।

করোনা আইসোলেসন সেন্টার চট্টগ্রামের প্রধান উদ্যোক্তা সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র এ্যাড. জিনাত সোহানা চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়ক নুরুল আজিম রনি। প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের মধ্যে নাজিম উদ্দিন শিমুল, গোলাম ছামদানি জনি, জাওইদ চৌধুরী, নুরুজ্জামান, সাদ শাহরিয়ার উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকমন্ডলীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা. হাসিবুল হাছান, ডা. সাদ্দাম হোসেন, ডা. মো. আছাদুজ্জামান, ডা. তৃষিতা দত্ত, ডা. নাসরিন পারভীন।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কামরুল হাসান চৌধুরী ( সুমন), মিজানুর রহমান মিজান, শাহাজাদা চৌধুরী, ঐশিক পাল জিতু, শিহাব চৌধুরী।

উল্লেখ্য করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রামে রবিবার (১৯ জুলাই) দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ২৩০ জন করোনা আক্রান্ত ও করোনা উপসর্গে থাকা রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেছেন। বর্তমানে আরো ৪১ জন করোনা পজেটিভ রোগী এই প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে।

২৪ ঘণ্টা/এম আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *