অ আ আবীর আকাশ,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে জোয়ারের পানিতে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে উত্তর চরবংশী ও চরআবাবিল ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রামে মাছের ঘেরসহ ৫শ’ ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। মাছের ঘের তলিয়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন স্থানীয়রা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখনও পানিবন্দি।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মেঘনা নদী সংলগ্ন হাজিমারা, আলতাফ মাষ্টার মাছ ঘাট, হায়দরগন্জ, চরভৈরবি এলাকা, হাজিমারা ও চরজালিয়ার চিত্র।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অভিভাবকের মধ্যে হাসিম মাঝি, আইউব আলী, নূর আলম, আউয়াল, সোহেল, আলী আহমেদসহ অনেকে জানান, চরভৈরবি থেকে হাজিমারা বেড়িবাধেঁর বাইরে প্রায় ৫শ’ পরিবার ২৫ বছর ধরে বসবাস করছেন। তারা সবাই জেলে ও দিনমজুর হওয়ায় এখানে বসবাসের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নিরাপত্তার জন্য শক্তিশালি সরকারিভাবে ভেরিবাঁধ নির্মাণ করা হয়।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জোয়ারের পানিতে দীর্ঘদিনের পুরোনো বাঁধের নদীর পশ্চিম পাড় এলাকা প্লাবিত হয়। দুপুরে লোকজন ঘুমিয়ে থাকায় হঠাৎ করে প্লাবিত হওয়ায় তারা ছুটাছুটি করে নিরাপদে আশ্রয় নিলেও ঘরের ভেতরের কোনো মালামাল সরাতে পারেনি। একটি প্রাথমিক স্কুলও ডুবে যায়।
তাছাড়া কয়েকজনের বাড়ির সামনে দিয়ে ঘরবাড়ি নদীতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে, শতাধিক হাঁস মুরগিও মারা গেছে। অনেকের মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মাছের ঘের মালিক মুফতি আলহাজ্ব তাহের ইজ্জুদ্দীন জাবেরী জানান, মেঘনার অতিরিক্ত জোয়ারে ছোট-বড় অর্ধ শতাধিক মাছের ঘের তলিয়ে বিভিন্ন ধরনের মাছ ভেসে গেছে। তারা দাবি করেন ২০টি ঘের তলিয়ে মালিকদের ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ ঘটনায় জানার পরও রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরীন চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ, চরআবাবিল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহীদ উল্লাহ বিএসসি ও উত্তর-চরবংশী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ হোসেন এ রিপোট লেখা পর্যন্ত প্লাবিত অঞ্চল সরজমিন পরিদর্শন করেন নি।
চরআবাবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদ উল্লাহ বিএসসি বলেন, মেঘনা নদীর জোয়ারে সবার ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। কারও ঘরে চুলা জ্বালানোর মতো অবস্থা নেই। অনেকে অর্ধাহারে অনাহারে আছেন। প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
রায়পুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। শনিবার সকালে-আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবো। পরে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
রায়পুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) এসও ইব্রাহিম বলেন, স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে মেঘনার পানি ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। দুই দিনের মধ্যে কমে যাবে।
২৪ ঞণ্টা/এম আর
Leave a Reply