নগরীর পরিবেশ দূষণ রোধে পরিবেশের হস্তক্ষেপ চাইলেন সুজন

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম নগরীর পরিবেশ সুরক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

তিনি আজ বৃহস্পতিবার সকালে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পরিচালকের কাছে নগরীর পরিবেশ সংরক্ষণে জোরদার কার্যক্রম চালাতে পত্র প্রেরণ করেছেন।

পত্রে প্রশাসক নগরীতে ক্রমাগত পুকুর জলাশয় ভারট হওয়া, ফিটনেসবিহীন গাড়ী চলাচল ও এর কালো ধোঁয়া নির্গতের মাধ্যমে বায়ু দূষণ আবাসিক এলাকায় ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প-কারখানা ও কন্টেইনার ইয়ার্ড গড়ে উঠা শিল্প কারখানাগুলোর ইটিপি না থাকা, থাকলেও তা ব্যবহার বন্ধ রাখায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, ৬০ লাখ অধিবাসীর অধ্যুষিত চট্টগ্রাম নগরী বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গুরুত্বপূর্ণ শহর। অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে এই নগরীর পরিবেশ এখন বিপর্যয়ের মুখে। নগরীতে এখন কেউ কোন কিছুর তোয়াক্কা করছেনা। ইচ্ছামত পুকুর জলাশয় ভরাটের পাশাপাশি, ফিটনেস বিহীন গাড়ীর কালো ধোঁয়ায় দুর্ঘটনার পাশাপাশি জনবীজন আজ হুমকির মুখে। অপরদিকে শিল্প-কারখানার অপরিশোধিত বর্জ্যরে কারণে নদী-খাল এখন দূষণের কবলে। ফলে জীব বৈচিত্র ধ্বংস ও ক্রমাগত মাছের উৎপাদন কমছে। এতে পাহাড়-নদী-সমুদ্রে ঘেরা এই চট্টগ্রাম নগরীর অধিবাসীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি জীবিকা হারিয়ে উদ্বাস্ততে পরিণত হচ্ছে। এমতাবস্থায় চট্টগ্রাম নগরীকে পরিচ্ছন্ন মানবিক শহরে পরিণত করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের জরুরী ভিত্তিতে জোর দার কার্যক্রম চালানো উচিত বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

প্রশাসক এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর কোন পদক্ষেপ নেয়া হলে কর্পোরেশন থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানান।

জলবায়ু পরিবর্তনজনীত ঝুঁকি মোকাবেলায়
যথাযথ গবেষণা চাই: সুজন
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে চট্টগ্রম নগরীর উপকুলীয় এলাকার বসবাসকারীদের জীবনযাত্রায় ঝুঁকি বাড়ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে একদিকে যেমন নগরীর নিম্নাঞ্চল জোয়ারের সময় প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি খালগুলোতে লবণাক্ত পানি ঢুকে যাচ্ছে। ফলে কৃষিখাতও হুমকির মুখে পড়েছে। তাই এই ঝুঁকি মোকাবেলায় যথাযথ গবেষণার প্রয়োজন।

তিনি আজ বৃহস্পতিবার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন এর একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাত করতে এলে একথা বলেন।

এসময় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, অতিরিক্তি প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, নগর পরিকল্পনাবিদ এ কে এম রেজাউল করিম, সেভ দ্যা চিলড্রেন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বদানকারী দলনেতা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিয়াজ আহাম্মেদ খান, ড. এমদাদুল ইসলাম, ড. আমীর মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ও ড. খারেজ সাইফুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলীয় শহর অঞ্চল হিসেবে চট্টগ্রাম নগরীর উপর পরিচালিত ঈঙজঠও একটি গবেষণার উদ্যোগ নিয়েছে। এই গবেষণা প্রকল্পটি জাপানি প্রতিষ্ঠান ওসান পলিসি রিচার্চ ইন্সটিটিউট ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন আরো বলেন, ভূ-রাজনৈতিক অবস্থার চট্টগ্রাম একটি গুরুপূর্ণ এলাকা। এ অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন। তিনি প্রকল্পের গবেষণা কার্যক্রম সফলভাবে চালিয়ে যেতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরশেনর পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা করা হবে জানিয়ে বলেন, উপকূলীয় শহরের জন্য জলবায়ু এবং সমুদ্রের ঝুঁকি একিভূত মূল্যায়ন প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আর্থিক এবং রাজনৈতিক ঝুঁকি পরিমাপ করতে অভিজ্ঞতা ও বিশেষজ্ঞ জরিপের তথ্যকে একত্রিত করতে হবে। তবেই নীতিনির্ধারকরা তাদের শহরের জন্য টেকসই নগর পরিকল্পনা বিকাশে সহায়ক কর্মসূচি হাতে নিতে পারবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *