এক ম্যাচ হাতে রেখেই বাংলদেশের সিরিজ জয়

মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। মিরাজের ৪ উইকেট শিকারের দিনে ১৪৮ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ৭ উইকেটের বড় জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন তামিম ইকবাল।

মিরপুরে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদ। শুরুতেই সফরকারীদের চেপে ধরে বাংলাদেশি বোলাররা। মুস্তাফিজুর রহমানের হাত ধরে আসে প্রথম উইকেট। মেহেদী হাসান মিরাজের তালুবন্দী হয়ে ফিরে যান সুনীল অ্যামব্রিস। ১০ রানে প্রথম উইকেট হারায় ক্যারিবিয়ানরা। প্রথম ১০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ উইকেট হারিয়ে কেবল ২২ রান সংগ্রহ করে।

জসুয়া ডি সিলভাকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কিওর্ন অটলি, কিন্তু দাঁড়াতে পারেননি। তাদের ২৬ রানের জুটি ভাঙেন মিরাজ। একই ওভারে দুইজনকেই সাজঘরের পথ দেখান। অটলি (২৪) ফেরেন তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে এবং বোল্ড হন জসুয়া (৫)। অপরপ্রান্তে সাকিব আল হাসান এসেই বোল্ড করেন অ্যান্দ্রে ম্যাকার্থিকে। ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

২ রান তুলতেই আবার রান আউটের ফাঁদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগের ম্যাচে সফরকারীদের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক কাইল মেয়ার্স ০ রানে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্তর রান আউটে কাটা পড়ে। ৪১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ষষ্ঠ উইকেটে এনক্রুমাহ বোনার ও জেসন মোহাম্মদের মধ্যে ২৬ রানের জুটি গড়ে ওঠে। জেসনকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে এই জুটি ভাঙেন সাকিব। পরের ওভারেই এক দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোনারকে বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। ৭১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে শতরানের নিচেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কার পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

সেই শঙ্কা থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বাঁচান রোভমান পাওয়েল ও আলজারি জোসেফ। ৩২ রানের জুটি গড়েন তারা। জোসেফকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজুর রহমান। জোসেফের ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান। শেষ উইকেটে আকিল হোসেনকে নিয়ে ২৮ রানের জুটি গড়েন পাওয়েল। পাওয়েলকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অলআউট করেন মিরাজ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন তিনি।

১৪৮ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মিরাজ ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২৫ রানে ৪টি উইকেট শিকার করেন। মুস্তাফিজ ২টি ও সাকিব নেন ২টি উইকেট। হাসান একটি উইকেট পান।

১৪৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে সাবলীল ব্যাটিংয়ে শুরু করেন লিটন দাস ও তামিম ইকবাল। লিটনের দারুণ শুরুর ইনিংসের অপমৃত্যু ঘটে আকিলের এক দুর্দান্ত ডেলিভারিতে, এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন। দৃষ্টিনন্দন ৪টি চারের সাহায্যে ২৪ বলে ২২ রান আসে তার ব্যাট থেকে। নাজমুল হোসেন শান্ত ২৬ বলে ১৭ রান করে বিদায় নেন জেসন মোহাম্মদের শিকার করে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সপ্তম ও ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৮তম অর্ধশতক পূরণ করে পরের বলেই রেইমন রেইফারের শিকার হন তামিম। ৭৫ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার ব্যাট থেকে আসে ৩টি চার ও ১টি ছক্কা। জয় থেকে ৪০ রান দূরে থাকতে সাজঘরে ফিরে যান তামিম। ভেঙে যায় সাকিব-তামিমের ৩২ রানের জুটি।

চতুর্থ উইকেটে সাকিব ও মুশফিকুর রহিম রানের জুটি গড়েন। সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ৫০ বলে ৪৩ রান। তার ইনিংসে ছিল.৪টি চারের মার। মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৮ রানে। তারা গড়েন ৪০ রানের জুটি। বাংলাদেশ পায় ৭ উইকেটের বড় জয়। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে গেল বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪৮/১০ (৪৩.৪ ওভার)
পাওয়েল ৩১, অটলি ২৪, বোনার ২০;
মিরাজ ৪/২৫, মুস্তাফিজ ২/১৫, সাকিব ২/৩০, হাসান ১/৫৪।

বাংলাদেশ ১৪৯/৩ ( ৩৩.২ ওভার)
তামিম ৫০, সাকিব ৪৩*, লিটন ২২, শান্ত ১৭,
রেইফার ১/১৮, জেসন ১/২৯, আকিল ১/৪৪।

বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *