নবনির্বাচিত চসিক মেয়র নগরকে সন্ত্রাস,জলাবদ্ধতামুক্ত পরিচ্ছন্ন রূপে সাজাবেন এটাই প্রত্যাশা : শিক্ষা উপমন্ত্রী

২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ : শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, নগরকে সুন্দর করতে নাগরিকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। নয়তো নবনির্বাচিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সফল হতে পারবেন না। তিনি নবনির্বাচিত মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীকে সৃষ্টিশীল রাজনৈতিক কর্মী উল্লেখ করে সফলতা কামনার পাশাপাশি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তাঁর মধ্যে কর্মনিষ্ঠা প্রত্যাশা করেন।

নওফেল দায়িত্ব গ্রহনের পূর্বে চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনদের পরামর্শ মতামত নিতে সুধী সমাবেশ ডাকায় নতুন মেয়রকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। নবনির্বাচিত মেয়র প্রিয় এই নগরকে সন্ত্রাস, জলাবদ্ধতামুক্ত পরিচ্ছন্ন রূপে সাজাবেন এটাই প্রত্যাশা করি।

তিনি আজ সোমবার সকালে নগরীর ইনিঞ্জনিয়ার্স ইনস্টিটিউাশন হলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরীর দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের সরকার দলীয় হুইপ শামসুল হক চৌধুরী এমপি, চন্দনাইশ সাতকানিয়া (আংশিক) আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও (আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দীন আহম্মেদ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সদ্য বিদায়ী প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, চসিকের প্রধান নির্বাহী কাজী মুহাম্মদ মোজম্মেল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.আনোয়ারুল আজিম আরিফ, ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ ছালাম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ডা. শেখ শফিউল আজম, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রে সভাপতি প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের মধ্যে সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুন, চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রদীপ চক্রবর্ত্তী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর ভাইস চ্যান্সেলর ড. রফিকুল আলম, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন বাবুল, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, মুক্তিযোদ্ধা মহানগর কমান্ডার মোজাফফর আহাম্মেদ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা এভভোকেট সুনীল সরকার, বদিউল আলম, শ্রমিক নেতা শফর আলী, শেখ মোহাম্মদ ইসহাক, শফিক আদনান, শফিকুল ইসলাম ফারুক, আব্দুল আহাদ, মোহাম্মদ হোসেন, আবু তাহের, সৈয়দ হাসান মাহমুদ চৌধুরী শমসের, বখতিয়ার উদ্দিন খান, আবুল মনছুর, ফিরোজ আহাম্মেদ, জাহাঙ্গীর চৌধুরী সিএনসি, মোহাম্মদ আবু তাহের।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুহাম্মদ মফিদুল আলম, চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহম্মেদ, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাসেম, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন অর্থ বিত্ত নয়, আমার কাছে মুখ্য বিষয় হলো জনগণ ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা। জীবনে কখনো আদর্শচ্যুত হয়ে অনৈতিক পথে পা বাড়ায়নি। মেয়রের চেয়ারে বসেও কোন দুর্নীতি ও অসততার আশ্রয় নেয়া আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। চট্টগ্রামকে নিয়ে আমার স্বপ্নের কথা আমি নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করেছি। সেই অনুসারে সবার বুদ্ধি পরামর্শকে বিবেচনায় নিয়ে নগরীর সব সেবাসংস্থার মধ্যে সমন্বয় করে নগারিকসেবা কার্যক্রম চলমান রাখবো।

তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিকট তাঁকে মনোনয়ন দেয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমি চেষ্টা করবো চট্টগ্রামকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রত্যাশা পূরণের। মো. রেজাউল করিম চৌধুরী নির্বাচিত মেয়রের নির্বাহী ক্ষমতা থাকা উচিত বলেও মন্তব্য করে সকল সেবা সংস্থাকে চট্টগ্রামের উন্নয়নে সমন্বয়ের মাধ্যমে জবাবদিহীতার আওতায় আনার ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, মেয়র নির্বাচিত হয়েছি মানে চট্টগ্রাম শুধু মেয়রের নয়। প্রিয় এই চট্টগ্রাম নগরী সকল চট্টগ্রামবাসীর। নগরবাসীর প্রত্যাশা ও প্রধানমন্ত্রীর আস্থা বিশ্বাসের সেই মূল্য আমি নাগরিকসেবা দিয়ে পূরণ করতে চাই।

জাতীয় সংসদের হুইপ এম সামশুল হক নতুন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীকে সময়সূচী নির্ধারণ করে জনগণ তথা নগরবাসীকে সময় দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি চট্টগ্রামের স্থানীয় সংসদদের ডেকে মাঝে-মাঝে চা চক্রের আয়োজনের পাশাপাশি পরামর্শ নিতে বলেন। শামসুল হক বলেন, নতুন মেয়র বুদ্ধিমান ও কৌশলী। তিনি সফল হবেন এটাই প্রত্যাশা আমাদের। তিনি মহিলা কাউন্সিলরদেরও উন্নয়ন কাজের সাথে যুক্ত করবেন এটা আশা রাখি।

সংসদ সদ্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, নতুন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ত্যাগী রাজনীতিক। আমার প্রত্যাশা চট্টগ্রামের স্বার্থে ও উন্নয়নের তাগিদে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যদের মাঝে মাঝে ডেকে আলাপ-পরামর্শ করবেন। তিনি মহেশ খাল, চাক্তাই খাল খননের পর এরই দুই খালে ওয়াটারবাস চালু করতে নতুন মেয়রকে পরামর্শ দেন। এতে নগরীর সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পাবে বলে উল্লেখ করেন এমপি নজরুল।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃদপিণ্ড। তাই চট্টগ্রামকে নিয়ে ভাবতে হবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য মেয়রের ভূমিকা আছে। তাই নতুন মেয়রকে চট্টগ্রাম নগরীর স্বার্থে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। মেয়রকে তাঁর সমস্যাগুলো সবার সাথে শেয়ার করতে হবে। মেয়র ডাকলে সব সেবাসংস্থা যাতে আসেন এর নিশ্চয়তা চাই।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে দুধেল গাভী। চট্টগ্রাম দুধ দেয়, বাংলাদেশ তা খায়। তিনি বলেন, আজকে অনুষ্ঠানের আলোচকরা এখানে নগর সরকারের কথা বলেছেন। এই প্রস্তাব আমি ৩০ বছর পূর্বে দিয়েছিলাম। তখন কর্পোরেশনে কাউন্সিলর ছিলো তিন ধরনের। নির্বাচিত, অফিসিয়াল ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর। তখন অফিসিয়াল কাউন্সিলররা অর্থ্যাৎ নগরীর সেবাসংস্থার প্রধানদের চসিকের সাধারণ সভায় আসা লাগতো। এখন কেন আসেন না! তাদের আসাটা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ কেন করা হবে? এর সুরাহা হওয়া চাই। ঢাকায় পৌর করের হার ১৪% হলে চট্টগ্রামের পৌরকর ১৭% আদায় কেন হবে এর মিমাংসা হওয়া উচিত। তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সম্মান মানে চট্টগ্রামের সম্মান উল্লেখ করে নগরীর স্বার্থে নবনির্বাচিত মেয়রের পদ মর্যাদা পূর্নমন্ত্রীর সম ও কাউন্সিলরদের পদমর্যাদা উপ-সচিবের সম করা উচিত বলে উল্লেখ করেন। যে আইন পাশ হয়েছে তিনি মেয়র থাকাকালে বলেন, নবনির্বাচিত মেয়র ও তাঁর নির্বাচিত পর্ষদকে স্মরণ করিয়ে দেন।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সদ্য বিদায়ী প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আমি দায়িত্ব পেয়ে ৬ মাস চেষ্টা করেছি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে ঢেলে সাজাতে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনুধাবন করলাম চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাছে খালি প্রত্যাশা করলে হবে না। কর্পোরেশনকে সক্রিয় করতে গেলে সরকারিভাবে চসিকের কর্তৃত্ব আইন করে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি বলেন রেজাউল করিম ভাই পরিক্ষীত। আমার প্রত্যাশা তিনি পৌরকর বাড়িয়ে কর্পোরেশনের আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন না। বিদায়ী প্রশাসক সুজন বলেন নগরীর অধিবাসীদের মধ্যে মাত্র ২০ থেকে ৩০ শতাংশ মানুষ এই শহরের উপকারভোগী। বাকি ৮০ থেকে ৭০ শতাংশ সুবিধা নিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর, রেলওয়ে, কাস্টমস, ওয়াসাসহ অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক বীমা স্টীল রিরোলিং মিলসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন নগরে ৩০ হাজার ভারি যানবাহন চলে। এ শহরে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা হয় মূলত বন্দর কাস্টমস কেন্দ্রিক। অথচ শহরের সড়কগুলো ভারি যানবাহন লরি চলাচলের উপযোগী করে তৈরি করা যাচ্ছে না। কারণ অর্থের অভাব। তাই নগরবাসীর উপর পৌরকরের বোঝা চাপিয়ে নয়, নগরীর অবকাঠামোগত উন্নয়নে সরকারি বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও বেসরাকরি প্রতিষ্ঠান থেকে ১ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। এই টাকাতেই চট্টগ্রাম অপরূপ সুন্দর নগরে পরিণত হবে।

বোয়ালখালী আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি ১৯৭৩ সনে এই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কমিশনার ছিলাম। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে বলবো, নতুন মেয়র স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন। এটাই আশা রাখি। তিনি বিদায়ী প্রশাসকের সাথে নতুন মেয়রের ঘনিষ্ঠ সুসম্পর্ক আছে উল্লেখ করে প্রয়োজনে বিদায়ী প্রশাসকের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নেয়ার আহ্বান জানান মেয়রকে। মোছলেম উদ্দীন কাউন্সিলরদেরও নগরীর উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা দেখবেন বলে প্রত্যাশা করেন।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী নতুন মেয়রকে তাঁর ঘরের দুয়ার সর্ব সাধারনের জন্য উম্মুক্ত রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন আপনি জনগণের ও নগবাসীর মেয়র।

কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেলকে স্বাগত বক্তব্যে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মোট ২৮ ধরনের নাগরিক সেবা প্রদান করে থাকে। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সেবা প্রদান করে চসিক। বর্তমানে নগরে সরকারের ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান আছে জানিয়ে কর্পোরেশনের সার্বিক কাজে নতুন মেয়রের পাশপাশি কাউন্সিলরগণের ইতিবাচক সহযোগিতা প্রত্যশা করেন। তিনি বলেন আইন অনুযায়ী কাউন্সিলররা পাবলিক সার্ভেন্ট। কাজেই তা বিবেচনা করে নাগরিক সেবা দিবেন এটা প্রত্যাশা করি।

শুরুতে পবিত্র কোরান তেলাওয়াত, গীতা পাঠ ও বাইবেল থেকে পাঠের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *