চমেক’র ১৫৬ চিকিৎসককে করোনা ইউনিটে গণ-বদলি, নেতারা নাখোশ

করোনার ভয়াবহতার ধাক্কা সামলাতে সরকার সারা দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসকদের জেলা ও উপজেলা হাসপাতাগুলোর করোনা ইউনিটে বদলি করেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপতাল থেকেও ১৫৬ জন চিকিৎসককে চট্টগ্রামের বিভিন্ন করোনা ইউনিটে বদলি করেছে। শুধু চট্টগ্রামের করোনা ইউনিটে নয়, ফেনী, খাগড়াছড়ি ও ফটিকছড়িতেও বদলি করা হয়েছে চমেক থেকে।

করেনাকালীন সময়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চমেক’র শিক্ষকতায় নিয়োজিত এসব চিকিসৎকদের বিভিন্ন করোনা ইউনিটে বদলি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গাইনি, দন্ত, নাক কান ও ব্লাড সঞ্চালন ইউনিটের চিকিৎসকও রয়েছেন। সরকার মেডিকেল কলেজ বন্ধ থাকার কারণে এসব চিকিৎসককে করোনা ইউনিটে বদলি করলেও এই গণ-বদলিকে ‘ভালো চোখে’ দেখছেন না চিকিৎসকদের সংগঠনগুলোর নেতারা।

সোমবার (৫ জুলাই) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপ-সচিব জাকিয়া পারভীন স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ গণ-বদলি করা হয়। বদলি হওয়া চিকিৎসকদের আগামী ৭ জুলাইয়ের মধ্যে পদায়নকৃত কর্মস্থলে যোগ না দিলে পরের দিন থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ হিসেবে গণ্য হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়।

আদেশ অনুযায়ী, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ৬০ জনকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে, ৩০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ১৮ জনকে খাগড়াছড়িতে, ২৪ জনকে ফেনীতে, ১৬ জনকে বিআইডিআইডিতে, ৮ জনকে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে।

শুধু চট্টগ্রামের তিন বিশেষায়িত তিনটি করোনা ইউনিটেই চমেক থেকে বদলি করা হয় ১০৬ জন চিকিৎসককে। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ৬০ জনকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে, চমেক থেকে ৩০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও চমেক থেকে ১৬ জনকে বিআইডিআইডিতে বদলি করা হয়।

মন্ত্রণালয় করোনা মোকাবেলায় এসব চিকিৎসকদের বদলির কথা বললেও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ.ম.ম মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘এই গণ-বদলি চিকিৎসকদের মাঝে অস্থিরতা তৈরি করবে। করোনাকালে এখানকার চিকিৎসকরা কোভিডের পাশাপাশি অন্য রোগের চিকিৎসাও দিচ্ছেন। শুধু মাত্র চমেকে হাসপাতালেই অন্য সব ওয়ার্ডে ২ হাজারের বেশি রোগী রয়েছে। তারাও এ বদলিতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।’

একই কথা বলেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘এটা একটি অপরিকল্পিত বদলি। স্বাচিপ, বিএমএ সবার সাথে পরামর্শ না করে মিনিস্ট্র নিজেদের ইচ্ছামত মত হুটহাট বদলি করে দিল। এতে করে পুরো স্বাস্থ্য সেবার উপর প্রভাব পড়বে। কোভিড ছাড়াও অন্য রোগীদেরও চিকিৎসা দিতে হয় ডাক্তারদের। এখন মিনিস্ট্রি কি বুঝে এমন আদেশ করলো, আমার বুঝে আসছে না।’

২৪ ঘণ্টা/রানা

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *