এপেক্স ক্লাব: ফাতেমা পল্লীতে গ্রীন সিটি ও পতেঙ্গার শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ

সেবা, সু-নাগরিকত্ব ও সৌহার্দ্য এ তিনটি লক্ষকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে এপেক্স বাংলাদেশের অন্তর্গত ১৩৬টি ক্লাব।

সেই ধারাবাহিকতায় এপেক্স বাংলাদেশের জেলা-০৩ এর অন্তর্গত দুটি ক্লাব এপেক্স ক্লাব অফ গ্রীন সিটি এবং এপেক্স ক্লাব পতেঙ্গার যৌথ উদ্যোগে মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ ধানাধীন তেমুহনী মরাদপুর ফাতেমা পল্লী শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধীন ফাতেমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ফাতেমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ২৫১ জন শিক্ষার্থীর মাঝে খাতা,কলম,পেন্সিল,রাবার,কাটার ও চকলেট বিতরণ করা হয়।

শিক্ষা সামগ্রী বিতরণকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এপেক্স বাংলাদেশের জাতীয় সেবা পরিচালক(এনএসডি) এপেক্সিয়ান হাজী ইলিয়াছ জসিম।

বিশেষ অতিথি ছিলেন এপেক্স বাংলাদেশের অন্তর্গত জেলা-০৩ এর ডিজি এপেক্সিয়ান এ্যাড. এরশাদুর রহমান রিটু।

এ সময় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি,সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন।

ইলিয়াছ জসিম বলেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। একটি জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হচ্ছে শিশুরা। আজ যারা শিশু তাদেরকে যদি আমরা সযত্নে, সুস্থ-সুন্দর পরিবেশে বিকাশ লাভের সুযোগ করে দিই, তাহলে ভবিষতে তারা হবে এদেশের এক একজন আদর্শ, কর্মক্ষম, সুযোগ্য নাগরিক। এক সময় তারা দেশের প্রতিটি সেক্টর-এ অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়ে এ দেশকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবে।

এনএসডি ইলিয়াছ জসিম

জসিম বলেন, শিক্ষার্থীরা একদিন জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে এই অঞ্চলকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। এবং অন্যান্য এলাকার সাথে তাল মিলিয়ে উন্নয়নের পথের প্রতীক হবে। আমাদের সকলেরই উচিত একে অপরের প্রতি সদয় হওয়া এবং সহযোগিতা করা।

তিনি বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রধান শিক্ষিকাকে এক হাজার টাকা প্রদান করেন।

এ্যাড. এরশাদুর রহমান বলেন, আজ তোমাদের সবার মাঝে থাকতে পেরে আমি গর্বিত কারণ আমি একজন শিক্ষষকের ছেলে। আমার বাবা তার কর্মজীবন শিক্ষার্থীদের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন।

জিজি-০৩ এ্যাড.এরশাদুর রহমান রিটু

রিটু বলেন, নিজেকে দক্ষ ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলতে হলে স্বপ্ন দেখতে হবে। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে সততা, নিষ্ঠা এবং পরিশ্রম করতে হবে।

তিনি মীরসরাই অঞ্চলে এপেক্স ক্লাব অফ মীরসরাই নামে একটি ক্লাবের যাত্রা শুরু করতে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের কাছে আহ্বান জানান। কেউ এগিয়ে এলে তিনি সর্বাত্মক সহোযোগীতা করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

এপেক্স ক্লাব অফ গ্রীন সিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এপেক্সিয়ান হাজী জাকির হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করে আমরা তাদের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছি। তাদের হাসি আমাদের ভালোবাসা, তাহাদের হাসি আমাদের সব।

ডিজি-০৩ পদপ্রার্থী এপেক্সিয়ান হাজী জাকির হোসেন

তিনি আরো বলেন, ভালোবাসার মানুষটিকে ফুল দিয়ে ভালোবাসা প্রমাণ করার চেয়ে অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের ভালোবাসা আর হাসি উপভোগ করা অনেক মজার।

জাকির বলেন, মানব সভ্যতার ভবিষ্যৎ এখন নির্ভর করছে বিশ্বের সকল প্রান্তের মানুষের এক হয়ে কাজ করার মাঝে। আমরাই সেই প্রজন্ম হতে পারি যারা দরিদ্রতা ও রোগব্যাধি দূর করবে। এবং আমরা সেই সুযোগ তখনই পাবো যখন আমরা সকলে একত্রিত হয়ে কাজ করতে পারব।

উপস্থিত শিক্ষার্থীদের একাংশ

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি,সদস্য এবং প্রধান শিক্ষিকা অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, পতেঙ্গা ক্লাবের অতীত সভাপতি জিল্লুল করিম।

স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন। শিক্ষার্থীরা এপেক্সিয়ানদের স্বাগত জানিয়ে দুটি গান পরিবেশন করেন।

বাড়তি শিক্ষা সামগ্রী প্রধান শিক্ষিকাকে হস্তান্তর

অনুষ্ঠানে এপেক্সিয়ানদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,এপেক্স ক্লাব অফ চিটাগাং মেট্রোপলিটন এর অতীত এপেক্সিয়ান রাশেদ ইবনে ফরিদ চৌধুরী, পতেঙ্গার সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি মীর হোসেন এবং মিজানুর রহমান টিপু।

এপেক্স ক্লাব গ্রীন সিটির এপেক্সিয়ানগণের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং চাটার্ড সভাপতি হাজী গোলাম কবির, হাজী জাকির হোসেন, এসআইএম নাসিম,বাবুল রঞ্জন সাহা,সাইফুল ইসলাম মামুন,মঞ্জুর মোরশেদ রনী,দিলুরা আক্তার,সোহেল প্রমুখ।

একজন শিক্ষার্থী শিক্ষা সামগ্রী গ্রহণ করছেন

অনুষ্ঠানে এপেক্স বাংলাদেশের ২০২০ বর্ষের এনভিপি পদপ্রার্থী ইলিয়াছ জসিম এবং জেলা-০৩ এর ২০২০ বর্ষের ডিজি পদপ্রার্থী জাকির হোসেনের জন্য সবাই দোয়া করেন।

উল্লেখ্য,১৯৩১ খৃষ্টাব্দে অস্ট্রেলিয়ায় এয়েন লেইর্ড,ল্যাংহাম প্রাউড এবং স্যার জন বুকান কেটির হাত ধরে যাত্রা শুরু করে এপেক্স। সুলেমান খানের মাধ্যমে করাচি হয়ে ঢাকায় এপেক্সের সূচনা হয় ১৯৬১ খৃষ্টাব্দে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *