৪৫ টাকায় একটি পেঁয়াজ

গৃহস্থালির রান্নার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য পেঁয়াজের দাম ঘণ্টায় ঘণ্টায় বেড়েই চলেছে। দুদিন আগে যে পেঁয়াজ ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেই পেঁয়াজ এখন ২১০-২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সারা দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। অনেক স্থানে এক রাতেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে ৮০ টাকা। কোথাও কোথাও একটি পেঁয়াজ ৪৫ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে।

আজ দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শনে গিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেছেন এক মাসের মধ্যে পেঁয়াজের দাম কমবে কিন্তু বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।

পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকায় এ নিয়ে আজ সংসদে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সরকারি ও বিরোধী উভয় দলের সংসদ সদস্যরা।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম মাত্র এক রাতের ব্যবধানে ৮০ টাকা বেড়ে গেছে।

বুধবার সন্ধ্যায়ও ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। সেই পেঁয়াজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাজারে প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে! আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ১৯০ টাকা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর, রায়পুরসহ জেলার কয়েকটি কাঁচা বাজার ঘুরে জানা যায়, গত বুধবার পর্যন্ত পাইকারি আড়তগুলোতে দেশি পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার দাম বেড়ে ১৯০ টাকা হয়েছে। সকালে খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি আড়তগুলো থেকে এর রাতে মণ প্রতি ৪০০ টাকা বেশি ধরে কিনে নিয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি করছেন ২০০ থেকে ২১০ টাকায়।

লক্ষ্মীপুরের একাধিক হাটবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিম্ন আয়ের মানুষগুলো এক পিস পেঁয়াজ কিনছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। সেখানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২১০-২২০ টাকায়।

তেমনই একটি মুদি দোকানে ২০০ টাকা কেজি হারে ভারতীয় একটি পেঁয়াজ ওজন করে দেখা যায় তার মূল্য ৪৫ টাকা। এতে ক্ষোভ বিরাজ করছে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে।

এক রাতে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কেউ কেউ ২৫০ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত পেঁয়াজ ক্রয় করছেন। আবার কেউ কেউ মাত্র এক পিস পেঁয়াজ কিনতেও দেখা গেছে।

রায়পুর শহরের রিকশা চালক মনির হোসেন জানান, পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে পৌর শহরের হল রোড থেকে ২০০ টাকা দিয়ে ৪টি পেঁয়াজ কিনেছেন। যার ওজন এক কেজি থেকে একটু কম।

এ সময় আরও একজন শ্রমিক ২২৪ গ্রাম ওজনেরএক পিস পেঁয়াজ৪৫ টাকা দিয়েকিনেছেন বলে তিনি জানান।

এছাড়া যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া বাজারে পেঁয়াজের দাম ঘণ্টায় ঘণ্টায় বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার এক কেজি পেঁয়াজের মূল্য ছিল ১৪০ টাকা, বুধবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮০টাকায়। বৃহস্পতিবার সেই পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ২২০ টাকায়।

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলেছে। মাত্র ২ দিনের ব্যবধানে ১৪০ টাকার পেঁয়াজ এখন ২০০ টাকা। বৃহস্পতিবার চুনারুঘাটের আড়তদাররা পাইকারি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। আর খুচরা বাজারে তা ২০০ টাকা।

ভোলার লালমোহনে পেঁয়াজের কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার লালমোহন বাজার ঘুরে এ দরে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। এতে ক্রেতাসাধারণ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দিন দিন বেড়েই চলেছে দাম।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে। সকাল থেকে বাজারে পেঁয়াজের কেজি ১৮০ টাকা। অথচ গত বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাটহাজারীর খুচরা ও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করা হয় ১১০ টাকা দরে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *