বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে দেশ এমন এক প্রেক্ষাপটে উপনীত হয়েছে যেখানে কোন গণতন্ত্র নেই। সরকসর ৫ জানুয়ারী গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়া এখনো পরিপূর্ণ মুক্তি দেনি। তিনি এখন মারাত্মক অসুস্থ। সংবিধানে যেখানে সবার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে, সেখানে বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা সেবা থেকে বি ত করেছে সরকার।
তিনি আজ বুধবার (৫ জানুয়ারী) ২০২২ ইং বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে কেন্দ্রঘোষিত চট্টগ্রাম মহানগর ও দক্ষিন জেলা বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
পূর্বনির্ধারিত মানববন্ধন কর্মসূচি বিকাল ৩টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তারই আগে ৪১ টি ওয়ার্ড় থেকে মিছিলে প্রেসক্লাব চত্তর কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এরই মাধ্যে পুলিশ নেতাকর্মীদের উপর লাঠি চার্জ করলেও নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ করে মানবন্ধন কর্মসূচি চলতে থাকে। একপর্যায়ে মানববন্ধন কর্মসূচি সমাবেশে পরিণত হয়।
আমীর খসরু বলেন, আমাদেরকে এমন কঠিন প্রেক্ষাপট মোকাবেলা করতে হচ্ছে। সামনের সময়গুলো যে কতো কঠিন হবে তা অনুধাবন করা যায়। তবে এটা শুধু বিএনপির সমস্যা নয়। দেশের মানুষের সমস্যা। দেশের গণতন্ত্র মুক্তির সংগ্রামে বিএনপির নেতৃত্বে জাতীকে এগিয়ে আসতে হবে। ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারী থেকে আজ পর্যন্ত দেশের মানুষ দিনটিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস মনে করে। মন থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চায়, আমরাও দেশের মাবুষের মুক্তির কথা বলতেছি। আজকের এই তার প্রমান। আজকে এই সরকারের বিরোধে ঐক্যবোধ হয়ে কাজ করতে হবে।
আমীর খসরু আরো বলেন, যারা ২০০৮ সালে ভোট চুরি করেছে, যারা ২০১৪ সালে ভোট চুরি করেছে, যারা ২০১৮ সালে ভোট চুরি করেছে, আগামী দিনের নির্বাচনে ভোট চুরির আলোচনা চলছে। এই ভোট চোরদের আলোচনায় কিছু উচ্ছিষ্ট রাজনৈতিক দল ভোটচোরদের থেকে উচ্ছিষ্ট খাবার খাওয়ার জন্য ঘুরঘুর করছে। এই ভোটচোরদের এবার রুখতে হবে, এই ভোটচোরদের দাবিয়ে দিতে হবে বাংলাদেশ।বাংলাদেশকে ফেরত নিতে হবে। বাংলাদেশকে উদ্ধার করতে হবে। বাংলাদেশের আত্নাকে মুক্ত করতে হবে। এই ভোট চোরদের হাত থেকে বাংলাদেকে মুক্ত করতে হবে। এই যে আন্দোলনের গণজোয়ার উঠেছে সে আন্দোলনে ভোট চোররা ভেসে যাবে। কোন অস্তিত্ব থাকবে না। সাবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এদেরকে পরাজিত করতে হবে। আজকে শুধু দেশে নয় বিদেশিদের কাছেও ওরা ধরা পড়েছে। পালানোর জায়গা পাবেনা। আজকে দেশে বিদেশে সবাই পর্যবেক্ষন করছে ভোটচুরির সাথে কারা কারা জড়িত। আজকে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে দেশে বিদেশে, তা অব্যহত রেখে দেশকে মুক্ত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ২০১৪ সালের রকিব উদ্দিন কমিশনার ও ২০১৮ সালে সালের নুরুল হুদা কমিশনারের অধীনে ভোট ডাকাতির নির্বাচন হয়েছিল। তারা সবাই রাস্ট্রপতির সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচিত। কাজেই যারা এই সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছে নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সবাই ভোট ডাকাতির সাথে জড়িত। এই সরকার আরও একটি ভোট ডাকাতির পাঁয়তারা করছে। সুতরাং এই ধরনের কোনো সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন এই দেশের মানুষ মানবেনা। তত্ত¦াবাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এই সরকারের অধীনে ২০১৪ সালে ও ২০১৮ সালে সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে হয়েছিল। সেই নির্বাচন কমিশন গুলো বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছ। এখনো তারা আবারো চিন্তাভাবনা করছে আরও একটি ভোট ডাকাতির ইতিহাস রচনা করতে । এই ধরনের কোন ভোট ডাকাতির নির্বাচন করে, গণতন্ত্র হত্যা করে এই দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না। হতে দেওয়া হবে না। জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষায় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের বিকল্প নেই। ডা. শাহাদাত হোসেন আরো বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা সোচ্চার। পাশাপাশি আইনের শাসন দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে দৃঢ় প্রত্যয়।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেছেন, ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারী একতরফা ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের গণতান্ত্রিত অধিকার হত্যার করে জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসেছে বর্তমান ফ্যাসিবাদ সরকার। আজ দেশে ভোটাধিকার, আইনের শাসন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। ২০১৪ সালের পর সরকার সর্বক্ষেত্রে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। স্বাধীন দেশে এই যেন পারাধীনতার শৃংখল। দেশের প্রতিটি নির্বাচনে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের যৌথ প্রযোজনায় ভোট ডাকাতির মহোৎসব চলছে। দেশের জনগন এই ভোটচোরদের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। আমরা আজ জনগণের গণতন্ত্র মুক্তি ও গণতন্ত্র মা কে মুক্তির জন্য এইখানে এসেছি। অচিরেই দেশে গণতন্ত্র, ভোটাধিার প্রতিষ্ঠিত হবে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির মাধ্যমে জনগণ পরিপূর্ণ মুক্তির স্বাদ পাবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন’র সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর’র পরিচালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন দক্ষিন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, দক্ষিন জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, মহানগর বিএনপির সি.যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মোঃ মিয়া ভোলা, এডঃ আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন কাজী বেলাল উদ্দীন, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, শাহ আলম, ইস্কান্দার মির্জা, আব্দুল মান্নান, সদস্য এরশাদ উল্লাহ, হারুন জামান, কমিশনার মাহবুবুল আলম, ইকবাল চৌধুরী, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, এস এম আবুল ফয়েজ, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল,আবুল হাশেম হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী সিরাজ উল্লাহ, মনজুর আলম চৌধুরী মনজু, কামরুল ইসলাম , মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন দিপ্তী, জেলা বিএনপির সদস্য এডভোকেট ইফতেখার মহসিন,জামাল হোসেন ,লায়ন হেলাল উদ্দিন , মোস্তাফিজুর রহমান,নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলি মুর্তোজা খান, ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরীফুল ইসলাম তুহীন, থানা বিএনপির সভাপতি মোশারফ হোসেন ডেপটি, হাজী হানিফ সওদাগর, সরফরাজ কাদের রাসেল, ডা. নুরুল আফসার, আবদুস সাত্তার সেলিম, মো. সেকান্দর, মোঃ আজম, আবুল্লাহ আল হারুন, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক,আলহাজ্ব জকির হোসেন, সাহাব উদ্দিন, মনির আহমদ চৌধুরী, জসিম উদ্দিন জিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, মঈনউদ্দীন চৌধুরী মাঈনু, নূর হোসেন, আবদুল কাদের জসিম, হাজী বাদশা মিয়া, হাবিবুর রহমানসহ থানা ও ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দ।
Leave a Reply