রাঙ্গুনিয়ায় শীতার্তদের মাঝে এসএসসি ২০০০ ব্যাচ’র কম্বল বিতরণ

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত ৮নং সফরভাটা ইউনিয়নে হতদরিদ্র শীতার্তদের শীতবস্ত্র দিয়েছে এসএসসি ২০০০ ব্যাচ ও এইচএসসি ২০০২ ব্যাচ’র ফেসবুক গ্রুপ ভিত্তিক সংগঠন “আমরাই চট্টলার কিংবদন্তী”।

শনিবার (৮ জানুয়ারি) উপজেলার বড়খোলা মগপারায় আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের এসব দেওয়া হয়।

৮নং সফরভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবুল ইসলাম সরাফী, ইউপি সদস্যবৃন্দ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ বলেন, কনকনে ঠান্ডায় দুর্গম পাহাড়ে বসবাসরত হতদরিদ্র মানুষ শীতের কম্বল পেয়ে মহাখুুশি। হঠাৎ করে সফরভাটায় তিস্তার পাড়ে শীত জেঁকে বসেছে। এখানকার মানুষ অধিকাংশই গরীব।

সাবেক চেয়ারম্যান ধন্যবাদ জানিয়ে গ্রুপের সদস্যদের সফরভাটার অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানান।

গ্রুপের পক্ষে সাদেক এহতেশাম কাশফি বলেন, “শীতের সময় আমরা সবাই কমবেশি শীতের কাপড় বিতরণ করি। সুবিধাজনক স্থানে এই কার্যক্রম না চালিয়ে গ্রুপটি প্রত্যন্ত এলাকায় তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। প্রয়োজনে আরও দুর্গত স্থানে ‘আমরাই চট্টলার কিংবদন্তী’ প্রয়োজনীয় সাহায্য সামগ্রী পৌঁছে দেবে যাতে প্রকৃত অভাবগ্রস্তরা সুবিধাভোগী হতে পারে।”

তিনি জানান, আমরাই চট্টলার কিংবদন্তী এই কম্বল ও মাস্ক সংগ্রহ করেছে গ্রুপের বন্ধুদের অনুদানের অর্থ দিয়ে। গ্রুপের আত্মপ্রকাশের পর হতেই নানা রকম মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এর সদস্য বন্ধুগণ। করোনাভাইরাস মহামারীর শুরু থেকেই নানা কল্যাণমুখী উদ্যোগ নিয়েও কাজ করে যাচ্ছেন তারা।

অনুষ্ঠানে দুই শতাধিক কম্বল ও পাঁচ শতাধিক মাস্ক বিতরণ করা হয়। এতে সার্বিক সহযোগীতা করে স্থানীয় সফরভাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ২০০০ ব্যাচ’র সদস্যবৃন্দ।

মগপাড়ার দুস্থ মানুষ কম্বল পেয়ে নিজেদের অনুভুতি প্রকাশ করেন এভাবেই, ‘এই শীতে একমাত্র সম্বল আপনাদের কম্বল’।

৮০ বছরের বৃদ্ধ মো. ইউসুফ আলী বলেন, ‘আমি ভিক্ষা করি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন গলিতে গলিতে মানুষের কাছ থেকে যা পায় তাই নিয়ে চাল, ডাল কিনে কোনোমতে চলে’।

এই বৃদ্ধের ভাষায়, ‘কি কইয্যূম, ভিক্ষা না করলে খাইয়ূমু কি? একমাত্র ছেলে সে বিয়ে করার পর আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। এখন থাকি আশ্রয়ন প্রকল্প। এই যে শীত যাচ্ছে কেউ একটা কাপড় দেয়নি। আজ এই কম্বলই এবারের শীতের একমাত্র সম্বল’।

তার মতোই আমরা চট্টলার কিংবদন্তীর দেওয়া কম্বল গায়ে জড়িয়ে ক্যজরী মারমা (৭০) বলেন, আমাদের শীত নিবারণে ব্যবস্থা করায় স্রষ্টা তোমাদের মঙ্গল করবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *