কিয়েভে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে রাশিয়া

রাশিয়া ছয় দিন আগে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে গতকাল মঙ্গলবার রাশিয়া ও ইউক্রেন প্রথম বারের মতো বন্দি বিনিময় শুরু করে। তবে এ বন্দি বিনিময়ের দিনেই রুশ বাহিনী ইউক্রেনজুড়ে হামলার তীব্রতা বাড়িয়ে দিলে, সেখানে আরও বিপর্যয় নেমে আসে এবং ধ্বংসের মাত্রা বেড়ে যায়। খবর ভয়েস অব আমেরিকার।

রাশিয়ার হামলায় মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেসামরিক অবকাঠামো, কিয়েভের বিখ্যাত প্রধান টিভি টাওয়ার, ভেঙে পড়ে সেখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা।

ইউক্রেনিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টিভি টাওয়ারে ওই হামলায় পাঁচ জন নিহত হয়েছে। এক টুইট বার্তায়, দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, কয়েকটি ইউক্রেনীয় চ্যানেল কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকবে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ ধরনের সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তুর কাছাকাছি থাকা লোকজনকে সতর্ক করে ওই এলাকা ছেড়ে যেতে বলেছে।

রুশ মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ বলেছেন, ‘আমরা… আক্রমণস্থলের কাছাকাছি বসবাসকারী কিয়েভের বাসিন্দাদের তাঁদের বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

ওয়াশিংটন ডিসি-ভিত্তিক প্রতিরক্ষা থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, সিএনএ’র বিশ্লেষক মাইকেল কফম্যান বলছেন, ‘এখন পর্যন্ত রাশিয়ার অভিযানের দিকে তাকালে মনে হচ্ছে, তারা রসদ ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রচণ্ড সমস্যায় ভুগছে। পুরো প্রচেষ্টাই যেন ভেঙে পড়ছে।’

ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দাবি—তারা এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৮০০ রুশ সেনাকে হত্যা করেছে। গত সোমবার যেসব রুশ সৈন্য আত্মসমর্পণ করেছেন, ইউক্রেন তাঁদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা এবং নগদ অর্থ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি আলোচনা এ সপ্তাহে আবার শুরু হতে যাচ্ছে। তবে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মঙ্গলবার বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো অর্থবহ আলোচনা শুরু হওয়ার আগে রাশিয়াকে অবশ্যই ইউক্রেনের শহরগুলোতে বোমা হামলা বন্ধ করতে হবে। জেলেনস্কি ইউক্রেনে রাশিয়ার বিমান বাহিনীর বোমাবর্ষণ কমাতে ন্যাটো সদস্যদের একটি নো-ফ্লাই জোন আরোপ করারও আহ্বান জানান।

রাশিয়ার সামরিক বাহিনী আরও হতাহতের জন্য প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে। বেলারুশের একজন নার্স ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছেন, ইউক্রেনের সীমান্তের কাছাকাছি আহত রুশ সেনাদের নেওয়ার জন্য বেলারুশের বেসামরিক হাসপাতাল এবং সীমান্ত থেকে আরও কিছুটা দূরের হাসপাতালগুলোতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

রুশ বাহিনী কিয়েভের চারপাশে বাধা পেলেও, দক্ষিণের দিকে তারা ক্রমে অগ্রসর হচ্ছে এবং বন্দরনগর মারিউপোল দখল করার হুমকি দিচ্ছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার একটি ট্যাঙ্ক আক্রমণ প্রতিহত করে দিয়েছে এবং মারিউপোলে ছয় রুশ সেনাকে বন্দি করেছে। শহরের স্থানীয়রা বলছেন, তাঁরা কোনো ইউক্রেনীয় টেলিভিশন চ্যানেল দেখতে পাচ্ছেন না, তাই তাঁরা কেবল রুশ পক্ষের সংবাদ পাচ্ছেন। এ ছাড়া তাদের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রয়েছে বলেও তাঁরা জানিয়েছেন।

এন-কে

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *