সরকার দেশীয় খেলাধুলায় উৎসাহ যোগাচ্ছে:প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে খেলাধুলার উন্নয়নে শহর এলাকার পাশাপাশি তৃণমূল থেকে আরো বেশি মেধা খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই রাজধানী ও শহরের পাশাপাশি তৃণমূল থেকে আরো অধিক সংখ্যক খেলোয়াড় বাছাই করা হোক, যাতে এটি খেলাধুলার ক্ষেত্রে ভাল ফল দেয়।’

প্রধানমন্ত্রী আজ সন্ধ্যায় তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দল ও বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ বালক ফুটবল দলের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দল ও বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ বালক ফুটবল দল যথাক্রমে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ নারীদের আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট ও ওয়েফার সহায়তায় অনূর্ধ্ব-১৬ বালকদের উন্নয়ন ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় তাদের এ সংবর্ধনা দেয়া হয়।

গত ২২ এপ্রিল থেকে ৩ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ নারীদের আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ও লাওসকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। ঘূর্ণিঝড় ফণির কারণে ফাইনাল খেলাটি পরিত্যাক্ত হওয়ায় তাদের যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।

গত ১৬ থেকে ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত চার টিমের গ্রুপ ফাইনাল খেলায় হোস্ট বাংলাদেশ মালদ্বীপকে হারিয়ে ওয়েফার সহায়তায় অনূর্ধ্ব-১৬ বালকদের উন্নয়ন ফুটবল টুর্নামেন্টে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার দেশে খেলাধুলার উন্নয়নে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় এসে আমরা দেশে খেলাধুলার আরো প্রসারে বিশেষ মনোযোগ দেই এবং আমরা খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি করছি। ফলে আমাদের ছেলেমেয়েরা এর প্রতি মনোযোগী হচ্ছে।’

দেশে খেলার মাঠের সংকটের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, খোলা জায়গা পেলেই সবাই ভবন তৈরি করতে চায়। ‘ছেলেমেয়েদের খেলাধুলা অনুশীলনের জন্য কেউ খোলা মাঠ রাখতে চায় না। এটা আমাদের জন্য একটা সমস্যা।’

তিনি বলেন, তবে তাঁর সরকার খেলার মাঠের সমস্যার সমাধান করতে প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করছে। ‘এসব স্টেডিয়ামে কোন গ্যালারি থাকবে না, যাতে সবাই বাইর থেকে খেলা দেখতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিশেষ কোন খেলার জন্য স্টেডিয়াম তৈরি না করতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। ‘স্টেডিয়ামে সব ধরনের খেলাধুলা অনুশীলনের সুযোগ থাকবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার দেশীয় খেলাধুলায় উৎসাহ যোগাচ্ছে। ‘আমরা বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের মতো আন্তঃস্কুল ফুটবল চালু করেছি। এখন আমরা আন্তঃকলেজ ও আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি, যাতে সব জায়গায় খেলাধুলার প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার শিক্ষা, সংস্কৃতি ও খেলাধুলার মতো সকল ক্ষেত্রে দেশকে উন্নত করতে চায়।

তিনি বলেন, ‘খাদ্য সংস্থানের পাশাপাশি মনের ক্ষুধাও মেটাতে হবে। খেলাধুলার মাধ্যমে মানসিক শক্তি পাওয়া যায় এবং ছেলেমেয়েরা শৃংখলা শিখে। আমরা সে রকম একটি সুযোগ সৃষ্টি করতে চাই।’

ফুটবলের প্রতি তাঁর পরিবারের আগ্রহের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর বাবা, দাদা এবং দুই ছোট ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামাল ফুটবল খেলতেন। তিনি বলেন, ‘আমার নাতিরাও ফুটবল খেলে।’

দু’টি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ নারী ও বালক ফুটবল দলের সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী খেলোয়াড়, কোচ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানান।

তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী পহেলা ডিসেম্বর থেকে নেপালে শুরু হতে যাওয়া দক্ষিণ এশীয় গেমসেও বাংলাদেশী খেলোয়াড়রা সাফল্য বয়ে আনবে।

পরে প্রধানমন্ত্রী দুই দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের উপহার প্রদান করেন।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাহ উদ্দিন এবং যুব ও ক্রীড়া সচিব আখতার হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *