বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মানুযায়ী সিডিউল ব্যাংকের আমানতের বিপরীতে গ্রাহক ৯০ শতাংশ ঋণ পাওয়ার ক্ষমতা রাখে। যা এক বছরের মধ্যে পরিশোধের নিয়ম রয়েছে। এ ধরনের ঋন নেয়া গ্রহীতারা ঋণ খেলাপী হওয়ার সম্ভবনাও রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে ঋণ খেলাপীদের বিষয়টি। ফলে ডিপিএস ও স্থায়ী জামানতের বিপরীতে ঋণ গ্রহীতারা মুশকিলে পড়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকে জমাকৃত আমানতের লিমিটের বিপরীতে আবার দুইশ টাকা কর্তন করে রাখা হচ্ছে সিআইবি রিপোর্টের জন্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ সেল সূত্রে জানা গেছে, কোন খেলাপী ঋণ গ্রহীতার পক্ষে কোন ব্যাংক, কোম্পানী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কোন ধরনের ঋণ প্রদান করবে না।
শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে ব্যাংক কোম্পানী আইনের অন্য কোন ধারায় কোন কিছু বলা থাকলেও তা গ্রহণযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে খেলাপী ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
খেলাপী ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে ঋণ প্রদানকারী ব্যাংক, কোম্পানী বা কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপীর দায়ে ওই ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হবে। ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১ এর ২৭ এর ‘কক’ ধারা মতে খেলাপী ঋণ গ্রহীতার তালিকা প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ ব্যাংকে জানাতে হবে।
অভিযোগ উঠেছে, সিডিউল ব্যাংকের উপর বংলাদেশ ব্যাংকের চাপাচাপির কারনে ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতারা বেকায়দায় পড়েছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের(বিবি) ঋণ নিয়ন্ত্রণ কৌশল অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সিডিউল ব্যাংকের প্রধান ও বিভিন্ন শাখার বিরুদ্ধে।
কারন বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ নিয়ন্ত্রকারী সংস্থা হিসেবে সিডিউল ব্যাংক গুলোর উপর বেশকিছু নির্দেশনা দিয়ে বিভিন্ন সময়ে চিঠি পাঠিয়েছে। এই নির্দেশনার ফলে সিডিউল ব্যাংক গ্রাহকদের কাছ থেকে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) রিপোর্টের জন্য অনলাইন তদন্ত ফরম পূরণ করে নিচ্ছে।
এ ফরমে গ্রাহকের যেমন স্বাক্ষর নেয়া হচ্ছে তেমনি সংশ্লিষ্ট সিডিউল ব্যাংকের কর্মকতার্ ও ব্যাংক ম্যানেজারের স্বাক্ষরও রয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকে জমাকৃত আমানতের লিমিটের বিপরীতে আবার দুইশ টাকা কর্তন করে রাখা হচ্ছে।
আরো অভিযোগ উঠেছে, ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতারা সিডিউল ব্যাংকে জমাকৃত অর্থের শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ। এই ঋণের সুদ ব্যাংক কতৃর্ক প্রদত্ত সুদের চেয়েও শতকরা ২৫ ভাগ বেশী। কিন্তু এই ধরনের ঋণের উপর বাংলাদেশ ব্যাংক কড়া নজর রাখতে শুরু করেছে।
এরই জের ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০ সালের আগষ্ট মাসের শেষ সপ্তাহে সিডিউল ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে ডিপোজিটের বিপরীতে ঋণ গ্রহীতাদের তথ্য জানতে।
এমনকি প্রতি দুইমাস অন্তর ঋণ গ্রহনের পূর্বে ঋণ গ্রহীতাদের তথ্য তথা সিআইবি রিপোর্ট বাংলাদেশ ব্যাংকে জানাতে নির্দেশনা রয়েছে।
আরো অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংকের স্থায়ী জমার উপর প্রাপ্য সুদের চেয়ে ঋণ গ্রহিতার প্রদেয় সুদের পরিমান অনেক বেশী।
ফলে বেকায়দায় পড়লে ঋণ খেলাপী হতে পারে। গ্রাহকের ব্যাংক জমার বিপরীতে সবোর্চ্চ শতকরা ৯ ভাগ সুদ দিলেও ঋণের বিপরীতে অতিরিক্ত ২৫ ভাগ সুদসহ ঋণের সুদ আদায় করে সিডিউল ব্যাংক।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বশীল এক কর্মকতার্ জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ নিয়ন্ত্রকারী প্রতিষ্ঠান। ফলে সিডিউল ব্যাংকের ঋণ নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ঋণ খেলাপীর পরিমাণ অনেক বেশী হবে।
চলতি অর্থ বছরেও সরকার চার শতাধিক ঋণ খেলাপীর নাম ঘোষণা করেছে। ডিপোজিটের বিপরীতে ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রিয় ব্যাংক প্রত্যেক সিডিউল ব্যাংকে ১৯৭২ সাল থেকেই কড়া নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে।
কোন ভাবেই ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) রিপোর্ট ব্যতিত ঋণ প্রদান করা যাবে না। আবার ব্যাংক কোম্পানী আইনের ভেতরে থেকেই সিডিউল ব্যাংক ঋণ প্রদান করতে হয়।
২৪ ঘণ্টা / জেআর
Leave a Reply