শিশু ধর্ষণের আশঙ্কা বাড়ছে

ক্রমশ শিশু ধর্ষণের আশঙ্কা বেড়েই চলেছে। রাস্তাঘাটে এখন আর মেয়ে শিশুরা নিরাপদ নয়। নিরাপত্তা বিনষ্ট করছে কিছু নরপিশাচ। যেখানে অভিভাবকের হাত ছাড়লেই যদি শিশুর নিরাপত্তা হারাতে হয়। সেক্ষেত্রে সমাজের অবস্থান কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা নির্ভর করছে বিশ্লেষকদের বিশ্লেষণে। খাদ্যদ্রব্য দিয়ে শিশুদের ফঁুসলিয়ে শ্লীলতাহানী বা যৌন নিযার্তনের মত ঘটনা ঘটছে অহরহ। বিশেষ করে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বিভিন্ন শহরের অলিগলিতে থাকা গিঞ্জি এলাকাগুলোতে।

বিভিন্ন পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, পোশাক শ্রমিক, পেশাজীবি ও চাকুরীজীবি শ্রেণীর পরিবারে মা-বাবা বাসায় না থাকলে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে সবচেয়ে বেশি।

সম্প্রতি চট্টগ্রামে বর্ষা নামের এক সাত বছরের শিশুকে দোকানে চিপস কিনতে গিয়ে নরপিশাচ কতৃর্ক ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে।

শুধু তাই নয় ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করে পৃথিবী থেকে চির বিদায় করার মত লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের জামালখান এলাকায়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পুলিশ হয়ত তদন্ত করে অভিযুক্তকে আইনের আওতায় এনে সবোর্চ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করবে। কিন্তু তাতে কি সামাজ বা পরিবার এই ফুটফুটে শিশুটিকে ফেরত পাবে। এমন অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি ভুক্তভোগি পরিবার।

চট্টগ্রামের মারজানা হক বর্ষা পৃথিবীতে মাত্র সাতটি বছর জীবন যাপন করেছে। কোতয়ালী থানাথীন জামালখান লিচু বাগান এলাকার সিকদার হোটেলের গলিতেই এই শিশুটির আবাসস্থল।

গত ২৪ অক্টোবর বিকেলে তার বাসার গলির মুখে থাকা একটি দোকানে গিয়েছিল চিপস কিনতে। এতেই যত বিপত্তি ঘটে। চিপসের কথা বলে দোকানে গেলেও দীর্ঘ আধঘন্টা বাসায় ফিরে না আসায় মায়ের মনে নানা প্রশ্ন জেগেছে।

অনেক খোঁজাখুঁজির পরও শিশুটিকে না পাওয়ায় বষার্র বোন ছালেহা আক্তার রুবি কোতয়ালী থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী(জিডি নং-২০০৩, তারিখ. ২৫/১০/২০২২) করেছে।

থানার ওসি এ ঘটনা তদন্তের জন্য এস আই সুজন দাশকে নির্দেশ দেন। তদন্তকারী কর্মকতার্ এস আই সুজন প্রাথমিক তদন্তে বিভিন্ন সড়কে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করেন।

এদিকে, গত ২৭ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে বেলাল নামের এক পথচারী জামালখান এলাকার একটি ড্রেনের উপর শিশুটির বস্তাবন্দি লাশ দেখতে পেয়ে জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশ কে জানায়।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরে শিশুটির মা বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা (মামলা নং-৪৯,তারিখ ২৮.১০.২২) দায়ের করেছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শিশুটিকে ধর্ষণ ও হত্যার পর যে বস্তায় ঢুকানো হয়েছিল সেটি ছিল ট্রেডিং কপোর্রেশন অব বাংলাদেশ(টিসিবি) সিলযুক্ত ছিল।

এই সিলকে কেন্দ্র করে কোতয়ালী পুলিশ অভিযানে নামে। আশপাশের বিভিন্ন দোকানে খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে হদিস মিলেছে একটি গোডাউনের।

যেখানে টিসিবি’র পণ্য প্যাকেটজাত করা হতো। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া তথ্যমতে জামাল খানের শ্যামল ষ্টোরের কর্মচারী লক্ষণ দাশের বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ।

গত ২৮ অক্টোবর রাত দেড়টায় আটকের পর পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে লক্ষণ স্বীকার করেছে ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের বিষয়টি। বষার্কে লক্ষণ বিভিন্ন সময়ে বিনে পয়সায় চিপস ও চকলেট দিত।

ঘটনার দিন তথা ২৪ অক্টোবর বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে বষার্কে ১০০ টাকার লোভ দেখিয়ে গুদামে নিয়ে যায়। সেখানে লক্ষণ শিশুটিকে ধর্ষণ করে।

যখন রক্তপাত শুরু হয় তখন শিশুটির মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তা বস্তায় পুরে নালার পাড়ে রেখে দেয়।

বষার্র জুতাগুলো নালায় ফেলে দেয়। এ নরপিশাচের পুরো নাম লক্ষণ দাশ। সে লোহাগাড়ার উত্তর পদুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মণি মিস্ত্রির বাড়ির ফেলোরাম দাশের ছেলে।

২৪ঘণ্টা/জেআর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *