আনোয়ারায় অগ্নিকান্ডে ব্যাংকসহ ১০ দোকান ভষ্মীভূত, ২ কোটি টাকার ক্ষতি

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বৃহত্তম চাতরী চৌমুহনী বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। গত ৬ নভেম্বর (রোববার) রাত ১২টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। আগুনে একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখা, রেস্টুরেন্ট সহ ১০টি দোকান সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। এতে আনুমানিক ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

সরেজমিন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত রাত ১২টার দিকে ভোজন বাড়ি রেস্টুরেন্টের নিচে একটি চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এর পর আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের দোকান ও তিনতলা ভবনে।

এ ভবনে ভোজন বাড়ি রেস্টুরেন্টে ও বেসরকারি এবি ব্যাংক লিমিটেডের একটি শাখাও রয়েছে। এ ছাড়া নিচে গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান, স্বর্ণের দোকানসহ ২০টি দোকান রয়েছে। আগুনে ১০টি দোকান সম্পূর্ণ ও ১০টি দোকান আংশিক ক্ষতি হয়।

এদিকে আগুন লাগার পর নিয়ন্ত্রণে প্রথমে স্থানীয়রা ও পরে ফায়ার সার্ভিসের আনোয়ারা, সিইউএফএল, পটিয়া ও বাঁশখালীর পাঁচটি ইউনিট কাজ করে।

এ সময় এবি ব্যাংকের নৈশপ্রহরীকে অনেক চেষ্টার পর জীবিত উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। আগুনে আনুমানিক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

ভোজন বাড়ি রেস্টুরেন্টে ও এবি ব্যাংক ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকরা হলেন মো. মোজাম্মেল, নাছির উদ্দিন, আবদুল জলিল মো. দিদার, ফারুক সাওদাগর, মো. কায়সার, মো. শাহেদ ও মো. মনির।

আগুনে এবি ব্যাংকের শাখা পুড়ে গেছে। তবে ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্ট শতভাগ সুরক্ষিত আছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। গ্রাহকের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট জরুরি সব ডকুমেন্টস ভল্টে থাকায় তাও রক্ষা পেয়েছে।

তাছাড়া এবি ব্যাংক শতভাগ অনলাইন ব্যাংকিং হওয়াতে ডাটাগুলো সেন্ট্রাল সার্ভারে সংরক্ষিত আছে। যে কারণে দ্রুততার সাথে সব ডাটা সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। ব্যাংকে আগুনে আনুমানিক ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান কর্মকর্তারা।

ভোজন বাড়ি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার মো. কামাল উদ্দিন বলেন, আগুন দেখতে পেয়ে আমরা প্রথমে নেভানোর চেষ্টা করি। কিন্তু যে দোকানে আগুন লাগে, ওই দোকানের তালা ভাঙার আগেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কোনোরকম আমরা দোকান কর্মচারীরা বেরিয়ে পড়ি। আগুনে আনুমানিক ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

আনোয়ারা ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ বেলাল হোসেন বলেন, আগুনের ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি টিম তিন ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ে তদন্ত চলছে।

রাতে ঘটনাস্থলে আসেন চাতরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন চৌধুরী সোহেল। তিনি বলেন, আগুনে এবি ব্যাংকের শাখাসহ ২০টি দোকান পুড়ে গেছে। ইতোমধ্যে ১৪ জন দোকানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানতে পেয়েছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সব মিলিয়ে প্রায় ২ কোটি।

আজ সোমবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুর হক চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও শেখ জোবায়ের আহমেদ।

২৪ঘণ্টা/জেআর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *