সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করে একটি সুস্থ জাতি গঠন করবো : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করে একটি সুস্থ জাতি গঠনের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলবো।

আগামীকাল ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’ উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হচ্ছে জেনে প্রধানমন্ত্রী সস্তোষ প্রকাশ করেন।

এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আগামীতে নিজেকে সুরক্ষায় ডায়াবেটিসকে জানুন’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে গত সাড়ে ১৩ বছরে স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।

তিনি বলেন, সারাদেশে হাসপাতালগুলোর শয্যা বৃদ্ধিসহ চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্টিং স্টাফের সংখ্যা বহুলাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে। মেডিকেল শিক্ষার প্রসারে নতুন নতুন মেডিকেল কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। গ্রাম পর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারাদেশে প্রায় ১৮ হাজার ৫শত কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসব কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ফ্রি স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্লাটফরমের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা চালু করা হয়েছে।

ডায়াবেটিস একটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কাজেই যাদের ডায়াবেটিস আছে এবং যাদের নেই উভয়কেই ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে জানতে হবে এবং নিজেকে সুরক্ষার উদ্যোগ নিতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, অতিরিক্ত ফাস্টফুড, চর্বিযুক্ত খাবার খেলে, শারীরিক পরিশ্রম ও নিয়মিত শরীর চর্চা না করলে, স্বাভাবিকের চেয়ে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে ডায়াবেটিস হতে পারে। ডায়াবিটিস রোগীদেরকে নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্য খাওয়া, সুশৃঙ্খল জীবন-যাপন করা ছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ ও ইনসুলিন গ্রহণ করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর হাতেই বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয়।

তিনি স্বাস্থ্যকে সংবিধানের মূল অধিকারের অংশ হিসেবে সংযোজন, প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যকে গুরুত্বদান, গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, চিকিৎসকদের চাকুরির প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদান, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ গঠনসহ বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা সৃষ্টিসহ নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করে চলেছে। টাইপ-১ ডায়াবেটিক রোগীদের বিনামূল্যে ইনসুলিন প্রদানের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণেও বর্তমান সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

২৪ঘণ্টা/এনআর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *