চট্টগ্রামে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান টানেল’ দেশের প্রথম ও একামাত্র টানেল। যা চট্টগ্রাম ও আনোয়ারার অদৃশ্য বন্ধন। এটি চট্টগ্রামের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের একটি। চট্টগ্রামের কর্ণফূলী নদীর তলদেশ দিয়ে চায়না কমিউনিক্যাশন কন্সট্রাকশন কোম্পানী(সিসিসিসি) চীনের ঠিকাদারপ্রতিষ্ঠান এই টানেলের কাজ করছে। আগামী জানুয়ারীতে টানেলের দক্ষিণ পাশে^র্র টিউবটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। চট্টগ্রাম শহর না ছুঁয়েই পর্যটক যাবে কক্সবাজার। এই টানেলের কনস্যালটেন্ট হিসেবে কাজ করছে এসএমইসি- সিওডব্লিওআই। প্রায় ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি ৬৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকায় এ টানেলসহ দুইদিকের এপ্রোচ সম্পন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ও আনোয়ারা পর্যটন এলাকার পরিপূর্ণতা পাবে এ টানেলের কারণে। আনোয়ারায় ৪ হাজার ৯৫২ মিটার এপ্রোচ সড়ক ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান টানেল’ সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট থেকে কর্ণফুলী নদীর দুই কিলোমিটার ভাটির দিকে বঙ্গবন্ধু টানেল। টানেলের দুটি টিউব চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে আনোয়ারা উপজেলাকে সংযুক্ত করেছে।
টানেলের প্রবেশপথ নেভি কলেজের কাছে আর বহির্গমন পথ কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ের সিইউএফএল সার কারখানা সংলগ্ন ঘাট দিয়ে।
পতেঙ্গা প্রান্তে ১৫ মেগাওয়াট স্থায়ী বিদ্যুত সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আবার আনোয়ারা প্রান্তে বিদ্যুত সাবস্টেশন নিমার্ণ করেছে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান টানেল’ মানেই ‘মাল্টি-ল্যান্ড রোড টানেল আন্ডার দ্যা রিভার কর্ণফুলী’। উভয়দিকে টানেলের মুখ থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নিমার্ণ শেষ। এই টানেলের মোট ব্যয় প্রায় ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি ৬৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।
এরমধ্যে সরকারী অথার্য়ন থেকে আসছে ২ হাজার ৮০০ কোটি ২৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। প্রজেক্ট এসিসট্যান্স থেকে বিনিয়োগ করা হচ্ছে ৫ হাজার ৬৪৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা বা ৭৫০ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন।
প্রকল্পের নকশা অনুযায়ী দেখা গেছে, ৪ লেন বিশিষ্ট এপ্রোচ সড়কের মধ্যে রয়েছে পতেঙ্গা অংশে ৫৫০ মিটার আর আনোয়ারা অংশে ৪ হাজার ৯৫২ মিটার। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ৯ হাজার ২৬৫ দশমিক ৯৭ মিটার।
টানেলের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। টানেলের বাহিরে পতেঙ্গা এলাকায় ২০০ মিটার আর আনোয়ারায় ১৯০ মিটার। কার্যপরিধি ২৫ মিটার। আনোয়ারা অংশে ফ্লাই-ওভারের দৈর্ঘ্য ৬৩৭ মিটার। ১২ মিটার বৃত্তাকার এই টানেল আচ্ছাদিত অংশ পতেঙ্গা অংশে ১৯৫ মিটার আর আনোয়ারা অংশে ২৩০ মিটার।
বর্তমান সরকারের বৃহদায়তন প্রকল্পের উন্নয়ন টার্গেট হিসেবে এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। ২০১৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমূদ্র উপকূলে গড়া এপ্রোচ সড়কে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান টানেল’ এর বোরিং কার্যক্রম আর চউকের ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে’র উদ্বোধন করেন।
২০২২ সালের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল বাংলাদেশ ব্রীজ অথরিটি(বিবিএ)’র তত্বাবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান টানেল কিন্তু আরো ৬ মাস সময় লেগে যাবে।
২৪ ঘণ্টা / জেআর
Leave a Reply