উন্নয়ন সূচকে পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ : তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, স্বাধীনতার ঊনপঞ্চাশ বছরে আমরা পাকিস্তানের চেয়ে তিনটি উন্নয়ন সূচকে এগিয়ে রয়েছি। উন্নয়নের দিক থেকে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে।

তথ্যমন্ত্রী আজ বাংলাদেশ বেতারের ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বেতার ভবনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

আলোচনা সভার আগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র‌্যালি উদ্বোধনকালে রাজাকারের তালিকা কেন’- বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘রাজাকারের তালিকা কেন- এ প্রশ্ন করে বিএনপি রাজাকারদের পক্ষে নিজেদের মুখোশ নিজেরাই উন্মোচন করেছে।’

ড. হাছান বলেন, ‘মীর্জা ফখরুল সাহেব তার এ বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে রাজাকারদেরই পক্ষ নিয়েছেন। আমরা এতদিন ধরে বলে আসছি, বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং তাদের দলের চেয়ারপারসন পাকিস্তানিদের দোসর ছিলেনএবং তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানও মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে পাকিস্তানের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছেন। ’

এসময় ‘তালিকায় কিছু ভুল রয়েছে’ বলে সাংবাদিকরা মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘কিছু ভুল রয়েছে, যা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী নিজেও স্বীকার করেছেন এবং ভুলগুলো অবশ্যই শুধরে নেবার সুযোগ আছে। তবে এ ভুলগুলো কেন হলো, কিভাবে হলো, ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ করেছে কি না, তা অনুসন্ধান করে বের করা হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ পরে বেতার চত্বরে স্থাপিত মঞ্চে আলোচনা সভায় যোগ দেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ন চন্দ্র শীলের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন তথ্যপ্রতিমন্ত্রী ডা:মুরাদ হাসান এবং তথ্য সচিব আবদুল মালেক।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের এই ঊনপঞ্চাশ বছর বয়সে বহুদূর এগিয়ে গেছে।মানব উন্নয়নে,সামাজিক উন্নয়নে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে।

তিনি বলেন,বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পাকিস্তানীরা এই বলে তুষ্ট থাকতো যে,বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে পারবে না।আজকে এখানে এসে পাকিস্তানীরা আক্ষেপ করে বলে বাংলাদেশ সমস্ত সূচকে পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছে।এমন আক্ষেপ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠেও পাওয়া যায়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন,এখানেই হচ্ছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সার্থকতা, স্বাধীন বাংলাদেশের সার্থকতা।এই উন্নয়ন এবং সার্থকতাকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। যেকোন মানুষের স্বপ্ন পূরণের তাড়না, তাগাদাও প্রচেষ্টা থাকতে হয় এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,যারা স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি দেখার প্রচেষ্টাকে যুক্ত করে তার সবস্বপ্ন পূরণ না হলেও অনেক স্বপ্ন পূরণ হয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ঠিক তেমনি রাষ্ট্রীয় জীবনেও স্বপ্ন ছাড়া রাষ্ট্রকে বেশীদূর এগিয়ে নেয়া যায় না।সেকারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ থেকে ১১ বছর আগে দুটি স্বপ্নের কথা বলেছিলেন।একটি হলো ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং অন্যটি হলো দিনবদল। যখন ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলা হলো তখন অনেকে প্রশ্ন তুলেছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ টা আসলে কি? অনেকে হাসিঠাট্টা করেছিল।বিশেষ করে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো হাসিঠাট্টা করেছিল।

তিনি বলেন, ‘আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন নয়,বাস্তবতা।ষোল কোটি মানুষের দেশে পনের কোটি সিম ব্যবহারকারী।এটাই ডিজিটাল বাংলাদেশ।মুহূর্তের মধ্যে ঢাকার রিকশাওয়ালা ভাই ভোলার মনপুরায় তার স্ত্রীর কাছে পাঁচ’শ টাকা মোবাইলে পৌছে যায় ,এটাই ডিজিটাল বাংলাদেশ।মুহূর্তের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী সন্তানের কাছ থেকে পিতার কাছে কয়েকঘন্টার মধ্যে টাকা পৌছায় এটাই ডিজিটাল বাংলাদেশএবং শস্যক্ষেতের মধ্যে দাঁড়িয়ে কৃষক ভাই পোকার ছবি তুলে সেই ছবি তিনি কৃষি সংক্রান্ত পরামর্শ চাইতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে পরামর্শ চান-এবং মোবাইলে কল দিয়ে জানতে চান কি কীটনাশক ব্যবহার করবেন-এটাই ডিজিটাল বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন, প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার, অতিরিক্ত সচিব নূরুল করিম, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকার, তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মমতা হেনা লাভলী।স্বাগত বক্তৃতা করেন,বাংলাদেশ বেতারের উপ-মহাপরিচালক(বার্তা) হোসনে আরা তালুকদার।

আলোচনা সভার পরে বাংলাদেশ বেতারের শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *