বহুমুখী প্রতারক ফরহাদ অবশেষে গ্রেফতার

কখনো এডভোকেট, কখনো ডিবি কিংবা কখনো ব্যবসায়ী, বিদেশে নেয়ার প্রলোভন, ব্যবসায় অংশীদার করা, চাকরি দেওয়া, স্বর্ণ ব্যবসায়ী, ঋণ পাইয়ে দেওয়া, কিষোয়ান, থাই ফুড, ওয়েল ফুডসসহ বিভিন্ন নামীদামী প্রতিষ্ঠানের ডিম সরবরাহের কাজ পাইয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন কৌশলে প্রতারণা করতেন ফরহাদ উদ্দীন চৌধুরী ওরফে ফরহাদ (৩৫)। অবশেষে গত মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে সিএমপি পুলিশ কমিশনার, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ(ডিবি), সিআইডি, পটিয়া, বোয়ালখালী, রাঙ্গুনিয়া, বাঁশখালী ও কর্ণফুলী থানায় রয়েছে কয়েক ডজনেরও বেশি অভিযোগের ফিরিস্তি। কিছু কিছ জায়গায় মামলা অভিযোগ হলেও বারংবার আইনের চোখকে ফাকিঁ দিয়ে বীরদর্পে প্রতারণা করে গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রতারণার শিকার হওয়া বাঁশখালী উপজেলার পারভিন আক্তার ও কর্ণফুলী উপজেলার এক ভুক্তভোগীর করা মামলায় পটিয়া ছনহরা এলাকা থেকে তাকে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান পটিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১০ অক্টোবর রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১৪নং দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ২৮জন ব্যবসায়ীকে বোকা বানিয়ে হাতিয়ে নেয় প্রায় ২৪ লাখ টাকা এবং ইপিজেড বন্দর এলাকা হতে ২১ (একুশ) লাখ টাকা, কর্ণফুলী এলাকা হতে ২ লাখ ৩৫ হাজার, পটিয়া পৌর এলাকার মো. জিয়ার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা, জরিনা বেগমের কাছ ১২ লাখ ৮০ হাজার।

এই প্রতারক মধ্যপ্রাচ্যের ভিসা দিবে বলে রাঙ্গুনিয়ার কোদালা স্বর্ণের দোকান মালিক অজিত মহাজনের পুত্র বিঞ্চু বনিক হতে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩’শ ২৫ টাকা, ঘাটচেক পৌর এলাকার ছাবের সওদাগরের পুত্র মো. ইসমাঈল হতে ৭০ হাজার, একই এলাকার মো. জামালের পুত্র জাহেদ হতে ৫০ হাজার, আকবর তালুকদার বাড়ির আব্দুল বারেকের পুত্র দিদার হতে ১০ হাজার, তালুক পাড়ার আহম্মেদ হোসনের পুত্র মো. সিরাজ হতে ২৫ হাজার, কাজী পাড়ার ফরিদুলের পুত্র আনিছ হতে ৩৫ হাজার টাকা প্রতারণাপুর্বক আত্মসাৎ করে। এমনকি ব্যাংক হতে লোন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে কয়েকশত লোকের কাছ থেকে নগদ টাকা ও চেক নিয়ে প্রতারণার তথ্য মিলেছে।

ফরহাদ কর্তৃক প্রতারণার শিকার মো. জিয়া বলেন, এই ডিম ব্যবসায়ী প্রতারকের শিকার হয়ে আমি স্বর্বশান্ত হয়ে গেছি। আমার দোকানে কর্মচারী থাকাকালীন আমার সাথে প্রতারণা করে আমার কাছ থেকে চেক নিয়ে আমাকে নিস্ব করে দিয়েছে। এমনকি অপহরণের নাটক সাজিয়ে আমাকে সে(ফরহাদ) জেল কাটিয়েছে।

প্রতারণার শিকার পটিয়া পৌর এলাকার জরিনা বেগম জানান, আমার ছেলেকে ভিসা দিবে বলে ১৩ লাখ টাকা সে নেই। আমার ছেলেকে ভিসা না দিয়ে প্রতারণার জাল বিছিয়ে সে আমাদের নিস্ব করে দেই। তিনি কেঁদে বললেন, এই টাকা গুলোর দায় দেনা বেড়ে যাওয়ায় আমার স্বামী ২০২০ সালে স্ট্রোক করে মারা যায়। আমি তার বিচার চাই।

এই বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার জানান, গ্রেফতার হওয়া ফরহাদ উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আবু তালেবের পুত্র। তার প্রতারণার গভিরতা বিশাল। তার প্রতারনায় নিস্ব হয়ে গেছে কয়েকশত মানুষ। আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি। তাকে আদালতে পাঠাব।

২৪ঘণ্টা.জেআর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *