Category: আন্তর্জাতিক

  • ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা, নিহত অন্তত ৩০

    ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা, নিহত অন্তত ৩০

    ভারতের ওড়িশা রাজ্যের বালেশ্বরের কাছে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৭৯ জন।

    প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত যাত্রীদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ৭ টা ২০ মিনিটে বালেশ্বর জেলার বাহাঙ্গা বাজার স্টেশন এলাকায় ঘটে এই দুর্ঘটনা।

    পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে কলকাতার শালিমার স্টেশন থেকে তামিলনাড়ু রাজ্যের রাজধানী চেন্নাইয়ের উদ্দেশে কলকাতার শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় ১২৮৪১ আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। তারপর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পার হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ট্রেনটি পৌঁছায় বালেশ্বরে। তার আরও এক ঘণ্টা ২০ মিনিট পর বাহাঙ্গা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ কামরার ট্রেনটি।

    ভারতের কেন্দ্রীয় রেল দপ্তরের দক্ষিণপূর্ব শাখার শীর্ষ জনসংযোগ কর্মকর্তা আনন্দবাজারকে বলেন, ‘বালেশ্বরের কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে কিছু একটা হয়েছে। আমরা কোনোভাবে এখনও কিছু জানতে পারিনি। জানার চেষ্টা করছি।’

  • মেক্সিকোতে দুর্গম গিরিখাতে মিলল ৪৫ ব্যাগ মানব দেহাবশেষ

    মেক্সিকোতে দুর্গম গিরিখাতে মিলল ৪৫ ব্যাগ মানব দেহাবশেষ

    উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে ৪৫ ব্যাগ মানব দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গুয়াদালাজারার বাইরে একটি দুর্গম গিরিখাত থেকে এসব ব্যাগ খুঁজে পাওয়ার পর পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করে।

    সেখানে ঠিক কতজনের মৃতদেহের অংশ আছে তা এখনও জানা যায়নি। শুক্রবার (২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

    প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেক্সিকান কর্তৃপক্ষ পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গুয়াদালাজারার বাইরে একটি গিরিখাতে মানুষের দেহাবশেষ সম্বলিত ৪৫টি ব্যাগ খুঁজে পেয়েছে। মূলত গত সপ্তাহে নিখোঁজ হওয়া সাতজন তরুণ কল সেন্টার কর্মীকে খুঁজছিলেন কর্মকর্তারা। এসময় তারা এসব মৃতদেহ খুঁজে পান।

    বিবিসি বলছে, উদ্ধারকৃত দেহাবশেষের মধ্যে পুরুষ ও নারী উভয়েরই মৃতদেহের অংশ রয়েছে। এছাড়া সেখানে মৃতদেহের সংখ্যা ঠিক কত তা এখনও জানা যায়নি। ওই এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় এবং আলো কম থাকার কারণে অনুসন্ধান কর্মকাণ্ড আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    মেক্সিকোর পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জলিসকোর রাষ্ট্রীয় প্রসিকিউটরের কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নিখোঁজ সাত জনের সন্ধানের বিষয়ে একটি তথ্য পাওয়ার পর মেক্সিকান কর্মকর্তারা মিরাডোর দেল বস্ক গিরিখাতে অনুসন্ধান শুরু করে এবং একপর্যায়ে সেখানে তারা মানবদেহের অঙ্গসহ এসব ব্যাগ খুঁজে পায়।

    অগ্নিনির্বাপক দল ও সিভিল ডিফেন্স পুলিশ এবং হেলিকপ্টার ক্রুদের একটি দল ঘটনাস্থলে দেহাবশেষ উদ্ধারের জন্য কাজ করছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, উদ্ধারকৃত ব্যাগে মৃতদেহের সংখ্যা, তারা কারা এবং তাদের মৃত্যুর কারণ নির্ধারণে তারা কাজ চালিয়ে যাবেন।

    এছাড়া নিখোঁজ হওয়া সাতজন তরুণ কল সেন্টার কর্মীর সন্ধান পেতে কর্মকর্তারা চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলেও জানানো হয়েছে।

    বিবিসি বলছে, মৃতদেহগুলো কীভাবে এই গিরিখাতে পড়েছিল তা এখনও জানা না গেলেও মেক্সিকোতে গুমের মতো অপরাধ তুলনামূলকভাবে সাধারণ বিষয়। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মেক্সিকোতে ১ লাখেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

    দেশটিতে ভুক্তভোগী এসব মানুষের অনেকেই অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধের শিকার। তবে মেক্সিকোতে অপরাধীদের খুব কমই শাস্তি দেওয়া হয়।

    সরকারি তথ্য বলছে, ২০০৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফেলিপ ক্যালডেরন মেক্সিকোতে ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ শুরুর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে দেশটিতে অনেক মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজ এসব মানুষের তিন-চতুর্থাংশ পুরুষ এবং এক-পঞ্চমাংশের বয়স ১৮ বছরের কম।

    নিখোঁজদের স্বজনরা বলছেন, সরকার তাদের খুঁজে বের করার জন্য যথেষ্ট কাজ করছে না এবং তারা যখন তাদের প্রিয়জনকে নিখোঁজ বলে জানায় তখন কর্মকর্তারা তাতে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে উদাসীন থাকেন।

    জাতিসংঘ এটিকে ‘বিশাল অনুপাতের মানবিক ট্র্যাজেডি’ বলে অভিহিত করেছে।

  • ভারতীয় লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমতি পেল নেপাল

    ভারতীয় লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমতি পেল নেপাল

    ভারতীয় ভূখণ্ড ও অবকাঠামো ব্যবহার করে বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রির নেপালের প্রস্তাবে সবুজ সংকেত দিয়েছে নয়াদিল্লি। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল ওরফে প্রচণ্ড ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে এই সংক্রান্ত ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে রাজি হয়েছে ভারত।

    ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থায় ভারত প্রথমবারের মতো এই ধরনের চুক্তিতে রাজি হওয়ায় বিদ্যুৎ বাণিজ্য উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহলের মধ্যে আলোচনার সময় ভারতীয় পক্ষ নেপালকে ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানিয়ে দিয়েছে।

    দ্বিপাক্ষিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে আরও বিস্তৃত করার জন্য ভারত ও নেপাল পারস্পরিক যোগাযোগ, জলবিদ্যুৎ, পেট্রোলিয়াম অবকাঠামো, আন্তঃসীমান্ত লেনদেন ব্যবস্থা ও সমন্বিত তল্লাশি চৌকি নির্মাণ সংক্রান্ত সাতটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।

    উভয়পক্ষ রেলওয়ে নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার পাশাপাশি ভারত থেকে নেপালের বিভিন্ন শহরে বিমান যোগাযোগ চালু করার উপায় নিয়েও আলোচনা করেছে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কাত্রা বলেছেন, নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে ট্রানজিট করে যাতে বাংলাদেশে যেতে পারে, সেটিই আমাদের উদ্দেশ্য।

    তিনি বলেছেন, জলবিদ্যুৎ সহযোগিতা শুধু ভারত ও অন্যান্য দেশের মধ্যে নয়, বরং পুরো অঞ্চলের সহযোগিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এক্ষেত্রে আপনি যদি বিদ্যুৎ সহযোগিতার দিকে লক্ষ্য করেন, তাহলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেও এটি একই রকম রয়েছে। ভারত ও নেপাল এই বিষয়ে ব্যাপকভাবে কথা বলেছে।

    ভারতীয় এই পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, আঞ্চলিক সংযোগকে জোরদার করার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসাবে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বাণিজ্যের ব্যবহারের চমৎকার সুযোগ রয়েছে। এই ক্ষেত্রে এটিই প্রথম কোনো পদক্ষেপ।

    বৈঠকের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল বলেন, শিগগিরই নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু হবে। একই সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হবে।

    ভারতীয় ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহার করে নেপালের বিদ্যুৎ বাণিজ্যের অনুমতির জন্য গত কয়েক বছর ধরে নয়াদিল্লিকে চাপ দিয়ে আসছিল ঢাকা ও কাঠমান্ডু। এতদিন ধরে নয়াদিল্লির সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় ছিল উভয়পক্ষ।

    গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লি সফরের সময় ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি উপস্থাপন করেছিলেন।

    গত মে মাসের মাঝের দিকে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নারায়ণ প্রকাশ সৌদের ঢাকা সফরের সময়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ওই সময় তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানিকে নেপালের জলবিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছিলেন।

  • বিশ্বনেতাদের অভিনন্দনে ভাসছেন এরদোয়ান

    বিশ্বনেতাদের অভিনন্দনে ভাসছেন এরদোয়ান

    প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কেমাল কিলিচদারগলুকে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তার বিজয় উদযাপনে রাজধানী আঙ্কারাসহ দেশটির বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে এসেছে হাজার হাজার মানুষ। এ জয়ের খবরে এরদোয়ানকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিশ্বনেতারাও।

    বাংলাদেশ সময় রোববার (২৮ মে) রাত ১২টার আগেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে এরদোয়ানের বিজয়ের খবর বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে।

    এরপর থেকেই শুভেচ্ছা আর অভিনন্দনে ভাসছেন এরদোয়ান। মুসলিম বিশ্বনেতাদের পাশাপাশি অমুসলিম নেতারাও তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য পাঠিয়েছেন।

    কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানি এরদোয়ানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারের ইচ্ছে পোষণ করেছেন।

    লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হামিদ এরদোয়ানের জয়কে তুরস্কের বিজয় বলে আখ্যা দিয়েছেন। এরদোয়ানের বিজয়কে অভূতপূর্ব উল্লেখ করে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্তর ওরবান।

    ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তুরস্কের মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন তিনি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

    সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা জানিয়েছে, দেশটির বাদশাহ সালমান এরদোয়ানকে তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

    নির্বাচনে জয়ের পর এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

    তিনি তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার করার জন্য কাজ করবেন বলেও জানিয়েছেন মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক।

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এরদোয়ানকে তার বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

    এক টুইট বার্তায় বাইডেন বলেন, দ্বিপাক্ষিক ইস্যু ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোতে ন্যাটোর মিত্র হিসেবে একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবো।

    তাছাড়া অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তুরস্ককে একটি মূল্যবান ন্যাটো মিত্র ও অংশীদার বলে অভিহিত করেছেন।

    প্রিয় বন্ধু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, এরদোয়ানের বিজয় প্রমাণ করে তুর্কি জনগণ তার নিঃস্বার্থ কাজ ও স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির প্রশংসা করেছে।

    জয়ের জন্য এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারত্ব জোরদার হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

    অভিনন্দন জানিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর উল্লেখ করেছেন, উভয় দেশের জনগণ ও অর্থনীতি কতটা গভীরভাবে জড়িত। তাছাড়া একটি নতুন উদ্দীপনার সঙ্গে সাধারণ এজেন্ডাকে এগিয়ে নেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।

    ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ফ্রান্স ও তুরস্ক এগিয়ে যেতে থাকবে।

    অভিনন্দন জানিয়েছেন, ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইন। দুইজনেই তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

    ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, ন্যাটো মিত্র হিসেবে নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলাসহ যুক্তরাজ্য ও তুরস্কের মধ্যে শক্তিশালী সহযোগিতা অব্যাহত রাখার জন্য কাজ করবেন।

    এছাড়াও আর্মেনিয়া, সুইডেন, ইসরায়েল, ফিলিস্তিনি, হাঙ্গেরি, আজারবাইজান, সুদান, সার্বিয়া, পাকিস্তান, ভেনেজুয়েলা, আমিরাত, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধানরাও এরদোয়ানকে অভিনন্দন ও সম্পর্ক জোরদারের কথা জানিয়েছেন।

    গত ২০ বছর ধরে তুরস্ক শাসন করে আসা প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান রোববারের ভোটে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে দেশটির মসনদে বসছেন। রান-অফ নির্বাচনে তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আনাদোলু।

  • নিজের বিজয়কে গণতন্ত্রের জয় বললেন এরদোয়ান

    নিজের বিজয়কে গণতন্ত্রের জয় বললেন এরদোয়ান

    টানা তৃতীয়বারের মতো তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। রোববারের (২৮ মে) প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রান-অফ নির্বাচনে কেমাল কিলিচদারোগলুকে পরাজিত করে আরও পাঁচ বছর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নিশ্চিত করেন জনপ্রিয় এই নেতা।

    এদিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের এই বিজয়কে গণতন্ত্রের জয় হিসেবে অভিহিত করেছেন রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। সোমবার (২৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

    প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য সমাপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলের পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান তার বিজয়কে গণতন্ত্রের বিজয় হিসেবে অভিহিত করেছেন।

    রাজধানী আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট কমপ্লেক্সের আঙিনায় জড়ো হওয়া কয়েক হাজার সমর্থকের সামনে বক্তৃতা করার সময় প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে রোববারের রান অফ ভোটের প্রকৃত বিজয়ী ৮৫ মিলিয়ন তুর্কি নাগরিক এবং তুর্কি গণতন্ত্র বলে ঘোষণা দেন।

    রাজধানী আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনে জড়ো হওয়া হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশে এরদোয়ান বলেন, ‘আমরাই একমাত্র বিজয়ী নই। এই নির্বাচনে তুরস্কের জয় হয়েছে, আমাদের গণতন্ত্র বিজয়ী হয়েছে।’

    মধ্যরাতের এই বিশাল জনসমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি আরও বলেন, ‘আজ কেউ হারেনি। তুরস্কের ৮৫ মিলিয়ন নাগরিক জিতেছে। আর এখন আমাদের জাতীয় লক্ষ্য এবং জাতীয় স্বপ্নকে ঘিরে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়।’

    এর আগে রোববার সন্ধ্যায় তুরস্কের সুপ্রিম ইলেকশন কাউন্সিলের (ওয়াইএসকে) চেয়ারম্যান প্রেসিডেন্ট পদে এরদোয়ানের পুনর্নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আঙ্কারায় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ওয়াইএসকে প্রধান আহমেত ইয়েনার বলেন, দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটে এরদোয়ান বিরোধী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কেমাল কিলিচদারোগলুকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হয়েছেন।

    টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলছে, এখন পর্যন্ত ৯৯.৪৩ শতাংশ ব্যালট গণনা সম্পন্ন হয়েছে এবং অনানুষ্ঠানিক ফলাফল অনুসারে, তুরস্কের ক্ষমতাসীন এই প্রেসিডেন্ট ৫২.১৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী কিলিচদারোগ্লু পেয়েছেন ৪৭.৮৬ শতাংশ ভোট।

    এরদোয়ান বলেন, ‘আমাদের বহুদলীয় রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে আমাদের জনগণ ‘সেঞ্চুরি অফ তুর্কিয়ের’ পক্ষে রায় দিয়েছে।’

    এরদোয়ান তার সমর্থকদের বলেন, রোববারের এই নির্বাচনটি আধুনিক যুগে তুরস্কের জন্য ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’। তিনি বলেন, জনগণের জন্য আমাদের দিনরাত কাজ করতে হবে।

    গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পের ক্ষত নিরাময় এবং ধ্বংস হওয়া শহরগুলোর পুনর্গঠন তার সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে অব্যাহত থাকবে বলেও এদিন জানিয়ে দেন এরদোয়ান। তিনি বলেন, তুর্কি জাতির ক্ষমতা ও শক্তি রয়েছে এবং তারা বিশ্বব্যবস্থায় তার যথাযথ স্থান অর্জন করবে।

    উল্লেখ্য, প্রায় ছয় কোটি ভোটারের মধ্যে ৮৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ ভোটার দ্বিতীয় দফায় ভোট দেন। এর আগে প্রথম দফার নির্বাচনে কোনও প্রার্থী শতকরা ৫০ ভাগের বেশি ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় গড়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।

    গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার ভোটে ৪৯ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ের কাছাকাছি গিয়েছিলেন এরদোয়ান। এরপরই ছিলেন কিলিচদারোগলু। তার ভোট ছিল ৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ।

    তবে রোববারের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার মাধ্যমে গত দুই দশক ধরে তুরস্কের ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা এরদোয়ান প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবারও পাঁচ বছরের জন্য দেশটির নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেলেন।

  • টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

    টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

    গত ২০ বছর ধরে তুরস্ক শাসন করে আসা প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানই পুনরায় নির্বাচিত হয়ে দেশটির মসনদে বসছেন। রোববার অনুষ্ঠিত রান-অফ নির্বাচনে তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে।

    আনাদোলু বলছে, ৯৭ শতাংশ ব্যালট বাক্স গণনা সম্পন্ন হয়েছে। এই গণনায় প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ৫২ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কেমাল কিলিচদারোগলু পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট।

    ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ৯ বছর প্রেসিডেন্ট আর ১১ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করা এরদোয়ানের নেতৃত্বে ক্রমাগত কর্তৃত্ববাদী শাসনের পথে হাঁটা তুরস্কে স্মরণকালের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট চলছে। এরদোয়ানের পেশীবহুল পররাষ্ট্র নীতি আর অপ্রচলিত উপায়ে দেশের অর্থনীতি পরিচালনার ফলে রেকর্ড মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি হয়েছে দেশটি।

    এমন পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ভোটে এরদোয়ানের জন্য আরও বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল তিন মাস আগে দেশটিতে আঘাত হানা স্মরণকালের ভয়াবহ এক ভূমিকম্প। ওই ভূমিকম্পে অর্ধ-লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ভূমিকম্পের পর উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে দেশ ও বিদেশি তীব্র সমালোচনার শিকার হতে হয় এরদোয়ান নেতৃত্বাধীন সরকারকে।

    চলমান এই পরিস্থিতির মাঝে গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার নির্বাচনে এরদোয়ানের সাথে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কেমাল কিলিচদারোগলুর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়।

    বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১১টার দিকে তুরস্কের উচ্চ নির্বাচন বোর্ডের প্রধান আহমেদ ইয়ানার এক সম্মেলনে নির্বাচনের ফল প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি বলেন, রোববারের ভোটে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিচদারোগলুর চেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। প্রাথমিকভাবে ৯৭ শতাংশ ব্যালট বাক্সের ভোট গণনায় এরদোয়ান ৫২ দশমিক ১ শতাংশ এবং কিলিচদারোগলু ৪৭ দশমিক ৯ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন।

    এরদোয়ান নেতৃত্বাধীন দেশটির ক্ষমতাসীন একে পার্টির মুখপাত্র ওমের সেলিক বলেছেন, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান শক্ত সমর্থন ধরে নির্বাচিত হয়েছেন।

    এদিকে, নির্বাচনী ফলে এরদোয়ানের জয় নিশ্চিত হওয়ার সাথে সাথে ক্ষমতাসীন একে পার্টির কর্মী-সমর্থকরা তুরস্কজুড়ে আনন্দ মিছিল শুরু করেছেন। রয়টার্স বলছে, সমর্থকরা তার ইস্তাম্বুলের বাসভবনে জড়ো হয়ে ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দিচ্ছেন। ২৮ বছর বয়সী একে পার্টির সমর্থক নিসা নামের এক তরুণী বলেন, আমরা আশা করছি সবকিছু ভালো হবে।

    ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা এবং বৈদেশিক নীতিতে ধুঁকতে থাকা সাড়ে ৮ কোটি মানুষের এই দেশটির নির্বাচনে এরদোয়ানের পুনরায় জয় লাভ তার অপরাজেয় ভাবমূর্তিকে আরও দৃঢ় করে তুলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    • প্রথম দফার ভোটের ফল
    গত ১৪ মে দেশটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। অন্যদিকে, তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিচদারোগলু পান ৪৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ ভোট।

    আর জাতীয়তাবাদী রাজনীতিক হিসাবে পরিচিত সিনান ওগান পেয়েছিলেন ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে এরদোয়ানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন তিনি।

    তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আনাদোলু বলছে, প্রথম দফার নির্বাচনে তুরস্কের ৬ কোটি ৪০ লাখ ভোটারের মাঝে ৮৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

    • রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান
    একে পার্টি নামে পরিচিত তুরস্কের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলভমেন্ট পার্টি নেতৃত্বাধীন পিপলস অ্যালায়েন্ট জোটের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ৬৯ বছর বয়সী এই রাষ্ট্রনেতা তুরস্কের ক্ষমতায় আছেন ২০ বছর ধরে। এর মধ্যে ৯ বছর প্রেসিডেন্ট এবং ১১ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তুরস্কের অন্যতম বৃহৎ শহর ইস্তাম্বুলের মেয়র ছিলেন তিনি।

    এবা‌রে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হ‌য়েছেন এরদোয়ান। ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট আর সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির মাঝে এবারের এই নির্বাচনর তার জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল।

    • কেমাল কিলিচদারোগলু
    দেশটির ছয়দলীয় জোট ন্যাশন অ্যালায়েন্সের হয়ে এরদোয়ানের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৭৪ বছর বয়সী এই রাজনীতিক। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজের রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। রাজনীতির মাঠে পা রাখার আগে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ ছিলেন তিনি। নব্বইয়ের দশকের বেশিরভাগ সময় দেশটির সামাজিক বীমা ইনস্টিটিউশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তুরস্কের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল কুর্দিপন্থি এইচডিপির সমর্থনে ছয়-দলীয় ন্যাশন অ্যালায়েন্সের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনি। তুরস্ককে একটি শক্তিশালী সংসদীয় ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি‌লেন কেমাল।

     

  • আজ তুরস্কে অগ্নিপরীক্ষায় এরদোয়ান কেমাল

    আজ তুরস্কে অগ্নিপরীক্ষায় এরদোয়ান কেমাল

    তুরস্কে আজ দ্বিতীয় দফার ভোটেই নির্ধারিত হতে যাচ্ছে ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ফের ক্ষমতায় আসছেন, নাকি আমলা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া কেমাল কিলিচদারোগলু প্রথমবারের মতো মসনদে বসছেন।

    প্রথম দফার ভোটে কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় আজকের এ ভোটে নির্ধারিত হবে তুরস্কের নতুন প্রেসিডেন্ট, যার দিকে এখন সারা বিশ্বের চোখ। তুরস্কের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় দফায় গড়ানো এ প্রেসিডেন্ট ভোটের আগে দুই প্রার্থীই পরস্পরকে সমালোচনার জালে বিদ্ধ করেছেন। দিয়েছেন নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি। তবে প্রথম দফার নির্বাচনে তৃতীয় হওয়া সিনান ওগান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে সমর্থন দেওয়ায় বর্তমান প্রেসিডেন্টই ফের ক্ষমতায় আসতে পারেন বলে অনেকে মনে করছেন। আবার প্রথম দফায় ১২ লাখ ভোট পাওয়া ভিক্টোরি পার্টি কেমালকে সমর্থন দেওয়ায় দেখা দিয়েছে টান টান উত্তেজনা। তাই ‘অগ্নিপরীক্ষা’ হয়ে ওঠা এ নির্বাচনে শেষ হাসি কে হাসবেন, তা জানতে কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।

    তুরস্কের এবারের জাতীয় নির্বাচনে চরম নাটকীয় পরিস্থিতি দেখা গেছে। দেশটির নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট হতে হলে কোনো প্রার্থীকে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। কিন্তু গত ১৪ মে প্রথম দফার ভোটে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট পাননি। তাই নির্বাচন গড়ায় দ্বিতীয় দফায়। প্রথম দফার ভোটে এরদোয়ান ৪৯ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিলেন। কেমাল পেয়েছিলেন ৪৫ শতাংশ। প্রথম দফার ভোটের ফলে এরদোয়ানের চেয়ে প্রায় ২৫ লাখ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন কেমাল। আর সিনান ওগান ছিলেন তৃতীয় অবস্থানে। তার ঝুলিতে যায় ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ ভোট। এখন দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে সিনান সমর্থন দিয়েছেন এরদোয়ানকে। ফলে সিনান ওগান একজন কিংমেকার হয়ে উঠেছেন। তাই এরদোয়ানের ফের ক্ষমতায় আসাটা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে অনেকে মনে করছেন। তবে তুরস্কে অভিবাসনবিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত ভিক্টোরি পার্টি প্রথম দফার নির্বাচনে ১২ লাখ ভোট পেয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় দলটি কেমালকে সমর্থন দিয়েছে। এই দলের নেতা উমিত ওজাদাগ বলেন, ক্ষমতায় গেলে ১ কোটি ৩০ লাখ সিরীয় শরণার্থীকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে নিজ দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে, এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কেমাল। তাই তাকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা উচিত। এ ছাড়া প্রথম দফায় ভোটকেন্দ্রে না যাওয়া প্রায় ৮০ লাখ ভোটারও আজ প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে পারেন বলে জানা গেছে।

    এদিকে, শুক্রবার শেষ সময়ের প্রচারণায়ও ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন দুই প্রার্থী রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও কেমাল কিলিচদারোগলু। এরদোয়ানের অভিযোগ, কেমাল ঘৃণা ছড়াচ্ছেন। বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। রাজধানী আঙ্কারায় এদিন এক সমাবেশে এরদোয়ান বলেন, নির্বাচনে কেমালের জয় হলে সন্ত্রাসবাদ জিতে যাবে। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কেমালের ওঠাবসা। তিনি (কেমাল) নির্বাচনে বিজয়ী হলে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর জয় হবে। কাজেই তাকে নির্বাচিত হতে দেওয়া যাবে না। অন্যদিকে কেমাল সিরিয়া থেকে আসা শরণার্থীদের ইস্যু সামনে এনে জাতীয়তাবাদী ভোট নিজের ঝুলিতে ভরার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে এরদোয়ান অবশ্য বলেছেন, ইতোমধ্যে সিরীয় শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তিনি। আবারও ক্ষমতায় গেলে এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হবে। আরও বেশিসংখ্যক শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো হবে।

    উল্লেখ্য, এ সপ্তাহে চার ঘণ্টা বাবালা টিভি নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ভোটের প্রচার চালিয়েছেন কেমাল। ভোটার ও সমর্থকদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি। ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ এই অনুষ্ঠান দেখেছেন। বিশেষত তরুণদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এই অনুষ্ঠান। জাতীয়তাবাদী গুড পার্টির তরুণ প্রচারক মেহতেপ বলেন, ইউটিউবে কেমালের এই অনুষ্ঠান তরুণদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে। অনেক তরুণ ভোটার প্রথম দফায় ভোটকেন্দ্রে যাননি। তারা এখন নতুন করে ভাবছেন। আঙ্কারার দক্ষিণ-পূর্বের বালা শহরে কাবাবের দোকান চালান আল ওজদেমির। এরদোয়ানের দল একে পার্টির দপ্তরের সড়কে তার দোকান। তিনি বলেন, ‘আগেরবার এরদোয়ানকে ভোট দিয়েছি। এবারও দিব। আমি চাই, তিনি আবারও পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় আসুক।’ তবে বিভক্ত হয়ে পড়া ভোটাররা শেষ পর্যন্ত কাকে বেছে নেবেন, তা জানতে খুব একটা সময় অপেক্ষা করতে হবে না।

  • চীনে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট, সপ্তাহে সাড়ে ৬ কোটি আক্রান্তের শঙ্কা

    চীনে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট, সপ্তাহে সাড়ে ৬ কোটি আক্রান্তের শঙ্কা

    চীনে করোনাভাইরাসের নতুন একটি ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ছে। ‘এক্সবিবি’ নামক করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটি জুনের শেষ দিকে এতটাই ব্যাপক সংক্রমণ ঘটাতে পারে যে সপ্তাহে সাড়ে ছয় কোটির বেশি মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

    প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর চীন ‘জিরো কোভিড’ নীতি থেকে সরে আসার পর নতুন ভ্যারিয়েন্টটি ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যার ফলে দেশটিতে করোনার নতুন ঢেউ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে।

    স্বাস্থ্যবিদরা আশঙ্কা করছেন এক্সবিবির সংক্রমণে এই মাসের শেষ নাগাদ দেশটিতে সপ্তাহে ৪ কোটি সংক্রমণ ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর জুনের শেষে সংক্রমণ সপ্তাহে সাড়ে ছয় কোটিতে পৌঁছাতে পারে।

    ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে দেশটিতে একদিনে তিন কোটি সত্তর লাখ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড হয়েছিল। এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের রেকর্ড।

    এক্সবিবি হলো ওমিক্রনের বিএ.২.৭৫ এবং বিজে.১ এর সাব-ভ্যারিয়েন্টের একটি হাইব্রিড সংস্করণ। এতে ইমিউনকে দুর্বল করে ব্যাপক সংক্রমণের ক্ষমতা রয়েছে।

    স্পাইক প্রোটিনে এক্সবিবি’র সাতটি মিউটেশন রয়েছে। ইমিউন সিস্টেম এক্সবিবিকে চিনতে সময় নেয়। এটি ইমিউন কোষকে কৌশলে ধোকা দিয়ে শরীরের কোষে আরও সহজে প্রবেশ করতে পারে।

    গেল মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নেয়। এর কয়েক সপ্তাহ না যেতেই চীনে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট।

    এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে করোনার ধরন বিশ্লেষণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, জরুরি অবস্থা শেষ হয়ে গেলেও মহামারি শেষ হয়নি।

    চীনের গ্লোবাল টাইমস জানায়, চায়না সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (চায়না সিডিসি) অনুসারে, এক্সবিবি মিউট্যান্টের সংক্রমণের হার ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ০.২ শতাংশ থেকে এপ্রিলের শেষের দিকে ৭৪.৪ শতাংশে পৌঁছে। তারপরে মে মাসের শুরুতে তা ৮৩.৬ শতাংশে বেড়েছে।

    গবেষণায় দেখা গেছে, এক্সবিবির সংক্রমণক্ষমতা এবং ভ্যাকসিন প্রতিরোধের ক্ষমতা আগের ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে শক্তিশালী। তবে জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের মতে, এর প্যাথোজেনিসিটিতে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই।

    চায়না সিডিসির সাপ্তাহিক প্রকাশিত ডেটায় দেখা যায় যে, ৩৬৮টি কোভিড-১৯ সংক্রমণের মধ্যে ১০৪ জন দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হয়েছেন। যদিও এদের বড় একটি অংশ বুস্টার ডোজ পেয়েছেন।

    এর আগে সংক্রমণের ব্যাপক বৃদ্ধির সময় চীনে পণ্য মজুতের দিকে ঝুঁকেছিল মানুষ। এতে এক প্রকার সংকট তৈরি হয়। দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাও গুরুতর চাপের মধ্যে পড়েছিল। হাসপাতালগুলি রোগী দিয়ে ভরে যায় এবং ওষুধের ঘাটতিতে বিপাকে পড়ে দেশটির স্বাস্থ্যসেবা।

    এবার করোনার নতুন সংস্করণকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে চীন। চীনের শীর্ষস্থানীয় শ্বাসযন্ত্রের রোগ বিশেষজ্ঞ ঝং নানশান আশা করছেন, চীন শিগগিরই দেশে কোভিড-১৯-এর সর্বাধিক প্রভাবশালী স্ট্রেনকে লক্ষ্য করার জন্য দুটি নতুন ভ্যাকসিন পাবে।

    গত সোমবার চীনের গুয়াংঝু প্রদেশে গ্রেটার বে এরিয়া সায়েন্স ফোরামকে তিনি বলেছিলেন, ওমিক্রনের সাবভেরিয়েন্টগুলিকে লক্ষ্য করে ভ্যাকসিনগুলি প্রাথমিক অনুমোদন পেয়েছে। শিগগিরই এগুলো বাজারে আসবে।

    আরও চারটি নতুন ভ্যাকসিনও শিগগিরই অনুমোদন পাবে বলে আশা করা হয়েছিল। তবে সেগুলি কবে নাগার আসতে পারে বা অনুমোদন পাবে সে সম্পর্কে তিনি বিশদ কিছু জানাননি।

    পিকিং ইউনিভার্সিটি ফার্স্ট হাসপাতালের শ্বাস-প্রশ্বাস বিশেষজ্ঞ ওয়াং গুয়াংফা গ্লোবাল টাইমসকে বলেছেন, দ্বিতীয় ঢেউটি প্রথমটির মতো খারাপ হবে না, বা হাসপাতালগুলিকে অতিরিক্ত চাপে ফেলবে না। কারণ পুনরায় সংক্রমণ সাধারণত হালকা হয়। অর্থাৎ রোগীর অবস্থা গুরুতর করে না।

    তবে ওয়াং সংক্রমণ প্রতিরোধে জটিল রোগে আক্রান্ত ও দুর্বল মানুষদের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। এই ধরনের মানুষের জন্য সংক্রমণটি ক্ষতির কারণ হতে পারে।

    চীন ক্সবিবি মোকাবিলায় দুটি ভ্যাকসিন অনুমোদন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিগগিরই আরও তিন-চারটি অনুমোদন দেওয়া হবে। আরও কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরিতে আমরা অন্যান্য দেশের চেয়ে এগিয়ে চলেছি।

  • ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

    ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

    পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিসহ দলটির ৮০ জনেরও বেশি নেতার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ইমরান ও বুশরা ছাড়া এ তালিকায় রয়েছেন- আসাদ উমর, মালেকা বোখারি, কাসিম সুরি, আসাদ কায়সার, মুরাদ সাঈদ, হাম্মাদ আজহার, ইয়াসমিন রশিদ ও আসলাম ইকবাল। খবর ডনের

    বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বিশেষ সহকারী আতাউল্লাহ।

    তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা পাওয়া পিটিআই নেতাদের তালিকা দেশ থেকে বাইরে যাওয়ার সব পয়েন্টে ও বিমানবন্দরে পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা কেউই পাকিস্তান ছাড়তে পারবে না।

    এদিকে শুক্রবার পাকিস্তানের আরেক গণমাধ্যম ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ইমরান খানের নাম রাখায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পিটিআই চেয়ারম্যান।

    এক টুইটে ইমরান খান বলেন, বিদেশে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা আমার নেই, কারণ বিদেশে আমার কোনো সম্পত্তি বা ব্যবসা নেই, এমনকি দেশের বাইরে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টও নেই।

    তিনি আরও বলেন, আমি যদি ছুটি কাটানোর সুযোগ পাই, তাহলে আমাদের উত্তরাঞ্চলের পর্বতমালায় যাব। আমার কাছে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা।

    হঠাৎ করেই দলত্যাগ শুরু করেছেন পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতারা। এতে কঠিন পরীক্ষায় পড়েছেন ইমরান খান। এরই মধ্যে ইমরানের সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা নেতাও সরে গেছেন। কেউ কেউ বলছেন, তারা আর রাজনীতি করবেন না। সেনাবাহিনীর ধরপাকড় ও চাপে পড়ে নেতারা তার পাশ থেকে সরে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন ইমরান।

    তিনি বলেন, এমন দমন-পীড়নের ঘটনা পাকিস্তানের ইতিহাসে আমি আর দেখিনি। যদি বলেন, আপনারা পিটিআইয়ের সদস্য, তাহলে আপনাদের দমন-পীড়ন এবং সহিংসতার কবলে পড়তে হবে। বন্দি করা হবে। আর যদি জাদুকরি শব্দগুলো বলেন যে আমরা আর পিটিআইয়ের সঙ্গে নেই, তাহলে ছাড়া পাবেন।

    গত ৯ মে আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করার পর পাকিস্তানজুড়ে সহিংস বিক্ষোভে অন্তত ১০ জন নিহত হন। পরে গত ১২ মে ইসলামাবাদের হাইকোর্ট ইমরান খানকে জামিন দেন। এই জামিনের মেয়াদ বুধবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে ওইদিন ইমরান খানের বিরুদ্ধে করা মামলার বিস্তারিত প্রস্তুতির জন্য আরও সময় চেয়ে তার আইনজীবী আবেদন করার পর আদালত জামিনের মেয়াদ ৩১ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে জামান পার্কের বাড়িতেই অবস্থান করছেন পিটিআইপ্রধান।

  • নির্বাচনে সহিংসতা করলে বিরোধীদলও মার্কিন ভিসা পাবে না: ডোনাল্ড লু

    নির্বাচনে সহিংসতা করলে বিরোধীদলও মার্কিন ভিসা পাবে না: ডোনাল্ড লু

    বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধীদলের কেউ সহিংসতা বা ভোটারদের ভয় দেখালে সেই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন বলে জানিয়েছেন সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।

    বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানী‌তি ঘোষণার মধ্যেই দেশের এক‌টি বেসরকারি টেলিভিশনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হ‌য়ে এমন বার্তা দেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

    বাংলাদেশিদের কীভাবে এই নীতির আওতায় আনা হবে- জানতে চাইলে লু বলেন, এই নীতি সরকার ও বিরোধী দল সবার জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, সামনের নির্বাচনে যদি আমরা দেখি যে বিরোধীদলের কেউ সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছেন বা ভোটারদের ভয় দেখিয়েছেন, তাহলে সেই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না।

    তিনি বলেন, একইভাবে যদি আমরা দেখি যে সরকারের বা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কেউ যদি ভোটারদের ভয় দেখায় অথবা সহিংসতায় জড়ায় অথবা বাক স্বাধীনতাকে অগ্রাহ্য করে, তবে সেই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

    জড়িত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা বিধিনিষেধে বিষ‌য়ে জান‌তে চাইলে লু বলেন, নতুন এই নীতি ও যে আইনের ওপর ভিত্তি করে এটি নেওয়া হয়েছে, উভয় জায়গাতেই এই বিষয়টি খুব স্পষ্ট। অভিযুক্ত ব্যক্তির নিকট পরিবারের সদস্যরা অর্থাৎ স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানরা এই নীতিতে ভিসা বিধিনিষেধের সম্মুখীন হবেন।

    ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ভিসা বাতিলের বিষয়‌টি কীভাবে জানা‌নো হবে- জানতে চাইলে লু বলেন, যাদের ভিসা প্রত্যাহার করা হবে এমন সবাইকেই আমাদের সিদ্ধান্তের বিষয়টি তৎক্ষণাৎ জানানো হবে।

    গত ১৪ মে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তা কমিয়ে আনার ঘটনার জেরেই কী এই নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে কিনা- জান‌তে চাইলে লু বলেন, বিষয়টি একেবারেই এরকম না। গত ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে যখন নতুন এই নীতির বিষয়ে অবহিত করা হয়। তখন আমি ব্যক্তিগতভাবে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলাম। সুতরাং নতুন এই নীতি ও এর ঘোষণা কোনোভাবেই সরকারের ১৪ মের ঘটনার সাথে সম্পর্কিত নয়। যুক্তরাষ্ট্র সরকার কখনো প্রতিশোধের মনোভাব নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় না এবং নেবে না।

    বাংলাদেশের নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রাখা হয় লুর কা‌ছে। জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কাছে বাংলাদেশের বিশেষ স্থান রয়েছে। এই দুই দেশের মানুষে–মানুষে, পারিবারিক, প্রাতিষ্ঠানিক, বিশ্ববিদ্যালয় ও কোম্পানি পর্যায়ে দারুণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে চেষ্টা করি যা বাইডেন–হ্যারিস প্রশাসনের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের গণতন্ত্র রয়েছে যে কারণেই এখানে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দরকার।

     

  • যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পলিসি, নির্বাচনে বাধা দিলে ভিসা নয়

    যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পলিসি, নির্বাচনে বাধা দিলে ভিসা নয়

    চলতি বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে। যেসব ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করবে বা গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করার চেষ্টা করবে, তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ জারি করবে যুক্তরাষ্ট্র।

    বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এক টুইটবার্তায় এ ঘোষণা দেন। পরে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়েও এ তথ্য নিশ্চিত করেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

    বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ৮ মিনিটে এক টুইটবার্তায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যকে সহায়তা করতে আমি আজ ইমিগ্রেশন অ‌্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ২১২ (এ) (৩) (সি) (৩সি) ধারার আওতায় নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এই নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে।

    বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা/কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নতুন এই নীতির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

    পরে বাংলাদেশের মার্কিন দূতাবাস থেকে দেওয়া এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কাজের মধ্যে রয়েছে- ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দেওয়া এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখা।

    ব্লিনকেন বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমসহ সবার। যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সকলকে আমাদের সমর্থন দিতে আমি এই নীতি ঘোষণা করছি।’

    গত ৩ মে বাংলাদেশ সরকারকে এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে।

  • ‘পরবর্তী মহামারির জন্য বিশ্বকে অব্যশই প্রস্তুত থাকতে হবে’

    ‘পরবর্তী মহামারির জন্য বিশ্বকে অব্যশই প্রস্তুত থাকতে হবে’

    প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের ধাক্কা কাটিয়ে না ওঠতেই পরবর্তী মহামারির বিষয়ে বিশ্বকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ড. টেড্রস আধানম গেব্রিয়াসুস। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির চেয়েও মারাত্মক কিছু দেখা দিতে পারে আগামীতে।

    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭৬তম সভায় এক প্রতিবেদন পেশ করার সময় এসব কথা বলেন তিনি। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির বুধবারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

    ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহুান শহরে করোনা ভাইরাসের প্রথম উৎপত্তির খোঁজ পাওয়া যায়। এর কিছুদিনের মধ্যেই পুরো দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। ওয়ার্ল্ডো মিটারের সাইটের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৮ লাখ ৮১ হাজার। শনাক্ত ও মৃত্যুর হার অনেকটা কমে এলেও এখনও রয়ে গেছে ঝুঁকি।

    বিশ্বে কিছুটা স্থিতিশীলতা যখন ফিরে এসেছে, তখনই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিলেন স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান। তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা তুলে নেওয়া হলেও, তার মানে এই ভাইরাসের ঝুঁকি শেষ হয়নি। আরও নতুন নতুন রোগ সম্মুখীন হওয়ার শঙ্কা আছে।

    পরবর্তী মহামারি মোকাবিলায় সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন গেব্রিয়াসুস।