Category: আন্তর্জাতিক

  • বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করবে না আদানি, বকেয়া দেওয়ার অনুরোধ

    বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করবে না আদানি, বকেয়া দেওয়ার অনুরোধ

    বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পাবে ভারতের আদানি পাওয়ার। তবে এত টাকা বকেয়া থাকলেও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখবে প্রতিষ্ঠানটি।

    ভারতীয় আর্থিক ও ব্যবসা বিষয়ক সংবাদমাধ্যম মানিকন্ট্রোল শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

    আদানি গ্রুপের একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, “বকেয়া দ্রুত পরিশোধের জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আমরা বাংলাদেশকে জানিয়েছি বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরিতে অর্থলগ্নিকারীদের চাপে আছে আদানি গ্রুপ। এছাড়া আদানি গ্রুপ আশা প্রকাশ করেছে বিলম্বের সুদসহ সব বকেয়া দ্রুত পরিশোধ করা হবে।”

    ঝারখণ্ডে তৈরি করা আদানির ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চুক্তি আছে। প্রতিমাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ আদানি গ্রুপকে ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার দিতে হয় বাংলাদেশকে।

    তবে সময় মতো অর্থ পরিশোধ না করায় এখন বাংলাদেশের কাছে আদানির পাওনা ৮০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার সমান।

    ২০১৭ সালে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ২৫ বছরের চুক্তি করে বিপিডিসি। চুক্তি অনুযায়ী গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশ ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নেবে। যা পিক পাওয়ার ডিমান্ডে বাংলাদেশে মোট চাহিদার ১০ শতাংশ।

    ২ বিলিয়ন ডলার খরচ করে তৈরি করা আদানির গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব বিদ্যুতই বাংলাদেশে আসে।

    ২০২৩ সালে জুনে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় এবং ওই মাস থেকেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে তারা।

    চুক্তি অনুযায়ী, আদানি গ্রুপকে বিদ্যুৎ সরবরাহের পাওনা মার্কিন ডলারে অর্থ পরিশোধ করে বাংলাদেশ। কিন্তু গত ২৩ আগস্ট মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানায়, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ২০ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। যেটি দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

    প্রতিবেদনে আরও বলা হয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে আরও ঋণ পাওয়ার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে সংস্থাটি থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে ঢাকা।

    এদিকে বাংলাদেশ যদি আদানির বিদ্যুৎ কেনা বন্ধ করে দেয় এমন আশঙ্কা থেকে ভারত সরকার তাদের বিদ্যুৎ নীতিতে পরিবর্তন এনেছে। এতে বলা হয়, যেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধুমাত্র বিদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে তৈরি করা হয়েছে তারা চাইলে স্থানীয় বাজারেও বিদ্যুৎ দিতে পারবে।

  • বর্তমান সরকারের সঙ্গেই কাজ করবে ভারত : জয়শঙ্কর

    বর্তমান সরকারের সঙ্গেই কাজ করবে ভারত : জয়শঙ্কর

    বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে ভারত কাজ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন, ভারতকে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ স্বার্থে কাজ করতে হবে। সেখানে বর্তমানে যে সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, ভারত তার সঙ্গেই কাজ চালিয়ে যাবে।

    শুক্রবার (৩০ আগস্ট) দিল্লিতে রাজীব সিক্রির লেখা ‘স্ট্র্যাটেজিক কনড্রামস : রিশেপিং ইন্ডিয়াস ফরেন পলিসি’ বই প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

    এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় থেকেই আমাদের সম্পর্ক চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে এবং এটি স্বাভাবিক, আমরা বর্তমান সরকারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।’

    তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমাদের এ-ও স্বীকার করতে হবে, সেখানে রাজনৈতিক নানা পরিবর্তন হয়েছে। এসব পরিবর্তন অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে পারে। স্পষ্টতই এখানে আমাদের পারস্পরিক স্বার্থ দেখতে হবে।’

    এর আগে গত ১৭ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপ হয়েছে।

    ওই সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের কাছ থেকে ফোন পেয়েছি। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে।’

    পোস্টে তিনি আরো লেখেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ এবং অগ্রগামী বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থনের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছি।

    তিনি আমাকে বাংলাদেশে হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘুর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়েছেন।’

    গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর থেকে ছোট বোন শেখ রেহানাসহ তারা ভারতেই অবস্থান করছেন।

  • বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাইডেনের সঙ্গে কথা বললেন মোদি

    বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বাইডেনের সঙ্গে কথা বললেন মোদি

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে ফোনালাপে কথা বলেছেন। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের এ ফোনালাপে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র দফতর।

    বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তারা।

    সোমবার (২৬ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতি বলা হয়েছে, দুই নেতার মধ্যে বেশ কিছু আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে বিস্তারিত মতবিনিময় হয়েছে। এতে উঠে আসে মোদীর সাম্প্রতিক ইউক্রেন সফর ও কোয়াড ইস্যুও।

    বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দো-মার্কিন কৌশলগত অংশীদারত্বের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গভীর প্রতিশ্রুতির জন্য তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

  • শেখ হাসিনাকে ডুবিয়েছেন ‘গ্যাং অব ফোর’

    শেখ হাসিনাকে ডুবিয়েছেন ‘গ্যাং অব ফোর’

    ‘আমি আপনার সঙ্গে দেখা করতে পারব না’; ‘আমি আত্মগোপনে আছি, ফোনে কথা বলতে পারি’; ‘নিরাপদ কোনো স্থানে আমি আপনার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করব’; ‘আপনার গতিবিধি নজরদারি করা হবে, তাই আমি আপনার সঙ্গে দেখা করতে পারব কি না, জানি না’।

    এগুলো ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ তাঁর দল আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা–কর্মী ও সাবেক সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সদস্যদের পাঠানো কিছু বার্তা; যা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পেয়েছে।

    দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গত এক সপ্তাহে এই ব্যক্তিদের কারও কারও সঙ্গে অজ্ঞাত স্থানে দেখা করতে এবং বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রতিশোধের শিকার হওয়ার শঙ্কায় আত্মগোপনে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হয়েছে।

    এই ব্যক্তিদের অভিন্ন কথা, ‘শেখ হাসিনা দল ও জনগণকে পরিত্যাগ করেছেন।’ তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘আপা (হাসিনা) আমাদের ছেড়ে গেছেন।’

    আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, পুলিশের নিষ্ঠুরতায় জনগণের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তা আমরা বুঝছিলাম। বিএনপিকে নির্বাচনী তরিতে ওঠানো গেলে সেই ক্ষোভ হয়তো থামানো যেত। তাতে আমরাই আবার জিততে পারতাম এবং দল ক্ষমতায় থাকত।

    নেতা–কর্মীদের পরিত্যাগ করে শেখ হাসিনার চলে যাওয়ার একই অনুভূতি শেয়ার করছেন আরও অনেকেই। ৫ আগস্টের ঘটনাবলি তাঁরা আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি। সেদিন শেখ হাসিনা তাঁর বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ ভারতে রয়েছেন।

    আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য, এমনকি ঘনিষ্ঠ সহযোগীদেরও ‘পুরোপুরি বিস্মিত’ করেছে। এক নেতা বলেন, ‘আমরা টেলিভিশনের খবর থেকে এটা জানতে পারি।’

    শেখ হাসিনার দেশত্যাগে বিপদে নেতা–কর্মীদের জীবন
    এভাবে শেখ হাসিনার চলে যাওয়ার ঘটনা আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের জীবন বিপদের মধ্যে ফেলেছে। ‘বিক্ষোভকারী, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কর্মী এবং সুযোগসন্ধানীরা’ আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দলীয় কার্যালয়গুলো নিশানা বানান। করা হয় অগ্নিসংযোগ, লুট; চালানো হয় ভাঙচুর।

    আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘(৫ আগস্ট শেখ হাসিনা চলে যাওয়ার পর) আমরা একটা সময়ই শুধু বাড়ি থেকে বের হওয়ার সুযোগ পাই। সেটি সেনাপ্রধান যখন বেলা তিনটার দিকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ও মানুষ তা শুনতে টেলিভিশনের পর্দায় নজর রাখছিলেন।’

    চারজনের এই দল তাঁর (হাসিনা) পতনে নেতৃত্ব দিয়েছে। এই ব্যক্তিদের ওপর তাঁর ছিল অন্ধবিশ্বাস। তাঁর যে সহজাত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ছিল, তা তিনি তাঁদের কারণে হারিয়েছেনঃ আত্মগোপনে থাকা একজন আওয়ামী লীগ নেতা

    আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে শেখ হাসিনার সরকার বিরোধী দলের নেতাদের নিশানা করে, কারাগারে পাঠায়, মারধর করে, ভয়ভীতি দেখায় ও হয়রানি করে। কিন্তু পরে হঠাৎই পরিস্থিতি উল্টে যায়।

    সাম্প্রতিকতম ঘটনার (শেখ হাসিনার পতন ও দেশত্যাগ) খানিকটা পেছনে তাকালে দেখা যাবে, ঘটনাপ্রবাহে কেউ কেউ (হাসিনা সরকারের) বিশেষ করে গত জুলাইয়ে শিক্ষার্থী ও বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে ৩–৪ আগস্ট ছাত্র–জনতা রাস্তায় নেমে আসেন। ৫ আগস্ট বিক্ষোভকারীরা কারফিউ ভাঙেন। সেদিনই সরকারের পতন ঘটে।

    ‘গ্যাং অব ফোর’
    আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের জন্য আত্মগোপনে থাকা ওই নেতাদের একজন দলের অভ্যন্তরীণ একটি স্বার্থগোষ্ঠীকে দায়ী করে বলেছেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) আমাদের কথা শোনেননি।’ এই গোষ্ঠীকে ‘গ্যাং অব ফোর’ বলে আখ্যায়িত করেন নেতাদের একজন। তিনি বলেন, গোষ্ঠীটি শেখ হাসিনাকে বাস্তব অবস্থা বুঝতে দেয়নি।

    এই চার নেতা হলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

    আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেন, ‘চারজনের এই দল তাঁর (হাসিনা) পতনে নেতৃত্ব দিয়েছে। এই ব্যক্তিদের ওপর তাঁর ছিল অন্ধবিশ্বাস। তাঁর যে সহজাত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ছিল, তা তিনি তাঁদের কারণে হারিয়েছেন।’

    দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গত এক সপ্তাহে এই ব্যক্তিদের কারও কারও সঙ্গে অজ্ঞান স্থানে দেখা করতে এবং বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রতিশোধের শিকার হওয়ার শঙ্কায় আত্মগোপনে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হয়েছে। তাঁদের অভিন্ন কথা, ‘শেখ হাসিনা দল ও জনগণকে পরিত্যাগ করেছেন।’

    বিএনপিকে নির্বাচনে না আনা ‘বড় ভুল’
    এ বছরের জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিএনপিকে না আনা শেখ হাসিনার একটি ‘বড় ভুল’ হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে।

    সূত্রগুলো বলেছে, আওয়ামী লীগের কিছু নেতা মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে লন্ডনে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন।

    একটি সূত্রের ভাষ্যমতে, ‘আড়ালে থাকা একটি চ্যানেলের মাধ্যমে প্রস্তাবও দেওয়া হয় (বিএনপিকে নির্বাচনে আনার)। আমাদের ধারণা, তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় চ্যানেলটি ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের এক বছর আগেই ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়…কিন্তু শেখ হাসিনা ওই প্রস্তাবে সবুজসংকেত দেননি।’

    আওয়ামী লীগের একজন নেতার বক্তব্য, বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার বিষয়টি শেখ হাসিনার প্রত্যাখ্যান করা ছিল ‘সাংঘাতিক ভুল’। কেননা, একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বিএনপিকে নির্বাচনে আনা গেলে বিরোধীদের রাগ–ক্ষোভ হয়তো মিটে যেত।

    ওই নেতা আরও বলেন, ‘দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, পুলিশের নিষ্ঠুরতায় জনগণের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তা আমরা বুঝছিলাম। বিএনপিকে নির্বাচনী তরিতে ওঠানো গেলে সেই ক্ষোভ হয়তো থামানোও যেত। তাতে আমরাই আবার জিততে পারতাম এবং দল ক্ষমতায় থাকত।’

    নেতা–কর্মীরা মনে করেন, বিশেষ করে গত জানুয়ারির নির্বাচনে জেতার পর শেখ হাসিনা আরও একগুঁয়ে হয়ে ওঠেন ও কোনো পরামর্শ শোনেননি। এ প্রসঙ্গে ওই নেতা বলেন, ‘টানা চতুর্থবার জিতে তিনি (হাসিনা) অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন এবং কোটা সংস্কার নিয়ে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলনে সৃষ্ট ক্ষোভের মাত্রা বুঝতে ব্যর্থ হন।’

    সূত্রগুলো বলেছে, কৌশলে কিছু নেতা শেখ হাসিনাকে জুলাইয়ের শুরুতে ছাত্র বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। তবে তা প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। (হাসিনা সরকারের) কফিনে শেষ পেরেকটি বসে তখন, যখন একই মাসে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা ছাত্রনেতাদের তুলে নিয়ে যান এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে ও আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারে জোরপূর্বক প্রতিশ্রুতি আদায় করে ছেড়ে দেন।

    এ কৌশল হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়ায়। কর্মসূচি প্রত্যাহারে কীভাবে জোরপূর্বক প্রতিশ্রুতি আদায় করা হয়েছে, ছাত্রনেতারা সেই বিষয় জনসমক্ষে প্রকাশ করে দেন। এটি পরপর কিছু ঘটনার সূত্রপাত ঘটায় এবং শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।

    শেখ হাসিনার পতনের পর জীবনাশঙ্কায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা–কর্মী ও বুদ্ধিজীবী দেশজুড়ে বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নেন।

    আশ্রয় নেওয়া এই ৬২৬ জনের মধ্যে ছিলেন নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতা, ৫ জন বিচারক, বেসামরিক প্রশাসনের ১৯ কর্মকর্তা, ২৮ পুলিশ কর্মকর্তা, বিভিন্ন পদের ৪৮৭ জন পুলিশ সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ নানা পেশার ১২ জন ও ৫১টি পরিবার।

    ঘটনাচক্রে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টাকালে আটক হন শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

    শেখ হাসিনার দেশত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা আত্মগোপন করেছেন, কেউবা গ্রেপ্তার হয়েছেন। নেতারা বলছেন, ৭৫ বছরের পুরোনো যে দল টানা ১৫ বছরের বেশি দেশ শাসন করেছে, তারাই এখন অস্তিত্ব সংকটে।

    এদিকে দল গোছানোর ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের প্রথম পদক্ষেপ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাদের একজন বলেন, ‘দলকে পুনর্গঠনে তাঁকে (হাসিনা) তৃণমূল পর্যায়ের লোকজন বাছাই করতে হবে, তাঁদের মধ্যে থাকবেন কিছু তরুণ আওয়ামী নেতা; মাঠপর্যায়ে যাঁদের ব্যাপারে মানুষের আস্থা আছে, লোকজনের সঙ্গে যাঁদের যোগাযোগ আছে এবং অবশ্যই পরিবারের (হাসিনা) প্রতি অনুগত…এ যাত্রা দীর্ঘ হবে।’

    এ নেতা আরও বলেন, ‘আমাদের শক্ত ঘাঁটি ও কর্মী বাহিনী রয়েছে। অনেকে বিপথগামী হয়েছেন, যেমনটা ঘটেছে সুবিধাবাদীদের ক্ষেত্রে। সমর্থকদের মধ্যেও এমনটা থাকবে। কিন্তু আমাদের অন্তত এমন কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী থাকা দরকার; যাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে ও নির্বাচন যখনই হোক, তাতে অংশ নেবে। এখন এটাই প্রয়োজন।’

    এ পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরার বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রুহুল কবির রিজভীর মতো কয়েকজন নেতার ভূমিকার দিকে ইঙ্গিত করেন তিনি। বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে থাকাকালে ও তারেক রহমান বিদেশে অবস্থানকালে বিএনপির দুর্গ সামলেছেন তাঁরা।

    দেশে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগবিরোধী মনোভাব বিরাজ করায় শেখ হাসিনার পরিবার ও এর উত্তরসূরি সজীব ওয়াজেদ জয়ের খুব কম বক্তব্য-বিবৃতি দেওয়া উচিত বলে মনে করেন দলটির নেতারা।

    আওয়ামী লীগের নেতাদের একজন বলেন, ‘লোকজন এখনো ক্ষেপে আছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাঁদের সময় দিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার বা বিএনপি কিংবা জামায়াতের নেতৃত্বাধীন সরকার যে–ই কয়েকটা বছর ক্ষমতায় থাকুক, আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা আছে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের আবার সংগঠিত হওয়ার কথা ভাবতে হবে।’

  • বন্যাদুর্গত বাংলাদেশিদের নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার এ কেমন হাস্যরস!

    বন্যাদুর্গত বাংলাদেশিদের নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার এ কেমন হাস্যরস!

    টানা বৃষ্টি ও ভারত বাঁধ খুলে দেওয়ায় ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও মৌলভীবাজারে দেখা দিয়েছে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। বন্যার পানিতে লাখ লাখ মানুষের বাড়িঘর-ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। সেসব এলাকায় তৈরি হয়েছে মানবিক বিপর্যয়। ভয়াবহ এই বন্যায় বাংলাদেশের মানুষ ছাড়াও দুর্গতিতে পড়েছেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাধারণ মানুষ।

    কিন্তু এসবের মধ্যেই বাংলাদেশি বন্যাদুর্গতদের নিয়ে নির্লজ্জ হাস্যরস করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘জি- ২৪ ঘণ্টা’। তারা বাংলাদেশিদের দুঃখ-দুর্দশাকে প্রহসন করে করে সংবাদ প্রকাশ করেছে। সংবাদের শিরোনামে লেখা হয়েছে, “ভারত ছাড়ল জল! হাবুডুবু খেতে খেতে বাংলাদেশের কাতর আর্জি…”

    ‘জি- ২৪ ঘণ্টা’-র মতো সংবাদমাধ্যমে এমন শিরোনাম দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরা। তারা অনেকেই দাবি করছেন বাংলাদেশিদের বন্যার পানিতে ইচ্ছেকরে ডুবিয়েছে ভারত। তারা কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়া রাতের আঁধারে বাঁধ খুলে দিয়েছে।

    গত দুইদিন ধরে ভারতের ত্রিপুরায় অস্বাভাবিক বৃষ্টি হচ্ছে। এতে রাজ্যটির প্রায় সব জায়গায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার পানি যেন উপচে না পড়ে সেজন্য গতকাল মঙ্গলবার রাতে গোমতী নদীতে তৈরি করা ডিম্বুর জলাধার বাঁধ খুলে দেওয়া হয়। বাঁধ খোলার পর বাংলাদেশের কুমিল্লা দিয়ে পানি আসা শুরু করে। এছাড়া অল্প সময়ের মধ্যে বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় পুরো ফেনী জেলা। বন্যার কারণে ফেনীর সঙ্গে দেশ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেখানে বন্ধ আছে সড়ক যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা।

    অপরদিকে ভালো অবস্থায় নেই ত্রিপুরাও। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় সাধারণের তুলনায় ১ হাজার ২০০ গুণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন পুরো রাজ্যের মানুষ।

  • বাংলাদেশে হত্যা ও অধিকার লঙ্ঘনের দায়ে জড়িতদের বিচার চায় জাতিসংঘ

    বাংলাদেশে হত্যা ও অধিকার লঙ্ঘনের দায়ে জড়িতদের বিচার চায় জাতিসংঘ

    বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ব্যাপক সহিংসতা, প্রাণহানি এবং হতাহতের ঘটনায় জড়িতদের বিচার চায় জাতিসংঘ। একইসঙ্গে সহিংসতা, প্রাণহানি এবং মানবিক ও রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহির মুখোমুখি করা দরকার বলেও মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।

    স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ বিষয়ে দেওয়া বিবৃতিতে এবং সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এসব মন্তব্য করেন।

    তিনি বলেন, বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি লিখেছেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। চিঠিতে বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।

    এদিনের ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক প্রথমে বাংলাদেশ ইস্যুতে একটি বিবৃতি পাঠ করেন। এরপর সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে কথা বলেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমি মহাসচিব কর্তৃক (ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে) প্রেরিত একটি চিঠি সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন পেয়েছি। আমি আপনাদের বলতে পারি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি চিঠি লিখেছেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। চিঠিতে মহাসচিব বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা ও সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন।

    তিনি বলেন, চিঠিতে মহাসচিব আরও বলেছেন— তিনি আশা করেন, যুবক ও নারীদের পাশাপাশি সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বরও বিবেচনায় নেওয়াসহ ড. ইউনূসের সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা গ্রহণ করবে। তিনি সব নাগরিক এবং বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্ভর করছেন। এছাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য ড. ইউনূসকে জোরালোভাবে আহ্বান জানিয়েছেন মহাসচিব, বিশেষ করে মিয়ানমারের অবনতিশীল পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে।

    পরে এক সাংবাদিক বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, সংকটময় এই সময়ে বাংলাদেশ যখন স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন বাংলাদেশকে সমর্থন জানিয়ে মহাসচিব যে চিঠি লিখেছেন তার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় স্বৈরাচার হাসিনার দেখামাত্র গুলির নির্দেশে ৮১৯ জনের মৃত্যু এবং অন্তত ২৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ। এই হত্যাকাণ্ড এবং হতাহতের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবি করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব?

    জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, হ্যাঁ। আমরা এই বিশেষ সংকটের শুরু থেকেই জবাবদিহিতার কথা বলে আসছি। সহিংসতা, প্রাণহানি এবং মানবিক ও রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতার মুখোমুখি করা দরকার।

  • অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টাকে পূর্ণ সমর্থন করে জাতিসংঘ: গুতেরেস

    অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টাকে পূর্ণ সমর্থন করে জাতিসংঘ: গুতেরেস

    বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চিঠি লিখেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

    সেখানে তিনি আবারও বলেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে তার সরকারের প্রচেষ্টাকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে জাতিসংঘ।

    বাংলাদেশ তার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এই ক্রান্তিকালীন সময়ে সহিংসতার অবসান, জবাবদিহিতা নিশ্চিত এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথ নির্ধারণে ড. ইউনূসের নেতৃত্ব হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

    গত ১৬ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো চিঠিতে আন্তোনিও গুতেরেস একথা জানিয়েছেন।

    আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, জাতিসংঘ ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে কাজ করতে এবং অনুরোধ পেলে যেকোনও সমর্থন দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে আবাসিক সমন্বয়কারী এবং জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমের মাধ্যমে এই অনুরোধ করা যেতে পারে।

    গতকাল সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং চিঠিটি শেয়ার করে। চিঠিতে জাতিসংঘ প্রধান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য তাকে তার শুভেচ্ছা জানান।

    গুতেরেস বলেন, বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে আমি স্বাগত জানাই।

    জাতিসংঘ প্রধান আরও বলেন, এই ক্রান্তিকালীন সময়ে সহিংসতার অবসান ঘটাতে, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে, আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করতে এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথ নির্ধারণে ড. ইউনূসের নেতৃত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।

    তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, যুবক ও নারীদের পাশাপাশি সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বরও বিবেচনায় নেওয়াসহ আপনার সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা গ্রহণ করবে।’

    চিঠিতে গুতেরেস বলেছেন, তিনি সব নাগরিক এবং বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্ভর করছেন।

    তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য আমি আপনাকে জোরালোভাবে আহ্বান জানাচ্ছি, বিশেষ করে মিয়ানমারের অবনতিশীল পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে।’

    গুতেরেস বলেন, বাংলাদেশ তার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

  • মোদির ১৭৩ ভাষণের মধ্যে ১১০টি মুসলিমবিদ্বেষী: এইচআরডব্লিউ

    মোদির ১৭৩ ভাষণের মধ্যে ১১০টি মুসলিমবিদ্বেষী: এইচআরডব্লিউ

    আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) জানিয়েছে, ভারতে লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ১৭৩টি ভাষণের মধ্যে ১১০টি মুসলিমবিদ্বেষী ছিল। এই তথ্য সম্প্রতি ১৬ মার্চ নির্বাচনী আচরণবিধি কার্যকর হওয়ার পর মোদির ভাষণের বিশ্লেষণের মাধ্যমে উঠে এসেছে।

    হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) জানায়, মোদির ১৭৩টি ভাষণের মধ্যে ৬৩ শতাংশে, অর্থাৎ ১১০টি ভাষণে, মোদি মুসলমানদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন। এর মাধ্যমে সম্ভবত তিনি রাজনৈতিক বিরোধীদের দুর্বল করার চেষ্টা করেছেন।

    ১৪ আগস্ট প্রকাশিত এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মোদি এমন মন্তব্য করেছেন যা মুসলমান সমাজের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করেছে। রিপোর্টে বলা হয়, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়মিতভাবে মুসলমান ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে সহিংসতা উসকে দিয়েছে।

    প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজেপির নেতৃত্বাধীন কিছু রাজ্য সরকার মুসলমানদের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয় ধ্বংস করেছে এবং বেআইনি কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। নির্বাচনের পরও এসব কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে অন্তত ২৮টি হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ১২ জন মুসলমান পুরুষ ও ১ জন খ্রিষ্টান নারী মারা গেছেন।

    এদিকে মোদি নিজে মুসলমানদের বিরোধিতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং ভারতের গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ প্রকৃতি তুলে ধরেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ‘আমরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে নই,’ এবং ‘হিন্দু-মুসলিম’ প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা করবেন না।

    তবে এইচআরডব্লিউ তাদের প্রতিবেদনে দাবি করেছে, মোদি নিয়মিত মিথ্যা দাবি করে হিন্দুদের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করেছেন। মোদি বিভিন্ন ভাষণে মুসলমানদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং তাদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে যাবে বলে ভীতি সৃষ্টি করেছেন।

    প্রতিবেদনে উল্লেখিত কিছু উদাহরণে দেখা গেছে, মোদি ঝাড়খন্ডের কোডারমায় বলেছিলেন, ‘আমাদের দেবতাদের মূর্তিগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে এবং মুসলিমরা আমাদের বোন ও কন্যাদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।’ এছাড়া, উত্তর প্রদেশে তিনি দাবি করেছেন যে বিরোধী দল ক্ষমতায় এলে রামমন্দিরের ক্ষতি হবে।

    এইচআরডব্লিউয়ের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ইলেইন পিয়ারসন বলেছেন, মোদি প্রশাসনের অধীন সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এক দশকের আক্রমণ ও বৈষম্য নতুন করে সহিংসতা ও নির্যাতনকে স্বাভাবিক করেছে।

    এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ভারতের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়াল

    গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়াল

    ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে এ পর্যন্ত গত ১০ মাসে গাজায় মোট নিহত হয়েছেন ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। সেই সঙ্গে মোট আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৯২ হাজার।

    যুদ্ধে অবশ্য ইসরায়েলি বাহিনীর সেনা সদস্যরাও নিহত হয়েছেন। গত দশ মাসের যুদ্ধে গাজায় নিহত হয়েছেন ৩ শতাধিক সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট।

    স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, গাজায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪০ হাজার ৫ জন এবং আহত হয়েছেন মোট ৯২ হাজার ৪০১ ফিলিস্তিনি। এই নিহত এবং আহতদের মধ্যে সামরিক-বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের অনুপাত কত— তা আলাদা করা হয়নি; তবে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজার হতাহতদের অধিকাংশই নারী এবং শিশু।

    এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, যুদ্ধে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে হামাসের ১৭ হাজার যোদ্ধা। কোন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিহত হামাস যোদ্ধাদের এই সংখ্যা সম্পর্কে আইডিএফ নিশ্চিত হলো— তা অবশ্য ভেঙে বলেননি রিয়ার অ্যাডমিরাল হাগারি।

    ফিলিস্তিনের সাংবাদিক এবং সেখানে কর্মরত আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মীদের মতে, গাজায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কারণ যেসব নিহত ও আহত ফিলিস্তিনিদের হাসপাতাল পর্যন্ত নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে, শুধু তাদের হিসেব দিয়ে হতাহতের তালিকা তৈরি করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় যারা ধংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ছেন, তাদেরকে তালিকায় রাখা হয়নি। তাছাড়া খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদেরকেও হিসেবে ধরা হয়নি।

    তাদের এই বক্তব্যকে সমর্থন করে এবং নিজেদের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে গত জুলাই মাসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা ও পিআর রিভিউ সাময়িকী ল্যানসেট। সেখানে দাবি করা হয়, যুদ্ধের গত দশ মাসে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজারের বেশি।

    ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস এবং তাদের মিত্রগোষ্ঠী প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের ১ হাজার যোদ্ধা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে মোট নিহত হন ১ হাজার ২০০ জন। সেই সঙ্গে ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় যোদ্ধারা।

    আকস্মিক এই হামলার পর ওইদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে।

    হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সমঝোতা এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য অভিযানের শুরু থেকে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর এবং কাতার— ৩ দেশ। গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তির জন্য দু’পক্ষকে একটি নতুন চুক্তির আওতায় আনতে চেষ্টা করছেন মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। গতকাল ১৫ আগস্ট ছিল সেই চুক্তি প্রস্তুত সংক্রান্ত বৈঠক। ইসরায়েল এবং হামাস নেতাদের সেই বৈঠকে আসার আহ্বানও জানানো হয়েছিল।

    সেই বৈঠকে আসতে সম্মত হয়েছিল ইসরায়েল। তবে হামাসের হাইকমান্ড জানিয়েছে, তারা আর নতুন কোনো বৈঠক চায় না; এর পরিবর্তে গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজায় যে তিন স্তরের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, সেটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে গোষ্ঠীটি।

  • হাসিনাকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও ভূমিকা নেই : হোয়াইট হাউস

    হাসিনাকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও ভূমিকা নেই : হোয়াইট হাউস

    ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে।

    রাজনৈতিক এই পটপরিবর্তনের ঘটনায় গুঞ্জন-জল্পনায় উঠে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কথা। তবে হাসিনাকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও ভূমিকা নেই বলে জানিয়েছে দেশটি।

    এমনকি বাংলাদেশে মার্কিন হস্তক্ষেপের অভিযোগ ‘কেবলই মিথ্যা’ বলেও আখ্যায়িত করেছে দেশটি। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

    প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা ছিল না বলে সোমবার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশে মার্কিন হস্তক্ষেপের অভিযোগকে ‘কেবলই মিথ্যা’ বলেও অভিহিত করেছে হোয়াইট হাউস।

    বাংলাদেশে সরকার উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়েরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমাদের আদৌ কোনও সম্পৃক্ততা ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিল বলে যদি কোনো প্রতিবেদনে বলা হয় বা গুজব ছড়ানো হয় তবে তা নিছক মিথ্যা।’

    রয়টার্স বলছে, গত রোববার ভারতের ইকোনমিক টাইমস পত্রিকা তাদের একটি প্রতিবেদনে হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছে কারণ তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ চায়। পত্রিকাটি বলেছে, হাসিনা তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মাধ্যমে পত্রিকাটির কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।

    হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ অবশ্য গত রোববার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, তিনি (হাসিনা) কখনোই এ ধরনের কোনও বক্তব্য দেননি।

    হোয়াইট হাউস সোমবার আরও বলেছে, ‘আমরা বিশ্বাস করি— বাংলাদেশি জনগণেরই বাংলাদেশ সরকারের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা উচিত এবং আমাদের অবস্থান ঠিক এটাই।’

    প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর নোবেল শান্তি বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণ করেছে।

    উল্লেখ্য, চাকরির কোটা নিয়ে কয়েক সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভে ৪০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হওয়ার পর গত সোমবার ৭৬ বছর বয়সী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাকে ৪৫ মিনিটের আলটিমেটাম দেওয়ার পর তিনি ঢাকা থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যান।

    সেখান থেকে সম্ভবত যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নিতে তিনি লন্ডনে যেতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

    তবে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় না দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের যে অভিবাসন আইন রয়েছে; সেখানে কোনো ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ করে এসে রাজনৈতিক বা সাধারণ আশ্রয় নেওয়ার বিধান নেই।

    এছাড়া কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হওয়া শেখ হাসিনার ভিসা বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসা যুক্তরাষ্ট্র বাতিল করেছে বলে নিশ্চিত করেছে।

  • ব্রাজিলে ৬২ আরোহী নিয়ে বিমান বিধ্বস্ত, সবাই নিহত

    ব্রাজিলে ৬২ আরোহী নিয়ে বিমান বিধ্বস্ত, সবাই নিহত

    ব্রাজিলে যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিমানটিতে থাকা ৬২ জন আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৫৮ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু ছিলেন।

    শুক্রবার (৯ আগস্ট) দেশটির প্রেসিডেন্ট এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

    স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, বিমানে কোনো যাত্রী জীবিত নেই। বিমানটি কাসকাভেল থেকে উড়ান দিয়ে সাও পাওলো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় পড়ে। এটি সাও পাওলো থেকে প্রায় ৮০ কিমি উত্তরে ভিনহেদো শহরে বিধ্বস্ত হয়। ভয়েপাস এয়ারলাইনের এই ফ্লাইটটির নম্বর পিএস-ভিপিবি।

    এদিকে, দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে কোনও বিস্তারিত তথ্য জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

    অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিমানটি বিধ্বস্ত কয়েকটি গাছের আড়ালে পড়েছে। এরপর সেখানে ধোঁয়ার কুণ্ডলী তৈরি করে।

    প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা দুর্ঘটনার শিকারদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

  • অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানালো যুক্তরাষ্ট্র-চীন-ইইউ

    অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানালো যুক্তরাষ্ট্র-চীন-ইইউ

    বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তারা সবাই সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ও পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছে।

    বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে চলমান সহিংসতা বন্ধে ড. ইউনূসের আহ্বানকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। অন্তর্বর্তী সরকার ও ড. ইউনূস বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ তৈরি করতে চায়। তাই আমরা অন্তর্বর্তী সরকার ও ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।

    বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদমর্যাদার কূটনীতিক হেলেন লা ফাভে উপদেষ্টাদের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন ও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে জানান ম্যাথু মিলার।

    এদিকে, বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানিয়ে ইইউয়ের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, ইইউ বাংলাদেশের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের জটিল এ কাজে তাদের সহায়তা করা হবে ও এই প্রক্রিয়া অবশ্যই শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে।

    অন্যদিকে, শুক্রবার চীন জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানায়। বিনিময় ও সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এই সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

    ছাত্র–জনতার নজিরবিহীন আন্দোলনের মুখে সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। ওইদিন বিকেলেই জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে দেশ পরিচালনায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্তের কথা জানান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

    শান্তিতে নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টাসহ এই সরকারে আছেন ১৭ জন।

    বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর বঙ্গভবনের দরবার হলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও ১৩ জন উপদেষ্টাকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। উপদেষ্টাদের তিনজন ঢাকার বাইরে থাকায় তারা এদিন শপথ নিতে পারেননি।