Category: জাতীয়

  • পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সিঙ্গাপুরের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

    পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে সিঙ্গাপুরের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

    বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধার এবং বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনের ব্যয় কমাতে সহায়তা করার জন্য সিঙ্গাপুরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ রোববার বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রদূত ডেরেক লো প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রদূতের প্রতি এ আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশে প্রচুর অর্থ পাচার করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরের কাছ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রয়োজন আমাদের।

    রাষ্ট্রদূত লো এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন।

    অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের খরচ কমানোর জন্য ঢাকার সঙ্গে কাজ করার জন্য সিঙ্গাপুরের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি জানান, প্রবাসীরা যেন তাদের পরিবারের কাছে আরও বেশি অর্থ পাঠাতে পারে সে লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার অভিবাসনের ব্যয় কমিয়ে আনতে চায়। আমরা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে নিয়োগের খরচ কমানোর জন্য একটি মডেল কাঠামো তৈরি করতে পারি।

    রাষ্ট্রদূত সহায়তার আশ্বাস দিয়ে বাংলাদেশকে বৈদেশিক নিয়োগ ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করার পরামর্শ দেন, যেন মানবপাচার ও শ্রমিক শোষণের আশঙ্কা কমে যায়।

    দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা, অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রনীতি, শিপিং, শিক্ষা ও নিজ নিজ জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিয়েও আলোচনা হয়।

    ড. ইউনূস বলেন, স্বৈরাচারী সরকার পতনের মাত্র তিন মাসের মাথায় অর্থনীতি ভালোভাবে পুনরুদ্ধার করে বাংলাদেশ এখন ব্যবসার জন্য প্রস্তুত। এখন এদেশে ব্যবসা করার উপযুক্ত সময়।

    সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র ডিরেক্টর ফ্রান্সিস চং বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব করেছিল। প্রস্তাবিত এফটিএ’র ওপর একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং উভয় দেশই এখন কীভাবে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরু করা যায় তার সুযোগ নির্ধারণ করবে।

    লো বলেন, সিঙ্গাপুর পানি শোধন এবং বর্জ্য শক্তি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে তাদের দক্ষতা ভাগাভাগি করতে পারলে খুশি হবে। তিনি উভয় দেশের খাদ্য সংস্থার মধ্যে সহযোগিতার প্রস্তাব করেন।

    অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রনীতি প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার সরকার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখছে এবং সার্ককে দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে আরও ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে।

    তিনি আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির জন্য সিঙ্গাপুরের সমর্থন চান। প্রতিক্রিয়ায় ডেরেক লো জানান, তার দেশ এ ব্যাপারে ইতিবাচক রয়েছে।

    অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ঢাকা তার পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের মিত্রদের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। তিনি বলেন, আমরা পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমাদের সর্বত্র সেতু নির্মাণ করতে হবে।

    বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব ও মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং ঢাকায় সিঙ্গাপুরের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স মাইকেল লি।

  • বাড়ছে উপদেষ্টা পরিষদের আকার, সন্ধ্যায় শপথ

    বাড়ছে উপদেষ্টা পরিষদের আকার, সন্ধ্যায় শপথ

    অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়ছে। নতুন করে আরও পাঁচ জন উপদেষ্টা রোববার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে শপথ নিতে পারেন।

    মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

    সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের পরিবহন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর বলেন, গাড়ি প্রস্তুত করার নির্দেশনা আমরা পেয়েছি। আমরা পাঁচটি গাড়ি প্রস্তুত রাখছি।

    ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরইমধ্যে তিনমাস পার করেছে ২১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ। তাদের অনেকেই পালন করছেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।

    এ নিয়ে রাজনীতিবিদদের প্রায়ই অভিযোগ, এক ব্যক্তি একইসঙ্গে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করায় সরকারের কাজে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই উপদেষ্টা পরিষদের পরিসর বাড়ানোর দাবি তুলেছেন তারা।

    অবশেষে উপদেষ্টা পরিষদের সংখ্যা বাড়ছে। সূত্র বলছে, নতুন মুখ যুক্ত করার পাশাপাশি কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব রদবদলের আলোচনা চলছে। নতুন মুখ হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন: আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) থেকে সদ্য পদত্যাগ করা আহ্বায়ক ও সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, ড. মঞ্জুরুল ইসলাম, মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

  • এই সরকারের বৈধতা হলো গণঅভ্যুত্থান : শ্রম উপদেষ্টা

    এই সরকারের বৈধতা হলো গণঅভ্যুত্থান : শ্রম উপদেষ্টা

    বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা গণঅভ্যুত্থান বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

    রোববার (১০ নভেম্বর) সচিবালয়ে বর্তমান শ্রম পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

    সরকারকে বৈধতা দিতে অধ্যাদেশ হচ্ছে, একইসঙ্গে সংস্কার কাজ কতদূর এগোলো- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, এই সরকারের বৈধতা হলো গণঅভ্যুত্থান। যেটা সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটা হচ্ছে লিগ্যাল রেটিফিকেশন এবং অন্যান্য বিষয়। গত তিন মাস আমাদের কার্যক্রমের অগ্রগতি আপনারা দেখেছেন। সংস্কার কমিশনগুলোর সঙ্গে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা নিয়মিত বসছেন। রিপোর্টের ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম চলবে।

    তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করার জন্যই সংস্কার কমিশনগুলো গঠন করা হয়েছে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে সংস্কার কার্যক্রম শেষ করার রূপরেখা এরইমধ্যে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা আশা করি একটি নতুন বাংলাদেশ যেটার কথা আমরা মুখে বলছি, সেটার বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

    এরইমধ্যে আর গঠনের আগেই ১০৬-এ (সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ) এ সরকারের বৈধতা দেওয়া হয়েছে। যে অর্ডিন্যান্সের কথা বলা হচ্ছে সেটার মাধ্যমে আরও লিগ্যাল রেটিফিকেশন হবে-বলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

    উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগের যে অফিসিয়াল পেজ আছে, দেশের বাইরে বসে বসে পোস্ট করে, সেখানে কিন্তু শ্রমিকদের উস্কে দেওয়ার মতো কিছু পোস্ট গতকালকে আপনাদের দেখার কথা, আমার চোখে পড়েছে। ‌ষড়যন্ত্র তো ঘোষণা দিয়ে হচ্ছে ভাই। সেটা তো সোশ্যাল মিডিয়ার সবাই দেখছে। এগুলো কাউন্টার করার ক্ষেত্রে আপনাদের (সাংবাদিক) একটা ভূমিকা থাকা উচিত, আমরা কাজ করছি।

    তিনি বলেন, ‘(আওয়ামী লীগের) এই কথায় বিশেষ বড় অংশের কেউ কনভিন্স না। ‌ না হলে আওয়ামী লীগের আহবানে শ্রমিকরা আজকে মিছিল নিয়ে আসতো ঢাকার দিকে। কেউ তো আসেনি।’

  • ঢাকাসহ সারাদেশে বিপুল সংখ্যক বিজিবি মোতায়েন

    ঢাকাসহ সারাদেশে বিপুল সংখ্যক বিজিবি মোতায়েন

    রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিপুল সংখ্যক বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

    রবিবার সকাল থেকে বিজিবি সদস্যরা সড়কে টহলের পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নিয়েছেন।

    এদিন বিজিবি সদরদপ্তর থেকে পাঠানো খুদে বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

    বিজিবি জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ১৯১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

    আজ রবিবার বেলা ৩টায় রাজধানীর গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে ‘গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে’ আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়। এ কর্মসূচি ঘিরে শনিবার রাত থেকেই রাজধানীতে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নিরাপত্তা চৌকি ও গোয়েন্দা কার্যক্রম চালানো হয় রাতে। নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে এমন সন্দেহভাজন অনেককে আটক করা হয়।

  • শহীদ নূর হোসেন দিবস আজ

    শহীদ নূর হোসেন দিবস আজ

    আজ ১০ নভেম্বর, শহীদ নূর হোসেন দিবস। ১৯৮৭ সালের এইদিনে নূর হোসেনের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। নূর হোসেনের সেই আত্মত্যাগ গণতন্ত্রকামী মানুষের আন্দোলনকে অনিবার্য পরিণতির দিকে এগিয়ে নিয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় নব্বইয়ের শেষ ভাগে পতন ঘটে তৎকালীন স্বৈরশাসকের।

    প্রতি বছরের মতো এবারও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শহীদের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদ নূর হোসেন চত্বরে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন, আলোচনা সভা ও সেমিনার।

    এছাড়াও জুরাইন কবরস্থানে শহীদ নূর হোসেন ও নুরুল হুদা বাবুলের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করা হবে।

    ১৯৮৭ সালের এই দিনটি ছিল সামরিক স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ জনতার উত্তাল আন্দোলনের অগ্নিঝরা দিন। এ দিনে হাজারো প্রতিবাদী যুবকের সঙ্গে জীবন পোস্টার হয়ে রাজপথে নেমে এসেছিল নূর হোসেনও। তার বুকে-পিঠে লিখা ছিল- ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’- এই স্লোগান।

    গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অকুতোভয় সেই যুবকের অগ্নিঝরা স্লোগান সহ্য হয়নি তৎকালীন স্বৈরশাসকের। স্বৈরাচারের লেলিয়ে দেওয়া বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালিয়ে তার বুক ঝাঁজরা করে দেয়। গুলিতে আরও শহীদ হন যুবনেতা নুরুল হুদা বাবুল ও কিশোরগঞ্জ বাজিতপুরের ক্ষেতমজুর নেতা আমিনুল হুদা টিটো। নূর হোসেনের আত্মত্যাগ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন আরও বেগবান ও তিন জোটের সংগ্রাম অপ্রতিরোধ্য রূপ লাভ করে।

    এই আন্দোলনের জোয়ারে ১৯৯০ সালের শেষ দিকে ভেসে যায় স্বৈরাচারের তক্তপোষ। পতন ঘটে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের। দেশে কায়েম হয় দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন গণতন্ত্র। শহীদ নূর হোসেন হয়ে ওঠেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক। এরপর থেকে প্রতিবছর ১০ নভেম্বর দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ নূর হোসেন দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

  • গুলিস্তানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাল্টা কর্মসূচি

    গুলিস্তানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাল্টা কর্মসূচি

    গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রোববার (১০ নভেম্বর) রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। এর পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে একইস্থানে গণজমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

    শনিবার (৯ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে গণজমায়েতের ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

    তিনি জানান, পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় রাজধানীর গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে।

    গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সব রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এই জমায়েত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।

    রাজধানীর পাশপাশি দেশের সব জেলায়ও একই কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান হাসনাত।

    তিনি বলেন, শুধু রাজধানী শহরেই নয়, সব জেলা পর্যায়ে এই থিমে কর্মসূচি আহ্বানের নির্দেশনা জানানো যাচ্ছে। এক্ষেত্রে দুটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। প্রথমত যাতে করে কোনোভাবেই জনদুর্ভোগ ও কোনো প্রকার সহিংসতা না হয়। লীগের সন্ত্রাসীরা ছদ্মবেশে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে ছাত্র-জনতার ওপর দোষ চাপাতে চাইবে। লীগের কাউকে পাওয়া গেলে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন।

    এর আগে, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সবাইকে সমবেত হওয়ার ডাক দিয়ে রোববার বিকেল ৩টায় গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টের নূর হোসেন চত্বরে নেতাকর্মীদের সমবেত হওয়ার নির্দেশনা দেয়।

  • গুম কমিশনকে সব ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টার

    গুম কমিশনকে সব ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টার

    ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বলপূর্বক গুমের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের জবাবদিহি করতে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আপনাদের যা কিছু প্রয়োজন তার সব দেব এবং সব ধরনের সহায়তা করব।

    শনিবার (৯ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা এবং গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একটি বৈঠকের সময় কমিশন সদস্যদের তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়।

    কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বৈঠকে বলেন, তারা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ১৬০০টি অভিযোগ পেয়েছেন, ৪০০টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছেন এবং ১৪০ অভিযোগকারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।

    বৈঠকে কমিশনের সদস্যরা বলেছেন, এ বিষয়ে আরও কাজ করার আগে তারা ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সরকারকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দেবেন।

    আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, সরকার প্রয়োজনে কমিশনের মেয়াদ দুই বছর বাড়াবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষার জন্য আইনি ব্যবস্থা তৈরিসহ প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করবে।

    কমিশনের একজন সদস্য বলেন, অভিযোগের সংখ্যা দেখে আমরা আশ্চর্য হয়ে গেছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতিশোধের ভয়ে অনেকে এখনও কমিশনে আসছেন না। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, ঘটনার সংখ্যা এখন পর্যন্ত যতটা রিপোর্ট করা হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি।

    কমিশনের সদস্যরা বলেন, তারা সন্দেহ করছেন যে, জোরপূর্বক গুমের সংখ্যা কমপক্ষে ৩৫০০ হতে পারে। কারা অপরাধ করেছে এবং কারা তাদের নির্দেশ দিয়েছে তা চিহ্নিত করার জন্য কাজ করছে কমিশন।

    তারা বলেন, ভুক্তভোগীদের অনেকেই কারাগারে রয়েছেন, কেউ কেউ মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হয়েছেন, কারণ তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিছু গুমের শিকার ব্যক্তি প্রতিবেশী ভারতের কারাগারে বন্দি আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    কমিশনের সদস্যরা গোপন স্থানের আলামত রক্ষার জন্য সরকারের সহায়তা চেয়েছেন, যেখানে ভিকটিমদের লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।

    কমিশনের একজন সদস্য বৈঠকে বলেন, অনেক ভুক্তভোগী আমাদের বলেছেন, তারা বছরের পর বছর সূর্য দেখেননি। যখন সকালের নাস্তা পরিবেশন করা হয় তখনই কেবল তারা উপলব্ধি করতে পারেন যে, এটি একটি নতুন দিন।

    অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিদেশ সফরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সম্ভব হলে তাদের পাসপোর্ট বাতিল করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান ওই সদস্য।

    বৈঠকে উপস্থিত থাকা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কমিশন অভিযুক্তদের তালিকা দিলে তারা ব্যবস্থা নেবেন।

    প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম কমিশনের ফল জনসাধারণের ডোমেইনে রাখা এবং জোরপূর্বক গুমের ঘটনা তত্ত্বাবধানকারী ব্যক্তিদের উন্মোচন করার গুরুত্বের উপর জোর দেন।

    বৈঠকে উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, নুরজাহান বেগম, আদিলুর রহমান খান, এম সাখাওয়াত হোসেন, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল হাফিজ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশিদ এবং প্রধান উপদেষ্টার মুখ্যসচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

  • আমরা সবাই মিলে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই: সেনাপ্রধান

    আমরা সবাই মিলে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই: সেনাপ্রধান

    ইসলাম-বৌদ্ধ-হিন্দু-খ্রিষ্টান সব ধর্মের মানুষ মিলে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চান বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

    শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে পবিত্র কঠিন চীবর দান উৎসব ও জাতীয় বৌদ্ধধর্মীয় মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

    সেনাপ্রধান বলেন, ‘ইসলাম, বৌদ্ধ, হিন্দু, খ্রিষ্টানসহ অন্য যেসব ধর্ম আছে, সব ধর্ম, জাতি ও গোষ্ঠী সবাই মিলে সুন্দর বাংলাদেশ গঠন করতে চাই। এখানে সুন্দরভাবে শান্তিতে বসবাস করতে, দেশ ও জাতির উন্নতি করতে চাই।’

    বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা তুলে ধরে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘যখন আজান হচ্ছিল, তখন তারাই বললেন যে, কিছুক্ষণ পরে শুরু করি, আজানটা শেষ হয়ে যাক। এই যে ধর্মীয় বোঝাপড়া (আন্ডারস্ট্যান্ডিং), ধর্মীয় সম্প্রীতি, মমত্ববোধ দেখিয়েছেন, এটা অতুলনীয়।’

    বৌদ্ধদের নির্ভয় দিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই, এভাবেই প্রতিনিয়ত, প্রতি সময় আপনারা আপনাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো পালন করবেন। সুখে-শান্তিতে থাকবেন। এজন্য যা কিছু করতে হয়, আমরা সেটা করব। এর আগে দুর্গাপূজাতেও আমরা নিরাপত্তা দিয়েছি। খুব সুন্দরভাবে তা উদ্‌যাপন করা হয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনারা যখনই যে ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা চাইবেন, আমরা সেটা প্রদান করব।’

    অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেন, এখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের দেখে ভালো লাগছে। বিশেষ করে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতকে দেখে। তারা এ দেশে অনেক বৌদ্ধমন্দির তৈরিতে আর্থিক সহায়তা করেছেন। বাংলাদেশের বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের জন্য এটা চমৎকার অবদান। এখানে ভিয়েতনাম ও অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনারও আছেন। তারাও বাংলাদেশে শান্তি-সম্প্রীতির জন্য অবদান রাখছেন।

    তিন পার্বত্য জেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পার্বত্য জেলায়, বিশেষ করে যেহেতু এখানে আমাদের একটু শান্তি-সম্প্রীতির কিছুটা ঘাতটি আছে, সেদিকটা পুষিয়ে নিতে চাই। একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। পাহাড়ে সবাই পাহাড়ি-বাঙালি যেন একসঙ্গে বসবাস করতে পারি।

    বাংলাদেশ বৌদ্ধ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ন্যুয়েন মান কুঅং এবং অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন।

  • ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের সঙ্গে সব মামলা বাতিল হবে’

    ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের সঙ্গে সব মামলা বাতিল হবে’

    ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হচ্ছে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

    তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে সব মামলা রহিত (বাতিল) হবে। শুধু কম্পিউটার অফেন্স, যেটা কম্পিউটার হ্যাকিং, ছেলেমেয়ের ঘনিষ্ঠতার ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা– এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে অব্যাহত থাকবে। কিন্তু সাংবাদিকতা বা মুক্তমনা মানুষ, ভিন্নমতের মানুষের মন্তব্যের জন্য যেসব মামলা সেগুলো ফেস বাই ফেস রহিত হবে।

    শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা ক্লাবে ‘ডিআরইউ-দেশ টিভি বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

    আসিফ নজরুল বলেন, আপনারা দেখেছেন আমরা প্রচণ্ড সাংবাদিক-বান্ধব থাকার চেষ্টা করেছি। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কোনো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আমাদের সরকার বা পুলিশ কোনো মামলা করেনি। সাধারণ জনগণ মামলা করেছে।

    তিনি বলেন, আমাদের সবারই মনে রাখা উচিত আমাদের পেশাগত পরিচয়ের বাইরে কোনো কিছু যেন না হয়। একজন সাংবাদিক যতই সাংবাদিকতা করুক, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে যদি প্রকাশ্যে অব্যাহতভাবে সমর্থন করে তাহলে তাকে কি আপনি সাংবাদিক বলবেন, না অন্য কিছু বলবেন সেটা চিন্তা করে দেখবেন। বাংলাদেশে এত প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে অনেক সাংবাদিক ভূমিকা রেখেছেন। মেজরিটি সাংবাদিকই সত্য ও ন্যায়ের পথে ছিলেন। যারা সাহস করে কিছু বলতে পারেননি, তারা চুপ থেকেছেন।

    ডিআরইউ নেতাদের কাছে অনুরোধ রেখে উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে ডিআরইউকে আপনারা দুটি ভাগে ভাগ করবেন না। এই যে একটা ফ্যাসিস্ট সরকার ছিল, তার পেছনে অনেক কারণ আছে। শিক্ষকদের দোষ আছে, সব পেশার মানুষদের দোষ আছে, সাংবাদিকদেরও তো দোষ ছিল।

    পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান বলেন, আজ যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। যখন পরিবেশ আইনবিদ হয়ে থাকতাম তখন সাংবাদিকদের সঙ্গে নিবিড় একটা সম্পর্ক থাকত। সাংবাদিকদের অনেক রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা মামলা করতাম। আবার আমাদের অনেক মামলার বিষয় নিয়ে সাংবাদিকরা রিপোর্ট করেছেন।

    ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন, সাবেক সভাপতি এম শফিকুল করিম, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, দেশ টেলিভিশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান।

  • সুইজারল্যান্ডে হেনস্তার শিকার উপদেষ্টা আসিফ নজরুল

    সুইজারল্যান্ডে হেনস্তার শিকার উপদেষ্টা আসিফ নজরুল

    অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বিদেশের মাটিতে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। সুইজারল্যান্ডে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের হাতে তিনি হেনস্তার শিকার হন।

    সুইজারল্যান্ডের জেনেভাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশন সূত্রে জানা যায়, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডি এবং সংস্থাটির গুরত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দেশে ফিরছিলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। দূতাবাসের প্রটোকলে তিনি গাড়ি করে সুইজার‌ল্যান্ডের জেনেভা বিমানবন্দরে পৌঁছান।

    এ সময় দূতাবাসের প্রটোকল আইন উপদেষ্টার সঙ্গে ছিল। গাড়ি বিমানবন্দরে নামার পর একদল লোক এসে আইন উপদেষ্টাকে ঘিরে ধরেন। উপদেষ্টা জেনেভা বিমানবন্দরে প্রবেশের আগ পর্যন্ত হেনস্তাকারী তাকে বিরক্ত করেছেন।

    সুইজারল্যান্ডের বেশ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, সুইজার‌ল্যান্ডের জেনেভা বিমানবন্দরে আইন উপদেষ্টাকে হেনস্তাকারীরা আওয়ামী লীগের সমর্থক। সেখানে সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম জমাদার ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল খান উপস্থিত ছিলেন।

    আসিফ নজরুলকে হেনস্তা করা একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের ভিডিওটি দেখা যায়, একদল লোক আসিফ নজরুলকে ঘিরে ধরেছেন। তারা তার সঙ্গে উত্তেজিত ভাষায় তর্ক করছেন, বারবার প্রশ্ন করছেন, ‘আপনি মিথ্যা বলেছেন।’

    এ সময় ভিডিওতে শোনা যায়, আসিফ নজরুল বলছেন, ‘আপনি গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন?’

    এ সময় হেনস্তাকারীদের ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

    জেনেভাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, আইন উপদেষ্টা ব্যক্তিগত কোনো সফরে সুইজার‌ল্যান্ড আসেননি। তিনি আইএলও গভর্নিং বডির মিটিংয়ে এসেছেন। আইএলওতে বাংলাদেশের দুটি মামলা চলছে। সে জন্য উপদেষ্টা এখানে এসেছেন। তিনি আইএলও’র মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে জেনেভা সময় বৃহস্পতিবার বিকেলে দেশে ফেরার জন্য বিমানবন্দরে প্রবেশের পথে কিছু লোক উপদেষ্টার সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেছেন।

    এ কর্মকর্তা বলেন, শুনেছি আইন উপদেষ্টা গাড়ি থেকে নামার পর কিছু লোক এসে তাকে ঘিরে ধরে। সঙ্গে দূতাবাসের লোকজন ছিল। ওনাকে প্রটোকল দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ করে এসে কিছুলোক এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

    প্রসঙ্গত, আইএলও’র গভর্নিং বডির বৈঠকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ছাড়াও শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীও অংশ নেন।

  • মুজিববর্ষের নামে সব মন্ত্রণালয়ের অপচয় নিয়ে ডকুমেন্টেশন করবে সরকার

    মুজিববর্ষের নামে সব মন্ত্রণালয়ের অপচয় নিয়ে ডকুমেন্টেশন করবে সরকার

    মুজিববর্ষের নামে জনগণের অর্থ অপচয় হয়েছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলম বলেছেন, আপনারা জানেন মুজিব বর্ষকে ঘিরে কিভাবে একটা একটা উন্মাদনা হয়েছে। মুজিব বর্ষে কি ধরণের কাজ হয়েছে, কত টাকা অপচয় হয়েছে সেটা নিয়ে ডকুমেন্ট করার কথা কেবিনেটে হয়েছে। মুজিব বর্ষের নামে কোন কোন মন্ত্রণালয় কত কোটি টাকা খরচ করেছে তা নিয়ে ডকুমেন্টেশন হবে সেইগুলোর একটা লিস্ট করা হবে। মুজিব বর্ষের নামে কোন কোন মন্ত্রণালয় কি কি খাতে কত টাকা অপচয় করেছে তার একটা লিস্ট করা হবে।

    বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

    শফিকুল আলম বলেন, আমরা যেখানে ঋণের জন্য আইএমএফ-এর কাছে হাত পাতছি। আইএমএফ-এর কাছে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ চাচ্ছি। সেখানে মুজিব বর্ষের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট করছি কিছু ম্যুরাল বানিয়ে কিছু স্ট্যাচু বানিয়ে। শুধু মাত্র সরকারি কোষাগার থেকে টাকা গেছে বিষয়টা তা না। অনেক ক্ষেত্রে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানকেও ফোর্স করা হয়েছে ফলে কেউ মুজিব কর্ণার করেছে কেউ মুজিবের ম্যুরাল বানাতে বাধ্য হয়েছেন। মুজিববাদকে সামনে রেখে টাকা খরচের যে একটা উন্মাদনা ছিল। কত টাকা অপচয় হয়েছে তা জানার জন্য ডকুমেন্টেশন করা হবে। এই সিদ্ধান্ত হয়েছে আজকের কেবিনেটে।

    টাকা অপচয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুজিব বর্ষের নামে যা যা অপচয় হয়েছে তার একটা ডকুমেন্টেশন করা হবে। মন্ত্রণালয়গুলো সেই ডকুমেন্টেশনগুলো করবে। আমরা একটা রিপোর্ট দেখেছি সেটা যাচাই করতে পারিনি। পত্রিকাটি বলছে- চার হাজার কোটি টাকা খরচ করে ১০ হাজার মূর্তি বানানো হয়েছে। আপনারা দেখেছেন কি পরিমাণে একটা অপচয় হয়েছে। একদিকে উনারা হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে মূর্তি বানিয়েছে আবার আইএমএফ-এর কাছে টাকার জন্য হাত পেতেছেন।

    মুজিববর্ষে যে সব আমলা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে ডকুমেন্টেশন হোক তার পরে দেখা যাবে কি করা যায়। ডকুমেন্টেশনের পরে দেখতে পাবো কি পরিমাণে অপচয় হয়েছে এগুলো কিন্তু মানুষের ট্যাক্স পেয়ারের টাকা। এটা টাকা কিভাবে ব্যয় হলো অবশ্যই আমরা দেখবো। আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন পদ্মাসেতুতে দুটি ম্যূরালের জন্য ১১৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে চিন্তা করা যায়?

    এসময় প্রধান উপদেষ্টা উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

  • শহিদ নাফিজের দেহ বহনকারী সেই রিকশা থাকবে গণভবন জাদুঘরে

    শহিদ নাফিজের দেহ বহনকারী সেই রিকশা থাকবে গণভবন জাদুঘরে

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ গোলাম নাফিজের দেহ বহনকারী রিকশাটি জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রাখার উদ্দেশ্যে গণভবনে আনা হয়েছে।

    বৃহস্পতিবার গণভবনে সেই রিকশাটি দেখতে আসেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

    রিকশা হস্তান্তরের সময় উপদেষ্টা রিকশাচালক নূর মোহাম্মদকে তার সাহসিকতার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেন তথ্য উপদেষ্টা।

    ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

    গত ৫ নভেম্বর দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত ‘নাফিজের নিথর দেহ পড়ে থাকা রিকশাটি বিক্রি করে দিয়েছেন নূরু’ শীর্ষক সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম তাৎক্ষণিক রিকশা ও রিকশাচালককে খুঁজে বের করার জন্য তার দফতরের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।

    উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী, রিকশাচালক নূর মোহাম্মদ ওরফে নুরুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা (রিকশা) ৩৫ হাজার টাকায় লন্ডনপ্রবাসী আহসানুল কবীর সিদ্দিকী কায়সারের কাছে বিক্রি করেছেন বলে জানান। পরবর্তী সময় আহসানুল কবীর সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিকশাটি জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে হস্তান্তর করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রিকশাটি জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ফার্মগেটের পথচারী-সেতুর নিচে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হন বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী গোলাম নাফিজ। গুলিবিদ্ধ নাফিজকে পুলিশ যখন রিকশার পা-দানিতে তুলে দেন, তখনও তিনি রিকশার রডটি হাত দিয়ে ধরে রেখেছিলেন। রিকশাচালক তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তাকে আর বাঁচানো যায়নি। পরবর্তী সময় এই রিকশার ছবি কাঁদিয়েছে পুরো বাংলাদেশকে।