Category: জাতীয়

  • ডিআইজি হলেন ৮ পুলিশ কর্মকর্তা

    ডিআইজি হলেন ৮ পুলিশ কর্মকর্তা

    বাংলাদেশ পুলিশ’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) পদমর্যাদার ৮ পুলিশ কর্মকর্তা উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।

    প্রজ্ঞাপন

    আজ (২৪ অক্টোবর’১৯) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ অধিশাখা-১ এর উপ সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ পদোন্নতি প্রদান করা হয়।

  • আজারবাইজানের পথে প্রধানমন্ত্রী

    আজারবাইজানের পথে প্রধানমন্ত্রী

    ১৮তম ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজারবাইজানের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল চারটায় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ বিমান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

    ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে আজারবাইজানে রাজধানী বাকুর হায়দার আলিয়েভ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

    আগামীকাল বাকু কংগ্রেস সেন্টারে ১৮তম ন্যাম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন সরকারপ্রধান।

    পরে পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে প্রতিনিধি দলের প্রধানদের জন্য দেয়া মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন।

    সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনায় অংশ নেবেন।

    এছাড়া সম্মেলনের ফাঁকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে। সফর শেষে আগামী রোববার দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী

  • নুসরাত হত্যা মামলার রায়ে স্বস্তি প্রকাশ সরকারের

    নুসরাত হত্যা মামলার রায়ে স্বস্তি প্রকাশ সরকারের

    বহুল আলোচিত ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায়ে সরকার স্বস্তি প্রকাশ করছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

    তিনি বলেন, ‘অবিশ্বাস্য মনে হলেও বিচার প্রক্রিয়াটা ত্বরান্বিত হয়েছে, দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে, এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে স্বস্তি প্রকাশ করছি।’

    বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

    ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রায় নিয়েও কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়নি। আশা করছি নুসরাতের পরিবারও সন্তুষ্ট হবে।’

    এর আগে, বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে ফেনী জজকোর্টের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলাসহ ১৬ জনের ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন। তিনি ১৩ মিনিটেই নুসরাত হত্যা মামলার রায় পড়া শেষ করেন।

    মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামি হলেন-মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদদৌলা, দুই নম্বর আসামি ফেনী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. নুর উদ্দিন, তিন নম্বর আসামি মাদ্রাসার ফাজিলের ছাত্র শাহাদাত হোসেন শামীম, চার নম্বর আসামি পৌর আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, পাঁচ নম্বর আসামি ছাত্রলীগকর্মী ও মাদ্রাসার ফাজিল বিভাগের ছাত্র মো. জোবায়ের, ছয় নম্বর আসামি চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি ও মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী জাবেদ হোসেন, সাত নম্বর আসামি মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক এবং ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হাফেজ আবদুল কাদের, আট নম্বর আসামি মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আফছার উদ্দিন, মাদ্রাসার ফাজিল প্রথম বর্ষ ও ফেনী পলিটেকনিক কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের সদস্য ও ছাত্রলীগকর্মী মো. শামীম, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলন সদস্য ও ফেনী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এমরান হোসেন মামুন, মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ইফতেখার উদ্দিন রানা, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের সদস্য ও ছাত্রদলকর্মী হিসেবে পরিচিত মহিউদ্দিন শাকিল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রুহুল আমিন, মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী উম্মে সুলতানা পপি ও মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী কামরুন নাহার মণি।

    প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর মামলা তুলে নিতে নুসরাতের পরিবারকে নানা ধরনের হুমকি দেয়া হয়। কিন্তু নুসরাতের পরিবার ওই মামলা তুলে নেয়নি। নুসরাত ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিলেন।

    গত ৬ এপ্রিল সকালে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিমের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে যান নুসরাত। ওই সময় কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে তাকে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার সহযোগীরা। পরে নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গত ৮ এপ্রিল নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান (নোমান) সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত। পরবর্তীতে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।

    স্থানীয় প্রভাবশালীরা মামলার তদন্তকে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করে। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশ সদর দফতর থেকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ২৯ মে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই।

    এরপর ১০ জুন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। ২০ জুন অভিযুক্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারিক আদালত। ২৭ ও ৩০ জুন বাদী নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসানকে (নোমান) জেরার মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। মোট ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত। হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ১৬ আসামির মধ্যে ১২ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার শুনানি শেষ হয় গত ৩০ সেপ্টেম্বর। এরপর আদালত রায়ের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন।

  • হুইপ সামশুল-এমপি শাওনসহ ২২ জনের বিদেশগমনে নিষেধাজ্ঞা

    হুইপ সামশুল-এমপি শাওনসহ ২২ জনের বিদেশগমনে নিষেধাজ্ঞা

    চট্টগ্রামের পটিয়ার সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এবং ভোলা ৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনসহ ২২ জনের বিদেশগমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

    ক্যাসিনোকাণ্ডে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিরুদ্ধে চলমান অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

    বুধবার এ সংক্রান্ত চিঠি পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বরাবর পাঠানো হয়েছে।

    সূত্র জানায়, দুদকের এ সংক্রান্ত অনুসন্ধান দলের প্রধান ও সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন এ চিঠি পাঠিয়েছেন।

    যাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময় গ্রেফতার হওয়া কয়েকজনের পাশাপাশি অনুসন্ধান চলমান থাকা ব্যক্তিদের নামও রয়েছে।

    চিঠিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দেশে মানিলন্ডারিংসহ বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

    বিশ্বস্ত সূত্রে দুদক জেনেছে, অভিযোগসংশ্লিষ্টরা দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই তারা যাতে দেশ ছেড়ে যেতে না পারেন সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

    গ্রেফতার হওয়া কথিত যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম, মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূইয়া, মোহামেডান ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ মো. লোকমান হোসেন ভূইয়া, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সম্রাটের সহযোগী এনামুল হক আরমান, কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুল আলম (ফিরোজ), অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমানের (মিজান) বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

    নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক এনু ও তার ভাই গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রুপন ভূইয়া, কেন্দ্রীয় যুবলীগের বহিষ্কৃত দফতার সম্পাদক কাজী কাজী আনিছুর রহমান ও তার স্ত্রী সুমি রহমান, লোকমান হোসেন ভূইয়ার স্ত্রী নাবিলা লোকমান, গণপূর্ত অধিদফতরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল হাই, ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের বিদেশযাত্রায়।

    এ ছাড়া এনামুল হকের সহযোগী ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ (আজাদ রহমান), রাজধানীর কাকরাইলের জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাকির হোসেন ও সেগুনবাগিচার শফিক এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শফিকুল ইসলামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

    অনুসন্ধানে যাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যাবে তাদের সবারই বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।

  • আরও নিরাপদ ও আরামদায়ক হচ্ছে বিমান ভ্রমণ : প্রধানমন্ত্রী

    আরও নিরাপদ ও আরামদায়ক হচ্ছে বিমান ভ্রমণ : প্রধানমন্ত্রী

    বিমান ভ্রমণ আরও নিরাপদ ও আরামদায়ক করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আধুনিক ও পেশাদার বিমানবাহিনী গঠনে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিউইর্য়ক, টরেন্টো ও সিডনিতে ফ্লাইট পরিচালনা করতে চায় বিমান বাংলাদেশ।

    বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ৬ষ্ঠ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সেফটি সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন ।

    এ সময় প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনায় প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধন করতে দেশের বিমানবন্দরগুলোকে আধুনিকায়নের কাজ করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করার কাজ চলছে, যেন পার্শ্ববর্তী দেশগুলোও যেন তা ব্যবহার করতে পারে।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আকাশপথে বিশ্বের দূরবর্তী গন্তব্যগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে চায় সরকার। এজন্য আরও দুটি উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

    তিনি বলেন, বিমান বাহিনীকে সবদিক থেকে সচ্ছল বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে। এর জন্য অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ক্রয়সহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজও চলছে। এছাড়া বেসামরিক বিমান চলাচলে ও যাত্রীসেবার মান বাড়াতে বিমান বাংলাদেশেরও উন্নয়ন করা হচ্ছে।

    শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশকে পুনর্গঠিত করে স্বল্পোন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয়েছেন। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান, সামরিক কৌশলগত দিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে একটি আধুনিক, শক্তিশালী ও পেশাদার বিমান বাহিনী গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তে ১৯৭৩ সালে সে সময়ের সব থেকে আধুনিক মিগ ২১ সুপারসনিক ফাইটার বিমানসহ পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার, এয়ার ডিফেন্স, রাডার ইত্যাদি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে সংযোজন করা হয়েছিল।

    প্রধানমন্ত্রী এসময় আরও জানান, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন পুনরায় সরকার গঠন করে, তখন আবার আমরা বিমান বাহিনীকে একটি যুগোপযোগী, দক্ষ বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করি। এবং সেসময় আমরা চতুর্থ প্রজন্মের অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান মিগ ২৯, ইয়ার ১৩০, আধুনিক পরিবহন সি ১৩০ সহ আরও বেশ কিছু বিমান বাহিনীতে সংযোজন করি।

    শেখ হাসিনা জানান, ২০০৮ এর নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করি। তখন আমরা বিমান ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি রক্ষাণাবেক্ষণ ও সংস্কার কাজে নিজস্ব সক্ষমতা অর্জনের দিকে বিশেষভাবে মনোযোগ দিই। আমরা ২০১১ সালে বঙ্গবন্ধু এরোনোটিক্যল সেন্টার স্থাপন করেছি। নিকট ভবিষ্যতে এই সেন্টারে যুদ্ধ বিমানসহ বর্তমানে ব্যবহৃত বেসামরিক বিমানও মেরামত করা সম্ভব হবে বলে আশা রাখি।

    এসময় তিনি আরও বলেন, বিগত পৌনে ১১ বছরে বিমান বহরে আমরা বোয়িং কোম্পানির চারটি অত্যাধুনিক ড্রিমলাইনারসহ মোট ১০টি বিমান সংযুক্ত করেছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, বিশ্বের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আকাশ পথে স্থাপন করতে চাই। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশা করি, নিউইয়র্ক, টরেন্টো, সিডনির মতো দূরবর্তী গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারব। এ লক্ষ্যে সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটিকে ক্যাটাগরি ১ এ উন্নীত করার কাজ এগিয়ে চলছে।

    এর আগে সোমবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের যৌথ ব্যবস্থাপনায় তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সেইফটি সেমিনার হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, ঢাকায় শুরু হয়। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ সেমিনার উদ্বোধন করেন।

    এ সেমিনারের মূল উদ্দেশ্য নিরাপদ উড্ডয়ন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা, নিয়ন্ত্রণ, তদন্ত, উড্ডয়ন ঝুঁকি হ্রাসকরণ এবং সর্বোপরি নিরাপদ উড্ডয়নের ভূমিকা নিয়ে মতবিনিময় এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করা।

    উড্ডয়ন নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে, স্বাগতিক বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, চীন, মালয়েশিয়া, ভারত, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, সৌদি আরব, মিসর, ওমান, মরক্কো, নাইজেরিয়া এবং জিম্বাবুয়ের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা এ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।

    সেমিনারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, কোস্ট গার্ড, এমআইএসটি, বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশন, পদ্মা ওয়েল কোম্পানি লি., ফ্লাইং ক্লাবসহ নভোএয়ার, ইউএস বাংলা, রিজেন্ট এয়ার ওয়েজ, মেঘনা এভিয়েশন গ্রুপ, আর অ্যান্ড আর অ্যাভিয়েশন, স্কয়ার প্রমুখ সংস্থা বাংলাদেশে বিদ্যমান সরকারি বেসরকারি সব এয়ারলাইন্স অংশগ্রহণ করে।

  • শিক্ষকদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে আজ : এমপিওভুক্ত হচ্ছে ২৭৩০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

    শিক্ষকদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে আজ : এমপিওভুক্ত হচ্ছে ২৭৩০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

    ৯ বছর পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হতে যাচ্ছে। গণভবনে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিওভুক্তির এই ঘোষণা দেবেন। ফলে শিক্ষকদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে আজ। নতুনভাবে ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আওতায় আসবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়।

    রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেছেন, সর্বশেষ যতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল, তার প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান এবার এমপিওভুক্ত হচ্ছে। পাহাড়ি অঞ্চলসহ সব উপজলা থেকেই এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আওতায় আসছে।

    এবার নতুন নিয়ম চালু করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাহলো, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মান ধরে রাখতে ব্যর্থ হলে তাদের এমপিও সাময়িক স্থগিত হবে। তবে পুনরায় যোগ্যতা অর্জন করতে পারলে আবারও এই সুবিধার আওতায় আসতে পারবে। সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল।

    সূত্রে জানা যায়, এমপিওভুক্তির নতুন তালিকায় রয়েছে ১ হাজার ৬৫১টি স্কুল ও কলেজ, ৫৫৭টি মাদ্রাসা এবং ৫২২টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৬৮০টি স্কুল-কলেজ সম্পূর্ণ নতুন এবং প্রতিষ্ঠানের নতুন স্তর এমপিওভুক্ত হচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯৭১টি।

    নতুন এমপিওভুক্তির মধ্যে নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৩৯টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৪৬টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ২টি এবং কলেজ ৯৩টি। আর স্তর পর্যায়ে এমপিওভুক্ত হয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮৪৯টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ৬৬টি এবং কলেজ ৫৬টি।

    নতুন এমপিওভুক্তির তালিকায় রয়েছে ৩৫৯টি দাখিল মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠানের নতুন স্তর এমপিওভুক্ত হচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আলিম ১২৭টি, ফাজিল ৪২টি ও কামিল ২৯টি। কারিগরির সব প্রতিষ্ঠানই নতুন এমপিওভুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে কৃষি ৬২টি, ভোকেশনাল স্বতন্ত্র ৪৮টি, ভোকেশনাল সংযুক্ত ১২৯টি, বিএম স্বতন্ত্র ১৭৫টি ও বিএম সংযুক্ত ১০৮টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হচ্ছে।

    এমপিওভুক্তির দাবিতে ২০১০ সালের পর থেকেই থেমে থেমে আন্দোলন করে আসছেন এমপিওভুক্ত নয়, এমন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–কর্মচারীরা।

    গতকাল প্রায় এক ঘণ্টার মতবিনিময় সভায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে। যোগ্য বিবেচিত একটি প্রতিষ্ঠানও বাদ যাবে না। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় দেখা হবে না।

    স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আবেদন বাছাই করে যোগ্য তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ বিবেচনায় কেবল পিছিয়ে পড়া এলাকার প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট উপজেলার মেধাক্রম অনুসারে সেরা প্রতিষ্ঠানকে বেছে নেয়া হয়েছে।

  • সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবুর সম্পদের হিসাব তলব

    সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবুর সম্পদের হিসাব তলব

    ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বাবুর ব্যাংক হিসাবসহ সব সম্পদের তথ্য চেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

    একই সঙ্গে তার স্ত্রী সায়েমা আফরোজ ও তার মালিকানাধীন চার প্রতিষ্ঠানের সম্পদের তথ্যও তলব করা হয়েছে। আগামী সাতদিনের মধ্যে সম্পদ বিবরণী জমা দেয়ার অনুরোধ করে মঙ্গলবার এনবিআর থেকে দেশের সব ব্যাংকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

    প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে-সূচনা ড্রাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড, স্টার ট্রেডিং কোম্পানি, বাবু এন্টারপ্রাইজ এবং সূচনা ড্রাইং প্রিন্টিং ওয়েভিং ইন্ডাট্রিজ।

    এনবিআরের চিঠিতে নজরুল ইসলাম বাবুর পিতা ও মাতার নামসহ জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর (১৯৬৭৬৭১০২৩১৫৪৯৩২৮) উল্লেখ করা হয়েছে। তিনটি পৃথক ঠিকানা দেয়া হয়েছে। এগুলো হল- ৮/১২, গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স, ৮৮ শান্তিনগরের ২/৬০৪ ইস্টান পিয়ার এবং নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারের বাজবি গ্রাম।

    চিঠিতে বলা হয়, নজরুল ইসলাম বাবু, তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্য এবং মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর একক বা যৌথ নামে কোনো মেয়াদি আমানত হিসাব, যে কোনো ধরনের সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব, ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড, লকার বা ভল্ট, সঞ্চয়পত্র বা অন্য কোনো ধরনের সেভিংস ইন্সট্রুমেন্ট, ইনভেস্টমেন্ট স্কিম, ডিপোজিট স্কিম বা অন্য যে কোনো ধরনের বা নামের হিসাব পরিচালিত অথবা রক্ষিত থাকলে ওই হিসাবের ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে হালনাগাদ বিবরণী ও ঋণের বিপরীতে রক্ষিত জামানতের বিবরণী পত্রপ্রাপ্তির সাতদিনের মধ্যে এনবিআরে জমা দিতে বলা হয়েছে।

    নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চাহিদা অনুযায়ী তথ্য জমা দিতে ব্যর্থ ব্যাংকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলেছে এনবিআর।

    আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ১২৪ (২) ধারা অনুযায়ী এককালীন ২৫ হাজার এবং পরবর্তী প্রতিদিনের জন্য ৫০০ টাকা করে জরিমানা আরোপ করা হবে। একইভাবে ১৬৪ (সিসি) ধারা অনুযায়ী, অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড আরোপের লক্ষ্যে ফৌজদারী কার্যক্রম গ্রহণের কথা বলেছে এনবিআর।

    প্রসঙ্গত, নজরুল ইসলাম বাবু নির্বাচনী হলফনামায় মোট সম্পদ দেখিয়েছেন ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬৯ হাজার। বার্ষিক আয় ১৯ লাখ ৪০ হাজার এবং ব্যয় ১৭ লাখ টাকা।

  • ‘নিয়মের বাইরে গাড়ির সাইজ বাড়ালে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ’

    ‘নিয়মের বাইরে গাড়ির সাইজ বাড়ালে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ’

    নিয়মের বাইরে গিয়ে গাড়ির সাইজ বা ট্র্যাকের সাইজ যারা বাড়ায় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সড়ক পরিবহন মন্ত্রাণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০১৯ উদযাপন অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ নির্দেশ দেন।

    এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, পথচারী ও যারা গাড়িতে চড়েন তাদেরও দায়িত্ব আছে, যারা চালান তাদেরও দায়িত্ব আছে। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য শুধু চালক দায়ী নয় উল্লেখ করে তা প্রতিরোধে সকলকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। উপজেলা পর্যায়েও চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাস্তা যখন তৈরী করা হয়, সেখানে কত ফিট রাস্তায় কত সাইজের গাড়ি চলবে, দুটো গাড়ি চলতে গেলে কি সাইজের গাড়ি চলতে পারে এগুলো কিন্তু সাইন্টিফিক্যালি হিসেব করে তৈরী করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে আমরা দেখি যখন একটা বাস তৈরী করা হয় তাতে আরও ৪টা সিট বাড়ানোর জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বাড়ানো হয়।

    তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে যখন একটা ট্রাক তৈরী করা হয় তখন লোহার ক্ল্যাম্ব দিয়ে দু’পাশ বাড়িয়ে দেয়া হয়, যাতে বেশি মাল নিতে পারে। তাতে রাস্তার যতটুকু দখল করার কথা তার থেকে বেশি দখল করে নেয়। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। এ বিষয়গুলো আমি সব সময় সড়ক পরিবহন মন্ত্রালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের জানিয়েছি। যেহেতু এখানে মন্ত্রী সচিব আছে সবাইকে বলছি, আবার কেউ যদি এ ধরনের নিয়মের বাইরে গাড়ির সাইজ বা ট্র্যাকের সাইজ বাড়ায় তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। এ সময় চালকদের প্রশিক্ষণের দিকেও জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

    অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম, সাবেক নৌ মন্ত্রী শাজাহান খানসহ সড়ক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা এ সময় উপস্থিতি ছিলেন।

    এ সময় নিরাপদ সড়কের জন্য ‘ন্যাশনাল রোড সেফটি স্ট্যাটিজিক অ্যাকশন প্ল্যান-২০১৭’ বর্তমানে বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এছাড়া এ সময় তিনি সরকারের অন্যান্য পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন।

    সড়ক দুর্ঘটনায় শুধু চালক ও রাস্তার দোষ দিলে হবে না এমন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফুটওভার ব্রিজ আছে, তরুণরা তা ব্যবহার না করে রাস্তা পার হয়। তার যদি দুর্ঘটনা হয়, সেটার জন্য আমি চালককে দায়ী করবো কিভাবে। গাড়িতে বসে বাসের বাইরে হাত ঝুলিয়ে রাখা যাত্রীদের নিয়ম না। কাজেই দয়া করে কেউ বাসের জানালা দিয়ে হাত ঝুলিয়ে রাখবেন না। এমন করলে দুর্ঘটনা হবেই। তার জন্য অন্যকে দায়ী করলে কোন লাভ হবে না।

    তিনি বলেন, চালকরা বেশি সময় গাড়ি চালানোর কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে সচেতন হওয়া আমার মনে হয় একান্তভাবে দরকার। চালকদের ‘ওভার টেকিং’য়ের অসুস্থ্য প্রতিযোগিতার কারণেও দুর্ঘটনা হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ সময় ফিটনেস বিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ করার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

    সরকার চালকদের বিশ্রামের জন্য বিশ্রামাগার তৈরীর ব্যবস্থা নিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই ৪টি জায়গায় নির্দ্দিষ্ট করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারা বাংলাদেশেই ‘বিশ্রামাগার’ করে দেন। যারা গাড়ি চালক তারা যেন বিশ্রাম নিতে পারে সেই সুযোগ থাকবে। সেখানে চালকদের জন্য সুবিধা থাকবে। সেখানে গাড়ির তেল নিতে পারবে, যাত্রীরা নামতে পারবে এবং টয়লেটেরও ব্যবস্থা থাকবে।

    এ সময় চালকদের প্রশিক্ষণের দিকে জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন যারা চালক আসবে তাদের জন্য আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছি।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশে আমি দেখেছি, যেখানে স্কুল ও বেশি সংখ্যায় মানুষ রাস্তা পারাপার হয়, সেখানে ওই প্রতিষ্ঠান বা স্কুলের একজন শিক্ষক কিংবা প্রতিনিধি যে কেউ থাকে, সঙ্গে ট্র্যাফিক পুলিশের থাকে। তারা রাস্তা পারাপারে সাহায্য করে। এভাবে ছেলে মেয়েদের পার করে দেয়। ঠিক এভাবে কারখানাসহ যেখানে অধিক সংখ্যাক লোক চলাচল করে তাদের পারাপারের ব্যবস্থাও করে দিতে হবে।

  • ওমর ফারুক ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক লেনদেন স্থগিত

    ওমর ফারুক ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক লেনদেন স্থগিত

    গতকাল যুবলীগের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া ওমর ফারুক চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তার স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনও স্থগিত করা হয়েছে। ফলে তারা কোনো টাকা উত্তোলন বা স্থানান্তর করতে পারবেন না।

    জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চিঠির পরিপেক্ষিতে ব্যাংকগুলো ওমর ফারুকসহ অন্যান্যদের লেনদেন স্থগিত করে।

    ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে এনবিআর বলেছে, ওমর ফারুক চৌধুরী, তার স্ত্রী শেখ সুলতানা রেখা, ছেলে আবিদ চৌধুরী, মুক্তাদির আহমেদ চৌধুরী ও ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব থেকে কোনো টাকা উত্তোলন বা স্থানান্তর করা যাবে না। তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান লেক ভিউ প্রোপার্টিজ ও রাও কনস্ট্রাকশনের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনও স্থগিত থাকবে।

    সম্প্রতি যুবলীগের বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্যাসিনো ব্যবসা ও টেন্ডারবাজির অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর থেক ওমর ফারুক চৌধুরীর নামও উঠে আসে। এরপর থেকে তিনি দলের ভেতরে কোণঠাসা হয়ে পড়েন।

    সবশেষ রবিবার ওমর ফারুক চৌধুরীকে যুবলীগের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।

  • শুদ্ধি অভিযান চলবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

    শুদ্ধি অভিযান চলবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

    যেখানে অনিয়ম-দুর্নীতি পাওয়া যাবে সেখানেই শুদ্ধি অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

    তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে কেউ যেন দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদে জড়াতে সাহস না পারে সেজন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে।

    শনিবার দুপুরে রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার এগিয়ে চলছে’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই অভিযান কন্টিনিউ (অব্যাহত) করতেই হবে। আমি শুদ্ধি অভিযান বলব না, আমি বলব দুর্নীতির বিরুদ্ধে, অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান। দুর্নীতিবাজ, দখলবাজরা দুর্নীতি, দখলের চিন্তা যতদিন করবে; ততদিন এই অভিযান চলবে

    সহযোগী সংগঠন যুবলীগের নেতাদের চাঁদাবাজি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার অসন্তোষ প্রকাশ পাওয়ার পর জুয়ার আখড়া বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান শুরু হয়।

    দেশের চলমান শুদ্ধি অভিযান চলমান থাকবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন-যেখানে কোনো অসঙ্গতি দেখেছেন, সেটা কে বা কার দল বা কাদের দল সেটা তিনি দেখেননি। অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। দেশের দুর্নীতি বন্ধে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী কতগুলি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ দমন করেছেন। তিনি দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চান। যার ভিত্তিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। উন্নত বাংলাদেশ গড়তে দুর্নীতি সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। যাতে কেউ ভবিষ্যতে দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদে জড়াতে সাহস না পায়।’

    আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘যেখানেই অনিয়ম হবে, দুর্নীতি হবে, আইন অমান্য হবে সেখানেই অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা কোনো এলাকা কিংবা বিষয়কে টার্গেট করছি না।’

    ‘আপনারা দেখছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী টেন্ডারবাজি, অনিয়মকারী কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না। আমরা অবশ্যই টেন্ডারবাজ, দুর্নীতিবাজ এবং অনিয়মকারীদের কন্ট্রোলে নিয়ে আসব। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস তিনি দূর করবেন। তিনি কিন্তু তাই করেছেন। দেশের মানুষ এখন জঙ্গিবাদকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় না। তাই জনগণকে সঙ্গে নিয়েই জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ কে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।

    আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘এখন মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। আমরা সেটি বাস্তবায়নে কাজ করছি। তাই আমরা নতুন প্রজন্মের কাছে আহ্বান রাখব তারা যেন এই কাজটি (মাদক গ্রহণ) না করে। আমরা চাইনা আমাদের নতুন প্রজন্ম একটি ভুলের মধ্য দিয়ে হারিয়ে না যায়। আমরা চাই আমরা যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি সেটি যেন তরুণ প্রজন্ম বাস্তবায়ন করতে পারে।’

    সুশাসনের কারণে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ আমরা যখন নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের ক্ষমতায় আসি তখন দেশে পূজামণ্ডপ ছিল ৯ হাজার বা ১০ হাজারের মতো। বর্তমানে সে সংখ্যা ৩২ হাজারের কাছাকাছি। শুধু পূজামণ্ডপ নয়, দেশে এমন কোনো জেলা নাই যেখানে বৌদ্ধ ধর্মের কোনো প্যাগোডা নেই। ঠিক সেভাবেই সব ধর্মের প্রতিনিধিরা নির্বিঘ্নে এ বাংলাদেশে থাকছেন। কে মুসলিম, কে হিন্দু, কে বৌদ্ধ, কে খ্রিষ্টান, কে পাহাড়ি, কে নৃ-গোষ্ঠী আমরা তা দেখছি না। আমাদের কাছে সবাই বাঙ্গালি। সবাই মিলেমিশে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই।’

    দ্রুত আবরার হত্যার চার্জশিট

    অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীর হাতে নিহত বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের বিষয়েও কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আবরার হত্যার চার্জশিট দ্রুত দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আবরার হত্যার ঘটনা দুঃখজনক। এই ঘটনায় আমরা বিস্মিত। এই হত্যার চার্জশিট অতি দ্রুত সময়ে প্রস্তুতের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

    আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘আবরার হত্যার ঘটনায় আমরা বিস্মিত হয়েছি। মেধাবী ছাত্র না হলে বুয়েটে কেউ চান্স পায় না। সেই মেধাবী ছাত্রগুলো এভাবে খুন করল। তাদের মত মেধাবীদের মস্তিষ্ক এতটা বিকৃত হবে এটা আমাদের ধারণাই ছিল না। আমরা সত্যিই দুঃখিত। তবে আমরা শুধু দুঃখ প্রকাশ করে থেমে থাকেনি। আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেই অপরাধীদের ধরেছি। সেই সঙ্গে নির্দেশ দিয়েছি এ ঘটনায় অতিদ্রুত যাতে নির্ভুল একটা চার্জশিট প্রস্তুত করা হয় এবং অতিদ্রুত যেন এ ঘটনায় ন্যায্যবিচার পায় আমরা সে আশা করছি। ইতোমধ্যে সে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

  • রোহিঙ্গা শরনার্থীদের দ্বারা বন ও পরিবেশের ক্ষতি ৪২২০ কোটি টাকা

    রোহিঙ্গা শরনার্থীদের দ্বারা বন ও পরিবেশের ক্ষতি ৪২২০ কোটি টাকা

    মায়ানমারের সামরিক বাহিনী দ্বার গণহত্যা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরনার্থীদের কারণে গত দু’বছরে বন ও পরিবেশের সর্বমোট ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ২ শ’ ২০ কোটি টাকা । তারমধ্যে ৬ হাজার একর সংরক্ষিত বনভূমি সম্পূর্ণ উজাড় হয়েছে।

    রোহিঙ্গা শরনার্থীরা জ্বালানি হিসাবে ছাই করে ফেলেছে ১ হাজার ৮ হাজার ৩৭ একর সংরক্ষিত বনভূমি। টাকার অংকে যার পরিমাণ ৫ শ’ ৫৫ কোটি টাকা।

    রোহিঙ্গা শরনার্থীদের পদচারণা, রাস্তা নির্মাণে ও অন্যান্যভাবে ধ্বংস করা হয়েছে আরো প্রায় ৫ শ’ বনভূমি। ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৮ শ’ ২৯ টাকার জীববৈচিত্র্য। ৫ শ’ ৯১ কোটি টাকার মূল্যবান বনজ দ্রব্য। যেসব ক্ষতি সর্বমোট টাকার মূল্যে ২ হাজার ৪ শ’ ২০ কোটি টাকা।

    শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সিএসপি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

    চলতি বছরের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বন বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের দিয়ে সরেজমিনে জরীপ ও পরিদর্শন করে এই ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়। জরীপ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করে।

    জাতীয় সংসদীয় কমিটির পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন আহমদ এমপি, প্রতিমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এমপি, কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও একই কমিটির সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম, সদস্য রেজাউল করিম বাবলু এমপি, খোদেজা নাসরিন এমপি, আক্তার হোসেন এমপি একই মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

    বিশেষ আমন্ত্রণে সভায় উপস্থিত ছিলেন-পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রশাসন (প্রশাসন), পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রধান বন সংরক্ষক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম, বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদ্বয় ও কমিটির সচিব ও সরকারের উপসচিব এ.কে.এম.জি কিবরিয়া, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকড়তাগণ সহ সাচিবিক দায়িত্ব পালনকারীরা।

    স্থায়ী কমিটির এ সভায় মূলত রোহিঙ্গা শরনার্থী আগমনের কারণে কক্সবাজারের বন ও পরিবেশের যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, স্থানীয় জনগোষ্ঠী যে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, তা আবার কিভাবে পূরণ করা যায়, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

    এ পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সংসদীয় কমিটি গত বৃহস্পতিবার ১৭ অক্টোবর উখিয়ার কুতুপালংয়ে বনের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে।

    এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের বসতি এবং তাদের কারণে বনের যেসব ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার একটি চিত্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে, যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। সংসদীয় কমিটি গত ১৭ অক্টোবর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের ছেয়ে আরো ভয়াবহ চিত্র অবলোকন করে। এ ভয়ানক বিষয়টিকে কমিটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনা করেছে। কমিটির বৈঠক কক্সবাজারেই করা হবে। এ বৈঠকে বনাঞ্চলে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় কেন্দ্রিক ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়।

    রোহিঙ্গারা বনভূমিতে বসতি স্থাপন করায় তা যেমন বেদখল হয়ে যাচ্ছে, তেমনি জীবিকার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বনভূমির গাছই কেটে পাচার করছে তারা। শরণার্থী ক্যাম্প ও বনাঞ্চলে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি বন ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করছে। তারা জ্বালানির চাহিদা মেটাতে বনভূমি ধ্বংস করা ছাড়াও পাহাড় কাটা ও মাটি বিক্রি, অবৈধভাবে কাঠ ও বনজদ্রব্য পাচারে যুক্ত হয়েছে। সঠিক নাম-ঠিকানার অভাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোহিঙ্গা অপরাধীদের শনাক্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

    প্রতিবেদনের উল্লেখ করে সভায় বলা হয়, ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের দক্ষিণ বন বিভাগের ছয় হাজার ১৬৪ একর বনভূমিতে বসতি স্থাপনের ফলে দুই হাজার ২৭ একর সৃজিত (সামাজিক বনায়ন) বন এবং চার হাজার ১৩৬ একর প্রাকৃতিক বন ধ্বংস হয়ে যায়। সৃজিত বনের ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুইশ’ কোটি টাকা। প্রাকৃতিক বনের ক্ষতি আড়াইশ’ কোটি টাকারও বেশি। মোট বনজদ্রব্যের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা।

    হাতি চলাচলের পথ বন্ধ :
    কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয়, রোহিঙ্গা বসতির কারণে বালুখালী-ঘুমধুম করিডোর দিয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে হাতি চলাচলের পথ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়েছে। তাই হাতি ও মানুষের মধ্যে সংঘাত বাড়ছে। ইতিমধ্যে হাতির আক্রমণে ১২ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। ভবিষ্যতে এই সংঘাত আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

    কক্সবাজার জেলার বনভূমি এশিয়ান হাতির বাসস্থান, বিচরণ ও প্রজনন ক্ষেত্র। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) ২০১৭ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী- এই এলাকায় ৬৩টি এশিয়ান হাতি বাস করে। উখিয়া-টেকনাফ এবং রামু (আংশিক) উপজেলার বনভূমিতে বাস করলেও পানেরছড়া-রাজারকূল এবং বালুখালী-ঘুমধুম করিডোর দিয়ে হাতিগুলো বান্দরবান ও মিয়ানমারে চলাচল করত। রামু ক্যান্টনমেন্ট স্থাপনের ফলে আগেই পানেরছড়া-রাজারকূল করিডোর বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গারা আসায় বাকি সাড়ে চার কিলোমিটার করিডোরও সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘর্ষ বাড়ছে। উখিয়া-টেকনাফের বনভূমিতে পরিকল্পনাহীন বসতি এবং জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের ফলে হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে গেছে এবং হাতির খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে মানুষ ও হাতির সংঘর্ষ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

    ব্যাপক ক্ষতি জীব বৈচিত্র্যের :
    স্থায়ী কমিটির সভায় বলা হয়, রোহিঙ্গা বসতির ফলে জীববৈচিত্র্য ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়, যা নিরূপণে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন। তাছাড়া এই ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করতে হয় বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে বাস্তবায়নাধীন সিঙ্গেল পয়েন্ট মোরিং (এসপিএম) প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত সংরক্ষিত বনভূমিতে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে বিশেষজ্ঞ কমিটি জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব-নিকাশ করে। একই জেলায় প্রায় একই ভূ-প্রকৃতির অংশ হওয়ায় এসপিএম প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ কমিটির নির্ধারিত ক্ষয়ক্ষতির অনুরূপ হারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে ধ্বংস হওয়া ছয় হাজার একর রক্ষিত ও সংরক্ষিত বনভূমিতে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। বনজদ্রব্যের ৪৫০ কোটি ও জীববৈচিত্র্যের এক হাজার ৪০৯ কোটি মিলে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। আরও সঠিক হিসাব নির্ধারণে ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে ১০ সদস্যবিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটির রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়েছে।

    অবকাঠামো নির্মাণ অব্যাহত :
    শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কক্সবাজার দপ্তরের (আরআরআরসি অফিস) ৭ অক্টোবর পর্যন্ত হিসেবে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কাজের হালনাগাদ প্রতিবেদনে শুধু বসতির কারণেই ক্ষতি দেখানো হয়েছে সাড়ে ছয় হাজার একর বনের। গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রম, ভাসানচরে স্থানান্তর এবং ক্যাম্প এলাকার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির পর্যালোচনা করা হয়।

    এ সময় বলা হয়, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাই কক্সবাজারে আর কোনো জমি বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। কক্সবাজারে বরাদ্দ দেওয়া আট হাজার একর বনভূমির বাইরে রোহিঙ্গাদের আর কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এসব তত্ত্বাবধান করবেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক।

    তবে বিভিন্ন সংস্থা ক্যাম্প এলাকায় চলাচলের জন্য রাস্তা, ল্যাট্রিন, নলকূপ, গুদামঘর,ওয়্যারহাউস ইত্যাদি তৈরি করছে। বন বিভাগের গেজেটভুক্ত সংরক্ষিত, রক্ষিত বনভূমিতে এসব স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে তাদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে। এ পর্যন্ত ৩৪টি ক্যাম্প ও ২৮টি সিআইসি অফিস স্থাপন করা হয়েছে।

    এসব ক্যাম্পে দুই লাখ ১২ হাজার ৬০৭টি ঘর (অস্থায়ী শেল্টার), ৯ হাজার ৪৩৭টি নলকূপ, ৫৮ হাজার ৩০টি ল্যাট্রিন, ১৬ হাজার ৯৫৭টি গোসলখানা, ২০ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন, ৩৪ দশমিক ৬০ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক, ত্রাণ সংরক্ষণের জন্য ২০টি অস্থায়ী গুদাম নির্মাণ করা হয়েছে। স্থাপনার পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে।

    স্থাপনা নির্মাণ করতে গিয়ে ইউএনএইচসিআরসহ বিভিন্ন এনজিও, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, এলজিইডি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থা ব্যাপক হারে পাহাড় কাটছে। ক্যাম্প এলাকায় বনভূমির পাহাড় কেটে পুলিশ ক্যাম্প এবং বিভিন্ন সংস্থার অফিসের জন্যও অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।

    জ্বালানি সংগ্রহে বন ধ্বংস এক হাজার ৮০০ একর :
    রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন ধরনের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হলেও রান্নার জন্য কোনো জ্বালানির ব্যবস্থা করা হয়নি। তারা ক্যাম্পের বাইরে এক হাজার ৮৩৭ একর বনভূমিতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে গাছ কাটছে। এমনকি গাছের শিকড়ও উপড়ে ফেলছে। জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের কারণে বনজদ্রব্য ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৫৫ কোটি টাকা। বিভিন্ন সংস্থা এক লাখ ৭০ হাজার ৪৭৮ পরিবারকে (স্বাগতিক পরিবারসহ) বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলপিজি সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে রোহিঙ্গা পরিবার এক লাখ ৬৪ হাজার ৫১৩টি এবং স্থানীয় স্বাগতিক পরিবার পাঁচ হাজার ৯৬৫টি।

    কিছুদিন আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা পরিদর্শন করে আসা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন সভায় সংসদীয় কমিটিকে জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কোনো কোনো স্থানে হাতির ছবি টানানো রয়েছে এবং লেখা আছে হাতির চলাচলের পথ। অথচ সেখানে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি করে থাকতে দেওয়া হয়েছে। তারা সেখানে অবস্থান করছে।

    এ অবস্থায়, ক্রমাগত এ ধ্বংসযজ্ঞ আর চলতে দেওয়া যায়না। আন্তর্জাতিক মহলকে বন, পরিবেশ, জীববৈচিত্র্যের এ ভয়ংকর ক্ষয়ক্ষতির কথা অবহিত করা হবে। এক্ষতি সহসায় পূরণ করা নাগেলেও আন্তজার্তিক মহলকে ক্ষতি পূষিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে আহবান জানানো হবে।

    প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির অনুষ্ঠিত এ সভা কক্সবাজারের জন্য প্রথম একটি সভা।

  • রাসেলের স্মৃতিচারণায় অশ্রুসিক্ত প্রধানমন্ত্রী

    রাসেলের স্মৃতিচারণায় অশ্রুসিক্ত প্রধানমন্ত্রী

    জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের ৫৫তম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ছোট ভাইয়ের স্মৃতি হাতড়ে কেঁদেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে রাসেল বেঁচে থাকলে দেশের জন্য অনেক কিছু করত বলেও আফসোস করেন প্রধানমন্ত্রী।

    শুক্রবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেলের ৫৫তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

    শেখ রাসেল সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগঘন কণ্ঠে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন বড় বোন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘আজকে ৫৪ বছর বয়স পূরণ করেছে রাসেল। আজ তাকে দেখতে কেমন লাগতো? আমার ভাইকে দেখতে কেমন লাগতো? আজকে রাসেল আমাদের মাঝে নেই। আমি আমার রাসেলকে হারিয়েছি। কিন্তু লাখো রাসেলকে পেয়েছি।’

    বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘রাসেলের জন্ম হয়েছিল ১৯৬৪ সালে। ঠিক যেই মুহূর্তে রাসেল জন্মায় তখন আব্বা খুব ব্যস্ত। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, ফাতেমা জিন্নাহ প্রার্থী। তিনি সেই নির্বাচনে প্রচারণার কাজে চট্টগ্রামে ছিলেন। অত্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন। রাসেলের জন্ম হওয়ার পর আমরা তাকে খবর দিই।’

    রাসলকে স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চার ভাই-বোন উদ্বিগ্ন হয়ে বসে ছিলাম এই ছোট্ট শিশুটির জন্ম মুহূর্তটা এবং তারপর তাকে কোলে নেয়া। তাকে লালন-পালন করা তার পাশে থাকে। জাতির জনক ৬৭ সালে যখন কারাগারে গেলেন রাসেলের বয়স তখন দুই বছরও হয়নি। তখনই সে বাবার স্নেহ বঞ্চিত হলো।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কারাগারে যেতাম আব্বার সঙ্গে দেখা করতে। রাসেল কিছুতেই আসতে চাইতো না। সে বাবাকে ছাড়া আসবে না। বাবাকে নিয়ে ঘরে ফিরবে। সেই সময় আমার বাবা বলতে বাধ্য হলেন, এটা আমার বাড়ি। আমি আমার বাড়িতে থাকি। তুমি তোমার মায়ের বাড়িতে যাও। তখনও সে ভালো করে কথাও বলতে পারে না। তারপরে সে প্রচণ্ড কান্নাকাটি করত। তাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে নিয়ে আসতে হতো।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দিন আমরা জেলখানায় দেখা করতে যেতাম সেই দিন সে খুব অস্থির থাকত। ঘুমাতে চাইতো না, খেতে চাইতো না। অনেক সময় মধ্য রাতে উঠে বসে থাকতো, আমাদের সবাইকে ডাকতো। আমরা সব ভাই-বোন গিয়ে তার কাছে বসতাম। সে কিছু বলতে পারছে না। সে তার মনের ব্যথাটা জানাতে পারছে না। কিন্তু তার বেদনাটা আমরা বুঝতে পারতাম।’

    ১৯৭৫ সালে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধু, তার স্ত্রী, তিন পুত্র দুই পুত্রবধূসহ মোট সাতজনকে ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার বাড়িতে হত্যা করা হয়। দেশের বাইরে থাকা বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে রক্ষা পান।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দরিদ্র মানুষের সঙ্গে নিজের খাবার ভাগ করে খেতেন। তিনি সব সময় তা করতেন। ঠিক সেই গুণটি রাসেলের মধ্যেও ছিল। গ্রামে গেলে দরিদ্র শিশুদের যে কিছু দিতে হবে তা সে চিন্তা করতো। রাসেলের খুব শখ ছিল বড় হয়ে সে আর্মি অফিসার হবে। সে কাঠের বন্দুক বানাতো। সেটা নিয়ে খেলা করতো।’

    ‘শিশুদের প্রতি তার দরদ ছিল। শিশুদেরকে সে কিছু না কিছু দিতো। বেঁচে থাকলে দেশের জন্য অনেক কিছু করতে পারতো রাসেল। কিন্তু ঘাতকরা একজন ছোট্ট শিশুকেও বাঁচতে দেয়নি।’

    ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির স্মৃতি-বিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্ম নেন শেখ রাসেল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার সময় রক্ষা পাননি শিশু রাসেল। তখন তিনি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।