Category: জাতীয়

  • রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মমতার বক্তব্য সঠিক পদক্ষেপ নয়

    রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মমতার বক্তব্য সঠিক পদক্ষেপ নয়

    বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নয়াদিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখিত প্রস্তাবনা পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার এই বক্তব্য রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সঠিক পদক্ষেপ নয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

    সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অবস্থান নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

    পরে এক সংবাদ সম্মেলনে মমতার বক্তব্যের বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

    তৌহিদ হোসেন বলেন, উনি (মমতা) এই বক্তব্য কেন দিলেন এটা আমি বুঝতে পারছি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এটা তার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নয়। রাজনীতিবিদরা তো সবসময় রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। আমি মনে করি, এটা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির জন্য সহায়ক হবে না। এটা অবশ্য আমার মত।

    ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ-ভারত ফরেন অফিস কনসালটেশনের (এফওসি) পরবর্তী পর্বে যোগ দিতে চলতি মাসের মাঝামাঝি ঢাকা সফর করার কথা রয়েছে। ভারতের সঙ্গে দিন দিন সম্পর্কের টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে এফওসি হওয়া নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে।

    এফওসি হওয়ার প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, এফওসি হওয়ার কথা। আমি মনে করি হবে। এখন দুইপক্ষ একসঙ্গে হতে হবে।

    সম্পর্কের যে টানাপোড়েন চলছে, সামনের দিনগুলোতে দিল্লিকে ঢাকা কীভাবে সামলাবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, পারস্পরিক স্বার্থ ঠিক রেখে আমরা ভারতের সঙ্গে একটা স্বাভাবিক, ভালো ও সুসম্পর্ক চাই।

    ভারতের আন্তরিকতা প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, আন্তরিকতা তো পরিমাপ করা খুব কঠিন কাজ। এটা গণমাধ্যমকে মাপতে হবে। এখানে অন্তরের চেয়ে স্বার্থ গুরত্বপূর্ণ উভয়ের জন্য। আমি মনে করি, ভারত-বাংলাদেশ উভয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নেবে নিজেদের স্বার্থ অনুযায়ী।

    তিনি বলেন, ভারতীয় ভিসা বন্ধ। যে কারণে অনেকে চিকিৎসা নিতে ভারত যেতে পারছে না। আবার কলকাতার ব্যবসায়ীদের অবস্থা খারাপ, এটা ভারতের স্বার্থ কি না তাদের দেখতে হবে। বৃহত্তর স্বার্থে তারা যদি মনে করে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতি হোক তবুও ভারতের সরকার অন্যটাতে…। ভারতের স্বার্থ তো আমি বুঝতে পারব না।

  • আগরতলায় বাংলাদেশের হাইকমিশনে ভাঙচুর, ভারতের দুঃখ প্রকাশ

    আগরতলায় বাংলাদেশের হাইকমিশনে ভাঙচুর, ভারতের দুঃখ প্রকাশ

    ভারতের আগরতলার কুঞ্জবনে অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

    বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিক্ষোভ সমাবেশ ডাকে ওই সমিতি। আগরতলার সার্কিট হাউসে অবস্থিত গান্ধী মূর্তির সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। পরে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ছয়জনের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে গিয়ে স্মারকলিপি দেয়।

    এক পর্যায়ে সমিতির বিক্ষুব্ধ সদস্যরা সহকারী হাইকমিশনের ভেতরে প্রবেশ করে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলেন এবং সেই পতাকা ছিঁড়ে ফেলেন। পরে ভবনের সামনে থাকা সাইনবোর্ড ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেন।

    এদিন, বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আগরতলায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রাঙ্গণ ভাঙার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। কোনো অবস্থাতেই কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার সম্পত্তি লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।

    বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এমন অবস্থায় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের ডেপুটি/সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।

  • বিজয়ের মাস ডিসেম্বর শুরু

    বিজয়ের মাস ডিসেম্বর শুরু

    ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ‘নতুন বাংলাদেশে’ এসেছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ৫৩ বছর আগে ১৯৭১ সালের এই ডিসেম্বরেই বাঙালির নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষার শপথ নিয়ে মাসটি নানান অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হবে।

    বিজয়ের মাসে পুরো বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের, যাদের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের এই মহান স্বাধীনতা।

    বাঙালির সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ঘটনা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির কয়েক হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্নসাধ পূরণ হয় এ মাসে।

    বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় আসে এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে।

    বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নপূরণ হওয়ার পাশাপাশি বহু তরতাজা প্রাণ বিসর্জন আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এ অর্জন হওয়ায় বেদনাবিধুর এক শোকগাঁথার মাসও এ ডিসেম্বর।

    এ মাসেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল-শামসদের সহযোগিতায় হানাদার গোষ্ঠী দেশের মেধাবী, শ্রেষ্ঠ সন্তান-বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। সমগ্র জাতিকে মেধাহীন করে দেওয়ার এ ধরনের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের দ্বিতীয় কোনো নজির বিশ্বে নেই।

    ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ আর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর জল, স্থল আর আকাশপথে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর চারদিক থেকে ভেসে আসতে থাকে।

    ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

    মহান এ বিজয়ের মাস উদযাপনে জাতীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

  • ডিবি থেকে পরিবারের জিম্মায় মুন্নী সাহার মুক্তি

    ডিবি থেকে পরিবারের জিম্মায় মুন্নী সাহার মুক্তি

    রাজধানীর কারওয়ান বাজারে শনিবার রাতে সাংবাদিক মুন্নী সাহাকে কিছু লোক ঘেরাও করে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যায়। পরে তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

    তবে প্যানিক অ্যাটাকে অসুস্থ থাকায় জামিনের শর্তে তাকে পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

    এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, কারওয়ান বাজারে লোকজন মুন্নী সাহাকে ঘেরাও করেছিল। তখন তিনি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়লে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে ডিবিতে আনা হয়। যেহেতু তার নামে চারটি মামলা আছে, সেগুলোতে জামিনের শর্তে তাকে পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

    তবে এর আগে, তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন জানান, সাংবাদিক মুন্নী সাহা রাত ১০টার দিকে কারওয়ান বাজারের জনতা টাওয়ারের অফিস থেকে বের হওয়ার পর কিছু ব্যক্তি তাকে ঘিরে ধরেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। তার বিরুদ্ধে মামলা থাকায় গ্রেফতার করা হয়।

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মুন্নী সাহাকে নিয়ে যাওয়ার পর শতাধিক ব্যক্তি তার বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন।

    মুন্নী সাহা ‘এক টাকার খবর’ নামের একটি অনলাইন পোর্টালের সম্পাদক।

    গত ৬ অক্টোবর মুন্নী সাহার সব ধরনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চায় বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। চিঠিতে মুন্নী সাহার আমানত, ঋণ, ক্রেডিট কার্ড, ফরেন ট্রেড, এক্সচেঞ্জ, লকার ও অফশোর ব্যাংকিংয়ের তথ্য চাওয়া হয়।

    ভোরের কাগজ দিয়ে মুন্নী সাহার সাংবাদিকতা শুরু। সেখান থেকে তিনি যান একুশে টেলিভিশনে। এরপর যোগ দেন এটিএন বাংলায়।

    এটিএন নিউজের শুরু থেকেই তিনি যুক্ত ছিলেন। মালিকপক্ষের সঙ্গে বিরোধের জেরে ২০২৩ সালের ৩১ মে মুন্নী সাহা এটিএন নিউজ থেকে পদত্যাগ করেন।

    গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদার (১৭) নিহতের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। গত ২২ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় ওই মামলা করেন নিহত শিক্ষার্থীর বাবা মো. কামরুল ইসলাম।

    সে মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ একাধিক মন্ত্রী-এমপি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সদস্য এবং পুলিশ ও র‍্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে যে ৭ সাংবাদিককে আসামি করা হয়, তাদের একজন মুন্নী সাহা।

  • মুন্নী সাহা গ্রেফতার

    মুন্নী সাহা গ্রেফতার

    টেলিভিশন উপস্থাপক ও সাংবাদিক মুন্নী সাহাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গেছে, রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ‘এক টাকার খবরে’র অফিস থেকে বের হয়ে সবজি কিনতে যান মুন্নী সাহা। সেখানে গিয়ে তিনি জনতার তোপের মুখে পড়েন। বেশকিছুক্ষণ তাকে ঘিরে রাখা হয়। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তেজগাঁও থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। 

    শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান। তিনি বলেন, কারওয়ান বাজার একাকায় মুন্নী সাহাকে স্থানীয় লোকজন ঘিরে ফেলে। এরপর পুলিশ গিয়ে তাকে তেজগাঁও থানায় নেয়। সেখান থেকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন বলেন, মুন্নী সাহার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতা নিহতের ঘটনায় সাংবাদিক মুন্নী সাহার বিরুদ্ধে মামলা হয়। গত ৬ অক্টোবর মুন্নী সাহার সব ধরনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চায় বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

    চিঠিতে মুন্নী সাহার আমানত, ঋণ, ক্রেডিট কার্ড, ফরেন ট্রেড, এক্সচেঞ্জ, লকার ও অফশোর ব্যাংকিংয়ের তথ্য চাওয়া হয়।

    ভোরের কাগজ দিয়ে মুন্নী সাহার সাংবাদিকতা শুরু। সেখান থেকে তিনি যান একুশে টেলিভিশনে। এরপর যোগ দেন এটিএন বাংলায়।

    এটিএন নিউজের শুরু থেকেই তিনি যুক্ত ছিলেন। মালিকপক্ষের সঙ্গে বিরোধের জেরে ২০২৩ সালের ৩১ মে মুন্নী সাহা এটিএন নিউজ থেকে পদত্যাগ করেন।

    গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে শিক্ষার্থী নাঈম হাওলাদার (১৭) নিহতের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। গত ২২ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় ওই মামলা করেন নিহত শিক্ষার্থীর বাবা মো. কামরুল ইসলাম।

    সে মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ একাধিক মন্ত্রী-এমপি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সদস্য এবং পুলিশ ও র‍্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে যে ৭ সাংবাদিককে আসামি করা হয়, তাদের একজন মুন্নী সাহা।

  • রাজধানীর তিন এলাকায় বিজিবি মোতায়েন

    রাজধানীর তিন এলাকায় বিজিবি মোতায়েন

    আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীর তিন এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

    মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।

    তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীর শাহবাগ, মৎস্য ভবন ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এলাকায় চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

    এর আগে, সোমবার (২৫ নভেম্বর) যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

  • আমরা কঠোর হলে আপনারাই বলবেন আগের মতো হয়ে গেছে

    আমরা কঠোর হলে আপনারাই বলবেন আগের মতো হয়ে গেছে

    সম্প্রতি বিভিন্ন আন্দোলন ঠেকাতে সরকারের কঠোর না হওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আমরা কঠোর হলে আপনারাই বলবেন আগের মতো হয়ে গেছে। আমরা চাই আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করতে। আমরা চাই তারা যাতে দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় সহিংস আন্দোলন না করে।

    মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওর পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

    স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কলেজের সমস্যা আলোচনা করে সমাধান করতে হবে। এজন্য আমাদের শিক্ষকরা রয়েছেন। কেউ রাস্তায় নামার প্রয়োজন নেই। রাস্তা ব্লক না করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসেও দাবি জানাতে পারে, তাদের প্রতিনিধি গিয়ে আমাদের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলাপ করতে পারে। বিভিন্ন কলেজের সমস্যা নিয়ে ছাত্র প্রতিনিধিরা নিজেদের মধ্যে আলাপ করতে পারে। আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে। আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। যারা আন্দোলন করছে তারা আমারই ভাই, কার ওপর কঠোর হব।

    হাওরের কৃষি নিয়ে তিনি বলেন, কৃষিপণ্যে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন কি না সেটা দেখার বিষয়। কোনো মধ্যস্বত্তভোগী যাতে সুবিধা নিতে না পারে সেটিও দেখতে হবে।

    পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুনামগঞ্জের এবং হাওরাঞ্চলের লাখো লাখো মানুষ বোর ফসলের ওপর নির্ভরশীল। বোর ফসল অকাল বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে বাঁধের কাজে সব অনিয়ম দূর করে যথাসময়ে কাজ শুরু ও শেষ করতে হবে। এছাড়া হাওরে নিয়ন্ত্রিত পর্যটন ব্যবসা গড়ে তোলে, সবাইকে পরিবেশের বিষয়ে সচেতন রাখারও আহ্বান জানান তিনি।

    এ সময় উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, পুলিশ সুপার, আ. ফ. ম. আনোয়ার হোসেন খান, সুনামগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমন দোজ্জা, কবি নজরুল সরকারি কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক তানভীর ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।

  • শপথ নিলেন সিইসি ও চার কমিশনার

    শপথ নিলেন সিইসি ও চার কমিশনার

    নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এস এম মো. নাসির উদ্দীন ও অন্য চার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) শপথ নিয়েছেন।

    রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ তাদের শপথবাক্য পাঠ করান।

    শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভূঁঞা। এ সময় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের ও ইসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

    এর আগে ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক সচিব এ এস এম মো. নাসির উদ্দীন। তার সঙ্গে চার নির্বাচন কমিশনারের নামও ঘোষণা করা হয়।

    ওই চার নির্বাচন কমিশনার হলেন- সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব তহমিদা আহ্‌মদ ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

    সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাদের নিয়োগ দেন।

  • গ্যাসের জন্য আ.লীগ আমলে ২০ কোটি টাকা ঘুস দিয়েছি

    গ্যাসের জন্য আ.লীগ আমলে ২০ কোটি টাকা ঘুস দিয়েছি

    আওয়ামী লীগের শাসনামলে শিল্প কারখানায় গ্যাস সংযোগ পেতে ২০ কোটি টাকা ঘুস দিতে হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বলেছেন, শিল্প কারখানায় বিনিয়োগের পর গ্যাস পেতে নিজের টাকায় ৪০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করতে হয়েছে। এই পাইপলাইন নির্মাণে শুধু রোড কাটিং বাবদ আমি ২০ কোটি টাকা ঘুস দিয়েছি। আর এই ঘুস দেওয়ার জন্যও আমাকে ঘুস দিতে হয়েছে।

    শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

    সেখ বশির উদ্দিন বলেন, গ্যাসের জন্য জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর বাসার সামনে আমাকে বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তার কাছ থেকে অনেক লেকচার শুনতে হয়েছে। মিনিমাম সম্মান পর্যন্ত পাইনি। তারপরও জ্বি স্যার, জ্বি স্যার বলতে হয়েছে। কিছু কিছু মানুষের সিটিস্ক্যান করে তাদের ব্রেন দেখার ইচ্ছা হচ্ছে আমার। মানুষ কীভাবে এত ক্রিমিনাল হতে পারে?

    বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমি জ্বালানি উপদেষ্টাকে এক মিটিংয়ে বলতে শুনেছি যে জ্বালানি খাত দুর্নীতির অন্যতম স্তম্ভ। সেখান থেকে আমাদের বের হতে হবে।

    অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ভোলার গ্যাসক্ষেত্রে আবিষ্কৃত গ্যাস সিএনজি বা এলএনজি ফরম্যাটে আনার জন্য আগামী ডিসেম্বরে দরপত্র আহ্বান করা হবে।

    ফাওজুল কবির বলেন, ভোলায় ৭০ এমএমসিএফ গ্যাস পাওয়া গেলেও পাইপলাইন না থাকায় ওই গ্যাস ঢাকায় বা শিল্প এলাকায় আনা যাচ্ছে না। ভোলার গ্যাস ঢাকায় আনার জন্য আমরা ডিসেম্বরেই ওপেন টেন্ডার দিচ্ছি। আগ্রহী ব্যবসায়ীরা দরপত্রে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এলএনজি বা সিএনজি ফরম্যাটে এই গ্যাস ঢাকায় আনতে পারবেন। ভোলার গ্যাস ঢাকায় আনা গেলে শিল্পে গ্যাসের সংকট কিছুটা হলেও কমবে।

    পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ভোলা থেকে গ্যাস আনার টেন্ডার আহ্বান করা হবে। এছাড়া ৯ ডিসেম্বর অফশোর বিডিং টেন্ডার ওপেন করা হবে। আগামী বছরের শুরুতেই বিশ্বের নাম করা জ্বালানি কোম্পানির সঙ্গে অফশোরের গ্যাস নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারব বলে আশা করি। তিনি বলেন, পাবর্ত্য এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস পাওয়ার বিপুল সম্ভাবনা আছে। এসব এলাকার গ্যাস অনুসন্ধানে অনশোর বিডিং ওপেন করার প্রস্তুতি চলছে। আশা করছি আগামী মার্চের মধ্যে অনশোর বিডিং করা সম্ভব হবে।

  • জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : উপদেষ্টা

    জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : উপদেষ্টা

    অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ৩ মাসে জ্বালানি খাতে ৩৭০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

    শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে শিল্প খাতে জ্বালানি সংকট নিয়ে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) আলোচনা সভায় এ কথা জানান তিনি।

    মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে এগিয়ে যেতে হবে। চলতি সপ্তাহে ৪০টি নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের দরপত্র দেওয়া হবে।

    তিনি বলেন, পাবলিক সেক্টরে প্রতিযোগিতার অভাব রয়েছে। টিকে থাকতে হলে ঘুষ বাণিজ্য থেকে বের হতে হবে। সরকারি ক্রয়কে প্রতিযোগিতার মধ্যে আনার প্রয়োজন রয়েছে। সরকারের সঙ্গে সখ্য করে আর ব্যবসা হবে না। ভালো ব্যবসায়ীদের জন্যই উপযোগিতা তৈরি করা হবে।

  • রক্তের প্রতি দায় থেকে প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন মূল চ্যালেঞ্জ

    রক্তের প্রতি দায় থেকে প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন মূল চ্যালেঞ্জ

    নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য চার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) শপথ নিতে যাচ্ছেন আগামীকাল রোববার। বেলা দেড়টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে তাদেরকে শপথ পাঠ করাবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। শুধু ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানই নবনিযুক্ত এই কমিশনের প্রধান কর্তব্য নয়-একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার পাশাপাশি এই কমিশনের সামনে এবার আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেটি হলো জুলাই-আগস্টে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানে ঝরা রক্তের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে নতুন প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো।

    রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে বৃহস্পতিবার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। সিইসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীন। আর নবনিযুক্ত চার জন নির্বাচন কমিশনার হলেন- সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব বেগম তহমিদা আহমদ এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

    সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক এবং নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে গঠিত কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার শুক্রবার বলেন, ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা এবং সততা ও সাহসের সঙ্গে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার চ্যালেঞ্জ রয়েছে নতুন কমিশনের সামনে। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ঝরে যাওয়া রক্তের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে এই কমিশন জাতিকে একটি প্রশংসিত নির্বাচন উপহার দেবে-এটাই মূল প্রত্যাশা। বিশেষ করে, নতুন প্রজন্মের একটি বড় অংশ-যারা গত তিনটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি, তাদেরকে ভোটকেন্দ্রমুখী করার জন্য আস্থার পরিবেশও নিশ্চিত করতে হবে নবগঠিত নির্বাচন কমিশনকে। অতীতের বদনাম ঘোচাতেও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে হবে তাদেরকে।

    ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বিশেষ এক প্রেক্ষাপটে দায়িত্ব নিচ্ছে নাসির উদ্দীন কমিশন।
    ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত পরপর তিনটি সংসদ নির্বাচন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ভোটাররা ছিলেন ভোটবিমুখ। তিনটি নির্বাচনই ছিল প্রায় একতরফা। দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি এই তিন নির্বাচনের একটিও। বিশেষ করে, ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় যাদের বয়স ১৮ বছর পেরিয়েছিল, যারা তখন প্রথমবারের মতো ভোটার হয়েছিলেন-তারা ভোট দিতে পারেননি বা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। সেই হিসাব কষলে বর্তমানে যাদের বয়স ন্যূনতম ২৮ বছর কিংবা এর থেকে কিছুটা বেশি-দেশের এই বিপুল সংখ্যক নতুন প্রজন্মের ভোটার সত্যিকারের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন চোখে দেখেননি।

    পরপর তিনটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন আয়োজনের কারণে নির্বাচন ও রাজনীতির প্রতিই তারা আস্থা হারাতে বসেছিলেন। বলতে গেলে এই দীর্ঘ সময়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনের প্রতিই আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল দেশের নতুন-পুরোনো প্রজন্ম। এমন বাস্তবতায় বিপুল জনপ্রত্যাশা ও বহুমুখী চ্যালেঞ্জ নিয়ে যাত্রা শুরু করছে নাসির উদ্দীন কমিশন।

    গত ১৬ নভেম্বর রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী বে অব বেঙ্গল সংলাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ১৭১ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে অর্ধেকের বয়স ২৭ বছরের নিচে। জুলাই- আগস্ট বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষাগুলো এখনো সবার মনে সতেজ। এই আকাঙ্ক্ষা লাখো কণ্ঠের আওয়াজ, প্রায় পুরো জাতির আওয়াজ। যুবসমাজ পরিবর্তনের দাবি তুলেছে। জুলাই বিপ্লবে ১ হাজার ৫০০ ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ২০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

    জুলাই-আগস্টে ঝরা রক্তের প্রতি যে নতুন নির্বাচন কমিশনের দায় রয়েছে, সেটি অবশ্য নবনিযুক্ত সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীনও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সিইসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ২০১৪ সাল থেকে পরপর তিনটি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেননি। জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে অনেক মানুষ প্রাণ দিয়েছে। এই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান বিষয়ই ছিল ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা। এত মানুষের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা সম্ভব নয়। সেজন্য চ্যালেঞ্জ নিয়ে ও সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাব।

    নাসির উদ্দীন এ-ও বলেছেন, মানুষ যাতে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। নির্বাচনের জন্য মানুষ গুম- খুনের শিকার হয়েছে। এই ভোটাধিকার আদায় করতে গিয়ে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে হাজার-হাজার মানুষ আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে। অনেকে হাত, পা, চোখ হারালো! নিহত হলো কত মানুষ! তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না করতে পারি, তাহলে তাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি হবে।

    বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ১৫ থেকে ১৭ বছর ধরে এ দেশের জনগণ একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুদ্ধ করে চলেছে, এটা মনে রাখতে হবে। আমার মতে, এটাই নতুন নির্বাচন কমিশনের মূল চ্যালেঞ্জ। একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন তারা আয়োজন করবেন-এটাই প্রত্যাশা।

    বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় এই নেতা বলেন, দেশ থেকে নির্বাচন উঠে যাওয়ার কারণেই দানব সৃষ্টি হয়েছিল। নির্বাচনহীনতার কারণেই আগের সরকার ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠেছিল। কারণ, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে হলে অন্যান্য অধিকারও কেড়ে নিতে হয়। বিগত সরকার এই কাজটিই করেছে। কারণ, বর্তমান সমস্যা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে-এর মূল সংকটটা কিন্তু নির্বাচনহীনতা। দেশে যখন জনগণের ভোটের অধিকার থাকে না, তখন সরকারের ও প্রশাসনের জবাবদিহিতাও থাকে না।

    তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ একটি সুন্দর নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে রয়েছে। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই নতুন নির্বাচন কমিশনকে কাজ করে যেতে হবে। আর একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারলে সেখান থেকেই জনপ্রত্যাশিত পরিবর্তন আসতে শুরু করবে।

  • বাংলাদেশ চোখের সেবা সম্প্রসারণে অরবিসের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী

    বাংলাদেশ চোখের সেবা সম্প্রসারণে অরবিসের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী

    দেশে চোখের যত্ন ও পরিষেবা সম্প্রসারণের জন্য অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কাজ ও সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

    অরবিস ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট ও সিইও ডেরেক হডকির সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে চোখের যত্নের সেবা সম্প্রসারণ করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে আরা অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।

    শুক্রবার (২২ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়, অরবিস ফ্লাইং আই হাসপাতালের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ডেরেক বাংলাদেশ সফর করছেন। এখন চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ চলছে। ডেরেকে গত বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীতে ড. ইউনূসের সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করেন।

    অরবিস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মুনির আহমেদ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ডেরেকের সঙ্গে ছিলেন। অরবিস প্রেসিডেন্ট প্রধান উপদেষ্টাকে ফ্লাইং আই হাসপাতালের একটি মডেল সংস্করণ উপস্থাপন করেন। ড. ইউনূস এটির ভূয়সী প্রশংসা করেন।

    ডেরেক অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কাজ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবিহিত করেন। অরবিস ১৯৮২ সালে বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি-সংরক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছিল। অরবিস গত ৩৯ বছর ধরে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে।

    ডেরেক বলেন, এসময়ের মধ্যে অরবিস এ পর্যন্ত কমিউনিটি আউটরিচ ইভেন্টে ৭.৮ মিলিয়নেরও বেশি চোখের স্ক্রিনিং পরিচালনা করেছে, প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে ৪.৫ মিলিয়নেরও বেশি ব্যক্তিকে ওষুধ ও অপটিক্যাল চিকিৎসা প্রদান করেছে, ২৫৮,০০০টিরও বেশি চোখের সার্জারি করেছে এবং বাংলাদেশের ৪০ হাজারের বেশি লোককে চোখের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে প্রশিক্ষিত করেছে।

    ড. ইউনূস বাংলাদেশে চক্ষু স্বাস্থ্য খাতে অরবিসের অবদানের কথা স্বীকার করেন এবং ফ্লাইং আই হাসপাতালের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অরবিস এখন বাংলাদেশে ১১তম প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

    ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি অরবিসকে ভালোবাসি। আমি ফ্লাইং আই হসপিটালকে ভালোবাসি।’ তিনি উল্লেখ করেন, অরবিস বাংলাদেশে চোখের স্বাস্থ্য খাতে ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম।

    ডেরেক বলেন, অরবিস ব্যক্তি, পরিবার ও জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করার জন্য বিশ্বব্যাপী দুই শতাধিক দেশ ও ভূখণ্ডে দৃষ্টি সংরক্ষণের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

    বিশ্বজুড়ে প্রায় এক বিলিয়ন মানুষ সম্পূর্ণভাবে পরিহারযোগ্য অন্ধত্ব ও দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের সমস্যা নিয়ে বসবাস করছে উল্লেখ করে ডেরেক বলেন, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে অরবিস জোরদার ও টেকসই চোখের যত্ন ব্যবস্থা নিয়ে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।

    অরবিস প্রেসিডেন্ট বলেন, অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটি আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকায় বিশেষ কর্মসূচি পরিচালনা করছে এবং প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ করছে।

    তিনি বলেন, গত চার দশক ধরে অরবিস শিশুদের চোখের যত্ন, মাইক্রোসার্জারি, রেটিনাল সার্জারি, কর্নিয়ার রোগ, প্রিম্যাচুরিটি রেটিনোপ্যাথি এবং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ওপর গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের স্থানীয় অংশীদারদের দক্ষতা ও জ্ঞানের উন্নতিতে সাহায্য করেছে।

    ডেরেক এসময় প্রধান উপদেষ্টাকে আরও অবিহিত করেন, অরবিস সারা দেশে বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় ৪২টি দৃষ্টি সেবা কেন্দ্র স্থাপন করে চোখের যত্নের সঙ্গে জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করেছে; ১৭টি সেকেন্ডারি হাসপাতাল, চারটি তৃতীয় হাসপাতাল, দুটি ওয়েট ল্যাব, একটি মানসম্পন্ন রিসোর্স সেন্টার ও একটি ডিজিটাল ট্রেনিং হাব প্রতিষ্ঠা বা উন্নতিতে সহায়তা করেছে।

    এ ছাড়া অরবিস ৪০০টি কমিউনিটি ক্লিনিককে ভিশন স্ক্রিনিং টুলস দিয়ে সজ্জিত করেছে এবং শৈশব অন্ধত্বের একটি প্রধান কারণ, প্রিম্যাচুরিটি রেটিনোপ্যাথির স্ক্রিনিং ও ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্দেশিকা তৈরি করেছে।