Category: বিশেষ খবর

  • লালদিঘী গণহত্যা : নিহত মহিউদ্দিন শামীমের পরিবারের খবর রাখেনি কেউ

    লালদিঘী গণহত্যা : নিহত মহিউদ্দিন শামীমের পরিবারের খবর রাখেনি কেউ

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। কামরুল দুলু, সীতাকুণ্ড : নেত্রীকে বাঁচাতে নিজের জীবন উৎসর্গকারী সীতাকুণ্ড উপজেলার বাসিন্দা তৎকালীন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মহিউদ্দিন শামীমের মায়ের কান্না থামেনী ৩২ বছরেও। এখনও প্রিয় সন্তানের ছবি বুকে নিয়ে ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠেন নিলুফা হক।

    ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রামের লালদিঘীর মাঠের সমাবেশে যাবার পথে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে তৎকালীন পুলিশ সদস্যরা। গুলিতে জননেত্রী শেখ হাসিনার ক্ষতি হতে পারে এমন আশংকায় তৎক্ষণাৎ তাকে ঘিরে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করেন দলের নেতাকর্মীরা। ফলে পুলিশের গুলিতে বিদ্ধ হন তারা। এর মধ্যে ২৪ জন মারাও যান।

    নিহতদের একজন সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা তৎকালীন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মহিউদ্দিন শামীম। তিনি সীতাকুণ্ড পৌরসভাধীন মধ্যম মহাদেবপুর গ্রামের মৃত মৌলভী ফজলুল হক ও নিলুফা হকের পুত্র। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।

    একই ঘটনায় গুরুতর আহত হন তৎকালীন যুবলীগ নেতা অমল দাশ। গুলিতে তার মুখমন্ডল বিকৃত হয়ে যায়। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ৩২ বছর। কিন্তু মহিউদ্দিন শামীম বা অমলের পরিবার কোনো সুখবর পায়নি। কেউ খোঁজ রাখেনি তাদের।

    মাঝে ১৯৯৭ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা একবার সীতাকুণ্ডে মহিউদ্দিন শামীমের বাড়িতে এসে তার বিধবা মাকে সান্তনা দিয়ে যান। কিন্তু আর্থিক বা মানষিক আর কোনো সমর্থন পায়নি তার পরিবার। এমনকি খুনের বিচারের সান্তনাও ছিল না।

    এদিকে দীর্ঘ ৩২ বছর পর চাঞ্চল্যকর এই গণ হত্যার বিচারে অবশেষে আদালত ৫ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। আদালত মৃত্যুদন্ড রায় ঘোষণায় স্বস্তি প্রকাশ করে রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি করেছেন সীতাকুণ্ডের ছাত্রনেতা শহীদ মহিউদ্দিন শামীমের ছোট ভাই মেহেদী হাসান।

    নিহত মহিউদ্দিন শামীমের ছোট ভাই মেহেদী হাসান ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, আমার ভাইয়ের হত্যার বিচারের জন্য ৩৩ বছর অপেক্ষা করতে হলো। আমার ভাই শামীম কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিল। মিছিলে সবসময় অগ্রভাগেই থাকতো। বর্তমান প্রধান মন্ত্রীর জনসভায় গিয়ে স্বৈরাচার সরকারের গুলিতে শহীদ হয়। মারা যাওয়ার পর দুইতিন বছর অনেকে খবর রাখলেও এরপর কেবল ২৪ জানুয়ারি এলে সবাই গণহত্যার শহীদ পরিবারের খোঁজ করেন। নতুবা সারাবছর কেউ খবরও নেয় না।

    তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের হত্যার রায় ঘোষণা হওয়ায় আমরা আনন্দিত। এখন রায়ের কার্যকর চাই। রায় শুনে কেঁদে ফেললেন তার মা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেন নিলুফা হক।

    তিনি ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, একদিনের জন্যও ছেলেকে ভুলতে পারিনি আমি। আমি বিধবা ছিলাম। পরিবারের বড় ছেলে ছিল শামীম। তার ওপরই ভরসা ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে গিয়ে পুলিশের গুলি বুক পেতে নেয়। আর আমি চরম অসহায় হয়ে পড়ি। তার ছোট ছোট ভাই-বোন নিয়ে খুব দুর্দিনের মধ্যে ছিলাম আমি। কিন্তু কেউ খবর রাখেনি।

  • রাউজানে বিস্তীর্ণ ক্ষেতজুড়ে হলুদ বর্ণের মনমাতানো দৃশ্য

    রাউজানে বিস্তীর্ণ ক্ষেতজুড়ে হলুদ বর্ণের মনমাতানো দৃশ্য

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। নেজাম রানা, রাউজান : চট্টগ্রামের রাউজানে বিস্তীর্ণ ক্ষেত জুড়ে শোভা পাচ্ছে সরিষার আবাদ। যেইদিকে চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদের দৃশ্য। সরিষা ক্ষেতের মনমাতানো এই দৃশ্য দেখে উপচে পড়ছে কৃষকের হাসি। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবারের ন্যায় এই বছরও রাউজানে সরিষার আবাদ হয়েছে। অল্প পুজিঁতে ফলনও হয় ভালো তাই সরিষার চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিনদিন বাড়ছে।

    রাউজান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাউজান পৌর এলাকা, উরকিরচর, বিনাজুরি, পশ্চিম গুজরা, ডাবুয়া, হলদিয়া, চিকদাইর, বাগোয়ান, নোয়াজিশপুর ও কদলপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জমিতে এবার সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। বিশেষ করে উত্তর রাউজানের বেশ কিছু ইউনিয়নে সরিষা ক্ষেতের মনমাতানো দৃশ্য নজর কাড়ছে পথচারীদের।

    কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেশে ১৫ জাতের সরিষার চাষাবাদ হচ্ছে। প্রতি আড়াই কেজি সরিষা থেকে এক কেজি সরিষা তেল পাওয়া যায়। চাষাবাদের ৯০ দিনের মধ্যে সরিষার ক্ষেত থেকে ফসল ঘরে তোলা যায়।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, রাউজানে বারি-১৪ জাতের ৪০ হে:, বারি-১৫ জাতের ৫৫ হে:, বিনা- ৯ জাতের ৫ হে: এবং টরি-৭ জাতের ৫ হে: জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। বারি- ১৫ জাতের সরিষা তেল উৎপাদনের জন্য খুবই ভাল।

    রাউজানে সরিষা তেল উৎপাদনের জন্য ২ টি ঘানি আছে। তেল উৎপাদনের পর সরিষার বাদ বাকি অংশ থেকে গরুর খৈল হয়। ভালো ফলন হওয়ায় বর্তমানে দিনদিন কৃষকরা সরিষার চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

    কৃষি অফিস সূত্র জানায়, সরিষা ফুল থেকে ভাল মানের মধু আহরণের জন্য সরিষা ক্ষেতে ৪ টি মৌ বাক্স বসানো হয়েছে।

    চলতি বছর উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নে ১৫ হেক্টর, ডাবুয়া ইউনিয়নে ১৫ হেক্টর, চিকদাইর ইউনিয়নে ১৫ হেক্টর, গহিরা ইউনিয়নে ৪ হেক্টর, পৌর সভায় ১২ হেক্টর, বিনাজুরি ইউনিয়নে ৩ হেক্টর, রাউজান ইউনিয়নে ৭ হেক্টর, কদলপুর ইউনিয়নে ২ হেক্টর, পাহাড়তলী ইউনিয়নে ২ হেক্টর, পূর্ব গুজরা ইউনিয়নে ৫ হেক্টর, পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নে ৩ হেক্টর, উরকিরচর ইউনিয়নে ২ হেক্টর, নোয়াপাড়া ইউনিয়নে ৫ হেক্টর, বাগোয়ান ইউনিয়নে ৫ হেক্টর ও নোয়াজিশপুর ইউনিয়নে ১০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ করা হয়।

    রাউজান পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল সালাম ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, আমন মৌসুমের ধান কাটার পর তার কৃষি জমিতে সরিষার চাষাবাদ করেছেন। ফলন ভালো হলে কম খরচে ভালোই লাভবান হওয়া যায় তাই শীতকালীন বিভিন্ন সব্জির পাশাপাশি তিনি সরিষা চাষ করেছেন। তার সরিষা ক্ষেত এখন হলদে বর্ণে টইটুম্বুর।

    রাউজান ইউনিয়নের সুজন জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি সরিষার চাষাবাদ করে আসছেন। কম পুঁজিতে লোকসানের তেমন আশংকা না থাকায় সরিষা চাষাবাদে তার মতো অনেকেই এগিয়ে আসছেন।

    রাউজান উপজেলা উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা (উন্নয়ন শাখা) সনজীব কুমার সুশীল ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, চলতি বছর রাউজানের বিভিন্ন ইউনিয়নে ১০৫ হেক্টর কৃষি জমিতে সরিষার চাষাবাদ করা হয়েছে। গত বছরের চাইতে যা ৩৫ হেক্টর বেশী। আশানুরুপ ফলন হলে ১০ টনের অধিক পরিমান সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

  • বেওয়ারিশ বৃদ্ধার পচন ধরা শরীর দেখে পথচারীরা নাক চেপে পালালেও এগিয়ে আসে পুলিশ

    বেওয়ারিশ বৃদ্ধার পচন ধরা শরীর দেখে পথচারীরা নাক চেপে পালালেও এগিয়ে আসে পুলিশ

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। রাজীব সেন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরীর কাপসগোলা এলাকার ফুটপাতে এক মাস ধরে বেওয়ারিশ ভাবে পড়ে ছিলো ভাসমান বৃদ্ধ এক পিতা। আগুনে পোড়া বৃদ্ধার শরীরে ধরেছে পচন। চারদিকে ছড়াচ্ছে বিশ্রী দুর্গন্ধ।

    ফুটপাতের পাশে সড়ক ধরে হাজার হাজার পথচারির চলাচল থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি বৃদ্ধার সেবায়। বরং নাক চেপে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করতে পারলেই যেন বেঁচে যায়। সবাই পালিয়ে গেলেও চরম দুর্গন্ধ মারিয়ে বৃদ্ধার পচন ধরা শরীর সুস্থ্য করতে মানবিকতার হাত বাড়িয়েছে পুলিশ।

    শওকত হোসেনের নেতৃত্বে সিএমপিতে গঠিত পুলিশের সাত সদস্যের মানবিক ইউনিটের সদস্যরা বৃদ্ধা ওই বাবার পচন ধরা শরীরে প্রাথমিকভাবে ওষুধ লাগিয়ে ব্যন্ডেজ লাগিয়ে নিয়ে গেলেন হাসপাতাল। সুস্থ করে বৃদ্ধা বাবাকে একটু শান্তি দেওয়ায় যেন এ মানবিক পুলিশ ইউনিটের প্রধান লক্ষ্য।

    শুধু ভাসমান এ বৃদ্ধা বাবাই নন, চট্টগ্রাম নগরীর রাস্তায় ভাসমান, ভারসাম্যহীন ও অসুস্থ এমন অসহায় মানুষদের প্রতিনিয়ত সেবা দিয়ে যাচ্ছে ২০১০ সালে পুলিশ কনটেস্টেবল শওকত হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত সিএমপির এ মানবিক ইউনিট।

    এর আগেও নগরীর বটতলী রেলস্টেশনে শরীরে পচন আর পোকায় ধরা সোহান নামের এক ভারসাম্যহীন মানুষকে চিকিৎসা দিয়েছেন সিএমপির মানবিক পুলিশের এ ইউনিটটি।

    ৭ সদস্যের ইউনিটটির বেতনের টাকা দিয়ে চলে এসব বেওয়ারিশ মানুষের চিকিৎসা। পুলিশের এমন সেবামূলক কর্মকাণ্ডে নতুন করে ভালবাসা ও আস্থা অর্জন করে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।

    স্থানীয়রাও বলছে পুলিশকে সাধারণ মানুষ খুব ভয় পাই। প্রবাদ ছিলো পুলিশের ধারে কাছে যেও না,পুলিশ ধরলে বাঁচন নেই। কিন্তু সব কিছু মুছে দিয়ে মানবিক পুলিশের এ ইউনিটটির কর্মকাণ্ডে সত্যি খুব ভালো লাগছে। আমরা চাই এ ইউনিটটির মতোই সমাজের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ মানবিক সেবায় নিজেদের আত্ম প্রকাশ করুক।

    দেশের ৬টি বিভাগীয় হাসপাতালের বেওয়ারিশ ওয়ার্ড গঠনের দাবি জানিয়ে মানবিক পুলিশ ইউনিটের টিম লিডার শওকত হোসেন বলেন, রাস্তার ধারে বেওয়ারিশ মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় আমাদের সেবা দেয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। দেশের সব মেডিকেল এমন ওয়ার্ড চালু করা গেলে তাহলে বেওয়ারিশ মানুষদের অনেক উপকার হবে।

  • পৌণে দুই কিলোমিটার যাতায়াতে নিত্যদূর্ভোগ

    পৌণে দুই কিলোমিটার যাতায়াতে নিত্যদূর্ভোগ

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। পূজন সেন, বোয়ালখালী : চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগোপাড়া মোড় থেকে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শ্রীপুর বুড়া মসজিদের দূরত্ব পৌণে দুই কিলোমিটার। এ দুই কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে দূর্ভোগে পড়তে হয় যাতায়াতকারীদের।

    উপজেলার আমুচিয়া, পোপাদিয়া ও শ্রীপুর-খরণদ্বীপ তিন ইউনিয়নের সন্ধিস্থল এ সড়ক। কানুনগোপাড়া থেকে শ্রীপুর বুড়া মসজিদ পর্যন্ত এই পৌণে দুই কিলোমিটার সড়কের ইট, সুরকি ও বিটুমিন উঠে গিয়ে প্রায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারপরও প্রয়োজনের তাগিদে নিত্যদূর্ভোগের মধ্য দিয়ে যান ও জন চলাচল রয়েছে এ সড়কে।

    জুমার নামাজ আদায় করতে দূর-দূরান্ত থেকে আগত হাজারো মুসল্লীর সমাগম ঘটে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শ্রীপুর বুড়া মসজিদে।দূর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হয় তাঁদের। শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দাদের চলাচলের প্রধান সড়ক এটি।

    শ্রীপুর বুড়া মসজিদে পটিয়া উপজেলা থেকে আসা শিক্ষক আবদুল্লাহ আল নোমান ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজের পর থেকে মসজিদ পর্যন্ত পৌঁছুতে মনে হচ্ছিল এই বুঝি গাড়ি উল্টে যাবে। ৬ মাস আগে একবার এসেছিলাম মসজিদে। তখন যে নাজুক অবস্থা ছিল সড়কের, এখন তা আরো বেড়ে চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।

    অটোরিকশা চালক মঈন উদ্দিন ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, এ সড়ক দিয়ে গাড়ি চালানো অনেক কস্টের। দিনে একবার আসা যাওয়া করলে সারা শরীর ব্যথা হয়ে যায়। সড়কের গর্তে পড়ে গাড়ি উল্টে প্রায়ই দূর্ঘটনা ঘটে। গাড়ির যন্ত্রাংশও নস্ট হয়ে যায়। বৃষ্টির সময় তো গাড়ি চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে। সড়কের বেহাল দশা

    স্যার আশুতোষ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী তানিয়া ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানায়, বর্ষা মৌসুমে কাদাপানিতে একাকার হয়ে থাকে এ সড়কটি। শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের জ্যৈষ্ঠপুরা থেকে অনেক কস্ট করে কলেজে আসা যাওয়া করতে হয়।

    এ সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার জন্য বালু পরিবহণকারী ‘ডাম্পার’ নামক পিকআপ ও দৈত্যাকৃতির চাকা বিশিষ্ট ট্রাক্টরগুলোই বেশি দায়ী বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা বলেন, সড়কে বড়বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে এ গাড়িগুলোর জন্য। প্রতিদিন শতাধিক গাড়ি বালু আনা নেওয়া করে এ সড়ক দিয়ে।

    স্থানীয় ইকবাল হোসেন ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় এ সড়ক দিয়ে রাতদিন অবৈধ ট্রাক্টর ও ড্রাম্পার চলাচল করে। অবৈধভাবে নদীর বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করছে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা। এছাড়া পাহাড় উজাড় করে গাছ কেটে পরিবহণ করা হয় এ সড়ক দিয়ে।

    এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আছিয়া খাতুন ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। এ সড়কের দায়দায়িত্ব সড়ক ও জনপদ বিভাগের। তবে উপজেলায় চলাচলরত ফিটনেস বিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

  • নগরকে ক্লিন ও গ্রীণ রাখবার স্বপ্ন দেখেন মেয়র : নান্দনিক সৌন্দর্য্যে বদলে যাবে চট্টগ্রাম

    নগরকে ক্লিন ও গ্রীণ রাখবার স্বপ্ন দেখেন মেয়র : নান্দনিক সৌন্দর্য্যে বদলে যাবে চট্টগ্রাম

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। রাজীব সেন প্রিন্স, চট্টগ্রাম : সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব নগর সেবা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের। আর তাই এ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার হিসেবে সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন স্বপ্ন দেখেন এবং দেখান নগরকে ক্লিন ও গ্রীণ রাখবার।

    তিনি স্বপ্ন দেখেন এলাকার শিশু কিশোর তরুণদের বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার। এই লক্ষ্যকে নিয়ে সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীনের পথ চলা।

    স্বপ্ন দেখেন বলেই এক সময় যেসব এলাকার ফুটপাত ছিলো দুর্গন্ধে ভরা, যেখানে হাঁটাচলা করতে পথচারীকে নাকে রুমাল দিয়ে রাখতে হতো অনিচ্ছা স্বর্ত্বেও। সেসব দুর্ঘন্ধময় এলাকায় এসেছে নান্দনিকতার ছোঁয়া। সেই শহরটিতে দুর্গন্ধমুক্ত নির্মল বাতাসে প্রাণভরে নি:শ^াস নিতে পারে নগরবাসী।

    সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় সাজছে নগর। এর অংশ হিসেবে রবিবার রাতে দক্ষিণ খুলশীতে সৌন্দর্যবর্ধন কাজের উদ্বোধন করলেন সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম নাছির উদ্দীন।দক্ষিণ খুলশীতে সৌন্দর্য্যবর্ধন কাজের উদ্বোধন করেন মেয়র আ জ ম নাছির

    উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, চসিক প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এ কে এম রেজাউল করিম, মিডিয়া ট্রেন্ডস্ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সল জিয়া, সিইইউ তৌহিদুল ইসলাম সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

    এসময় সিটি মেয়র এলাকার সৌন্দর্য ও পরিপাটি পরিবেশ রক্ষায় এলাকাবাসীকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন এই এলাকা আপনাদের। এটির পরিবেশ ধরে রাখার দায়িত্বও আপনাদের। আপনারা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান হতে ভুমিকা রাখতে হবে। এই সৌন্দর্যবধনের ফলে পথচারীরা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি সবুজ নগরী গড়তে নগরবাসিকে অনুপ্রাণিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

    আমন্ত্রিত অতিতিরা বলেন, সবুজায়ন,পরিচ্ছন্ন শহর কে না ভালোবাসে। পরিচ্ছন্ন ও সবুজায়নে আচ্ছাদিত শহর দেখলেই আমরা সবাই মুগ্ধ হই। আনন্দিত হই। এই ধরণের শহরের প্রতি থাকে সকলের ভালোবাসা। সেরকমই একটি শহর গড়ে তুলার দৃড় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে চলেছেন মেয়র আ জ ম নাছির। এক্ষেত্রে সকল নাগরিকের সহযোগীতা কামনা করেন তারা।

    সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায, দক্ষিণ খুলশীস্থ ১নং রোডের দু’পাশে ৪২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আলোকায়ন, সবুজায়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনসহ নানামুখী উন্নয়ন করা হয়েছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে মিডিয়া ট্রেন্ডস নামক সংস্থা। আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ৫ বছর মেয়াদ পর্যন্ত তারা এই প্রকল্প দেখভাল করবেন।

    দীর্ঘদিন ধরে এই স্থানটি ছিল অবৈধ স্থাপনা। দুষ্ট প্রকৃতির লোকদের অবাধ বিচরণস্থল। ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। সড়কে দুর্গন্ধে জনসাধারণ চলাচল করতে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হতো। নগরীতে চলমান সৌন্দর্যবর্ধনের ধারাবাহিকতা এই এলাকায় ফুটপাত টাইলসকরণ, যাত্রীছাউনী, পথচারীদের বসার স্থান, আলোকায়ন ও সবুজায়নের ফলে এখন পথচারীদের আর নাকে কাপড় দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে না। এই প্রকল্পটি পুরোপরি বাস্তবায়িত হলে অত্র এলাকাটি একটি হেলদি এলাকা হিসেবে পরিগণিত হবে।

    ইতোমধ্যে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় নগরীর এয়ারপোর্ট রোড, টাইগারপাস রোড, লালখান বাজার, কাজীর দেউরি, আউটার স্টেডিয়াম, আন্দরকিল্লা, জামালখান, চট্টেশ্বরী ও প্রবর্তক মোড়ে আইয়ুব বাচ্চুর সেই রুপালি গিটার, বারিক বিল্ডিং মোড়, নিউমার্কেট মোড়, রেডিসন ব্লূ মোড়, জিইসি মোড়ের মতো গোলচত্বরগুলোকে সাজানো হয়েছে ভিন্ন আঙ্গিকে।

    যাত্রীদের অপেক্ষার সুবিধার্থে আধুনিক যাত্রী ছাউনি স্থাপন করা হয়েছে। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের পূর্ব এবং উত্তর পাশের ফুটপাতসহ আউটার স্টেডিয়ামে বাগান নির্মাণ করা হয়েছে। ফুটপাতে বসানো হয়েছে টাইলস,আইল্যান্ড ও মিডিয়ানে লাগানো হয়েছে বাহারি ধরণের ফুলের গাছ। যা নগরবাসি পথ চলতে যেন ফুলের সুবাস পায়।

    এছাড়া নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল এবং গোল চত্বরে বসানো হয়েছে নগর বরণ্যে ব্যক্তিদের ম্যুরাল। যা আগামী নাগরিকেরা বঙ্গবন্ধু ও নগরের প্রথিত যশা ব্যক্তিদের সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করতে পারবে।

    ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়কে নৌকার ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃষ্টিনন্দন ম্যুরাল তৈরি করা হয়েছে।

  • চট্টগ্রামের বায়েজিদে ময়লার স্তুপ থেকে জীবিত নবজাতক উদ্ধার করল পুলিশ

    চট্টগ্রামের বায়েজিদে ময়লার স্তুপ থেকে জীবিত নবজাতক উদ্ধার করল পুলিশ

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। চট্টগ্রাম ডেস্ক : চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানা শহীদনগর এলাকার ওয়েল মিলস্ জি.সি. ফ্যাক্টরীর পাশের ময়লার স্তুপে মিলল জীবিত নবজাতক কন্যা।

    স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে রবিবার সকাল পৌণে ১১টার সময় ময়লার স্তুপ থেকে নবজাতক কন্যাটিকে উদ্ধার করে বায়েজিদ থানা পুলিশ। ডাস্টবিনে মিরল জীবিত নবজাতক

    পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় নবজাতক শিশুটিকে স্থানীয় অক্সিজেন মোড়স্থ প্লাজমা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য নবজাতক মেয়ে শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যান।ডাস্টবিনে মিরল জীবিত নবজাতক

    তথ্যটি নিশ্চিত করেন বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি প্রিটন সরকার। তিনি বলেন, ময়লার স্তুপে নবজাতক কন্যাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। বিষয়টি উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাককে অবহিত করলে তার নির্দেশে বায়েজিদ থানা পুলিশের একটি টিম নবজাতক শিশুটিকে উদ্ধার করে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করান। ডাস্টবিনে মিরল জীবিত নবজাতক

    পরে চমেক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসক শিশুটির শারিরিক অবস্থা ভালো উল্লেখ করে চিকিৎসক সনদ প্রদান করলে শিশুটিকে পরিচর্যার জন্য চমেক হাসপাতাল সমাজসেবা পরিচালকের কার্যালয়ের মাধ্যমে রৌফাবাদ ছোট মণি নিবাস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

    ওসি বলেন, বর্তমানে অভিভাবকহীন নবজাতক শিশুটি বায়েজিদের রৌফাবাদ এলাকার ছোট মণি নিবাস কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে আছেন।

  • হিন্দুদের পবিত্র তীর্থভূমি মেধস আশ্রমে আগত পূর্ণার্থীর দূর্ভোগ বাড়াচ্ছে একটি কালভার্ট

    হিন্দুদের পবিত্র তীর্থভূমি মেধস আশ্রমে আগত পূর্ণার্থীর দূর্ভোগ বাড়াচ্ছে একটি কালভার্ট

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। পূজন সেন,বোয়ালখালী : একটি কালভার্টের জন্য চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার মেধস আশ্রমে যাতায়াতে দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন দূর দূরান্ত থেকে আগত পূর্ণ্যার্থী, পূজার্থী ও দর্শনার্থীরা। ফলে দিন দিন কমে আসছে পূর্ণার্থীর সংখ্যা।

    জানা যায়, গত বছরের জুলাই মাসে টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে মেধস আশ্রমের সন্ন্যাসী পাহাড়ের পাদদেশের কালভার্টটি ধসে যায়। এতে জোড়া তালি দিয়ে কোনো রকমে চলাচলের ব্যবস্থা করেছেন আশ্রম কর্তৃপক্ষ।

    এ ব্যাপারে আশ্রমাধ্যক্ষ বুলবুলানন্দ ব্রহ্মচারী ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, কালভার্টের কারণে গাড়ি নিয়ে আশ্রমের মূল প্রবেশদ্বারে আসা যায় না। পায়ে হেঁটে আসতে হয়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন আশ্রমে আগতরা।মেধস আশ্রমে দূর্ভোগ

    তিনি বলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবহিত করার প্রায় ৭ মাস পেড়িয়ে গেছে। এখনো অবধি কালভার্ট নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এদিকে কালভার্টের দুরাবস্থার কারণে দিন দিন কমে আসছে পূর্ণার্থীর সংখ্যাও।

    উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ফারুক হোসেন ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, এ কালভার্টের বিষয়ে কেউ এতোদিন আমাদেরকে অবহিত করেনি। সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কালভার্ট নির্মাণে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছে তিনি।

    চন্ডীতীর্থ মেধস আশ্রম সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র তীর্থভূমি। এ আশ্রমে পুরাকালে দেবী দুর্গার প্রথম আর্বিভাব ঘটিয়েছিলেন ঋষি মেধস মুনি। তাঁর নির্দেশে বসন্তকালে রাজা সুরত ও সমাধি বৈশ্য মৃন্ময়ী প্রতিমা গড়ে অরণ্য অভ্যন্তরে প্রথম দুর্গা পূজা করেছিলেন বলে শ্রাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে।

    দুর্গার উৎপত্তিস্থল এ আশ্রমে প্রতিদিন সমাগম ঘটে পূজার্থী, পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের। অনুষ্ঠিত হয় নানা উপাচারে দেবী দুর্গার নিত্যপূজা। এছাড়া উদযাপন করা হয় মহালয়া, শরৎকালে শারদীয়া দুর্গোৎসব ও বসন্তকালে বাসন্তী পূজা।

  • ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়ন ও আমাদের প্রত্যাশা

    ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়ন ও আমাদের প্রত্যাশা

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। নুর মোহাম্মদ রানা : সুশাসন, গণতন্ত্র ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণকে অগ্রাধিকার দিয়ে ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ নামে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা হয়েছিল ২০১৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর।

    ঘোষিত ইশতেহারকে শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জাতীয় সনদ আখ্যায়িত করে স্বপ্ন দেখানো হয়েছে দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশের, সংসদ সদস্যদের জবাবদিহি নিশ্চিতের, ফোরজি চালু, দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতা-দক্ষতা বাড়িয়ে এর কার্যকারিতা বাড়ানো, প্রভাবমুক্ত প্রশাসন গঠনের এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন কমিশনকে সংহত করার।

    সে সঙ্গে রয়েছে আগের বারের ইশতেহার ‘দিনবদলের সনদে’র অসমাপ্ত কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি। সরকারের ধারাবাহিকতা দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে উচ্চতর এক সোপানে পৌঁছে দেবে এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নে দারিদ্র বিমোচনই আমাদের সব কর্মকা-ের মূল লক্ষ্য। কেননা দারিদ্র, অসমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, স্যানিটেশন, মাতৃমৃত্যু, আয়ু, শিক্ষা প্রভৃতি সামাজিক সূচকে দেশের অবস্থান আরো সুদৃঢ় হয়েছে।

    তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব গ্রহণের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের প্রতি তার জিরো টলারেন্স নীতিকে আরও জোরদার করেছেন এবং শক্তিশালী নেতৃত্বের পাশাপাশি সুশাসন, স্থিতিশীল সরকার, অব্যাহত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুষ্ঠু সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি এবং সঠিক উন্নয়নের অগ্রাধিকার বাংলাদেশকে এক অনন্য উন্নয়নের মডেল করে তুলেছে।

    ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব ও অসাধারণ সাফল্য অর্জন শুরু করে এবং তথাকথিত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে বাংলাদেশ এখন বিস্ময়কর উন্নয়নের দেশে পরিণত হয়েছে, বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য উন্নয়নের উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    ফলস্বরূপ, বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে স্বীকৃতি দিতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তর করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। শেখ হাসিনার সরকার এখন “ভিশন ২০২১” অর্জনের কাছাকাছি।

    তাঁর সরকার ভিশন ২০২১ অর্জনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিশন অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই দর্শনের উপর ভিত্তি করে, বাংলাদেশে এখন একটি বিশাল আর্থ-সামাজিক রূপান্তর শুরু হয়েছে। ভিশন-২১’র পর এবার উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্নপূরণে তৈরি হচ্ছে ‘রূপকল্প-২০৪১’।

    এজন্য নতুন অর্থনৈতিক রূপরেখা তৈরি করছে সরকার। আগামী ২০৪১ সাল সামনে রেখেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার সব অর্থনৈতিক কর্মসূচী গ্রহণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুর্নীতি কমানো এবং সর্বক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করা।

    মূলত এগুলোকে ঘিরে ভবিষ্যত অর্থনৈতিক কর্মসূচী গ্রহণ করবে সরকার। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের ২১তম সম্মেলনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্নপূরণে দিকনির্দেশনা ও এ সংক্রান্ত পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।

    বাংলাদেশকে শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত উন্নত বাংলাদেশের লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে যে তারুণ্যের তীর, সেই নতুন নেতৃত্ব তৈরিতে সম্মেলনে বসেছেন টানা প্রায় ১১ বছর দেশ শাসন করা আওয়ামী লীগ। এই সম্মেলন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে যখন সংসদে আর সংসদের বাইরে আওয়ামী লীগের সামনে বড় রকমের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই; যখন দলকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ ও দুর্নীতিবাজমুক্ত করার কথা বলে আসছেন দলটির শীর্ষ নেতারা; যখন শুদ্ধি অভিযানের ঝড়ে সহযোগী সংগঠনগুলোর অনেক পুরনো নেতাকে ঝরে যেতে দেখা গেছে।

    এবারের সম্মেলনে তাই ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের চ্যালেঞ্জও পরিলক্ষিত হয়েছে। তাই সকল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষিত হয়েছে তিন যুগের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে আসা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার এখনও কোনা ‘বিকল্প নেই’। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে এবার নতুন নেতৃত্বে জোর দেওয়া হয়েছে।

    আর সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল গত নির্বাচনে আমাদের নেত্রী দেশ ও জাতির কাছে যে এজেন্ডা দিয়েছেন, যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেই প্রতিশ্রুতি পালনে, আমাদের নেত্রীর ভিশন বাস্তবায়নের উপযোগী শক্তি হিসেবে আমরা আওয়ামী লীগের নতুন পুরাতন মিলিয়ে ঐতিহ্য এবং প্রযুক্তি মিলিয়ে, একটা ফাইন ব্যালেন্স করে আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।” নির্বাচনী ইশতিহারের প্রতিশ্রুতিগুলো আওয়ামী লীগ পূরণ করবে। কিন্তু সেজন্য শুধু সরকার শক্তিশালী হলে হবে না। দলকেও শক্তিশালী থাকতে হবে। “দলকে শক্তিশালী করা, সুসংগঠিত করা আধুনিক একটা মডার্ন, স্মার্ট একটা পার্টি হিসেবে আওয়ামী লীগকে আমরা জনগণের সামনে উপহার দেয়া।”

    জানা গেছে, রূপকল্প-৪১ বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও বাড়ানো হবে। বিশেষ করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক স্থাপনে জোর দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এদিকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ইতোমধ্যে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক এ মূল্যায়ন সরকারের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে।

    আশা করা হচ্ছে, ২০২১ সালের মধ্যেই চূড়ান্তভাবে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাওয়া যাবে। গত ২০১২ সালে দেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করার মধ্য দিয়ে দেশের অতি দারিদ্র্যের হার দ্রুত কমে আসছে।

    জানা গেছে, ২০২১ সাল নাগাদ দেশের বিদ্যুত চাহিদা ২০ হাজার মেগাওয়াট ধরে উৎপাদন বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এছাড়া আগামী বছরের মধ্যে নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা, ২০২১ সালের মধ্যে সব মানুষের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা, বেকারত্বের হার বর্তমান ৪০ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ওই সময়ের মধ্যে কৃষি খাতে শ্রমশক্তি ৪৮ থেকে ৩০ শতাংশে নিয়ে আসা, দারিদ্র্যের হার ৪৫ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে।

    জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষণ, বঞ্চনা, দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং তাঁর এই স্বপ্ন ও আদর্শকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। এই অল্প সময়ের মধ্যেই সংবিধান এবং অসংখ্য আইন প্রণয়নের মাধ্যমে তিনি দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক এবং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের আইনী রূপ দিয়েছিলেন এবং দেশকে একটি শক্তিশালী আইনি ভিত্তির উপর স্থাপন করেছেন।

    তিনি দেশে নতুন আইন তৈরি করে একটি নব্য-রাজনৈতিক এবং নব্য-অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বর্তমানে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা তিন বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর-দর্শিতায় ও বলিষ্ট নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে দুর্বার গতিতে। উন্নয়নের রোড মডেলে পরিণত হয়েছে দেশ যা অবাক হয়ে তাকাচ্ছে বিশ্ববাসী। আর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে নেতৃত্বের ভার দেওয়ার হয়েছে যোগ্য লোকের হাতেই।

    কেননা আগামী ২০২১ সালের ভিশন বাস্তবায়ন শেষে ভিশন ২০৪১ এর যেই পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে সেটা বাস্তবায়িত হবে এই নেতৃত্বের মধ্যদিয়ে। আমাদের প্রত্যাশা নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিবর্গগণ তৃণমূল থেকে দলকে গুছিয়ে নতুন মুখ সৃষ্টি করে এবং সরকারের উন্নয়নের সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছিয়ে ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিবে।

    লেখক: প্রাবন্ধিক, কলামিষ্ট ও সাংবাদিক।

  • বিশ দিনের মাথায় লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলো রাউজানের যুবক সুমন

    বিশ দিনের মাথায় লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলো রাউজানের যুবক সুমন

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। নেজাম উদ্দিন রানা, রাউজান :

    মাত্র ২০ দিন পূর্বেই গ্রামের বাড়ি থেকে কর্মস্থল ঢাকায় ছুটে যান টগবগে যুবক মোঃ সুমন (২৬)। কেন জানতো পরিবারের আদরের ধনটি লাশ হয়ে বাড়ি ফিরবে এক মাসেরও কম সময়ে!

    চঞ্চল এই ছেলেটির মৃত্যু সংবাদে যেন শোকাচ্ছন্ন করে রেখেছে রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের উত্তর গুজরা গ্রামের ছমদ আলী সিকদার বাড়ির পরিবেশ। সন্তানহারা মা আর ভাই-বোনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে এই এলাকার পরিবেশ।

    নিহত সুমনের পিতা নুরুল হক ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, গত ১ জানুয়ারি সকাল ১১টার দিকে রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজারে ব্যাংক এশিয়া ভবনের ১০ তলায় একটি বিলবোর্ডের কাজ করার জন্য ভবনটির ছাদে উঠেছিল সুমন। হঠাৎ করে অসাবধানতাবশত হয়ে ছাদ থেকে ছিটকে নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়।

    খবর পেয়ে বুধবার রাতেই ঢাকায় ছুটে যান সুমনের পিতা নুরুল হক ও প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে ২ জানুয়ারি বিকেলে সুমনের লাশ নিয়ে রাউজানের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তার পিতা।

    স্থানীয় লোকজন জানান, কৃষক নুরুল হকের গ্রামের বাড়ি বরিশাল হলেও কাজের সূত্রে রাউজান এসে বিগত ২০/২৫ বছর ধরেই পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের উত্তর গুজরা গ্রামের ছমদ আলী সিকদার বাড়িতে জায়গা কিনেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

    তার তিন মেয়ে ও দুই পুত্র সন্তানের মধ্যে সুমন দুইভাইয়ের মধ্যে কনিষ্টজন। সুমনের বড় ভাই রুবেল পেশায় রাজমিস্ত্রী। বিগত ৬ মাস পূর্বেই প্রেম ঘটিত বিয়ে করেন সুমন। সংসারের নানা ঝুট-ঝামেলায় সুমনের স্ত্রী তার কাছ থেকে কয়েক মাস ধরে আলাদা থাকছেন।

    প্রথমে এ্যালুমিনিয়ামের কাজ শিখে কিছুদিন চট্টগ্রাম শহরে কাজ করার পর এক নিকট আত্মীয়ের সূত্র ধরে ঢাকায় ছুটে যান। সেখানে এক সাব কন্ট্রাকটরের অধীনে এ্যালুমিনিয়ামের কাজ করতো সে।

    অভাবের সংসারে হাসি ফোটাতে দুই ভাইয়ের চেষ্টার কমতি ছিলনা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, অকালেই প্রাণ হারাতে হলো সুমনকে।

    বৃহস্পতিবার লাশবাহী গাড়িটি যখন বাড়ির সীমানায় প্রবেশ করে তখন স্বজনদের কান্নার রোলে ভারী হয়ে উঠে এই এলাকার পরিবেশ। শুধু স্বজন নয়, লাশ দেখতে ছুটে আসা অগণিত নারী-পুরুষও চোখের জল সংবরণ করতে পারেনি।

    মাত্র বিশদিন পূর্বেই যার হাসিমুখ দেখেছে স্বজনরা এই কয়েকদিনের মধ্যেই ছেলেটি যে সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে দেবে তা কি কম্পিণকালেই ভেবেছিল কেউ?

    বৃহস্পতিবার রাত আটটায় স্থানীয় ছমদ আলী সিকদার পাড়া জামে মসজিদ মাঠে নামাজে জানাজা শেষে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।

  • দুর হবে পটিয়াবাসীর দুঃখ! দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৬ রুটে চলবে এসআলমের ১শ বাস

    দুর হবে পটিয়াবাসীর দুঃখ! দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৬ রুটে চলবে এসআলমের ১শ বাস

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। রাজীব সেন প্রিন্স,চট্টগ্রাম : দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া রুটে বাসে ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী ভোগান্তি দূরীকরণে চট্টগ্রাম সিনেমা প্যালেস থেকে পটিয়া স্টেশন পর্যন্ত নতুন বাস সার্ভিস চালু করেছে দেশের বৃহত্তর শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ।এস আলম বাস

    এছাড়াও আগামী দু একদিনের মধ্যে চট্টগ্রামের সিনেমা প্যালেস থেকে বাঁশখালী ও পেকুয়া রুটে এস আলমের নতুন বাস সার্ভিসটি চালু হচ্ছে।

    বুধবার দুপুরে এই সার্ভিসের উদ্ধোধন করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। এ সময় এস আলম গ্রুপের পরিচালক (টেকনিক্যাল) শহীদুল আলম ও ডিসি ট্রাফিক (উত্তর) মো. শহীদুল্লাহসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

    নতুন বছরের প্রথম দিন ১ জানয়ারি চট্টগ্রাম সিনেমা প্যালেস থেকে শুরু হওয়া বাস সার্ভিসের ৩২ আসনের বাসগুলোতে প্রতি সিটের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা। নগরীর সিনেমা প্যালেস থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে আধ ঘণ্টা পরপর ৩০টি বাস আসা যাওয়া করবে। পরবর্তীতে বাসের সংখ্যা আরও বাড়নো হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।এস আলম বাস ভাড়া

    তবে ভাড়াটা একটু বেশি হয়েছে মন্তব্য করে ভাড়াটা ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানটির উদ্দ্যেক্তা ও গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের কাছে বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন পটিয়াবাসীরা। তাছাড়া নগরীর কোতোয়ালি ও শাহ আমানত ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় আলাদা যাত্রী কাউন্টার রাখারও দাবি জানিয়েছেন তারা।

    পটিয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড হিন্দুপাড়ার বাসিন্দা ও ব্যাংকার সৌরভ দে নতুন বাস সার্ভিসটি চালু করায় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়াবাসীদের দীর্ঘদিনের দুঃখ এবার লাঘব হবে।

    শহর থেকে বাড়ি আবার বাড়ি থেকে শহর মুখী হতে চট্টগ্রামের শাহ আমানত সেতুর গোল চত্বরে এবং পটিয়ার বিভিন্ন স্টেশনে গণপরিবহনের জন্য যাত্রীদের আর যুদ্ধ করতে হবে না।

    তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরেই পরিবহণ মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকা যাত্রীরা এবার কিছুটা স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবে। চালক ও হেলপারদের নৈরাজ্য সীমা নিয়ন্ত্রণে আসবে। অপ্রীতিকর ঘটনা ও যাত্রী হয়রানী হ্রাস পাবে বলে মনে করেন পটিয়ার এ বাসিন্দা।

    একই এলাকার রুবেল দে নামে এক শিক্ষকও পটিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের আশা পূরণ করে নতুন এ বাস সার্ভিস চালু করায় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানায়। তবে ভাড়াটা একটু বেশি হয়েছে জানিয়ে তা ৩৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে যাত্রীদের সুবিধার্থ এ নগরীর কোতোয়ালি ও নতুন ব্রিজে আলাদা বাস কাউন্টার রাখার জন্য কতৃপক্ষকে বিনীত অনুরোধ জানান।

    এস আলম গ্রুপ কর্মকর্তারা জানায়, চট্টগ্রাম নগরী ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটে গণপরিবহণ সংকট ও যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে দেশের বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। শীঘ্রই এসি ও নন এসি মিলে ২০০ বাস নামাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

    যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম নগরীর সিনেমা প্যালেস থেকে ইতিমধ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া রুটে এ বাস সার্ভিস শুরু হয়েছে। আগামী দুএকদিনের মধ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আরো কয়েকটি রুটে এ সার্ভিসটি চালু হবে।এস আলম বাস ভাড়া কাউন্টারে

    জানা যায়, নগরীর প্রধান ব্যস্ততম রুট কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা, লালদীঘি থেকে ভাটিয়ারী এবং নিউমার্কেট থেকে ফতেয়াবাদ রুটগুলোতে চলাচলের জন্য অন্তত ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩২ আসনের ১শ এসি বাস নামানোর কথা ভাবছে শিল্প প্রতিষ্ঠানটি। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলে নতুন বছরের শুরু থেকে মহানগর রুটে বাস চলাচল শুরু হবে।

    অন্যদিকে দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ আরো ৬টি রুটে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ নন এসি বাস সার্ভিসটি চালু এবং এসব সার্ভিস তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষনের জন্য আরো ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কতৃপক্ষ।

    ভারতের গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানি অশোক লেল্যান্ড থেকে এসব বাস সরবরাহ করা হবে। প্রতিষ্ঠানটি বাসগুলোর চেসিস সরবরাহ করবে। আর বডি প্রস্তুত হবে দেশেই। এস আলম গ্রুপ বাসগুলো সরবরাহ করতে কার্যাদেশ দিয়েছে এবং বিআরটিএ’র রোড পারমিট ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অনুমোদন পেলে আগামী মাস থেকে মহানগর রুটে বাসগুলো চলাচল শুরু করবে।

    এস আলম গ্রুপের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন ইতিমধ্যে ৩০টি বাস দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের দুটি রুটে নতুন সার্ভিসটি চালু করা হয়েছে।

    সিনেমা প্যালেস-পেকুয়া-মগনামা-মহেশখালী ও সিনেমা প্যালেস-পটিয়া ছাড়াও শীঘ্রই দক্ষিণ চট্টগ্রামে আরো ৪টি রুটে বাস সার্ভিসটি চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

    রুটগুলোর মধ্যে থাকছে চট্টগ্রাম-বাঁশখালী, চট্টগ্রাম-সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম-লোহাগাড়া ও চট্টগ্রাম-চকরিয়া। নগরী ও দক্ষিণ জেলার ৯টি রুটে বাস সার্ভিসটি পুরোপুরি চালু হয়ে গেলে অন্তত ৫শ লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে মনে করছেন এসআলম গ্রুপের কর্মকর্তারা।

    শিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্দ্যেগে সার্ভিসটি পুরোপুরি চালু হলে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনার ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল। তিনি বলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুরোধ রক্ষা করেছেন গ্রুপটির চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ।

    বাসে অনিয়ম, যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, যেখানে-সেখানে বাস থামানো বন্ধ করতে এবং যাত্রীদের স্বস্তির জন্য সিটি মেয়র এসআলম গ্রুপকে অনুরোধ করেছেন নগরীতে তাদের প্রতিষ্ঠানের বাস নামাতে।

    এ ব্যাপারে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনও স্বীকার করেছেন নগরীকে আরো সুন্দর করতে এবং গণপরিবহণের নৈরাজ্য ও হয়রানী থেকে নগরবাসীকে স্বস্থি দেওয়ার উদ্দ্যেশে আমি এস আলম গ্রুপকে নগরীতে বাস নামানোর জন্য আমি অনুরোধ করেছিলাম, তারা রাজি হয়েছে।

    এস আলম গ্রুপ বর্তমানে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি। পরিবহন, হোটেল, ঢেউটিন, সয়াবিন তেল, সিমেন্ট, চিনি, সিআর কয়েলসহ বেশ কয়েকটি শিল্প-কারখানা গড়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা পায় এস আলম গ্রুপ।

    এস আলম গ্রুপ চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ
    শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ

    গ্রুপটি কয়েক বছর আগেও তেল, গম, চিনি আমদানিতে শীর্ষ অবস্থানে থাকলেও বর্তমানে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা থেকে কিছুটা সরে এসে জ্বালানি, সিমেন্ট, ইস্পাত, ঢেউটিন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে।

    ব্যাংক ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। এসব ব্যাংক ছাড়াও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ক্যাপিট্যাল ও ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, রিলায়েন্স ব্রোকারেজ সার্ভিসেস, নর্দান জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মালিকানা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।

  • ডাল ছাঁটাইয়ের নামে সীতাকুণ্ড মহাসড়ক থেকে কাটা হচ্ছে কোটি টাকার সরকারি গাছ

    ডাল ছাঁটাইয়ের নামে সীতাকুণ্ড মহাসড়ক থেকে কাটা হচ্ছে কোটি টাকার সরকারি গাছ

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। কামরুল দুলু, সীতাকুণ্ড : গাছের ডাল ছাঁটাইয়ের নামে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার মহাসড়কের পাশের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে সরকারি গাছ। সড়ক বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার নির্দেশে এই গাছ কাটা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।

    সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সীতাকুণ্ড পৌরসভা এলাকার ইকো-পার্কের গেইট থেকে বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশের সরকারি গাছের ডাল ছাঁটাইয়ের নামে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রাস্তার পাশের সরকারি গাছ নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে। এতে আপত্তি তুলেছেন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।

    ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মো. আলা উদ্দিন ও মো. জামশেদ ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, নুয়ে পড়া ডাল কেটে ফেলার নামে বহু পুরনো কড়ই, আকাশ মনি, আম, কাঁঠাল গাছসহ বিভিন্ন প্রকারের ফলজ ও বনজ গাছের মূল শাখা কেটে উজার করে ফেলা হচ্ছে।

    যেভাবে গাছের ডাল ছাঁটায় করছে এতে বেশির ভাগ গাছ মারা যেতে পারে। সড়ক বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার নির্দেশে এই গাছ-নিধন কর্মযজ্ঞে মেতেছেন ঠিকাদার কর্মীরা। ডাল ছাঁটায়ের নামে বৃক্ষ নিধন করে লক্ষ লক্ষ টাকার গাছ বেআইনিভাবে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

    বাড়বকুণ্ড মান্দারীটোলা এলাকা হতে ঢালীপাড়া পর্যন্ত মহাসড়কের পূর্ব পাশের সকল প্রকার গাছের প্রায় একি রকম চিত্র লক্ষনীয়। ডাল গুলো সাথে সাথে ট্রাকে করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে ছাঁটায়ের নামে গাছ নিধনে সড়কের সৌন্দয্য নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের।

    এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

    এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-প্রকৌশলী জুলফিকার ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, গাছের ডাল ছাঁটায়ের নামে মূল ডাল-পালা কাটার বিষযটি আমি শুনেছি। ডাল ছাটায়ের জন্য কে নির্দেশ দিয়েছে তা আমার জানা নেই।

  • রাহাত্তারপুলে লিটনের রমরমা গ্যাসের অবৈধ ক্রস ফিলিং ব্যবসা! প্রশাসন নীরব

    রাহাত্তারপুলে লিটনের রমরমা গ্যাসের অবৈধ ক্রস ফিলিং ব্যবসা! প্রশাসন নীরব

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। বিশেষ প্রতিবেদন : চট্টগ্রাম মহানগর ও আশপাশের উপজেলায় চলছে অবৈধভাবে ক্রস ফিলিং করা এলপি গ্যাসের রমরমা ব্যবসা। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে চট্টগ্রামে কয়েকটি চক্র এসব কাজ নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে।

    রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে সংঘবদ্ধভাবে গ্যাসের সিলিন্ডারে ক্রস ফিলিং করে অবৈধভাবে এলপি গ্যাস বাজারজাত করে গ্রাহক ঠকাচ্ছে। একই সঙ্গে যেকোনো মুহূর্তে বিস্ফোরণের ঝুঁকিতেও থাকছে গ্রাহকরা। তবে এসব কাজের সঙ্গে জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না।

    অনুসন্ধানে গ্যাসের অবৈধ ক্রস ফিলিং ব্যবসায়ী ও বেশ কিছু চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম নগরীর রাহাত্তারপুল, বায়েজিদ, কদমতলী, হালিশহর, কাঠগড়, মাদারবাড়ী, মোগলটুলী, পানাপাড়া (কামাল গেট) এলাকায় বেশ কয়েকটি দোকান ও কারখানায় এলপি গ্যাসের ভরা সিলিন্ডার থেকে খালি সিলিন্ডারে কনভার্টার ব্যবহার করে ক্রস ফিলিং করা হয়।

    এর মধ্যে নগরীর বাকলিয়া থানা রাহাত্তার পুল ওয়েডিং পার্ক সংলগ্ন এলাকায় মোক্তার হোসেন লিটন নামে এক ব্যাক্তি দাপুটের সাথে গ্যাসের অবৈধ ক্রস ফিলিং ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে বলে এলাকাবাসীর কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নাজিম উদ্দিন শাহ এন্টারপ্রাইজ এন্ড মুক্তা ট্রেডিংয়ের আড়ালে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় গ্যাস ফিলিংয়ের এ ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে।

    কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পরিচালিত এ কারখানায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোন বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ছাড়াই অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকরা এক সিলিন্ডার থেকে গ্যাস প্রবেশ করান অন্য সিলিন্ডারে। অধিক মুনাফার লোভে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে যে কোন সময় বড় ধরণের যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটবে সেদিকে কারো হুশ নেই।

    বিশেষভাবে তৈরি কনভার্টার ব্যবহার করে শ্রমিকরা দুটি ভর্তি সিলিন্ডার থেকে খালি একটি সিলিন্ডারে গ্যাস ভরে থাকে। এলপি গ্যাসের ৪৫ ও ৩৩ কেজি ওজনের সিলিন্ডার থেকে পাইপ দিয়ে সাড়ে ১২ কেজির সিলিন্ডার ফিলিং করেন। পুরোপুরি ১২ কেজি না দিয়ে ৮-৯ কেজি গ্যাস দেওয়া হয়। এতে প্রতি সিলিন্ডারে প্রায় ৩০০ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। এতে গ্রাহকরা যেমন প্রতারিত হচ্ছে ঠিক তেমনিভাবে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

    তাছাড়া এ ফিলিং প্রক্রিয়া যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমন গ্যাসের ব্যবহারও চরম ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, এ কাজটি অটোমেটিক মেশিন দিয়ে চাপ পরীক্ষা করে বাল্ব ও সেফটি ক্যাপ স্থাপন করার কথা থাকলেও লিটনের কারখানায় ম্যানুয়ালি বসাচ্ছে বাল্ব।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক শ্রমিক জানায়, এ ক্রস ফিলিং গ্যাস সিলিন্ডার চট্টগ্রাম মহানগরসহ জেলা উপজেলার সর্বত্র বিক্রি হয়। প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি থেকে গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার ক্রয় করে তা এক সিলিন্ডার থেকে গ্যাস সরবরাহ করে অন্য সিলিন্ডারে। সিলিন্ডারের গায়ে লাগানো হয়, ওমেরা গ্যাস, বসুন্ধরা, বিএম গ্যাস নাভানা গ্যাসসহ বিভিন্ন কোম্পানির স্টিকার। বাসাবাড়িসহ ঘনবসতি এলাকা হওয়ায় তার এই অবৈধ গ্যাস ফিলিং কারখানাকে ঘিরে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

    সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে সখ্য রেখেই চলছে এ ভয়ঙ্কর কারবার। প্রশাসন তাদের আয়ের নতুন খাত হিসেবে নিয়েছে বিষয়টিকে। সে কারণে দেখেও না দেখার ভান করছে। তা না হলে প্রকাশ্যে এ ভয়ঙ্কর কাজ হয় কী করে? এতে একদিকে যেমন গ্রাহকরা প্রতারিত হচ্ছেন, অন্যদিকে শারীরিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবহারকারীরা।

    এখনই কঠোরভাবে দমন করা না গেলে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে চক্রটি। এজন্য কঠোর আইন ও প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করেন এলপি গ্যাস কোম্পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।মোক্তার হোসেন লিটন

    এ বিষয়ে অবৈধ গ্যাস ফিলিং ব্যবসায় জড়িত অভিযুক্ত মোক্তার হোসেন লিটনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উল্টো উদ্ধ্যতপূর্ণ আচরণের সহিত ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, আমরা ব্যবসা সম্পর্কে প্রশাসন থেকে সংশ্লিষ্ট সকলেই অবগত আছেন। সকলকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। আপনারা ভূয়া সাংবাদিকরা যা ইচ্ছে লিখতে পারেন। এতে আমার কিচ্ছু যায় আসেনা। এ ব্যাপারে কথা বলার মতো সময় আমার নেই।

    বিষয়টি নিয়ে বাকলিয়া থানার ওসি নেজাম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কেউ আমাদেরকে অভিযোগ করেনি। বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর,ফায়ার সার্ভিস ও জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্টরাই বলতে পারবে। তাছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন যদি পুলিশের সহযোগীতা চাই সেক্ষেত্রে আমরা সর্বাত্মক সহযোগীতা প্রদান করবো।

    এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর বাকলিয়া এলাকার পরিদর্শক মাহবুব এলাহী ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, আমরা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য প্রতিষ্ঠানের নামে অনুমতি দেয়া হতে পারে। তবে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এ ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করার অনুমতি প্রদানের কোন প্রশ্নই আসে না।রাহাত্তারপুলে গ্যাস ক্রস ফিলিং

    এসব এলাকায় ঝুঁকিপূর্ন গ্যাস সিলিন্ডার প্রক্রিয়াকরণ সম্পূর্ণ অবৈধ। এরপরও গোপনে যদি এ ধরনের ব্যবসা করে থাকে তাহলে তদন্ত করে প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিকের কাছে জানতে চাইলে তিনিও একই মত প্রকাশ করেন। তিনি ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা রাহাত্তার পুল ওয়েডিং পার্ক সংলগ্ন এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার প্রক্রিয়াজাত ব্যবসার জন্য কোন প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যাক্তি তাদের থেকে ছাড়পত্র নেয়নি।

    তাছাড়া ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এ ধরনের ব্যবসার অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নই আসেনা। বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছ থেকে জানতে পেরে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের সহকারি বিস্ফোরক পরিদর্শক মুহাম্মদ মেহেদী হাসান খান ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে আমরা বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি, অভিযানও পরিচালিত হয়েছে। আপনারা তথ্য ও ছবিসংযুক্ত নিউজ করেন। আমরা নিউজের সূত্র ধরে এ কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে প্রতিষ্ঠানটি একেবারে সিলগালা করে মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

    বিস্ফোরক অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বৈজ্ঞানিক সম্মত কাজের মান যাচাই করে দেশের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ ব্যাপারে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এসব ছোট প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়ার প্রশ্নই আসেনা।

    বি : দ্র : এলপি গ্যাসের বড় বোতল থেকে ছোট বোতলে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে ক্রস ফিলিং ব্যবসা নিয়ে আরো অনুসন্ধানী খবর থাকছে দ্বিতীয় পর্বে।

    উল্লেখ্য : ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পটিয়ায় বাবুল মিয়া নামে একজনের গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানে অবৈধ ‘ক্রস ফিলিং’র মাধ্যমে এলপি গ্যাস চুরির সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৫ জন দগ্ধ হবার ঘটনা ঘটে।

    তাছাড়া ২০১৫ সালে লোহাগাড়া সদরের রশিদারপাড়ায় নিজের বসতঘরে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে ক্রস ফিলিং (এক সিলিন্ডার থেকে অন্য সিলিন্ডারে ভরা) করতে গিয়ে চারজন দগ্ধ হয়। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নবী হোসেন নামে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় গ্যাসের ক্রস ফিলিং ব্যবসায়ী চক্রের সদস্য আলমগীর চৌধুরীও আহত হন।

    এর আগে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সাতকানিয়ার কেরানি হাটে গ্যাস ক্রস ফিলিং করার সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে আরো একজনের মৃত্যু হয়। চট্টগ্রাম শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় বিস্ফোরণে একাধিক ব্যক্তির আহতের খবর পাওয়া গেছে।