Category: বিশেষ খবর

  • নভো এয়ার ও ইউএস বাংলার সিডিউল বিপর্যয়,সৈয়দপুর বিমানবন্দরে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে

    নভো এয়ার ও ইউএস বাংলার সিডিউল বিপর্যয়,সৈয়দপুর বিমানবন্দরে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে

    সৈয়দপুর বিমানবন্দরে নির্ধারিত সময়ে ফ্লাইট না হওয়ায় তিনটি কোম্পানীর এয়ারক্রাফটে ঢাকায় যাওয়ার জন্য আগত যাত্রীরা দূর্ভোগে পড়েছে।

    শনিবার (২ নভেম্বর) সকালে নভো এয়ারের একটি ফ্লাইট প্রায় ২ ঘন্টা বিলম্বে আসে। এসময় শতাধিক যাত্রী ভোগান্তি পোহায়ে অবশেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।

    একইভাবে বিকালে একই কোম্পানীর আরেকটি ফ্লাইট পৌনে একঘন্টা বিলম্বে আসে এবং সৈয়দপুর ছেড়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়ে অপেক্ষমান যাত্রীরা। ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ মহড়া চলার কারণে এমনটি হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেলেও বিলম্বের কারণ সম্পর্কে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ম্যানেজার কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।

    এদিকে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইট বিকালে আসার কথা থাকলেও সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হলেও দেখা নেই। বিমানবন্দরের প্যাসেঞ্জার লাউঞ্জে অপেক্ষমান যাত্রীরা প্রায় ৩ ঘন্টা অপেক্ষা করেও কোন সঠিক উত্তর পাচ্ছেন না কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।

    সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে বিমানবন্দরে দেখা যায় অসংখ্য যাত্রী ফ্লাইটের অপেক্ষায়। ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইট বিকাল ৪ টায় আসার কথা থাকলেও তা সন্ধা ৭ টায় আসবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

    এ ব্যাপারে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ম্যানেজার সুশান্ত দত্তের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সকালে বা বিকালে কোন ফ্লাইট বিলম্বে এসেছে বা চলে গেছে এ ধরণের কোন তথ্য তার জানা নেই। একইভাবে ৪টার ইউএস বাংলার ফ্লাইট সন্ধা ৭টায় আসবে এমন খবরও তিনি জানেন না।

    একইদিনে ৩ টি ফ্লাইটের দীর্ঘ বিলম্বের কারণে প্রায় সহস্রাধিক যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েন এবং অসহনীয় অপেক্ষার পর সকালে ও বিকালে নভো এয়ারের যাত্রীরা যেতে পারলেও ইউএস বাংলার যাত্রীরা আদৌ যেতে পারবেন কি না এ নিয়ে চরম সংশয়ে আছেন।

     

  • ড্রাগন ফলের চাষ করে ভাগ্য বদল সীতাকুণ্ডের যুবক ইমনের

    ড্রাগন ফলের চাষ করে ভাগ্য বদল সীতাকুণ্ডের যুবক ইমনের

    দেশি ফল চাষের পাশাপাশি ড্রাগন ফল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের খাদেমপাড়া গ্রামের সাবের শাহ্‌ ইমন। চলতি মৌসুমে তিনি দুই লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেছেন বলে জানালেন। বাগানে রয়েছে আরও কমপক্ষে এক থেকে দুই লাখ টাকার ফল।

    জানা যায়, ইমন শিক্ষিত যুবক। চট্টগ্রাম সিটি কলেজ থেকে হিসাব বিভাগে মাস্টার্স ও আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেন এই যুবক, রুক্ষ পাহাড়ের তলদেশে ড্রাগন ফলের বাগান গড়ে তুলেন প্রথমে শখের বশে। অপরূপ সুন্দর লতানো গাছে এখন কাঁচা-পাকা ড্রাগন ফলের সমারোহ। রসে ভরা টসটসে ড্রাগন ফল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি খেতেও অনেক মজাদার।

    সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার কৃষি অফিসারদের সহায়তায় ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ২০ শতক জায়গায় ৬০ টাকা দরে ৫২০টি ড্রাগন গাছের চারা রোপণ করেন ইমন। ড্রাগন ফলের চাষ কিছুটা বৈচিত্রময়। নির্দিষ্ট দূরত্বে একটি করে পাকা সিমেন্টের খুঁটি গেড়ে তার উপর রিকসা ও সাইকেলের পরিত্যক্ত টায়ার ব্যবহার করা হয়।

    খুঁটির চারপাশে ৪টি করে ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করা হয়। ড্রাগন গাছের লতা বড় হলে খুঁটি বেয়ে টায়ারের ভেতর থেকে বাইরে ঝুলে পড়ে। সঠিক পরিচর্যা হলে চারা লাগানোর ২ বছর পরই গাছে ফল আসতে শুরু করে। একটি ড্রাগন গাছ অন্তত ২০ বছর ফল দিয়ে থাকে।

    এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৭ মাসে ড্রাগন গাছে ৫ থেকে ৬ বার ফলন আসে। চলতি মৌসুমের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন বার ফল বিক্রি করে দুই লাখ টাকার মত আয় করেছেন ব্যবসায়ী সাবের শাহ্‌ ইমন। এখনো আরো ২লাখ টাকার ফল বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।

    নানা বয়সের মানুষ প্রতিদিন তার বাগান দেখতে আসেন। কৃষকরা এসে প্রশিক্ষণও নেন তার কাছে। অনেক সময় সরকারি-বেসরকারি সংস্থার লোকজনও আসেন তার বাগান কৌশল জানতে।

    তিনি জানান, লোকজনকে বিনামূল্যে দেশি-বিদেশি ফলজ চারা বিতরণের মাধ্যমে চাষাবাদে উৎসাহিত করছেন তিনি। শুধু সীতাকুণ্ড নয়, চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক উৎসাহী লোকজন আসেন তার বাগানে।

  • সীতাকুণ্ডে ২০ দিনে ১৭ লাশ, উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী

    সীতাকুণ্ডে ২০ দিনে ১৭ লাশ, উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী

    চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় হঠাৎ করে অপমৃত্যু বেড়ে গেছে। উপজেলায় গত ১১ অক্টোবর থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত ২০ দিনে খুন, দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা, পানিতে ডুবে, ক্রস ফায়ারসহ মোট ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

    এদের মধ্যে দুজন আত্মহত্যায়, ৪ জন সড়ক দুর্ঘটনায়, বন্দুকযুদ্ধে ৪ জন, অজ্ঞাত লাশ একটি, শিপইয়ার্ডের দুর্ঘটনায় ২জন, ট্রেনে কাটা পড়ে ১ জন এবং ছাদ থেকে পড়ে নিহত ১ জন নিহত হয়। খুন হয় দুজন।

    বিভিন্ন দূর্ঘটনায় আহতও আছে ৩০ জনের অধিক। এসব ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

    এদিকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এভাবে লাশের মিছিলে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

    থানা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডে হঠাৎই খুন, আত্মহত্যা, দুর্ঘটনায় প্রাণহানি উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। যা এলাকাবাসীকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

    এএসপি (সীতাকুণ্ড সার্কেল) শম্পা রানী শাহা ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, এটা অবশ্যই উদ্ধেকজনক, তবে আমি আমাদের পুলিশের সব ডিপার্টমেন্ট নিয়ে আইনশৃংখলা বিষয়ে মিটিং করেছি, সামনে পরিস্থিতি আরো উন্নতি হবে।

    এই মূহুর্তে সীতাকুণ্ডের আইনশৃংখলা অবনতি কিনা জানতে চাইলে এএসপি শম্পা রানী শাহা ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, আইনশৃংখলা অবনতি নয় স্বভাবিক আছে, সামনে আরো ভালো হবে, এজন্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

    জানা যায়, গত ৯ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬ টার সময় উপজেলার শেখপাড়া এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ট্রাকের ধাক্কায় মহিউদ্দিন (২৮) নামের এক বাই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। নিহত মহিউদ্দিন পশ্চিম সৈয়দপুর, অন্তর খালী মসজিদ বাড়ির শাহ আলমের পুত্র।

    ১১ অক্টোবর ৯ নং ভাটিয়ারী ইউনিয়নের মির্জানগর জেলে পাড়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে শান্ত জল দাশ (২৫) নামের এক যুবক আত্নহত্যা করে। শান্ত দাশ উক্ত এলাকার সিদাম জল দাশের পুত্র।

    ১২ অক্টোবর কুমিরা ঘাটঘর উপকূলে অবস্থিত “ও ডব্লিউ ডব্লিউ ট্রেডিং এণ্ড শীপ ব্রেকিং” নামে একটি শিপ ইয়ার্ডে গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে সাইফুল এবং মাসুদ নামে দুই শ্রমিক নিহত হয়।

    ১৬ অক্টোবর তিনতলার ছাদ থেকে পড়ে আল আমিন (২২) নামের এক যুবক নিহত হয়। বিকাল তিনটার সময় পৌরসদর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আল আমিনের বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায়।

    ১৮ অক্টোবর কুমিরাস্থ ঘাটঘর এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে মোঃ শাহ আলম (৫৮) নামের এক ডাক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ, সে ছোট কুমিরা এলাকার মৃত আজিজুল হক মাষ্টারের পুত্র। একইদিন কুমিরা এলাকার পিএইচপি গেইটের সামনে থেকে অজ্ঞাত এক মহিলার (৪০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় নিহত হয় বলে জানান বাঁশবাড়িয়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইদুল ইসলাম।

    ১৯ অক্টোবর উপজেলা বারৈয়ারহাটস্থ কলাবাড়িয় নামক স্থানের রেল লাইন থেকে দ্বিখন্ডিত অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে থানা পুলিশ। একইদিন সোনাইছড়ি ইউনিয়নের জোড়আমতল এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় সজিব নামে এক যুবক আহত হয়ে পরদিন চমেক হাসপাতালে সে মারা যায়।

    ২১ অক্টোবর সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের প্রেমতলা এলাকায় স্বামীর সাথে অভিমান করে গলায় ফাঁস খেয়ে মিতা দেবী (২১) নামের এক বাক প্রতিবন্ধী গৃহবধূ আত্মহত্যা করে। গৃহবধু মিতা সজল দেবনাথের স্ত্রী।

    ২২ অক্টোবর ভাটিয়ারীর কলেজপাড়া এলাকায় মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ এনে এক নিরিহ যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে রায়হান নামের পুলিশের এক এসআই। তাকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত যুবক এজাহার মিয়া ভাটিয়ারী ৪নং ওয়ার্ডের বালুর রাস্তা এলাকার মফিজুর রহমানের ছেলে।

    ২৩ অক্টোবর উত্তর বাঁশবাড়িয়া এলাকায় র‍্যাব ৭ এর টহল দলের সাথে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলি বিনিময়ে চাঞ্চল্যকর ডা, শাহ আলম হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা ডাকাত দলের প্রধান নজির আহমেদ সুমন প্রকাশ কালু (২৬) নিহত হয়।

    ২৮ অক্টোবর উপজেলার সলিমপুরস্থ কালুশাহ নগর এলাকায় লরী উল্টে হযরত খাজা কালুশাহ মাজারের দানবাক্সের নাইট গার্ডসহ দুইজন নিহত হয়ে। নিহত নাইট গার্ডের নাম মোঃ আজম, সে কালুশাহ নগর এলাকার আমির হোসেনের পুত্র। নিহত অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। একইদিন ফৌজদানহাট আবদুল্লাহ ঘাটা এলাকায় নিটল টাটা গাড়ির ওয়ার্কশপে থাকা একটি কাভার্ডভ্যানের কেভিন থেকে দুলাল (৪০) নামের চালকের সহকারীর লাশ উদ্ধার করে ফৌজদারহাট ফাঁড়ির পুলিশ।

    ২৯ অক্টোবর ছোট কুমিরা এলাকায় র‍্যাবের সঙ্গে ডাকাত দলের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় অন্ত:জেলা ডাকাত দলের ৩ সদস্য নিহত হয়। নিহত তিন ডাকাতের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

    ৩০ অক্টোবর মুরাদপুর ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামে আবিদ (২) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সে হাসনাবাদ গ্রামের বাবুল সওদাগরের বাড়ির মহিউদ্দিনের পুত্র।

  • রাউজানে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষক পরিবারে হাসি

    রাউজানে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষক পরিবারে হাসি

    চট্টগ্রামের রাউজানের প্রত্যন্ত এলাকায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে আমনের। বিস্তৃত ফসলী জমিতে দোল খাচ্ছে হলদে বর্ণের আমন ফসল। ইতিমধ্যেই উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে শুরু হয়েছে ফসল ঘরে তোলার কাজ। বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফিরেছে হাসির আভা।

    সরেজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য বারের চাইতে এবার আমনের ফলন আশানুরুপ ভালো হয়েছে।

    রাউজান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (উন্নয়রন শাখা) সঞ্জিব কুমার সুশীল ২৪ গন্টা ডট নিউজের প্রতিবেদককে বলেন, চলতি আমন মৌসুমে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৭৬ হেক্টর। এর বিপরীতে চাষাবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৪৮০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০৪ হেক্টর বেশী চাষাবাদ হয়েছে। এরমধ্যে উপশী জাতের ১১ হাজার ২১০, হাইব্রিড জাতের ৮০ হেক্টর, ও স্থানীয় জাতের ১৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ করেছে কৃষকরা।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০হাজার মেক্টিকটন শুকনা ধান উৎপাদন হতে পারে।

    উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া অনকূলে থাকায় এবারের মৌসুমে আমনের ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়া উপজেরা কৃষি অফিস মাঠপর্যায়ে প্রান্তিক চাষীদের নানান পরামর্শ ও সেবা দেওয়ায় মাঠে রোগ বালাইয়ের প্রকোপ ছিল অন্যান্য বারের চেয়ে তুলনামূলক কম। ফলে বাম্পার ফলন দেখা গেছে আমন ক্ষেতে।

    উপজেলার পাহাড়তলী, বাগোয়ান, কদলপুর, নোয়াপাড়া, সুলতানপুর, হলদিয়া, পশ্চিম গুজরা, উরকিরচর, গহিরা, নোয়াজিশপুর, চিকদাইরছাড়াও রাউজার পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কৃষি জমিতে হলদে বর্ণের আমনের দোল খাওয়ার দৃশ্য কৃষকদের মাঝে ফিরে এনেছে স্বস্তি। অনেক ইউনিয়নে আগেভাগেই শুরু হয়েছে আমন ফসল কাটার ধূম। মান্ধাতা আমলের ধান মাড়াইয়ের দৃশ্যও চোখে পড়ছে অনেক স্থানে। পাশাপাশি প্রযুক্তির ছোঁয়ায় উপজেলার কৃষকরা ধান মাড়াইয়ের আধুনিক যন্ত্র ব্যাবহার করে অল্প সময়ে মাঠের ধান মাড়াই করে ঘরে তুলছে।

    আমনের মৌসুম শুরু হওয়ায় বাজারে কামলার উপস্থিতি বেড়ে গেছে। মৌসুমী কামলাদের ভীড় দেখা গেছে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে। ভোলা, নোয়াখালী, সন্দীপ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, বাশঁখালীসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে কামলারা ছুটে আসছে রাউজানসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায়। অতীতের তুলনায় কামলাদের মজুরীও খুব বেশী হওয়ায় বিপাকে পড়েছে অনেক কৃষক। একেকজন কাজের লোকের দৈনিক মজুরি ৫০০-৬০০ টাকা।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রান্তিক জনপদের কৃষকরা মোবাইলে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করে কৃষি বিষয়ক নানান সেবা গ্রহন করে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে এবার উপজেলায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে।

  • শীঘ্রই দেশে আসছে এস আলম গ্রুপের ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ!

    শীঘ্রই দেশে আসছে এস আলম গ্রুপের ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ!

    শীঘ্রই দেশে পৌছাবে পেঁয়াজের বড় চালান। থাকবে না আর সংকট। কমবে দাম, খুচড়া মূল্য হবে ক্রেতাদের নাগালে। আর এটি সম্ভব হবে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গ্রুপ এস আলম গ্রুপের কল্যাণে।

    সম্প্রতি মিসর থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজের বড় চালান আমদানির ঋণপত্র খুলেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগেও ২০১৬ সালে পেঁয়াজ আমদানি করে বাজার স্থিতিশীল রাখতে সচেষ্ট ছিল এস আলম গ্রুপ।

    এদিকে সরকারের পক্ষ থেকেও গত দেড়মাস ধরে পেঁযাজের বাজার নিয়ে চলমান অস্তিরতার স্থিতিশীল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেঁয়াজের বড় চালানটি শিগগির পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন।

    আজারবাইজানের বাকুতে ন্যাম সম্মেলনে যোগদান শেষে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। এই সমস্যা সাময়িক। আরও পেঁয়াজ আনা হচ্ছে।

    জানা যায়, সাধারণ মানুষ যাতে সহনীয় দামে পেঁয়াজ কিনতে পারে সেই জন্য এস আলম শিল্প গ্রুপটি ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি বড় শিল্প গ্রুপ তুরস্ক ও চীন থেকে আড়াই হাজার টন করে পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্র খুলেছে। এসব পেঁয়াজ দেশে এলে দামের ঊর্ধ্বগতি কমে আসবে মনে করছে সাধারণ মানুষ।

    এ বিষয়ে এস আলম গ্রুপের বাণিজ্যিক বিভাগের প্রধান মহাব্যবস্থাপক মো. আখতার হাসান বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পর এ পণ্যটির দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়। দেড় মাস ধরে বাজারে অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। পেঁয়াজ সংকটের শুরুতে তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানির চেষ্টা চালায় এস আলম গ্রুপ। তবে বড় চালান না পেয়ে গ্রুপটি মিসরের দ্বারস্থ হয়।

    তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে মিশর থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি জন্য ব্যাংকে ঋণপত্র খোলা হয়। ইতিমধ্যে সব কিছু চূড়ান্তও হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী মাসের (নভেম্বর) প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের চালানটি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়বে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বিশেষায়িত জাহাজগুলো।

    ব্যাবসায়িক লাভের উদ্দ্যেশে এসব পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে না জানিয়ে গ্রুপটির বাণিজ্যিক বিভাগের প্রধান মহাব্যবস্থাপক আখতার হাসান বলেন, সাধারণ মানুষ যাতে সহনীয় দামে পেঁয়াজ কিনতে পারে, সে জন্য ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠান। প্রয়োজনে আমদানির উপর ভর্তুকি দিয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই এসব পেয়াঁজ বিক্রি করা হবে।

    তিনি আরো বলেন, পেঁয়াজের চালানটি বন্দরে আসার সাথে সাথে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বৃহৎ পাইকারী বাজারগুলোতে দ্রুত পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

    সামাজিক দায়বদ্দতা থেকে এমন মহৎ উদ্দ্যেগ নেওয়ার জন্য এস আলম গ্রুপ ছাড়াও দেশের যেকয়টি বড় শিল্প গ্রুপ মিসর,তুরস্ক ও চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্র খুলেছে সবাইকে স্বাগত জানিয়েছে চট্টগ্রামের বৃহৎ পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়িরা।

    তারা মনে করেন এস আলম গ্রুপ ছাড়াও শিল্প গ্রুপ টি কে গ্রুপপ, পিএইচপি গ্রুপসহ চট্টগ্রামের বড় শিল্প গ্রুপগুলো এ ধরনের উদ্দ্যেগ নিয়ে দেশের পেঁয়াজের বাজার সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখতে পারে। সব মিলিয়ে আগামী মাসের মাঝামাঝি পেঁয়াজের দামের ঊর্ধ্বগতি থামবে বলে আশা করেন ব্যবসায়ীরা।

    প্রসঙ্গত : চলতি বছরের গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য ৮৫০ ডলার বেঁধে দেয়। এরপর থেকে বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক দপ্তর গত ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর একেবারে আকাশচুম্বিতে উঠে পেঁযাজের দর।

    একলাফে পাইকারি বাজারে ভারতীয় আমদানি করা পেঁয়াজের দর ৯০-৯৫ টাকায় পৌঁছে। জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন সংস্থার অভিযান ও নিয়মিত তদারকিতে মাঝে সামান্য দরপতন হলেও ফের লাগামহীন হয়ে পড়েছে পেঁয়াজের বাজার। বর্তমানে পাইকারিতে সেঞ্চুরি পেরিয়ে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়।

  • নানা সমস্যায় জর্জরিত মিরসরাইয়ের কয়লা পশ্চিম সোনাই উচ্চ বিদ্যালয়

    নানা সমস্যায় জর্জরিত মিরসরাইয়ের কয়লা পশ্চিম সোনাই উচ্চ বিদ্যালয়

    জরাজীর্ণ ভবন, ভবন সংকট, আসবাবপত্র সংকট, বিদ্যুত, আর্থিক সংকট, টিউবওয়েলসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত মিরসরাইয়ের কয়লা পশ্চিম সোনাই উচ্চ বিদ্যালয়। উপজেলার ১ নম্বর করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাই গ্রামে অবস্থিত এই বিদ্যালয়টি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ধুঁকে ধুঁকে পাঠদান চলছে।

    ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারি চালু হওয়া এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তা স্থানীয় ইউপি সদস্য মহি উদ্দিন। সেসময় তার সঙ্গ দেন ডা. ফজলুল করিমসহ স্থানীয়রা। একশ শিক্ষার্থী নিয়ে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণীর পাঠদানের মাধ্যমে যাত্রা শুরু হওয়া এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিগত কয়েকবছর ধরে জেএসসিতে শতভাগ ফলাফল অর্জন করে আসছে। কিন্তু নানা সংকটের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি যেন তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছে না।

    সংকটের কারণে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ২৪ বছর অতিক্রান্ত হলেও দশম শ্রেনীর পাঠদান কার্য্যক্রম শুরু করতে পারেনি। ফলে আশপাশের গ্রামের অধিকাংশ শিক্ষার্থী এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা না করে পাশ্ববর্তী অন্য বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করে।

    জানা যায়, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শুরুতে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেনীর পাঠদান করা হতো। পরবর্তী বছর ১৯৯৬ সালে ৮ম শ্রেনীর পাঠদানও চালু হয়। এরপর দীর্ঘ সময়ান্তে ২০১৯ সালে নবম শ্রেনীর পাঠদান কার্য্যক্রম চালু হয় তাও শুধুমাত্র ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ চালুর মধ্যদিয়ে, শিক্ষক ও ভবন সংকটের কারণে অন্য বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি।

    জয়পুর পূর্বজোয়ার আঙ্কুুরের নেছা ওবায়দুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের অধীনে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে। জেএসসিতে গত ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ সালে শতভাগ পাশ করে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে ৬ষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ২ শত শিক্ষার্থীকে পাঠদান করেন ৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা।

    আর্থিক সংকটের কারণে নামমাত্র সম্মানি দেওয়া হয় শিক্ষকদের। এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে কয়লা, ইসলামাবাদ, রহমতপুর, পশ্চিম সোনাই, মঘপাথর, জিলতলী, শহীদপুর, সুবলছড়ি, গুজাপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের শিক্ষার্থীরা। ভাঙ্গা বেড়া ও টিনশেড়ের জরাজীর্ণ ৪ টি কক্ষে চলে নিত্য পাঠদান।

    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন সাইফুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মৌলভী কামাল উদ্দিন, শারমিন আক্তার, আব্দুল হান্নান, সাজেদা আক্তার, শেফালী চৌধুরী, এমরানুল হক।

    বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ডা. ফজলুল করিম, সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, দাতা সদস্য মহি উদ্দিন মেম্বার, শিক্ষক প্রতিনিধি কামাল উদ্দিন, সদস্য তপন কুমার ত্রিপুরা, ডা. কামাল হোসেন দুলাল, আবু বক্কর ছিদ্দিক, মুজিবুল হক মিন্টু, ছাদেক সর্দার, আব্দুল মোমিন, আমীর হোসেন, নুর মোহাম্মদ ছুট্টু।

    বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মহি উদ্দিন ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভের পূর্বে এতদ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার দূরে গিয়ে পড়াশোনা করতো। শিক্ষার আলো জ্বালাতে এবং শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবের উদ্দেশ্যে ১৯৯৫ সালে স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের নিয়ে এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিই। সেই থেকে এখনো এই বিদ্যালয়ের সার্বিক দিক দেখাশোনা করে আসছি। তবে বর্তমানে বিরাজমান নানা সংকট থেকে বিদ্যালয়কে কাটিয়ে তুলতে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।

    বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. ফজলুল করিম ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি আমি নিজেই শুরুর দিকে শিক্ষকতা করেছি শুধুমাত্র নানা সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য। কিন্তু সংকট থেকে দুই দশক পার হয়ে গেলেও উত্তরণ হয়নি। স্থানীয়দের সার্বিক সহযোগিতায় দীর্ঘ ২৪ বছর যাবত ধুঁকে ধুঁকে পাঠদান চলছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে এই বিদ্যালয় একসময় মডেল বিদ্যালয় হবে বলে প্রত্যাশী।

    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে জানান, নামমাত্র সম্মানিতে শিক্ষকরা আন্তরিকভাবে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। বিগত কয়েকবছর ধরে শিক্ষকদের আপ্রাণ প্রচেষ্টার ফলে জেএসসিতে শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

    বর্তমানে বিদ্যালয়ের ভবন সংকট, পাঠদানের অনুমতি অর্জিত হলে, আর্থিক সংকট ও আসবাবপত্র সংকট কাটিয়ে উঠলে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আরো ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হবে।

  • জৌলুস হারিয়েছে রাউজানের রামধন জমিদার বাড়ি

    জৌলুস হারিয়েছে রাউজানের রামধন জমিদার বাড়ি

    প্রাচীন কারুকার্য্যমন্ডিত সু-পরিসর ভবন। পলেস্তারা উঠে শ্যাওলা জমেছে ভবনটির অনেক স্থানে। পুকুর, রামধর দিঘী, বাড়ীর সামনে তোরণ, চুন সরকি দিয়ে তৈরি কাচারিঘর, জমিদারের আনন্দ মহল, নাচখানা, মন্দির সবই আছে।

    বাড়িটির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বাড়ির ভেতর থেকে সন্ধ্যাকালীন সময়ে নুপুরের আওয়াজ ভেসে আসেনা এখন। এক সমসয়ের কর্মচাঞ্চল্যে ভরা বাড়িটির জৌলুস হারিয়ে গেছে অনেক আগেই। তবু ঐতিহ্য ধরে রেখে কালের স্বাক্ষী হয়ে আজও টিকে আছে রাউজানের ডাবুয়া এলাকার রামধন জমিদার বাড়ীর ঝরাজীর্ণ ভবনটি। রাউজানে ঐতিহ্যবাহী এই ভবনটি জুড়েই আছে সুনশান নীরবতা।

    ব্রিটিশ শাসনামলে এই বাড়িটির আধিপত্য ছিল এলাকাজুড়ে। এলাকার জমিদারি ছিল রামধন জমিদারের হাতেই। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নানান শ্রেণী, পেশার মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকত বাড়িটিতে। কালের আবর্তে সেই দিনগুলো হারিয়ে গেছে অতীতের হিমাগারে।

    জমিদার রামধর ও রামগতি ধরের বংশ ধরের মধ্যে অনেকেই চট্টগ্রাম শহর ও ঢাকায় বসবাস করলেও জমিদার বাড়ীটির কিছু অংশ সংস্কার করে রামধরের নাতি-নাতনীসহ কয়েকজন এখনো বসবাস করেন এই বাড়িটিতে। পূজার সময় কিংবা পরিবারিক অনুষ্ঠানে একত্রিত হন জমিদারের পরিবারবর্গ।

    জৌলুস হারিয়েছে রামধন জমিদার বাড়ি
    পুরনো স্মৃতি মনে পড়লে এখনো স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন রামধন জমিদারের নাতনী একাশি বছরের বৃদ্ধা ছবি ধর।

    বার্ধক্যের ছাপ ধানা বেধেছে শরীরে। সেদিনগুলোর কথা ভেবে এখনো স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন রামধন জমিদারের নাতনী একাশি বছরের বৃদ্ধা ছবি ধর। কান্না বিজড়িত কন্ঠে তিনি ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, এক সময় আমাদের এই বাড়িটি লোকে গিজগিজ করতো। আমাদের জন্মের পর থেকে দেখেছি ঠাকুর দা’র (রামধন জমিদার) জমিদারি শাসন।

    তিনি মারা যাওয়ার পর বাবা কেশব চন্দ্র ধর জমিদারির হাল ধরেন। ১৯৫৫ সালের ৬ জুন বাবার মৃত্যুর পর আমাদের জমিদারি ধীরে ধীরে হারিয়ে গেল। সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে বুক ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে দীর্ঘশ্বাস।

    স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জমিদার বাড়িটি রুপার থালা, বালতি, কেঁতলি ব্যবহারসহ অভিজাত শ্রেণীর ভোগবিলাসীতায় ভরপুর ছিল। এলাকার মানুষদের কাছ থেকে রুপার টাকায় খাজনা আদায় করত জমিদার। যারা খাজনা আদায় করতে আসত তাদেরকে জমিদার বাড়ি থেকে দেওয়া হতো এক জোড়া নারকেল, একবিড়া পান আর বাতাশা।

    ডাবুয়া জগন্নাত হাট, ডাবুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, চিকদাইর পুলিশ ফাড়ি সহ রাউজান আর আর এসি মডেল হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠায় এ জমিদার বংশের বিশেষ অবদান রয়েছে বলে স্বীকৃতি আছে।

  • আনোয়ারায় যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

    আনোয়ারায় যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

    চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় লাইসেন্স বিহীন অরক্ষিতভাবে অবাধে চলছে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি। মান নির্ণয় ছাড়াই এই সব সিলিন্ডার গ্রামীন জনপদের মানুষ ব্যবহার করছে। কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই এ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে এসব গ্যাস সিলিন্ডার।

    যেকোন সময় এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। গত বৃহস্পতিবার ( ১৭ অক্টোবর) আনোয়ারায় অ্যাম্বুলেন্সে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় তিন জন নিহত ও চারজন আহত হওয়ার পর আনোয়ারার বিভিন্ন স্থানে সিলিন্ডার বিক্রি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক আরো বেড়ে যায়।

    জানা যায়, আনোয়ারা উপজেলার একটি গ্যাস ক্ষেত্র থেকে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস উত্তোলন হলেও আবাসিক গ্যাস লাইনের সংযোগ পায়নি অধিকাংশ পরিবার। তাদের একমাত্র ভরসা সিলিন্ডার গ্যাস। যা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে উপজেলার সর্বত্র বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে অরক্ষিত অবস্থায়। অধিকাংশ বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে নেই বিস্ফোরক অধিদফতরের অনুমতি।

    সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাট বাজারে ও প্রধান সড়কের মোড়ে দেখা যায়, সরকারী নীতিমালার তোয়াক্কা না করে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দেদারছে বিক্রি করা হচ্ছে। দোকানের সামনে, এমন কি ফুটপাথেও সিলিন্ডার ফেলে রেখে এ ব্যবসা নির্বিঘ্নে পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা।

    মুদির দোকান, হার্ডওয়ারের দোকান, ফ্ল্যাক্সি লোডের দোকান, মেশিনারি দোকানে, সারের ডিলার এবং চা-দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে সিলিন্ডার ভর্তি এসব গ্যাস। অরক্ষিত অবস্থায় বিক্রির উদ্দ্যেশে যত্রতত্র সিলিন্ডার মজুদ করার ফলে যে কোন মূহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। অনেক দোকানে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র থাকলেও তা অকেজো ও মেয়াদোত্তীর্ণ।

    বর্তমানে এ উপজেলায় গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারকারী প্রায় লাখের উপরে। ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের মন গড়া ভাবে যেখানে সেখানে সিলিন্ডারের বোতল মজুদ রেখে ব্যবসা করছে। বেশিরভাগ দোকানি শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে যেসব দোকানে সনদ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাসবিক্রি হচ্ছে সেগুলোকে আইনের আওতায় আনা হবে। শীঘ্রই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এসব দোকানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

  • শিক্ষকদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে আজ : এমপিওভুক্ত হচ্ছে ২৭৩০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

    শিক্ষকদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে আজ : এমপিওভুক্ত হচ্ছে ২৭৩০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

    ৯ বছর পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হতে যাচ্ছে। গণভবনে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিওভুক্তির এই ঘোষণা দেবেন। ফলে শিক্ষকদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে আজ। নতুনভাবে ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আওতায় আসবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়।

    রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেছেন, সর্বশেষ যতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল, তার প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান এবার এমপিওভুক্ত হচ্ছে। পাহাড়ি অঞ্চলসহ সব উপজলা থেকেই এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আওতায় আসছে।

    এবার নতুন নিয়ম চালু করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাহলো, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মান ধরে রাখতে ব্যর্থ হলে তাদের এমপিও সাময়িক স্থগিত হবে। তবে পুনরায় যোগ্যতা অর্জন করতে পারলে আবারও এই সুবিধার আওতায় আসতে পারবে। সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল।

    সূত্রে জানা যায়, এমপিওভুক্তির নতুন তালিকায় রয়েছে ১ হাজার ৬৫১টি স্কুল ও কলেজ, ৫৫৭টি মাদ্রাসা এবং ৫২২টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৬৮০টি স্কুল-কলেজ সম্পূর্ণ নতুন এবং প্রতিষ্ঠানের নতুন স্তর এমপিওভুক্ত হচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯৭১টি।

    নতুন এমপিওভুক্তির মধ্যে নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৩৯টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৪৬টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ২টি এবং কলেজ ৯৩টি। আর স্তর পর্যায়ে এমপিওভুক্ত হয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮৪৯টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ৬৬টি এবং কলেজ ৫৬টি।

    নতুন এমপিওভুক্তির তালিকায় রয়েছে ৩৫৯টি দাখিল মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠানের নতুন স্তর এমপিওভুক্ত হচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আলিম ১২৭টি, ফাজিল ৪২টি ও কামিল ২৯টি। কারিগরির সব প্রতিষ্ঠানই নতুন এমপিওভুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে কৃষি ৬২টি, ভোকেশনাল স্বতন্ত্র ৪৮টি, ভোকেশনাল সংযুক্ত ১২৯টি, বিএম স্বতন্ত্র ১৭৫টি ও বিএম সংযুক্ত ১০৮টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হচ্ছে।

    এমপিওভুক্তির দাবিতে ২০১০ সালের পর থেকেই থেমে থেমে আন্দোলন করে আসছেন এমপিওভুক্ত নয়, এমন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–কর্মচারীরা।

    গতকাল প্রায় এক ঘণ্টার মতবিনিময় সভায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে। যোগ্য বিবেচিত একটি প্রতিষ্ঠানও বাদ যাবে না। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় দেখা হবে না।

    স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আবেদন বাছাই করে যোগ্য তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ বিবেচনায় কেবল পিছিয়ে পড়া এলাকার প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট উপজেলার মেধাক্রম অনুসারে সেরা প্রতিষ্ঠানকে বেছে নেয়া হয়েছে।

  • ২দিনের রিমান্ডে আন্তর্জাতিক ইয়াবা পাচারকারী চক্রের ৫ নারী

    ২দিনের রিমান্ডে আন্তর্জাতিক ইয়াবা পাচারকারী চক্রের ৫ নারী

    চট্টগ্রামে খুলশী থানা এলাকায় ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার আন্তর্জাতিক ইয়াবা পাচারকারী চক্রের ৫ নারীকে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

    আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ খাইরুল আমীন তাদের প্রত্যেককে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

    এর আগে রিমান্ড শুনানীর নির্ধারিত সময়ে ভারতীয় নাগরিকসহ গ্রেফতার ৫ নারীকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫দিন করে রিমান্ড আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। আদালত শুনানী শেষে প্রত্যেককে দুদিন করে রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দেন। আরো খবর : আন্তর্জাতিক ইয়াবা পাচারকারী চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার

    তথ্যটি ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে নিশ্চিত করেন খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী। তিনি বলেন, ভারতের উত্তরাখ-ের নানকমাথা এলাকার কোমল কর (২৮), ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার রোজিনা বেগম (৫২) ও তার মেয়ে নাইমা বেগম (২৮) এবং মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর এলাকার শাহনাজ বেগম (৫০) ও তার মেয়ে সুমাইয়া ইসলাম (২১) এরা আন্তর্জাতিক ইয়াবা পাচারকারী চক্রের সদস্য।

    তাদের সাথে সম্পৃক্ত অন্যদের তথ্য অনুসন্ধান ও তাদের কর্মকাণ্ড এবং উদ্দ্যেশ্য জানতে আজ মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত শুনানী শেষে প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদিন করে অনুমতি দেন।

    এর আগে গত ২০ অক্টোবর রবিবার বিকেলে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক ইয়াবা পাচারকারী চক্রের ৫ নারী সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। নগরীর খুলশী থানার নাসিরাবাদ এলাকার মহিলা কলেজ মোড়ে একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ এ ৫ নারীকে গ্রেফতার করা হয়।

    এ ঘটনায় র‌্যাব বাদী হয়ে সিএমপির খুলশী থানায় মাদক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে তাদের আদালতে নেয়া হলে আদালত আজ ২২ অক্টোবর শুনানীর দিন ধার্য্য করেন।

  • চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক ইয়াবা পাচারকারী চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার

    চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক ইয়াবা পাচারকারী চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার

    চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবার চালানসহ আন্তর্জাতিক ইয়াবা পাচার চক্রের ৫ নারী সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

    রবিবার বিকেলে গোপন তথ্যমতে নগরীর জাকির হোসেন রোডের নাসিরাবাদ মহিলা কলেজ মোড় থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে আনুমানিক ২০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করার তথ্য দিয়েছেন র‌্যাব সদস্যরা।

    গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন ভারতীয় নাগরিক ও অপর চারজন বাংলাদেশী। এরা হলেন, ভারতের উত্তরাখণ্ডের নানকমাথা এলাকার কোমল কর (২৮), ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার রোজিনা বেগম (৫২) ও তার মেয়ে নাইমা বেগম (২৮) এবং মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর এলাকার শাহনাজ বেগম (৫০) ও তার মেয়ে সুমাইয়া ইসলাম (২১)।

    জানিয়েছেন র‌্যাপিড অ্যকশন ব্যাটেলিয়ন র‌্যাব সদস্যরা জানিয়েছেন গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ভারতীয় নাগরিক কোমল করের খালা রোজিনা বেগম সম্প্রতি বাংলাদেশের এক মুসলিম ধর্মের ছেলেকে বিয়ে করেন। পরে হিন্দু ধর্ম থেকে সে মুসলিম ধর্মে রুপান্তরিত হয়। এছাড়া বাংলাদেশে বসবাসকালে তার পাশ্ববর্তী শাহনাজ বেগমের সাথে বন্ধুত্ব হলে তারা সকলে যৌথভাবে আন্তর্জাতিক ইয়াবা পাচার চক্রে যোগ দেন।

    র‌্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক ও সহকারী পুলিশ সুপার তারেক আজিজ এসব তথ্য ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে নিশ্চিত করে বলেন, আন্তর্জাতিক চক্রটি বিভিন্ন সময়ে কক্সবাজার থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি ভারতে পাচার করে আসছেন।

    তিনি বলেন, রবিবার কক্সবাজার থেকে ইয়াবা নিয়ে নগরীর জাকির হোসেন সড়ক ধরে ঢাকার উদ্দ্যেশে ইয়াবা বহনকারী একটি মাইক্রোবাস আসছে এমন সংবাদে জরুরি ভিত্তিতে চেক পোস্ট বসানো হয়। বিকেলে গাড়িটি চেক পোস্টের সামনে এলে সেটি থামানো হয়। পরে মাইক্রোবাস এবং নাঈমা ও কোমলের ভ্যানেটি ব্যাগে তল্লাশী চালিয়ে ছোট ছোট পুটলি থেকে প্রায় ২০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

    প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভারতীয় নাগরিক কোমল জানিয়েছেন, সর্বশেষ গত ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। সেখানে তার সাথে বাংলাদেশী চার সহযোগী রোজিনা, নাঈমা, শাহনাজ ও সুমাইয়া যোগ দেন। তারা কয়েকদিন আগে কক্সবাজারের কলাতলী মোড় থেকে ইয়াবাগুলো সংগ্রহ করে আজ রবিবার ঢাকায় নিয়ে যাবার উদ্দ্যেশে চট্টগ্রাম ক্রস করছিলেন। ধরা পড়ে র‌্যাবের হাতে।

    আন্তর্জাতিক এ ইয়াবা চক্রের সদস্যদেও বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উদ্ধারকৃত ইয়াবাসহ নগরীর খুলশী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানায় র‌্যাবের সহকারী পরিচালক ও সহকারী পুলিশ সুপার তারেক আজিজ।

  • হাছিনাই খুনী, পুলিশের জবানবন্ধীতে জোড়া খুনের দায় স্বীকার

    হাছিনাই খুনী, পুলিশের জবানবন্ধীতে জোড়া খুনের দায় স্বীকার

    পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে প্রেমিক মাইনুদ্দীনের সহযোগীতাই জোড়া খুনের দায় স্বীকার করে নিয়েছে হাছিনা আক্তার। পরকীয়া প্রেমিকের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় শিশু কণ্যা ফাতেমা বিবি ও পথের কাটা সরিয়ে নিজ প্রেমিককে একান্তে পেতে স্বামী আবু তাহেরকে হত্যা করার দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।

    হাছিনা পুলিশের কাছে জানিয়েছে মাইনুদ্দীনের সঙ্গে তার শারিরীক সম্পর্কের বিষয়টি শিশু ফাতেমা দেখে ফেলার পর তার বাবাকে ঘটনাটি বলে দেয়ার ভয় দেখালে মেয়েকে সে নিজেই খুন করে। পরে আবু তাহেরকেও শ্বাসরোধ করে এবং ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়।

    চট্টগ্রামে নিজ বাসায় বাবা-মেয়ে খুনের ঘটনায় মূল আসামীদের গ্রেফতারের পর রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে নগরীর দামপাড়ায় সিএমপি কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম।

    পুলিশের অভিযানে নাছিমার পরকিয়া প্রেমিক ও শ্রমিক নেতা মাইনুদ্দিন নোয়াখালি থেকে গ্রেফতার

    তিনি বলেন, হাছিনার দেওয়া তথ্যে তার কথিত প্রেমিক মাহিন উদ্দিনের অবস্থান শনাক্ত করে নোয়াখালীতে অভিযান চালিয়ে শনিবার রাতেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

    ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আমেনা বেগম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানা নিমতলা এলাকায় বুচুইক্যা কলোনির জনৈক শাহআলমের মালিকানাধীন ৩ তলা ভবনের নিচতলার একটি ঘরে স্ত্রী হাছিনা আক্তার ও মেয়ে বিবি ফাতেমাসহ একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকতেন আবু তাহের।

    তিনি এসএপিএল কন্টেইনার ডিপোতে দিন মজুরের কাজ করতেন। নোয়াখালী জেলার চরপার্বতী এলাকার মো মোস্তফার ছেলে আবু তাহেরের স্ত্রী হাছিনা আক্তার বাসা ভাড়িতে বুয়ার কাজ করতেন।

    তাদের বাসাটির অর্ধেক অংশ বোডের পার্টিশান দিয়ে অপর প্রান্তে থাকতেন ওই কন্টেইনার ডিপোতে শ্রমিকদের নেতা মাইনুদ্দিন। সে সুবাধে দীর্ঘদিন ধরে আবু তাহেরের স্ত্রী হাছিনা আক্তারের সাথে মাইনুদ্দিনের অবৈধ সম্পর্ক চলে আসছিলো। সম্প্রতি স্বামী আবু তাহের বিষয়টি বুঝতে পারলে স্বামী স্ত্রী দুজনের মাঝে অশান্তি শুরু হয়।

    অন্যান্য দিনের মত ১৯ অক্টোবর শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় কর্মস্থলের উদ্দ্যেশে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় দিনমজুর আবু তাহের। তখন বাসায় ছিলেন হাছিনা এবং শিশু কণ্যা ফাতেমা। একটু পরে বাসায় ঢুকে হাছিনার প্রেমিক মাইনুদ্দিন। দুজনের মাজে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনের সময় দেখে ফেলে শিশু ফাতেমা। ঘটনা তার বাবাকে বলে দেওয়ার হুমকি দেয়।

    পরকিয়ার বলি
    বন্দর থানা নিমতলা এলাকায় বুচুইক্যা কলোনির জনৈক শাহআলমের মালিকানাধীন ৩ তলা ভবনের নিচতলার একটি ঘর থেকে বাবা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ইনসেটে স্ত্রী হাছিনা আক্তার

    তখন মাইনুদ্দীন ফাতেমার হাত-পা চেপে ধরে আর হাসিনা ছুরি দিয়ে নিজ কণ্যাকে হত্যা করে লাশ খাটের উপর রেখে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়। কিছুক্ষণ পর তাহের বাসায় প্রবেশ করলে মাইনুদ্দীন ও হাসিনা তাকে জাপটে ধরে গলায় রশি দিয়ে শ্বাসরোধ এবং পেটে ও মাথায় ছুরিকাঘাতের পাশাপাশি গলা কেটে ফেলে।

    আরো খবর : পরকিয়ার বলি স্বামী ও শিশু সন্তান

    নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (বন্দর) কামরুল ইসলাম জানান, নিহত আবু তাহের ও তার স্ত্রী হাছিনা আক্তারের আগেও বিয়ে হয়েছে। আবু তাহেরের স্ত্রী মারা গেলেও হাছিনার আগের স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে গত ৫ বছর আগে পারিবারিক সম্মতিতে তাহেরের সাথে দ্বিতীয় বিয়েতে বসে।

    সম্প্রতি কিছুদিন আগে তাদের রুমে বোড লাগিয়ে আরেকটি স্পেস ভাড়া নেন শ্রমিক নেতা মাইনুদ্দিন। তার স্ত্রী থাকেন নোয়াখালীর বাড়িতে। এরমধ্যে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ায় তাহেরের স্ত্রী হাছিনা এবং মাইনুদ্দিন। শনিবার দুজনের অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় শিশু কণ্যা ফাতেমাকে খুন করে হাছিনা। একই দিন মাইনুদ্দিন ও হাছিনা মিলে স্বামী আবু তাহেরকেও হত্যা করে।

    হত্যার পর লাশ উদ্ধার হলে হাছিনা পুলিশকে জানিয়েছে আবু তাহের মেয়েকে হত্যার পর নিজেই আত্মহত্যা করেছে। তবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বামী ও মেয়েকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে নিয়েছে।

    শনিবার (১৯ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বন্দর থানাা পুলিশ ওই ভাড়া বাসা থেকে দিনমজুর আবু তাহের ও মেয়ে বিবি ফাতেমার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। দুজনের গলায় ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে ধারালো রক্তমাখা একটি ছুরিও উদ্ধার করে।

    আরো খবর : চট্টগ্রামের নিমতলার বাসায় বাবা ও মেয়ের গলাকাটা লাশ

    এসময় স্ত্রী হাছিনা আক্তার দাবি করেন, ঘটনার দিন সকাল ৮ টার দিকে কাজে গিয়ে ৯টার দিকে এসে মেয়ে ফাতেমার লাশ খাটের উপর এবং স্বামী আবু তাহেরের লাশ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়দের মাধ্যমে সে পুলিশকে খবর দেন। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধারের পরপর হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের সাথে সিআইডির ফরেনসিক টিম, ডিবি ও পিবিআই যৌথভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করে।