Category: বিশেষ খবর

  • সংকটে কৃষক অনাবৃষ্টির ফলে চট্টগ্রাম বিভাগে আমনের ফলন বিপর্যয়

    সংকটে কৃষক অনাবৃষ্টির ফলে চট্টগ্রাম বিভাগে আমনের ফলন বিপর্যয়

    জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টির অভাবে চট্টগ্রামে আমনের ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির অভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলায় মরে যাচ্ছে আমন ধানের চারা। আগের মৌসুমের তুলনায় ১ হাজার ৬’শ ৫৩ হেক্টর জমিতে আমন চাষ কম হয়েছে। ইতোমধ্যেই গত মৌসুমের তুলনায় এ বছর মাত্র ৭৫ শতাংশ জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। কৃত্তিম উপায়ে সেচ দিতে গিয়ে কৃষকের খরচ বেড়েছে তিনগুন। এ ছাড়া কমেছে আমন চাষের পরিমাণও। এতে করে চট্টগ্রাম বিভাবে খাদ্য সংকটে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

    অনাবৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের কৃষকরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। ধান চাষে এবার বর্ষায় অনাবৃষ্টির কারণে বীজতলা তৈরির সময় থেকেই নানা সংকটে পড়তে হয়েছে কৃষকদের। একইসঙ্গে ইউরিয়া সারের মূল্যবৃদ্ধি ও লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা সংকটকে ঘনীভূত করেছে। এর বাইরে রয়েছে শ্রমিকের বাড়তি মজুরি।

    এসব কারণে চলতি মৌসুমে আমন আবাদের পাশাপাশি উৎপাদনও কমে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। খরচ বেড়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ। একইসঙ্গে কমেছে আমনের আবাদ।

    ফটিকছড়ির চাষী সোলাইমান আকাশ জানান, প্রাকৃতিক সমস্যার কারণে এ বছর জমি থেকে ফসল তোলা প্রায় অনিশ্চিত। পাওয়ার টিলার বাবদ প্রতি কানিতে আড়াই হাজার টাকা, আগামসহ আনুসাংগিক ব্যয় প্রতি ৪০ শতকে প্রায় ১৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।

    চট্টগ্রাম কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চট্টগ্রাম অঞ্চলের আওতাধীন পাঁচ জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, ল²ীপুর ও নোয়াখালী জেলায় গত মৌসুমে আমন আবাদ হয়েছিল মোট পাঁচ লাখ ৭২ হাজার ৮’শ ২০ হেক্টর জমিতে ।

    এরমধ্যে লাখ ৮৮ হাজার ২’শ ২৯ উফশী জাতের, স্থানীয় ৭৩ হাজার এবং ১১ হাজার ৫’শ ১৬ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের আমন ধান আবাদ করা হয়েছিল। এরমধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় তিন জাতের আমনের আবাদ হয়েছিল এক লাখ ৮২ হাজার ৬’শ ৭১ হেক্টর।

    তার আগের বছর এ জেলায় আমন আবাদ হয়েছিল এক লাখ ৮৫ হাজার ৩’শ ১৯ হেক্টর জমিতে। গত মৌসুমে শুধু চট্টগ্রাম জেলায় আমনের আবাদ কমেছিল ২ হাজার ৬’শ ৪৮ হেক্টর জমিতে।

    চট্টগ্রাম জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, চলতি মৌসুমে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ১ লাখ ৮২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

    ইতোমধ্যেই ৭৫ শতাংশ জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে জোয়ারের চাপ থাকায় আমন আবাদে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। বর্তমানে আমন চারা রোপণের শেষ সময় চলছে।

    কৃষি বিভাগের হিসাবে গেল ৩১ আগস্টের মধ্যে আমনের চারা রোপণ শেষ করার কথা। শুধু রোপণ নয়, ধানের চারা বেড়ে ওঠার সময় চলতি সেপ্টেম্বর নাগাদও জমিতে পর্যাপ্ত পানি থাকতে হবে। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় পর্যাপ্ত পানি নেই জমিতে।

    আমনের বীজতলা তৈরির উপযুক্ত সময় জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে এবার কাক্সিক্ষত বৃষ্টির দেখা মিলেনি। সেচ পাম্প দিয়ে বীজতলা তৈরির কাজে এখন বড় বাঁধা লোডশেডিং। বাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে কৃষি-শ্রমিকরাও বাড়তি মজুরি দাবি করে।

    দেশের ‘শস্যভান্ডার’ হিসেবে পরিচিত রাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিল, বোয়ালখালীর বগাচরা ও মইঘ্যার বিলে আমন আবাদ কম হয়েছে। এরমধ্যে বগাচরার ৩’শ একর জমির মধ্যে আমনের চাষ হয়েছে মাত্র ৫০ একর জমিতে।

    একইভাবে মইঘ্যার বিলে ১’শ একর জমির মধ্যে ৫০ একর জমিতে চাষ হয়েছে। চলতি আমন মৌসুমে দৈনিক আট-নয়শ’ টাকা মজুরি দিয়েও কৃষি শ্রমিক মিলছে না।

    জে-আর

  • ঘুষ নেয়ার অভিযোগে কাউন্সিলরের কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

    ঘুষ নেয়ার অভিযোগে কাউন্সিলরের কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

    ওয়ারিশ সনদ পেতে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নারী কাউন্সিলের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। গতকাল ১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকালে ১১, ২৫ ও ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর হুরে আরা বেগম বিউটির কার্যালয়ে কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।

    অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক। এসময় সঙ্গে ছিলেন উপ-সহকারী পরিচালক মো. হামেদ রেজা।

    ওয়ারিশান সনদ দিতে চসিক কাউন্সিলর হুরে আরা বেগম বিউটির কার্যালয়ের দুই অফিস সহায়ক জসিম ও শাহেদ ঘুস নেন । দুদক কর্মকর্তারা জানান, তারা ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে এ বিষয়ে কাউন্সিলর জানতেন না বলে জানিয়েছেন জসিম ও শাহেদ।

    দুদকের সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর হুরে আরা বেগম বিউটির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ ছিল ওয়ারিশান সনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ নিতেন। এ নিয়ে আমরা কাউন্সিলরের অফিসে অভিযান চালিয়েছি।

    মূলত অফিসের দুই অফিস সহায়ক ওয়ারিশান সনদ দিতে বকশিস নিতেন। বিষয়টি কাউন্সিলর জানতেন না। এখন দুই অফিস সহায়ক জসিম ও শাহেদ বিষয়টি আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন। কাউন্সিলর তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।

    জে-আর

  • চট্টগ্রামে দুর্নীতির শীর্ষে পাসপোর্ট অফিস

    চট্টগ্রামে দুর্নীতির শীর্ষে পাসপোর্ট অফিস

    চট্টগ্রামে দুর্নীতির শীর্ষে অবস্থান করছে অতি গুরুত্বপূর্ন সেবাখাত পাসপোর্ট অফিস। এ খাতে সর্বোচ্চ ৭৯ শতাংশ ঘুষ লেনদেন হয়েছে। এর পরে রয়েছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশ। এ খাতে ঘুষ লেনদেনের পরিমাণ ৬৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ । দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে চট্টগ্রামে তৃতীয়স্থানে রয়েছে বিআরটিএ। দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ এ সেবাখাতে ঘুষ লেনদেনের পরিমাণ ৬৭ দশমিক ৩১ শতাংশ।

    টিআইবি’র অনুসন্ধানকালীন সময়ে হিসাব মতে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হলেও চট্টগ্রামে দুর্নীতির সবচেয়ে বড় আখড়া হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে পাসপোর্ট সেবাখাত। সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের

    (টিআইবি) ‘সেবা খাতে দুর্নীতি : জাতীয় খানা জরিপ ২০২১’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।টিআইবির প্রতিবেদনে চট্টগ্রামসহ দেশের আটটি বিভাগে ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১৭ ধরনের সেবা খাতের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়।

    এসব দুর্নীতির মধ্যে রয়েছে ঘুষ, জোরপূর্বক টাকা আদায়, প্রতারণা, দায়িত্বে অবহেলা, স্বজনপ্রীতি, সময়ক্ষেপণসহ বিভিন্ন হয়রানি। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে ৬৭ শতাংশ সেবাগ্রহীতা বা পরিবার দুর্নীতির শিকার হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

    টিআইবির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৮৫.১১ শতাংশ মানুষ পাসপোর্ট সংক্রান্ত কাজে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির শিকার হয়েছেন।

    ৭৭.০১ শতাংশ মানুষ দুর্নীতির শিকার হয়েছেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা থেকে সেবা নিতে গিয়ে। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ২০২১ সালে বিভিন্ন সেবা নিতে গিয়ে প্রতিটি খানা বা পরিবারকে গড়ে ৪ হাজার ৯’শ ৪৭ টাকা করে ঘুষ দিতে হয়েছে বলে হিসাব দিয়েছে টিআইবি।

    অন্যদিকে চট্টগ্রামে টিআইবির জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭৫.৩২ শতাংশ উত্তরদাতা বিআরটিএতে, ৫৭.৯২ শতাংশ উত্তরদাতা বিচারিক সেবায়, ৪৯.১২ শতাংশ উত্তরদাতা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

    এছাড়া চট্টগ্রামে স্বাস্থ্যে ৩৬.৩১ শতাংশ, ভূমি সেবায় ৩৩.২২ শতাংশ, বিদ্যুতে ৩৩.১ শতাংশ, শিক্ষায় ৩১.২ শতাংশ, কৃষিতে ২৫.৯২ শতাংশ, কর ও শুল্কে ১৫.৮২ শতাংশ, এনজিওতে ১১.৪১ শতাংশ, গ্যাসে ৯.২২ শতাংশ,

    জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ সহায়তায় ৮.০২ শতাংশ, ব্যাংকিং সেবায় ৪.৯১ শতাংশ এবং ৭.৭১ শতাংশ অন্যান্য ক্ষেত্রে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হওয়ার কথা বলেছেন জরিপে অংশ গ্রহণকারী উত্তরদাতারা।

    জরিপে অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই মনে করেন, ঘুষ না দিলে সেবা পাওয়া যায় না। তারা ঘুষ দেন মূলত হয়রানি বা ঝামেলা এড়াতে করেছেন।

    টিআইবির জরিপে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন পুরুষই বেশি ৬৭.৫৬ শতাংশ। নারীর ক্ষেত্রে এই হার ৬২.৭৮ শতাংশ।

    জে-আর

  • চট্টগ্রামে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ 

    চট্টগ্রামে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ 

    চট্টগ্রামে প্রতিদিন বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত একমাসে শুধু আক্রান্ত হয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশী। বৈশি উষ্ণতায় গরমের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে পানি বাহিত রোগের কারণে ডায়রিয়র প্রকোপ বাড়ছে বলে জানান স্বাস্থ্য বিভাগ।

    চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ১’শ ১২ জন। ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসায় ১৫টি উপজেলায় ২’শ ৮৪টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। আক্রান্তদের জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

    গত মঙ্গলবার আক্রান্ত সংখ্যা ছিল ১’শ ৮ জন। শুধু গেল আগস্ট মাসেই ২ হাজার ৫’শ ৫০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে ২ হাজার ৪’শ ৪৫ জনই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলে জানান চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয়।

    চিকিৎসকরা বলছেন, প্রতিবছর গরমের মৌসুমেই বাড়ে পানিবাহিত রোগের সংখ্যা। বিশেষ করে ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পেতে পানি দীর্ঘ সময় ধরে ফুটিয়ে খাওয়াসহ দৈনন্দিন খাবারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।

    বিআইটিআইডি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশিদ বলেন, প্রায় প্রতিদিনই হাসপাতালে ডায়রিয়ার সমস্যা নিয়ে রোগী ভর্তি হচ্ছে।

    লক্ষণীয় বিষয় হলো, ভর্তি হওয়া রোগীদের বেশিরভাগই একটা নির্দিষ্ট এলাকার। যেহেতু সময় খারাপ, তাই খাওয়া-দাওয়ায় আরও অধিক সচেতন থাকার পাশাপাশি খাবার পানি ফুটিয়ে পান করা উচিত।

    চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসায় ১৫টি উপজেলায় ২’শ ৮৪টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। আক্রান্তদের জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

    যেহেতু ডায়রিয়া আক্রান্ত অধিকাংশ রোগী এক-দুই দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন, তাই তেমন সমস্যা হবে না আশা করি। তাছাড়া পর্যাপ্ত ওষুধ ও স্যালাইন মজুত রাখা হয়েছে।

    জে-আর

  • দোহাজারি-কক্সবাজার ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ রেললাইন প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৪ শতাংশ

    দোহাজারি-কক্সবাজার ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ রেললাইন প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৪ শতাংশ

    চট্টগ্রাম-দোহাজারি-কক্সবাজার রেল লাইনের ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ প্রকল্পের ৭৪ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৩ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের পুরো কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময় বাড়িয়ে তা ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়।

    তবে প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান জানালেন আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেল লাইনের কাজ শেষ হবে। এর পর আগস্টেই শুরু হবে দোহাজারি কক্সবাজার রুটে রেল চলাচল।

    এ ছাড়া কক্সবাজারের ঝিনুকের আদলে করা দেশের প্রথম আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইনের দুরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। এর মধ্যে দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত দুরত্ব ১০০ কিলোমিটার।

    ২০১০ সালের ৬ জুলাই দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায়। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)’র সহায়তায় এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

    তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। দেশের অন্যান্য রেলপথ থেকে এই রেলপথের বৈশিষ্ট্য আলদা। রেলপথটি নির্মিত হলে মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডোরে যুক্ত হবে বাংলাদেশ।

    দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ৩৯টি বড় সেতু, ২২৩টি ছোট সেতু ও কালভার্ট, বিভিন্ন শ্রেণির ৯৬টি লেভেল ক্রসিং নির্মাণ করা হচ্ছে। হাতি চলাচলের জন্য থাকবে আন্ডারপাস। নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, ইসলামাবাদ, রামু ও কক্সবাজার।

    প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, স্বপ্নপূরণের পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কাজ। আইকনিক রেলস্টেশনের ছয়তলা ভবনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন ফিনিশিং কাজ চলছে। এখানে পর্যটকদের জন্য লকার সুবিধা, হোটেল, শপিংমলসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকছে।

    জে-আর

  • দুদকের মামলায় চট্টগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন কারাগারে

    দুদকের মামলায় চট্টগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন কারাগারে

    দুদকের মামলায় চট্টগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জন্য বাড়তি দামে যন্ত্রপাতি কিনে ৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৯ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জনের পাশাপাশি যন্ত্রপাতি ক্রয়ের সময় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২৮ আগস্ট (রোববার) সকালে মহানগর দায়রা ও স্পেশাল জজ ডা. বেগম জেবুননেছার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

    মহানগর পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, একটি এমআরআই মেশিনের বাজারমূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা হলেও চট্টগ্রাম জেনালের হাসপাতাল সেটি কিনে ৬ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪’শ ২৫ টাকায়।

    একইভাবে চারটি কালার ডপলার কেনা হয় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকায়। যদিও এ মেশিনের দাম মাত্র ৯৮ লাখ টাকা। এভাবে বাজার মূল্যের চেয়ে দুই-তিনগুণ বেশি দাম দেখিয়ে মোট ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪’শ ২৫ টাকা

    সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর সাতজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন দুদক সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম ১-এর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক।

    মামলার অন্য আসামিরা হলো- চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মো. আব্দুর রব, জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থোপেডিক সার্জারি) ডা. মো. মইন উদ্দিন মজুমদার, সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. বিজন কুমার নাথ,

    যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. জাহের উদ্দিন সরকার, মেসার্স আহম্মদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সী ফারুক হোসেন এবং এএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আফতাব আহমেদ।

    ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জন্য যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে এ দুর্নীতি হয়েছিল বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

    জে-আর

  • দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাইভেট সেক্টরগুলোর ভূমিকা রয়েছে -নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ

    দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাইভেট সেক্টরগুলোর ভূমিকা রয়েছে -নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ

    বাংলাদেশ এখন টার্নিং পয়েন্টে আছে বলে জানিয়ে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাইভেট সেক্টরগুলোর ভূমিকা রয়েছে। গতকাল ২৮ আগস্ট (রোববার) চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন বøুতে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়াার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফা) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিং এন্ড লজিস্টিক সেক্টরে দক্ষতা উন্নয়ন’ নামে একটি কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

    প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে পরিকল্পিত উন্নয়ন, এর ছোঁয়া সব জায়গায় লেগেছে। এ উন্নয়নকে অনেকে রাজনৈতিকভাবে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের ব্যাখ্যা দেয়। কিভাবে বাংলাদেশকে থামিয়ে দেয়া যায় সে চক্রান্তই সব সময় চলেছে? এখন আমরা উন্নয়নের কথা বলি। আমি তো রাজনীতি করি।

    উন্নয়নের কথা তো আপনারাই বলেন। আপনাদের কথাগুলাই আবার আমরা তুলে ধরি। তবে উন্নয়নের যে জোয়ার শুরু হয়েছে তা আর কেউ থামাতে পারবে না। তিনি বলেন, দেশে মানবাধিকার লংঘনের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিরোধী দল বিশ্বের কাছে দেশকে খাট করছে।

    নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দক্ষ জনগোষ্ঠী দরকার। বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে এটা বাস্তবতা। চট্টগ্রাম বন্দর এখন শুধু দেশের নয়, রিজিওনাল কানেক টিভিটির জায়গা হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পিত উন্নয়ন করছেন দেশের।

    বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা মানবাধিকার নিশ্চিত করছেন। বাংলাদেশের টার্নিং পয়েন্টে আছি আমরা। বাংলাদেশকে সোনার বাংলা বানানো আমাদের টার্গেট। আমাদের প্রচুর তরুণ জনশক্তি আছে। আমাদের অর্থনীতির মেরুদন্ড নিয়ে নীরবে কাজ করছে বাফা। নতুন কোর্সের সাফল্য কামনা করি।

    তিনি বলেন, আগে চবিতে শিক্ষার চেয়ে অস্ত্রবাজি বেশি হতো। সেশনজট লেগে থাকত। এখন নতুন নতুন বিষয় পড়ানো হচ্ছে। পনেরোই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের সম্ভাবনাকে হত্যা করা হয়েছিল। সেদিন গর্ভবতী মাকে হত্যা করা হয়েছে। চার বছরের শিশুকে হত্যা করেছে। তের বছরের শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয়েছে। পঁচাত্তরের পর মানমর্যাদা হরণ করা হয়েছে।

    ইউএসএইড এবং বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফা) পরিচালিত ডিপে¬ামা কোর্স ইন লজিস্টিক সেক্টরের প্রি লঞ্চিং উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান।

    বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, লজিস্টিক সাপোর্ট রাইট টাইমে রাইট প্লেসে থাকলে সাকসেস নিশ্চিত। চট্টগ্রাম বন্দরে হাজারো খালি কনটেইনার। সময়ের প্রয়োজনে একজন এমএলওর কনটেইনার আরেকজন এমএলওকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া যেতে পারে।

    পোর্ট, শিপিং এর সঙ্গে ডোর টু ডোর সার্ভিস দরকার। পোর্ট সঠিক ভূমিকা না রাখলে সব স্টেকহোল্ডার সাফার করবে। করোনাকালে চট্টগ্রাম বন্দর চব্বিশ ঘণ্টা সাত দিন চালু ছিল। আমরা বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাফা থেকে শুরু করে ট্রাক, ট্রেইলার চালক থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসন সবার সহযোগিতা পেয়েছি। আমরা সমন্বয় করেছি শুধু।

    নতুন কোর্সকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের লজিস্টিকস খাতে প্রফেশনাল, ফিল্ড ওয়ারকার দরকার। এ খাতে সেফটি ইস্যু খুবই জরুরি। চট্টগ্রাম বন্দর সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে।

    উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ ট্রেড অ্যাকটিভিটির চিফ অব পার্টি মার্ক শাইম্যান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের প্রফেসর ড. মো. মামুন হাবিব ও চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. ইমন কল্যাণ চৌধুরী। আলোচনা করেন বাফার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন বাফার সভাপতি কবির আহমেদ।

    বক্তারা বলেন, দেশের বিজনেস ডেভেলপমেন্টের জন্য লজিস্টিক সাপোর্ট, দক্ষ জনশক্তি, মানবসম্পদ, আধুনিক কনটেইনার ডিপো, ট্রান্সপোর্ট ফ্যাসিলিটি, বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। ঢাকা বিমানবন্দরের ওয়্যারহাউসের আধুনিকায়ন দরকার।

    জে-আর

  • অবৈধ পণ্য খালাস বন্ধে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রত্যেক গেটে বসছে স্ক্যানার

    অবৈধ পণ্য খালাস বন্ধে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রত্যেক গেটে বসছে স্ক্যানার

    স্ক্যানার সংকটকে ঢাল বানিয়ে অবৈধভাবে পন্য খালাস বন্ধে এবার চট্টগ্রাম বন্দরের প্রত্যেক গেটে বসানো হবে স্ক্যানার। অবৈধ পন্য খালাস বন্ধসহ বন্দরের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতেই স্ক্যানার বসানোর কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয় মোংলা বন্দরসহ সবগুলো স্থল বন্দরেও বসানো হবে স্ক্যানার। গতকাল রোববার সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল পরিদর্শনের সময় নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদেও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

    দীর্ঘদিন ধরে স্ক্যানার, জনবলসহ নানা সংকটে ধুঁকছে চট্টগ্রাম বন্দর। আর সেই সুযোগে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বারবার মিথ্যে ঘোষণায় পণ্য এনে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। গত এক বছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় বিপুল পরিমাণে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি সিগারেট ধরা পড়েছে।

    স¤প্রতি টানা তিনদিনে পাঁচ কনটেইনার বিদেশি মদ জব্দ করে কাস্টমস কর্মকর্তারা। মন্ত্রী বলেন,চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন। এর নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার জন্য স্ক্যানার বসানোর কার্যক্রম চলমান আছে।

    চট্টগ্রাম বন্দরে যাতে স্ক্যানার বসানো না হয়, এখানে যাতে ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া না লাগে সেজন্য সংঘবদ্ধ চক্র জোরালো ভূমিকা রাখছে। চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশ্বমানের ডিজিটাল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যা যা করণীয় তা করা হবে বলেও জানান নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী।

    প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারতের সাথে চুক্তি অনুসারে তাদের দেশের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে পারবে এবং সেখান থেকে সড়ক পথে ভারতের অন্যান্য রাজ্যে মালামাল যেতে পারবে। এজন্য চট্টগ্রাম বন্দরে ভারতের জাহাজের ট্রায়াল রান হয়েছে এবং আরো ট্রায়াল হবে।

    চট্টগ্রাম বন্দরকে আরো আপগ্রেড করা হচ্ছে। পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল, ওভারফ্লো ইয়ার্ড নির্মিত হয়েছে। অধিক জাহাজ বাড়ার চাপ সামাল দেয়ার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর প্রস্তুত আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে এস আর ও হয়ে গেলে নিয়মিতভাবে ভারতীয় জাহাজ আসা শুরু করবে।

    ভারতের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করা এবং সেখান থেকে পণ্য ভারতের অন্যান্য রাজ্যে পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ মানবিক রাষ্ট্র। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এ দেশ পেয়েছি। আমরা সবসময় মানবিক পদক্ষেপ নিয়েছি। বঙ্গবন্ধুর বিদেশ নীতি হলো-সকলের সাথে বন্ধুত্ব। সে অনুযায়ী আমরা মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।

    এসময় অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো: জাফর আলম, সদস্য (প্রকৌশল) ক্যাপ্টেন মো: মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন ভৌগলিক কারণে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম বন্দর।

    এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সিএন্ডএফ এজেন্ট, অসাধু কাস্টমস কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় অবৈধভাবে আমদানি করা পণ্য আনতে চট্টগ্রাম বন্দরকে নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। আর হাতিয়ার বানিয়েছেন ‘স্ক্যানার’ সংকটকে।

    অসাধু ব্যবসায়ীরা কেন চট্টগ্রাম বন্দরকে নিরাপদ রুট মনে করছে বা বন্দর দিয়ে কিভাবে বারবার অবৈধভাবে আমদানিকরা পণ্য ছাড় হচ্ছে সেটি বের করে আনতে পিবিআই বা র‌্যাবকে তদন্তভার দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন খোদ সিএন্ডএফ এজেন্ট নেতারা।

    চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে ১২টি গেটের মধ্যে স্ক্যানার রয়েছে ৭টিতে। এরমধ্যে বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থ (জিসিবি) ১ নম্বর গেট, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ৩ নম্বর গেট, চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি) ২, ৪ ও ৫ নম্বর গেটে আছে একটি করে ফিক্সড কনটেইনার স্ক্যানার। পাশাপাশি সিসিটি-২ ও জিসিবি-২ নম্বর গেটে একটি করে মোবাইল কনটেইনার রয়েছে।

    বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, বন্দরে প্রতিনিয়ত মিথ্যা ঘোষণায় আনা পণ্য বা চোরাচালান জব্দ করে কাস্টমস। চট্টগ্রাম বন্দরে স্ক্যানারের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তাই অসাধু সিএন্ডএফ এজেন্ট ও কিছু কাস্টমস কর্মকর্তা

    আমদানিকারকদের সাথে হাত মিলিয়ে অবৈধভাবে আনা পণ্যগুলো জালিয়াতির মাধ্যমে খালাস করে নেন। পাশাপাশি এসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে মাঝে মাঝে ত্রæটি দেখা দেয়। তাই এসব জালিয়াতি রোধ করতে হলে স্ক্যানার মেশিন বসানোর বিকল্প নেই। নতুন স্ক্যানার মেশিন বসালে জালিয়াতি কমে আসবে বলে মনে করছেন তারা।

    বন্দরের প্রত্যেক গেটে স্ক্যানার বসানোর সরকারী সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, বন্দরের স্ক্যানার মেশিন সংকট একটা বড় ধরনের দুর্বলতা। শুল্ক ফাঁকি ও চোরাচালান বন্ধে স্ক্যানার বসানোর বিকল্প নেই।

    এছাড়া অনেক সময় একটি সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, কর্মচারী বা কাছের কেউ প্রাতিষ্ঠানিক পাসওয়ার্ড জানা থাকলে লোভের বশবর্তী হয়ে এ ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। কাজেই এ অপরাধটি আসলে কে করেছে তা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা প্রয়োজন।

    জে-আর

  • আবারও সাগরে বেড়েছে জলদস্যুদের উৎপাত

    আবারও সাগরে বেড়েছে জলদস্যুদের উৎপাত

    দীর্ঘদিন সাগরে ডাকাতির ঘটনা বন্ধ থাকলেও আবার উৎপাত বেড়ে জলদস্যুদের। মূলত সাগরে ভরা মৌসুমে মাছের চালান ধরতেই ডাকাতির প্রকোপ বেড়েছে। গত ২৬ আগস্ট (শুক্রবার) চট্টগ্রামের গভীর বঙ্গোপসাগরে একযোগে নয়টি বোটে ডাকাতি করে ইলিশ মাছ লুট করে নিয়ে গেছে জলদস্যুরা। এ ঘটনায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

    জলদস্যুতার কবলে পরা জেলে কবির জানান, রাত ৯টায় কালিরচর এলাকায় মাছ ধরছিলাম। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই ১৫ থেকে ২০ জনের একটি গ্রæপ বোটে উঠে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে ফেলে। এ সময় বোটের ইঞ্জিন নষ্ট করে দেয় তারা। বোটটি ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার ইলিশ মাছ ছিল। সব নিয়ে গেছে তারা।

    আরেক জেলে জানান, ডাকাতি করে চলে যাওয়ার পর কোনো রকমে বোটটি চালু করি। কিছুদূর আসার পরেই মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া গেলে ৯৯৯-এ কল দিয়ে জলদস্যুতার ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়।

    সোনালি যান্ত্রিক মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি জানান, দীর্ঘদিন জলদস্যুতার ঘটনা বন্ধ ছিল। মনে হচ্ছে আবারও শুরু হয়েছে ডাকাতির ঘটনা। মূলত ইলিশ মাছ ধরতেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে ধারণা এ ব্যবসায়ীর।

    এদিকে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণকারী বোট মালিক সমিতির মহাসচিব জানান, গতকাল রাতে গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ৯টি বোটে একসঙ্গে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সন্দীপের কাছাকাছি কালিরচর এলাকা থেকে শুরু করে আনোয়ারার গহিরা পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

    প্রতিটা বোটেই ১৪ থেকে ২০ জন করে জেলে ছিল এবং ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার ইলিশ মাছ ছিল। দুদিনের মধ্যেই জেলেরা মাছ নিয়ে ফেরত আসত। ৯টি বোটে ডাকাতির ঘটনায় এক কোটি টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

    মূলত বাঁশখালী, আনোয়ারার ডাকাতরা এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা পুলিশের। জলদস্যুদের ধরতে অভিযান শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশের ওসি এবিএম মিজানুর রহমান।

    জে-আর

  • আনোয়ারায় ২৪ দিন ধরে নিখোঁজ ছেলের সন্ধান পেতে পিতার আকুতি

    আনোয়ারায় ২৪ দিন ধরে নিখোঁজ ছেলের সন্ধান পেতে পিতার আকুতি

    নিখোঁজের ২৪ দিন ধরে খুজ মেলেনি, ছেলেকে খুঁজে পেতে পিতার আকুতি। মাদ্রাসার পড়ুয়া ১২ বছরের পুত্র সন্তানের খোঁজ পেতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।

    গত ৩০ জুলাই সকালে ঘর থেকে বের হয়ে না ফেরা নিখোঁজ মাদ্রাসার পড়ুয়া সাইফুল ইসলাম ইমন (১২)কে ২৪ দিন ধরে আত্মীয় স্বজনসহ বিভিন্ন উপজেলায় খুঁজেও সন্ধায় না পেয়ে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) বিকালে সাইফুলের বাবা জাহাঙ্গীর আলম আনোয়ারা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেছেন।

    সে স্থানীয় চাতরী চৌমুহনী বাজারের একটি মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। সাইফুলের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গত ৩০ জুলাই সকালে কাউকে কিছু না বলে আমার ছেলে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।

    ছেলের খোঁজ পেতে এ ২৪ দিন বিভিন্ন উপজেলাসহ আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে-বাড়িতে খোঁজাখুজি করি। কিন্তু কোথাও পাইনি আমার ছেলের সন্ধান। সর্বশেষ মঙ্গলবার প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করে ডায়রী করেছি থানায়।’

    তিনি আরও বলেন, যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি ছেলেটির খোঁজ পান ০১৮২৪-৪৭৭৩৩১ নাম্বার বা থানায় যোগাযোগ করার জন্যও তিনি অনুরোধ জানান। ৪ ফুট উচ্চতা সাইফুলের গায়ের রং শ্যামলা, নিখোঁজের দিন তার শরীরে পরিধান ছিলো জিন্স প্যান্ট ও কালো রঙের হাফ শার্ট।

    আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর্জা মোহাম্মদ হাছান বলেন, ‘১২ বছরের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিখোঁজের ঘটনায় ডায়েরী করেছেন ছেলেটির পিতা। খোঁজ পেতে থানা পুলিশ চেষ্টা করেছেন।

    জে-আর

  • চট্টগ্রামে মাই কিচেন হোম এন্ড লাইফস্টাইল এক্সপো‘র প্রেসকনফারেন্স

    চট্টগ্রামে মাই কিচেন হোম এন্ড লাইফস্টাইল এক্সপো‘র প্রেসকনফারেন্স

    এফ টাচ ইভেন্টস লি. যৌথভাবে সাইন এন্ড ডিজাইন এর সাথে কিচেন সলিউশন, ইন্টেরিয়র, সিরামিক, লাইটিং, ফার্নিচার ও অন্যান্য লাইফস্টাইল পণ্য মেলা আয়োজন করেছে যার পৃষ্ঠপোষকতা করছে মাই কিচেন। প্রদর্শনীটি ২৫ – ২৭ আগস্ট পর্যন্ত রেডিসন ব্লু-চট্টগ্রাম বে ভিউ এর মেজবান হলে অনুষ্ঠিত হতে হবে। আগামী ২৫ আগস্ট সকাল ১০টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম, সিআইপি।

    ৩০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান অন্তত ৫০টি দেশি বিদেশি ব্র্যান্ড এর কিচেন সলিউশন, আধুনিক গৃহসজ্জা পণ্য, ফার্নিচার, সিরামিক, ফিটিংস, লাইটিং প্রযুুক্তি ইত্যাদি ইন্টেরিয়র ডিজাইনার, আর্কিটেক্ট ও সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় একই ছাদের নিচে প্রদর্শন করবেন।

    ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কিচেন সলিউশন, বাসা ও অফিস ফার্নিচার, বোর্ড, দরজা, সিরামিক, বাথরুম ফিটিংস, অটো ক্লেভড ব্লক ও এক্সেসরিজ, স্যানিটারি ও কিচেন ওয়ার, ডেকোরেটিভ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইট, ইন্টেরিয়র ডিজাইন সেবা ইত্যাদি নিয়ে অংশগ্রহণ করছে।

    তিলোত্তমা বাংলা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, গতানুগতিক কিচেন থেকে মডিউলার কিচেনে রান্নার আরামদায়কতার বিষয়টি উপলব্ধি করানোর উদ্দেশ্যেই আমরা বন্দর নগরীতে উপস্থিত হয়েছি।

    যারা কিচেন সলিউশন, গৃহসজ্জা পণ্য, সিরামিক, লাইটিং, ফার্ণিচার ও অন্যান্য লাইফস্টাইল পণ্য সম্পর্কে ধারনা নিতে চান তারা এ প্রদর্শনী থেকে অবশ্যই উপকৃত হবেন।

    আজ ২৩ আগস্ট (মঙ্গলবার) নগরীর রেডিসন ব্লু-চট্টগ্রাম বে ভিউতে অনুষ্ঠিত প্রেস কনফারেন্সে তিলোত্তমা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার সজ্জাদ ছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন মাই কিচেন এর সিও শওকত ইমরান খান,

    আয়োজক প্রতিষ্ঠান সাইন এন্ড ডিজাইনের সিইও এ বি এম খালেদ মাহমুদ অপর আয়োজক প্রতিষ্ঠান এফ টাচ ইভেন্টস লি.’র পরিচালক শেখ ফিরোজ আহমেদ ও মো. সোহেল রানা।

    এফ টাচ ইভেন্টস লি.’র পরিচালক শেখ ফিরোজ আহমেদ বলেন, ইন্টেরিয়র এক্সটেরিয়র পেশাজীবী, আর্কিটেক্ট এবং সৌখিন গৃহসজ্জাকারীগণ এ মেলায় এসে প্রয়োজনীয় পণ্যের প্রদর্শনী দেখে উপকৃত হবেন।

    এছাড়াও সাধারণ ব্যবহারকারীগণ নতুন নতুন গৃহসজ্জা পণ্যের সাথে পরিচিত হতে পারবেন এবং গৃহ ও অফিস সজ্জার আসবাবপত্র ক্রয় করতে পারবেন।

    এ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় ছাড় ও বিভিন্ন অফার। প্রদর্শনীর সময় : প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা হতে রাত সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত। প্রবেশ মূল্য ফ্রি।

    জে-আর

  • সিআরবি’র বাইরে হাসপাতাল নির্মাণের অনুরোধ চট্টগ্রামের মন্ত্রী-এমপিদের

    সিআরবি’র বাইরে হাসপাতাল নির্মাণের অনুরোধ চট্টগ্রামের মন্ত্রী-এমপিদের

    পরিবেশ অধিদফতরের প্রতিবেদন ও সর্বস্তরের মানুষের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে চট্টগ্রামের ফুসফুস কালচারাল হেরিটেজ সিআরবিতে ইউনাইটেড হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়টি স্থগিতের জন্য রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনকে অনুরোধ জানান চট্টগ্রামের মন্ত্রী ও এমপিরা। নেতৃবৃন্দ হাসপাতালটি রেলের অন্য জায়গায় নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টি দ্রুত বাস্তবায়নেরও অনুরোধ জানান রেলমন্ত্রীকে। বিষয়টি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নিশ্চিত করেছেন।

    ১৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) রেলমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে চট্টগ্রামের সাবেক ও বর্তমান তিন মন্ত্রী এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রমুখ।

     

    এছাড়া চিঠিতে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, হুইপ শামসুল হক চৌধুরী এমপি, মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, মোস্তাফিজুর রহমান এমপি, মাহফুজুর রহমান মিতা এমপি, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এমপি স্বাক্ষর করেছেন।

    চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ঐতিহাসিক সিআরবি এলাকায় পিপিপির আওতায় হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পটি রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি সীতাকুণ্ডের কুমিরায় স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়ায় রেলমন্ত্রী ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের অভিনন্দন জানানো হয় চিঠিতে।

    চিঠিতে বলা হয়, আপনি জানেন প্রাচ্যের রানি হিসেবে খ্যাত সাগর, পাহাড়, নদীবেষ্টিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি আমাদের চট্টগ্রাম। নান্দনিক সৌন্দর্যে ঘেরা এ নগরের রূপ মাধুর্যকে আরও সমৃদ্ধ করেছে চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত কেন্দ্রীয় রেলভবন তথা সিআরবি।

    ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সিআরবি ভবনটি শুধু চট্টগ্রামেই নয়, পুরো দেশের মধ্যে স্থাপত্য শিল্পের এক অনন্য নিদর্শন। এখানে রয়েছে অসংখ্য রেইনট্রি। যেগুলোর কোনো কোনোটির বয়স পেরিয়ে গেছে শত বছরের বেশি। এটি ব্যস্ততম নগরী চট্টগ্রামের অক্সিজেন সরবরাহের উৎস হিসেবেও পরিচিত। সম্প্রতি এক গবেষণায় সিআরবিতে প্রায় ২২৫টি দুর্লভ প্রজাতির উদ্ভিদের সন্ধান পাওয়া গেছে।

    শতবর্ষী বৃক্ষরাজি, পাহাড়, টিলা ও উপত্যকায় ঘেরা বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থান হিসেবে সিআরবি চট্টগ্রামের মানুষের মনে আলাদা স্থান করে নিয়েছে। এখানে বৃক্ষরাজির শীতল ছায়াতলে বিশেষ করে অনিন্দ্য সুন্দর শিরীষতলায় আয়োজিত হয় বাংলা নববর্ষ, বসন্ত উৎসব, রবীন্দ্র নজরুল জয়ন্তীসহ বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসমূহ।

    মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদ হিসেবে আত্মোৎসর্গ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ। তিনিসহ ১১ জনের সমাধি রয়েছে এ সিআরবিতে। অপূর্ব নিসর্গ, শহীদদের সমাধিস্থল, মুক্তবায়ুতে নিরিবিলি পরিবেশে সকাল-বিকাল পরিবার পরিজন নিয়ে হাঁটাচলার এবং

    শারীরিক কসরতের অন্যতম নিরাপদ স্থান হিসেবে চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের মাঝে সিআরবি এখন অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। সভ্যতার অগ্রগতি ও মানুষের লোভের আঘাতে প্রকৃতি আজ তার রূপ ও ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে প্রণীত ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) এটিকে কালচারাল হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে। ৮টি নির্দেশনার উল্লেখ রয়েছে।

    ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি এটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। উল্লেখযোগ্য নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সিআরবির কোনো অংশ ব্যবহার করা যাবে না এবং এখানে কোনো বহুতল ভবন নির্মাণ করা যাবে না। শুধু পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পাখির অভয়ারণ্য, জাদুঘর, প্রজাপ্রতি উদ্যান প্রতিষ্ঠা করা যাবে। সব কিছু মিলিয়ে সিআরবি এখন চট্টগ্রামের সব মানুষের আবেগ ও ভালোবাসার জায়গায় পরিণত হয়েছে।

    এখানে হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগটি সংশ্লিষ্ট গেজেটের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। বিষয়টিতে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ ভীষণভাবে কষ্ট পেয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতাল স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়ায় চট্টগ্রামবাসী আশান্বিত হয়েছেন, স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন।

    রেল মন্ত্রীকে দেয়া চিঠিতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম শহরে একসময় অনেক পাহাড়, দীঘি, পুকুর ছিল। ছিল শাল, রেইন ট্রি ইত্যাদি বৃক্ষ আচ্ছাদিত রাস্তা। ছিল বাটালী হিল, কাছারি পাহাড়। পাকিস্তান আমলে বাটালী হিল ধ্বংস করা হয়েছে। কাছারি পাহাড়ের ওপরও আঘাত হেনেছিল তৎকালীন পাকিস্তান সরকার।

    এ কাছারি পাহাড়ের বিশাল অংশ কেটে তৈরি করা হয় নিউ মার্কেট, জেনারেল পোস্ট অফিস ও স্টেট ব্যাংক। এভাবেই চট্টগ্রামের নিসর্গ, সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে কালক্রমে। এখন অবশিষ্ট আছে শুধু সিআরবি। পরিবেশ অধিদফতর এখানে হাসপাতাল নির্মাণ না করা ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে মতামত প্রদান করেছে।

    ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজের ব্যানারে হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প অন্যত্র স্থানান্তরের দাবিতে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ২০২১ সালের ২৬ আগস্ট তাঁরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি আবেদন প্রেরণ করেন। ২০২১ সালের ৬ আগস্ট তাঁরা আপনার বরাবরেও একটি আবেদন করেছেন। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় বেশ কিছু নিবন্ধ ও মতামত প্রকাশিত হয়েছে।

    চিঠিতে চট্টগ্রামের সকল জনসাধারণের পক্ষ হতে মন্ত্রী এমপিরা সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ স্থগিত করে রেলওয়ের অন্যত্র জায়গায় হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান রেল মন্ত্রীকে।

    জে-আর