Category: বিশেষ খবর

  • আট বছর কোমায় থেকে কর্নেল পদে পদোন্নতি, সেনাবাহিনীর মানবিক দৃষ্টান্ত

    আট বছর কোমায় থেকে কর্নেল পদে পদোন্নতি, সেনাবাহিনীর মানবিক দৃষ্টান্ত

    কিছু সম্মান অমূল্য। তেমনি কিছু ভালোবাসার হয়না কোনো প্রতিদান। এমন সম্মান কিংবা ভালোবাসা হয়তো সবার ভাগ্যে জোটে না ঠিকই, তবে কেউ কেউ জন্মান কিছুটা সৌভাগ্যবান হয়েই। তেমনই এক সেনা কর্মকর্তা দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা। দীর্ঘ প্রায় আটটি বছর কোমায় থেকেও পেলেন পদোন্নতি। হাসপাতালের বিছানাতেই তাকে পরানো হয় ব্যাচ।

    ২০১৩ সালের ১১ মার্চ হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার। এরপর মস্তিষ্কের কিছু অংশ হারিয়ে ফেলে কার্যক্ষমতা। চলে যান কোমায়। সেখানেই কেটে গেছে জীবনের প্রায় আটটি বছর। পুরো সময় ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) অফিসার্স ওয়ার্ডের নন্দকুঁজা নামের একটি কক্ষে চিকিৎসাধীন তিনি। হাত-পা নাড়াতে পারলেও গভীর কোমায় আচ্ছন্ন।
    লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়া সেনাবাহিনীর চৌকস এই কর্মকর্তা কর্মক্ষম থাকলে হয়তো পৌঁছে যেতেন সাফল্যের কাঙ্ক্ষিত শিখরে। কিন্তু জীবনের এক নির্মম বাস্তবতা তাকে দেয়নি সেই সুযোগ। তবে বাহিনীর প্রতি তাছাওয়ারের অবদান ভুলে যায়নি সেনাবাহিনী। বিদায় লগ্নে বিরল এক সম্মান পেলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা। গত সোমবার (১২ অক্টোবর) তাকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদ থেকে কর্নেল হিসেবে পদোন্নতির সম্মানে ভূষিত করা হয় তাকে।

    বাহিনীর এই সম্মাননায় গর্বিত মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজার জীবন সঙ্গী মোসলেহা মুনীরা রাজা ও তাদের তিন সন্তান।

    মোসলেহা মুনীরা রাজা বলেন, তার স্বামী চাইতেন তাদের দুই ছেলে বড় হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দিবেন। সন্তানেরাও নিয়োজিত হবেন দেশের সেবায়। কিন্তু স্বামীর অসুস্থতার পর সবকিছু পাল্টে গেলেও দেশপ্রেমিক বাবার আদর্শেই বড় হচ্ছে তিন সন্তান। মুনীরা আশাবাদী একদিন তার স্বামী সুস্থ হয়ে উঠবেন। ফিরে পাবেন স্বাভাবিক জীবন।

    পরিবারের সদস্যদের সাথে কর্নেল দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা

    সিএমএইচের ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ মজুমদার জানান, ‘কর্নেল দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজার এ অসুস্থতাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় হাইপোস্কিক স্মিমিক ইনজুরি টু ব্রেইন ইফেক্টস। হার্ট অ্যাটাকের পর হার্ট ফিরে আসলেও, ব্রেইন ফিরে আসেনি। ব্রেইনের নিচের অংশ ভালো। কিন্তু বাইরের যে অংশগুলো আমাদের চিন্তা-চেতনার সঙ্গে জড়িত সেই এরিয়ার সেলগুলো পুনরুজ্জীবিত হয়নি। এজন্য জীবন চালানোর জন্য বেসিক বডির প্রটেকটিভ সিস্টেম ভালো থাকলেও হাইয়ার সাইকোলজিক্যাল ফাংশনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

    এ অবস্থা থেকে মুক্তির সুসংবাদ দিতে না পারলেও সিএমএইচ সবসময় তাছাওয়ার রাজার পাশে থাকবে বলেও জানান তিনি।

    বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা বাউল শিল্পী হাছন রাজার বংশধর। ১৯৮৯ সালের ২৩ জুন তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাজোয়া বাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। দীর্ঘ চাকরি জীবনে ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অধীন ইরাক-কুয়েত ও ২০০৭ সালে সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করেন। প্রায় অর্ধ শতাধিক দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।

    চাকরি জীবনের ব্যস্ততার মাঝেও লেখালেখিতে হাত পাকিয়েছিলেন দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা। কবি হাছন রাজার জীবন ও কর্ম নিয়ে হাছন রাজা সমগ্র, মেজর জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে নিয়ে ‘ও জেনারেল মাই জেনারেল, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিহাসসহ একাধিক বই লিখেছেন তিনি।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম

  • ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র ভারী শিল্প কারখানা সুপ্রিয় জুটমিল

    ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র ভারী শিল্প কারখানা সুপ্রিয় জুটমিল

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : উত্তরের কৃষি নির্ভর জেলা ঠাকুরগাঁও। দেশের মোট উৎপাদিত কৃষি পণ্যের একটা বড় অংশই চাষ হয় এ জেলায়। এখানে ভারী শিল্প কারখানা বলতে রেশম কারখানা ও সুগারমিলটিকেই বোঝানো হত। ২০০১ সালে রেশম কারখানাটি বন্ধের পরে সুগারমিলটিই ছিলো এ জেলার একমাত্র ভারী শিল্প কারখানা। লোকসানের বোঝা নিয়ে খুড়িয়ে চলা এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছরই তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যার্থ হচ্ছে।

    চলতি বছরের শুরুর দিকে শহরের সেনুয়া নদীর ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত যন্ত্রাংশ দিয়ে নির্মিত সুপ্রিয় জুট মিল নামে একটি পাটকল আত্ম প্রকাশ করে। অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের আর্থিক সহযোগীতায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত দৈনিক ২০ টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এ মিলে গড়ে প্রতিদিন ৩০হাজার বস্তা উৎপাদন হয় ও বছরে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টন পাট ব্যবহৃত হচ্ছে এবং  মিলটিতে মোট ৩ শিফটে ১২ শ শ্রমিক কাজ করছে বলে জানান মিল কর্তৃপক্ষ। তাদের উৎপাদিত পন্যের মধ্যে বস্তা , পাট সূতা ও উন্নত চট অন্যতম।

    এ মিলটি হওয়াতে একদিকে যেমন এলাকার বেকার নারী পুরুষ ও যুবকদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে তেমনি অপরদিকে স্থানীয় পাট চাষীরাও তাদের উৎপাদিত পাট ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন। এতে পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মাঝে। এ মিলটিতে উৎপাদিত পন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা মিটিয়ে ইতিমধ্যে পার্শ^বর্তী দেশ ভারতে পন্য রপ্তানী করছে।

    সুপ্রিয় জুট মিলের স্বত্ত্বাধিকারী বাবলুর রহমান বাবলু জানান, বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক পণ্য বর্জনের ফলে আমাদের পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদার নতুন দিগন্ত সূচনা হয়েছে। এ সূচনাকে কাজে লাগাতে হবে। স্থানীয় বাজারসহ আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের উৎপাদিত পাটপণ্যের চাহিদা বাড়ানো এবং সে অনুযায়ী উৎপাদন কার্যক্রম চালানোর জন্য আমরা কাজ করছি।

    মিলের কর্মরত নারী শ্রমিকরা জানান, আমরা মিলটিতে কাজ করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছি ।

    জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে দেশের অর্থনিতীতে বড় ধরনের ভ’মিকা রাখায় মিলটির প্রতিষ্ঠাতা বাবলুর রহমান বাবলুকে ধন্যবাদ জানান।

    তিনি আরো বলেন, দেশের বিত্তবানরা বাবলুর রহমানের এমন উদ্যোগে অনুপ্রানিত হয়ে এ ধরনের ভারী শিল্প কারখানা গড়ে তুলে দেশের বেকারত্ব দূরীকরনে ভ’মিকা রাখবেন বলে আশা করছি।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম/গৌতম

  • বোয়ালখালীতে গড়ে উঠেছে কেঁচো সারের খামার

    বোয়ালখালীতে গড়ে উঠেছে কেঁচো সারের খামার

    পূজন সেন, বোয়ালখালী : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বাণিজ্যিকভাবে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদন করছেন কৃষক দেলোয়ার হোসেন। বর্তমানে তিনি নিজস্ব খামারে উৎপাদিত এ সার বিক্রি শুরু করেছেন।

    বোয়ালখালীতে প্রথম বারের মতো এনএফএলসিসি প্রকল্পের আওতায় ও উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় কড়লডেঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক দেলোয়ার হোসেন কেঁচো সারের বানিজ্যিক উৎপাদন ও ব্যবহারে এগিয়ে আসেন।

    এ বানিজ্যিক কেঁচো সার উৎপাদন খামার গড়ে তুলছেন পাকা মেঝেতে ১৮টি পাকা রিং স্থাপন করে তাতে প্রাকৃতিক পচনশীল জৈব উপাদান গোবর, মাটি, খড়, তরকারির খোসা ও কেঁচো দিয়ে।

    দেলোয়ার হোসেন বলেন, কৃষি অফিসের সহায়তায় ভালোমানের ২ কেজি কেঁচো সংগ্রহ করে এ খামার শুরু করেছি গত এপ্রিল মাসে। গত চার মাসে সময়ের মধ্যে ৬মণ কেঁচো সার উৎপাদন করতে পেরেছি। এর মধ্যে ৪ মণ বিক্রি করে ৩হাজার টাকা মুনাফা লাভ হয়েছে।

    বিক্রির পাশাপাশি নিজের ধান ও সবজি ক্ষেতে এ সারের ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ বলেন, ফসলের উৎপাদন বাড়াতে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার ব্যবহার করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। এ সার জমির উর্বর মাটি তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে। রাসায়নিক সারের চেয়ে কেঁচো সারের ব্যবহারে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায় ফলনও ভালো হয়। কেঁচো সারের উপকারিতা সম্পর্কে তৃণমূল পর্যায়ে কৃষকদের ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি অফিস।

    ২৪ ঘণ্টা/খালেক

  • ভারী বৃষ্টিতে যশোরে হুমকির মুখে সবজি চাষ

    ভারী বৃষ্টিতে যশোরে হুমকির মুখে সবজি চাষ

    নিলয় ধর, যশোর প্রতিনিধি : টানা ভারীবর্ষণে যশোরের প্রায় সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমির সবজি চাষিরা হুমকির মুখে পড়েছেন। শিম ও গ্রীষ্মকালীন টমেটো কিছুটা রক্ষা পেলেও অন্যান্য সবিজর উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। বিশেষ করে আগাম ফলনের আশায় যারা সবজি চাষ করছেন তারাই ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ।

    যশোর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে আরও দু’-তিন দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। যশোরসহ এই অঞ্চলে গত সাতদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে, ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

    আবহাওয়া অফিস থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, যশোরাঞ্চলে গত ২০ সেপ্টেম্বর ৫১ মিলিমিটার, ২১ সেপ্টেম্বর ৩১ মিলিমিটার, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর ছিল ১৯ থেকে ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।২৪ সেপ্টেম্বরে সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে।আগামী তিনদিন বৃষ্টি হতে পারে।

    তবে, পরিমাণ কম থাকবে।এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমির সবজি চাষি ক্ষতির শিকার হয়েছে। তারা আগাম সবজি চাষ করেছে। ভারী বর্ষণে যশোরে সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন নীচু জমিতে চাষ করা সবজি চাষিরা।

    কৃষক বলছেন, বর্ষা আরও কয়েকদিন থাকলে ফসল ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে। এরই মধ্যে অনেক এলাকার সবজি পানিতে তলিয়ে গেছে।

    যশোরের কৃষি বিভাগ বলছে, চলতি মৌসুমে জেলায় আগাম রবি ফসল চাষ হয়েছে প্রায় সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে চার হাজার হেক্টর জমিতে মুলা, বাধাকপি, ওলকপি, ঢেঁড়স, বেগুন, লাউ, কাঁচামরিচসহ অন্যান্য সবজি রয়েছে। বাকি ৩ হাজার হেক্টরে চাষ হয়েছে গ্রীষ্মকালীন টমেটো, শিম, পটলসহ অন্যান্য সবজি। সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি, কাশিমপুর ও হৈবতপুর ইউনিয়নে মাঠের পর মাঠ সবজি চাষ করেছেন কৃষক।

    বিশেষ করে সবজি অঞ্চল খ্যাত চুড়ামনকাটি, হৈবতপুর, সাতমাইল, বারীনগর ও নোঙরপুর এলাকার শত শত চাষি বর্তমানে বিপাকে পড়েছে।

    চুড়ামনকাটি এলাকার কৃষক আয়নাল হক জানিয়েছেন, তিনি ৩ বিঘা জমিতে বেগুন, শিম, মুলাসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করেছে। বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ সবজি খেতে পানি জমে গেছে। ২/১দিনের মধ্যে যদি বৃষ্টি না কমে তাহলে এসব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।

    একই এলাকার চাষি আব্দুল হাকিম বলেন, ইতিমধ্যে এই অঞ্চলের অধিকাংশ চাষিই আগাম শীতকালীন সবজি চাষ শুরু করেছেন। তারা সবাই বিপাকে পড়েছেন। চুড়ামনকাটি উত্তরপাড়ার মিজানুর রহমান ও আবু জাফর বলেন, বৃষ্টির কারণে মুলা, পালংশাক, বেগুন, করোলা ও শিম খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব খেতের সবজির গোড়ায় পচন ধরতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস জানিয়েছেন, যশোরাঞ্চলে এবার আগাম রবি ফসল চাষ শুরু হয়েছে প্রায় সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমিতে। গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে সবজি চাষিরা কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ক্ষতি কোন পর্যায়ে তা বলা যাচ্ছে না। তিনি এ অবস্থায় জমে যাওয়া পানি নিষ্কাশনে কৃষককে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন।

    ২৪ ঘণ্টা/আবরার

  • বোয়ালখালীতে মৃত প্রবাসীর ভূয়া ওয়ারিশ, প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের টাকা হাতানোর চেষ্টা

    বোয়ালখালীতে মৃত প্রবাসীর ভূয়া ওয়ারিশ, প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের টাকা হাতানোর চেষ্টা

    ২৪ ঘণ্টা বোয়ালখালী প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে মৃতের ভূয়া ওয়ারিশ সেজে প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছেন কধুরখীলের ইউনিয়নের মোক্তার হোসেন টিপু নামের এক ব্যক্তি।

    গত বছরের ৮ ডিসেম্বর কধুরখীল ইউনিয়নের আবদুল নবী মিস্ত্রি বাড়ির ওমান প্রবাসী মো.ইউছুপ মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রেখে যান।

    ইউছুপের মৃত্যুর পরদিন পার্শ্ববর্তী বাড়ি আবদুল লতিফ মিস্ত্রির বাড়ির হাফিজুর রহমানের ছেলে টিপু (৩০) মৃত প্রবাসীর স্ত্রী জাহেদা বেগমের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে ইউছুপের পাসপোর্টটি কিনতে চান। এতে ইউছুপের পরিবার প্রথমে অস্বীকৃতি জানালেও পরবর্তীতে তা ইউছুপ লোভ দেখিয়ে তা হাতিয়ে নেন।

    এরপর টিপু আবেদন করেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডে মৃত্যু পরবর্তী সরকার ঘোষিত ৩ লাখ টাকার মৃত্যু দাবি। তাতে তিনি নিজেকে মৃত প্রবাসী মো. ইউছুপ মিয়ার একমাত্র ওয়ারিশ দাবি করেন এবং এতদ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করেন।

    চলতি বছরের গত ১৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ৩শ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সর্বশেষ টাকা প্রাপ্তির ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর নিতে আসেন স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে।

    তাতে চেয়ারম্যান সব কাগজপত্র যাচাই করতে গিয়ে সন্দেহ হলে স্বাক্ষর না করায় টিপু চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল সই দিয়ে তার ব্যাংক স্টেটম্যান্টসহ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জমা দেন।

    তিন লাখ টাকা প্রাপ্তির চুড়ান্ত পর্যায়ে এসে ঘটে বিপত্তি। মৃতের বাড়ির ঠিকানা আবদুল ‘নবী’ মিস্ত্রি ও মৃতের একমাত্র ওয়ারিশ টিপুর বাড়ির ঠিকানা আবদুল ‘লতিফ’ মিস্ত্রি বাড়ি উল্লেখের কারণে।

    বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের নজরে আসলে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে তদন্তে বেরিয়ে আসে ‘থলের বিড়াল’। স্থানীয়রা জানান, টিপু প্রবাসী মৃত ইউছুপের পুত্র কিংবা আত্মীয় স্বজন কেউ নন।

    এ বিষয়ে মৃত প্রবাসীর একমাত্র ভূয়া ওয়ারিশ দাবি করায় টিপুর বিরুদ্ধে গত ১৭সেপ্টেম্বর বোয়ালখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রবাসীর ছেলে মো. আসিফ।

    অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, মৃতের ওয়ারিশ সেজে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে মৃত প্রবাসীর টাকা হাতিয়ে নিতে চেয়েছিলো ইউছুপ। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আজম শেফু বলেন, টিপু আমার স্বাক্ষর জাল করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে কাগজপত্র জমা দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি।

    তিনি বলেন, টিপুর বিরুদ্ধে এরকম জালিয়াতির আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে। টিপু মৃত প্রবাসী ইউছুপ মিয়ার পুত্র নয় এবং একই বাড়িতেও তার বাড়ি নয়। তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।

    ২৪ ঘণ্টা/পুজন/রাজীব

  • থেমে নেই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের হয়রানি;লক্ষ্মীপুরে পাসপোর্ট অফিসে দালাল ছাড়া পাসপোর্ট হয় না

    থেমে নেই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের হয়রানি;লক্ষ্মীপুরে পাসপোর্ট অফিসে দালাল ছাড়া পাসপোর্ট হয় না

    অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : বৈশ্বিক মহাদুর্যোগ করোনাকালীন সময়েও থেমে নেই লক্ষীপুরের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অনিয়ম ও দুর্নীতি।

    অনুসন্ধানে জানা গেছে -দালাল ছাড়া কোনভাবেই ব্যক্তি উদ্যোগে পাসপোর্ট করা যায়য় না। অসম্পূর্ণ তথ্য, ফরম কাটাছেঁড়া, হাতের লেখা ভালো নাসহ নানা খুঁত দেখিয়ে ব্যক্তি উদ্যোগে আসা পাসপোর্ট গ্রহীতাদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

    এতে করে হয়রানি হচ্ছে পাসপোর্ট কাঙ্খীরা। বৈদেশিক রেমিটেন্স যোদ্ধাদের পাসপোর্ট রিনিউতেও পোহাতে হচ্ছে নানা দুর্ভোগ। দিনের-পর-দিন ধর্ণা দিয়েও কাজ হচ্ছে না এইসব রেমিটেন্স যোদ্ধাদের। সকালে এসে সারাদিন অপেক্ষা করে সন্ধ্যায় ফিরতে হয় শুকনো মুখে।

    আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস লক্ষ্মীপুরের নৈশ প্রহরী থেকে আনসার পর্যন্ত পাসপোর্ট দালালীতে সক্রিয়। জানা গেছে উপসহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম নিজেই টাকা ছাড়া আবেদন ফরম সাক্ষর করেন না। যেসব দালালের কাছ থেকে এই কর্মকর্তা উপঢৌকন গ্রহণ করেন, সেসব দালালের মাধ্যমে আসা আবেদন ফরমে গোপন সংকেত দেয়া থাকে। সেগুলোতে তিনি নির্দ্বিধায় স্বাক্ষর করেন।

    দালাল বেষ্টিত আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস লক্ষ্মীপুর। উপসহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম যেসব দালালের আবেদন ফরম নির্দ্বিধায় স্বাক্ষর করেন তারা হলেন- পাসপোর্ট অফিসের পরিচ্ছন্নতাকর্মী বাবুল, আনসার সদস্যদের মধ্যে পি সি জসিম ও সাইফুল। রায়পুরের দালালদের মধ্যে হিমাংশু, সোহেল, কালা অহিদ। রামগঞ্জের দালালদের মধ্যে সাইফুল, রাব্বানী, বিল্লাল, গৌতম, মোহাম্মদ।কমলনগরের দালাল অনিমেষ ও আজাদ। চন্দ্রগঞ্জের দালাল ফয়েজ। মান্দারীর দালাল হারুন। দিঘলির দালাল আনোয়ার। লক্ষ্মীপুর সদরের দালাল কাশেম, আরিফ, আবদুল খালেক।

    এরা বিভিন্ন স্থান থেকে পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের সংগ্রহ করে নির্ধারিত ফি’র চেয়ে দুইগুণ তিনগুণ বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়। পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা ঝামেলামুক্ত নির্দ্বিধায় সহজে পাসপোর্ট পাওয়ার আশায় দালালের খপ্পরে পড়ে।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দালাল বলেন -‘আমরা বিভিন্ন রেটে পাসপোর্ট করি। এতে নির্ধারিত ফি’র বাহিরেও টাকা নিতে হয় গ্রাহকের কাছ থেকে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন -‘সাড়ে ৫ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৯ হাজার, ১০ হাজার সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নিই। গ্রাহক দ্রুত চাইলে আমরাও খরচ সেভাবে নিই।

    পাসপোর্ট প্রত্যাশী মহাদেবপুর থেকে আসা মোঃ শাহীন বলেন -‘৯ মাস আগে আমি পাসপোর্ট আবেদন জমা দিয়েছি এখনো পাইনি। এর মাঝে বহুবার অফিসে গেছি, কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি।’

    আরেক পাসপোর্ট প্রত্যাশী সিএনজি চালক আবুল হোসেন বলেন-‘ আমার ছেলের জন্য ১৫ হাজার টাকায় আনসার সাইফুল ইসলামকে দিয়ে পাসপোর্ট করেছি এই করোনার ভেতরে।’

    আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস লক্ষ্মীপুরের উপসহকারী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন -‘আমি ও আমার অফিস দালালমুক্ত, আমার অফিসে দালালের প্রবেশ কড়াকড়ি ভাবে নিষিদ্ধ।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন- ‘অফিসে কোন টাকা পয়সা লেনদেন হয় না। এটা আমি বিলবোর্ড আকারে তৈরি করে ঝুলিয়ে রেখেছি।’

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • গ্রাম্য সালিশী ব্যবস্থা বিলুপ্তির পথে

    গ্রাম্য সালিশী ব্যবস্থা বিলুপ্তির পথে

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃএক সময়ের গ্রামের সালিশ ও রাজনীতি মনে এলেই মনের মধ্যে ভেসে ওঠে সুশীতল ছায়া ঘেরা কোনো দৃশ্যের ছবি। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেই গ্রামীণ সালিশ ব্যবস্থায়ও ঢুকে পড়েছে স্বার্থপরতা, পক্ষপাতিত্ব ও অবৈধ অর্থনৈতিক লেনদেন। আর গ্রামের ছোট খাট ঝগড়া, বিবাদ পারিবারিক দ্বন্ধের বিষয়গুলো সালিশী বৈঠকে সামাধান করা গেলেও এখন তা সমাধান করা যাচ্ছে না। আর এসব  থানা পুলিশ ও আদালত পর্যন্ত গড়াচ্ছে।

    এসব হচ্ছে গ্রাম্য মাতব্বদের কারনে, এতে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আগে চুরি ডাকাতি ও জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের মিমাংসা মাতব্বররাই করতেন। কিন্তু এখন সেটি হয়না। প্রতিপক্ষ আগপাছ না ভেবেই থানায় মামলা করে।আস্তাহীনতার কারণে গ্রাম্য সালিশী ব্যবস্হা বিলুপ্তির পথে।

    আমাদের গ্রামীণ জনপদে ‘ভিলেজ পলিটিক্স’ নামে একটি কথা প্রচলিত আছে। যারা যারা গ্রামে বসবাস করেন অথবা যাদের জন্ম গ্রামে, কিন্তু এখন শহরে বসবাস করেছেন তাঁরা প্রত্যেকেই এই শব্দটির সাথে পরিচিত। ভিলেজ পলিটিক্সের ফাঁদে পড়ে অনেকে নিঃস্ব হয়েছেন এমন কি কাউকে কাউকে গ্রাম পর্যন্ত ছাড়তে হয়েছে। যার প্রমাণ অহরহ রয়েছে।

    এই ভিলেজ পলিটিক্স এর ফাঁদে পরে বহুনারী প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছেন। ভিলেজ পলিটিক্স এর নেপথ্যে সাধারণত গ্রামের কিছু সংখ্যক দুষ্টু লোকেরা থাকেন। তারা এমন লোক যে মারাত্বক অপরাধ করেও ধরাঁছোয়ার বাইরে রয়ে যান। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করেনা। প্রতিবাদ করার সাহস ও পাইনা। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলেই তাকে উল্টো ফাঁদে পড়তে হয়, বিপদে পড়তে হয় প্রতি পদে পদে। যারা এই গ্রাম্য রাজনীতির নায়ক তারা সব সময় সমাজের কাছে ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে চান। অনেক সময় সেই চেষ্টাই তারা সফলও হয়। গ্রামের সকলে তাদের সম্মানের চোখে দেখে। কিন্তু প্রকৃতভাবে ওসব নায়কদের কেউ সম্মানের চোখে দেখেনা। গ্রাম্য রাজনীতিবিদরা নানা ছলচাতুরির মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থের সিদ্ধি লাভ করতে চান। নিজেদের স্বার্থের জন্য তারা সবকিছু করতে পারেন।

    এরা যদি দেখেন, গ্রামের কেউ তার চেয়ে উপরে উঠে যাচ্ছেন বা ধন সম্পদ তার চেয়ে বেশী হয়ে যাচ্ছে তখন তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তাদের প্রতিহত করে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি মুলক মামলা, মুকদ্দমা দিয়ে তার ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেয়। যেভাবেই হোক তাকে সর্বস্বান্ত করার চেষ্টা করে।

    গ্রামে আরো একটি প্রবাদ আছে “চোরকে বলে চুরি কর, আর গৃহস্হকে বলে সজাগ থাক”। এটা ভিলেজ পলিটিশিয়ানরাই করে থাকেন। কিন্তু নিরীহ জনগণ এসব ভূগান্তির মুক্তি চাই।অতএব, যে কোন ষড়যন্ত্র থেকে নিজেকে রক্ষার দায়িত্ব নিজের। কাজেই যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় নিজে সতর্ক থেকে অন্যকে সতর্ক করুণ।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর/গৌতম

    গৌতম চন্দ্র বর্মন
    ঠাকুরগাঁও
    ০১৭৩০৪০২৩৬১

  • অনলাইন এ প্রতারিত হলে কি করবেন?

    অনলাইন এ প্রতারিত হলে কি করবেন?

    ২৪ ঘণ্টা স্পেশাল : মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটার পাশাপাশি ঘরে বসে ইন্টারনেটভিত্তিক অনলাইন শপিং ব্যবসা আমাদের দেশেও এখন খুব পরিচিত হয়ে উঠেছে। দেশের অভিজাত থেকে মধ্যবৃত্ত এমনকি নিম্ন মধ্যবিত্তরা বর্তমানে অনলাইন শপিং মার্কেটপ্লেসগুলোয় ঝুঁকছেন।

    সম্প্রতি বাহারি পণ্য একেবারে ঘরের দরজায় পৌঁছে দেওয়া ক্যাশ অন ডেলিভারি সিস্টেমের কারণে খুব দ্রুত অনলাইন কেনাকাটার গ্রাহক, বিশেষ করে তরুণ গ্রাহকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান সময়ে করোনা পরিস্থিতির কারণে দিন দিন এ ব্যবসা আরো বেড়েছে বহুগুন।

    আবার অনলাইনে শপিং করতে গিয়ে নানাভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অনেকে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে ভুক্তভোগীর সংখ্যাও। অনলাইনে পণ্য কিনে ক্রেতাদের কাছ থেকে সবচেয়ে যে অভিযোগটি বেশি আসছে সেটি হলো ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত ছবির সঙ্গে পণ্যের কোন মিল নেই।

    অনেক অনলাইন ক্রেতাই অভিযোগ করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পেইজ, গ্রুপ ও ওয়েভসাইটে চটকদার বিজ্ঞাপনে যেসব পণ্য দেখানো হয়,অর্ডার করার পর ডেলিভারি করার সময় ক্রেতাদের হাতে পৌছানো হয় নিম্নমানের আরেক পণ্য।

    আবার বিভিন্ন অনলাইন পেজে পণ্যের জন্য অগ্রিম টাকা প্রেরণ করে পণ্য না পাওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। এ ধরনের অভিযোগ বেশি আসছে মোবাইল হ্যান্ডসেট, হাতঘড়ি, ব্লেজার, শাড়ি প্রভৃতি পণ্য নিয়ে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যথাযথ তদারকি না থাকায় এমন প্রতারণার সুযোগ নিচ্ছে কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান।

    কেউ যদি অনলাইনে পণ্য কিনে প্রতারিত হয় সেক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে ব্যবস্থা নিতে পারবেন বলে মন্তব্য করেছেন কয়েকজন আইনজীবী।

    চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবী তপন দাশ বলেন, পণ্য কিনে প্রতারিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়েও দেওয়ানি আদালতে এবং প্রতারণার অভিযোগে ফৌজদারি আদালতে মামলা করতে পারবেন।

    প্রতারিত হলে কিভাবে মামলা করবেন সে বিষয়েও ধারণা দিয়েছেন আরো কয়েকজন আইজীবীর। তারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছে অনলাইনে প্রতারণার শিকার হলে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সাইট এবং কী ধরনের প্রতারণার শিকার হলেন তা সুনির্দিষ্টভাবে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে।

    পরবর্তী সময়ে পণ্য কেনা বা হাতে পাওয়ার পর সেটার রশিদ বা ক্যাশমেমো দিয়ে জেলা জজ আদালতে অথবা মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলা করতে পারবেন।

    আদালত আপনার অভিযোগ যাচাই-বাচাই করবেন। এবং অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দিবেন। যদি আদালতে আপনার অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয় তাহলে আদালত অর্থদণ্ড বা কারাদণ্ড দিতে পারেন অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে।

    এ ছাড়া অনলাইনে পণ্য ক্রয়ের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করা যাবে। অনলাইনে প্রতারিত হওয়ার পর ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করাটা সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ।

    সেক্ষেত্রে আপনি ভোক্তা অধিকারের কার্যালয়ে গিয়ে অথবা ওয়েবসাইটে দেওয়া মেইলের মাধ্যমে অভিযোগ করতে পারবেন। সেই অভিযোগের পরে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর অনলাইন প্রতিষ্ঠান ও অভিযোগকারীর কাছে পোস্টাল রশিদের মাধ্যমে চিঠি পাঠাবেন।

    দুই পক্ষ থেকে শুনানি শেষে অধিদপ্তর ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পেলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা প্রদানের আদেশ দেবে। এ ক্ষেত্রে জরিমানা হিসেবে যে টাকা আদায় করা হবে তার ২৫ শতাংশ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাকে দেওয়া হবে।

    এদিকে অনলাইন প্রতারণায় করণীয় সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে।

    এতে উল্লেখ করা হয়, ফেসবুকে অসংখ্য অনলাইন শপিং পেজ রয়েছে, যেগুলো নানা রকমের চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে লোকজনকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে থাকে।

    এর মধ্যে কিছু পেজ পাওয়া যায় যেগুলো কখনো কখনো এক ধরনের প্রোডাক্ট দেখিয়ে অন্য ধরনের প্রোডাক্ট বা নিম্নমানের প্রোডাক্ট ডেলিভারি দিয়ে থাকে। আবার, কিছু কিছু পেজ পাওয়া যায় যেগুলো প্রোডাক্ট অর্ডারের জন্য অগ্রীম মূল্য পরিশোধ করার পরও কোনো প্রোডাক্টই ডেলিভারি দেয় না।

    এক্ষেত্রে, আপনি যদি তাদের চ্যালেঞ্জ করেন তারা আপনার নম্বর বা অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেবে। এ ধরনের পেজগুলো সাধারণত চালু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমাণের টাকা হাতিয়ে নিয়ে অ্যাকাউন্টটি হঠাৎ করে ডিঅ্যাকটিভেট করে দেয়।

    এক্ষেত্রে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের পরামর্শ : সুপরিচিত বা সুপ্রতিষ্ঠিত অনলাইন শপ ছাড়া অন্য কোন অনলাইন শপ থেকে কেনাকাটার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। এক্ষেত্রে তাদের কাস্টমার রিভিউগুলো ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিতে পারেন। প্রতারণার শিকার হলে বিলম্ব না করে পুলিশকে অবগত করুন।

    প্রতারণার শিকার হলে বিলম্ব না করে পুলিশকে অবগত করার জন্যও বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

    ২৪ ঘণ্টা/আর এস পি

  • ঠাকুরগাঁওয়ে ছাগল পালন করে সফল প্রভাষক শামীম

    ঠাকুরগাঁওয়ে ছাগল পালন করে সফল প্রভাষক শামীম

    ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে দেড় বছর আগে শখের বসে বিশ ’টি ছাগল পালন শুরু করেছিলেন প্রভাষক শামীম আহমেদ। এখন তার খামারে ছাগলের সংখ্যা ১৫০ টি যার বাজার মূল্য প্রায় দের কোটি টাকার ও বেশি।তার বছরে আয় দশ লক্ষ টাকা। তার খামারে দেশি ছাগলের পাশাপাশি রয়েছে বিদেশি প্রজাতির ছাগল। প্রভাষক শামীম আহমেদ এর সফলতা দেখে অনেকেই ছাগলের খামার করতে তার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।

    ঠাকুরগাঁও রোড ১২ নং ওয়ার্ড এলাকায় তার বাসা প্রভাষক শামিম আহমেদ তার কালিতলা এলাকায় পাশেই গড়ে তুলেছেন ছাগলের খামার। অল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় শখের ছাগল পালন এখন তার পেশা। ছাগলকে দেখাশোনা করার জন্য তিনটি লোক আছে। প্রভাষক শামিম আহমেদ তিনটি লোককে বেতন দিয়ে রাখা হয়। সে ছাগল দেখাশুনা করে তার তিনটি পরিবার বেঁচে আছে।

    প্রভাষক শামীম আহম বলেন  আমি কলেজের ছাত্রদের লেখাপড়ার পাশাপাশি দশটি ছাগল কিনে লালন-পালন শুরু করি। এক বছরের মধ্যে ছাগল দু’টি  ৮টি বাচ্চা দেয়। ওই ছাগলগুলো বিক্রি করে তা থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় হয়। এরপর সিদ্ধান্ত নেই ছাগলের খামার করার। এরপর নিজেই নিজ উদ্যোগে কারো পরামর্শ না নিয়ে ব্লাক বেঙ্গল প্রজাতির ছাগল কিনে ম্যাচিং পদ্ধতিতে খামার গড়ে তোলেন। এখন খামারে চার প্রজাতির ১৫০টি ছাগল রয়েছে। প্রভাষক শামিম আহ্মেদ কোন ট্রেনিং ছাড়াই ছাগল পালন পালন করছে।

    তিনি বলেন, ‘আমি নিজেই ছাগলের খাওয়ানো পরিচর্যা থেকে শুরু করে ছাগলের সবকিছু দেখাশুনা করে থাকি। তবে এ কাজে আমার পরিবারের লোকজনও সহযোগিতা করে। এছাড়াও বাড়ির পাশের পতিত জায়গায় আবাদ করেছেন হাইড্রোপ্রোনিক ঘাস (মাটি ছাড়া ট্রেতে আবাদ করা ঘাস)। যা ছাগলের জন্য উৎকৃষ্টমানের খাবার সেই ঘাস দিয়েই ছাগলের খাবারের বেশিরভাগ চাহিদা মেটাচ্ছেন।’

    তিনি আরও জানান, এই একটি মাত্র প্রাণী যার বছরে দু’বার প্রজনন ক্ষমতা রয়েছে। প্রতিবার প্রজননে একাধিক বাচ্চা দেয়। রোগ-বালাইও কম হয়। বছরে একবার পিপিআর, গডপক্স ভ্যাকসিন দিলেই আর কোনও ওষুধ লাগে না। তাই অল্প খরচে বেশি আয় করা সম্ভব। যেখানে একটি বিদেশি গাভি পালন করলে প্রতিদিন ৩০০ টাকার খাবার খায়। আর সেখানে ৩০০ টাকা হলে প্রতিদিন ৩০টি ছাগলকে খাওয়ানো যায়। ছাগলের খাদ্য হিসেবে খাওয়ানো হয় গম, ভুট্টা ও ছোলা বুটের গুড়ো সেই সঙ্গে সয়াবিন ও খড়ের ছন। যা ছাগলের জন্য খুবই পুষ্টিকর। এছাড়াও দেশের বাজারে ছাগলের বেশ চাহিদার পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ ভারতেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই ছাগল রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করা সম্ভব।

    প্রভাষক শামীম আহমেদ বলেন, ‘আমার ছাগলের খামার দেখতে প্রতিদিন লোকজন আসছেন। তারা আমার কাছে এ সম্পর্কে ধারণা ও নানা ধরনের পরামর্শ নিচ্ছেন। তারাও ছাগলের খামার গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।’

    খামার দেখতে আসা ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ছাগলের খামার গড়ে স্বাবলম্বী হওয়ার খবর শুনে খামারটি দেখতে এসেছি। এছাড়াও বাজারে ছাগলের চাহিদা বেশ রয়েছে ও দাম ভালো রয়েছে তাই ছাগল পালনে ভালো লাভবান হওয়ায় তার কাছ থেকে খামারের বিভিন্ন পরামর্শ নিলাম আমিও তার মতো ছাগলের খামার গড়ে তুলবো।’

    ঠাকুরগাঁও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সুত্রে বলেন, ছাগল পালন করে মোটামুটিভাবে সফল হয়েছেন প্রভাষক শামিম আহমেদ। কিন্তু তিনি আমাদের কাছে কোন পরামর্শ নেন নাই।  পরামর্শ নিলে আমরা নিয়মিত তার ওই ছাগলের খামার পরিদর্শনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সব ধরনের পরামর্শ দিব। এখন অনেকেই ছাগলের খামার গড়ে তুলতে পরামর্শের জন্য আমাদের কাছে আসছেন। তাদেরকে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর/গৌতম

  • ব্যতিক্রম মানবসেবক/প্রতিদিন পাগলের মুখে খাবার তুলে দেন সীতাকুণ্ডের আবু তাহের

    ব্যতিক্রম মানবসেবক/প্রতিদিন পাগলের মুখে খাবার তুলে দেন সীতাকুণ্ডের আবু তাহের

    ২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ। কামরুল ইসলাম দুলু, সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি ।। 

    রাস্তায় হাঁটতে, চলতে-ফিরতে কত পাগলই তো আমরা দেখি। তাকে নিয়ে ভাবা তো দূরের কথা, অনেকে দ্বিতীয়বার তাকাতেই সংকোচ বোধ করে।

    অথচ একবারও ভাবি না, সে-ও একজন মানুষ। তার প্রতি কি এ সমাজের কোনো দায়িত্ব নেই ? আমাদের কাছে হয়তো বা নেই; কিন্তু সমাজের দু-একজন মানুষ আছেন, যাঁরা এদের নিয়েও ভাবেন। তাঁদেরই একজন সীতাকুণ্ডের ব্যতিক্রমী মানব সেবক মোঃ আবু তাহের (২৯)।

    তিনি উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের নতুন পাড়া গ্রামের আবদুল হামিদের পুত্র। শুধু পাগল নয়, সমাজের অবহেলিত কিংবা বিপদগ্রস্থ যেকোন মানুষের জন্য কিছু করতে পারাটাকে পরম সৌভাগ্য মনে করেন নিঃস্বার্থ এ যুবক।

    নিজের প্রয়োজনে কেউ ডাকলে ভোর কিংবা রাত দুপুরে কিছু যায় আসে না। দ্রুতই ছুটে যান সাহায্য প্রার্থী ব্যক্তিটির কাছে।

    দেশে করোনা ভাইরাস জনিত লকডাউন শুরু হবার পর থেকে নিয়মিত পাগলদের সেবা, করোনা আক্রান্ত রোগিদের বাঁচাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে যাওয়াসহ তার বেশ কিছু ব্যতিক্রমী সেবামূলক কাজ সীতাকুণ্ডের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের দৃষ্টি কেড়েছে।

    তাহেরকে দেখে খুশিতে মেতে উঠে পাগলেরাও ! কারণ, তারা জানে ইনিই একমাত্র মানুষ যে নিয়মিত তাদের মুখে খাবার তুলে দেন। পরম আপনজনের মত সেবা করেন। খেতে দেন, চিকিৎসা প্রদানের চেষ্টা করেন। তাইতো যুবকটিকে কাছে পেলে ছুটে আসে পাগলের দল!

    দিনের পর দিন নিজের ঘরে রান্না করে পাগলদের খাওয়াতে খাওয়াতে একসময় তাদের অতি প্রিয়জন হয়ে গেছেন তাহের।

    কোনো কোনো খোলা বারান্দায় পাগল অবস্থান করছে তার সন্ধান নিয়ে সেখানেই ছুটে যাচ্ছেন খাবার নিয়ে। অনতিদূরে শরীরে মল-মূত্রের গন্ধ নিয়ে শুয়ে থাকা পাগলকে ঘুম থেকে ডেকে তুললেন। এই সব পাগলসেবা দেখতে অনেকে ভিড়ও করছেন।

    পাগলরা কোনো না কোনো বাবা-মায়ের সন্তান। তাদের শরীরে থাকে না লজ্জা নিবারণের পোশাক। শরীরে মল- মূত্রের গন্ধে কেউ কাছে আসতে চায় না, প্রতিনিয়ত খাওয়া, গোসল,কাপড় পরিধানসহ কিছুই করতে পারে না তারা।

    এসব পাগলদের কাছে পরিচয় জানতে চাইলে কিছু বলতে পারে না। তাই আমি এসব পাগল ও অসহায়দের একটু সেবা করছি মাত্র। পাগল সেবার মাঝেই বাকি জীবনটা কাটানোর আশা প্রকাশ করেন তাহের।

    ” জনসেবা জনকল্যাণে আমরা” নামে তাহেরের রয়েছে একটি সেবামুলক সংগঠন। সেই সংগঠনের মাধ্যমেও তাহের গরীব, এতিম ও অসহায় মেয়ের বিবাহের ব্যবস্থা করে থাকেন।

    মানবতাবাদী যুবক তাহের বলেন, এই উপজেলায় আনুমানিক ৭০-৮০ জন পাগল আছেন। লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাবার পর এই পাগলগুলো খাবারের অভাবে ধুকছিলেন।

    তাই তিনি স্ত্রী রোজিনা আক্তারকে বলে তাদের জন্য খাবার রান্না করিয়ে ভাড়া গাড়ি নিয়ে সবার কাছে গিয়ে খাবার পৌঁছে দিতেন। এভাবে গত প্রায় চার মাস পাগলদের খাবার দিতে দিতে অনেক পাগল এখন তাকে দেখে চিনে গেছে।

    তিনি জানান, ‘মানবিক ও সামাজিক কাজগুলো সরকারের একার নয়। সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা সবাই এগিয়ে এলে আর একজন মানসিক ভারসাম্যহীনও রাস্তায় পড়ে থাকবে না।

    ২৪ ঘণ্টা/ দুলু/ রাজীব প্রিন্স

  • কর্ণফুলী নদীর মাঝখানে অবৈধ বরফকল

    কর্ণফুলী নদীর মাঝখানে অবৈধ বরফকল

    আলীউর রহমান : কর্ণফুলী নদীর মাঝখানে অবৈধ বরফকল তৈরি ও গুদাম নির্মান করেছে সোনালী যান্ত্রিক মৎসজীবি সমবায় সমিতি।কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর মাঝ পিলার বরাবর নদীর মাঝখানে উক্ত স্থাপনা নির্মান করা হয়।

    হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা, জেলা প্রশাসন, ভূমি অফিসের নোটিশ কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে করোনার সুযোগে বরফকলটি চালু করতে সম্প্রতি নতুন করে কাজ শুরু করা হয়।

    জানা যায়, কর্ণফুলী নদীর শাখা রাজাখালী ও চাক্তাই খালের মোহনার ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ২৬৩ বর্গফুট জেলা প্রশাসনের খাস জায়গা বন্দরের দাবী করে যান্ত্রিক মৎসজীবি সমবায় সমিতি নামের সংগঠনের নামে মাছের আড়ৎ স্থাপন করা হয়।

    অবৈধভাবে গড়ে উঠা মাছের আড়ৎ সংলগ্ন কর্ণফুলী নদী দখল করে ২০০০ বর্গফুটের একটি বরফ কল আরো ২০০০ বর্গফুটের একটি গুদাম স্থাপন করা হয়।

    অবৈধ বরফকলটির নির্মান কাজ বন্ধ করতে পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, রিট আবেদনকারী এডভোকেট মনজিল মোর্শেদ চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার, সিডিএ চেয়ারম্যান, বন্দর চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

    পরিবেশ অধিদপ্তর পরিচালক বরাবরে হাইকোর্টের রিট মামলার রেফারেন্সসহ উক্ত স্থাপনা বন্ধে সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়ে ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল পত্র দেয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরীর পরিচালক ২৩ এপ্রিল ২০১৮ সালে সোনালী যান্ত্রিক মৎসজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদককে পরিবেশ অনুমতি ব্যতিত জলাশয় ভরাট করার অপরাধে পরদিন ২৪ এপ্রিল শুনানীতে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে রহস্যজনক কারণে উক্ত পত্র এবং নোটিশের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়।

    প্রশাসনের নিরবতার সুযোগে বরফ কলের পাশে তিন হাজার বর্গফুটের আরেকটি গুদাম তৈরি করা হয়। মৎস বন্দর বরফ কল ও গুদাম স্থাপনার কারণে ঐ এলাকায় ৯০০ ফুট দীর্ঘ কর্ণফুলী নদী ৫০০ ফুট হয়ে খাল হয়ে গেছে।

    এই বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরীর পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নুরী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি দুই একদিনের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

    সোনালী যান্ত্রিক মৎসজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক সরকার বাবুল বলেন, এইমাত্র আড়ৎ থেকে ফিরলাম। এক ঘন্টা পরে আপনার সাথে এই বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলবো।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর

  • বোয়ালখালীতে আজিমের পেঁপে বাগান উৎসাহ দেখাচ্ছে তরুণদের

    বোয়ালখালীতে আজিমের পেঁপে বাগান উৎসাহ দেখাচ্ছে তরুণদের

    পূজন সেন, বোয়ালখালী প্রতিনিধি : চলমান বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালে প্রতিদিনই আসছে কোনো না কোনো দুঃসংবাদ। জীবনধারায়ও এসেছে পরিবর্তন। তাই বলে রুদ্ধ হয়ে আসা জীবনযাত্রায় বসে থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় অপচয় করার লোক নন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের আমীর হোসেনের ছেলে মো. আজিম। তিনি সরকারি চাকুরীজীবি।

    গত ৩ মাসে আগে উপজেলার পোপাদিয়া ইউনিয়নের আকলিয়া মৌজার কানুনগোপাড়া-শ্রীপুর বুড়া মসজিদ সড়কের পাশে থাকা নিজের ১০ শতক জমিতে করেছেন পেঁপে বাগান। এছাড়াও বাগানে বেগুনসহ নানান শাক-সবজির পাশাপাশি রোপণ করেছেন বিভিন্ন জাতের লেবু, কলা, পেয়ারা, আম গাছ। তার সবজি বাগানে উৎপাদিত ফসল পরিবার পরিজনের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি পাড়া প্রতিবেশীদের মাঝেও বিলি যাচ্ছেন তিনি।

    মো.আজিম জানান, গত মার্চের মাসে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে। ওই সময়ে সড়কের পাশে অনাবাদি পড়ে থাকা নিজের ১০ শতক জমিতে শখের বশে বাগান করার পরিকল্পনা মাথা আসে। যেই ভাবনা ওই শুরু। অথচ উপজেলা যাতায়াতের প্রধান সড়কের পাশে হওয়ায় পরিত্যক্ত ওই জায়গায় গাড়ীর গ্যারেজ গড়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন অনেকেই। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে বাগান গড়ে তুলেন তিনি।

    তিনি বলেন, ১০ শতক জমিতে উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল ১শত পেঁপে চারা রোপণ করেছি। বর্তমানে প্রতিটি পেঁপে গাছে মণের ওপরে ফলন এসেছে। অন্যান্য শাক-সবজি পরিবার, পরিজন ও পাড়া প্রতিবেশীর মাঝেও বিতরণ করেছি। এতে এক ধরণের তৃপ্তি রয়েছে। ভবিষ্যতে সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে আরও ব্যাপক আকারে পেঁপে বাগান গড়ার কথা জানান তিনি।

    সাপ্তাহিক সরকারি বন্ধের দিন নিয়মিত বাগানে সময় দিয়ে বাগানের পরিচর্যা করেন তিনি এখন। ইতিমধ্যে কাঁচা পেঁপে কিনতে আগ্রহ দেখিয়ে যোগাযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা। পেঁপে বিক্রি করে তিনি লাভবান হবেন বলে আশাবাদী মো.আজিম।

    একই এলাকার বাসিন্দা শাহাদাত বলেন, আজিম শিক্ষিত যুবক, সরকারি চাকুরীও করেন। বাগান করার কথা দূরে থাক, এখনকার দিনের ছেলেমেয়েরা গ্রামের বড় হলেও চাকরী পেলে শহরে বাসা নিয়ে চলে যায়। তবে আজিম ব্যতিক্রম। সে বাগানে সবজি উৎপাদন করছে। আমরাও তাকে নানাভাবে সহযোগিতা করছি। আজিমের পেঁপে চাষ দেখে আশেপাশের অনেকেই এখন অনাবাদি পরিত্যক্ত জমিতে পেঁপে চাষের আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

    আজিমের বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, সারি সারি পেঁপে গাছ। প্রতিটি গাছে ঝুলছে ছোট বড় অসংখ্য কাঁচা পেঁপে।

    উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দূর্গাপদ দেব জানান, মাকড়সা ও ছত্রাক ছাড়া পেঁপে বাগানে তেমন কোনো সমস্যা দেখা যায় না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে পুষ্টিগুনসমৃদ্ধ পেঁপে চাষে ভাগ্য বদলে ফেলা যায়।

    তিনি বলেন, এই দুঃসময়ে সকলে আজিমের মতো এগিয়ে আসলে দেশ উপকৃত হবে। এধরণের শাক-সবজি বাগান পরিবারের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হতে পারে।

    ২৪ ঘণ্টা/এম আর