Category: সিলেট

  • বিমানের বর্জ্য থেকে কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার

    বিমানের বর্জ্য থেকে কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার

    কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটের বর্জ্য থেকে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণ উদ্ধার করেছে।

    ২৬ জুলাই (মঙ্গলবার) সকাল ৮টায় কাতারের দোহা থেকে আসা বিমানের ফ্লাইটটির আবর্জনার ট্রলি স্ক্যান করে পরিত্যক্ত অবস্থায় এসব স্বর্ণ পাওয়া যায়। বিমানবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা নাজ্জাসি পারভেজ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

    কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, ১ কেজি ১৬ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের মোট ১০টি বার পাওয়া গেছে। যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি টাকা।

    জে-আর

  • সিলেটের বন্যাদুর্গত ৭ শতাধিক পরিবারে ত্রাণ বিতরণ করলেন এ্যানেল

    সিলেটের বন্যাদুর্গত ৭ শতাধিক পরিবারে ত্রাণ বিতরণ করলেন এ্যানেল

    চটগ্রামের শীর্ষস্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা নাজিম উদ্দিন চৌধুরীর এ্যানেলের নেতৃত্বে দুই দিনব্যাপী সিলেট- সুনামগঞ্জসহ বন্যা কবলিত বিভিন্ন অঞ্চলের ৭০০ পরিবারে পরিবারে ঘরে -ঘরে গিয়ে ত্রাণ বিতরণ করেন নাজিম উদ্দিন চৌধুরী এ্যানেন নেতৃত্বে টিম বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির কর্মকর্তারা।

    দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি অংশহিসেবে দ্বিতীয় দিনের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয় সিলেট শাহজালাল (রাঃ) মাজার প্রাঙণ থেকে, কর্মসূচি শেষ হয় সুনামগঞ্জের বন্যাকবলিত বিভিন্ন উপজেলায় বানভাসিদের জন্য ৭শতাধিক পরিবারের ১০ দিনের খাবার বিতরণের মধ্যদিয়ে।

    দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম উপলক্ষে সুনামগঞ্জে সংক্ষিপ্ত এক সভায় সভাপতিত্ব করেন, বাওসোর স্থায়ী কমিটির সদস্য ত্রাণ কমিটির আহবায়ক হাফেজ ক্বারী আমান উল্লাহ দৌলত।

    এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাজিম উদ্দিন চৌধুরী এ্যালেন বলেন, কারো বাহবা কিংবা হাত তালি পাওয়ার জন্য নয় বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে আমরা চট্টগ্রাম থেকে সিলেট এসেছি। মানবতার ডাকে সাড়া দিতে। দেশের যে কোন দুর্যোগে সবার আগে এগিয়ে আসবে বাংলাদেশে ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ইনশাআল্লাহ।

    এতে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর এম আওলাদ হোসাইন, সাংবাদিক মোহাম্মদ আলাউদ্দীন, সাংবাদিক এম এ তৈয়ব, অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশের সভাপতি আদনান এলাহি তুহিন, বঞ্চিত নারী ও শিশু অধিকার ফাউন্ডেশন এর মহাসচিব মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ পারভেজ, সাকিল আল মানুন, ফরিদ উদ্দিন,দিদারুল আলম দিদার, মোহাম্মদ ইমরান প্রমুখ।

  • ৬০০ বর্নাত্য পরিবারকে ত্রাণ দিল “আমরাই কিংবদন্তী ফাউন্ডেশন”

    ৬০০ বর্নাত্য পরিবারকে ত্রাণ দিল “আমরাই কিংবদন্তী ফাউন্ডেশন”

    “এস এস সি ২০০০ ও এইচ এস সি ২০০২” সালের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন “আমরাই কিংবদন্তী ফাউন্ডেশন” সুনামগঞ্জের বন্যার্তদের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও খাবার বিতরণ করেছে।

    গত শুক্রবার (২৪ জুন) ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীরা চাল-ডালসহ ১৫ রকমের প্রায় ৯ টন নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও খাবার প্রায় ৬০০ পরিবারের মাঝে বিতরণ করে সুনামগঞ্জ সদর’স্থ গোবিন্দপুর, লালপুর ও রঙ্গারচর গ্রামে।

    এসময় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষগুলোর পাশে আরো সুসংগঠিত হয়ে পাশে থাকার বিষয়ে আয়োজকরা ঐক্যমত পোষন করেন এবং শীগ্রই উত্তরাঞ্চলের বন্যা প্লাবিত জেলায় সহায়তা প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

    “মানবতার কল্যাণে কিংবদন্তী সবখানে” এই নীতিতে আমরাই কিংবদন্তী ফাউন্ডেশন এর কার্যক্রম চলমান আছে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে।

    আমরাই কিংবদন্তী ফাউন্ডেশন আগেও সামাজিক দায়বদ্ধতা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছিল; তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে; কোভিড-১৯ কালীন বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ, দেশ জুড়ে পরিচ্ছন্নতা ও জনসচেতনতা, প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদান ও পরিবহন সুবিধা নিশ্চিতকরণ, ফ্রি হেলথ ক্যাম্প, অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ ও খাবার বিতরণ, বৃদ্ধাশ্রমে চিকিৎসা ও খাবার সরবরাহ এবং রক্তদান কর্মসূচীসহ বিবিধ কার্যক্রম।

    এখানে উল্লেখ্য যে; “আমরাই কিংবদন্তী ফাউন্ডেশন” এস এস সি ২০০০ ও এইচ এস সি ২০০২ সালের প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, যা ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যৌথ মূলধনী কোম্পানী ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর হতে নিবন্ধিত হয়। এছাড়া ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপ “এস এস সি ২০০০ ও এইচ এস সি ২০০২ (আমরাই কিংবদন্তী)” ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে যাত্রা শুরু করে, যার বর্তমানে সদস্য সংখ্যা প্রায় ৪৬০০০ হাজার।

  • সুনামগঞ্জে তীব্র ঢেউ আছড়ে পড়ছে হাওরপাড়ে

    সুনামগঞ্জে তীব্র ঢেউ আছড়ে পড়ছে হাওরপাড়ে

    সিলেট প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার উপজেলাগুলো বন্যার পানিতে তালিয়ে থাকায় হাওরের তীব্র ঢেউ আছড়ে পড়ছে গ্রামগুলোতে। পানি বেড়ে যাওযায় বৃষ্টি সাথে বাতাস পেলেই শুরু হয় ঢেউ। ঢেউয়ের তাণ্ডবে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মধ্যনগর, তাহিরপুর, ধর্মপাশা, দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জ উপজেলার হাওরপাড়ের ঘরবাড়ি। ঢেউয়ের আঘাতে ভেঙে পড়েছে ঘরবাড়ি, ঢেউয়ে ভাসিয়ে নিয়েছে শত শত ঘরসহ ধান ও গরুর খড়।

    সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওরপারের ঠাকুরহাটি গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাসনাত বলেন, ঢেউয়ে আমার বসতভিটা ভেঙে গেছে এবং শতাধিক মণ ধান ভেসে গেছে।

    মাটিয়ান হাওরপারের রতনশ্রী গ্রামের তমিম হোসেন বলেন, ঢেউয়ে ঘর ভেঙেছে, তাই বাড়ি ছেড়ে স্বজনের বাড়িতে আশ্রয়ে আছি। মধ্যনগরের নয়াবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া কানন সরকার বলেন, আমার ধান, চাল, কেতা বালিশ ও ঘরে থাকা সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। পরনে থাকা ভেজা কাপড়ে এসে গ্রামের স্কুলে আশ্রয় নিয়েছি।

    তাহিরপুর উপজেলার সোহালা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরোয়ার লিটন বলেন, হাওপাড়ের মানুষদের পানির সাথে যুদ্ধ করার সক্ষমতা আছে, তবে এবার বন্যার পানি অনেক বেশি হয়েছে। এখন যদি টেউ হয় তাহলে বড় ধরণের ক্ষতি হবে হাওপাড়ের মানুষদের।

  • প্লাবিত এলাকায় চরম মানবিক বিপর্যয় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে বানভাসি মানুষ

    প্লাবিত এলাকায় চরম মানবিক বিপর্যয় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে বানভাসি মানুষ

    আমাদের ঘরবাড়ি এখনও পানিতে ডুবে আছে। সিলেট প্রতিনিধিঃ পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে, যা ছিল সবকিছু পানি নিয়ে গেছে। না খেয়েই দিন পার করছি। সাহায্য-সহযোগিতায় নিয়ে কেউ আসছে না, পানি আরও কয়েকদিন থাকবে। কিভাবে দিন যাবে ভেবে পাচ্ছিনা। গত ১০০ বছরেও এত পানি এলাকার কেউ দেখেনি। 

    রবিবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিলাজুর গ্রামের এরশাদ মিয়া ও আব্দুল কাইয়ুম এভাবেই নিজেদের কথা জানিয়েছেন।

    জলযানের সংকটের কারণে সিলেটের বন্যাদুর্গত সব জায়গায় ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।

    ভয়াবহ বন্যায় পুরোপুরি বিপর্যস্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ, তবে রবিবার থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় শনিবার রাতে এসেছে বিদ্যুৎ। তবে নগরের ১০ থেকে ১৫টি এলাকায় পানি না নামায় বিদ্যুৎহীন রয়েছে। পানিবন্দী এলাকায় দেখা দিয়েছে চরম খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। ফলে পানিবন্দী অবস্থায় না খেয়েই দিন পার করছেন অনেক মানুষ।

    এখনও সারাদেশের সাথে বিচ্ছিন্ন সুনামগঞ্জ। জেলার বিভিন্ন উপজেলা সড়ক ও বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে রয়েছে। গত চারদিন ধরে সুনামগঞ্জে নেই বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। কোথায় কোথায় আবার আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা সংকট রয়েছে। পানিবন্দী এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। জেলার প্রতিটি বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। হয়েছে হাঁটু থেকে গলাসমান পানি। এখনো ৪ থেকে ৬ ফুট পানিতে তলিয়ে আছে সুনামগঞ্জ শহর। হাসপাতাল, দোকানপাট, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সব জায়গায় পানি আর পানি। নৌকা ছাড়া যাতায়াতের নেই কোনো সুযোগ। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে বানভাসি মানুষ।

    এদিকে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও বাড়তে শুরু করেছে দুর্ভোগ ও বন্যার রেখে যাওয়া ক্ষতচিহ্ন। তবে এবারের বন্যার পানি ধীরে ধীরে নামছে বলে জানিয়েছেন বন্যার্তরা। বন্যার্তদের উদ্ধারে কাজ করেছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থার সেচ্ছাসেবকরা।

    সরেজমিনে রবিবার দুপুরে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার হাইটেকপার্কের সড়কে বর্নি, তেলিখাল, বিলাজুর, আঙ্গুরাকান্দি গ্রামের মানুষজন অভিযোগ করেছেন- রবিবার পর্য়ন্ত তাদের গ্রামগুলোতে কোনো প্রকার সহায়তা আসেনি। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন কয়েকদিন ধরে। বন্যায় শেষ হয়ে গেছে তাদের ঘরবাড়ি, ধান, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি। পানির স্রোতে ভেসে গেছে নিজেদের ঘর। এখনও অনেকের ঘরবাড়ি রয়েছে পানির নিচে, এসব ঘরবাড়ি আছে কি নাই তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। সবমিলেয়ে বন্যায় কারণে নি:স্ব হয়ে গেছেন তারা। এছাড়াও রবিবার পর্যন্ত সিলেট-সুনামগঞ্জের কোনো কোনো এলাকায় পৌঁছায়নি ত্রাণ সহায়তা। এসব এলাকাতে তৈরি হয়েছে চরম মানবিক বিপর্যয়। অনেকেই না খেয়ে পানিবন্ধী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। টানা চারদিন ধরে পানিবন্ধী হয়ে থাকলেও পাননি কোনো ধরনের সহায়তা। তাছাড়াও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মিলছে না ঠিকমতো খারার।

    বিকেলে সরেজমিনে সিলেট নগরের সোবহানীঘাট, যতরপুর, উপশহর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, মেজরটিলা, সাদাটিকর, তেরোরতন, মাছিমপুর, ছড়ারপাড়, কালীঘাট ও তালতলা, জামতলা, মাছুদিঘীরপাড়, লামাপাড়, বেতেরবাজার, ঘাসিটুলা, বাগবাড়ি, শেখঘাট, টিকরপাড়া, কুয়ারপার, কাজিরবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি দেখা গেছে।

    সিলেট জেলা শহরের সাথে সদর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। প্লাবিত এলাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়েছে পানি। এর আগে গত ১৫ মে থেকে সিলেট নগর ও ১৩টি উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা হয়েছিল। এতে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় জেলা প্রশাসন।

    কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল গ্রামের হান্নান মিয়া জানান, গত ৩দিন ধরে পানিবন্ধী হয়ে আছি, এখনও কেউ ত্রাণ বা কোনো সহায়তা নিয়ে আসেনি। আমাদের বাড়িঘর পানির নিচে, আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।

    বর্নি গ্রামের বাসিন্দা দিলোয়ার জানান- পুরো ঘর ডুবে গিয়েছিল, এখন ঘরের ভেতরে কোমর পানি রয়েছে। আমাদের ধান, গুরুসহ ঘরের যাবতীয় জিনিসপত্র শেষ হয়ে গেছে। তবে আমরা এখনও কোনো সরকারি সহয়োগিতা পাইনি।

    একই উপজেলার আাঙ্গুরাকান্দি গ্রামের মৃত্যুঞ্জয় দাস জানান, গত ৩দিন ধরে হাইর্টেক পার্কের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিবার নিয়ে উঠেছি। আমাদের ঘরবাড়িতে এখন পানি, বার বার বন্যার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। গত বন্যার চেয়ে এবারের বন্যার পানি ৬ ফুট বেশি হবে।

    সিলেট নগরের কাজিরবাজারের ব্যবসায়ী ও শেখঘাটের স্থায়ী বাসিন্দা দিপু আহমদ জানান, গত কয়েকদিন ধরে পানির জন্য ব্যবসা বন্ধ রয়েছে, আমাদের বাসায় নেই বিদ্যুৎ, রয়েছে পানি। চরম ভোগান্তিতে রয়েছি।

    সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় সরকার পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ দিয়েছে। নতুন করে সিলেটের জন্য আরও ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। তবে সমস্যা হচ্ছে, জলযানের সংকটে সব জায়গায় ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না। তবে স্থানীয় প্রশাসন এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে।

  • ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ; বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী, বন্ধ হতে পারে বিদ্যুৎ সরবরাহ

    ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ; বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী, বন্ধ হতে পারে বিদ্যুৎ সরবরাহ

    সিলেট প্রতিনিধিঃ টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় ভয়াবহ বন্যায় পুরোপুরি বিপর্যস্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ। ইতিমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার্তদের উদ্ধারে কাজ করেছে সেনাবাহিনী। দুই জেলার ৮ উপজেলায় সেনাবাহিনীর ৯ টি ইউনিট কাজ করছে।

    শুক্রবার দুপুর থেকে নৌকা দিয়ে প্লাবিত এলাকার বাড়িঘর থেকে পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছেন সেনাবাহিনী সদস্যরা।

    বন্যার পানি সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রবেশ করায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েছে। পানি বাড়লে বন্ধ হয়ে যাবে সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ। তবে কুমারগাঁও বিদ্যুতের গ্রিড উপকেন্দ্র রক্ষা করতে কাজ শুরু করেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। দুপুর ১২টার দিকে গ্রিড উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ বন্ধ করতে জিও ব্যাগ ফেলা হয়।

    সিলেট-সুনামগঞ্জের কোথায় কোথায় ঘরে হাঁটু থেকে গলাসমান পানি ওঠায় অনেকে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন, সেই সাথে পাচ্ছেন না খাদ্যসামগ্রী ও বিশুদ্ধ খাবার পানিও। তৈরি হয়েছে চরম মানবিক বিপর্যয়, বন্যার পানি যত বাড়ছে-সংকটও তত বাড়ছে। এখনও সিলেটের প্রধান নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সেনাবাহিনী বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে পানিবন্দী মানুষের আশ্রয়ের ব্যবস্থা ও বন্যা আক্রান্তদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান। স্পর্শকাতর স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং সীমিত পরিসরে খাদ্যসামগ্রী ও বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করছেন।

    সিলেট সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল হামিদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সিলেটের ৩ উপজেলা ও সুনামগঞ্জের ৫ উপজেলায় সেনাবাহিনী পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধার সহ পাঁচটি কাজে তৎপরতা শুরু করেছে। সিলেটের উপজেলাগুলো হচ্ছে সদর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ, সুনামগঞ্জ জেলার সদর, দিরাই, ছাতক, দোয়ারাবাজার ও জামালগঞ্জ।

    তিনি জানান, সিলেট কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি ওঠে বিদ্যুৎ সরবরাহ হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকটি খাদ্য গুদাম হুমকিতে রয়েছে। এগুলো রক্ষায়ও সেনা সদস্যরা কাজ করছেন। সেনাবাহিনী নিজস্ব নৌকা দিয়ে পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করছে। ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে আরও ‘রেসকিউ বোট’ আনা হচ্ছে। এছাড়াও স্থানীয় লোকজনের নৌকাগুলোও উদ্ধার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিপদের সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও তাদের কাজ করতে পারাকে সেনাবাহিনী গৌরবের মনে করে বলেও মন্তব্য করেন।

    এদিকে বিভিন্ন উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বন্যার্ত মানুষদের ভিড় বেড়েছে। কোথায় কোথায় আবার আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা সংকট রয়েছে। এছাড়াও দুই জেলার বেশিরভাগ স্থানে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। সুরমা নদীর পানি উপচে সিলেট নগরের বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বেড়েছে নগরের পানিবন্ধী মানুষের দুর্ভোগও। নগরে দুর্গন্ধযুক্ত পানির মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও মানুষজন। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন প্লাবিত এলাকার বাসিন্দারা। সব মিলিয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জের লাখ-লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী। সুনামগঞ্জ জেলার সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বৃহস্পতিবার রাত থেকে। এদিকে টানা বৃষ্টি ও পানির ঢল অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সিলেট জেলা শহরের সাথে সদর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। প্লাবিত এলাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়েছে পানি।

    সুনামগঞ্জ জেলার পৌরশহর, দিরাই, শাল্লা, ছাতক, দোয়ারাবাজার, জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর, মধ্যনগরসহ আরও নতুন উপজেলার নতুন নুতন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী আছেন কয়েক লাখ-লাখ মানুষ। সুনামগঞ্জে বন্ধ আছে সরকারি-বেসরকারি অফিসসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এর আগে গত ১৫ মে থেকে সিলেট নগর ও ১৩টি উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা হয়েছিল। এতে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় জেলা প্রশাসন।

    শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে সিলেট নগরের সোবহানীঘাট, যতরপুর, উপশহর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, মেজরটিলা, সাদাটিকর, তেরোরতন, মাছিমপুর, কদমতলি, ছড়ারপাড়, কালীঘাট ও তালতলা, জামতলা, মাছুদিঘীরপাড়, লামাপাড়, বেতেরবাজার, ঘাসিটুলা, বাগবাড়ি, শেখঘাট, টিকরপাড়া, কুয়ারপার, কাজিরবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে পানি দেখা গেছে।

    এসময় নগরের যতরপুর এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, ঘরের ভেতরে ও চারপাশে পানি থাকায় বন্দী হয়ে আছি, ৩দিন ধরে এ অবস্থায় রয়েছি। প্রতিদিন পানি বাড়ছে, ফলে বাসার অনেক জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে। পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়াতে ভোগান্তির শেষ নাই আমাদের।

    পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ৬টার তথ্য অনুযায়ী- সুরমা নদীর দুটি ও কুশিয়ারা নদীর একটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সারি নদের একটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানিও ক্রমশ বাড়ছে বলে পাউবোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

    স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও বন্যাকবলিত মানুষেরা জানিয়েছেন, সিলেট নগরের অন্তত ২০টি এলাকার পাশাপাশি জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, সদর, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ছয় শতাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। চলাচলের জন্য মিলছে না নৌকা। ফলে জরুরি প্রয়োজনে কেউ ঘরের বাইরে বেরোতে পারছেন না।

    বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুপুর ১২টা থেকে জিও ব্যাগ ফেলে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ ঠেকাতে কাজ করছেন। তবে কতক্ষণ প্রতিরোধ করা যাবে তা বলা যাচ্ছে না। পানি আরো বাড়লে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে।

  • আবারও সিলেটে বন্যা

    আবারও সিলেটে বন্যা

    অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলের কারণে এক মাসের ব্যবধানে আবারও সুরমার পানি উপচে সিলেট নগরীতে পানি প্রবেশ করেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সিলেট নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দা।

    হঠাৎ করে আবার বন্যার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অফিসগামী মানুষ, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে।

    সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট নগরীর উপশহর, যতরপুর, মেন্দিবাগ, তালতলা, শেখঘাট, কলাপাড়া, মজুমদার পাড়া, লালদীঘির পাড়সহ অনেক এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

    সিলেট নগরীর দশম শ্রেণির ছাত্রী আফসানা তালুকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক মাসের মধ্যে আবারও বন্যার কারণে আমাদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছে। এমনিতেই গত এক মাসে পড়ালেখা খুব একটা হয়নি। এই মাসে কী হবে তা একমাত্র আল্লাহই ভালো বলতে পারবেন।

    অপরদিকে বারবার পানির নিচে বাসাবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের। শহরাঞ্চলে এমনিতেই জরাজীর্ণ পরিবেশে বেশিরভাগ মানুষের বসবাস, তার ওপর টানা এই বন্যা তাদের ওপর মরার ওপর খাঁড়ার ঘা।

    নগরীর মেন্দিবাগ এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক দেবব্রত রায় দীপন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতমাসের বন্যার ধকল এখনো নগরবাসী কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এর মধ্যে আবারও নগরীতে বন্যার পানি প্রবেশ করায় বেশ উৎকণ্ঠায় আছে পুরো নগরবাসী। এভাবে চলতে থাকলে সুপেয় পানিসহ নানা ধরনের সংকটে পড়তে হবে মানুষকে।

    সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, নগরের কিছু নিচু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। নগরীতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলার মতো পরিস্থিতি এখনো হয়নি। আমরা বিষয়টি মনিটরিং করছি এবং প্রস্তুত আছি। প্রয়োজন হলেই আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হবে। এ সময় তিনি আরও বলেন, নগরে সুপেয় পানির সরবরাহও স্বাভাবিক আছে। ফলে বিশুদ্ধ পানিরও সংকট দেখা দেয়নি।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ বলেন, সিলেটের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। সকালের পর থেকে লুভা ও সারী নদীর পানি কিছুটা কমেছে। কানাইঘাটে সুরমার পানি কয়েক সেন্টিমিটার কমলেও শহরের দিকে সুরমার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে নগরীতে পানি বাড়ছে। টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকলে বন্যার পানি আরও বাড়বে।

    মাসুদ আহমদ রনি/আরআই

  • পারাবত এক্সপ্রেসের আগুন দেড় ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে

    পারাবত এক্সপ্রেসের আগুন দেড় ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে

    মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার উসমানগড় এলাকায় ঢাকা থেকে সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার দেড় ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস।

    শনিবার (১১ জুন) দুপুর ১টার দিকে পাওয়ার সার্ভিসের বগি থেকে ট্রেনে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় দুপুর আড়াইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

    তবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের ট্রেন যোগযোগ এখনো বন্ধ রয়েছে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলন্ত ট্রেনের পাওয়ার সার্ভিসের বগি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন থামালে যাত্রীরা নেমে পড়েন। আগুনে তিনটি বগি পুড়ে যায়। আগুন লাগা তিনটি বগিকে আলাদা করে কর্তৃপক্ষ। সামনে থেকে আটটি বগি ও পেছনের চারটি বগি আলাদা করে ট্রেনের বগিগুলোকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করে কর্তৃপক্ষ। এতে ১২টি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের তিনটি ইউনিট দেড় ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

    মৌলভীবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ হারুন পাশা জানান, ট্রেনে আগুন লাগার খবর পেয়ে প্রথমে কমলগঞ্জের ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে মৌলভীবাজার, কুলাউড়া ও শ্রীমঙ্গল থেকে আরও তিনটি ইউনিট যোগ দেয়। এক ঘণ্টার বেশি সময়ের চেষ্টায় দুপুর আড়াইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখনো হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ট্রেনে যারা দায়িত্বে আছেন তারা ধারণা করছেন এসির কোনো ত্রুটি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

    শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

  • পারাবাত ট্রেনে আগুন, ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগ বন্ধ

    পারাবাত ট্রেনে আগুন, ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগ বন্ধ

    মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বিমানবন্দর এলাকায় পারাবত এক্সপ্রেসের দুটি বগিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১১ জুন) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার শমসেরনগর ইউনিয়নের বিমানবন্দর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

    কমলগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে। এখন পর্যন্ত হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।

    শমসেরনগর স্টেশনের মাস্টার শাখওয়াত হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় ঢাকা-সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। ঘটনাস্থলে কমলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট কাজ করছে। আশপাশ থেকে আরও ইউনিট ডাকা হয়েছে।

  • সিলেটে টিলা ধসে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু

    সিলেটে টিলা ধসে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু

    সিলেটের জৈন্তাপুরে টিলা ধসে একই পরিবারের চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। সোমবার (০৬ জুন) ভোর রাতে উপজেলার ৬ নং চিকনাগুল ইউনিয়নের ঠাকুরির মাটি পূর্ব সাতজনি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

    মৃতরা হলেন- জুবের আহমদ, তার স্ত্রী সুমি বেগম, পাঁচ বছর বয়সী ছেলে সাফি আহমদ ও মা শামীম আরা বেগম।

    জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ঠাকুরির মাটি সাতজনি এলাকায় টিলা ধসে বসতঘরের ওপর পড়ে। এতে ওই ঘরে বসবাসরত একই পরিবারের চারজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। মৃতদের সুরতহালের কাজ চলছে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।

  • সিলেটে দুর্গত এলাকার ৫০০ পরিবার পেল কেএসআরএমের ত্রাণ

    সিলেটে দুর্গত এলাকার ৫০০ পরিবার পেল কেএসআরএমের ত্রাণ

    সম্প্রতি বন্যা কবলিত সিলেটে ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করেছে দেশের অন্যতম ইস্পাত নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম। গত ২৬-৩১ মে বন্যা দুর্গত এলাকার শ্রমজীবী প্রায় ৫০০ পরিবারের কাছে কেএসআরএমের ত্রাণ সামগ্রি পৌঁছে দেওয়া হয়।

    সিলেট বিভাগের বন্যা কবলিত কানাইঘাট, জগন্নাথপুর, গোবিন্দগঞ্জ, দরগাপাশা, সুনামগঞ্জ ও সিলেট সদরের বিভিন্ন দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করা হয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমজীবী মানুষের মাঝে কেএসআরএমের পক্ষে এসব ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করেন সিলেট বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী, সহকারী ব্যবস্থাপক মো. সিরাজুল ইসলামসহ কর্মকর্তারা।

    সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ সময় বলেন, কেএসআরএম দেশের যেকোনো সংকটময় মুহুর্তে শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। সিলেট অঞ্চলে হঠাৎ প্লাবনে বেকায়দায় পড়া শ্রমজীবী মানুষের মাঝে কেএসআরএম ত্রাণ সামগ্রি উপহার দেওয়ার মাধ্যমে সাহায্যের হাত প্রসারিত করেছে। আমাদের এমন মানবিক কর্মকা- আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

  • বন্যায় সিলেটের পাঁচশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢুকেছে পানি

    বন্যায় সিলেটের পাঁচশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢুকেছে পানি

    সিলেট প্রতিনিধিঃ টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট জেলার পাঁচশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার ঢুকেছে পানি। এছাড়াও ২০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। ফলে জেলার অন্তত ৭৫০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

    জানা যায়, বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে কানাইঘাটে ৪২টির মধ্যে ৩৭টি, বিশ্বনাথে ৫১টির মধ্যে ৫টি, জৈন্তাপুরে ৩২টির মধ্যে ১২টি, সদরে ৯৫টির মধ্যে ১৮টি, গোয়াইনঘাটে ৪৮টির মধ্যে ১৮টি ও কোম্পানীগঞ্জে ২৬টির মধ্যে ১৫টি। এছাড়া দক্ষিণ সুরমা ও নগরে আরও ২০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে।

    জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, বন্যার পানি ঢুকে নগরসহ সিলেট জেলার সাড়ে ৫০০শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। তবে সরকারিভাবে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা বন্ধের কোনো নির্দেশনা এখনও আসেনি।

    জেলার শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে।  তারা বলেন, জেলায় ১ হাজার ৪৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে গতকাল বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৪০০টি পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রায় দেড়শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় পানি উঠেছে। এগুলোতেও পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

    জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাখাওয়াত এরশেদ বলেন, যেসব বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে, সেগুলোতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। পানি বাড়ার কারণে নতুন করে আরও প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বন্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। জেলার সব বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা আসেনি। যে বিদ্যালয়গুলোতে এখনও পানি ওঠেনি, সেগুলোকে প্রয়োজনে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।

    জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, পানি বাড়ার কারণে প্লাবিত বিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে। এগুলোতে আপাতত পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। এখনও পানি না ওঠা অনেক বিদ্যালয়েও বন্ধ রয়েছে পাঠদান। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ১৯৯টি ও নগরে ১৭টি বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলার অন্তত ২০টি কলেজ প্লাবিত হয়ে পড়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।