সিলেট প্রতিনিধিঃ বন্যার কারণে গত কয়েকদিন ধরে সিলেট জেলা শহরের সাথে সদর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে সিলেটের ৫৩৬ কিলোমিটার সড়ক। এর মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় ২৫০ কিলোমিটার। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন সিলেট জেলার ১০টি উপজেলার ৬৬টি সড়কে ২৩০ কিলোমিটার। সড়ক ও জনপথ সিলেটের আওতাধীন ৮টি সড়কে ৫৫ কিলোমিটার বন্যা প্লাবিত হয়েছে। এসব রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সিলেট জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের আঞ্চলিক সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানও ভেঙ্গে গেছে।
সিসিক সূত্রে জানা যায়, সিলেট নগরের ৫০০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৪টি ওয়ার্ডের প্রায় ২৫০ কিলোমিটার সড়কে বন্যার পানি উঠে গেছে। এসব সড়কের অনেক স্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সারি-গোয়াইনঘাট ২য় থেকে ১৬তম কিলোমিটার পর্যন্ত ১২ দশমিক ৪০০ কিলোমিটার সড়ক ১ থেকে সাড়ে ৪ ফুট উচ্চতার পানির নিচে তলিয়ে যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।
সিলেট-তামাবিল-জাফলং সড়ক ১ দশমিক ২০ কিলোমিটার ১ থেকে ৩ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। কানাইঘাটের দরবস্ত-কানাইঘাট-শাহবাগ সড়ক ৭ থেকে ২৪ কিলোমিটার পর্যন্ত ১৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার ১ থেকে ৪ ফুট পানিতে তলিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক ৩য় থেকে ৫ম এবং ৮ থেকে ১৩তম কিলোমিটার পর্যন্ত ৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটারে ১ থেকে ২ ফুট পানি উঠেছে। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রশিদপুর-লামাকাজি সড়ক ১৫ থেকে ১৭ তম কিলোমিটার পর্যন্ত ২ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ২ থেকে ৩ ফুট পানির নিচে তলিয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ-ছাতক সড়ক ১ থেকে ১২তম কিলোমিটার পর্যন্ত ১০ দশমিক ২৫ পর্যন্ত ১০ দশমিক ২৫ কিলোমিটারে ১ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় পানিতে তলিয়ে গিয়ে যান চলাবল বন্ধ রয়েছে। শেওলা সুতারকান্দি সড়কে ১ থেকে ৪র্থ কিলোমিটার পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ৫ থেকে ১ ফুট পর্যন্ত পানি উঠে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিমানবন্দর-বাদাঘাট-কুমারগাঁও (টুকেরবাজার) সড়কে ৫ থেকে ৯, ১১ ও ১২তম কিলোমিটারের মধ্যে ১ থেকে সাড়ে ৩ ফুট পর্যন্ত পানি উঠে যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।
এলজিইডি সিলেট সূত্রে জানা যায়, বন্যা কবলিত জেলার গোয়াইনঘাটে ২৭টি সড়কে ৮২ দশমিক ১৩ কিলোমিটার, কানাইঘাটে ১৫টি সড়কে ৩০ দশমিক ৫ কিলোমিটার, জৈন্তাপুর উপজেলার ১১টি সড়কের ৩২ দশমিক ১ কিলোমিটার, সিলেট সদরের ১২টি সড়কে ২১ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার, গোলাপগঞ্জে ১০টি সড়কে ২২ দশমিক ৩ কিলোমিটার, কোম্পানীগঞ্জে ৪টি সড়কে ৩৪ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার, দক্ষিণ সুরমার ৪টি সড়কে সাড়ে ৩ কিলোমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জে ১টি সড়কের দেড় কিলোমিটার, ওসমানীনগর উপজেলায় ১টি সড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটার, বালাগঞ্জে ১টি সড়কে দেড় কিলোমিটার। টাকার অংকে পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পরিমাণ ১৭২ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, সিসিক এলাকার ৫০০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৪টি ওয়ার্ডের প্রায় আড়াইশ’ কিলোমিটার সড়কে বন্যার পানি উঠে গেছে। এসব সড়কের অনেক স্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী এনামুল কবীর বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন সিলেট জেলার ১০টি উপজেলার ৬৬টি সড়কে ২৩০ কিলোমিটার পানিতে তলিয়ে জেলা ও উপজেলা সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। টাকার অংকে পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পরিমাণ ১৭২ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৫৫ কিলোমিটার সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে অনেক স্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।