Category: সিলেট

  • সিলেটে চিকিৎসকের ঘর থেকে কিশোরী’র লাশ উদ্ধার

    সিলেটে চিকিৎসকের ঘর থেকে কিশোরী’র লাশ উদ্ধার

    সিলেট ব্যুরো:: সিলেটের জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ডাক্তার জামিলা খাতুনের বাসা থেকে কিশোরী গৃহপরিচারিকার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে সিলেট নগরের আখালিয়া সুরমা আবাসিক এলাকার ৪নং গলির ৪৩ নং বাসা থেকে পুলিশ ওই কিশোরী গৃহপরিচারিকার লাশ উদ্ধার করে। নিহত কিশোরী জান্নাত আক্তার লিনা (১৪) সিলেট কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বতুমারা গ্রামের আবদুল মালিকের মেয়ে।

    এদিকে, লিনার পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে ডাক্তার জামিলা বলছেন, এটি আত্মহত্যা। জানা যায়, ডাক্তার জামিলা খাতুনের বাসায় থাকতো জান্নাত আক্তার লিনা। প্রায় ৮ বছর ধরে সে ডাক্তার জামিলার বাসায় থেকে পড়ালেখার পাশাপাশি গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করতো। আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ডাক্তার জামিলা খাতুন বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সকাল সাড়ে ১০টার তার মেডিকেল পড়ুয়া মেয়ে তাকে ফোন করে বলেন, লিনা ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে। পরে ঘরের আরও কাজের লোক ও ডা. জামিলার মেয়ে মিলে লিনার দেহ নিচে নামান। বিষয়টি জেনে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার জামিলা খাতুন পুলিশকে খবর দেন এবং তিনিও বাসায় চলে আসেন। পরে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুপুর ১টার দিকে লাশ উদ্ধার করে।

    এদিকে, জান্নাত আক্তার লিনার পরিবারের অভিযোগ লিনাকে মারধর করা হয়েছে। পরে সে মারা গেলে আত্মহত্যা বলে দাবি করছেন ডাক্তার জামিলা ও তার পরিবারের সদস্যরা।
    জান্নাত আক্তার লিনার ভাই আল-আমিন বলেন, আমার বোনের গলায় আঘাতের চিহ্ন আছে। ঘরের কাজে একটু ভুল হলেই তারা আমার বোনকে মারধর করতো। এমন অভিযোগ আমার বোন আগে অনেকবার দিয়েছে। তাছাড়া ডাক্তার জামিলার ছোট ছেলে আমার বোনকে খুব বেশি অত্যাচার করতো।

    আল-আমিন আরও বলেন, আজ সকাল ১১টার দিকে তারা আমাদেরকে ফোন করে বলে আমার বোন আত্মহত্যা করেছে। আমার বোন খুব সহজ-সরল ও খুব ভালো একটা মেয়ে। সে কখনই এমন কাজ করবে না। তাকে হত্যাই করা হয়েছে। এ হত্যার বিচার চাই আমরা। আমরা মামলা দায়ের করবো। এ বিষয়ে ডাক্তার জামিলা খাতুন জানান, আমি আমার সন্তানের মতোই লিনাকে স্নেহ করতাম। তার খালাও আমার বাসায় কাজ করে। সে বলতে পারবে আমার পরিবারের সবাই লিনাকে কত স্নেহ করতো।

    তিনি বলেন, আমার শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নেই। আজ ফজরের নামাজ পরে ওষুধ খেয়ে ঘুমাবার পর ঘুম ভাঙতে একটু দেরি হয়ে যায়। লিনাই আমাকে ডেকে তুলে। ওই আমাকে অফিসের টিফিন রেডি করে দেয় এবং যাবার সময় বাসার গেইট খুলে দিয়ে বিদায় দেয়। অফিসের আসার পর হঠাৎ সাড়ে ১০টার দিকে আমার মেয়ে আমাকে ফোন করে বলে লিনা গলায় ফাঁস দিয়েছে। তৎক্ষণাৎ আমি পুলিশে খবর দেই। তবে পুলিশ যাওয়ার আগে আমার মেয়ে ও বাসার অন্যান্যরা লিনার দেহ নামিয়ে নেয়। তবে কি কারণে সে আত্মহত্যা করতে পারে সেটি বুঝতে পারছি না। এ বিষয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম মিয়া মিঞা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দুপুর একটার দিকে লাশ উদ্ধার করে। ও গলার নিচ দিকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি আত্মহত্যাই। তবে ময়না তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

  • সিলেটে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড

    সিলেটে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড

    সিলেট ব্যুরো: সিলেটে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মমিনুন নেসা খানম এই দন্ডাদেশ প্রদান করেন এবং একই সাথে মামলার একমাত্র আসামী আব্দুল মজিদকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন।

    আদালতে রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জোবায়ের বখত। আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ষ্টেট ডিফেন্স শাহ্ আলম মহিউদ্দিন।

    মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর সিলেটের শাহপরান (র.) থানার পীরেরচক গ্রামে আসামীর ভাড়াটিয়া বাসায় স্ত্রী লিপি বেগমকে দা দিয়ে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে স্বামী আবদুল মজিদ। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ আজ আদালত মামলাটির রায় প্রদান করেন।

    ২৪ঘণ্টা/এন এম রানা/বাপ্পা মৈত্র

  • রায়হান হত্যা: রিমান্ড শেষে পুলিশ কনস্টেবল টিটু কারাগারে

    রায়হান হত্যা: রিমান্ড শেষে পুলিশ কনস্টেবল টিটু কারাগারে

    বাপ্পা মৈত্র,সিলেট ব্যুরো: সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্মম নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদ হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

    বুধবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে তাকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে সিলেট অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (ভারপ্রাপ্ত) বিচারক জিয়াদুর রহমানের আদালতে তাকে হাজির করা হয়।

    গত মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) টিটুর ৩ দিনের রিমান্ড শেষ হয়। এর আগে গত ২০ অক্টোবর পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিনই তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এই মামলায় আরেক কনস্টেবল হারুনুর রশীদকে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই।

    দুপুর আড়াইটার দিকে আদালতের বিচারক কনস্টেবল টিটুকে কারাগারে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন। গত রবিবার (২৫ অক্টোবর) দিত্বীয় দফায় সিলেট অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (ভারপ্রাপ্ত) বিচারক জিয়াদুর রহমানের আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম টিটু চন্দ্রের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ২০ অক্টোবর পুলিশ লাইন্স থেকে টিটুকে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই। অন্যদিকে রায়হান হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত কনস্টেবল হারুন রশিদকে শনিবার ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

    ২৪ঘণ্টা/এন এম রানা

  • সিলেটে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় কিশোর নিহত

    সিলেটে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলায় কিশোর নিহত

    বাপ্পা মৈত্র,সিলেট ব্যুরো: সিলেট দক্ষিণ সুরমা উপজেলার জৈনপুর এলাকায় জহিরুল ইসলাম (১৬) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছেন। গত ২৬ অক্টোবর সোমবার সন্ধ্যায় মাদক ব্যবসায়ীদের হামলার শিকার হন বলে জানা গেছে।

    বুধবার (২৮ অক্টোবর) ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত জহিরুল ইসলাম সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার সিরাই গ্রামের নজরুল মিয়ার ছেলে। পেশায় রং মিস্ত্রির কাজ করত।

    বর্তমানে পরিবার নিয়ে কদমতলী জেসমিন ভিলায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করে। জানা যায়, গত কয়েকদিন আগে জৈনপুর হাওরের বাড়ী এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ফখরুল নিহত জহিরুল ইসলামকে তার সাথে খুঁচরা মাদক ব্যবসায় জড়িত হতে বলে। তখন নিহত জহিরুল ইসলাম ফখরুলকে জানায় আমি এই ব্যবসা করব কেন। আমি রং মিস্ত্রির কাজ করি। আমি এইসব করতে পারব না। পরবর্তীতে এই ঘটনাটি নিহত জহিরুল ইসলাম তার পিতা-মাতাকে জানায়। তখন নিহত জহিরুল ইসলামের পিতা-মাতা জহিরকে এই ব্যবসা করতে নিষেধ করে। কিশোর জহিরুল ইসলাম এই কথাটি জনৈক ব্যক্তির সাথে আলাপ করলে মাদক ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলাম জানতে পেরে জহিরুলের উপর ক্ষেপে যায়।

    গত ২৬ অক্টোবর সোমবার সন্ধ্যা ৭ টায় জহিরুল বাসা থেকে পূজার অনুষ্ঠান দেখতে বের হলে শিববাড়ী এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ফখরুলের সাথে দেখা হয়। এসময় ফখরুলের সঙ্গে চান্দাই তালুকদার পাাড়ার জায়েদ,জৈনপুর ইছমাইল মিয়ার ভাড়াটিয়া উজ্জল, ফখরুলের সম্বন্দি মাসুকসহ আরও কয়েকজন মাদকের ব্যবসায়ী ফখরুলের মাদক ব্যবসার কথা অন্যকে জানানোর জের ধরে জহিরুলের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ফখরুল তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে জহিরকে জৈনপুর হাওর বাড়ী এলাকায় নির্জন স্থানে নিয়ে জহিরুলের শরীরে ইট, পাথর দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক ভাবে জখমপ্রাপ্ত করে রেল লাইনের উপর ফেলে দেয়।

    এসময় পথচারীদের আনাগোনা টের পেয়ে ফখরুল ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয় পথচারীরা ও শিববাড়ী মন্দিরের টহলরহ পুলিশ সদস্যরা আহত জহিরুলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ বিষয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি আখতার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনাস্থলের নাম শুনে মোগলাবাজার থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। পরে মোগলাবাজার থানার ওসি ছাহাবুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

    ২৪ঘণ্টা/এন এম রানা

  • সিলেটে এসেই রায়হানের বাড়িতে যাবেন এসএমপি’র নতুন পুলিশ কমিশনার

    সিলেটে এসেই রায়হানের বাড়িতে যাবেন এসএমপি’র নতুন পুলিশ কমিশনার

    সিলেট ব্যুারো: সিলেটে এসেই রায়হান আহমদের বাড়িতে যাবেন সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) নতুন ক‌মিশনার হিসেবে নিশারুল আ‌রিফ। আজ (মঙ্গলবার) রাতে তিনি পুলিশী নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদের বাড়িতে যাবেন।

    এরআগে বিকেলে তিনি তিনি নতুন কর্মস্থলে এসে পৌঁছেন। সিলেট মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখা সূত্রে জানা যায়, আজ রাত ৮টায় নগরের আখালিয়া রায়হানের বাড়িতে গিয় তার পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাবেন নিশারুল আরিফ। গত ১১ অক্টোবর সিলেটেোর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে খুন হন রায়হান আহমদ (৩৪)।

    এ ঘটনায় এ পর্যন্ত দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার ও ৫ জনসকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। পলাতক রয়েছেন রায়হানকে নির্যাতনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির বহিস্কৃত ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া। এ ঘটনায় সমালোচনার মুখে গত বৃহস্পতিবার সিলেটের পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে বদলি করা হয়।

    স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা শাখা থেকে বদলির প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে পুলিশের স্পেশাল প্রোটেকশন ব্যাটালিয়নের (এসপিবিএন) ডিআইজি পদে বদলির পর নিশারুল আ‌রিফকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। পুলিশ কর্মকর্তা নিশারুল আরিফ এস‌পি‌বিএন-এর উপ-পু‌লিশ মহাপ‌রিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৯ সালের অক্টোবরে রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি থাকাকালীন সময়ে ডিআইজি পদে পদোন্নতি পান তিনি। এরপর ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিশারুল আরিফকে এসপিবিএনের উপ-মহাপরিদর্শক হিসেবে পদায়ন করা হয়।

    ২৪ঘণ্টা/এন এম রানা/বাপ্পা মৈত্র

  • সিলেটে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার ভূয়া চিঠি দিয়ে হয়রানি

    সিলেটে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার ভূয়া চিঠি দিয়ে হয়রানি

    সিলেট ব্যুারো: সিলেটে অভিনব প্রতারণায় মেতে উঠেছে একটি চক্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক সহায়তার চিঠি দিয়ে করা হচ্ছে হয়রানি। এমন একটি উড়ো চিঠি পেয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন সিলেট সদর উপজেলা খাদিম নগর ইউনিয়নের ধুপাগুল ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মো.মোক্তার হোসেন।

    হয়রানির শিকার হচ্ছেন চিঠি পাওয়া ব্যক্তিরাও। মুক্তার হোসেন জানান, গত ৭ অক্টোবর বিকেল ৪টায় তার কাছে প্রতিবেশী মো. শফিক মিয়া ডাকযোগে প্রাপ্ত একখানা চিঠি নিয়ে ২৫০০টাকা অনুদান চান। চিঠিতে লেখা-“গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা” এর প্রধানমন্ত্রী মানবিক সহায়তা কর্মসূচীর আওতায় আপনার আবেদন মঞ্জুর”।

    মোক্তার হোসেন চিঠি পড়ে দেখেন, সেখানে উল্লেখ রয়েছে “দলীয়ভাবে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৩নং খাদিমনগর ইউনিয়নের প্রতি ওয়ার্ডে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ১৫০ জনকে দলীয়ভাবে ২,৫০০/- (দুই হাজার পাঁচশত) টাকা ওয়ার্ড সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে ৩,৭৫,০০০/- (তিন লক্ষ পঁচাত্তর হাজার) টাকা পাঠানো হয়েছে। আপনি ০৩নং খাদিমনগর ইউনিয়নের ০৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক হানিফ আলী সাহেবের কাছ থেকে ২,৫০০/- (দুই হাজার পাঁচশত) টাকা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা যাইতেছে।” মোক্তার হোসেন বিষয়টি বুঝতে না পেরে মো. শফিক।

    ২৪ঘণ্টা/এন এম রানা/বাপ্পা মৈত্র

  • এসআই হাসান ও এক সাংবাদিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নষ্ট করে

    এসআই হাসান ও এক সাংবাদিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নষ্ট করে

    সিলেটে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর পর সারা দেশে তোলপাড় শুরু হলে পালিয়ে যান নির্যাতনের মূলহোতা বন্দর বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন। এতে সহযোগিতা করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির টু-আইসি এসআই হাসান উদ্দিন।

    একই সঙ্গে বন্দরবাজার ফাঁড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজও নষ্ট করার অভিযোগ রয়েছে হাসান উদ্দিন ও এক স্থানীয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।

    এ ঘটনায় এসআই হাসান উদ্দিনকে বরখাস্ত করে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ হেফাজতে নেয়ার নির্দেশ দেন।

    বিষয়টি নিশ্চিত করে এসএমপির উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের জানান, হাসান উদ্দিনকে কড়া পুলিশ প্রহরায় রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

    তাকে গ্রেফতার করা হবে কিনা- তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলাটির তদন্তভার পিবিআইয়ের কাছে। গ্রেফতারের বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা চাইলেই এসএমপি তাদের কাছে হস্তান্তর করবে বলে জানান তিনি।

    গত ১১ অক্টোবর পুলিশি নির্যাতনে রায়হান নিহতের পর ১২ অক্টোবর পালিয়ে যায় প্রধান সন্দেহভাজন বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর। তার পালিয়ে যাওয়া নিয়ে পরবর্তীতে আরও একটি তদন্ত কমিটি করে এসএমপি।

    তদন্ত কমিটির একটি সূত্র যুগান্তরকে জানায়, এসআই হাসান উদ্দিন ও স্থানীয় পত্রিকার এক সাংবাদিক মিলে ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার ফাঁড়ির সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক পরিবর্তন করে নতুন হার্ডডিস্ক সংযোজন করে। স্থানীয় একটি পত্রিকার সেই সাংবাদিক গ্যালারিয়া শপিং সিটির ফ্রেন্ডস কম্পিউটার নামের এক দোকান থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় ৫০০ গিগাবাইটের একটি হার্ডডিস্ক ক্রয় করে, যার ইনভয়েস নম্বর ২৪৬০২। সেই মার্কেটের সিসি টিভির ফুটেজও সংগ্রহ করে তদন্ত কমিটি। এরপর সেই সাংবাদিক কম্পিউটারের দোকান থেকেই একজনকে নিয়ে যান সেই হার্ডডিস্ক পরিবর্তনের জন্য।

    তদন্ত কমিটির মতে, এসআই হাসান উদ্দিন ওই কাজে সহায়তা করেছেন। এর পাশাপাশি এসআই হাসান উদ্দিন ঘটনার দিন সেই সাংবাদিকের সঙ্গে ৪০ বার এবং এর আগের দিন ১৯ বার কথা বলেছেন। এছাড়া হাসান উদ্দিনের বিরুদ্ধে এসআই আকবরকে পালানোর সহায়তার অভিযোগও পেয়েছে তদন্ত কমিটি।

    তদন্ত কমিটির সূত্রমতে, ১২ অক্টোবর বিকাল ৩টায় আকবরসহ ৪ জনকে বরখাস্ত করা হয়। বিকাল ৩টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত সে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ছিল। তার অস্ত্র সমঝে নেয় এসআই হাসান। সেখান থেকেই আকবর পালিয়ে যায়; কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তিনি জানাননি।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম

  • সিলেটে ফাঁড়িতে রায়হানের মৃত্যু: ৫ দিনের রিমান্ডে কনস্টেবল টিটু

    সিলেটে ফাঁড়িতে রায়হানের মৃত্যু: ৫ দিনের রিমান্ডে কনস্টেবল টিটু

    সিলেট ব্যুারো: সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্মম নির্যাতনে রায়হান আহমদ (৩৪) হত্যা মামলায় গেপ্তার হওয়া পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক জিহাদুর রহমান তার রিমান্ড মঞ্জুর করে।

    টিটু বন্দরবাজার ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। রায়হান হত্যার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশলাইন্সে সুংযুক্ত থাকা অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) খালেদুজ্জামান। এরপর তাকে আদালতে নিয়ে জামিন প্রাণর্থনা করা হয়। টিটুকে গ্রেপ্তারের ফলে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এই প্রথম কাউকে গ্রেপ্তার করা হলো। উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর ভোরে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন রায়হান আহমদ (৩৪) নামের এক যুবক।

    পরে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে তিনি মারা যান। রায়হান সিলেট নগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরীর রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে কাজ করতেন। এই ঘটনায় ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হেফাজতে মৃত্যু আইনে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে রায়হানকে ফাঁড়িতে এনে নির্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় কমিটি।

    ২৪ঘণ্টা/এন এম রানা/বাপ্পা মৈত্র

  • করোনায় সিলেটের প্রবীণ সাংবাদিক আজিজ আহমেদের মৃত্যু

    করোনায় সিলেটের প্রবীণ সাংবাদিক আজিজ আহমেদের মৃত্যু

    ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সিলেটের সভাপতি, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের দুবারের সাবেক সভাপতি ও খ্যাতিমান সাংবাদিক আজিজ আহমেদ সেলিম মারা গেছেন (ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।

    করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিলেটের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (১৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

    তিনি সিলেট নগরের মজুমদারি এলাকার বাসিন্দা। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও তিন কন্যাসন্তান অসংখ্য আত্মীয়স্বজনসহ গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

    সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম চৌধুরী নবেল প্রবীণ এ সাংবাদিকের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাত সাড়ে ৮টায় সিএমএইচ সিলেটে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। জানাজার নামাজের সময়সূচি এখনও নির্ধারণ হয়নি।’

    তিনি দীর্ঘ সাড়ে ৪ দশক ধরে সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। সেলিম মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দৈনিক উত্তর পূর্বের প্রধান সম্পাদক, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিলেট অফিসের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

    এছাড়া তিনি অবিভক্ত সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম

  • রায়হানের ওপর পুলিশের বর্বরতা, শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন

    রায়হানের ওপর পুলিশের বর্বরতা, শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন

    সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া রায়হানের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়া গেছে। রিপোর্ট বলছে, রায়হানকে ধরে ফাঁড়িতে এনে তার ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তার শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৪টি ছিল গুরুতর। তার দুটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। আর এমন নির্যাতন চালানো হয় তার মৃত্যুর ২ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে।

    এছাড়া তার শরীরে চামড়ার নিচ থেকে প্রায় ২ লিটার রক্ত পাওয়া গেছে। রায়হানের লাশের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এসব তথ্য উল্লে­খ করা হয়েছে। রিপোর্টটি গণমাধ্যমের হাতে এসেছে।

    সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর রাত ৩টা ৯ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে স্বাভাবিক অবস্থায় রায়হানকে সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে আনা হয়। পরে সকাল ৬টা ২৪ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে ফাঁড়ি থেকে বের করা হয়। ৬টা ৪০ মিনিটে ভর্তি করা হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে তিনি মারা যান।

    ওই হাসপাতালেই বেলা ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ১৫ অক্টোবর সেই ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়, রায়হানের মৃত্যুর ২ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে তার ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। সে হিসেবে ফাঁড়িতে আনার পর থেকেই তার ওপর নির্যাতন চলে।

    রিপোর্টে বলা হয়, রায়হানের ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুল আর বাম হাতের অনামিকার নখ উপড়ানো ছিল। অসংখ্য আঘাতের কারণে হাইপোভলিউমিক শক ও নিউরোজেনিক শকে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কর্মক্ষমতা হারানোর কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ কারণ ভিসেরা প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলা যাবে বলে প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লে­খ করা হয়।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম

  • বদলি হলেন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির জুয়াড়ী ইনচার্জ শাহিন

    বদলি হলেন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির জুয়াড়ী ইনচার্জ শাহিন

    বাপ্পা মৈত্র, সিলেট ব্যুারো: বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্মম নির্যাতনে রায়হান আহমদ (৩৪) মৃত্যুর পর থেকেই সিলেটসহ সারাদেশে আলোচনায় রয়েছে সিলেট নগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়ি।
    গত ১০ অক্টোবর রাতে ১০ হাজার টাকার জন্য বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতন করে রায়হান নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়। রায়হান আহমদ হত্যার আভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসনেকে এই ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্থ করা হয়েছে।
    এরপর বন্দরবাজার ফাঁড়ির দায়িত্ব দেওয়া হয় নানা কান্ডে বিতর্কিত জুয়াড়ী এসআই শাহিন মিয়াকে। এসআই শাহিন মিয়াকে বন্দরবাজার ফাঁড়ির দায়িত্বে দেওয়ার পর থেকেই শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। এই পুলিশ কর্মকর্তারা বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-জুয়াখেলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের পাহাড়।
    এরইমধ্যে শাহিনের জুয়াখেলার ছবিও শুক্রবার দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। সমালোচনার প্রেক্ষিতে এসআই শাহিনকে বন্দরবাজার ফাঁড়ির দায়িত্ব থেকে শুক্রবার অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে শাহিন মিয়াকে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্ব প্রদানের বিষয়টি অস্বীকার করছেন সিলেট মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
    এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, শাহিনকে বন্দরবাজার ফাঁড়ির দায়িত্ব দেয়া হয়নি। এখনও এই ফাঁড়ির ইনচার্জ হিসেব কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। এসআই শাহিনকে বিমানবন্দর থানায় বদলি করা হয়েছে। জানা যায়, শাহিন মিয়ার বিরুদ্ধে জুয়াখেলা, মাদক ও চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালে নগরের লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ থাকা কালে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে শাহিনকে প্রত্যাহার করে কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়। এরপর দক্ষিণ সুরমা থানার কদমতলী বাস টার্মিনাল ফাঁড়িতে বদলি হন তিনি। সেখানে দায়িত্ব পালনকালে শাহিন বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কদমতলীতে এক বছর দায়িত্ব পালন শেষে বদলি হন নগরীর শাহপরান থানায়। দায়িত্ব নেন উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির।
    এরপর বদলি হয়ে যান এসএমপির মোগলাবাজার থানাতে। সেখানে গিয়ে আলমপুর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্ব পান তিনি। এর ৫-৬দিন পরই বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনের ফলে নগরের আখালিয়া নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান আহমদের মৃত্যু হয়।
    এ ঘটনার মূল অভিযুক্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর। যিনি বরখাস্ত হয়ে পলাতক রয়েছেন। এরপর বুধবার বিকালে এসআই শাহিনকে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্ব দেয় এসএমপি পুলিশ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে এসআই শাহিন মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত, গত ১০ অক্টোবর রাতে ১০ হাজার টাকার জন্য বন্দর ফাঁড়িতে নির্মম নির্যাতন করে রায়হান নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়।
    এ ঘটনার মূল অভিযুক্ত বন্দরবাজার ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন। আকবরের নেতৃত্বে এই নির্যাতন চালানো হয় বলে প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আকবরসহ ৪ পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ৩ জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর আকবর পালিয়েছেন।
  • সিলেটে পুলিশী নির্যাতনে মৃত্যু: চার পুলিশ বরখাস্ত

    সিলেটে পুলিশী নির্যাতনে মৃত্যু: চার পুলিশ বরখাস্ত

    সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশী ‘নির্যাতনে’ রায়হান নামের এক ২৮ বছর বয়সী এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ওই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে মহানগর পুলিশ। একই সাথে তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

    বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) তৌহিদ মিয়া, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশ ও হারুনুর রশীদ।

    সিলেট মহানগর পুলিশের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

    এর আগে রোববার (১১ অক্টোবর) ভোরে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান উদ্দিন (৩৩) নামে এক যুবক নিহত হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তার স্বজনরা। নিহত ওই যুবক সিলেটের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে ও ২ মাস বয়সী এক সন্তানের জনক।

    পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন রায়হান। তবে নিহতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পুলিশ ধরে নিয়ে নির্যাতন করে রায়হানকে হত্যা করেছে। পরিবারের অভিযোগে ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠিন করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ।

    এদিকে রোববার (১১ অক্টোবর) দিবাগত রাতে নিহত রায়হানের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজন আসামি করে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

    মামলায় রায়হানের স্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘প্রতিদিনের মতো গত শনিবার (১০ অক্টোবর) বিকাল ৩টার দিকে তার স্বামী রায়হান আহমদ নিজ কর্মস্থল নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেটস্থ ডা. গোলাম কিবরিয়া ও ডা. শান্তা রাণীর চেম্বারে যান। ওই ভোর রাত ৪টা ৩৩ মিনিটে একটি মোবাইল নম্বর থেকে রায়হানের মা সালমা বেগমের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল দিলে সেটি রিসিভ করেন রায়হানের চাচা হাবিবুল্লাহ।

    এসময় রায়হান আর্তনাদ করে জানান, তিনি বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে আছেন। তাকে বাঁচাতে দ্রুত টাকা নিয়ে বন্দর ফাঁড়িতে যেতে বলেন রায়হান। এ কথা শুনে রায়হানের মা তার চাচা হাবিবুল্লাহকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ফজরের নামাজের পরপরই বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পাঠান। রায়হানের চাচা ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে রায়হান কোথায় জানতে চাইলে দায়ত্বিরত একজন পুলিশ বলেন, সে ঘুমিয়ে গেছে। আর যে পুলিশ রায়হানকে ধরে নিয়ে এসেছেন তিনিও চলে গেছেন। এসময় হাবিবুল্লাহকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফাঁড়িতে আসার কথা বলেন ওই পুলিশ।

    পুলিশের কথামতো হাবিুল্লাহ আবারও সকাল পৌনে ১০ টার দিকে ফাঁড়িতে গেলে দায়িত্বরত পুলিশ জানান, রায়হান অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে রায়হানের চাচা ওসমানী হাসপাতালে গিয়ে জরুরি বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, রায়হানকে সকাল ৬টা ৪০মিনিটে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সকাল ৭টা ৫০মিনিটে সে মারা যায়। এসময় হাবিবুল্লাহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনকে খবর দিলে তারা গিয়ে ওসমানীর মর্গে রায়হানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ দেখতে পান।

    তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমার স্বামীকে কে বা কারা বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে পুলিশি হেফাজতে রেখে হাত-পায়ে আঘাত করে এবং হাতের নখ উপড়ে ফেলে। পুলিশ ফাঁড়িতে রাতভর নির্যাতনের ফলে আমার স্বামী মৃত্যুবরণ করেন।’

    প্রসঙ্গত, গত রবিবার ভোরে রায়হান উদ্দিন (৩৪) নামে সিলেট নগরের আখালিয়ার এক যুবক মারা যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ছিনতাইয়ের দায়ে নগরের কাষ্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে নিহত হন রায়হান। এদিকে রায়হানের পরিবারের অভিযোগ পুলিশের নির্যাতনে খুন হয়েছেন রায়হান।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম