Tag: প্রধানমন্ত্রী

  • সব ধর্মের মানুষের কল্যাণে কাজ করছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

    সব ধর্মের মানুষের কল্যাণে কাজ করছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

    বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তাঁর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার জাতি ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষের কল্যাণে কাজ করছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল এমন এক অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার যেখানে থাকবে। তাঁর নীতি অনুসরণ করেই সকলের জন্য কাজ করছি আমরা।’

    তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে সমান অধিকার ভোগ করছে সব ধর্মের মানুষ এবং আপনারা সবাই সমান অধিকার নিয়েই বসবাস করবেন।’

    শেখ হাসিনা আজ বিকেলে গণভবনে শুভ বড়দিন উপলক্ষে বাংলাদেশস্থ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে একথা বলেন।

    ‘সব ধর্মের মানুষকে সরকার সমান চোখে দেখে’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন কর্মসূচি বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য, সকলের কল্যাণেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

    বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহারণ টেনে তিনি বলেন, ‘এই বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করবে, সমান সুযোগ নিয়ে বসবাস করবে। আমরা সেই নীতিতে বিশ্বাস করি।’

    খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কলাণে তাঁর সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরাই খ্রিস্টান কল্যাণ তহবিল গঠন করি এবং কল্যাণ তহবিলে পাঁচ কোটি টাকা সীড মানি দিয়েছি।’

    মহান মুক্তিযুদ্ধে সব ধর্মের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘ধর্ম-বর্ণ সকল মানুষ এক হয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। কাজেই আমরা চাই এই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনাতেই গড়ে উঠবে।’

    খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য ট্রাস্ট ফান্ড গঠন এবং মুসলমানদের মতো পিতার সম্পত্তিতে কন্যার অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ তাঁদের কল্যাণে বর্তমান সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি খ্রিস্ট ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সম্প্রসারণে এগিয়ে আসার জন্য খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের সামর্থ্যবান ব্যক্তিবর্গের প্রতিও অনুরোধ জানান।
    প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের সকল খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বড় দিনের শুভেচ্ছা জানান।

    তিনি বলেন, ‘মানব ধর্ম সবচেয়ে বড় ধর্ম এবং আমরা সে ধর্মতেই বিশ্বাস করি।’
    খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বড় দিনের কেক কাটেন শেখ হাসিনা এবং তাঁদের সঙ্গে বড়দিনের সঙ্গীতে কন্ঠ মেলান।

    প্রধানমন্ত্রীর হাতে বড় দিনের শুভেচ্ছা কার্ড তুলে দেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’ রোজারিও এবং বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও।

     

  • আওয়ামী লীগের নতুন নেতা নির্বাচন আজ : বিকেলের মধ্যেই উৎকণ্ঠা কাটবে পদপ্রত্যাশীদের!

    আওয়ামী লীগের নতুন নেতা নির্বাচন আজ : বিকেলের মধ্যেই উৎকণ্ঠা কাটবে পদপ্রত্যাশীদের!

    ২৪ ঘন্টা ডট নিউজ।জাতীয় ডেস্ক : আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে আজ নতুন নেতা নির্বাচন করা হবে। বর্ণিল আয়োজনে গতকাল শুক্রবার বিকেলে আওয়ামী লীগের উদ্বোধনী পর্ব শেষ হয়েছে। আজ শনিবার সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ পর্বের অধিবেশন শুরু হয়েছে আজ শনিবার সকাল ১০ টা থেকে।

    রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে প্রায় সাত হাজার কাউন্সিলর এতে যোগ দিয়েছেন। আজ তাদের মতামতের ভিত্তিতে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন। এ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আগামী তিন বছর দলটির নেতৃত্ব দিবেন।

    দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মঞ্চে রয়েছেন। নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে তিন সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন দলের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। অপর দুই সদস্য হলেন- উপদেষ্টা ড. সাইদুর রহমান ও ড. মসিউর রহমান।

    তবে গতকাল থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাদের মধ্যে নানান কথা শোনা গেলেও নতুন কমিটিতে কারা থাকবেন এবং কারা বাদ পড়বেন তা কেউ সঠিকভাবে জানাতে পারছে না। এমনকি সাধারণ সম্পাদকসহ ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির বাকি ৮০ পদের মধ্যে কার কী অবস্থান হবে তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছু সময়। এদিকে পদপ্রত্যাশীদের উৎকণ্ঠা আজ বিকেলের মধ্যে কেটে যাবে বলে আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে।

    সভাপতি পদটি অপরিবর্তিত থাকছে। এ পদে বরাবরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কাউকে ভাবছেন না আগত কাউন্সিলর ও প্রতিনিধিরা। একাধিক নেতার সাথে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে। কেউ কেউ মনে করেন, সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন হবে না বলেই প্রধানমন্ত্রী এখনো কোনো বার্তা দিচ্ছেন না। পুরনো কমিটির কেউ কেউ বাদ পড়বে এবং অনেকের পদোন্নতী পাওয়ারও আভাস পাওয়া গেছে।

    কাউন্সিলরদের সম্মতিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। এই দুই পদ ঠিক হওয়ার পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার দায়িত্ব কাউন্সিলররা সভাপতিকে দিয়ে দেন। আজও একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

    ইতিমধ্যে দ্বিতীয় অধিবেশন (কাউন্সিল অধিবেশন) শুরু হয়েছে। এই অধিবেশনে ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করবেন। এরপর দলের সংশোধিত ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হবে। এসব কার্যক্রম শেষে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে দেয়া হবে। এরপর শুরু হবে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া।

    উল্লেখ্য, এর আগে শুক্রবার বেলা ৩টায় আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। আজকের কাউন্সিল উপলক্ষে অধিবেশন স্থল ও আশপাশের এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। একই সঙ্গে এ এলাকায় যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে।

  • বিদেশে কর্মী পাঠানোর নামে প্রতারণা করলে কঠোর ব্যবস্থা: প্রধানমন্ত্রী

    বিদেশে কর্মী পাঠানোর নামে প্রতারণা করলে কঠোর ব্যবস্থা: প্রধানমন্ত্রী

    বিদেশে কর্মী পাঠানোর নামে প্রতারণা করলে সেসব রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    তিনি বলেছেন, শুধুমাত্র অর্থ উপার্জনের দিকে দৃষ্টি দিয়ে অযথা কর্মীদের বিদেশে পাঠাবেন না। নারীকর্মীসহ অভিবাসী কর্মীরা বিদেশে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হলে দায়ী রিক্রুটিং এজেন্সির সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বিদেশি কর্মীদের জন্য প্রবর্তিত জীবন বীমা কর্মসূচি উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিমানবন্দরে ফেরত আসা অভিবাসীদের হয়রানি বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দেশে রিক্রুটিং এজেন্সির যারা বিদেশগামীদের হয়রানি করবে সেসব এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদেশেও অনুরোধ করবো এ ধরনের এজেন্সির জন্য ব্যবস্থা নিতে।’

    বিদেশে যাওয়ার আগে সবকিছু যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমাদের গ্রাম-বাংলার মানুষ অনেক সময় দালালের খপ্পরে পড়ে সোনার হরিণের খোঁজে সব কিছু বিক্রি করে বিদেশে চলে যায়। যেহেতু এখন চাকরি থেকে শুরু করে সব কিছু যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ আছে, তাই দালালের খপ্পরে না পড়ে বিদেশে যাওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে দেখবেন।’

    নারীকর্মীদের উপর নির্যাতন প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, ‘নারীরা যাতে বিদেশে গিয়ে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছি। তারা যেন উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ‍নিয়ে বিদেশ যেতে পারে; সেজন্য তাদের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করেছি। কারণ সঠিক প্রশিক্ষণ না নিয়ে গেলে নানারকম নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাদের।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন থেকে বিদেশ যেতে হলে প্রশিক্ষণ নিয়ে যেতে হবে। এদিকে আমরা ব্যাপক নজরদারি করছি। এর আগে আমরা লক্ষ্য করেছি, অনেকেই প্রশিক্ষণ না নিয়ে প্রশিক্ষণের কথা বলে বিদেশে যেত। কিন্তু এখন থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া ছাড়া আর যাওয়া যাবে না। প্রশিক্ষণ নেওয়া বাধ্যতামূলক। এজন্য আমি প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে বলবো আরও বেশি গভীরভাবে নজর দিতে, যেন সবাই সঠিক প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশে যায়।’

    যুব সমাজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যুব সমাজ আমাদের সম্পদ। এই যুব সমাজকে দক্ষ যুব সমাজে রূপান্তর করতে হবে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা করছি। দক্ষ যুব সমাজকে বিদেশে পাঠিয়ে তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর আমাদের দেশে ৮২ থেকে ৮৩ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত। এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। সারা বিশ্বে আমাদের দেশের মানুষ যাতে নিরাপদে থাকতে পারেন সে ব্যবস্থাও চালু করে গেছেন।

    বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়নের দিকে নজর দিয়েছে। আমরা প্রবাসীদের জন্য আইন, নীতিমালা করেছি। এ সেক্টরকে ফাস্ট সেক্টর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থকে আমরা খুবই গুরুত্ব দেই। আমাদের দেশ থেকে প্রশিক্ষিত কর্মী পাঠাতে চাই। ঘরবাড়ি জমি বিক্রি করে কেউ যেন দালালের খপ্পরে না পড়ে, কেউ যেন নিঃস্ব না হয়।

    এ সময় দেশের প্রতিটি উপজেলা থেকে গড়ে এক হাজার তরুণ-তরুণীকে বিদেশে কাজের সুযোগ করে দেওয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

    অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও বায়রা সভাপতি বেনজির আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা।

  • মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

    মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

    মুক্তিযোদ্ধাদের নাম রাজাকারের তালিকায় থাকা অসম্ভব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্থগিত হওয়া তালিকা রাজাকারের তালিকা নয়। অনভিজ্ঞতার কারণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এরকম তালগোল পাকিয়েছে উল্লেখ করে, এ তালিকার কারণে ক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোকে বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

    বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সবশেষ সভায় তিনি আরও জানান, বিজয় দিবসের আগে ভালোভাবে যাচাই বাছাই না করে, তাড়াহুড়ো করে রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করার ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীকে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধামন্ত্রীকে বলেছিলাম, আপনি এখন তাড়াহুড়ো করে এটা করতে যাইয়েন না। কারণ, এই তালিকার মধ্যে কি আছে না আছে দেখে নিতে হবে। আমি বলেছিলাম, তালিকায় অনেক ঝামেলা মিলিটারি ডিক্টেটররা করে রেখে গেছে।’

    মহান বিজয় দিবসের একদিন আগে প্রথমবারের মত মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতা করা রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। প্রকাশের সময় এ তালিকা যাচাই বাছাই শেষে প্রণয়ন করা হয়েছে দাবি করলেও, বস্তুত এ তালিকা ভুলে ভরা। রাজাকারের তালিকায় নাম আসতে দেখে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায় মুক্তিযোদ্ধারা ও তাদের পরিবার।

    দলের কাউন্সিলকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে এ তালিকা।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম রাজাকারের তালিকায় আসা অসম্ভব। খুবই খারাপ কাজ।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে হঠাৎ একটা তালিকা বের করা হল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আমাদের আওয়ামী লীগ বা মুক্তিযুদ্ধে যারা গিয়েছিলো তাদের সকলের একটা তালিকা করে তাদের সন্ত্রাসী, দুর্বৃত্ত হিসেবে চিহ্নিত করে পাকিস্তান সরকার সেই সময় অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়। যেটা পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ওই তালিকা ধরে ধরে আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বা শাস্তি দিয়েছে। আবার এরশাদের সময়ও সেটা ব্যবহার করা হয়েছে।

    তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে কোলাবরেটর হিসেবে যাদের বিরুদ্ধে মামলা তাদেরটা নিতে গিয়ে সেখানে সব মিলিয়ে একটা গোলমাল করে ফেলেছে। সেখানে অনেকের নাম চলে এসেছে যারা মুক্তিযোদ্ধা। এ তালিকাকে রহস্যজনক আখ্যা দিয়ে জড়িতদের শাস্তি দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, কীভাবে এটা ওয়েবসাইটে চলে গেলো সেটা রহস্য বটে। আসলে রাজাকারদের যে তালিকা তার কিন্তু আলাদা গেজেট করা আছে।

    তিনি বলেন, আমি একটা কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকার খেতাব দেয়া হবে না, হতে পারে না। এটা অসম্ভব। অন্তত আমার সময়ে না। কোনোমতেই এটা রাজাকারের তালিকা না।

    তিনি বলেন, এটা চলে আসাতে খুব স্বাভাবিকভাবে একটা মানুষের কষ্ট লাগবে। যে পরিবারের মানুষ শহীদ হলো, যারা মুক্তিযুদ্ধ করলো তাদের যদি রাজাকার বলা হয় তাহলে এর থেকে আর বেশি দুঃখের কিছু থাকে না। যারা এই দুঃখ পেয়েছেন তাদের আমি বলবো, তারা যেন শান্ত হন এবং ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সরকারপ্রধান হিসেবে আমারও আরেকটু শক্ত হয়ে বোধহয় বলা উচিৎ ছিলো। আমিও বলেছিলাম, এটা দিয়েন না। কিন্তু উনি যে কেনো দিয়ে দিলেন জানি না। এটা দেয়ার কথা ছিলো না।

    তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়ই দেশ চলবে। যারা এ তালিকা প্রকাশের সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি দেয়া হবে।

  • বিজিবি-কে বিশ্বমানের বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার:প্রধানমন্ত্রী

    বিজিবি-কে বিশ্বমানের বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার:প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিজিবিকে বিশ্বমানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ভিশন ২০৪১’পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার এ বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিজিবি পুনর্গঠনের আওতায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছে এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে একটি বিশ্বমানের আধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।’

    প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিজিবি’র সুনাম অক্ষুন্ন রাখার জন্য এই বাহিনীর সদস্যদের দেশপ্রেম এবং দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং চেইন অব কমান্ড মেনে চলার আহবান জানান।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশাকরি যে, আপনারা সব সময় দেশপ্রেম,সততা এবং দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে সব সময় এই বাহিনীর সুনাম ও মর্যাদা সমুন্বত রাখবেন।’

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে বিজিবি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

    শৃঙ্খলা এবং চেইন অব কমান্ডকে একটি বাহিনীর অন্যতম চালিকা শক্তি আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার আবেদন থাকবে উর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের কমান্ড মেনে চলবেন এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন। আর আপনাদের কোন সমস্যা হলে সেটা দেখার জন্য আমরাতো আছিই।’
    ‘কাজেই আপনারা সবসময় সততার সাথে নিষ্ঠার সাথে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন। যেন দেশ আজকে অর্থনৈতিকভাবে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে,’যোগ করেন তিনি।

    তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতার হাতে গড়া এই প্রতিষ্ঠান। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পার হতে হয়েছে। আগামী দিনে এই সীমান্তরক্ষী বাহিনী সারাবিশ্বের সর্বশ্রেষ্ট সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মর্যাদা অর্জন করবে-সে বিশ্বাস আমার আছে।’

    এরআগে, বিজিবি সদস্যরা মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। একটি সুসজ্জিত খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শনকালে বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম এবং প্যারেড কমান্ডার কর্নেল এ এম এম খায়রুল কবির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

    এছাড়া মটর শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় এবং বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ এবং বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুল রউফ পাবলিক কলেজের প্রায় ৬শ’ শিক্ষার্থী ‘স্বাধীনতা ও উন্নয়নের আগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’শীর্ষক ডিসপ্লে প্রদর্শন করে।

    অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিজিবি দিবস উপলক্ষে বীরত্বপূর্ণ ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বিডিআর কর্মকর্তাদের মাঝে বর্ডার গার্ড পদক-২০১৯, রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক-২০১৯, বর্ডার গার্ড পদক সেবা-২০১৯ এবং রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক সেবা-২০১৯ বিতরণ করেন।

    প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজে অংশ গ্রহণকারী প্যারেড কমান্ডার এবং অন্যান্য কন্টিনজেন্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

    অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং কূটনৈতিক কোরের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

    এরআগে প্রধানমন্ত্রী পিলখানায় বিজিবি সদর দফতরের বীরউত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন এবং বিজিবি মহাপরিচালক তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।

    পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর-উত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে বিজিবি সদস্যদের বিশেষ দরবারে অংশগ্রহণ করেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিব এদেশের গরিব-দু:খী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার জন্যই এই বাংলাদেশ সুখী ও সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। তারপরেই থেমে যায় আমাদের অগ্রযাত্রা।’

    তিনি উল্লেখ করেন, আবার ২১ বছর পর ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই কেবল দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা শুরু হয়।

    ‘আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দারিদ্রের হার ২০ দশমিক ৫ ভাগে নামিয়ে এনেছি। মানুষের আয় মাথাপিছু বেড়েছে এবং সকলের বেতন-ভাতা এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আজকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং আমাদের আর কারো কাছে ভিক্ষে চেয়ে চলতে হয় না।’

    অনেক চড়াই-উৎরাই অতিক্রম করেই আজকের এই অর্জন-এমন অভিমত ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, এটা আমাদের ধরে রেখেই এগিয়ে যেতে হবে। আমরা মাথা উঁচু করে চলবো এবং বিশ্বে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে আমাদের অবস্থান আমরা করে নিতে সক্ষম হব।’

    তিনি বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের কাছে এটাই আমরা চাই- আপনারা এদেশকে ভালবেসে সেদেশের মানুষের প্রতি কর্তব্য পালন করবেন।’

    ‘দেশ যদি উন্নত হয় তাহলে আপনাদের পরিবার-পরিজনরা এবং দেশের মানুষই উন্নত হবে। সে কথাটা সব সময় মনে রাখবেন,’ বলেন তিনি।
    প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত বিদ্রোহ ও হত্যাকা- বিজিবি’র (তৎকালিন বিডিআর) ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করেন। ঐ ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।

    প্রধানমন্ত্রী ঐ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,‘বাহিনীর তৎকালীন মহাপরিচালকসহ যে সকল অফিসার, অন্যান্য সদস্য ও বেসামরিক ব্যক্তি শহিদ হয়েছেন, আমি তাঁদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করছি।’

    তিনি বলেন,‘বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে সম্পৃক্ত উচ্ছৃঙ্খল ও বিপথগামী বিডিআর সদস্যদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মাধ্যমে এ বাহিনী এখন সম্পূর্ণ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে।’

    জাতির পিতা দেশের স্বাধীনতা দিয়ে গেলেও দেশ স্বাধীনের মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মাথায় নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হওয়ায় বাংলার জনগণকে তাঁর কাঙ্খিত অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়ে যেতে পারেননি। সে লক্ষ্য বাস্তবায়ন করাই তাঁর এবং আওয়ামী লীগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন।

    তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা স্বাধীনতা দিয়ে গেলে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে তোলার সুযোগ না পাওয়ায় এটা তাঁর দায়িত্ব মনে করে যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে এই কাজটি এগিয়ে নেয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।’

    প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাতির পিতার ১৯৭৪ সালে সম্পাদিত মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির আওতায় ভারতের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ছিটমহল বিনিময় এবং সীমান্ত সুরক্ষা এবং বিজিবির আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগীকরনে তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য সীমান্তের নিরাপত্তা বৃদ্ধি, দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় প্রথম পর্যায়ে ৩১৭ কিমি সীমান্তবর্তী রিং সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। ভারত ও মায়ানমার সীমান্তে ব্যাটালিয়ন সৃজনের মাধ্যমে ৫৩৯ কি:মি: অরক্ষিত সীমান্তের মধ্যে ৪৪২ কি. মি. সীমান্ত নজরদারীর আওতায় আনা হয়েছে।

    জানুয়ারি মাসে অত্যাধুনিক ২টি হেলিকপ্টার বিজিবিতে যুক্ত হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩২৮ কি.মি. সীমান্তে স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভিল্যান্স এন্ড ট্যাকটিক্যাল রেসপন্স সিস্টেম স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

    তিনি বলেন, আধুনিক, যুগোপযোগী ও কার্যকর ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র ক্রয় করা হচ্ছে। ১২টি আর্মাড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) এবং ১০টি রায়ট কন্ট্রোল ভেহিক্যাল ক্রয় করা হচ্ছে। সীমান্তের স্পর্শকাতর আইসিপি/এলসিপি সমূহে ভেহিক্যাল এক্স-রে স্ক্যানার মেশিন স্থাপন এবং ‘বিজিবি ডগ স্কোয়াড’ গঠন করা হয়েছে।

    এছাড়াও তল্লাশী কার্যক্রম জোরদার করার জন্য ৬টি মেকানাইজড ইনস্পেকশন সিস্টেম ক্রয়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সীমান্ত ডাটা সেন্টার’ স্থাপন করা হয়েছে। ডিজিটাল মোবাইল রেডিও (ডিএমআর) নেটওয়ার্ক স্থাপনের মাধ্যমে সদর দপ্তর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত বিওপি’র সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিশেষ করে ভূমিকম্পের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিজিবি যশোর অঞ্চলে ডিজেস্টার রিকভারি সাইট নির্মাণ করছে।

    শেখ হাসিনা বলেন, বিজিবি সদস্যদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য সাতকানিয়ার ‘বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজ’ এর পাশাপাশি চুয়াডাঙ্গায় আরও একটি প্রশিক্ষণ সেন্টার স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

    তিনি বলেন, বিজিবি সদস্যদের জন্য নতুন র‌্যাংক ব্যাজ প্রবর্তন, জেসিওদের পদমর্যাদা বৃদ্ধি,বিজিবি’র সকল স্তরে বেতন-ভাতার বৈষম্য দূর, যোগ্যতার ভিত্তিতে বিভাগীয় অফিসার পদে পদোন্নতি এবং সীমান্ত ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।

    এছাড়া ২ মাসের বাৎসরিক ছুটি ও অগ্রিম বেতন প্রদান, পারিবারিক রেশন, ৩ বছরের নীচের সন্তানদের পূর্ণ স্কেল রেশন প্রদানসহ বিজিবি সদস্যের প্রতিবন্ধী সন্তানদের অবসরের পূর্ব পর্যন্ত নগদ মূল্যে রেশন প্রদান করা হচ্ছে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজিবিতে বিদ্যমান ৫টি হাসপাতালের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং ২০৫ জন কর্মচারীর দেশে-বিদেশে চিকিৎসার জন্য বিজিবি স্বাস্থ্য সহায়তা প্রকল্প তহবিল থেকে ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকার বেশি অনুদান হিসেবে দেয়া হয়েছে।

    প্রধানমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধে এই বিজিবি তথা তৎকালিন বিডিআর সদস্যদের আত্মত্যাগের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

    তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৬-এ মার্চের প্রথম প্রহরে তৎকালীন ইপিআর-এর বেতারকর্মীরা এই পিলখানা থেকেই বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা সমগ্র দেশে ওয়্যারলেস যোগে প্রচার করায় ইপিআরের (তৎকালিন) সুবেদার মেজর শওকত আলীকে পাক হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে।’

    অনুষ্ঠানে ১৯৭৪ সালে বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় বঙ্গবন্ধুর প্রদত্ত ভাষণ বাজিয়ে শোনানো হয়। সেই ভাষণের আলোকে এই বাংলার মাটি থেকে চোরাকারবারী, দুর্নীতি এবং সমাজ বিরোধীদের উৎখাতে এই বাহিনীর সদস্যদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর উদাত্ত আহবানের সঙ্গেও একাত্মতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসাথে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার পুনর্বাসনে বিজিবি’র ভূমিকার প্রশংসা করেন।

  • সে উত্তর এখনো আমি পাইনি:প্রধানমন্ত্রী

    সে উত্তর এখনো আমি পাইনি:প্রধানমন্ত্রী

    বিজয়ের ৪৮ বছরে দেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। উন্নতির এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে দলীয় নেতাকর্মী ও জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    দেশের বিরুদ্ধে এখনো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে বলেছেন, পাকিপ্রেমীরা বিদেশে থাকুক অথবা জেলখানায়, তাদের চক্রান্ত কিন্তু থেমে নেই।

    তবে তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতির পিতার সেই কথাটি মনে রাখতে হবে, সাত কোটি বাঙালিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবা না। আর এখন তো আমরা ১৬ কোটি। মুষ্টিমেয় দালাল হয়তো থাকতে পারে, কিন্তু এই বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি, পারবে না।’

    মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

    পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক ট্রাজেডির কথা স্মরণ করে আক্ষেপের সুরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এত বড় একটা ঘটনা বাংলাদেশের কি কেউ বা কোনো লোক জানতে পারলো না, কোনো পদক্ষেপ নিলো না, কেন ওই লাশ পড়ে থাকল ৩২ নম্বরে? সে উত্তর এখনো আমি পাইনি। এত বড় সংগঠন, এত নেতা কোথায় ছিল? মাঝে মাঝে আমার এটা জানতে ইচ্ছে করে, কেউ সাহসে ভর দিয়ে এগিয়ে এলো না কেন?’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তো শেখ মুজিবের সঙ্গে ছিল। এই ব্যর্থতার খেসারত দিয়ে হয়েছে জাতিকে। কারণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর এ দেশে বারবার ক্যু হয়েছে। ১৮-১৯টা ক্যু হয়েছে এই দেশে। অত্যাচার নির্যাতন চলেছে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর।’

    বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জাতির পিতাকে জড়ানোর উদ্দেশ্যটাই ছিল তাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা, তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রমাণ করা। কারণ তিনি পূর্ববঙ্গকে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীন করতে চেয়েছেন। সেই অপরাধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করা হয়। কিন্ত বাংলাদেশে আমাদের ছাত্রসমাজ দল-মত নির্বিশেষ অন্দোলন গড়ে তুলেন। মে মাসে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আর জুন মাসেই হরতাল হয়েছে। শ্রমিক নেতা নুরু মিয়াসহ ১১ জন তখন প্রাণ দেন। ৬৮ সাল থেকে এই আন্দোলন আরও বেগবান হয়, আর ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান হয়।’

    ‘সেই সময়ে অনেকেই বলেছে, ‘ভোটের বাক্সে লাথি মারো বাংলাদেশে স্বাধীন করো’। কিন্তু জাতির পিতা ভোটের মাধ্যমে ব্যালটের মাধ্যমেই সেটা চেয়েছেন। ইয়াহিয়া যে ভোটের আয়োজন করেন, জাতির পিতা জানতেন সংখ্যাঘরিষ্ঠ আসন পেলেও পাকিস্তান আমাদের ক্ষমতায় বসতে দেবে না। আমাদেরকে দেশ স্বাধীন করতে হবে। সেই নির্বাচনে পূর্ববঙ্গের মানুষ শুধু ভোটেই জিতলেন না তারা সংখ্যাঘরিষ্ঠ আসনও পেলেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা কোনোভাবেই সেটা মেনে নিলেন না।’

    বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘এই বাংলাদেশ নাম, এই নামটাও কিন্তু জাতির পিতার দেওয়া। ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখ সোহরাওয়ার্দী সাহেবের মৃত্যু দিবসে তিনি বক্তৃতা দিয়েছিলেন। সেখানেই তিনি পূর্ব বঙ্গের নাম যে বাংলাদেশ হবে এই ঘোষাণাটা দেন।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ছয় দফাকে বানচাল করতে তারা অনেক কিছু নিয়ে আসে। তারা ছয় দফাকে আট দফা করে ফেলে। আমাদের দুর্ভাগ্য আওয়ামী লীগের তৎকালীন হোমরা-চোমড়া অনেক নেতা আট দফার দিকে ঝুঁকেও গিয়েছিলেন। কারাগারের রোজনামচাটা পড়লে অনেক কিছুই জানতে পারবেন। আমাদের সঙ্গেও অনেক নেতাদের তর্ক হতো। অনেকে বলতেন, তুমি, মেয়ে কিচ্ছু বোঝো না। আমি ইউনিভিার্সিটির ছাত্রী কিছু বুঝবো না সেটাতো হয় না। আমি স্কুলজীবন থেকে মিছিলে যাওয়া শুরু করেছি, কলেজে ভিপি ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও কিছুই বুঝব না এটাতো হয় না। আসলেই তারাই বুঝতেন না।’

    ‘এরকম বহু ঘটনা ঘটে, এটা স্বাভাবিক। কারণ তাৎক্ষণিক কিছু পাওয়ার জন্য অনেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এজেন্সি দ্বারা পরিচালিত হন। কিন্তু জাতির পিতা তার প্রতিটা পদক্ষেপ নিয়েছেন ভেবেচিন্তে। তিনি কারও প্ররোচনায় পড়েননি। জীবনে অনেক ঝুঁকি তিনি নিয়েছেন। যুদ্ধের পরবর্তী সব প্ল্যান তিনি প্রবাসে করে আসেন।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অসহযোগ আন্দোলন যখন শুরু হলো, ইয়াহিয়াকে খাবার রান্না করে দেবার লোক পর্যন্ত ছিল না। কারণ সবাই স্ট্রাইক করেছে তাকে খেতে দেবে না। তখন ধানমন্ডির বত্রিশ নাম্বারে ফোন আসে যেন তাদেরকে রান্না করে খেতে দেওয়া হয়। এর মানে পুরো জাতিকে তিনি একটি বিপ্লবের দিকে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন। সবাই যার যার জায়গা থেকে দেশকে স্বাধীন করতে জীবন বাজি রেখেছে। অসহযোগ আন্দোলন থেকে একটি সশস্ত্র বিপ্লবের দিকে একটি জাতিকে একমাত্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানই নিয়ে যেতে পেরেছেন।’

    স্বাধীনতাবিরোধীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তার ৭ মার্চের ভাষণ এক সময় এই দেশে নিষিদ্ধই করা ছিল। আজকে সারাবিশ্বে আড়াই হাজার বছরের ইতিহাসে জাতির পিতার ভাষণ সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে ইউনেস্কোর প্রামাণ্য দলিলে স্থান করে নিয়েছে। আমি জানি না জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা এই ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিল তারা লজ্জা পায় কি না? অনেকেই জাতির পিতার হত্যার পর যারা এই ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিল তারা লজ্জা পায় কি না? অনেকেই জাতির পিতার ভাষণ দেশে ছড়িয়ে দেয়। এটা করতে গিয়েও অনেক শহীদ হয়েছেন, নির্যাতন সহ্য করেছেন। কেউ একজন জাতির পিতার নির্দেশে রেডিওতে প্রচার করলে অনেকেই তাকে স্বাধীনতার ঘোষক পর্যন্ত বানানোর চেষ্টা করলেন। ইতিহাস সত্যের সন্ধান করে, সত্যই টিকে থাকে, মিথ্যা টিকে থাকে না।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘জালিনওয়ালাবাগে যেভাবে হত্যাযজ্ঞ করা হয়েছিল, ৭ মার্চের ভাষণের দিনও এমন একটি হত্যাযজ্ঞ প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে সবধরনের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আর বাঙালি জাতি এই ভাষণের প্রতিটি শব্দ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। আর যে কারণে আজকের বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছে।’

  • ন্যায়বিচার নিশ্চিতে অপরাধী যেই হোক তাকে শাস্তি পেতেই হবে:প্রধানমন্ত্রী

    ন্যায়বিচার নিশ্চিতে অপরাধী যেই হোক তাকে শাস্তি পেতেই হবে:প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের অধিকার নিশ্চিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন কাজ করে গেছেন। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষায় আমাদের সরকারও মানবাধিকারের বিষয়ে সোচ্চার রয়েছে। আমরা যে কোনো অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ জানাই। ন্যায়বিচার নিশ্চিতে অপরাধী যেই হোক তাকে শাস্তি পেতেই হবে।

    আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) হোটেল সোনারগাঁওয়ে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

    তিনি বলেন, মানবাধিকার রক্ষার জন্য আইনের শাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আমরা যেমন মানবিধকার নিশ্চিত করছি তেমনিভাবে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস মাদক যা মানুষের জন্য ক্ষতিকর তা প্রতিরোধেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আপনারা এরই মধ্যে দেখেছেন আমরা কয়েকটি বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং বিচার বিভাগ এ বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করেছে।

    যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় সেখানেই সরকার সোচ্চার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নারী, শিশু, শ্রমিক সবার অধিকার সম্পর্কে সচেতন। আমাদের দেশের নাগরিকককে মানবাধিকার বিষয়ে সচেতন করতে হবে। অধিকারের সাথে সাথে আমাদের কর্তব্য সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে। আমার জন্য যেটা অধিকার অন্যের জন্য তা কর্তব্য। আমার জন্য যা কর্তব্য অন্যের জন্য তা অধিকার। মানবাধিকার কমিশন এ বিষয়ে নাগরিকদের জানাতে যথাযথভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

    শেখ হাসিনা বলেন, এসডিজি গোল আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়নের ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা আমাদের জীবনে যে কষ্ট করেছি পরবর্তী প্রজন্ম যেনো সেই কষ্ট না করে, সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। এরই মধ্যে আমরা দারিদ্রের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৭-তে নামিয়ে এনেছি। বৃদ্ধ দরিদ্র যারা বিধবা মা-বোন তাদের জন্য ভাতার ব্যবস্থাসহ প্রতিবন্ধীদের ভাতার ব্যবস্থা আমরা করেছি। তৃতীয় লিঙ্গের গোষ্ঠীদের মর্যাদা দিয়েছি। মানুষকে মানুষ হিসেবে আমরা দেখব।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাখো প্রাণের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এসেছে। বাংলার মানুষ সব ধরনের অধিকার ফিরে পাবে, তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে এমন স্বপ্ন বাস্তবায়নেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে জয়ের পর একটি বিধ্বস্ত দেশের মানুষের খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা নিশ্চিতে বঙ্গবন্ধু রাতদিন কাজ করেন। এর সুফল পেতে শুরু করেছিল জাতি। তবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশের মানুষ অধিকার বঞ্চিত হতে শুরু করে।

    শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যার পর ঘটনার বিচার চাইবার অধিকারটুকুও কেড়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী হয়েছিল, নারীদের সম্ভ্রমহানি করেছে, মানুষকে হত্যা করেছে সেইসব অপরাধীকেও পুরস্কৃত করা হয়েছিল। রাজনীতি করার অধিকার ও সংসদে সদস্য হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল তাদের। তবে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে এসব অপরাধের বিচার শুরু হয়েছে। ন্যায়বিচার নিশ্চিতের মাধ্যমে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার কাজ করছে।

    মানবাধিকার কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং কমিশনের দেওয়া বিভিন্ন সুপারিশ নিয়ে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কমিশনের সুপারিশ আমরা মেনে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশনেও স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। এছাড়া বিভিন্ন দেশে শান্তি মিশনে এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সেনা সদস্যরাও কাজ করে যাচ্ছে।

    মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পরিচালিত অত্যাচারের নিন্দা জানিয়ে এবং সংকট সমাধানে কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের ওপর যে বর্বর অত্যাচার চালানো হয়েছে, তা দেখে মুক্তিযুদ্ধের কথা মনে হয়েছে। আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে।

    মানবাধিকার নিশ্চিত এবং প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে সরকারের আন্তরিক দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। তবে সেই অবস্থা থেকে ফিরিয়ে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার নিশ্চিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এখানের একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না, চিকিৎসা ছাড়া মানুষ মরবে না। আধুনিক ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলে সব ধরনের অধিকার নিশ্চিতের কথা বলেন তিনি।

    অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।

  • আমি চাই মেয়েরা এগিয়ে আসুক,তারাই উদ্যোক্তা হোক: প্রধানমন্ত্রী

    আমি চাই মেয়েরা এগিয়ে আসুক,তারাই উদ্যোক্তা হোক: প্রধানমন্ত্রী

    অর্থনৈতিক অঞ্চলে নারী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, নারী ব্যবসায়ীদের সব সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করবে সরকার।

    সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া পদক প্রদান অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।

    তিনি বলেন-বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী, বিজিবি থেকে শুরু করে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে নারীরা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন।

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেখানেই মেয়েরা কাজ করছে সব ক্ষেত্রে তারা দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। পুরুষদের পাশাপাশি একটা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তারা এগিয়ে যাচ্ছে।’

    নারীরা পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াবে; বেগম রোকেয়ার সে স্বপ্ন আজ বাস্তবতা বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

    তিনি বলেন, ‘বেগম রোকেয়া স্বপ্ন দেখতেন যে নারীরা জজ-ব্যারিস্টার হবে, তারা বিভিন্ন পেশায় কাজ করবে। আমি বর্তমানে এতটুকু দাবি করতে পারি, বর্তমানে বাংলাদেশের মেয়েরা সেই জায়গাটা করে নিতে পেরেছে।’

    সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘বেগম রোকেয়া হয়তো চাইতেন একজন নারী কোনো রাষ্ট্রের প্রধান হবেন। সমাজ ও পরিবারে পুরুষের সঙ্গে সমানভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলবে, পা ফেলে চলবে। সমান অধিকার ভোগ করবে। সেটা এখন নিশ্চিত করতে পেরেছি এটা আমরা দাবি করতে পারি।’

    ১৯ শতকের দিকে পর্দার নামে নারীদের ঘরে বন্দী করে রাখা হতো জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখন পড়াশুনার সুযোগ ছিল না। আর মুসলমান মেয়েদের জন্য আরও কঠিন অবস্থা ছিল। সেই সময় সেই অন্ধকার জগত থেকে নারীদের আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন বেগম রোকেয়া। আজ আমরা যে অবস্থানে এসেছি এতে বেগম রোকেয়ার অবদান রয়েছে। তাই তার নামে পদক দিতে পেরে আমরা সত্যিই খুব আনন্দিত এবং নিজেকে ধন্য মনে করছি।’

    এ সময় সরকার নারীর উন্নয়ন ও সুরক্ষায় জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

    তিনি বলেন, ‘আমি চাই মেয়েরা এগিয়ে আসুক। তারাই উদ্যোক্তা হোক।’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তারা বিশেষ সুবিধা পাবেন বলেও জানান শেখ হাসিনা।

    নারী শিক্ষা, নারী অধিকার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে দেশের পাঁচ জন বিশিষ্ট নারী ও তাদের পরিবারের হাতে বেগম রোকেয়া পদক-২০১৯ এ সম্মাননা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

    রোকেয়া পদকপ্রাপ্তরা হলেন-বেগম সেলিনা খালেক নারী শিক্ষা, নারী অধিকার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে; অধ্যক্ষ শামসুন নাহার নারী শিক্ষায় ও ড. নুরুননাহার ফয়জননেসা (মরণোত্তর) নারী শিক্ষা, নারীর অধিকার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য; পাপড়ি বসু নারীর অধিকার ও বেগম আখতার জাহান নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য পদক পেলেন।

    এর আগে রোববার (৮ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়া পদক-২০১৯ দেয়ার জন্য পাঁচজন বিশিষ্ট নারী ব্যক্তিত্বকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

    নারী শিক্ষা, নারী অধিকার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে এ পুরস্কার দেয়া হয়।

    বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে সকাল ১০টায় ঢাকায় নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বেগম রোকেয়া পদক-২০১৯ প্রদান এবং বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।

    দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। এ দিবস উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।

  • প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন সালমান-ক্যাটরিনা

    প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন সালমান-ক্যাটরিনা

    আজ সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু ‍বিপিএলের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মাতাতে ঢাকায় এসেছেন বলিউড সুপারস্টার সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফ।

    বিপিএল সপ্তম আসরের উদ্বোধন ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রেসিডেন্স বক্সে বসে ভারতীয় তারকা সঙ্গীত শিল্পী সোনু নিগমের গান শুনছেন ঠিক তখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে সেখানে আসেন সালমান-ক্যাটরিনা।

    প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন ঘোষণার আগেই শুরু হয়েছে প্রথম পর্বের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সূচিতে বিকেল ৫টার কথা বলা হলেও বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হতে বেজেছে ৫টা ৪০ মিনিট। এরপর সন্ধ্যা ৫টা ৫৫ মিনিটে মইদুল ইসলাম খান ডি রকস্টার শুভ আসেন দিনের প্রথম পারফরম্যান্স নিয়ে। এরপর মঞ্চে আসবেন ভারত বরেণ্য সঙ্গীত শিল্পী কৈলাশ খের।

    উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ বলিউড সুপারস্টার সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফ মঞ্চে উঠবেন একদম শেষে। প্রথমে একক পারফরম্যান্স করবেন দু’জন। এরপর আবার দুজনের দ্বৈত পারফরম্যান্স দিয়ে শেষ হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। সালমানের আগে মঞ্চে উঠবেন ক্যাটরিনা। তাকে দেখা যাবে ৯টা ৩৫ মিনিটে।

    ক্যাটরিনার ২৫ মিনিটের পারফরম্যান্সের পর রাত ১০টায় আসবেন সালমান। তিনি একা মঞ্চ মাতাবেন ২০ মিনিট। এরপর দু’জন মিলে ১০টা ২০ থেকে প্রায় ১১টা পর্যন্ত দর্শকদের উপহার দেবেন দ্বৈত পারফরম্যান্স।

    আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে বিপিএলের খেলা শুরু হবে। ঢাকা, সিলেট এবং চট্টগ্রামে বিপিএলের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে।

  • বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

    বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

    জমকালো আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    আজ সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টা ৫০ মিনিটে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক জমজমাট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই উদ্বোধন ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা।

    উল্লেখ্য, এটাই ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে সরকার গৃহীত বিভিন্ন কর্মসুচির প্রথম সূচি।

    ৪০ দিনব্যাপী এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠারন মঞ্চ মাতাতে ঢাকায় পা রাখেন জনপ্রিয় বলিউড তারকা সালমান খান, ক্যাটরিনা কাইফ, সনু নিগাম ও কৈলাশ খেরেরা। এছাড়া দেশি তারকাদের মধ্যে আছেন মমতাজ, জেমসসহ আরও অনেকে। পাঁচ ঘন্টা দীর্ঘ এই অনুষ্ঠানে পারফর্ম করবেন তারা।

    প্রধানমন্ত্রীর আগমনের আগেই কনসার্ট দিয়ে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বিসিবি’র তত্ত্বাবধানে এবার বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা রাখা হয়েছে। পুরো স্টেডিয়ামকে সাজানো হয়েছে বর্ণিলভাবে। সব মিলিয়ে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশেষ এই বিপিএল উদ্বোধন হয়।

    সাতটি দলের অংশগ্রহণে যথাযথভাবে আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে এবারের ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএল’।

    দলগুলো হচ্ছে- ঢাকা প্লাটুন, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স, খুলনা টাইগার্স, সিলেট থান্ডার, রংপুর রেঞ্জার্স, রাজশাহী রয়্যালস ও কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। বিসিবি নিজের তত্ত্বাবধানে এবারের আসরের দলগুলো পরিচালনা করছে।

    ১১ ডিসেম্বর দুপুরে মিরপুরে চট্টগ্রাম ও সিলেট এবং সন্ধ্যায় কুমিল্লা ও রংপুর ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে বিপিএলের সপ্তম আসরের লড়াই।

  • মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণে মেধার সম্ভাবনাকে কাজে লাগান : প্রধানমন্ত্রী

    মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণে মেধার সম্ভাবনাকে কাজে লাগান : প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণে বিশেষ করে যুবসমাজের বিদ্যমান ব্যাপক মেধার সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

    তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রচুর সংখ্যক মেধাবী লোকজন রয়েছে এবং মেধার বিবেচনায় আমরা অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছি। মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণে এই মেধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে আমাদেরকে বিশ্বের দরবারে একটি মর্যাদার আসন করে নিতে হবে।’

    প্রধানমন্ত্রী আজ এখানে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৭ ও ২০১৮’ বিতরণকালে এই বিষয়টির ওপর বিশেষ মনোযোগ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

    বাংলাদেশের শিল্পীরা প্রতিবেশী দেশে গিয়ে ভাল কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদেরকে আমাদের চলচ্চিত্রের প্রতি অন্যান্য দেশকে আকর্ষণ করতে একই কাজ এমনকি আরো ভালো করতে হবে।’ তিনি সকল পুরস্কার বিজয়ীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের ভালো কাজের স্বীকৃতি দিতে এবং আপনাদের আরো সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগাতে এই পুরস্কার।’

    প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সময়কে ডিজিটাল সময় উল্লেখ করে আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে আরো বেশি মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণে যুবসমাজের মধ্যে নিহিত মেধা, সৃজনশীলতা ও ধ্যান-ধারণাকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি ডিজিটাল দেশ। কেননা, এটি ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর উৎক্ষেপণ করেছে এবং দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

    যুবসমাজের চলচ্চিত্র নির্মাণে এগিয়ে আসাকে প্রশংসা করে তিনি তাদের মেধা বিকাশের লক্ষ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং তাঁর সরকারের প্রতিষ্ঠিত ফিল্ম ইন্সিটিটিউট থেকে মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণের ওপর যথাযথ প্রশিক্ষিণ গ্রহণের আহ্বান জানান।

    তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান ও তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় অস্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তথ্য সচিব আবদুল মালেক অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

    মন্ত্রীবর্গ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যগণ, ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাগণ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

  • ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার সবারই আছে : প্রধানমন্ত্রী

    ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার সবারই আছে : প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবারই ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আছে উল্লেখ করে বলেন, একটি রাষ্ট্র পরিচালনায় আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর সকল নাগরিক যাতে আইগত সহায়তা পায় সেজন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা- ন্যাশনাল লিগাল এইড সার্ভিসেস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিশেষ করে দরিদ্র ও নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।

    শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

    এসময়, ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায়ও মামলার রায় লেখার বিষয় বিবেচনার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু ঘটনার দ্রুততম রায় দেয়ায় বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থা বহুগুণ বেড়েছে।

    তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন। একের কাজে অন্যের হস্তক্ষেপ শান্তি ও ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত করে।

    প্রধানমন্ত্রী জানান, আসামি আনা-নেয়ায় ঝুঁকি কমাতে ভার্চুয়াল কোর্ট স্থাপনের চিন্তা রয়েছে সরকারের।

    ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর সকল নাগরিক যাতে আইনগত সহায়তা পায় সেজন্য জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা- ন্যাশনাল লিগাল এইড সার্ভিসেস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিশেষ করে দরিদ্র ও নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর খুনিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরষ্কৃত করা হয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর খুনিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরষ্কৃত করা হয়েছিল। খুনিকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করা হয়েছিল। হত্যাকারীদের নানাভাবে মদদ দেওয়া হয়েছিল। হত্যার বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি বিল জারি করা হয়। আমরা যারা ভুক্তভোগী ছিলাম আমাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগ ছিল না। সেই সময় দেশে বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে এমন অবস্থা ছিল। স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে আর কেউ বছরের পর বছর অতিবাহিত করুক আমরা তা চাই না।

    তিনি বলেন, নুসরাত (ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী) হত্যাসহ অনেক মামলার রায় দ্রুত ঘোষণায় আমি মনে করি বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। জাতির পিতার হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে অনেক বাধা ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, বাধা সত্ত্বেও আমরা এসব মামলার বিচার করতে সক্ষম হয়েছি।

    সন্ত্রাসীদের হামলায় দু’জন বিচারক নিহতের ঘটনা স্মরণ করে তিনি বলেন, বিচারকদের নিরাপত্তা সবার আগে দরকার। এজন্য আমরা বিচারকদের আবাসন ও গাড়ি সুবিধা বৃদ্ধি করেছি।

    বিচারকদের আবাসন ব্যবস্থা একটু ভিন্নভাবে তৈরি করা হয়েছে। সেখানে লাইব্রেরি, বসে চিন্তা করার মতো জায়গা রাখা হয়েছে। এছাড়া বিচার বিভাগের সক্ষমতা বাড়াতে বাজেটে পৃথক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিচারকদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন নতুন চালু করা হয়েছে ভাতা।

    ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের ধারাবাহিকতায় বিচার বিভাগেও ই-জুডিশিয়ারি ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ইংরেজিতে লেখার পাশাপাশি বাংলায়ও রায় লেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারণ ইংরেজি না জানার কারণে রায়ে কী বলা হয়েছে তা অনেকেই জানতে পারেন না।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে বিচারকদের এজলাসে বসার জায়গা ছিল না। আমরা অ্যানেক্স ভবন তৈরি করে দিয়েছি। সারা দেশে আরও বেশি বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নারী বিচারক নিয়োগের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে আগে নারী বিচারক ছিলেন না। আমাদের সময়ে হাইকোর্টে প্রথম বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, একটি দেশের উন্নয়নে নারী-পুরুষ সকলের ভূমিকা থাকা দরকার।

    সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
    এছাড়া এতে অতিথি হিসেবে একাধিক মন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা উপস্থিত আছেন। অন্যবার রাষ্ট্রপতি থাকলেও এবারই প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি হিসেবে হয়েছেন।

    এর আগে শুধু অধস্তন আদালতের বিচারকদের অংশগ্রহণে পৃথকভাবে সম্মেলন হতো। তবে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সময় থেকে সব স্তরের বিচারকরা একত্রে কোনো সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।