Tag: বাংলাদেশ

  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ

    ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ

    সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য শেষ ম্যাচ ছিল মান বাঁচানোর লড়াই। ঘরের মাঠে ক্যারিবিয়ানরা সেটা রক্ষা করতে পারল না। শেষ ম্যাচে ৮০ রানের ব্যবধানে উইন্ডিজকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ফলে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশ করল টাইগাররা।

    সেন্ট ভিনসেন্টে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে ৪১ বলে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭২ রান করেন জাকের আলি। জবাবে খেলতে নেমে ১৬ ওভার ৪ বলে ১০৯ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

    ১৯০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। দ্বিতীয় বলেই ব্রান্ডন কিংকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন এই পেসার। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। সিরিজের সবগুলো ম্যাচেই তাসকিনের শিকার হয়েছেন কিং।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের ০.৫ ওভারে খেলার পরই হানা দেয় বৃষ্টি। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। মিনিট বিশেক পরই আবার খেলা শুরু হয়। দ্বিতীয় ওভারেই স্পিন আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। নতুন বলে আরো একবার দুর্দান্ত শুরু করেন শেখ মেহেদি। নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই উইকেটের দেখা পান। এই ডানহাতি অফ স্পিনারকে লং অন দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে বদলি ফিল্ডার আফিফ হোসেনের হাতে ধরা পড়েন জাস্টিন গ্রিভস। তাতে ৭ রান তুলতেই ২ উইকেট হারায় উইন্ডিজ।

    এরপর নিকোলাস পুরাণ ও জনসন চার্লস জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। তবে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে গিয়ে ফেরেন পুরাণ। এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে বোকা বানিয়েছেন মেহেদি। অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে নিচু হয়ে ভেতরে ঢোকা বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন পুরাণ। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১০ বলে ১৫ রান।

    পাঁচে নেমে ডাক খেয়েছেন রোস্টন চেইস। চার বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই হাসান মাহমুদের বলে মেহেদির হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। এক প্রান্ত আগলে রাখা চার্লস ফিরেছেন রান আউটের শিকার হয়ে। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৮ বলে ২৩ রান। তাতে দলীয় ফিফটির আগেই ৫ উইকেট হারায় উইন্ডিজ।

    এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা। লোয়ার মিডল অর্ডারে রভম্যান পাওয়েল-গুড়াকেশ মোতিরাও ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। খানিকটা ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল রোমারিও শেফার্ড। তবে তার ২৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস কেবলই জয়ের ব্যবধান কমিয়েছে।

    বাংলাদেশের হয়ে ২১ রানে ৩ উইকেট শিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার রিশাদ হোসেন। তাছাড়া তাসকিন ও মেহেদি দুটি করে উইকেট পেয়েছেন। আর একটি করে উইকেট পেয়েছেন তানজিম সাকিব ও হাসান মাহমুদ।

    এর আগে লিটনের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে নেমে রীতিমতো ঝড় তোলেছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে উড়ন্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। অফফর্মে থাকা লিটনকেও আজ বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল। দারুণ কিছু শটও খেলেছেন। তবে ১৪ রানের বেশি করতে পারলেন না। অধিনায়ক ফেরায় ভাঙে ৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটি।

    লিটন ফেরার পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ইমন। দুর্দান্ত ব্যাটিং করা এই ওপেনার আলজারি জোসেফকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন জাস্টিন গ্রেভসের হাতে। সাজঘরে ফেরার আগে ২১ বলে ৩৯ রান করেন তিনি। যেখানে ৪টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন ইমন। ইমনের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ ২ উইকেটে ৫৪ রান তোলে।

    তিনে নেমে ভালো শুরুর আভাস দিলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি তানজিদ তামিম। এক ছক্কায় ৯ বলে ৯ রান করেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।

    ৬৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যকফুটে গেলে আরো একবার দলের হাল ধরেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও জাকের আলি। চতুর্থ উইকেট জুটিতে শুরুতে দুজনে কিছুটা রক্ষণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাত খুলেছেন। আর রানের গতি বাড়াতে গিয়েই ফিরেছেন মিরাজ। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৩ বলে ২৯ রান।

    এদিন ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দেওয়া হয় শামিম হোসেনকে। কিন্তু গত দুই ম্যাচে দারুণ ব্যাট করলেও আজ তার ভাগ্য সহায় হয়নি। ২ রান করে জাকেরের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়েছেন। একই পথে হেটেছেন শেখ মেহেদিও।

    দুই ব্যাটারের রান আউটের সঙ্গেই ছিল জাকেরের নাম। তাই বাড়তি দায়িত্ব ছিল তার ওপর। সেটা ভালোভাবেই পুষিয়ে দিয়েছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। শুরুতে কিছুটা ধীরগতির ব্যাটিং করলেও ফিনিশিংটা করেছেন দুর্দান্ত। এক প্রান্তে রীতিমতো টর্নেডো বইয়ে দিয়ে ৩ চার ও ৬ ছক্কায় ৪১ বলে করেছেন অপরাজিত ৭২ রান।

    জাকেরকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন তানজিম সাকিব। এক চার ও এক ছক্কায় ১২ বলে ১৭ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।

  • ৬ বছর পর উইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

    ৬ বছর পর উইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

    টেস্ট সিরিজ ড্র করলেও ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। তবে সফরের শেষটা স্বস্তি নিয়ে শেষ করেছে টাইগাররা। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৭ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এই জয়ে ৬ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। সিরিজের শেষ ম্যাচ আগামী ১৮ ডিসেম্বর শুক্রবার।

    টসে হেরে আগে ব্যাট করে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ১২৯ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে এটি খুব একটা বড় নয়। স্বাগতিকদের বিপক্ষে বাংলাদেশের দরকার ছিল বল হাতে ভালো শুরুর। মাঝারি এই পুঁজি নিয়ে সেই কাজটিই দুর্দান্ত করেছে টাইগার বোলাররা। প্রথম দুই ওভারে উইকেট ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে জোড়া শিকার ধরেন তাসকিন। ওভারের প্রথম ও পঞ্চম বলে ফিরিয়েছেন ব্রান্ডন কিং (৫ বলে ৮) ও আন্দ্রে ফ্লেচারকে (৪ বলে ০)। পরের ওভারে মারকুটে জনসন চার্লসকে (১২ বলে ১৫) এলব্ডিব্লিউর ফাঁদে পেলেন শেখ মেহেদী।

    চতুর্থ ওভারে জনসন চার্লসকে (১৪) এলবিডব্লিউতে ফেরান শেখ মাহেদি। এরপরেই স্লিপে সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নিকোলাস পুরান (৫)। স্বস্তি নিয়েই পাওয়ারপ্লে শেষ করে সফরকারীরা। আগের ওভারেই রোভম্যান পাওয়েলের ক্যাচ ছাড়েন সৌম্য সরকার। কিন্তু পরের ওভারে কোনও ভুল হয়নি মিরাজের। হাসান মাহমুদের দারুণ ডেলিভারিতে তালুবন্দি হয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। শূন‍্য রানে জীবন পাওয়া পাওয়েল ৭ বলে এক চারে করেন ৬।

    ক্যারিবিয়ানদের উইকেট শিকারের মিছিলে যোগ দিয়েছেন পেসার তানজিম হাসানও। ৮.৩ ওভারে নতুন ব্যাটার রোমারিও শেফার্ডকে ক্যাচ আউটে ফিরিয়েছেন তিনি। ৫ বল খেলে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। ৪২ রানে স্বাগতিকদের ৬ উইকেট তুলে নেওয়ার পর প্রতিরোধ গড়েন রোস্টন চেজ ও আকিল হোসেন। হাসানকে টানা দুই ছক্কা মেরে ম্যাচে ফেরে উইন্ডিজ। তবে পরের ওভারেই ডেঞ্জারম্যান চেজকে তুলে নেন রিশাদ। ৩৪ বলে ৩২ রান করে থামেন চেজ। পরের বলেই মোতিকে ফেরান রিশাদ। হ্যাটট্রিকের সুযোগ থাকলেও তা হতে দেননি আলজারি জোসেফ। তবে জোসেফকে পরের ওভারেই ফিরিয়েছেন তানজিম সাকিব। শেষ পর্যন্ত ১০২ রানেই থমকে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

    বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ১৬ রান দিয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। সমান দুটি করে উইকেট নেন তানজিম সাকিব, রিশাদ হোসেন ও মেহেদি হাসান। হাসান মাহমুদের শিকার একটি।

    এর আগে টস হেরে ব্যাট করে ১১ রানেই ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী লিটন আজও ফিরে গেছেন খালি হাতেই। ১০ বলে মাত্র ৩ রান করে আকিল হোসেনের বলে স্টাম্পিং হয়ে ফিরে যান সাজঘরে। তার বিদায়ে ৮ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। লিটন ফিরতেই রোস্টন চেজের বলে বোল্ড হয়ে ৪ বলে মাত্র ২ রান করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তানজিদ তামিম।

    শুরুর ধাক্কা সামলে জুটি গড়েন সৌম্য সরকার ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দলীয় ৩৯ রানে সৌম্য সরকার ফিরে গেলে ২৮ রানে ভেঙে যায় এই জুটি। সৌম্যের বিদায়ে ৩৯ রানে ৩ উইকেট হারায় টাইগাররা। পরের ওভারেই সাজঘরে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। ২৫ বলে ২৬ রান করে আলজারি জোসেফের বলে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে ব্রান্ডন কিংয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি।

    সৌম্য আর মিরাজের পথ ধরে দ্রুত সাজঘরে ফিরে যান রিশাদ হোসেনও। ৪ বলে মাত্র ৫ রান করে গুড়াকেশ মোতির বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে মাত্র ৫২ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মোতিকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড মেহেদী। ১১ বলে ১১ রানে ফিরলেন। রান ঠিকমতো না হওয়ায় শেষ দিকে চড়াও হতে যাচ্ছিলেন জাকের আলী। কিন্তু ১৬.১ ওভারে মেরে খেলতে গিয়ে ২১ রানে তালুবন্দি হয়েছেন তিনি। ম্যাককয়ের বলে পাওয়েলের কাছে ক্যাচ দিয়েছেন জাকের আলী। তার ২০ বলের ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছয়।

    এতে ৮৮ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। ফলে শঙ্কা জাগে দলীয় ১০০ এর আগেই অলআউট হওয়ার। তবে শামীম হোসেন পাটোয়ারীর ১৭ বলে ৩৫ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রানে থামে বাংলাদেশ।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২৫ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন গুড়াকেশ মোতি। একটি করে নিয়েছেন আকিল হোসেন, রোস্টন চেজ, আলজারি জোসেফ ও ওডেব ম্যাককয়।

    এই ম্যাচে বাংলাদেশ দলে এক পরিবর্তন। আফিফ হোসেনের জায়গায় দলে ফিরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে কোনো পরিবর্তন নেই।

    বাংলাদেশ একাদশ: তানজিদ হাসান, সৌম্য সরকার, লিটন দাস (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), জাকের আলী, মেহেদী হাসান, শামীম হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান, তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: ব্রান্ডন কিং, জনসন চার্লস, নিকোলাস পুরান, রোস্টন চেজ, আন্দ্রে ফ্লেচার (উইকেটকিপার), রোভম্যান পাওয়েল (অধিনায়ক), গুড়াকেশ মোতি, আকিল হোসেন, রোমারিও শেফার্ড, আলজারি জোসেফ ও ওবেদ ম্যাকয়।

  • ভারতকে উড়িয়ে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

    ভারতকে উড়িয়ে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

    আজিজুল হাকিমের বলে আউট হলেন চেতন শর্মা। বাউন্ডারি লাইনে কালাম সিদ্দিকী ক্যাচ নিতেই আনন্দে ভাসল বাংলাদেশ। মাঠে ক্রিকেটারদের কৃতজ্ঞতার সিজদাহ। উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব বাংলাদেশের। টানা দ্বিতীয়বারের মতো যুব ক্রিকেটে এশিয়ার সেরা হলো বাংলাদেশের ইয়াং টাইগার্সরা। ফাইনালের মহারণে বাংলাদেশের ১৯৮ রানের জবাবে ভারত শেষ হলো ১৩৯ রানে।

    আরও একবার দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম। আরও একবার বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এশিয়ান ক্রিকেটের সেরা হওয়ার মাহেন্দ্রক্ষণ। এর আগে যে অবিস্মরণীয় মুহূর্ত দেশকে এনে দিয়েছিলেন মাহফুজুর রহমান রাব্বিরা, সেটাই এবার করে দেখালেন আজিজুল হক তামিমের দল। তবে এবারে আনন্দের উপলক্ষ্যটাও কিছুটা বেশি। কারণ ফাইনালে যে বাংলাদেশ উড়িয়ে দিয়েছে রেকর্ড ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকেই।

    ১৯৯ রানের ছোটো এক লক্ষ্য। কিন্তু সেটাকেই ভারতের জন্য পর্বতসমান করে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট। একের পর এক উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। থিতু হতে দেননি কাউকেই। কেপি কার্তিকেয়া ছাড়া আর কেউই সেভাবে পরীক্ষা নিতে পারেননি বাংলাদেশের বোলারদের। তবে অনেকটা সময় ধরেই বাংলাদেশকে ভুগিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান। তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে দেন টাইগারদের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম।

    অবশ্য জয়ের পথে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে ফেলেছিলেন মূলত ইকবাল হোসাইন ইমন। এক স্পেলে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন তিনিই। একই ওভারে প্রায় একইরকমের ডেলিভারিতে ফেরান কার্তিকেয়া এবং নিখিলকে। দুজনেই ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। এক ওভার পরেই ফের তার আঘাত। এই দফায় আউট হলেন হারভানশ পানগালিয়া। এই দফায়ও উইকেটের পেছনে গিয়েছে ক্যাচ। বাংলাদেশও তাতে ম্যাচে ফিরেছে দারুণভাবে।

    ১৯৮ রানের লক্ষ্যে ভারতকে শুরুতেই চাপে ফেলে দেন আল ফাহাদ। দলীয় ৪ রানেই আয়ুশ মহাত্রেকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন এই পেসার। বিপদের আভাস দিচ্ছিলেন আলোচিত কিশোর বৈভব সুর্যবংশী। কিন্তু তাকে বাড়তে দেননি মারুফ মৃধা। খানিক পরেই রিজান ফেরান আন্দ্রে সিদ্ধার্থকে।

    এরপরেই মূলত ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ভারত। কেপি কার্তিকেয়া আর মোহাম্মদ আমানের ২৯ রানের জুটি বেশ অনেকটাই এগিয়ে দেয় ভারতকে। আম্পায়ারের পক্ষ থেকে একাধিক সফট সিগন্যাল গিয়েছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। যা নিয়ে মাঠে উত্তাপও ছড়িয়েছে বেশ। কিন্তু এরপরেই ইমনের দুর্দান্ত এক স্পেল। ৭৩ রানে ৩ উইকেট থেকে ৮১ রানে ৬ উইকেট।

    এরপর কিরণ চারমোলেকে নিয়ে আমানের চেষ্টা ছিল জুটি গড়ার। তবে আল ফাহাদ ফেরান কিরণকে। উইকেটের পেছনে ব্যস্ত দিন ছিল ফরিদের। ৪টি ক্যাচ নিয়েছেন একাই। এরপরে আর বাড়েনি ভারতের ইনিংস। শেষ উইকেটে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে আউট হলেন চেতন শর্মা। এবারেও উইকেট নিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শিরোপা জয়ে যেন সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।

    এর আগে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা বিপাকেই পড়েছিল বাংলাদেশ দল। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ ক্রিকেট উপহার দিলেও ফাইনালের বিগ স্টেজে এসে ক্রিজে থিতু হতেই ভুলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ভারতের বিপক্ষে যখন বলার মতো স্কোর নেই কারো ব্যাটে, তখন লোয়ার মিডল অর্ডারের ফরিদ হাসান দায়িত্ব নিলেন দলকে বলার মতো সংগ্রহ এনে দিতে। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন মারুফ মৃধাকে।

    ইনিংসের শুরু থেকেই রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে বাংলাদেশের যুবাদের। ৭ম ওভারে কালাম সিদ্দিকী আউটের আগে ১৬ বলে করেছিলেন মোটে ১ রান। সেটাই হয়ত ইঙ্গিত দেয়, ব্যাটিং পিচে ঠিক কতটা সংগ্রাম করেছে বাংলাদেশ। তবে তিনে নামা আজিজুল হাকিম তামিম কিছুটা হতাশই করেছেন। পুরো আসরে অধিনায়ক তামিম মুগ্ধতা ছড়ালেও ফাইনালে করতে পেরেছেন মোটে ১৬ রান। আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরারও ২০ রানের বেশি করতে পারেননি।

    ৬৬ রানে অধিনায়ক আজিজুল তামিম বিদায়ের পরেই বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডকে এগিয়ে নিয়েছেন দিনের সেরা দুই ব্যাটার রিজান এবং শিহাব জেমস। ৬৭ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় শিহাব করেছেন ৪০ রান। দলীয় ১২৮ রানে বিদায় নেন আয়ুশ মহাত্রের বলে। দেবাশীষ এসেই ফিরেছেন ৩ বলে ১ রান করে। ১৫৫ রানে ফিরে যান রিজান নিজেও। মিস করেছেন ফিফটি।

    সব ব্যাটিং বিপর্যয়েই নাকি একটা করে রানআউট থাকে। ক্রিকেটের সেই অলিখিত নিয়ম মেনে ১৬৫ রানের মাথায় রান আউটের শিকার হন সামিউন বশির। দায়িত্ব নিয়ে পারেননি ফাহাদও। ফরিদ হাসান যখন একাকী দাঁড়িয়ে, তখন ১৯ বলে ১১ রান করে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন মারুফ মৃধা। নবম উইকেটে তারা যোগ করলেন ৩০ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেমেছে ১৯৮ রানে।

    কিন্তু জয়ের জন্য শেষের ওই রানটুকুই হয়ে উঠেছে যথেষ্ট। শুরু থেকেই ভারতকে চাপের মাঝে রাখা বাংলাদেশ দুবাইয়ে প্রবাসী সমর্থকদের মুখে হাসি এনে দিয়েছেন। বাংলাদেশ পেল এশিয়ানদের যুব ক্রিকেটে নিজেদের টানা দ্বিতীয় শিরোপা।

  • ভারতের জনগণকে উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশের ১৪৫ নাগরিকের বিবৃতি

    ভারতের জনগণকে উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশের ১৪৫ নাগরিকের বিবৃতি

    দেশের ১৪৫ জন নাগরিক এক বিবৃতিতে ভারতের জনগণকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘সাধারণ জনগণের জীবনের সংকট বিচার করলে দুই দেশের মধ্যে মূলত কোনো পার্থক্য নেই। আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক প্রবণতা আর শক্তির বিরুদ্ধে আমরা লড়ব, আপনারাও আপনাদের দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন।’

    ‘ভারতের জনগণের কাছে আমাদের আবেদন’ শিরোনামে আজ (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে দেশের ১৪৫ জন নাগরিক এসব কথা বলেন।

    বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ৷

    ভারতের জনগণের উদ্দেশে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা এমন এক সংকটপূর্ণ সময়ে অবস্থান করছি, যখন ভারত ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক শোচনীয় অবস্থায় এবং কিছু ভারতীয় উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির ক্রমাগত উসকানি এ অঞ্চলের জনগণের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে চিড় ধরাতে চাইছে। ভারতের জনগণ ও ভারত সরকারকে আমরা কখনোই এক করে দেখি না। আমরা জানি, ভারতের জনগণও হিন্দুত্ববাদী শক্তি ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়ছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন লড়াই করে তার পতন ঘটিয়েছি। জুলাই-আগস্টের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের সময় আপনারা আমাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কর্মসূচি পালন করেছেন। আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আপনাদের আর আপনাদের আন্দোলনে আমাদের সংহতি প্রকাশের ধারাবাহিকতা অনেক দিনের।’

    সাম্প্রদায়িকতাকে ভারতীয় উপমহাদেশের বড় সমস্যা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রদায়িকতা মানুষে মানুষে বিভাজন ঘটায়, ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি করে বিভেদ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কাজের অধিকার, নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, নারীর প্রতি সহিংসতা এবং জনজীবনের আরও অনেক জলজ্যান্ত সমস্যা আড়াল করার জন্য উপমহাদেশের প্রত্যেক শাসকগোষ্ঠীই সাম্প্রদায়িকতার হাতিয়ার কাজে লাগিয়েছে। তারা এই কৌশল খাটিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ ও সংখ্যালঘু উভয় জনগোষ্ঠীর ভোট পাওয়াটা নিশ্চিত করতে চায়। বিশেষত রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় সংখ্যালঘু জনগণের ওপর হামলার ঘটনা বারবার ঘটতে দেখা যায়।

    বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সারা বাংলাদেশে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, জমি দখল, মন্দির ভাঙচুর ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এবং ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর সারা দেশে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

    এতে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের প্রেরণায় অনেক রাজনৈতিক দল হিন্দু ঘরবাড়ি ও মন্দিরা পাহারায় এগিয়ে আসে এবং সম্প্রীতির নতুন নতুন নজির স্থাপন করে। এ ছাড়া ভারতের জাতীয় পতাকা মাড়ানোর ঘটনায়ও এ দেশের গণতন্ত্রমনা মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু ভারতের অনেকগুলো সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশ সম্পর্কে আসল তথ্য প্রচার করেনি, এখনও করছে না। ভারতের এক সংবাদমাধ্যম ঢাকা-আগরতলা-ঢাকা রুটে একটি দুর্ঘটনাকে পরিকল্পিত হামলা বলে প্রচার করে। সেই প্রচারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে আক্রমণ হয়, বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়।

    সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ভারত সরকার দুঃখ প্রকাশ করলেও মিথ্যা প্রচারণা বন্ধের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা চাই, বাংলাদেশের প্রকৃত ঘটনা যথাযথভাবে দেখানো হোক। এ ধরনের প্রচারণা থেকে যেকোনো দেশেই লাভবান হয় সাম্প্রদায়িক শক্তি, লাভবান হয় শাসকগোষ্ঠী।’

    সম্প্রতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার হওয়ার পর ভারত সরকার যে ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, তাতে অবাক হয়েছেন বলে নাগরিকদের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ‘চিন্ময় কৃষ্ণের বিচার পাওয়ার অধিকারকে আমরা সমর্থন করি, সেটা সবারই আছে। কিন্তু ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেভাবে তড়িঘড়ি তার পক্ষে বিবৃতি দিল, তা বিস্ময়কর। তাকে আদালতে উপস্থিত করার দিন ব্যাপক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়। এ দেশের জনমানুষের সম্মিলিত চেষ্টায় এই ঘটনার অজুহাতে বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’

    বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠী বরাবরই অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে। এ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং সব ধরনের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ভূমিকা উজ্জ্বল। জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানেও হিন্দু জনসাধারণের অনেকেই লড়াইয়ে শামিল হয়েছেন, প্রাণ দিয়েছেন৷

    শেষে ভারতের জনগণের উদ্দেশে বাংলাদেশের ১৪৫ নাগরিক বলেছেন, ‘আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক প্রবণতা ও শক্তির বিরুদ্ধে আমরা লড়ব, আপনারাও আপনাদের দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। আপনাদের দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের আকাঙ্ক্ষার মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে আপনারা এই চক্রান্ত প্রতিহত করবেন। এ লড়াই ভারতের বৃহৎ পুঁজির শোষণ-লুণ্ঠন আর নিপীড়ন-নির্যাতন-আধিপত্যের বিরুদ্ধে উভয় দেশের জনগণের নিরন্তর লড়াই; বিভেদ, বিদ্বেষ ও ধর্মকেন্দ্রিক স্বার্থান্বেষী চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ লড়াই। এই লড়াইয়ে আমরা শেষ পর্যন্ত জয়ী হব।’

    বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন- আনু মুহাম্মদ, সলিমুল্লাহ খান, সাঈদ ফেরদৌস, হারুন-অর-রশীদ, স্বাধীন সেন, গীতি আরা নাসরীন, ফাহমিদুল হক, কামরুল হাসান মামুন, তুহিন ওয়াদুদ, সামিনা লুৎফা, মোশরেফা মিশু, সীমা দত্ত, আলতাফ পারভেজ, কল্লোল মোস্তফা, আশরাফ কায়সার, মাহা মীর্জা, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, মানজুর-আল-মতিন, সায়ান, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, কামার আহমাদ সাইমন, প্রীতম দাশ, সারোয়ার তুষার, সালমান সিদ্দিকী, মেঘমল্লার বসু প্রমুখ।

  • ভারতীয়দের জন্য ভিসা সীমিত করল বাংলাদেশ

    ভারতীয়দের জন্য ভিসা সীমিত করল বাংলাদেশ

    এবার ভারতীয়দের জন্য ভিসা সীমিত করেছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার গোপন এক দাপ্তরিক চিঠির মাধ্যমে কলকাতা ডেপুটি হাইকমিশনকে ভারতীয়দের ঢালাওভাবে ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে এখনো কিছুই জানানো হয়নি।

    আজ (শুক্রবার) থেকে সেই নির্দেশ কার্যকর শুরু করেছে করেছে কলকাতা হাইকমিশন।

    মিশন সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে ভিসা দেওয়া কমানোর নির্দেশ এসেছে কলকাতায়। শুক্রবার থেকেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে।

    তবে দিল্লি বা আসাম মিশনের ক্ষেত্রে এমন কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি।

    এর আগে ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে দুর্বৃত্তদের হামলা ও ভাঙচুরের পর সেখানে সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত করে বাংলাদেশ সরকার। বন্ধ করে দেওয়া হয় ভারতীয়দের ভিসা দেওয়ার সব প্রক্রিয়া।

  • পাকিস্তানকে উড়িয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

    পাকিস্তানকে উড়িয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

    টানা দ্বিতীয়বার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। ইকবাল হোসেন ইমন ও মারুফ মৃধাদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে মাত্র ১১৬ রানেই গুটিয়ে দেয় যুব টাইগাররা। গ্রুপপর্বে তিনটি ম্যাচ জিতে আসা পাকিস্তানের বিপক্ষে স্বল্প পুঁজিতেও বাংলাদেশকে সংগ্রাম করতে হবে বলে মনে করা হচ্ছিল। অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম ঝোড়ো ফিফটিতে সেই শঙ্কা উড়িয়েছেন, জয় তুলে নিয়েছেন ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে।

    দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ (শুক্রবার) যুব এশিয়া কাপের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় যুব টাইগাররা দেখেশুনে শুরুর পর স্ট্রাইকরেট বাড়িয়েছেন প্রয়োজনমতো। মাত্র ৩৯ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নিয়েছেন গ্রুপপর্বে একটি করে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি করা তামিম। ফলে বাংলাদেশও ওয়ানডে ফরম্যাটের ম্যাচটি মাত্র ২২.১ ওভারেই জিতেছে।

    পাকিস্তানি যুবাদের লক্ষ্য তাড়ায় টাইগারদের শুরুটা ছিল খুবই ধীরগতির। অবশ্য পাকিস্তানি বোলারদের বোলিং তোপও ছিল দেখার মতো। ফলে প্রথম ৪ ওভারে বাংলাদেশ মাত্র ৪ রান তোলে। ষষ্ঠ ওভারে দলীয় ২০ রানে আউট হয়ে যান ওপেনার কালাম সিদ্দিকী অ্যালেন। ১৪ বল খেলেও তিনি রানের খাতা খুলতে পারেননি। আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরার ১৭ রানে বিদায় নেন দলীয় ২৪ রানে।

  • ১৫ বছর পর উইন্ডিজে টেস্ট জয়, সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ

    ১৫ বছর পর উইন্ডিজে টেস্ট জয়, সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ

    ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হার দিয়ে শুরু করা বাংলাদেশের সামনে দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না। আন্টিগাতে প্রথম ম্যাচে না পারলেও জ্যামাইকায় কিংস্টন টেস্টে তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে ক্যারিবিয়ানদের ১০১ রানে হারিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চক্রটাও তাতে বাংলাদেশ জয় দিয়েই শেষ করেছে। এই জয়ে ১-১ সমতায় সিরিজ শেষ করলো বাংলাদেশ।

    কিংসটনে ১০১ রানের জয়ের মাধ্যমে ১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে জয় পেলো টাইগাররা। সবশেষ ২০০৯ সালে ক্যারিবিয়ান দ্বীপ থেকে টেস্টে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই সিরিজ দিয়েই অধিনায়কত্বের শুরু করেছিলেন সাকিব আল হাসান। সেই সাকিব এখন ক্যারিয়ারের শেষ দেখছেন। এমন জয়ে তাই উচ্ছ্বসিত হওয়াটাই বেশ স্বাভাবিক।

    কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট জিততে হলে ইতিহাস গড়তে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এই মাঠে ২১২ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই। এবার উইন্ডিজের লক্ষ্য ছিল ২৮৭ রানের। টপ-অর্ডারের শুরুটা নেহাত মন্দ ছিল না। তবে অভিজ্ঞ তাইজুলের ঘূর্ণি আরও একবার পথ দেখাল বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮৫ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা।

    জ্যামাইকায় কিংস্টন টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে নাহিদ রানার ৫ উইকেট শিকারে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দেশের বাইরে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটিই ছিল সর্বনিম্ন রানের স্কোর। ১৮ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা।

    দলের হয়ে চতুর্থ দিনে অনেকটা একাই লড়াই করেছেন জাকের আলি। তবে ৯ রানের জন্য মিস করেছেন সেঞ্চুরি। ৫ ছক্কা ও ৮ চারে ৯১ রান করেন জাকের। তার ব্যাটে ভর করে ২৬৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জয়ের জন্য ক্যারিবিয়ানদের টার্গেট দাঁড়ায় ২৮৭ রানের।

    ২৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৫৭ রানের মধ্যে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখান তাইজুল ও তাসকিন আহমেদ। মিকাইল লুইস ৬ ও কাসি কার্টি ১৪ রান করে আউট হন। তবে কেভাম হজ ও ক্রেইগ ব্রাফেটের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই দুই ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান তাইজুল। ব্রাফেট ৪৩ ও হজ ৫৫ রান করে আউট হন।

    তাদের বিদায়ের পর আর কেউ থিতু হতে পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ১৮৫ রানে অলআউট হয় ক্যারিবিয়ানরা। তাইজুল নেন ৫টি উইকেট। এ ছাড়া তাসকিন ও হাসান মাহমুদ নেন ২টি করে উইকেট।

  • শারজাহতে ইতিহাস গড়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ

    শারজাহতে ইতিহাস গড়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ

    শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইতিহাসটা বাংলাদেশের পক্ষে ছিল না কখনোই। এর আগে খেলা সব ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই হারের স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেও অনেকটা এগিয়ে থেকে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে হারতে হয় বাংলাদেশকে। তবে এবারে আর ভুল হয়নি। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটায় শেষ হাসি বাংলাদেশের।

    ব্যাট হাতে নাজমুল শান্ত, জাকের আলী অনিকের পর বল হাতে দারুণ পারফর্ম করে ৬৮ রানের জয় তুলে নিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তাতে শারজাহ স্টেডিয়ামে প্রথম জয়ের পাশাপাশি তিন ম্যাচের সিরিজেও সমতায় ফিরেছে দল। দুই ম্যাচ শেষে আছে ১-১ সমতা। ১১ তারিখের ম্যাচটায় হবে সিরিজ নির্ধারণ।

    শারজাহর তুলনামূলক ধীরগতির উইকেটে বাংলাদেশের স্কোরটা ছিল বেশ চলনসই। স্কোরবোর্ডে ২৫২ রানের জুটি থেকে নির্ভার হওয়ার সুযোগ ছিল। চতুর্থ ওভারে রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ফিরিয়ে সেই ইঙ্গিতটাও দিয়ে রেখেছিলেন তাসকিন আহমেদ। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে গুরবাজ ক্যাচ দেন স্লিপে থাকা সৌম্যর হাতে। এরপরেই বাংলাদেশ ভক্তদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছিলেন সেদিকুল্লাহ আতাল এবং রহমত শাহ।

    মাঝে জাকের আলী অনিক স্ট্যাম্পের পেছনে স্ট্যাম্পিং এবং ক্যাচ দুইই ছেড়েছেন। ৫২ রানের সেই জুটি ভেঙেছেন নাসুম আহমেদ। মিরাজ নিয়েছিলেন দারুণ এক ক্যাচ। অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহিদী আর রহমত শাহর পরের জুটি ৪৩ রানের। তখনো আফগানিস্তানের হাতেই ছিল ম্যাচ।

    যদিও দৃশ্যপট বদল হতে সময় লাগলো না খুব একটা। একটা উইকেট যেন অদৃশ্য সুতো হয়ে টান দিলো আরও দুই উইকেটকে। ১১৮ রানে হাসমতউল্লাহ আউটের পরেই নাসুমের ওভারে আফগানিস্তান হারালো আরও দুই উইকেট। ১১৮ রানে ২ উইকেট থেকে ১১৯ রানে ৫ উইকেট। বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরে সেখানেই।

    মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ক্যাচ নিয়েছিলেন শরীফুল ইসলাম। হাশমতউল্লাহ চেয়েছিলেন বিগ শট খেলতে। কিন্তু ফাইন লেগে একেবারেই বাউন্ডারি লাইনে থাকা শরিফুলের হাতে জমা পড়ে ক্যাচ ক্যাচ। মোস্তাফিজ উইকেট পেয়েছিলেন পঞ্চম বলে। নাসুমের করা পরের ওভারে রহমত শাহ ১ রান নেন। এর পরের বলেই আজমতউল্লাহকে আউট করেন নাসুম।

    সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরেন আজমতউল্লাহ। দুই বল বিরতি দিয়েই হাস্যকর রানআউট ফিফটি করা রহমত শাহ। ভুল বুঝাবুঝিতে দুই ব্যাটারই চলে যান অপরপ্রান্তে। জাকির বল ঠাণ্ডা মাথায় পাঠালেন এই প্রান্তে থাকা নাসুমের হাতে। ৬ বলের মাথায় নিজেদের তৃতীয় উইকেট পেল বাংলাদেশ। তবে ক্রিজে আগে গিয়েছিলেন গুলবাদিন। আউট হতে হয় রহমত শাহকে।

    গুলবাদিন বিধ্বংসী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। শরীফুলের ওভারে তিন বলে এসেছিল ১২ রান। পরের বলেই অবশ্য শরিফুলের বুদ্ধিদীপ্ত চালে ক্যাচ দিলেন তাওহীদ হৃদয়কে। পরের ওভারেই মিরাজের দারুণ সুইংয়ে পরাস্ত মোহাম্মদ নবী। সরাসরি বোল্ডে ফিরতে হলো তাকে। রশিদ খানকে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজ। চিরচেনা স্লোয়ারে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন আফগান অলরাউন্ডারকে। আর শেষ উইকেট গিয়েছে নাসুমের ঝুলিতেই। আল্লাহ গাজানফারকে বোল্ড করে ৬৮ রানের জয় নিশ্চিত করেন এই স্পিনার।

    এর আগে শারজাহতে এদিন টসে জিতেই ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শুরুটা খানিক ধীরগতির হলেও এদিন শুরু থেকেই শক্ত ভিত করেছিল বাংলাদেশের টপ অর্ডার। তানজিদ তামিম ২২ রানে ফিরলেও সৌম্য সরকার আর নাজমুল শান্তর জুটি থেকে আসে ৭১ রান। সৌম্য ৩৫ রানে ফিরলেও ফিফটি ঠিকই তুলে নেন অধিনায়ক শান্ত। তৃতীয় উইকেটে তাকে সঙ্গ দিয়ে ৫১ রানের জুটি করেছিলেন মিরাজ।

    যদিও এদিন আরেকবার ব্যাটিং ধস নেমেছিল বাংলাদেশের ইনিংসে। ১৭৪ রানে ৩ উইকেট থেকে ১৮৪ রানে ৬ উইকেট হতে সময় লাগেনি। নানগালিয়ে খারোতের তিন আঘাতে বিধ্বস্ত বাংলাদেশের মিডলঅর্ডার। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ৭৬ রানের পরেও সেই সময় কিছুটা বিবর্ণই ছিল বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড। এরপরেই আসে জাকের আলী অনিক এবং নাসুম আহমেদের দুই ক্যামিও।

    এক চার এবং দুই ছক্কায় নাসুম আহমেদ করেন ২৪ বলে ২৫ রান। আল্লাহ গাজানফারের ধীরগতির বলে যখন ফিরেছেন নাসুম, দলের স্কোর তখন ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩০। তবে ৭ম উইকেট জুটিতে ততক্ষণে ৪১ বলে ৪৬ রান তুলে ফেলেছিল বাংলাদেশ। সেটাই শেষ পর্যন্ত হয়ে থাকল বাংলাদেশ ইনিংসের টার্নিং পয়েন্ট। জাকের আলী অনিক শেষদিকে চেষ্টা করছেন। সেই চেষ্টার সুবাদেই বাংলাদেশ পার করল ২৫০ রানের ল্যান্ডমার্ক।

    জাকেরের ব্যাট থেকে এসেছে কার্যকরী ৩৭ রান। ৩ ছক্কা আর ১ চারে গড়া তার এই ইনিংসের সুবাদেই বাংলাদেশের স্কোর হলো ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান। সিরিজে সমতা আর শারজাহতে নিজেদের প্রথম জয়ের জন্য সেটাই হয়ে ছিল যথেষ্ট।

  • বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি সম্মান দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

    বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি সম্মান দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

    যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি সম্মান দেখতে চায় এবং যেকোনো হামলার জন্য যেন দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয়।

    গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ওয়াশিংটনে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন দেখতে চাই।

    মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায় যে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী যেকোনো হামলায় জড়িতদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এবং বিশ্বের যেকোনো জায়গার ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান একই রকম।

  • প্রথম ওয়ানডেতে আফগানদের কাছে লজ্জানক হার বাংলাদেশের

    প্রথম ওয়ানডেতে আফগানদের কাছে লজ্জানক হার বাংলাদেশের

    নাজমুল হোসেন শান্ত এবং সৌম্য সরকারের জুটিটা যা একটু আশা জুগিয়েছিলো। এছাড়া ব্যাটিংয়ের পুরো সময়টাতে আফগান বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তাদের নিদারুণ ব্যর্থতায় আরও একটি ম্যাচ হারতে হলো বাংলাদেশকে।

    আরব আমিরাতের শারজায় তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে আফগানদের কাছে ৯২ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয়ের লজ্জায় ডুবতে হরো নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে।

    টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান সংগ্রহ করেছিলো ২৩৫ রান। ২৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩৪.৩ ওভারে বাংলাদেশ অলআউট ১৪৩ রানে। মূলত আল্লাহ মোহাম্মদ গজনফারের ঘূর্ণিতেই কুপোকাত হতে হয়েছে টাইগার ব্যাটারদের। ২৬ রান দিয়ে একাই ৬ উইকেটে নিয়েছে ১৮ বছর বয়সী এই তরুণ।

  • বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের সমর্থন অব্যাহত রাখার আশ্বাস শির

    বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের সমর্থন অব্যাহত রাখার আশ্বাস শির

    বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের সমর্থন অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

    বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ আশ্বাস দেন তিনি।

    চীনের প্রেসিডেন্ট শি বলেন, চীন বাংলাদেশকে চারটি উপায়ে- অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, রেয়াতি ঋণ ও বাণিজ্যিক ঋণ দিয়ে সাহায্য করবে। বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তার জন্য কীভাবে চার ধরনের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে- সে ব্যাপারে দুই দেশের কারিগরি কমিটি একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবে।

    তিনি বলেন, চীন থেকে একটি কারিগরি কমিটি শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে। আমরা মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করব। মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

    দুই নেতার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে অবহিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দুই নেতার মধ্যে অত্যন্ত সফল আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের আবেদন জানালে চীনা প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তারা বাংলাদেশে ক্রমাগত আরও বিনিয়োগ করতে চায়।

    প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু ও কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের মতো কিছু আইকনিক অবকাঠামো নির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য চীনের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান।

    বৈঠকে উভয় নেতা দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। শি জিনপিং জানান, ‘আমরা, দুটি দেশ, আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করতে যাচ্ছি। এই উদযাপন উপলক্ষে আমরা বিদ্যমান কৌশলগত সম্পর্ককে দ্বিতীয় ধাপে নিয়ে যেতে চাই।’ এ সময় শেখ হাসিনা দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

    প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বাস্তবায়নাধীন আইটি ভিলেজগুলোতে আরও বিনিয়োগ করার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানান। জবাবে শি বলেন, তারা বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে চান।

  • বাংলাদেশে চার ধরনের অর্থনৈতিক সুবিধা দেওয়ার প্রত্যয় শি জিনপিংয়ের

    বাংলাদেশে চার ধরনের অর্থনৈতিক সুবিধা দেওয়ার প্রত্যয় শি জিনপিংয়ের

    চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক সুবিধার প্যাকেজ ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দৃঢ় সহায়তা দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

    বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে বেইজিংয়ের গ্রেট হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি বাংলাদেশকে গ্রান্ট বা সহায়তা, সুদমুক্ত ঋণ, কনসেশনাল বা ছাড়যুক্ত ঋণ ও বাণিজ্যিক ঋণ -এই চার ধরনের অর্থনৈতিক সুবিধার একটি প্যাকেজ দেওয়ার ঘোষণা দেন।

    সেইসঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট নিজে থেকেই বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়ার কথা বলেন। তিনি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে এবং প্রয়োজনে আরাকান সেনাদলের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানান।

    বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বেইজিংয়ের সেন্ট রেজিস হোটেলে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি ও প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।

    সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই চীন সফর শতভাগ সফল হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট বৈঠকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নকে অভূতপূর্ব বর্ণনা করেন এবং চীনা সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান। শি জিনপিং বলেন, ২০২৫ সালে চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তিতে সম্পর্ককে দ্বিতীয় পর্যায়ে উন্নীত করে এ উদযাপনকে অর্থবহ করতে তারা প্রস্তুত।

    চীনের প্রেসিডেন্ট ‘গুড গভর্নেন্স নিডস গুড পার্টি’ বা ‘সুশাসনের জন্য ভালো দল’ মন্তব্য করে চীনের কম্যুনিস্ট পার্টির সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যোগাযোগ বৃদ্ধি ও বন্ধনের ওপর জোর দেন, উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পাশাপাশি শি জিনপিং বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ, কারিগরি, কৃষি ও উৎপাদন খাতে সহায়তা এবং ছাত্রবৃত্তি বৃদ্ধির আশ্বাস দেন।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চীনের জন্য একক বরাদ্দ ৮০০ একর জমিসহ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও আইটি ভিলেজগুলোতে বিনিয়োগবৃদ্ধি এবং বাংলাদেশ থেকে পাট ও চামড়াজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিক, আম ও অন্যান্য ফলসহ পণ্য আমদানি বৃদ্ধির মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার আহ্বান জানালে চীনের প্রেসিডেন্ট ইতিবাচক সাড়া দেন।