Tag: বাংলাদেশ

  • বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ শতাংশ, মূল্যস্ফীতি কমবে : আইএমএফ

    বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ শতাংশ, মূল্যস্ফীতি কমবে : আইএমএফ

    আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূবাভাস সংশোধন করে ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। তবে এসময়ে মূল্যস্ফীতির হার কমে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ হবে।

    এর আগে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এ বছরের জন্য ৬ দশমিক ৫ শতাংশের পূর্বাভাস দিয়েছিল আইএমএফ।

    আজ মঙ্গলবার আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে ওই পূর্বাভাস সংশোধন করে ৬ শতাংশ হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

    প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়ার পাশাপাশি আইএমএফ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা ৭ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ২০২৮ সালে তা ৫ দশমিক ৫ শতাংশে নামতে পারে। এছাড়া চলতি হিসাবে ভারসাম্যে ঘাটতি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আইএমএফ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে চলতি হিসাবের ঘাটতি জিডিপির শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।

    সংস্থাটি বলেছে, করোনাভাইরাস মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিজনিত সংকট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে বিশ্ব অর্থনীতি। যুদ্ধের কারণে খাদ্য ও জ্বালানি বাজার বিঘ্নিত হয়েছে; সেই সঙ্গে উচ্চ মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে নীতি সুদহার অভূতপূর্ব হারে বাড়ানো হয়েছে। এসব কারণে বিশ্ব অর্থনীতি গতি হারালেও থমকে যায়নি। প্রবৃদ্ধি যে সবখানে একই হারে হচ্ছে তা নয়; সেই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে মতানৈক্য বাড়ছে।

    এ পরিস্থিতিতে আইএমএফের পূর্বাভাস হলো— চলতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার ৩ শতাংশে নেমে আসবে। আগের বছরে যা ছিল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে তা ২ দশমিক ৯ শতাংশে নামতে পারে। এটা ঐতিহাসিক গড় মানের চেয়ে কম। তবে চলতি বছর সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির হারও কমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। ২০২৩ সালে বৈশ্বিক গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়াতে পারে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। আগের বছরে যা ছিল ৯ দশমিক ২ শতাংশ। সেই সঙ্গে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্য ব্যতীত মূল্যস্ফীতির যে হিসাব, সেই মূল্যস্ফীতির হারও কমে আসবে।

  • টাইগারদের বিপক্ষে ১৩৭ রানের বিশাল জয় ইংল্যান্ডের

    টাইগারদের বিপক্ষে ১৩৭ রানের বিশাল জয় ইংল্যান্ডের

    ২০১১ এবং ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানোর সুখস্মৃতি নিয়েই আজ বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে ইংলিশদের বিপক্ষে নেমেছিল বাংলাদেশ। গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ডেভিড মালানের ১৪০ রানের ইনিংসে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৬৪ রানের সংগ্রহ পায় জস বাটলারের দল। পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইংলিশ বোলারদের তোপে ১০ বলে হাতে রেখেই ২২৭ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। এতে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ম্যাচে টাইগারদের বিপক্ষে ১৩৭ রানের বিশাল জয় পায় জস বাটলারের দল।

    লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশের হয়ে যথারীতি ইনিংস উদ্বোধনে নামেন লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম। ম্যাচের প্রথম ওভারেই তিন বাউন্ডারিতে ১২ রান তুলে নেন লিটন। তবে দ্বিতীয় ওভারেই খেই হারায় টাইগাররা। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে রিস টপলির বলে জনি বেয়ারস্টোর তালুবন্দী হয়েছেন তামিম। আউট হওয়ার আগে ১ রান করেন তিনি।এরপর উইকেটে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে রানের খাতা খোলার আগেই টপলির বলে লিভিংস্টোনকে ক্যাচ দেন তিনি। ম্যাচের শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে রীতিমতো চাপে পরা বাংলাদেশ। পরে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে দলীয় ইনিংস এগিয়ে নিচ্ছিলেন লিটন।

    তবে টাইগার দলপতিও ব্যর্থ ইনিংস বড় করতে। দলীয় ২৬ রানে টপলির বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। আউট হবার আগে ৯ বলে ১ রান করেন তিনি। চতুর্থ উইকেটে ব্যাট করতে আসে বাংলাদেশে ভরসার নাম মিরাজ। তবে আজ ইনিংস বড় করতে পারেননি এই অলরাউন্ডার। দলীয় ৪৯ রানে ক্রিস ওকসের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। প্যাভিলিয়নের পথ ধরার আগে ৭ বলে ৮ করেন তিনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে টাইগাররা।

    সেখান থেকে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৬২ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন লিটন। একই সঙ্গে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটিও তুলে নেন টাইগার ওপেনার। অবশ্য সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে ক্রিস ওকসের বলে বাটলারের তালুবন্দী হন লিটন। আউট হওয়ার আগে ৭৬ রান করেন এ ডানহাতি ব্যাটার। তার বিদায়ে উইকেটে আসেন তাওহীদ হৃদয়। হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে দলীয় ইনিংস এগিয়ে নিচ্ছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিক।

    দেখেশুনে খেলে ম্যাচের ৩০তম ওভারের তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে ওয়ানডে ফরম্যাটে নিজের ৪৭তম ফিফটি হাঁকান মুশি। অবশ্য ফিফটির ইনিংস লম্বা করতে পারেননি এই ডানহাতি ব্যাটার। রিস টপলির বলে ডিপ থার্ডে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আদিল রশিদের তালুবন্দী হন মুশি। আউট হওয়ার আগে ৫১ রান করেন তিনি। শেষ দিকে হৃদয়ের ৩৯ ও শেখ মেহেদীর ১৪ রান কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে টাইগারদের। শেষ পর্যন্ত ১০ বল হাতে রেখেই ২২৭ রানে অলআউট হয় টাইগাররা।

  • আফগানিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের

    আফগানিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের

    বিশ্বকাপ মিশনে দেশ ছাড়ার আগের দিন দল ঘোষণা, মাস দুয়েক আগে অধিনায়কত্বে পরিবর্তন, ওপেনিং জুটিতে মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো পরিবর্তন সবমিলিয়ে কিছুটা হলেও মানসিকভাবে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তবে মাঠ আর মাঠের বাইরের এসব বিতর্ক পারফরম্যান্স দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে টাইগাররা। আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে ভারত মিশনের শুরুটা রাঙাল সাকিব আল হাসানের দল।

    আজ (শনিবার) ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৭ ওভার ২ বলে ১৫৬ রান তুলে অলআউট হয় আফগানিস্তান। সর্বোচ্চ ৪৭ রান এসেছে রহমানুল্লাহ গুরবাজের ব্যাট থেকে। ৩টি করে উইকেট শিকার করেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসান। জবাবে খেলতে নেমে ৩৪ ওভার ৪ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। টাইগারদের হয়ে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

    ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। দেখে-শুনে খেলছিলেন দুই ওপেনার লিটন দাস-তানজিদ তামিম। কিন্তু ৫ম ওভারেই ঘটল বিপত্তি! ফজল হক ফারুকির করা বল কাভারে ঠেলে রান নেওয়ার জন্য সামনের পায়ে একটু ঝুঁকেছিলেন লিটন। রান নেওয়ার চেষ্টা করেননি তিনি। তবে অন্য প্রান্ত থেকে তামিম ততক্ষণে দৌড়ে উইকেটের মাঝে চলে এসেছিলেন, লিটনের ডাক না শুনেই। নজিবুল্লাহ জাদরানের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হন তামিম।

    সর্বশেষ দুই বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক লিটন। অথচ এই ওপেনারই গত কয়েক মাস ধরে ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী। অবশ্য প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করে ফেরার আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু মূল ম্যাচে এসে আবারও ব্যর্থ হলেন। তামিমের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না লিটনও। ফারুকিকে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে আফ স্টাম্পের অনেক বাইরে থেকে বল টেনে এনে বোল্ড হয়েছেন। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৮ বলে ১৩ রান।

    দ্রুতই সাজঘরে ফিরেছিলেন দুই ওপেনার। তবে তিনে নেমে দলের হাল ধরেন মিরাজ। শান্তকে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে জয়ের ভীত গড়ে দেন তিনি। তুলে নেন ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরিও। এই মাইলফলক ছুঁতে তিনি খরচ করেছেন ৫৮ বল। ফিফটির পরপরই ফিরতে পারতেন মিরাজ। ২৫তম ওভারের তৃতীয় বলটি গুগলি করেছিলেন মুজিব। লাইন মিস করেন মিরাজ। বল প্যাডে আঘাত হানলে আম্পায়ার আউট দেন। কিছুটা সময় নিয়ে আম্পায়ারের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন এই ব্যাটার। রিভিউয়ে দেখা যায় বল প্রথমে ব্যাটে লেগেছে এরপর প্যাডে। তাই সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হন আম্পায়ার। এর আগে দুইবার মিরাজের ক্যাচও ফেলেছিলেন আফগান ফিল্ডাররা।

    দুই দফা জীবন পেয়ে ফিফটি হাঁকানো মিরাজ থামেন নাভিন উল হককে মিড অফের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে।সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ৭৩ বলে ৫৭ রান। তবে আউট হওয়ার আগে বাংলাদেশের জয় একপ্রকার নিশ্চিত করেই গেছেন তিনি। এশিয়া কাপে আফগানদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি, একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ম্যাচে ফিফটি। মেহেদী হাসান মিরাজের প্রিয় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে যেন আফগানিস্তান!

    মিরাজ ফেরার পর উইকেটে এসে দ্রুতই জয়ের দিকে এগোচ্ছিলেন সাকিব। তবে ৩৪তম ওভারে ওমরজাইকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন। অধিনায়ক ১৪ রান করে ফিরলেও জয়ের পথে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। বাকি কাজটা মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে ভালোভাবেই সেরেছেন শান্ত। এই টপ অর্ডার ব্যাটার অপরাজিত ৫৯ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।

    এর আগে বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ইনিংস শুরু করা তাসকিন প্রথম ওভারটায় বেশ আঁটসাঁট বোলিং করেছিলেন। তবে এরপর লাইন-ল্যান্থ ঠিক রাখতে পারছিলেন না। অপর প্রান্তে শরিফুল ইসলামও নতুন বলের বাড়তি সুবিধা নিতে পারেননি। ফলে ভালো শুরুই পেয়েছিল আফগানিস্তান। ৫ ওভার শেষে বিনা উইকেটে তারা স্কোরবোর্ডে তুলে ২৭ রান।

    পেসাররা সুবিধা করতে না পারায় ইনিংসের সপ্তম ওভারেই স্পিন আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। নিজের হাতে বল তুলে নেন সাকিব। বোলিংয়ে এসে প্রথম ওভারেই বাউন্ডারি হজম করেন এই বাঁহাতি স্পিনার। তবে পরের ওভারে এসে ঠিকই পাল্টা জবাব দিয়েছেন মিস্টার সেভেন্টি ফাইভ। এই বাঁহাতি স্পিনারকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে এডজ হয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন ইব্রাহিম। ২২ রান করা এই ওপেনারকে ফিরিয়ে আফগান শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

    শুরুটা দারুণ করলেও উইকেট হারানোর পর আফগানদের রান তোলার গতি কিছুটা কমে। তবে প্রথম পাওয়ার প্লের মধ্যেই প্রথম ফিফটির দেখা পায় তারা। প্রথম পাওয়ার প্লে শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৫০ রান তুলেছিল আফগানিস্তান।

    প্রথম পাওয়ার প্লে শেষেও রানের চাকা সচলই ছিল আফগানদের। তারপরও ষোলতম ওভারের প্রথম বলেই সাকিবকে বড় শট খেলতে গেলেন রহমত শাহ। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে সুইপের চেষ্টায় টপ-এজ হয়ে বল আকাশে, সিলি মিড অফে লিটন দাস লুফে নিতে ভুল করেননি। সাজঘরে ফেরার আগে রহমতের ব্যাট থেকে এসেছে ২৫ বলে ১৮ রান।

    শুরুর ১০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৫০ রান তুলেছিল আফগানিস্তান। পরের দশ ওভারে কিছুটা হলেও রানের লাগাম টেনে ধরতে পেরেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে স্পিনাররা-সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ। ১১-২০ ওভারের মধ্যে আফগানিস্তান তুলেতে পেরেছে ৪৬ রান। বিপরীতে তারা হারিয়েছে রহমত শাহর উইকেট।

    উইকেটে এসে ধীর গতির শুরু করেছিলেন হাশমতউল্লাহ শাহিদি। তার এমন ব্যাটিংয়ের প্রভাব পড়েছিল দলের রান রেটের ওপরও। সেটা অধিনায়ক হয়তোবা বুঝতে পেরেছিলেন। তাইতো ২৫তম ওভারে মিরাজের ওপর আক্রমণ করতে গেলেন। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হলো না। উল্টো দলের বিপদ বাড়ান নিজের উইকেট হারিয়ে। ১৮ রান করা এই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ।

    ইনিংস ওপেন করতে নেমে এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। শুরুতে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেও পরে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছেন। স্পিনার কিংবা পেসার সবার বিপক্ষেই সাবলীল ছিলেন তিনি। তবে ২৬তম ওভারে মুস্তাফিজে কাটা পড়েন তিনি। এই বাঁহাতি পেসারকে ডাউন দ্য উইকেটে এগিয়ে এসে এক্সট্রা কভারের ওপর দিয়ে হাঁকাতে চেয়েছিলেন। তবে ব্যাটারের মুভমেন্ট বুঝে গতি কমিয়ে দেন মুস্তাফিজ। ফলে ঠিকমতো টাইমিং হয়নি। ৪৭ রান করে গুরবাজ ফিরেছেন হাফ সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে।

    নাজিবুল্লাহ জাদরানকে থিতু হতে দেননি সাকিব। এই বাঁহাতি স্পিনারের সোজা বলে লাইন মিস করেছেন নাজিবুল্লাহ। খানিকটা নিচু হওয়া বলে টার্নের আশায় ব্যাট চালিয়ে ছিলেন, আউটসাইড এডজে বল স্টাম্পে আঘাত হানে। ৫ রান করা নাজিবুল্লাহকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট শিকার করেন সাকিব।

    টপ অর্ডার ব্যাটারদের কল্যাণে ভালো শুরুই পেয়েছিল আফগানিস্তান। তবে মিডল অর্ডার ভেঙে যায় তাসের ঘরের মতোই। ১০ রানের ব্যবধানে ফিরেছিলেন-হাশমতউল্লাহ-গুরবাজ-নাজিবুল্লাহ। তাই মোহম্মদ নবির দায়িত্বটা বেড়ে গিয়েছিল। তার অভিজ্ঞতায় ভরসা খুঁজছিল আফগানরা। তবে এবার ব্যর্থ হলেন তিনি। তাসকিনের ল্যান্থ বলে ইনসাইড এডজে লেগ স্টাম্প উপড়ে গেছে এই অভিজ্ঞ ব্যাটারের। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬ রান।

    মিডল অর্ডার ব্যাটাররা ব্যর্থ, তবে লোয়ার মিডল অর্ডারে পার্থক্য গড়ে দিলেন রশিদ, এমনটা অনেকবারই ঘটেছে আফগানিস্তান ক্রিকেটে। তবে আজ চিত্রটা ভিন্ন। ধর্মশালায় যখন ধুঁকছে দল, তখন বিপদ বাড়িয়ে ফেরেন রশিদও। মিরাজের নিচু হওয়া বল স্টাম্পে ডেকে এনে বোল্ড হয়েছেন তিনি।

    প্রথম স্পেলে সুবিধা করতে পারেননি শরিফুল ইসলাম। মাঝে স্পিনাররা ভালো করায় শরিফুলের শরণাপন্ন হননি সাকিব। তবে দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে উইকেটের দেখা পান এই বাঁহাতি পেসারও। ৩৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে বোল্ড করেছেন তিনি। দলীয় ১৫৬ রানে আউট হয়েছেন ওমরজাই। সেই একই রানে পরের দুই উইকেটও হারিয়েছে আফগানিস্তান। ফলে ১৫৬ তেই আটকে যায় তারা।

  • বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে বের হতে সহায়তা করবে থার্ড টার্মিনাল

    বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে বের হতে সহায়তা করবে থার্ড টার্মিনাল

    জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত পার্লামেন্টারি ভাইস মিনিস্টার মাশাহিরো ওকামুরা বলেছেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে আরও বেশি সমৃদ্ধ করবে।

    শনিবার (৭ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

    মাশাহিরো ওকামুরা বলেন, দুই দেশের পতাকার মতোই জাপান ও বাংলাদেশের কূটনীতিক সম্পর্কের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এ বছরের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দেশের সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারত্বে রূপ দিয়েছেন।

    দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভালোভাবে এগিয়ে চলছে। এরই অংশ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সহযোগিতা এবং সম্ভাব্য অংশীদারত্ব চুক্তির জন্য যৌথ গবেষণা চলছে।

    তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ-জাপানের সম্পর্কের কথা বলতে গেলে অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়টি উঠে আসে। গত ৫০ বছর ধরে জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে কাজ করছে।

    সর্বশেষ মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর এবং এ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছে জাপান। এ দুটি প্রকল্প বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হতে এবং আরও বেশি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।

    জানা গেছে, পাঁচ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের এ টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি প্লেন রাখার অ্যাপ্রোন (প্লেন পার্ক করার জায়গা) করা হয়েছে। মডার্ন টার্মিনাল বিল্ডিংয়ে দুই লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটারের বিল্ডিংয়ের ভেতরে থাকবে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া। এতে রয়েছে বেশ কয়েকটি স্ট্রেইট এস্কেলেটর।

    নতুন এ টার্মিনালে যাত্রীদের ব্যাগের জন্য সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি ও ব্যাংককের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরের মতো অত্যাধুনিক তিনটি আলাদা স্টোরেজ এরিয়া করা হয়েছে। রেগুলার ব্যাগেজ স্টোরেজ, লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড এবং অড সাইজ (অতিরিক্ত ওজনের) ব্যাগেজ স্টোরেজ। যাত্রীদের স্বাভাবিক ওজনের ব্যাগেজের ১৬টি রেগুলার ব্যাগেজ বেল্ট থাকবে টার্মিনালটিতে। অতিরিক্ত ওজনের (অড সাইজ) ব্যাগেজের জন্য স্থাপন করা হয়েছে আরও চারটি পৃথক বেল্ট।

    অত্যাধুনিক এ টার্মিনাল ভবনে থাকবে ১০টি সেলফ চেক-ইন কিওস্ক (মেশিন)। এগুলোতে নিজের পাসপোর্ট এবং টিকিটের তথ্য প্রবেশ করালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে বোর্ডিং পাস ও সিট নম্বর। এরপর নির্ধারিত জায়গায় যাত্রী তার লাগেজ রেখে দেবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে লাগেজগুলো এয়ারক্রাফটের নির্ধারিত স্থানে চলে যাবে। তবে নির্ধারিত ৩০ কেজির বেশি ওজনের ব্যাগেজ নিয়ে এখানে চেক-ইন করা যাবে না। সেসব যাত্রীদের জন্য আরও ১০০টি চেক-ইন কাউন্টার থাকবে এ টার্মিনালে।

    টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে স্যামসাং গ্রুপের কনস্ট্রাকশন ইউনিট স্যামসাং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ট্রেডিং (সিঅ্যান্ডটি) কর্পোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির নির্মিত স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বুর্জ খলিফা, পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, তাইপে ১০১, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচেওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আবুধাবির ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক। এছাড়াও টার্মিনালের ভেতরের ভবনটির নকশা তৈরি করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনি সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টের টার্মিনাল-৩, চীনের গুয়াঞ্জুর এটিসি টাওয়ার ভবন, ভারতের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইসলামাবাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের নকশা তৈরি করেন।

    ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বৃহৎ এই থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

  • যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনভাবে নেতা নির্বাচন করুক

    যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনভাবে নেতা নির্বাচন করুক

    যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না এবং নির্বাচনের ফলাফলকেও প্রবাভিত করতে চায় না। যুক্তরাষ্ট্র চায়, বাংলাদেশের জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে।

    ২ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মিলার একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন এ কথা।

    মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শান্তিপূর্ণ উপায়ে অনুষ্ঠিত একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। বাংলাদেশিরাও এটি চান। এ লক্ষ্যেই ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়েছে।

    বাংলাদেশের সরকার, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যম- সবাই অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রেরও এটিই চাওয়া বলে জানান মিলার।

    গত ২৪ মে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে বাংলাদেশের জন্য স্বতন্ত্র ভিসা নীতি ঘোষণা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেদিন রাতে ওই ঘোষণা দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি জে ব্লিংকেন।

    এর প্রায় ৪ মাস পর ২২ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে জানান, নির্বাচনকে বাধা দেওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু হয়েছে।

  • এশিয়ার সেরা বক্সার বাংলাদেশের সুর কৃষ্ণ চাকমা

    এশিয়ার সেরা বক্সার বাংলাদেশের সুর কৃষ্ণ চাকমা

    প্রথমবারের মতো এশিয়ান বক্সিং ফেডারেশনের সুপার লাইটওয়েট ইন্টারকন্টিনেন্টাল চ্যাম্পিয়নশিপ বেল্ট জিতেছেন বাংলাদেশের পেশাদার বক্সিংয়ের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বক্সার সুর কৃষ্ণ চাকমা। শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠেও প্রো-বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ ২.০ ফাইট নাইটে নেপালের মহেন্দ্র বাহাদুর চাঁদকে হারিয়ে এই শিরোপা জিতেন সুর কৃষ্ণ চাকমা।

    পেশাদার বক্সিংয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের জন্য এই গৌরবোজ্জ্বল অর্জন নিয়ে এসেছেন সুর কৃষ্ণ চাকমা। এবারের আসরে লড়াইটি ছিল তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তবে আট রাউন্ডের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অপরাজেয় থাকার ছন্দটা ধরে রাখেন সুর কৃষ্ণ এবং পৌঁছে যান সাফল্যের শিখরে। বাংলাদেশের প্রো-বক্সিংয়ের আয়োজক এক্সেল স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড প্রমোশন ও বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশনের (বিবিএফ) উদ্যোগে হয়েছে এবারের চ্যাম্পিয়নশিপ। তাতে বাংলাদেশ ছাড়াও অংশ নেন রাশিয়া, ফ্রান্স, তুরস্ক, নেপাল ও ভারতের বক্সাররা। ৬টি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১৬জন প্রতিযোগী অংশ নিয়েছেন।

    বাংলাদেশের কোনো পেশাদার বক্সারের জন্য সর্বোচ্চ এই অর্জন প্রসঙ্গে সুর বলেন, ‘বাংলাদেশের হয়ে বক্সিংয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া আমার স্বপ্ন। সাউথ এশিয়া থেকে এবার এশিয়ার শীর্ষ অবস্থানে পৌঁছানোটা সেই স্বপ্নের কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করা। এই জয়গুলো আমাকে সাহস দিচ্ছে, প্রেরণা যোগাচ্ছে। আগামীতে বিশ্ব বক্সিংয়ে বাংলাদেশের নাম আরো উজ্জ্বল করতে পারবো বলে আমি আশাবাদী।’

    বিকাশের ব্র্যান্ড এনডোর্সার সুর কৃষ্ণ চাকমা। বিকাশ নির্মিত ‘আমার বিকাশ ঠেকায় কে’ গানে প্রতীকীভাবে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের অদম্য শক্তির বিকাশ। দেশের মানুষদের উজ্জীবিত করতে অদম্য শক্তির প্রতীক হিসেবে ‘আমার বিকাশ ঠেকায় কে’ গানের ভিডিওর প্রধান চরিত্র হিসেবে অংশ নেন সুর কৃষ্ণ চাকমা।

  • বিশ্বের ধীরগতির শীর্ষ ৩ শহর বাংলাদেশের

    বিশ্বের ধীরগতির শীর্ষ ৩ শহর বাংলাদেশের

    যানজটের কারণে ঢাকা বিশ্বের শীর্ষ ধীরগতির শহরে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের এক গবেষণায় ঢাকার বিষয়ে এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণার সূচকে ঢাকার পয়েন্ট ০.৬০। পরের অবস্থানে নাইজেরিয়ার লাগোস, পয়েন্ট ০.৫২।

    বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘দ্য ফাস্ট, দ্য স্লো, অ্যান্ড দ্য কনজাস্টেড : আরবান ট্রান্সপোর্টেশন ইন রিচ অ্যান্ড পুওর কান্ট্রিস’ শীর্ষক ওই গবেষণা গত আগস্টে প্রকাশিত হয়। গবেষণায় পৃথিবীর ১৫২টি দেশের এক হাজার ২০০ শহর নিয়ে কাজ করা হয়। চীন ও উত্তর কোরিয়া গবেষণার আওতায় ছিল না।

    গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ছাড়াও বিশ্বের শীর্ষ ২০ ধীরগতির শহরের তালিকায় বাংলাদেশের ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামের নামও আছে। ময়মনসিংহের অবস্থান ৯ম, চট্টগ্রাম ১২তম। উল্টো দিকে বিশ্বের শীর্ষ ২০ গতিশীল শহরের ১৯টিই যুক্তরাষ্ট্রে।

    দরিদ্র ও ধনী দেশের তুলনা করতে গিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, গরিব দেশের তুলনায় ধনী দেশের শহরে গাড়ির গতি অন্তত ৫০ শতাংশ বেশি। যে শহরের গতি বেশি সে শহরের মাথাপিছু আয়ও বেশি।

    বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ ২০ শহরের তালিকার শীর্ষে কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটা। অথচ এই তালিকায় ঢাকার নামই নেই। আর ঘনবসতিপূর্ণ না হয়েও ধীরগতির, এমন শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়।

    বিশ্ববিখ্যাত গবেষণা প্রকাশনী সংস্থা প্লাস ওয়ান জার্নাল এক গবেষণায় বলছে, ২০ থেকে ২৯ বছর বয়সী মানুষের হাঁটার গতি ঘণ্টায় ৪.৯ কিলোমিটার। ৩০ থেকে ৫০ ঊর্ধ্ব বয়সী মানুষের হাঁটার গতি ঘণ্টায় ৫.১ কিলোমিটার। ষাটোর্ধ্বদের ক্ষেত্রে এই গতি ঘণ্টায় ৪.৮২ কিলোমিটার। আর সত্তরোর্ধ্ব মানুষ ঘণ্টায় হাঁটতে পারেন ৪.৫ কিলোমিটার। এভাবে বিভিন্ন বয়সী মানুষের গড় হাঁটার গতি ঘণ্টায় ৪.৮৩ কিলোমিটার, যা বর্তমানে পিক টাইমে ঢাকার সড়কে চলা গাড়ির গতির চেয়েও বেশি।

    ঢাকা শহরের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (আরএসটিপি) আশঙ্কা করা হয়েছিল, ২০৩০ সালের দিকে সড়কে যানের গতি মানুষের হাঁটার গতির চেয়েও কমে আসতে পারে। পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে ঢাকার সড়কের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

    এদিকে রাজধানীতে একজন মানুষের প্রতিদিন গড়ে দুই ঘণ্টা ৪৬ মিনিট যানজটে নষ্ট হচ্ছে। এভাবে বছর শেষে জনপ্রতি নষ্ট হয় ২৭৬ ঘণ্টা। যানজট বেশি থাকার কারণে পোড়াতে হচ্ছে বাড়তি জ্বালানি।

    সব মিলিয়ে উৎপাদনশীলতা নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি বায়ুদূষণে মানুষের স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি হচ্ছে, তার চিকিৎসায় বছরে মাথাপিছু চার হাজার টাকা বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে।

  • শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু বাংলাদেশের

    শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু বাংলাদেশের

    নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তানজিদ, লিটন ও মিরাজের দাপুটে ব্যাটিংয়ে লঙ্কানদের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে টাইগাররা। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশকে ২৬৪ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল লঙ্কানরা। জবাবে ৪৮ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মিরাজের দল। এই জয়ে স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপ মাতাবে সাকিব-মুশফিকরা।

    রান তাড়া করতে নেমে দারুণ খেলেছেন দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও লিটন দাস। ৩৯ বলে অর্ধশতক পেয়েছেন লিটন, ৫৩ বলে ফিফটি করেন তানজিদ। লিটন ৬১ রান করে আউট হন। তার বিদায়ে ভাঙে তানজিদের সঙ্গে ১৩১ রানের জুটি। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ৫২ রানের জুটি গড়ে আউট হন তানজিদ। ৮৮ বলে ১০ চার, ২ ছয়ে ৮৪ রানে থামেন তিনি। তাওহিদ হৃদয় গোল্ডেন ডাক মারেন।

    ওয়ানডাউনে নেমে অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেছেন মিরাজ। মুশফিকের সঙ্গে ৭৬ রানের জুটিতে তিনি দলের জয় নিশ্চিত করেছেন। ৩৫ রানে মুশফিক ও ৬৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ। ফলে বাংলাদেশ ৮ ওভার হাতে রেখেই ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে।

    এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে দুই ওপেনারে উড়ন্ত সূচনা পায় শ্রীলঙ্কা। যদিও খানিক পরেই কাঁধে অস্বস্তি বোধ করায় রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন কুশল পেরেরা। মাঠ ছাড়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৩৪ রান। এরপর নিশাঙ্কাকে সঙ্গ দিতে আসেন কুশল মেন্ডিস। দুজনের ব্যাটে শতরান পেরিয়ে যায় লঙ্কানরা। তবে দলীয় ১০৪ রানে মেন্ডিসকে(২২) ফিরিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন নাসুম আহমেদ। পরের ওভারেই সাদিরা সামারাবিক্রমাকে (২) আউট করেন শেখ মাহেদী।

    এরপর ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে ৫২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নিশাঙ্কা। এই লঙ্কান ব্যাটারকেও সাজঘরে ফেরান মাহেদী। ৬৪ বলে ৬৮ রানে থামেন নিশাঙ্কা। এরপর ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা চারিথ আশালঙ্কাকে সাজঘরে ফেরান শেখ মাহেদী। মিরাজের দারুণ ক্যাচে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ১৮ রান করে। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লঙ্কান অধিনায়ক শানাকা। শরিফুলের শর্ট বলে তানজিমের ক্যাচে ৩ রানেই ফিরতে হয়েছে তাকে।

    রান আউটে কাটা পড়েন করুনারত্নে (১৮)। দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৫ রান করে মিরাজের শিকার হন ধনঞ্জয়া। ১০ রানে দুনিথ ও ১১ রানে আউট হন হেমন্ত। ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন লাহিরু কুমারা।

    বাংলাদেশের হয়ে শেখ মাহেদী ৩৬ রান খরচায় শিকার করেছেন ৩ উইকেট। এছাড়া নাসুম, শরিফুল, তানজিম ও মিরাজ একটি করে উইকেট পেয়েছেন। এদিন ৭ ওভার বোলিং করে উইকেট শূন্য থাকলেও বেশ মিতব্যায়ী ছিলেন তাসকিন আহমেদ।

  • বাংলাদেশের জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন বিশ্বব্যাংকের

    বাংলাদেশের জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন বিশ্বব্যাংকের

    বাংলাদেশের জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ২১০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ধরে)। বিশ্বব্যাংকের এ অর্থ বাংলাদেশে আবাসিক ও শিল্প গ্রাহকদের জন্য প্রিপেইড মিটারিং সিস্টেমের মাধ্যমে গ্যাস বিতরণ ও ব্যবহারের দক্ষতা উন্নত করাসহ প্রাকৃতিক গ্যাসের মান শৃঙ্খলে মিথেন নির্গমন কমাতে সহায়তা করতে ব্যয় হবে।

    শুক্রবার (২৮ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে এ অর্থ অনুমোদন করে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির ঢাকা অফিস এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

    বিশ্বব্যাংক জানায়, গ্যাস সেক্টর এফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট এবং কার্বন অ্যাবেটমেন্ট প্রজেক্ট গ্যাস ট্রান্সমিশন, ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কে প্রাকৃতিক গ্যাস লিকেজ ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা করতে এ অর্থ সহায়ক হবে। এর ফলে আবাসিক ও শিল্প ব্যবহারকারীদের ব্যবহারে অপচয় কমবে এবং নেটওয়ার্ক মনিটরিং ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে। ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে ১২ লাখের বেশি প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করা হবে। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের আবাসিক গ্রাহকদের ৫৪ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগের জন্য ১ লাখ ২৮ হাজার এবং ঢাকায় ১১ লাখ প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে। যা পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (পিজিসিএল) সম্পূর্ণ আবাসিক গ্রাহককে কভার করবে। এর আওতায় বৃহত্তর শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫০টি স্মার্ট মিটার চালু করা হবে।

    সংস্থাটি আরও জানায়, গ্যাস প্রবাহ পর্যবেক্ষণ উন্নত করতে ও গ্যাসের লিক কমাতে পিজিসিএল-এর নেটওয়ার্কে একটি সুপারভাইজরি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা অ্যাকুইজিশন এবং জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম ইন্সটল করা হবে। এর মাধ্যমে গ্যাসের লিক সনাক্তকরণ এবং মেরামত করার জন্য গ্যাস নেটওয়ার্কে আরও ভালো পর্যবেক্ষণের সঙ্গে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানো সম্ভব হবে।

    বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমানোর লক্ষ্য রয়েছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত প্রতিশ্রুতি অর্জনের জন্য এদেশের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে। প্রকল্পটি পরিবার ও শিল্পে প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয় কমানোসহ গ্যাসের পাইপলাইনে লুকায়িত মিথেন নির্গমন কমাতে সাহায্য করবে।

    বাংলাদেশের গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের সবচেয়ে বড় উৎস তেল ও গ্যাস খাত থেকে আসে। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র এনার্জি স্পেশালিষ্ট সামেহ আই মোবারেক বলেছেন, প্রিপেইড গ্যাস মিটার এবং উন্নত মনিটরিং সিস্টেমগুলো প্রাকৃতিক গ্যাসের শেষ ব্যবহার অপ্টিমাইজ করতে, মিথেন লিকেজ প্রশমিত করতে, গৃহস্থালি এবং শিল্প ব্যবহারকারীদের জন্য গ্যাসের বিল কমাতে সহায়তা করবে। প্রকল্পটি প্রাকৃতিক গ্যাসের মান শৃঙ্খল বরাবর সিওটু এবং মিথেন নির্গমন উৎস সনাক্ত করতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে। এছাড়া, বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা এবং অবকাঠামোতে নির্গমন হ্রাস করার সুযোগগুলো চিহ্নিত করবে এবং অগ্রাধিকারে সহায়তা করবে।

  • ফারজানার ইতিহাসগড়া সেঞ্চুরি, ভারতের বিপক্ষে রেকর্ড সংগ্রহ টাইগ্রেসদের

    ফারজানার ইতিহাসগড়া সেঞ্চুরি, ভারতের বিপক্ষে রেকর্ড সংগ্রহ টাইগ্রেসদের

    মেহরাব হোসেন অপি থেকে ফারজানা হক পিংকি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুই জগতের প্রথম দুই সেঞ্চুরিয়ান। ছেলেদের ক্রিকেটে অপির উইলোতে এসেছিলো লাল সবুজের জার্সিতে প্রথম সেঞ্চুরি, আর ফারজানার ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট পেলো আন্তর্জাতিক অঙ্গণে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা। ফারাজানার এই ইতিহাসগড়া সেঞ্চুরিতেই ভারতের বিপক্ষে সিইরজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে ২২৫ রানের বিশাল সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ।

    মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলো বাংলাদেশ। ১-১ সমতায় থাকা সিইরজে শেষ ম্যাচ দুই দলের জন্যই হয়ে দাঁড়িয়েছে অঘোষিত ফাইনাল। ব্যাটিংয়ে নেম ফারজানার ১০৭ রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ২২৫ রানের সংগ্রহ পায় নিগার সুলাতান জ্যোতির দল।

    আগে ব্যাটিং করতে নেমে দুই ওপেনার ফারজানা আর শামিমা সুলতানার কল্যাণে দুর্দান্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে দুইজন মিলে তোলেন ৯৩ রান। ফারজানা ধরে খেললেও শামিমা ছিলেন আক্রমণাত্মক। দুর্দান্ত এক ফিফটিও তুলে নেন শামিমা। ৭৮ বলে ৫২ রান করে ফেরেন এই ওপেনার।

    তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা অধিনায়ক জ্যোতিকে নিয়ে টাইগ্রেসদের ইনিংস গড়েন ফারজানা। দুজন মিলে গড়েন ৭১ রানের জুটি। ব্যক্তিগত ২৪ রানে সাজঘরে ফেরেন জ্যোতি। তবে আরেক প্রান্তে ফারজানা তখনও অবিচল। সোবহানা মোস্তারিকে নিয়ে দলকে বড় রানের দিকে নিয়ে যান ফারজানা।

    অফসাইডে বল ঠেলে দৌড়ে দুই রান নিয়েই ১৫৬ বলে প্রথপম সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে যান ফারজানা। যা বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে আন্তর্জান্তিক অঙ্গণে যে কোন ফরম্যাটে প্রথম সেঞ্চুরি। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার সময় তার নামের পাশে ১০৭ রানের জ্বলজ্বলে এক ইনিংস। সোবহানা অপরাজিত থাকেন ২২ বলে ২৩ রান করে। ফারজানার এই ১০৭ রান নারী ওয়ানডে ক্রিকেটে এটা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এর আগে সর্বোচ্চ ৭৫ রানের ইনিংস ছিলো সালমা খাতুনের।

    ফারজ্জানার সেঞ্চুরির সুবাদে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ ২২৫ রানের সংগ্রহ পেয়েছে টাইগ্রেসরা। এর আগে ভারতের বিপক্ষে টাইগ্রেসদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিলো ২১০ রান।

  • আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

    আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

    সিলেটে বাংলাদেশি পেসাররা আগুন ঝরানোর পরই বৃষ্টির আগমন! তাতে মিনিট শতেক নষ্ট হয়েছে, ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমেছে ৩ ওভার। বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু হলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে যায় আফগান মিডল অর্ডার! নাসুম-সাকিবের ঘূর্ণিতে সফরকারী ব্যাটারদের রীতিমতো ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা! শেষ পর্যন্ত ওমরজাই-জানাতের ব্যাটে লড়াই করার পুঁজি পায় তারা। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় উড়ন্ত শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু মাঝে এক বলের ব্যবধানে দুই ওপেনার সাজঘরে ফিরলে রান রেটে তার প্রভাব পরে। তবে সাকিবের সাবলীল ব্যাটিংয়ে জয় পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি স্বাগতিকদের।

    আজ (১৬ জুলাই) টস হেরে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ১৭ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান তুলেছিল আফগানিস্তান। যেখানে ২১ বলে ২৫ রান করেছেন ওমরজাই। আর বাংলাদেশের হয়ে ৩৩ রানে ৩ উইকেট শিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার ছিলেন তাসকিন। জবাবে খেলতে নেমে ১৬ ওভার ১ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেছেন লিটন। এই জয়ে ২-০ ব্যবধানে আফগানিস্তানকে সিরিজ হারাল বাংলাদেশ। তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটিই প্রথম দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়।

    ডিএলএস মেথডে ১১৯ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্য তাড়ায় তৃতীয় বলেই চার মেরে শুরু করেন লিটন দাস। ফজল হক ফারুকির পরের বলে মারেন আরও একটি। অভিষিক্ত ওয়াফাদার মোমান্দকে তো স্বাগত জানান চারের হ্যাটট্রিক দিয়ে। দুই ওভারে লিটনের ৫ চারে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। তাতে ৫ ওভারেই দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে বাংলাদেশ।

    পাওয়ার প্লের পর কিছুটা হলেও রানের লাগাম টেনে ধরে সফরকারীরা। তাতে চাপ বাড়ে স্বাগতিক ব্যাটারদের ওপর। সেই চাপেই যেন উইকেট দেন লিটন। নবম ওভারের প্রথম বলটি অফ স্টাম্পের অনেকটাই বাইরে ফুল লেন্থে করেছিলেন মুজিব। সেখানে জায়গা করে একট্রা কভারে ড্রাইভ করতে গিয়ে কভারে ধরা পড়েন লিটন। সাজঘরে ফেরার আগে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৬ বলে ৩৫ রান।

    লিটন আউট হওয়ার এক বল পর ফিরেছেন আফিফও। মুজিবকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। এর আগে আগে ২০ বলে ২৪ রান করেছেন তিনি।

    এরপর শান্তও দ্রুত ফেরেন। দুই ওভারের মধ্যে ফিরে যান টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটার। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ইয়র্কার ধরনের ডেলিভারি ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে পায়ে লেগে বোল্ড হন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬ বলে ৪ রান করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।

    ইনিংসের ১৫তম ওভারের ঘটনা। প্রথম বলে ডাবলস। এরপর ফ্লিক করে ছক্কা। হৃদয় অবশ্য থামলেন ওমরজাইয়ের তৃতীয় বলে। ডাউন দ্য গ্রাউণ্ডে এসে মিড অফের ওপর দিয়ে মারতে চাইলেও তাকে পার করাতে পারেননি হৃদয়। ১৭ বলে ১৯ রান করে হৃদয় ফিরলে উইকেটে আসেন শামিম পাটুয়ারী। সাকিব-শামিম যখন উইকেটে তখন শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৪ রান।

    প্রথম ম্যাচে শেষ ওভারে করিম জানাতের হ্যাটট্রিক ছড়িয়েছিল রোমাঞ্চ। এবার আর তেমন কিছু হলো না। ওয়াফাদেরের প্রথম বলেই মিডউইকেট দিয়ে চার মেরেছেন শামীম, ৫ বলে বাকি থাকতে ৬ উইকেটের জয় নিশ্চিত হয়েছে তাতেই। এ জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। তৃতীয় বার এসে আফগানিস্তানকে প্রথমবার দ্বিপাক্ষিক আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারাল বাংলাদেশ।

    এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। ইনিংসের চতুর্থ বলে ডাউন দ্য উইকেট এগিয়ে এসে তাসকিনকে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন এই ওপেনার। পরের বলে শর্ট লেংথ থেকে আবার তুলে মেরেছিলেন গুরবাজ, এবার বল ওঠে খাড়া ওপরে। অফ সাইড থেকে আরও তিন জন ফিল্ডার ছুটে আসতে চাইলেও তাসকিন না করে দেন, নিজের বলে নিজেই ধরেছেন ক্যাচ।

    গুরবাজকে ফিরিয়ে একটা মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন তাসকিন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে উইকেটের ফিফটি পূর্ণ করেছেন এই পেসার। তার আগে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন বাংলাদেশের আরও দুই বোলার। এই তালিকায় আছেন সাকিব ও মুস্তাফিজ।

    প্রথম ওভারে তাসকিনকে তেড়ে-ফুরে খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে এসেছিলেন গুরবাজ। পরের ওভারে আবারও এই পেসারের ওপর চড়াও হন আফগান ব্যাটাররা। এবার চার হাঁকিয়ে তাসকিনের ওভার শুরু করেন জাজাই। কিন্তু এই ওপেনারও তাড়া-হুড়া করে নিজের বিপদই ডেকে এনেছেন বৈকি। ওভারের চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে গুডলেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠে, হজরতউল্লাহ জাজাই খেলবেন না ছাড়বেন করতে গিয়ে খোঁচা দিলেন। উইকেটের পেছনে বাকি কাজটি করেছেন লিটন দাস। তাতে নিজের টানা দুই ওভারে দুই ওপেনারকে ফেরান তাসকিন।

    পাওয়ার প্লে শেষ হলেও এই চাপের বৃত্ত ভাঙতে পারেনি সফরকারী ব্যাটাররা। তাদের এমন চাপে রেখে যখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ, ঠিক তখনই বৃষ্টির হানা। মিনিট ত্রিশেক পর থামে বৃষ্টি। এরপর দুই দফায় আম্পায়াররা মাঠ পর্যবেক্ষণ করার পর ওভার কাটার সিদ্ধান্ত নেন। ১৭ ওভারে নেমে আসা ম্যাচ পুনরায় শুরু হয় ৮-১৫ মিনিটে।

    বৃষ্টির পর নবম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে আসেন নাসুম। তার এই ওভারে দুইবার জীবন পান নবি। চতুর্থ বলে কভারে ক্যাচ ফেলেছেন সাকিব। পরের বলেই আবারও এই ব্যাটারকে পরাস্ত করেন নাসুম। নবির ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল উইকেটের পেছনে গেলেও তা গ্লাভসে জমাতে ব্যর্থ হন লিটন। টানা দুই বলে দুই জীবন পেয়েও বেশিদূর এগোতে পারলেন না এই অলরাউন্ডার। পরের ওভারে মুস্তাফিজের লেগ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে ব্যাট চালিয়ে টাইমিং করতে পারেননি, এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েছেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।

    ১১তম ওভার সাকিব শুরু করেছিলেন উইকেট দিয়ে, শেষও করলেন উইকেট দিয়ে। প্রথম বলে সাকিবকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে আফিফের হাতে ধরা পড়েন ইব্রাহিম জাদরান। আর শেষ বলে নজিবুল্লাহ জাদরানকে বোল্ড করেছেন সাকিব। অফ স্টাম্পের বাইরের গুড ল্যান্থের বলে কাট করতে গিয়ে স্টাম্প উপড়ে গেছে তার। এভাবে বল স্টাম্পে আঘাত হানবে তা কিছুতেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না এই ব্যাটার। পরে আম্পায়ারের রিভিওতে দেখা যায়, বলের আঘাতেই স্টাম্প ভেঙেছে।

    বৃষ্টির পর দ্রুত ৩ উইকেট হারালেও আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও করিম জানাতের জুটি একটা লাফ দেওয়ার চেষ্টা করছিল, সর্বশেষ ম্যাচে যেটি করেছিল নবি ও ওমরজাইয়ের জুটি। তবে শেষ দিকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ১৭ ওভারে আফগানিস্তান তুলে ১১৬ রান।

  • সহজ ম্যাচ কঠিন করেই জিতল বাংলাদেশ

    সহজ ম্যাচ কঠিন করেই জিতল বাংলাদেশ

    লাভড দিস শট! ১৭তম ওভারে ফজলহক ফারুকির তৃতীয় বলে লেগ-অনে সজোরে উড়িয়ে মারেন তাওহীদ হৃদয়। এরপরই ধারাভাষ্যকারের মুখ থেকে বেরিয়ে এলো বাংলাদেশি দর্শকদের সেই মনের কথাটি। আগের ওভারেই স্লগ সুইপে মারা শামীম পাটোয়ারীর সহজ ক্যাচ ছেড়েছিলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। সেই ক্যাচ মিস যেন বাংলাদেশের জয়েরই ইঙ্গিত! কিন্তু শেষ ওভারে করিম জানাতের হ্যাটট্রিক। সহজ ম্যাচটি হয়ে পড়ল পাহাড়সম কঠিন। সেই পাহাড় ভাঙল শরীফুলের হাঁকানো চারে। টাইগাররাও নাটকীয় ম্যাচটি জিতল ২ উইকেটে।

    হৃদয়ের সেই ছয়ের পর পঞ্চম বলে শুয়ে পড়ে স্কুপ করে চার মেরেছেন শামীম। ফারুকির স্লোয়ার পড়েছেন দারুণভাবে। শেষ বলে হয়তো সিঙ্গেলই হতো, তবে হৃদয়-শামীমের দুর্দান্ত রানিংয়ে সেটিই হয়েছে দুই। জয়ের বন্দর তখন খুব নিকটে। কিন্তু এরপরই শামীমের উইকেটে আঘাত রশিদ খানের। দুর্দান্ত খেলতে থাকা শামীমকে ৩৩ রানে (২৫ বল) ফিরিয়েছেন এই লেগ-স্পিনার।

    শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৬ বলে ৬ রান। এরই মধ্যে ওভারের কোটা পূরণ করে ফেলেছিলেন রশিদ-মুজিব ও ফারুকিরা। তাই তো শেষ ওভারে আক্রমণে আসেন করিম জানাত। প্রথম বলেই অফ-স্টাম্পের বাইরের বলকে চারে পরিণত করেন মেহেদী মিরাজ। এরপরই নাটকীয়তা, মাত্র ২ রানের বাধা পেরোতেও তিনি যেন তাড়াহুড়োই করলেন। এরপর ওয়াইড বলে ব্যাটের কানা লাগিয়ে কট বিহাইন্ড তাসকিন আহমেদ। অপর পাশে অসহায় দৃষ্টি হৃদয়ের। এরপর? জানাতের শট বলকে পেছনে উড়িয়ে মারতে গিয়ে থার্ডম্যানের হাতে ধরা নাসুম।