Tag: যুক্তরাষ্ট্র

  • যুক্তরাষ্ট্রে সুপার মার্কেটে বন্দুকধারীর হামলা, নিহত ১০

    যুক্তরাষ্ট্রে সুপার মার্কেটে বন্দুকধারীর হামলা, নিহত ১০

    যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের বাফেলোতে একটি সুপার মার্কেটে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছন আরও বেশ কয়েকজন। স্থানীয় সময় শনিবার (১৪ মে) এ হামলার ঘটনা ঘটে।

    হামলায় জড়িত সন্দেহে ১৮ বছর বয়সী একজনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। তবে তার নাম পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

    পুলিশ বলছে, সন্দেহভাজন ওই তরুণ শনিবার বিকালে একটি জনবহুল সুপার মার্কেটে প্রবেশ করেন। এরপর এলোপাতাড়ি গুলি চালান। হামলার ঘটনা অনলাইনে দেখানোর জন্য ক্যামেরাও সেট করেন ওই হামলাকারী।

    এফবিআই-এর বাফেলো অফিসের দায়িত্বে থাকা একজন প্রতিনিধি স্টিফেন বেলঙ্গিয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটি বিদ্বেষমূলক অপরাধ বলে ধারণা করা হচ্ছে। সহিংস হামলার ঘটনায় তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।

    এদিকে, হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে হামলার বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় শোক প্রকাশ করে জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন নিহতদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

  • যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

    যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্ভাব্য সর্বোত্তম নীতি কাঠামোর আশ্বাস দিয়ে বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

    তিনি বলেন, ‘আমি এখন আমাদের ব্যবসা এবং বিনিয়োগের পরিবেশ সহজ করার জন্য সর্বোত্তম সম্ভাব্য নীতি কাঠামো এবং জোরালো সম্ভাবনার বিষয়ে আপনাদের আশ্বস্ত করব।’

    আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী প্রথমবারের মতো তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সফররত ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস ডেলিগেশনের সঙ্গে বৈঠককালে এ আহ্বান জানান।

    শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন মার্কিন কোম্পানিগুলো এ সুবিধা গ্রহণ করবে এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, আইসিটি, অবকাঠামো, হালকা প্রকৌশল পণ্য, মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক পণ্য, অটোমোবাইল, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, ওষুধ, সিরামিকের মতো সম্ভাব্য খাতে আরও বিনিয়োগ করবে।

    তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে আপনারা অনুকূল পরিবেশ বুঝতে সক্ষম হবেন এবং আপনারা বাংলাদেশে সম্ভাব্য বিনিয়োগের আস্থা অনুভব করতে পারবেন।’

    তিনি উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশ এখন আরএমজি, চামড়া, প্লাস্টিক, পাট, আইসিটি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ এবং আরও অনেক খাতে অত্যাধুনিক উৎপাদন কারখানার জন্য স্বীকৃত।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আমাদের ‘সময়’ এবং অনুগ্রহ করে আমাদের অনুকূল পরিবেশে বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুযোগ নেয়ার ‘সময়’ তৈরি করুন।’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ইউএস-বাংলাদেশ এনার্জি টাস্কফোর্স যেটি সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে চালু হয়েছিল তা উভয় দেশের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।

    একইভাবে, প্রস্তাবিত ইউএস-বাংলাদেশ ডিজিটাল ইকোনমি টাস্কফোর্স টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে উভয় দেশের কোম্পানির সহযোগিতাকে আরও জোরদার করতে অবদান রাখবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

    বাংলাদেশ-মার্কিন বন্ধুত্ব অভিন্ন মূল্যবোধ ও অংশীদারিত্বমূলক স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি আমাদের সম্প্রসারিত সার্বিক ব্যবসায়িক সম্পর্কের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে।’

    ‘মার্কিন বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার এবং অন্যান্য বাণিজ্য সুবিধার মাধ্যমে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করা যেতে পারে,’ উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ’বাংলাদেশ একটি উপযুক্ত সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত।’

    বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশকে তার অন্যতম সম্ভাব্য অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ইউএস চেম্বারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন এই সফর এবং প্রাসঙ্গিক সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে মতবিনিময়ের ফলে প্রত্যাশিত ব্যবসা থেকে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব আরও অন্বেষণ হবে এবং নিশ্চিতভাবে বাণিজ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ হবে এবং উভয় দেশের বেসরকারি খাত উপকৃত হবে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে স্নাতক হওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যেএকটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার আকাঙ্খা রয়েছে।
    তিনি বলেন, ‘সে কারণে আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশগুলো থেকে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন।’

    বাংলাদেশকে এখন একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভৌত অবকাঠামোর পাশাপাশি দেশটি বিনিয়োগ ও ব্যবসা সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন উন্নত ও সহজ করেছে।

    সরকার প্রধান বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ নীতি রয়েছে এবং বিদেশী বিনিয়োগ সংসদের আইন এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত।’

    শেখ হাসিনা সম্প্রতি বাংলাদেশের শতভাগ এলাকা বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের সড়ক, রেলপথ ও নৌ যোগাযোগের উন্নয়ন করছি।’

    বাংলাদেশ সারাদেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব দেন, ‘আপনারা যদি চান তবে আমরা শুধু মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি জোন নির্ধারণ করে দিতে পারি।’

    তিনি আরও বলেন, জনসংখ্যাগত লভ্যাংশ, এবং দক্ষ জনশক্তির বিকাশে আমাদের ফোকাস নিশ্চিত করে এখানে বিনিয়োগকারীরা প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতে দক্ষ মানব সম্পদ পাবে।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার আমাদের নাগরিকদের জন্য একটি দীর্ঘ মেয়াদী প্রবৃদ্ধির কৌশল অনুসরণ করছে যা বিশ্ব অর্থনীতিবিদ এবং সংস্থাগুলো দ্বারা টেকসই হিসাবে স্বীকৃত।

    বাংলাদেশে অবস্থানকালে আগত অতিথিরা সবাই নিশ্চিতভাবেই মেগা অবকাঠামো প্রকল্পগুলো দেখবেন, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এগুলো আরও বেশি প্রত্যক্ষ করে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদারদের অন্যতম এবং আমাদের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে অবদান রেখেছে। তিনি আরো বলেন, মার্কিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য এফডিআই এবং রপ্তানি বাজারের একক বৃহত্তম উৎস।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত পাঁচ বছরে রপ্তানির পরিমাণ ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বেড়েছে এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ বেড়ে ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন হয়েছে।

  • যুক্তরাষ্ট্রে ট্রেন লাইনচ্যুত, তিন জনের মৃত্যু

    যুক্তরাষ্ট্রে ট্রেন লাইনচ্যুত, তিন জনের মৃত্যু

    যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-মধ্য মন্টানায় একটি ট্রেনের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে তিন জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

    দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, শিকাগো থেকে সিয়াটলে যাওয়ার পথে স্থানীয় সময় শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে জোপলিন শহরের কাছে ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়।

    এসময় ট্রেনটিতে ১৪৭ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে আহতদের হাসপাতালে নেয়া হলে তিন জনের মৃত্যু হয়।

    এই দুর্ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে ঘটনা তদন্তে ১৪ সদস্যের কমিটি করেছে দেশটির ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট সেফটি বোর্ড।

    এন-কে

     

  • যুক্তরাষ্ট্রে সুপারমার্কেটে বন্দুক হামলায় নিহত ১, আহত ১২

    যুক্তরাষ্ট্রে সুপারমার্কেটে বন্দুক হামলায় নিহত ১, আহত ১২

    যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যে একটি সুপারমার্কেটে বন্দুক হামলার ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন এবং ১২ জন আহত হয়েছেন। হামলার অভিযুক্ত নিজের গুলিতে নিহত হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।

    স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার টেনেসির কলিয়েরভিলের ক্রোগার সুপারমার্কেটে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। ক্রোগার সুপারমার্কেটের কর্মী ব্রিগনেটা ডিকারসন বলেন, ঘটনার সময় তিনি ক্যাশ রেজিস্টারে কাজ করছিলেন। সে সময় তিনি গুলির শব্দ শোনেন। প্রথমে তাঁর মনে হয়েছিল, বেলুন ফাটছে। তারপরই তিনি বন্দুকধারীকে দেখতে পান। এবং বন্দুকধারী গুলি চালাতে থাকেন।

    ব্রিগনেটা বলেন, ‘সে গুলি করেই যাচ্ছিল। বন্দুকধারী আমার সহকর্মীর মাথায় গুলি করে এবং একজন ক্রেতার পেটে গুলি করে।’

    কয়েকজন হাসপাতালে

    কলিয়েরভিল কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র জেনিফার স্থানীয় সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন, বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যে ১২ জন আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এক জন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ), এবং এক জনের সার্জারি হয়েছে। এই ১২ জন ছাড়াও এক জন আতঙ্কে অসুস্থ হয়েছিলেন। তাঁরও চিকিৎসা চলছে।

    পুলিশপ্রধান ডেল লেন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘প্রাণ বাঁচাতে কেউ ফ্রিজের ভেতর ঢুকেছিলেন, কেউ অফিসের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। অনেকে দৌড়ে নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এই শহরের ইতিহাসে এমন ঘটনা আর ঘটেনি।’

    অভিযুক্ত নিহত

    পুলিশ জানিয়েছে, হামলার অভিযুক্ত নিজের বন্দুকের গুলিতে নিহত হয়েছে। তবে, পুলিশ অভিযুক্তের নাম জানায়নি। কারণ, অভিযুক্তের কোনো সাহায্যকারী ছিল কি না, পুলিশ জানার চেষ্টা করছে।

    চলতি বছরের শুরুর দিকে টেনেসিতে ২১ বছর থেকে তদূর্ধ্ব বয়সিদের হ্যান্ডগান রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। বন্দুক রাখার জন্য অঙ্গরাজ্য-ভিত্তিক কোনো তথ্য যাচাই কিংবা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না।

    সে সময় বেশ কয়েকটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এর বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু, রিপাবলিকান গভর্নর বিল লি তাতে কর্ণপাত করেননি।

    এন-কে

  • যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে প্রথম কারখানা করছে বোয়িং

    যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে প্রথম কারখানা করছে বোয়িং

    যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম বিমান নির্মাতা ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বোয়িং প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কারখানা স্থাপন করছে। অস্ট্রেলিয়ায় তৈরি হবে বোয়িংয়ের এ প্ল্যান্টটি।

    দেশটির কুইন্সল্যান্ডের টুউম্বা শহরে এই কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বোয়িং।

    কারখানাটিতে চূড়ান্ত পর্যায়ের সংযোজন কাজ করা হবে বলে জানিয়েছে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি।

    সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই কারখানাটিতে বাণিজ্যিক বিমান নয়, সংস্থাটির শুরুর দিকের ব্যবসা সামরিক ড্রোনের নির্মাণকাজ করা হবে। তবে বোয়িংয়ের জন্য এটি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে আকর্ষণীয় একটি পদক্ষেপ। কয়েক বছর ধরে বোয়িং কঠিন সময় পার করলেও রাজস্ব আদায়ে সংস্থাটির প্রতিরক্ষা, মহাকাশ ও নিরাপত্তা বিভাগটি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেছে।

    ২০১৮ সাল থেকে সংস্থাটির এই ইউনিট প্রতি বছর ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার আয় করেছে। যেখানে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স সংকট ও করোনা মহামারিতে বোয়িংয়ের বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ বিক্রি করে আয় ৭২ শতাংশ কমে গেছে। আয় কমেছিল ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার। গত বছর বোয়িংয়ের এ বিভাগের আয়ের প্রায় ৮৩ শতাংশই মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে এসেছে। এ বিভাগে উল্লেখযোগ্য বিদেশি গ্রাহকও আছে।

    বোয়িংয়ের প্রধান ব্যবসা বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ খাতের একটি বড় অংশই দেশের বাইরে থেকে আসে। ২০১৮ সালে এই উড়োজাহাজ নির্মাতা রেকর্ড ১০ হাজার ১০০ কোটি ডলার আয় করেছিল। এর মধ্যে ৫৬ শতাংশই এসেছিল বিদেশি গ্রাহকদের কাছ থেকে।

    সংস্থাটির অস্ট্রেলিয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করা দল লয়াল উইংম্যান নামে পরিচিত একটি ড্রোন ডিজাইন করেছে। এ ড্রোনই নতুন কারখানাটিতে তৈরি করা হবে। কারখানাটিতে ২০২৮ সালের মধ্যে ৩ হাজার ৫০০ নতুন পূর্ণকালীন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে অস্ট্রেলীয় বিমানবাহিনী ড্রোনটির একমাত্র গ্রাহক। তবে বোয়িং এ ড্রোনকে অন্য গ্রাহকদের কাছেও রপ্তানির পরিকল্পনা করেছে। অস্ট্রেলিয়ায় এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বোয়িংয়ের সবচেয়ে বড় কার্যক্রম চলছে। দেশটিতে সংস্থাটির প্রায় চার হাজার কর্মী কাজ করেন।

    এর আগে অস্ট্রেলিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার সাবমেরিন তৈরির ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র আর ব্রিটেনের সহায়তায়। এরপরই এই ঘোষণা দেয় বোয়িং। বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্সের ২টি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার পর থেকে বিশ্বব্যাপী ইমেজ সংকটে পড়েছে বোয়িং।

    এন-কে

  • আজ বৈঠকে বসছেন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতের সরকারপ্রধানেরা

    আজ বৈঠকে বসছেন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতের সরকারপ্রধানেরা

    ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তির প্রেক্ষাপটে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সরকারপ্রধানেরা আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা এ খবর জানিয়েছে।

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা গত মার্চ মাসে ভার্চুয়ালি দেখা করলেও, চার নেতার একসঙ্গে এই প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছেন।

    হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি এক বিবৃতিতে বলেন, কোভিড-১৯ সংকট, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, উদীয়মান প্রযুক্তি এবং সাইবার স্পেসে অংশীদারত্ব এবং উন্মুক্ত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়নে ‘কোয়াড’ নেতৃবৃন্দ পরস্পরের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও গভীর করতে এবং ব্যবহারিক সহযোগিতার দিকে মনোনিবেশ করবেন।

    চীন ধারাবাহিকভাবে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে। এবং সেগুলো ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক লেন নিয়ন্ত্রণ করছে বলে দাবি করে আসছে।

    অস্ট্রেলিয়াকে পারমানবিক সাবমেরিন সরবরাহের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সম্প্রতি ঘোষিত ‘অকাস’ চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াশিংটনে আসন্ন বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

    ‘অকাস’ চুক্তির ফলে ফ্রান্সের সঙ্গে ডিজেল সাবমেরিন সরবরাহের চুক্তি থেকে অস্ট্রেলিয়া বেরিয়ে আসায় ফ্রান্স ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং এর প্রতিবাদে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া থেকে তার রাষ্ট্রদূতদের ফেরত নেয়।

    চীন ‘অকাস’ চুক্তির নিন্দা জানিয়ে একে আঞ্চলিক শান্তির জন্য ক্ষতিকর বলে অভিহিত করেছে।

    এন-কে

  • অভিবাসী ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, হাইতি দূতের পদত্যাগ

    অভিবাসী ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, হাইতি দূতের পদত্যাগ

    যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস রাজ্যের একটি শহর থেকে অভিবাসী হাইতি নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে পদত্যাগ করেছেন হাইতিতে নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দূত ড্যানিয়ের ফুট।

    বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল ফুটের পদত্যাগের খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রবিভাগের এক উর্ধতন কর্মকর্তা।

    ড্যানিয়েল তার পদত্যাগ পত্রে বলেন, ভূমিকম্প ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থেকে পালিয়ে আসা অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত ছিল ‘অমানবিক’।

    এছাড়া তিনি বলেন, ‘হাইতির হাজার হাজার শরণার্থী ও অবৈধ অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানোর এই অমানবিক সিদ্ধান্তে আমি সামিল হব না।’

    যুক্তরাষ্ট্রের হাইতি সংক্রান্ত নীতি খুবই ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ ড্যানিলে বলেন, হাইতির নাগরিকদের ব্যাপারে তার সুপারিশ আমলে নেওয়া হয় নি।

    তিনি বলেন, ‘হাইতি একটি ভেঙে পড়া রাষ্ট্র। যে কারণে এই অভিবাসীদের অর্থ, খাদ্য ও বাসস্থান দেয়ার ক্ষমতা নেই দেশটির, তাই তাদের সাহায্য দরকার।’

    বিবিসির তথ্য মতে, এসপ্তাহের শেষে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের সীমান্ত শহর থেকে এই অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর ফ্লাইট শুরু করা হয়। এজন্য সেখানকার একটি সেতুর নিচে প্রায় ১৩ হাজার অভিবাসীকে জড়ো করা হয়।

    যেখানে প্রচণ্ড গরমে অস্থায়ী ক্যাম্পে অপেক্ষা করতে দেখা যায় তাদের। এসময় খাবার, পানি এবং স্যানিটেশনের ব্যবস্থাও তেমন দেখা যায়নি।

    হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস অতিমারীর কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাইতির নাগরিকদের দ্রুত ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

    ২০১০ সালে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ার পর হাইতি ছেড়েছেন দেশটির বহু নাগরিক। যাদের একটি বড় অংশ রয়েছে ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে।

    এন-কে

  • বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদকে ফেরানোর আশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

    বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদকে ফেরানোর আশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

    পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘ঢাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাযজ্ঞের ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিবে বলে প্রত্যাশা করছে। কারণ এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়াগুলো শেষ করার কাজ চলছে।’

    লোটে রয়্যাল হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মঙ্গলবারের সার্বিক কর্মসূচির ওপর মিডিয়া ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনবো বলে আশা করছি।’

    বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এই খুনীকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টার ফলাফল সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ে সাজাপ্রাপ্ত ১২ আসামীর একজনকে ফিরিয়ে দেয়ায় ঢাকা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাশেদ চৌধুরীকেও ফিরে পাওয়ার আশা করছে।

    অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বিএনপি ও তার ঘনিস্ট মিত্র জামায়াত বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

    তিনি বলেন, দেশে জনসমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়ে অসৎ উদ্দেশে তারা বিদেশে অপপ্রচারের পথ বেছে নিয়েছে।

    শাহরিয়ার বলেন, কিন্তু তাদের এ প্রচেষ্টা অতীতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানেও ব্যর্থ হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হবে… তাদের দাবি মোকাবেলা করার জন্যে আমাদের কাছে অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে।

    তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রধানত গণতন্ত্রকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার পাশপাশি সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে জাতিসংঘের আইন ও নীতিমালার অনুমোদন করছে।

    হোটেল লোটে নিউইয়র্ক প্যালেসের এই ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা উপস্থিত ছিলেন।

    এন-কে

  • নভেম্বর থেকে শর্ত শিথিল হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ

    নভেম্বর থেকে শর্ত শিথিল হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ

    করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিধিনিষেধের ফলে আরোপ করা ভ্রমণের শর্ত শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার এক বিবৃবিতে হোয়াইট হাউজ বলেছে, নভেম্বর থেকে চীন, ভারত, ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত প্রায় সব দেশ মিলে ৩৩টি দেশের করোনাভাইরাসের পূর্ণ ডোজ টিকাপ্রাপ্তরা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করতে পারবেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়েছে।

    হোয়াইট হাউসের বিবৃতি অনুযায়ী, নভেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী বিদেশিদের বাধ্যতামূলকভাবে শুধু করোনা পরীক্ষা করাতে হলেও কোয়ারেন্টিন পালনের বাধ্যবাধকতা থাকছে না। ভ্রমণের আগের তিন দিনের মধ্যেকার করানো নেগেটিভ রিপোর্ট দেখাতে হবে।

    হোয়াইট হাউজের কোভিড-১৯ বিষয়ক সমন্বয়ক জেফ জিয়েন্টস বলেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেকে পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। তাদের কথা বিবেচনা করেই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

    অথচ গত সপ্তাহেও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন জানিয়েছিল, কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধির এই সময়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা উচিত হবে না।

    যুক্তরাষ্ট্রের ছাড়পত্র পাওয়া কোভিড-১৯ টিকা ছাড়া অন্যান্য টিকা নিলে দেশটিতে ভ্রমণ করা যাবে কি না, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি এবং কবে থেকে এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল কার্যকর হবে তার তারিখ উল্লেখ করা হয়নি। নভেম্বরের শুরু থেকে হবে এতটুকুই জানানো হয়েছে।

    গত বছর মার্চে দেশটিতে ভ্রমণ নিষেদ্ধাজ্ঞা আরোপ করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

    এন-কে

  • নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার ‘মিথ্যাচারের’ নিন্দা ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

    নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার ‘মিথ্যাচারের’ নিন্দা ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

    সাম্প্রতিক একটি নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র মিথ্যাচার করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির জেরে ফ্রান্স অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করেছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

    অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ‘কথায় ও কাজে মিল না রেখে পাস্পরিক বিশ্বাস ও সম্পর্কের অবমাননার মতো বড় ধরনের গর্হিত কাজ’ করেছে বলে অভিযুক্ত করেছেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ ইভ লু দ্রিয়া। ফ্রান্স২ টেলিভিশনকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এ অভিযোগ করেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

    ‘এইউকেইউএস’ বা ‘অকাস’ (AUKUS) নামের সাম্প্রতিক ত্রিদেশীয় চুক্তি অনুযায়ী, পারমাণবিক শক্তি চালিত সাবমেরিন তৈরির প্রযুক্তি পেতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।

    নতুন চুক্তিটির কারণে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ফ্রান্সের পূর্বস্বাক্ষরিত বহু বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি বাতিল হয়ে গেছে।

    ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল সাক্ষাৎকারে বলেন, মিত্র দেশগুলো মধ্যে ‘গুরুতর সংকট’ চলছে। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যে সম্পর্কের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো আমরা আমাদের রাষ্ট্রদূতকে পরামর্শের জন্য ডেকে পাঠিয়েছি, যা গুরুতর রাজনৈতিক পদক্ষেপ। এতেই বোঝা যাচ্ছে, আমাদের মধ্যে বর্তমানে যে সংকট রয়েছে তার মাত্রা কতটা।’

    ফরাসি রাষ্ট্রদূতদের ‘পরিস্থিতি পুনর্মূল্যায়ন’ করার জন্য ডেকে আনা হচ্ছে বলে জানান ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

    তবে, ফ্রান্স যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করার ‘কোনো প্রয়োজন’ দেখেনি বলে জানান ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর কারণ হিসেবে যুক্তরাজ্য ‘বরাবরই সুবিধাবাদী’ বলে তিনি অভিযোগ করেন।

    ‘এই গোটা ব্যাপারটিতে (চুক্তি স্বাক্ষর) যুক্তরাজ্যের ভূমিকা কিছুটা তিন নম্বর চাকার মতো’, বলেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

    যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার ওপর কেন চটেছে ফ্রান্স?

    চীনকে মোকাবিলা করতে তিনটি প্রভাবশালী পশ্চিমা দেশ—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে ‘অকাস’ নামের একটি নিরাপত্তা চুক্তির কথা ঘোষণা করার কয়েক দিনের মধ্যেই তা বড় ধরনের সমালোচনার মুখে পড়েছে।

    ‘ঐতিহাসিক’ এই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের জন্য উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সরবরাহ কথা বলা হয়েছে।

    পরমাণু শক্তিধর দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শক্তিধর সদস্য ফ্রান্স ত্রিদেশীয় ‘অকাস’ চুক্তির কঠোর সমালোচনা করেছে। চুক্তির তীব্র নিন্দা করে ফ্রান্স বলেছে, এর মাধ্যমে তাদের ‘পিঠে ছুরি মারা হয়েছে’।

    ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে এরকম একটি নিরাপত্তা চুক্তিতে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ প্যারিস প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত তাদের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠিয়েছে।

    পশ্চিমা কোনো মিত্র দেশ থেকে রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠানো খুবই অস্বাভাবিক ঘটনা। এবং এই প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া থেকে ফ্রান্স তাদের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠাল।

    ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পরিস্থিতির ভয়াবহতার কথা বিবেচনা করেই তাঁদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

    ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ ইভ লু দ্রিয়া গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানান, দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর অনুরোধে রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠানো হয়েছে।

    ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই চুক্তির মাধ্যমে পেছন থেকে ছুরি মারা হয়েছে। যে সমঝোতা হয়েছে, তাতে মিত্র দেশ ও অংশীদারদের মধ্যে এমন আচরণের বিষয় রয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের জোটগুলোর যে লক্ষ্য, অংশীদারত্বের ওপর এর প্রভাব পড়বে।’

    ‘আমরা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বিশ্বাসের সম্পর্ক স্থাপন করেছিলাম। অস্ট্রেলিয়া সে বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে’, বলেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

    ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের অনেকেও নতুন এই সমঝোতার সমালোচনা করছেন। এবং এর নামের উচ্চারণের সাথে মিলিয়ে জোটটিকে ‘অকওয়ার্ড’ বা ‘বেমানান’ বলেও উল্লেখ করেছেন।

    চীনও এই উদ্যোগের সমালোচনা করে একে ‘স্নায়ু যুদ্ধের মানসিকতা’ বলে উল্লেখ করেছে।

    কী আছে ‘অকাস’ চুক্তিতে?

    মূলত বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের প্রভাব মোকাবিলার জন্যই নতুন এই ‘অকাস’ চুক্তি করা হয়েছে। ওই অঞ্চলে বহু বছর ধরেই সংকট বিরাজ করছে, এবং এর জের ধরে উত্তেজনাও চলছে।

    যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন গত বুধবার ‘অকাস’ চুক্তির কথা ঘোষণা করেন। তিন নেতার এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অকাসের আওতায় প্রথম উদ্যোগ হিসেবে আমরা পরমাণু-চালিত সাবমেরিন সক্ষমতা অর্জনে সহায়তায় অঙ্গীকার করছি। এটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতায় এবং আমাদের যৌথ স্বার্থের সহায়তায় মোতায়েন করা হবে।’

    নবগঠিত ‘অকাস’ চুক্তিভুক্ত তিনটি দেশ—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে, তাতে পরমাণু শক্তি-চালিত সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ তৈরির জন্য অস্ট্রেলিয়াকে প্রযুক্তি সরবরাহ করার কথা বলা হয়েছে।

    অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণে অ্যাডিলেডে এসব সাবমেরিন নির্মাণ করা হবে।

    অস্ট্রেলিয়ার স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইন্সটিটিউটে কর্মরত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ মাইকেল শোব্রিজ বলেছেন, ‘একটি পারমাণবিক সাবমেরিনের প্রতিরক্ষা বিষয়ক প্রচণ্ড সক্ষমতা রয়েছে। এর ফলে কোনো অঞ্চলে এর বড় ধরনের প্রভাব পড়ে। বিশ্বের মাত্র ছয়টি দেশের পারমাণবিক সাবমেরিন রয়েছে।’

    অস্ট্রেলিয়ার জন্য সাবমেরিন নির্মাণের পাশাপাশি গোয়েন্দা ও কোয়ান্টাম প্রযুক্তির ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তি বিনিময়ের কথা বলা হয়েছে ‘অকাস’ চুক্তিতে।

    ফ্রান্স কেন ক্ষুব্ধ?

    যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার এই নতুন উদ্যোগে ক্রুদ্ধ হয়েছে ফ্রান্স। কারণ, তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ চুক্তির ফলে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে তাদের পূর্ব-স্বাক্ষরিত বহু কোটি ডলারের একটি সমঝোতা বাতিল হয়ে গেছে।

    অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে ২০১৬ সালে তিন হাজার ৭০০ কোটি ডলার মূল্যের একটি চুক্তি সই হয়েছিল, যার আওতায় অস্ট্রেলিয়ার জন্য ১২টি সাবমেরিন নির্মাণ করার কথা ছিল।

    যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রবিষয়ক বিবিসির সংবাদদাতা বারবারা প্লেট-আশার বলছেন, ‘অকাস’ চুক্তিটি ফ্রান্সের জন্য একদিকে যেমন অর্থনৈতিক ধাক্কা, তেমনি নতুন এই নিরাপত্তা চুক্তির ঘোষণা ফরাসি নেতাদের জন্য বিস্ময়করও। কারণ, এ বিষয়ে তাঁদের কোনো ধারণা ছিল না। ‘অকাস’ চুক্তির কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ফ্রান্সকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়।

    বিবিসির বারবারা প্লেট-আশার এ ঘটনার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেছেন, ‘ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠানোর ঘটনা সম্ভবত নজিরবিহীন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম বন্ধু ফ্রান্স। হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারাও এ কথা উল্লেখ করেছেন।’

    তবে, ফ্রান্স বলছে—অর্থনৈতিক কারণে তারা ক্ষুব্ধ হয়নি। তাদের ক্ষোভের পেছনে কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা-জনিত কারণও রয়েছে।

    প্যারিস থেকে বিবিসির সংবাদদাতা হিউ স্কফিল্ড বলছেন, ‘প্যারিস উদ্‌বিগ্ন এ কারণে যে, ওয়াশিংটন, ক্যানবেরা ও লন্ডনের কর্মকর্তারা তাঁদের ক্ষোভের কারণকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করছেন এবং ফ্রান্সকে ছোট করে দেখছেন।’

    ‘ফ্রান্স বলছে, সাবমেরিন চুক্তির কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে বলে তারা ক্ষুব্ধ হয়নি। বরং মিত্র দেশ হওয়া সত্ত্বেও, যেভাবে ফ্রান্সকে দৃশ্যপটের বাইরে রেখে তিনটি দেশের মধ্যে গোপনে আলাপ-আলোচনা হয়েছে, তাতে তারা ক্ষুব্ধ’, যোগ করেন হিউ স্কফিল্ড।

    বিবিসির সাংবাদিক হিউ স্কফিল্ড আরও বলেন, ‘এ কারণেই ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ গত শুক্রবার রাতে তাঁর রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফ্রান্স দেখাতে চাইছে যে, এটি তাদের জন্য এটা অনেক বড় একটি বিষয়। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।’

    অকাসের তিনটি দেশের প্রত্যেকটির সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক রয়েছে ফ্রান্সের। বিশেষ করে আফ্রিকার সাহের অঞ্চল, আফগানিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসবাদ দমনে ফ্রান্স এই তিনটি দেশের সঙ্গে কাজ করেছে।

    যুক্তরাজ্য থেকে রাষ্ট্রদূত কেন ডাকা হয়নি?

    ‘অকাস’ চুক্তির প্রতিবাদে ওয়াশিংটন ও ক্যানবেরায় ফরাসি রাষ্ট্রদূতদের প্যারিসে ডেকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু, নতুন এই জোটে যুক্তরাজ্যের জড়িত থাকা সত্ত্বেও লন্ডনে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানো হয়নি।

    এ বিষয়ে ফরাসি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া ব্যাখ্যায় ফ্রান্সের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন এই জোটে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা খুব গৌণ বলে মনে করে ফ্রান্স।

    বিশ্লেষকেরা বলছেন, ফ্রান্স মনে করে ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাজ্য ব্রেক্সিট-পরবর্তী বিশ্বে তার নতুন ভূমিকা নির্ধারণ করা চেষ্টা করছে। এবং এজন্য তারা যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করছে।

    নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাজ্যও এখন এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভূমিকা রাখতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

    যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া কী বলছে?

    হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ফ্রান্স সরকারের রাষ্ট্রদূত ডেকে পাঠানোর উদ্যোগে বাইডেন প্রশাসন দুঃখপ্রকাশ করে বলেছে, বিরোধ মিটিয়ে ফেলার ব্যাপারে সামনের দিনগুলোতে তারা ফ্রান্সের সঙ্গে আলোচনা করবে।

    ফ্রান্সের সিদ্ধান্তকে স্বাভাবিকভাবে নেয়নি অস্ট্রেলিয়াও। তারা বলছে, ফ্রান্সের এই পদক্ষেপ দুঃখজনক।

    অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যারিস পেইন বলেছেন, ফ্রান্সের হতাশ হওয়ার কারণ তাঁরা বুঝতে পারছেন। তবে তাঁরা আশা করছেন, ফ্রান্সও ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্ব অনুধাবন করবে।’

    এখানে বলে রাখা ভালো, দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় উদ্‌বিগ্ন অস্ট্রেলিয়া।

    ‘অকাস’ চুক্তির ঘোষণা যে সময়ে দেওয়া হয়েছে, সেটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আফগানিস্তানে দুই দশকের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণার ঠিক এক মাস পর অকাসের কথা ঘোষণা করা হলো।

    দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়ে অনেকের মধ্যে যখন সন্দেহ তৈরি হচ্ছিল, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তার দুটো মিত্র দেশকে পাশে নিয়ে নতুন এই চুক্তির ঘোষণা দেওয়া হলো।

    যদিও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, চীনকে নিশানা করে ‘অকাস’ চুক্তি করা হয়নি।

    ইইউ’র প্রতিক্রিয়া

    ফ্রান্সের শক্ত অবস্থানের ফলে ইইউ জোট বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে।

    প্রথমত, ‘অকাস’ন চুক্তির আলোচনায় শুধু ফ্রান্স নয়, ইইউও ছিল না। শুধু যে আলোচনায় ছিল না তা নয়, এ আলোচনার বিষয়েও তারা অবহিতও না।

    ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান এবং শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিক জোসেপ বোরেলও অকাসের বিষয়ে কিছু জানতেন না।

    এক সংবাদ সম্মেলনে জোসেপ বোরেল বলেছেন, ‘অকাস’ সম্পর্কিত আলোচনায় ইইউ’র অংশগ্রহণ না করা এবং এ বিষয়ে তাদের কিছু অবহিত না করা দুঃখজনক এবং ফরাসি সরকারের জন্য এটা কতটা হতাশাজনক, সেটা তিনি বুঝতে পারেন।

    ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান আরও বলেছেন, ইউরোপের এখন সজাগ হওয়ার সময়, এবং এ বিষয়ে তাদের উদ্যোগ নিতে হবে।

    ইইউ কোনো সামরিক শক্তি নয়, কিন্তু তারপরেও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডের লায়ান ‘ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা জোট’ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।

    বেলজিয়ামের ব্রাসেলস থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জেসিকা পার্কার বলছেন, ‘ইইউ যদি তার শক্তি দেখানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, কেন তারা সেটা করছে। এবং এ কাজ করাটা তাদের জন্য সহজ হবে না।’

    যুক্তরাষ্ট্রে দ্য জার্মান মার্শাল ফান্ড নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইয়ান লেসার বলেছেন, ‘ওয়ালস, এথেন্স, প্যারিস অথবা বার্লিন—সবার দৃষ্টিতে কৌশল এক রকম হবে না।’

    সুতরাং, সংক্ষেপে বলতে গেলে—‘অকাস’ চুক্তি বা জোট গঠনের ঘোষণা ইইউ’র জন্য সময়োপযোগী নয়, এবং তারা যে এ বিষয়ে অজ্ঞাত ছিল, সেটা তাদের জন্য বিব্রতকর।

    চীনের বক্তব্য কী?

    চীন অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। কিন্তু, ‘অকাস’ চুক্তির ফলে এ দুটো দেশের সম্পর্ক যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

    চুক্তির তীব্র সমালোচনা করে চীন এ চুক্তিকে ‘চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন’ এবং ‘সংকীর্ণ মানসিকতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

    চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাঁও লিজিয়ান বলেছেন, এই জোট আঞ্চলিক শান্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার ঝুঁকি তৈরি করেছে, এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে জোরদার করছে।

    যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। এবং ‘অকাস’ চুক্তিকে ‘স্নায়ু যুদ্ধের মানসিকতা’ উল্লেখ করে বলেছেন, তারা তাদের নিজেদের স্বার্থেরও ক্ষতি করছে। চীনা গণমাধ্যমগুলোতেও একই মনোভাব ব্যক্ত করে সম্পাদকীয় প্রকাশ করা হয়েছে।

    এন-কে

  • জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

    জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭৬তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনে যোগ দিতে ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের উদ্দেশে আজ শুক্রবার ঢাকা ত্যাগ করেছেন।

    বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি চাটার্ড ফ্লাইট আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহন করে হেলসিঙ্কির উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ছেড়ে যায়।

    প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এর আগে জানিয়েছিলেন, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইতালি সফরের দেড় বছর পরে এটি প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর।

    প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং সেখানে বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য সরকারি সফরের অংশ হিসেবে ১৯ থেকে নিউইয়র্কে অবস্থান করবেন। নিউইয়র্কে যাওয়ার পথে শেখ হাসিনা হেলসিঙ্কিতে দুদিনের যাত্রাবিরতি করবেন।

    প্রধানমন্ত্রী ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টায় (হেলসিঙ্কি সময়) হেলসিঙ্কি থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওয়ানা হবেন এবং একইদিন স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

    নিউইয়র্কে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে সাধারণ বিতর্কে ভাষণ দেবেন।

    ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী বিগত বছরগুলোর মতো এবারও বাংলায় তাঁর ভাষণ দেবেন।

    আগামী ২০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আহ্বানে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের একটি ছোট দলের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। পরে, তিনি একটি গাছ লাগাবেন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর সম্মানে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লনে ইউএন গার্ডেনে একটি বেঞ্চ উৎসর্গ করবেন।

    বিকেলে, প্রধানমন্ত্রী ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্ক’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

    ২১ সেপ্টেম্বর, শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ বিতর্কের উদ্‌বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক আয়োজিত ‘বিজনেস গোলটেবিল : ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল’ অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন।

    ২২ সেপ্টেম্বর, প্রধানমন্ত্রী ডারবান ডিক্লারেশন অ্যান্ড প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন গ্রহণের ২০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সাধারণ পরিষদের একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন।

    এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী ‘হোয়াইট হাউস বৈশ্বিক কোভিড-১৯ শীর্ষ সম্মেলন : মহামারির সমাপ্তি এবং আরও ভাল অবস্থা গড়ে তোলা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন এবং বক্তৃতা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

    সেদিন বিকেলে শেখ হাসিনা ‘রোহিঙ্গা সংকট : একটি টেকসই সমাধানের জন্য করণীয়’ শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং সেখানে আগে-রেকর্ড করা বক্তৃতা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

    ২৩ সেপ্টেম্বর, প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সুইডিশ মিশন আয়োজিত ‘জাতিসংঘের সাধারণ কর্মসূচি : সমতা ও অন্তর্ভুক্তি অর্জনের পদক্ষেপ’ শীর্ষক নেতাদের নেটওয়ার্কের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ মহাসচিব কর্তৃক আহ্বান করা ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দশক কর্মসূচির অংশ হিসেবে খাদ্য ব্যবস্থা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।

    নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে শেখ হাসিনা বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।

    তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন, বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিজ মিয়া আমোর মোটলি কিউসি, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, নেদারল্যান্ডের রানী ম্যাক্সিমা, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ এবং ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট এনগুয়েন জুয়ান ফাইক।

    এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন।

    জাতিসংঘ অধিবেশন এবং নিউইয়র্কে অন্যান্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রীর ২৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসি সফরের কথা রয়েছে।

    যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে শেখ হাসিনা ৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন এবং হেলসিঙ্কিতে যাত্রাবিরতির পর ১ অক্টোবর দেশে ফিরবেন।

    এন-কে

  • চীনকে মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-অস্ট্রেলিয়ার বিশেষ নিরাপত্তা চুক্তি

    চীনকে মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-অস্ট্রেলিয়ার বিশেষ নিরাপত্তা চুক্তি

    চীনকে মোকাবিলা করতে নতুন একটি বিশেষ নিরাপত্তা চুক্তি ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। চুক্তি অনুযায়ী, দেশ তিনটি নিজেদের উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি পরস্পরের সঙ্গে ভাগাভাগি করবে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

    নতুন এই অংশীদারত্ব অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম বারের মতো পারমাণবিক সাবমেরিন তৈরিতে সক্ষম করবে।

    ত্রিদেশীয় চুক্তিটির নাম দেওয়া হয়েছে—এইউকেইউএস (AUKUS)। এই চুক্তিতে থাকছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম ও সাইবার প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়গুলো।

    বিবিসি বলছে, চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তি এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরে দেশটির সামরিক উপস্থিতি নিয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া উদ্‌বিগ্ন।

    এদিকে, নতুন ত্রিদেশীয় চুক্তির ফলে অস্ট্রেলিয়া ফ্রান্সের নকশায় সাবমেরিন তৈরির একটি চুক্তি বাতিল করেছে।

    অস্ট্রেলীয় নৌবাহিনীর জন্য ১২টি সাবমেরিন তৈরির জন্য ২০১৬ সালে ৫০ বিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলারের একটি কাজ পেয়েছিল ফ্রান্স। ওই চুক্তিটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি।

    তবে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছিল। বিলম্বের অন্যতম কারণ ছিল—প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানের অনেকগুলো নিজেরা স্থানীয়ভাবে সরবরাহ করতে চাইছিল অস্ট্রেলিয়া।

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন গতকাল বুধবার নতুন নিরাপত্তা অংশীদারত্বের সূচনা উপলক্ষ্যে এক যৌথ বিবৃতি দেন।

    বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এইউকেইউএস-এর অধীনে প্রথম উদ্যোগ হিসেবে… আমরা অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীর পারমাণবিক সাবমেরিন অর্জনে অস্ট্রেলিয়াকে সহায়তায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

    বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অস্ট্রেলীয় নৌবাহিনীতে পারমাণবিক সাবমেরিন যুক্ত হলে, তা ‘ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বাড়াবে এবং ত্রিদেশীয় যৌথ মূল্যবোধ ও স্বার্থরক্ষায় সেটি মোতায়েন করা হবে।’

    এন-কে