রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপনের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির তেজগাঁও জোনের উপকমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।
সোমবার সকালে মাইন্ড এইড হাসপাতালে মানসিক রোগের চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাসপাতালের কর্মীদের মারধরে আনিসুল নিহত বলে দাবি করেন স্বজনরা। পুলিশও প্রাথমিকভাবে এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করেছে।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও জোনের ডিসি হারুন অর রশীদ বলেন, ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় স্পষ্ট মনে হয়েছে- এএসপি আনিসুলের মৃত্যু অনাকাঙ্ক্ষিত নয়, এটি হত্যাকাণ্ড। কারণ যে ১০-১২ জন লোক তাকে পিঠ বেঁধে, মুড়ে, আছড়ে নিয়ে গেছে, তারা কেউ ডাক্তার না।
আনিসুলকে ভুইফোঁড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মাঝখানে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের বিষয়ে আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। সরকারি হাসপাতালের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে ডিসি বলেন, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। গ্রেফতারদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসবে। মাইন্ড এইড হাসপাতালটিতে মানসিক চিকিৎসা দেওয়ার কথা বললেও তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনো বৈধ কাজগপত্র দেখাতে পারেননি। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কোনো অনুমতি নেই তাদের। কোনো চিকিৎসক ছাড়াই ভুইফোঁড় এ হাসপাতালটি পরিচালনা করা হচ্ছিলো। হাসপাতালটির পরিচালনা পর্ষদের কেউ ডাক্তার নন।
হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদসহ এ ঘটনায় জড়িত সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও জানান হারুন অর রশীদ।
ডিসি হারুন বলেন, সেখানে গিয়ে রোগীটা প্রথমে ভালো ছিলেন। হঠাৎ করে দেখলেন যে, সে নিস্তেজ হয়ে গেছে। কিন্তু যখন আমরা ভিডিও ফুটেজ লক্ষ করলাম, সেখানে দেখলাম… আট থেকে ৯ জন লোক তাকে পিঠ মোড়াচ্ছে, তাকে মাথায় আঘাত করছে; তাকে বেঁধে ফেলছে এবং তাকে বিভিন্নভাবে জোর করে নিয়ে যাচ্ছে।’
ডিসি জানান, সিসিটিভি ফুটেজে উপস্থিত ১০ জনের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন মাইন্ড এইডের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন সেফ মাসুদ, ওয়ার্ড বয় জোবায়ের হোসেন, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহাম্মদ, সাইফুল ইসলাম পলাশ ও ফার্মাসিস্ট তানভীর হাসান। তাদের প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে এএসপির মৃত্যুর ঘটনায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
২৪ ঘণ্টা/রিহাম