লঙ্কিনে নিউজিল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে ছয় উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশের যুবারা। নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে স্বাগতিকদের ১৭৬ রানে আটকে রাখার পর আকবর আলির অর্ধশতকের সুবাদে ৬৮ বল হাতে রেখেই লক্ষ্য টপকে যায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
১৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে অবশ্য শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশের যুবারা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই ভেঙে যায় ওপেনিং জুটি। দলীয় ১১ রানের মাথায় ফিরে যান ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। ১০ বলে ২ রান করে রান আউট হন তিনি। তানজীদ হাসানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয় তার। দ্বিতীয় রান নিতে গেলে ইমন হাত দিয়ে তানজীদকে না-বোধক ইশারা দিলেও তানজীদ দৌড় থামাননি। এরপর নিজের উইকেট বিসর্জন দেন ইমন।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তানজীদ ও মাহমুদুল হাসান জয় মিলে গড়েন ৩০ রানের জুটি। দ্রুত রান তুলছিলেন তানজীদ হাসান। তবে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ২৪ বলে ২৮ রান করে স্পিনার ট্যাশকফের বলে লেগ সাইডে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন মারিউর হাতে। তার ইনিংসে ছিল ৫ টি চার। এরপর তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে ৪০ রান যোগ করেন জয়। জয়ও করেন ২৮ রান। পেস বোলার জ্যাকসনের অফ স্টাম্পের বাইরের বল কাট করতে গিয়ে জোহরাবের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ৮১ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
ইনিংস বড় করতে পারেননি হৃদয়ও। ৪৭ বল খেলে রান করেন ২৬। ডাউন দ্যা উইকেটে এসে ট্যাশরফের বলে তুলে মারতে গিয়ে বিদায় নেন হৃদয়।
পঞ্চম উইকেটের জুটিতে হাল ধরেন শাহাদাত হোসেন আর আকবর আলী। এ দুইজনের ব্যাটে চড়ে জয়ের পথে এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ। টপ অর্ডারের কেউ বড় স্কোর না করতে পারলেও লক্ষ্য সহজ থাকায় তা তাড়া করা খুব একটা কষ্টকর হয়নি।
চমৎকার ব্যাটিং করেন আকবর আলী। শাহাদাতকে সাথে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৮১ রানের জুটি গড়ে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। অর্ধশতক তুলে নেওয়া আকবর আলি অপরাজিত ছিলেন ৬১ বলে ৬৫ রান করে। তার ইনিংসে ছিল ১১ টি চার।
এর আগে প্রথমে ব্যাটিং করে স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের যুবাদের বোলিং তোপে পড়ে ১৭৬ রানে অলআউট হয় তারা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ওপেনার মারিউকে বোল্ড করেন পেসার শরিফুল ইসলাম। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে উপরে ফেলেন লেগ স্টাম্প। এরপর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন জোহরাব আর আনসেল। তবে রানের গতি ছিল বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রণে। ৪৫ রানের এ জুটি ভাঙেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ২৪ রান করা আনসেল পুল করতে গেলে ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে বল আঘাত আনে স্টাম্পে।
ওপেনার জোহরাবকে ফেরান শামীম হোসেন। দলীয় ৫১ রানের মাথায় তানজীদের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন জোহরাব (১৮)। ঐ ওভারে ট্যাশকফও ফিরেন তানজীদের হাতে ক্যাচ দিয়ে। একই ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় চলে যায় নিউজিল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
বিপর্যয়ের মুখে হাল ধরেন লেলম্যান ও হোয়াইট। ৫৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে এ জুটি যোগ করে ৪৭ রান। লেলম্যান (২৯ বলে ২১) শরীফুলের বলে পুল করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে সংযোগ ঠিকমতো ঘটাতে পারেনি। হাওয়ায় ভাসতে থাকা বল এসে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক আকবরের গ্লাভসে।
শরীফুলের বলে এক ওভার পর বিদায় নেন হোয়াইটও। তানজীম হাসান সাকিবের বলে বিদায় নেন হোয়াইট। দারুণ এক ক্যাচ নেন আকবর আলি। ৫০ বলে ৩০ রান করেন হোয়াইট।
সপ্তম উইকেটে অশোক ও উইকেটরক্ষক পোম্যার যোগ করেন ৩৩ রান। ১৩৫ রানের মাথায় রকিবুল হাসানের বলে বোল্ড হন অশোক। ২৫ বলে ১৪ রান করেন তিনি। ফিল্ডকে সাথে নিয়ে অষ্টম উইকেটে ৩৭ রান যোগ করেন পোম্যার। এ দুইটি জুটি স্বাগতিকদের লড়াইয়ের রসদ দেয়।
১৭৫ রানের মাথায় বিদায় নেন পোম্যার। দলীয় সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন তিনি। পরের ওভারে ফিল্ড ও জ্যাকসনকে মৃত্যুঞ্জয় ফিরিয়ে দিলে দুই ওভার আগেই নিউজিল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দলেরর ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড অনূর্ধ্ব- ১৯ দল ১৭৬/১০, ৪৮ ওভার
পোম্যার ৪০, হোয়াইট ৩০, আনসেল ২৪
মৃত্যুঞ্জয় ৩/২১, শরীফুল ৩/৪৪, শামীম ২/৪২
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ১৮০/৪, ৩৮.৪ ওভার
আকবর ৬৫*, তানজীদ ২৮, জয় ২৮
ট্যাশকফ ২/৩৭, জ্যাকসন ১/৪০