চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর অংশ দখল করে স্থাপিত মাছ বাজার বরফকলসহ অন্যান্য অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ বন্ধ করতে তৎপর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কর্ণফুলী রক্ষায় তৈরিকৃত মাস্টার প্ল্যানের তথ্য গোপন করে কর্ণফুলী নদীর অংশকে নিজেদের জমি বলে দাবী করেছে চট্টগ্রাম বন্দর।
হাইকোর্টের নির্দেশে জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় প্রদত্ত আবেদন নিস্পত্তি শুনানি আজ মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে অুনষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের নেতারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার রাজজ্ব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী ছাড়াও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষে শুনানিতে অংশ গ্রহন করেন, সহকারী কমিশনার (এনডিসি) মো. তোহিদুল ইসলাম, সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুমা জান্নাত, বিভাগীয় কমিশনারের পক্ষে সিনিয়র সহকারী কমিশনার রক্তিম চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এস্টেট শাখার এসিসটেন্ট ম্যানেজার মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন ।
শুনানিতে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের পক্ষে সভাপতি চৌধুরী ফরিদ ও সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে কর্ণফুলী নদী রক্ষায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ও এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক যৌথভাবে গঠিত স্ট্রেটেজিক মাস্টার প্ল্যান ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তৈরি করা মাস্টার প্ল্যানের কপি আগামী দুই দিনের মধ্যে জমা দিয়ার নির্দেশ দেন।
শুনানিকালে জেলা প্রশাসনের পক্ষে এডভোকেট মনজিল মোর্শেদ ২০১০ সালে দায়েরকৃত মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালে পরিচালিত সার্ভে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
উক্ত সার্ভে প্রতিবেদনে বর্তমান মাছ বাজার ও ভেড়া মার্কেট এলাকা দখলকৃত স্থানকে নদী উল্লেখ করে অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করার সার্ভেতে চট্টগ্রাম বন্দরের সার্ভেয়ার ও স্টেট বিভাগের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর পরিলক্ষিত হয়।
চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের পক্ষে ৮৮৬ মিটার নদীকে ভরাট করে কিভাবে ৪১০ মিটার করা হয়েছে সে সম্পর্কিত সার্ভে প্রতিবেদন উপস্থাপন করে জীবন্ত সত্ত্বা হিসাবে কর্ণফুলীকে হত্যা করা হচ্ছে বলে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।
এই প্রসঙ্গে সংগঠনের সভাপতি চৌধুরী ফরিদ বলেন, আমরা যথাযথ তথ্য উপস্থাপন করে নদী দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আবেদন করেছি।
তিনি বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে নদী দখল করে স্থাপনা নির্মান রীতিমতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ যা বন্দর কর্তৃক করা হয়েছে।
কারো অধিকতর তথ্য উপাত্ত প্রদান করার থাকলে তা আগামি বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে উপস্থাপন করার আদেশ দিয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার রাজস্ব ড.প্রকাশ কান্তি চৌধুরী শুনানি শেষ করেন।
প্রসঙ্গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন মাছ বাজার ভেড়া মার্কেট সহ সহস্রাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নোটিশ প্রদান করেন।
উক্ত নোটিশের বিপক্ষে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করেন মাছ বাজারের লোকজন। হাইকোর্ট চার সপ্তাহের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে কৃত মাছ বাজার কর্তৃপক্ষের আবেদন নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিন।
২৪ ঘন্টা/প্রিন্স