২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। চট্টগ্রাম ডেস্ক : মঞ্জুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) তৃতীয় দিনের মত আমরণ অনশন করছে চট্টগ্রামের আমিন জুট মিলের পাটকল শ্রমিকরা। এখনো মেলেনি সংশ্লিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষের আশ্বাস। খোঁজ নেয়নি কেউ।
শ্রমিক নেতারা দাবি করছে গত তিনদিন ধরে চলমান অনশন কর্মসুচিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে ১০ জন পাটকল শ্রমিক। এদের মধ্যে দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে এবং বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে বিশ্রামে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল শ্রমিক সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে সারাদেশে অনশন কর্মসূচীর ঘোষণা দিলে সারাদেশের মত আমিন জুট মিলসহ চট্টগ্রামের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত মিলের শ্রমিকরা এই কর্মসূচি পালন করছেন।
রাতভর শীত উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম আমিন জুট মিলের গেটে অনশন স্থলে অবস্থান করছেন শত শত শ্রমিক। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে ১০ শ্রমিক। এরপরও শ্রমিক নেতারা এবারের কর্মসূচি থেকে পিছু হটার কোন সুযোগ নেই উল্লেখ করে দাবি আদায়ের জন্য প্রয়োজনে মৃত্যুকে বরণ করে নিতেও তারা প্রস্তুত বলে জানায়। সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন অনশনরত শ্রমিক নেতারা।
আমিন জুট মিল সিবিএ’র দপ্তর সম্পাদক কামাল উদ্দিন বলেন, দাবি-দাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষ বরাবরই উদাসীন। বৃহস্পতিবার অনশনের তৃতীয় দিন চলছে কিন্তু এখনো দাবী আদায়ের কোন আশ্বাস কারো কাছ থেকে পাইনি। এখন পর্যন্ত খবরও নেয়নি উল্লেখযোগ্য কেউ।
এরমধ্যে বুধবার ও বৃহস্পতিবার মিলে আমাদের ১০ জনের মত শ্রমিক ভাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ৮ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে বিশ্রামে পাঠানো হয়েছে বাকি দুজনের অবস্থা অবনতি হলে তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আমরণ অনশন কর্মসূচীতে শ্রমিক নেতারা বলেন, ২০১৫ সালে ঘোষণা দিয়েও মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন না হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছেন শ্রমিকরা।
মঞ্জুরী কমিশন বাস্তবায়ন, ১১ সপ্তাহের বকেয়া বেতন পরিশোধ, পিএফ’র টাকা প্রদান, বদলি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণসহ ১১ দফা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবী। যা সরকার মানছেন না। এ জন্য বাধ্য হয়ে আমরণ অনশন কর্মসূচী পালন করছে শ্রমিকরা।
ন্যায্য দাবী আদায়ের জন্য আমরণ অনশন ধর্মঘটে মিলের সকল শ্রমিক স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছে। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে আমরণ অনশন কর্মসূচি চলাকালীন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামের আমিন জুটমিলে। মিলের উৎপাদনবন্ধ হওয়াসহ পণ্যবাহী কোন ট্রাক ও মিল কর্মকর্তারা সকাল থেকে মিলে প্রবেশ করতে পারেনি।