Tag: আনিসুল করিম

  • এএসপি আনিসুল হত্যার প্রতিবাদে ‘লিজেন্ড বাংলাদেশ’র মানববন্ধন

    এএসপি আনিসুল হত্যার প্রতিবাদে ‘লিজেন্ড বাংলাদেশ’র মানববন্ধন

    সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহাম্মদ আনিসুল করিম শিপন হত্যার প্রতিবাদ ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এসএসসি ২০০০ ও এইচএসসি ২০০২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপ লিজেন্ড বাংলাদেশ।

    শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

    মানববন্ধনে বক্তারা জানান, চিকিৎসার নামে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি সারাদেশে যেসব অবৈধ হাসপাতাল রয়েছে, সেসবের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

    বরিশাল মহানগর ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার আনিসুল করিম শিপন মানসিক চিকিৎসার জন্য গত ৯ নভেম্বর আদাবরের ওই হাসপাতালে যান। কিন্তু চিকিৎসার বদলে সেখানে হাসপাতাল কর্মীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে।

    হত্যাকাণ্ডের শিকার আনিসুল করিম শিপন ঢাকা বোর্ডের অধীনে ২০০০ সালে এসএসসি ও ২০০২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে প্রাণরসায়নে এমএসসি সম্পন্ন করেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। ১৯৮৪ সালের ২১ নভেম্বর গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন শিপন।

    ৩১তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে দ্বিতীয় স্থান পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন তিনি। চাকরিকালীন শিপন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, র‌্যাবসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

    ২৪ ঘণ্টা/মোরশেদ

  • এএসপি শিপন হত্যা: গ্রেফতারকৃত ১০ জন ৭ দিনের রিমান্ডে

    এএসপি শিপন হত্যা: গ্রেফতারকৃত ১০ জন ৭ দিনের রিমান্ডে

    রাজধানীর আদাবর এলাকার মাইন্ড এইড সাইকিয়াট্রি এন্ড ডি-এডিকশন হাসপাতালে সিনিয়র সহকারি পুলিশ কমিশনার মো. আনিসুল করিম ওরফে শিপন (৩৫) হত্যার ঘটনায় হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজারসহ গ্রেফতারকৃত ১০ জনকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

    এরআগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আদাবর থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।

    ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত আজ শিপন হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেফতার হাওয়া হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়সহ ১০ জনের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

    মঙ্গলবার গ্রেফতারকৃত ১০ জনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদাবর থানার পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক মোল্লা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

    রিমান্ডভূক্তরা (গ্রেফতারকৃত) হলেন, হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন সেফ মো. মাসুদ, ওয়ার্ডবয় জোবায়ের হোসেন, ফার্মাসিস্ট মো. তানভীর হাসান, ওয়ার্ডবয় মো. তানিম মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, মো. লিটন আহাম্মদ ও মো. সাইফুল ইসলাম পলাশ।
    রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ‘আসামিরা সকলেই হাসপাতালে বাবুর্চি, ওয়ার্ডবয়, মার্কেটিং অফিসার ও কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কর্মরত।

    মামলার এজাহারভূক্ত আসামিরা অনুমোদন ব্যতীত হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে চিকিৎসার নামে অবৈধ অর্থ অর্জন করে আসছিল।’

    এতে আরও বলা হয়, ‘এই মামলার ভিকটিম মো আনিসুল করিমকে উন্নত চিকিৎসার আশায় মামলার বাদি গত ৯ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন মানসিক চিকিৎসা দিতে পারেন এমন কোনো ডাক্তার হাসপাতালে কর্তব্যরত ছিলেন না। আসামিরা চিকিৎসা দেয়ার অজুহাতে ভিকটিমকে বলপ্রয়োগ করে হাসপাতালের দোতলায় স্থাপিত একটি অবজারভেশন কক্ষে নিয়ে যায়। আসামিরা ভিকটিমকে মারতে মারতে অবজারভেশন কক্ষে ঢোকায়। তা ঘাড়, পিঠ ও মাথাসহ শরীরে বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে রুমের ওপর উপুড় করে ফেলে দেয়। কয়েকজন ভিকটিমের পিঠে চড়ে বসে, কয়েকজন মাথার ওপর আঘাত করে, বাকিরা দু’হাত পিঠমোড়া করে ওড়না দিয়ে বাঁধে।’
    ‘আসামিদের এমন অমানসিক নির্যাতনে ভিকটিম মো. আনিসুল করিমের মৃত্যু হয়।

    এএসপি শিপনকে মারধরের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
    সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় মানসিক সমস্যার কারণে হাসপাতালে আসেন এএসপি আনিসুল করিম। অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই মারা যান তিনি। হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

    দীর্ঘক্ষণ অচেতন থাকা অবস্থায়ও তাকে ভর্তি কার্যক্রম করা হয়নি। কিছুক্ষণ পর ১২টার দিকে তাকে হাসপাতালের লোকজন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান হাসপাতালে নেয়ার আগেই শিপনের মৃত্যু (ব্রট ডেথ) হয় ।

    এ ঘটনায় আদাবর থানায় হত্যা একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার আনিসুল করিম শিপনের বাবা বাদি হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন।

    মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. হারুন অর রশিদ।

    হারুন অর রশিদ জানান, গত ৯ নভেম্বর দুপুর অনুমান সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত সিনিয়র সহকারি পুলিশ কমিশনার মো. আনিসুল করিমকে চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের সদস্যরা আদাবরের এ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয় তাকে ওয়াশরুমে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে হাসপাতালের দোতলায় নিয়ে যায়। তখন তার বোন তার সাথে যেতে চাইলে আরিফ ও রেদোয়ান তাকে বাধা দেয় এবং কলাপসিবল গেট আটকে দেয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে আরিফ নিচে এসে তার বোনকে উপরে যাওয়ার জন্য ডাক দেয়। তার বোনসহ পরিবারের লোকজন উপরে গিয়ে আনিসুল করিমকে একটি রুমের ফ্লোরে নিস্তেজ অবস্থায় শোয়া দেখতে পায়। তার পরিবারের সদস্যরা একটি এ্যাম্বুলেন্স যোগে আনিসুল করিমকে দ্রুত শ্যামলীতে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সংক্রান্তে সোমবার রাতে তাঁর বাবা বাদি হয়ে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

    মামলা দায়ের পর পর আদাবর থানা পুলিশ হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজে দেখতে পায়, গ্রেফতারকৃতরা আনিসুল করিমকে হাসপাতালের দোতলার একটি রুমে মারতে-মারতে ঢুকায়। তাকে এ রুমের ফ্লোরে জোরপূর্বক উপুড় করে ৩ থেকে ৪ জন হাটু দিয়ে পিঠের উপর চেপে বসে, কয়েকজন পিঠ মোড়া করে ওড়না দিয়ে তার দুই হাত বাঁধে। কয়েক জন অভিযুক্ত কনুই দিয়ে ঘাড়ের পিছনে ও মাথায় আঘাত করে। ফলে আনিসুল করিম দুপুর অনুমান ১২ টার দিকে নিস্তেজ হয়ে পড়ে।গ্রেফতারকৃতরা পরিকল্পিতভাবে মারপিট করে তাকে হত্যা করেছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

    ডিসি তেজগাঁও বলেন, হাসপাতালটি পরিচালনার জন্য বৈধ কোন কাগজপত্র ছিল না। তাদের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এটা একটা ভুঁইফোড় হাসপাতাল। তারা অবৈধভাবে মানসিক রোগীর চিকিৎসার নামে বাণিজ্য করে আসছিল।

    হাসপাতালের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। হাসপাতালটিতে কয়েকজন রোগী আছেন। তারা চলে গেলে হাসপাতালটি বন্ধ করে করে দেওয়া হবে।

    উল্লেখ্য, পুলিশ ক্যাডার সদস্য আনিসুল করিম বিসিএস ৩১ তম ব্যাচে ১ম স্থান অধিকার করেন। অত্যন্ত মেধাবী এই কর্মকর্তা কর্মজীবনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটিলিয়ন, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও সর্বশেষ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম

  • এএসপি আনিসুলের মৃত্যু অনাকাঙ্ক্ষিত নয় ‘সুস্পষ্ট হত্যাকাণ্ড’

    এএসপি আনিসুলের মৃত্যু অনাকাঙ্ক্ষিত নয় ‘সুস্পষ্ট হত্যাকাণ্ড’

    রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপনের মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছে পুলিশ।

    মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির তেজগাঁও জোনের উপকমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।

    সোমবার সকালে মাইন্ড এইড হাসপাতালে মানসিক রোগের চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাসপাতালের কর্মীদের মারধরে আনিসুল নিহত বলে দাবি করেন স্বজনরা। পুলিশও প্রাথমিকভাবে এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করেছে।

    আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও জোনের ডিসি হারুন অর রশীদ বলেন, ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় স্পষ্ট মনে হয়েছে- এএসপি আনিসুলের মৃত্যু অনাকাঙ্ক্ষিত নয়, এটি হত্যাকাণ্ড। কারণ যে ১০-১২ জন লোক তাকে পিঠ বেঁধে, মুড়ে, আছড়ে নিয়ে গেছে, তারা কেউ ডাক্তার না।

    আনিসুলকে ভুইফোঁড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মাঝখানে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের বিষয়ে আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। সরকারি হাসপাতালের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে ডিসি বলেন, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। গ্রেফতারদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসবে। মাইন্ড এইড হাসপাতালটিতে মানসিক চিকিৎসা দেওয়ার কথা বললেও তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনো বৈধ কাজগপত্র দেখাতে পারেননি। মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কোনো অনুমতি নেই তাদের। কোনো চিকিৎসক ছাড়াই ভুইফোঁড় এ হাসপাতালটি পরিচালনা করা হচ্ছিলো। হাসপাতালটির পরিচালনা পর্ষদের কেউ ডাক্তার নন।

    হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদসহ এ ঘটনায় জড়িত সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও জানান হারুন অর রশীদ।

    ডিসি হারুন বলেন, সেখানে গিয়ে রোগীটা প্রথমে ভালো ছিলেন। হঠাৎ করে দেখলেন যে, সে নিস্তেজ হয়ে গেছে। কিন্তু যখন আমরা ভিডিও ফুটেজ লক্ষ করলাম, সেখানে দেখলাম… আট থেকে ৯ জন লোক তাকে পিঠ মোড়াচ্ছে, তাকে মাথায় আঘাত করছে; তাকে বেঁধে ফেলছে এবং তাকে বিভিন্নভাবে জোর করে নিয়ে যাচ্ছে।’

    ডিসি জানান, সিসিটিভি ফুটেজে উপস্থিত ১০ জনের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন মাইন্ড এইডের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন সেফ মাসুদ, ওয়ার্ড বয় জোবায়ের হোসেন, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহাম্মদ, সাইফুল ইসলাম পলাশ ও ফার্মাসিস্ট তানভীর হাসান। তাদের প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

    এদিকে এএসপির মৃত্যুর ঘটনায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম

  • এএসপি আনিসুল হত্যায় মামলা, গ্রেফতার ১০

    এএসপি আনিসুল হত্যায় মামলা, গ্রেফতার ১০

    রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপন ‘হত্যার’ ঘটনায় মামলা হয়েছে।

    মঙ্গলবার আনিসুলের বাবা বাদী হয়ে আদাবর থানায় মামলাটি করেন; যার নম্বর-৯।

    আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ফারুক মোল্লা এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

    এ বিষয়ে দুপুরে শ্যামলীতে উপপুলিশ কমিশনারের (তেজগাঁও বিভাগ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।

    গতকাল সোমবার সকালে আদাবরের এই মানসিক রোগ নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে গিয়ে হাসপাতালে কর্মচারীদের পিটুনিতে এএসপি আনিসুল করিম নিহত হন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

    পুলিশ বলছে, হাসপাতালের কর্মচারীদের এলোপাতাড়ি পিটুনিতে তিনি মারা গেছেন। এ ঘটনায় আটজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

    আনিসুলের পরিবারও একই অভিযোগ করেছে। তারা জানিয়েছেন, ভর্তির পর পর হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

    তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় তারা পুলিশ কর্মকর্তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন মাত্র। পরে তার মৃত্যু হয়।

    এদিকে হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুলকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে ঢোকানো হয়। তাকে হাসপাতালের ছয়জন কর্মচারী মিলে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এর পর আরও দুজন কর্মচারী তার পা চেপে ধরেন।

    এ সময় মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারীকে হাতের কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করতে দেখা যায়। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পেছনে বাঁধা হয়।

    কিছুক্ষণ পর আনিসুলকে উপুড় করা হয়। তার শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ায় একজন কর্মচারী তখন তার মুখে পানি ছিটান। পরে কর্মচারীরা কক্ষের মেঝে পানি দিয়ে পরিষ্কার করেন।

    সাত মিনিট পর সাদা অ্যাপ্রোন পরা একজন নারী কক্ষে প্রবেশ করেন। ১১ মিনিটের মাথায় কক্ষের দরজা লাগিয়ে দেয়া হয়। ১৩ মিনিটের মাথায় তার বুকে পাম্প করেন সাদা অ্যাপ্রোন পরা নারী।

    হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের খাতায় লেখা রয়েছে ‘ব্রট ডেড’ অর্থাৎ সেখানে নিয়ে আসার আগেই আনিসুলের মৃত্যু হয়েছিল।

    আনিসুলের ভাই রেজাউল করিম সংবাদমাধ্যমকে জানান, পারিবারিক ঝামেলার কারণে তার ভাই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার সকালে তারা তাকে নিয়ে মাইন্ড এইড হাসপাতালে যান।

    তিনি জানান, কাউন্টারে ভর্তির ফরম পূরণের সময় হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী আনিসুলকে দোতলায় নিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর তাদের জানানো হয় আনিসুল অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। এর পর দ্রুত হৃদ্রোগ ইন্সটিটিউটে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    রেজাউল করিম আরও জানান, তার ভাইয়ের রক্তচাপজনিত সমস্যা ছিল। কিছুটা হৃদরোগও ছিল। কিন্তু এ দুটির কোনোটিই প্রকট ছিল না। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পিটুনিতেই সে নিহত হয়েছে।

    ডিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন, ‘এএসপি আনিসুল করিমকে কয়েকজন মিলে চিকিৎসার নামে এলোপাতাড়ি মারধর করে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।’

    ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশিদ বলেন, ‘প্রশিক্ষিত নয়, হাসপাতালের এমন কিছু ব্যক্তি তাকে চিকিৎসার নামে মারধর করে। এতে তিনি প্রাণ হারান।’

    আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) ফারুক মোল্লা জানান, ঘটনার পর হাসপাতালের আটজনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

    মাইন্ড এইড হাসপাতালের সমন্বয়ক মো. ইমরান খান জানিয়েছেন, আনিসুল হককে জাতীয় মানসিক ইন্সটিটিউট থেকে তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। ভর্তির সঙ্গে সঙ্গেই তিনি খুব উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছিলেন। একে–ওকে মারধর করছিলেন। তাকে শান্ত করার জন্য ওই কক্ষটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

    নিহত আনিসুল করিম বরিশাল মহানগর ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনারের পদে ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরে। আনিসুল ৩১তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। তিনি বরিশাল থেকে সোমবারই গাজীপুরের বাসায় গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম

  • অসুস্থ এএসপিকে আদাবর হাসপাতালে পিটিয়ে হত্যা

    অসুস্থ এএসপিকে আদাবর হাসপাতালে পিটিয়ে হত্যা

    রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে কর্মচারীদের মারধরে অসুস্থ পুশিলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম মারা গেছেন। এঘটনায় পুলিশ হাসপাতালটির ম্যানেজারসহ ৬ জনকে আটক করেছে।

    আনিসের পরিবারের অভিযোগ ৩১ তম বিসিএস পুলিশের এই কর্মকর্তাকে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে। ওই হাসপাতালটি ভর্তি করার কিছু সময় পরই তাকে মারধর করা হয় এবং এতে তিনি মারা যান। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবী উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় তারা পুলিশ কর্মকর্তা ওই রোগীকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। ওই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে।

    আনিসুল করিম সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে বরিশাল মহানগর পুলিশে (বিএমপি) কর্মরত ছিলেন। বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি তিন বছর বয়সী এক সন্তানের বাবা। আনিস জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।

    আনিসুল করিমের ভাই রেজাউল বলেন, আনিস কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার দুপুরে তাকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে যান। কাউন্টারে যখন ভর্তির ফরম পূরণ করছিলেন, তখন কয়েকজন কর্মচারী দোতলায় নেন। কিছুক্ষণ পর আনিসুল অজ্ঞান হওয়ার খবর পান। সেখান থেকে তাকে দ্রুত জাতীয় হৃদরোগ ইনিস্টিউটিটে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    তিনি আরও বলেন, পরে আদাবর থানা পুলিশের সহযোগিতায় হাসপাতাল থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এতে দেখা যায় দুপুর ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে ঢোকানো হয়, সেখানে হাসপাতালের ৬ কর্মচারী মিলে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এরপর নীল পোশাক পরা আরও দুজন কর্মচারী পা চেপে ধরেন। তার মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারী হাতের কনুই দিয়ে আঘাত করে। এসময় হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ পাশে দাঁড়ানো ছিল। পরে একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পিছমোড়া বাঁধা হয়। কয়েক মিনিট পর আনিস জ্ঞান হারান। কর্মচারীদের একজন আনিসকে মুখে পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করে। কিছু সময় পর সাদা অ্যাপ্রোন পরা একজন নারী কক্ষে প্রবেশ করেন। কক্ষের দরজা লাগিয়ে আনিসের বুকে পাম্প করেন ওই নারী।

    পরিবারের সঙ্গে আনিসুল করিম

    রেজাউল করিম বলেন, আনিসের ব্লাডপ্রেসার ও হৃদরোগ ছিল। কিন্তু এ দুটির কোনোটিই মারাত্মক ছিল না। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গণপিটুনিতে তার ভাই মারা গেছে। ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে বলেন, হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। আনিসুলের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।

    মাইন্ড এইড হাসপাতালের সমন্বয়ক মো. ইমরান বলেন, হাসপাতালে আনার পর রোগী উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছিলেন। একে–ওকে মারধর করছিলেন। তাকে শান্ত করার জন্য ওই কক্ষে নেওয়া হয়। আনিসকে মারধর করা হয়েছে কেন? এবিষয়ে কোন জবাব দেননি ইমরান।

    এদিকে এএসপি আনিসুলের মৃত্যুতে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন শোক প্রকাশ করে বলেছে, আনিসুল করিম শিপনের মতো একজন মেধাবী কর্মকর্তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ভীষণ শোকাহত ও মর্মাহত। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডিএমপি কমিশনার মোহা: শফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

    আনিসুলের মৃত্যুতে তার সহকর্মীরা সুষ্ঠু তদন্ত শেষে দায়ীদের কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এই ঘটনায় নিহত শিপনের বাবা বাদি হয়ে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোহাম্মদ ফারুক মোল্লা।

    ২৪ ঘণ্টা/রিহাম