Tag: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

  • মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ

    মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ

    আজ একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পূর্ণ হবে এদিন।

    রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতি একুশের মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।

    এদিন রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে একুশের কর্মসূচি শুরু হবে। এছাড়াও কালো ব্যাজ ধারণ, প্রভাতফেরি সহকারে আজিমপুর কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানো হবে। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।

    জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গত কয়েক বছর ধরে দিবসটি পালিত হচ্ছে।

    বাঙালি জাতির জন্য এই দিবসটি হচ্ছে চরম শোক ও বেদনার। অনদিকে মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। যে কোন জাতির জন্য সবচেয়ে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার হচ্ছে মৃত্যুর উত্তরাধিকার-মরতে জানা ও মরতে পারার উত্তরাধিকার। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহিদরা জাতিকে সে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার দিয়ে গেছেন।

    ১৯৫২ সালের এদিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠির চোখ-রাঙ্গানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে। মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শংকিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।
    তাদের এই আত্মদান নিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সরদার ফজলুল করিম তার ‘বায়ান্নর ও আগে’ প্রবন্ধে লিখেছেন ‘বরকত, সালামকে আমরা ভালবাসি। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা বরকত সালাম আমাদের ভালবাসে। ওরা আমাদের ভালবাসে বলেই ওদের জীবন দিয়ে আমাদের জীবন রক্ষা করেছে। ওরা আমাদের জীবনে অমৃতরসের স্পর্শ দিয়ে গেছে। সে রসে আমরা জনে জনে, প্রতিজনে এবং সমগ্রজনে সিক্ত।’

    এদের আত্মদানের মধ্যদিয়ে আমরা অমরতা পেয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজ আমরা বলতে পারি দস্যুকে, বর্বরকে এবং দাম্ভিককে : তোমরা আর আমাদের মারতে পারবে না। কেননা বরকত সালাম রক্তের সমুদ্র মন্থন করে আমাদের জীবনে অমরতার স্পর্শ দিয়ে গেছেন।’

    বরেণ্য শিক্ষাবিদ আবুল ফজল একুশ নিয়ে তার এক লেখায় লিখেছেন ‘মাতৃভাষার দাবি স্বভাবের দাবি। ন্যায়ের দাবি, সত্যের দাবিÑএ দাবির লড়াইয়ে একুশে ফেব্রুয়ারির শহীদরা প্রাণ দিয়েছেন। প্রাণ দিয়ে প্রমাণ করেছেন, স্বভাবের ব্যাপারে, ন্যায় ও সত্যের ব্যাপারে কোন আপোষ চলে না, চলে না কোন গোঁজামিল। জীবন-মৃত্যুর ভ্রকুটি উপেক্ষা করেই হতে হয় তার সম্মুখীন।

    একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি। এদিন দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সঠিক নিয়মে, সঠিক রং ও মাপে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।

    দিবসটি পালন উপলক্ষে জাতীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

    আজিমপুর কবরস্থানে ফাতেহা পাঠ ও কোরানখানির আয়োজনসহ দেশের সকল উপাসনালয়ে ভাষা শহিদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

    বাংলাদেশ মিশনসমূহ শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ, বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন বিষয়ক আলোচনা সভা, পুস্তক ও চিত্র প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করবে যেখানে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং বাঙালি অভিবাসীদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।

    দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন উপলক্ষ্যে গণযোগাযোগ অধিদপ্তর ঢাকা মহানগরীতে ট্রাকের মাধ্যমে রাজপথে ভ্রাম্যমাণ সংগীতানুষ্ঠান এবং নৌযানের সাহায্যে ঢাকা শহর সংলগ্ন নৌপথে সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজনসহ জেলা-উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর তিন ধরনের পোস্টার মুদ্রণ করবে যার মধ্যে প্রথমটি হবে সর্বজনীন, দ্বিতীয়টি স্কুল-কলেজের শিশু-কিশোরদের জন্য এবং তৃতীয়টি বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ ও বাংলাদেশে অবস্থিত বৈদেশিক দূতাবাসসমূহে প্রচারের জন্য।

    এছাড়াও দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন উপলক্ষে ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়কদ্বীপ সমূহ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা জনক স্থান সমূহে বাংলাসহ অন্যান্য ভাষার বর্ণমালা সম্বলিত ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করা হবে। একুশের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার এবং ভাষা শহিদদের সঠিক নাম উচ্চারণ, শহিদ দিবসের ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা, শহিদ মিনারের মর্যাদা সমুন্নত রাখা, সুশৃঙ্খলভাবে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, ইত্যাদি জনসচেতনতা মূলক বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যম সমূহ প্রয়োজনীয় প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

    সংবাদপত্র সমূহে ক্রোড়পত্র প্রকাশের ক্ষেত্রে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের বিষয়টি বিশেষভাবে উপস্থাপন করা হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো একুশের বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।

    মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ দুইদিনব্যাপি বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করেছে।

    কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে একুশের প্রখম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুস্পার্ঘ্য অর্পন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবনসহ সারাদেশে সংগঠনের সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করণ ও কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ এবং প্রভাতফেরি।

    এছাড়াও, ২২ ফেব্রুয়ারি বিকাল তিনটায় বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করবেন।

  • নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অমর একুশের চেতনা অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস : রাষ্ট্রপতি

    নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অমর একুশের চেতনা অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস : রাষ্ট্রপতি

    রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অমর একুশের চেতনা আজ অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস।

    তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, নিজ ভাষার উন্নয়ন ও সংরক্ষণের পাশাপাশি বহুভাষিক শিক্ষার মাধ্যমে টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন ইতিবাচক অবদান রাখবে।

    আগামীকাল (২১ ফেব্রুয়ারি) ‘মহান শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে আজ সোমবার দেয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এই আশা প্রকাশ করেন।

    আবদুল হামিদ বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অমর একুশের চেতনা আজ অনুপ্রেরণার অবিরাম উৎস। তবে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির যথাযথ চর্চা ও সংরক্ষণে আমাদের আরো যত্নবান হতে হবে।’

    তিনি বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে আজ আমরা গ্লোবাল ভিলেজের বাসিন্দা। তাই উন্নত বিশ্বের সাথে সমানতালে এগিয়ে যেতে বর্তমান প্রজন্মকে বাংলার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃত বিভিন্ন ভাষার ওপর প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে হবে।’

    রাষ্ট্রপতি বলেন, মহান ভাষা আন্দোলন আমাদের জাতীয় জীবনে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। আমি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যিনি ১৯৪৮ সালে মাতৃভাষার দাবিতে গঠিত ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ এর নেতৃত্ব দেন এবং কারাবরণ করেন। স্মরণ করি তৎকালীন গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তসহ সকল ভাষা সংগ্রামীকে, যাঁদের দূরদৃষ্টি, অসীম ত্যাগ, সাহসিকতা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। বাঙালি পায় মাতৃভাষার অধিকার।

    আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে বাংলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী জনগণ ও জাতিগোষ্ঠীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ ২১ ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। স্মৃতিবিজড়িত এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে জীবন উৎসর্গকারী ভাষা শহীদ রফিক, সালাম, বরকত, জববার, শফিউরসহ নাম না জানা শহীদদের।’

    আবদুল হামিদ বলেন, ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ শাসিত ভারত ভেঙে ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের জন্ম হয়। হাজার কিলোমিটার দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের ভাষা ও সংস্কৃতি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাই উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করা হলে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে।

    তিনি বলেন, মূলত ভাষা আন্দোলন ছিলো আমাদের মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নিজস্ব জাতিসত্তা, স্বকীয়তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষারও আন্দোলন। আমাদের স্বাধিকার, মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে অমর একুশের অবিনাশী চেতনাই যুগিয়েছে অফুরন্ত গ্রেরণা ও অসীম সাহস। ফেব্রুয়ারির রক্তঝরা পথ বেয়েই অর্জিত হয় মাতৃভাষা বাংলার স্বীকৃতি এবং সে ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে আসে বাঙালির চিরকাঙ্খিত স্বাধীনতা, যার নেতৃত্ব দিয়েছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

    রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৯৯ সালে কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশীর প্রাথমিক উদ্যোগ এবং সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ ও ঐকান্তিক চেষ্টায় জাতিসংঘ কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এটি জাতি হিসেবে আমাদের একটি অন্যতম গৌরবময় অর্জন। মাতৃভাষা এবং নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে এ দিবসটি উদ্যাপন একটি অনন্য উদ্যোগ।

    মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষ্যে তিনি আশা প্রকাশ করেন, মহান একুশের চেতনাকে ধারণ করে পৃথিবীর নানা ভাষাভাষী ও সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্মানবোধ জাগ্রত হবে, গড়ে ওঠবে একটি বৈষম্যহীন বর্ণিল বিশ্ব।

  • ভাষা আন্দোলন বর্তমান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস শুধু ভাষার মধ্যে দিয়ে সীমাবদ্ধ ছিল না: নোমান

    ভাষা আন্দোলন বর্তমান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস শুধু ভাষার মধ্যে দিয়ে সীমাবদ্ধ ছিল না: নোমান

    বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী জনাব আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, ভাষা আন্দোলন বর্তমান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস শুধু ভাষার মধ্যে দিয়ে সীমাবদ্ধ ছিল না। ৪৮ সাল থেকেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান এর বিরুদ্ধে এদেশের মানুষ আন্দোলন শুরু করে। এরপর থেকে রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার জন্য আন্দোলন তীব্রতা কে তীব্র হয়।পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত আন্দোলনকে থামানোর জন্য তৎকালীন পাকিস্তানি পাক-হানাদার বাহিনী একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা সৈনিকদের উপর গুলিবর্ষণ করলে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ অনেকেই প্রাণ হারায়। আজ আমরা তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত মহান একুশে ফেব্রুয়ারি বর্তমানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করছি। এটা আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে অত্যন্ত গর্বের বিষয়। বিশ্বের কোন দেশ নেই যে ভাষা প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে। একমাত্র বাঙালি জাতিকে ভাষার জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে।

    তিনি আজ সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে আন্তর্জা‌তিক মার্তৃভাষা দিবস উপল‌ক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএন‌পির আ‌লোচনা সভা চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হো‌সে‌নের সভাপতিত্বে সদস‌্য সচিব আবুল হা‌শেম বক্কর এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

    আব্দুল্লাহ-আল নোমান আরো বলেন, বর্তমান একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের মাঝে এসে জনগণের যে রাষ্ট্র ৭১ সালের মুক্তির সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত এদেশ। বর্তমান সরকার জনগণের মালিকানা ছিনিয়ে নিয়েছে। জনগণের সকল অধিকার খর্ব করেছে। জনগণ সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত। বিএনপি ১০ দফা দিয়েছে। ২৭ দফার ভিত্তিতে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা দিয়েছে। এ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এই সরকারের নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন নির্বাচন হবে না।বর্তমানে এদেশের মানুষ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন চাই। জনগণের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে আছি রাজপথে থাকবো। এই সরকারের পতনের মাধ্যমে জনগণের বিজয় সুনিশ্চিত হবে।

    সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৭১’র স্বাধীনতা যুদ্ধের আন্দোলন, ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ১/১১ মঈন-ফখরুদ্দিন সরকার বিরুদ্ধে যে আ‌ন্দোলন সর্বোপরি বর্তমান ফ‌্যা‌সিষ্ট আওয়ামী সরকা‌রের বিরু‌দ্ধে আ‌ন্দোলন, সব‌কিছুর মূলমন্ত্র জনগ‌ণের অ‌ধিকার আদা‌য়ের আ‌ন্দোলন। আমার অ‌ধিকার আমার দেশ, সে অ‌ধিকার আদা‌য়ের জন‌্য আমরা সংগ্রাম কর‌ছি। বায়ান্ন সা‌লে আমারা ভাষার জন‌্য সংগ্রাম ক‌রে‌ছি, একাত্তর সা‌লে আমারা মু‌ক্তি‌যোদ্ধ ক‌রে‌ছি মানু‌ষের সাম‌্য, ন‌্যায় বিচার ও গণতা‌ন্ত্রিক অ‌ধিকার প্রতিষ্ঠার জন‌্য। যে স্বপ্ন নি‌য়ে মু‌ক্তি‌যো‌দ্ধের মাধ‌্যা‌মে যে স্বাধীনতা অ‌র্জিত হ‌য়ে‌ছে স্বাধীনতা পরব‌র্তি সে কাংঙ্খিত সুফল জনগন এখনো পায়‌নি। আজ‌কে আমরা রাষ্ট্র মেরাম‌তের ২৭ টি প্রস্তাবনার কথ বল‌ছি, রেইন‌বো ন‌্যাশ‌ানের কথা বল‌ছি। এই‌টি বাংলা‌দেশী জাতীয়তাবা‌দের মর্ডান সংস্ককরন।

    বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এম নাজিমুদ্দিন বলেন, এই সরকার নির্যাতন নিপীড়নের মাধ্যমে দেশ শাসন করছে। আন্দোলন ছাড়া এ সরকারের পতনের কোন বিকল্প নেই।সমস্ত রাজনৈতিক দল ও মতকে নিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দূর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা তাদের পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব।

    চট্টগ্রাম মহানগর বিএন‌পির সদস‌্য স‌চিব আবুল হা‌শেম বক্কর ব‌লে‌ছেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের যে চেতনা, আওয়ামী লীগ সেই চেতনা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনই ছিল আমাদের জাতিসত্ত্বা নির্মাণের প্রথম ভিত্তি। সেই আন্দোলনের চেতনা ছিল-স্বাধীন, সুস্থ, গণতান্ত্রিক, মুক্তসমাজ নির্মাণ করা। তারই ধারাবাহিতায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন গণতান্ত্রিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলাম। আজকে সেই আশা-আকাঙ্ক্ষা, চেতনা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে।

    বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আলহাজ্ব আবু সুফিয়ান বলেন, সরকার পতন আন্দোলন বেগমন করতে হবে। এই সরকারের দুর্নীতি- দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এই দেশের মানুষ রাজপথে আছে।আওয়ামী লীগ সমস্ত মানুষের স্বপ্নগুলোকে ভেঙে-চুরে শেষ করে দিয়েছে।

    বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. সিদ্দিক আহমেদ বলেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে এই দেশ মুক্তি কামি জনতা পাকহানাদার বাহিনী থেকে মুক্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং তা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে এই দেশ স্বাধীন করে প্রমাণ করেছে।আওয়ামী লীগ দে‌শে রাজ‌নৈ‌তিক, অর্থ‌নৈ‌তিক সহ নানামূ‌খি সংকট তৈ‌রি ক‌রে‌ছে।এ সংকট থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হলে আরো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

    বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট এস এম বদরুল আনোয়ার বলেন, যতদিন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে না ততদিন পর্যন্ত এই দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব না।

    বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পেশাজীবী নেতা প্রফেসর নজরুল কাদেরী বলেন,একুশে ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা দিবসকে সামনে রেখে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে।

    মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আ‌লোচনা সভা চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান,পেশাজীবী নেতা এডভোকেট এসএম বদরুল আনোয়ার, ড. সিদ্দিক আহমেদ, ডা. খুরশিদ জামিল, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি,

    কচি, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক এড. আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য হারুন জামান, এড মুফিজুল হক ভূঁইয়া, নিয়াজ মো. খান, এস এম আবুল ফয়েজ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল,আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী মো. সিরজ উল্লাহ,মো. কামরুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, ম‌হিলা দ‌লের ফা‌তেমা বাদশা, ম‌নোয়ারা বেগম ম‌নি, থানা বিএনপির সভাপতি মন্জুর রহমান চৌধুরী, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, হাজী বাবুল হক, মোশাররফ হোসেন ডেপটি, আবদুল্লাহ আল হারুন, থানা সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাকির হোসেন, হাজী বাদশা মিয়া, জসিম উদ্দিন জিয়া, মনির আহম্মেদ চৌধুরী, আবদুল কাদের জসিম, জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর ছাত্রদ‌লের আহবায়ক মো. সাইফুল আলম, সদস‌্য স‌চিব শ‌রিফুল ইসলাম তু‌হিন প্রমূখ।

  • আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে যানবাহন চলাচলে সিএমপি’র নির্দেশনা

    আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে যানবাহন চলাচলে সিএমপি’র নির্দেশনা

    আগামী ২১ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে সরকারীভাবে নগরীর চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে স্থাপিত শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।

    এ উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক-দক্ষিণ বিভাগের পক্ষ থেকে যানবাহন চলাচলে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা জারী করা হয়েছে।

    নিম্নোক্ত নির্দেশনাসমূহ অনুসরণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

    আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) এন.এম নাসিরুদ্দিন প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

    নির্দেশনাগুলো হচ্ছে-আগামী ২০ ফেব্রুয়ারী রাত ৯টা থেকে নগরীর তিনপুল থেকে আমতল, আমতল থেকে নিউ মার্কেট, নিউ মার্কেট থেকে আমতল এবং সিনেমা প্যালেস থেকে রাইফেল ক্লাব রোডে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তিনপুল মোড় থেকে শিক্ষা অফিস হয়ে আমতল পর্যন্ত একমুখী চলাচল বজায় থাকবে। নিউমার্কেট, আমতল, তিনপুল ও সিনেমা প্যালেস মোড়ে রোড ব্লক স্থাপন করে যানবাহনসমূহ ডাইভারশন দেওয়া হবে। শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে আসা সকল গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ও সরকারী কর্মকর্তাগণ ওয়াসা-কাজির দেউরী-নেভাল ক্রসিং-লাভ লেইন-বৌদ্ধ মন্দির-বোস ব্রাদার্স-রাইফেল ক্লাব হয়ে আমতল মোড় ড্রপিং জোন হিসেবে ব্যবহার করবেন এবং পরবর্তীতে প্রধান পার্কিং স্থান হিসেবে রাইফেল ক্লাব মাঠে গাড়ি পার্কিং করবেন। এছাড়াও অন্যদিক থেকে আসা গাড়িসমূহ নিজ নিজ সুবিধা অনুযায়ী নিউমার্কেট মোড় এবং তিনপুল (গোলাম রসুল মার্কেটের সামনে) ড্রপিং জোন হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।

    অনুষ্ঠানস্থলে আসা সকল গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ও সরকারী কর্মকর্তাগণ আমতল হতে পায়ে হেঁটে শহীদ মিনারে (চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ) এসে ফুল দিয়ে পুনঃরায় আমতল মোড়ে গিয়ে গাড়িতে উঠে জুবলী রোড হয়ে প্রত্যাবর্তন করবেন। নিউ মার্কেট ও তিনপুল ড্রপিং জোন হিসেবে ব্যবহারকারীগণ পায়ে হেঁটে শহীদ মিনারে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণপূর্বক পূনরায় উক্ত ড্রপিং জোনসমূহে গিয়ে গাড়িতে উঠবেন।

    পদযাত্রা ও প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণকারীগণ সুশৃঙ্খলভাবে রাস্তায় যান চলাচলের সুযোগ রেখে গমনাগমন করবেন। মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

  • রাউজানে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

    রাউজানে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

    রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের রাউজানে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। কর্মসূচির মধ্যে ছিল প্রভাত ফেরী, মহান ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভা।

    রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারী) সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা কেন্দ্রীয় মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে মহান ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রেলপথ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এম.পি।

    এই সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অতীশ দর্শী চাকমা, পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ, ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল হারুন।

    এর পূর্বে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রভাত ফেরীতে অংশ নেন সাংসদসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। পরে সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে পৃথক দুটি অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন।

    উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন সমূহের
    উদ্যোগে মুন্সিরঘাটাস্থ দলীয় স্থায়ী কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবদুল ওহাবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, সি. সহ-সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, পৌর মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি স্বপন দাশগুপ্ত, কাজী ইকবাল, ইরফান আহমেদ চৌধুরী, কামরুল হাছান বাহাদুর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন খান, দপ্তর সম্পাদক জসিম উদ্দিন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও কাউন্সিলর আলমগীর আলী, আইন বিষয়ক সম্পাদক কাউন্সিলর এড. দিলীপ চৌধুরী, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সি. সহ সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম চৌধুরী শাহাজাহান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তসলিম উদ্দিন, ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম, মুসলিম উদ্দিন জয়নাল, উপজেলা আ.লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক হাছান মো. রাসেল,
    উপজেলা যুবলীগের সহ সভাপতি সুমন দে, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল জব্বার সোহেল,
    যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব চৌধুরী হাসান,দপ্তর সম্পাদক তপন দে, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জিল্লুর রহমান মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন পিবলু, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক মো. আসিফ প্রমুখ।

    অপরদিকে নোয়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সংলগ্ন দক্ষিণ রাউজানের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

    ২৪ ঘণ্টা/নেজাম

  • আজ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

    আজ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

    আজ ২১ ফেব্রুয়ারি। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৯ বছর পূর্ণ হবে এদিন।

    জাতিসংঘের উদ্যোগে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ভাষা শহীদদের স্মরণে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।

    এদিন একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতির পক্ষে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম। অপর দিকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী।

    রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং তার পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় বাজছিল অমর একুশের কালজয়ী গান, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি।’

    জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গত কয়েক বছর ধরে দিবসটি পালিত হচ্ছে।

    বাঙালি জাতির জন্য এই দিবসটি হচ্ছে চরম শোক ও বেদনার। অনদিকে মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। যে কোনো জাতির জন্য সবচেয়ে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার হচ্ছে মৃত্যুর উত্তরাধিকার, মরতে জানা ও মরতে পারার উত্তরাধিকার। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদরা জাতিকে সে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার দিয়ে গেছেন।

    ১৯৫২ সালের এদিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠির চোখ-রাঙ্গানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে।

    মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শংকিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।

    তাদের এই আত্মদান নিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সরদার ফজলুল করিম তার ‘বায়ান্নর ও আগে’ প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘বরকত, সালামকে আমরা ভালোবাসি। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা বরকত সালাম আমাদের ভালোবাসে। ওরা আমাদের ভালোবাসে বলেই ওদের জীবন দিয়ে আমাদের জীবন রক্ষা করেছে। ওরা আমাদের জীবনে অমৃতরসের স্পর্শ দিয়ে গেছে। সে রসে আমরা জনে জনে, প্রতিজনে এবং সমগ্রজনে সিক্ত।’

    একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি। এদিন দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সঠিক নিয়মে, সঠিক রং ও মাপে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।

    দিবসটি পালন উপলক্ষে জাতীয় অনুষ্ঠানের সাথে সঙ্গতি রেখে বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

    আজিমপুর কবরস্থানে ফাতেহা পাঠ ও কোরআনখানির আয়োজনসহ দেশের সকল উপাসনালয়ে ভাষা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

    বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক প্রতিটি সংগঠনের পক্ষ হতে সর্বোচ্চ ৫ জন প্রতিনিধি হিসেবে ও ব্যক্তিপর্যায়ে একসাথে সর্বোচ্চ ২ জন শহীদ মিনারে পুষ্পস্পবক অর্পণ করতে পারবেন। শহীদ মিনারের সকল প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন ও লিকুইড সাবান রাখা হবে। মাস্ক পরা ব্যতীত কাউকে শহীদ মিনার চত্বরে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।

    ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র এবং বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো একুশের বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।

  • নতুন প্রজন্মকে একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার আহবান

    নতুন প্রজন্মকে একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার আহবান

    নতুন প্রজন্মকে একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার আহবান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডীন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সেকান্দর চৌধুরী।

    তিনি গতকাল শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় দেশের প্রাচীনতম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।

    এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রথম ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনে। একুশে ফেব্রুয়ারী তদানীন্তন পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে আত্মোৎসর্গের নজির সৃষ্টি করেছিল বাঙালি। একুশের আত্মত্যাগের মাধ্যমে উন্মেষ ঘটে বাঙালি জাতীয়তাবাদের। সেই জাতীয়তাবাদী চেতনার পথ ধরে শুরু হয় ১৯৭১ সালের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ।

    তিনি বলেন,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের। তাই অমর একুশে অন্যায় অসত্যের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অদম্য সাহস হয়ে আছে। একুশ মানে মাথানত না করা। আজ একুশ এসেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে উন্নয়ন ও অগ্রগতির মাধ্যমে জাতি হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নিতে। তাই নতুন প্রজন্মকেও একুশের চেতনা সম্পর্কে জানতে হবে, জ্ঞানার্জন করতে হবে। তিনি শিক্ষার্থীদের একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার বিনীত আহবান জানান।

    পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এর মাধ্যমে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মুহসিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মাহবুবুল আলম ছিদ্দিকী, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসা গভর্ণিং বডির বিদ্যোৎসাহী সদস্য ড. ফয়সাল কামাল চৌধুরী, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব সাহাব উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মায়মুনা হক, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন, ছাত্র প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম প্রমূখ।

    অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মাওলানা মাহবুবুর রহমান ও মেহেদী হাসান। আলোচনা সভা শেষে কবিতা আবৃত্তি এবং দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবং রোভার স্কাউট দল।

     

  • মাতৃভাষা দিবসে ফটিকছড়ি প্রেসক্লাবের পুস্পমাল্য অর্পণ

    মাতৃভাষা দিবসে ফটিকছড়ি প্রেসক্লাবের পুস্পমাল্য অর্পণ

    ফটিকছড়ি প্রতিনিধি : মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে ফটিকছড়ি প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।

    প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ জাহদুল্লাহ কুরাইশী ও সাধারন সম্পাদক মুহাম্মদ রফিকুল আলমের নেতৃত্বে পুস্পমাল্য অর্পণকালে উপস্থিত ছিলেন- কার্যনির্বাহী সদস্য ফখরুল ইসলাম চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক আবু এখলাছ ঝিনুক,পাঠাগার সম্পাদক মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন,সদস্য এম জুনায়েদ,আনোয়ার হোসেন ফরিদ প্রমুখ।

  • প্রযুক্তি ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর

    প্রযুক্তি ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশকে একটি প্রযুক্তি এবং জ্ঞানভিত্তিক মর্যাদাপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় তাঁর সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

    তিনি বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন একটা জাতি হিসেবে বাঙালি জাতিকে আমরা গড়ে তুলতে চাই। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার সাথে সাথে প্রযুক্তি জ্ঞান নিয়ে সারাবিশ্বে একটা সম্মানিত জাতি হিসেবে আমরা একে গড়ে তুলে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন।’

    প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে একথা বলেন।

    শেখ হাসিনা বলেন, প্রায় এক দশক ক্ষমতায় থাকার ফলে বিশ্বে বাংলাদেশ একটা মর্যাদা পেয়েছে। আমাদেরকে বিভিন্ন স্থানে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। এক সময় সকলেই আমাদের অবহেলার চোখে দেখতো। বাংলাদেশ নাম শুনলেই বলে উঠতো-ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দরিদ্রের দেশ ।

    প্রধানমন্ত্রী বলেন,আল্লাহর রহমতে আর কেউ তা বলতে পারবেনা। আমরা ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছি ২০২১ সালের মধ্যেই প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বলবে। আর একটা সিদ্ধান্ত দিয়েছি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী যে যেখানেই আছেন, যে যার মতো পারেন সহযোগিতা করবেন যেন বাংলাদেশের একটা মানুষও আর গৃহহীন না থাকে।

    তিনি বলেন, ‘প্রতিটি গ্রামে খোঁজ নিতে বলেছি। নদী ভাঙ্গনে যারা ঘর-বাড়ি হারিয়েছে তাঁদেরকে আমরা ঘর করে দেব। আর যারা ভূমিহীন, গৃহহীন প্রত্যেককেই আমরা ঘর-বাড়ি করে দেব। প্রত্যেকটি মানুষের একটা ঠিকানা হবে।’

    তাঁর সরকার তৃণমূল পর্যন্ত চিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ভাবেই নয়, প্রযুক্তি শিক্ষাকেও আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। সারা বাংলাদেশে আমরা মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেটসহ প্রযুক্তি ব্যবহারের আমরা সুযোগ করে দিয়েছি।’

    শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনে যাঁরা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছিল আর যাঁদের পদাংক অনুসরণ করেই আমরা লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, সেই ত্যাগ কখনো বৃথা যাবেনা।’ দৃপ্ত কন্ঠে সরকার প্রধান বলেন,‘বৃথা যেতে আমরা দেবনা, এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’

    আলোচনা সভার শুরুতেই ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।

    আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ডেনভারের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও লেখক-গবেষক হায়দার আলী খান আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন।

    এছাড়াও মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিনা জামান কবিতা, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানও আবু আহম্মেদ মান্নাফী বক্তৃতা করেন।

    ভাষা শহিদদের স্মরণে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি তারিক সুজাত।

    আলোচনা সভা যৌথভাবে পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

  • ভাষা দিবসে ছিন্নমূলদের পেট ভরে খাওয়াল পুলিশ

    ভাষা দিবসে ছিন্নমূলদের পেট ভরে খাওয়াল পুলিশ

    মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গভীর রাতে ছিন্নমূল, গরীব ও অসহায় লোকজনকে পেট ভরে খাবার খাওয়াল জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানা পুলিশ।

    বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচবিবি রেলস্টেশন এলাকায় গরীব ও অসহায়দের জন্য এ পিকনিকের আয়োজন করা হয়।

    সেখানে শতাধিক ছিন্নমুল ও অসহায় ব্যক্তিদের খাবার বিতরণ করেন পাঁচবিবি থানার পুলিশ সদস্যরা।

    এসময় থানার তদন্ত কর্মকর্তা রাইসুল ইসলাম, সেকেন্ড অফিসার এসআই ফারুক হোসেনসহ থানার পুলিশ সদস্যরা তাদের সঙ্গে বসে খান।

    গভীর রাতে অসহায়দের খাবার খাইয়ে প্রশংসায় ভাসছে পাঁচবিবি থানা পুলিশ। গভীর রাতে এই দৃশ্য দেখে এক ট্রেনযাত্রী জানান, ভাষা দিবসে এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাতে এমন কর্মসূচি বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

    স্টেশন এলাকার হতদরিদ্র মনিরা বেগম বলেন, ‘পুলিশ স্যাররা আমাদের আজ পেট ভরে খাওয়ালেন। আমরা তাদের জন্য ও শহীদদের জন্য প্রাণ ভরে দোয়া করব।’

    পৌর এলাকার দানেজপুর মহল্লার হোটেল কর্মচারী মান্নান মন্ডল বলেন, ‘এবার পাঁচবিবিতে ভাষা শহীদদের শুধু ফুল দিয়েই শ্রদ্ধা জানানো হয়নি, তাদের রূহের মাগফেরাত কামনায় ওসি শতাধিক গরীবকে পেট ভরে খাইয়েছেন। এমন উদ্যোগ দেশের সব থানার নেয়া উচিত।’

    থানার অফিসার ইনচার্জ মনসুর রহমান বলেন, ‘এসব গরীব-অসহায় লোকগুলো অর্থের অভাবে সব সময় ভালো খেতে পারেন না। এ কারণে থানার সব পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় মুজিববর্ষ ও ভাষার মাসে তাদেরকে একবেলা পেট ভরে খাওয়ানো হয়েছে।’

  • যথাযোগ্য মর্যাদায় কুবিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত

    যথাযোগ্য মর্যাদায় কুবিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত

    তাসফিক আব্দুল্লাহ চৌধুরী, কুবি প্রতিনিধি: যথাযোগ্য শ্রদ্ধা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটি।

    ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ১১টায় কালো ব্যাজ ধারণ ও শোকর‌্যালি, পরবর্তী সময়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।

    রাত ১২টা ১মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, কুবি ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতি, আবাসিক হল, বিভাগসমূহ, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, সামাজিক সংগঠন, ক্লাব ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

    উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীর সভাপতিত্বে সাংস্কৃতিক ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাষাসৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের দৌহিত্রী সংসদ সদস্য আরমা দত্ত।

    প্রধান অতিথি আরমা দত্ত ভাষাসৈনিকদের শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘অনেক শ্রদ্ধা আর ভালবাসার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবে। ভাষা শহীদদের রক্তে লেখা মাতৃভাষা ভিত্তিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র আমরা পেয়েছি। আমরা সেই ভাষাসৈনিকদের কখনোই ভুলবোনা। আজকের এই একুশে লগ্নে আপনারা শহীদদের বুকে ধারণ করবেন, বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করবেন এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবেন।’

    তিনি আরো বলেন, ‘আমরা গর্বিত জাতি। বাঙালিরা প্রাণ দিতে জানে, মাথা নত করতে জানে না।’

    ২১ ফেব্রুয়ারি জুম্মার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে ভাষাশহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

  • সীতাকুণ্ডে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

    সীতাকুণ্ডে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

    সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি যথাযথ মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সীতাকুণ্ডে বিনম্র শ্রদ্ধায় পালিত হয়েছে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে।

    বৃহস্পতিবার রাতে ভাষার বর্ণমালা ও বিভিন্ন লেখা সম্বলিত ব্যান্যার,পেস্টুন এবং ফুলেল শ্রদ্ধায় মহান ভাষা আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করা সকল বীর সন্তানদের স্মরণ করেন বিভিন্ন শ্রেনীপেশার হাজারো মানুষ।

    রাতে পুলিশের গার্ড অব অনার শেষে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব দিদারুল আলম,উপজেলা চেয়ারম্যান এস,এম আল মামুন,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায় ,সহকারী কমিশনার(ভূমি) সৈয়দ মাহবুবুল হক, উপজেলা আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ নেতৃবৃন্দ,উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ,সীতাকুণ্ড পৌর মেয়র, সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাব, বঙ্গবন্ধু শিশুকিশোর মেলা,মেঘমল্লার খেলাঘর আসরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।

    দুপুরে উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।

    এছাড়াও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও অমর একুশে উপলক্ষে উপজেলার সকল স্কুল- কলেজ মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।