Tag: আফগানিস্তান

  • নারী শিক্ষায় বাধা অনৈসলামিক, ইমরান খান

    নারী শিক্ষায় বাধা অনৈসলামিক, ইমরান খান

    আফগানিস্তানে তালেবানের নারী শিক্ষায় বাধা দেয়ার বিষয়টিকে অনৈসলামিক বলে জানিয়েন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

    নতুন তালেবান সরকারের এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেতে হলে তালেবানকে কিছু শর্ত মানতে হবে বলে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ইমরান খান।

    বিবিসির এই সাক্ষাৎকারে প্রথমেই তালেবান নেতাদের প্রতি অংশগ্রহণ ভিত্তিক সরকার গড়া এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

    পাকিস্তানের নিরাপত্তায় হুমকি হতে পারে এমন সন্ত্রাসীদের আস্তানা গড়তে দেয়া যাবে না বলেও তালেবান নেতাদের সতর্ক করেন।

    গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের তালেবান শিক্ষা মন্ত্রণালয় শুধুমাত্র ছেলেদের জন্য মাধ্যমিক স্কুল চালুর ঘোষণা দিয়েছে এবং পুরুষ শিক্ষকদের কাজে যোগ দিতে বলেছে।

    মাধ্যমিকের নারী শিক্ষার্থীরা কবে ক্লাসে ফিরতে পারবে এবিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত দেয়নি তারা। এবিষয়ে ইমরান খান বলেন, মেয়েরাও খুব শিগগিরই স্কুলে ফিরতে পারবে বলে বিশ্বাস করছেন তিন্।
    বিবিসি’র এই সাক্ষাৎকারে ইমরান বলেন “ক্ষমতায় আসার পর তালেবান যেসব কথা বলেছে তা উৎসাহব্যঞ্জক। আমি মনে করি তারা মেয়েদেরকে স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেবে।”

    এছাড়া বলেন, “নারীদের শিক্ষিত হতে না দেওয়ার ধারণাটি ইসলামিক নয়। ধর্মের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই,” বলেন তিনি।

    তালেবান যোদ্ধারা গত ১৫ অগাস্টে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ দখলের পর সেই ১৯৯০ এর দশকের কট্টর তালেবান শাসন ফিরে আসার আশঙ্কা দেখা দেয়। কারণ ১৯৯৬-২০০১ সালের তালেবান শাসনামলে নারী ও মেয়েদের স্কুলে পড়া নিষিদ্ধ ছিল।

    তালেবান নেতরা অবশ্য এবার ক্ষমতায় আসার পরই বলেছিলেন, গতবারের মতো শাসনামলে তারা ফিরে যাবেন না; নারীদের অধিকারকেও সম্মান দেখানো হবে।

    তবে এই উদার মনোভাবে প্রভাব খুব একটা দেখা যায়নি তাদের কাজে। বিশেষ করে গত সপ্তাহে আফগানিস্তানে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার ঘোষণা না আসায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচনার মুখে পড়ে তালেবান।

    এঅবস্থায় তালেবানের এক মুখপাত্র বলেছেন, “যত শিগগিরই সম্ভব মেয়েরা স্কুলে ফিরবে।” তবে তাদের কী ধরনের শিক্ষা দেওয়া হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

    প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে, তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে কিনা এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইমরান খান।

    তালেবান অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠন করতে না পারলে আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।

    এন-কে

  • আফগানিস্তানে লড়াই এখন ক্ষুধার সঙ্গে

    আফগানিস্তানে লড়াই এখন ক্ষুধার সঙ্গে

    এখনও ছন্দে ফেরেনি আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের জনজীবন। তালেবান নিয়ন্ত্রণের কারণে জীবনযাত্রায় কী ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে তাও বুঝে উঠতে পারছেন না কাবুলের বাসিন্দারা। তবে এটুকু স্পষ্ট, শহরের নিম্নবিত্তদের জন্য ক্ষুধাই এখন বড় সমস্যা।

    গেল সপ্তাহ থেকে কাবুলের রাস্তায় জনসাধারণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শোনা গেছে যেই কথাটি, তা হল –খাবারের দাম বেশি, সন্তানদের তিন বেলা খাওয়া জোটাতে হিমশিম দরিদ্র্য পরিবারের বাবা-মা।

    এখন প্রায় প্রতিদিনই কাবুলের রাস্তায় শত শত নির্মাণ শ্রমিককে দেখা যায়, যারা কাজের সন্ধানে দাঁড়িয়ে থাকেন দিনভর। কিন্তু কোনও লাভ নেই, কারণ শহরের বড় বড় নির্মাণ প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাঙ্ক গুলোও বন্ধ। বিদেশি দাতা সংস্থাও বন্ধ করেছে তাদের আর্থিক সহায়তা।

    কখনও দুএকটা কাজের জন্য এক দল শ্রমিককে ভাড়া করা হলে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন অন্য শ্রমিকরা, কারণ তাদের পেটেও ক্ষুধা।

    এমনই এক শ্রমিক হায়াত খান। তিনি বলছেন, ধনী ব্যাক্তিরা শুধু নিজেদের নিয়েই ভাবে, দরিদ্রদের নিয়ে নয়। হতাশার সঙ্গে তিনি বলেন, “ আমি রুটিও কিনতে পারছি না। বিশ্বাস করুন আমি একটি ডলারও খুঁজে পাচ্ছি না। ধনি ব্যক্তিরা পশ্চিমা সাহায্যের ডলার এখন খরচ করছে না, সঞ্চয়ে রেখেছে।“

    হায়াত খানের চেয়ে কিছুটা সৌভাগ্যবান মোহাম্মদ আনোয়ার। কারণ তিনি এখনও একটি অফিসে কাজ করতে পারছেন। তিনি আমেরিকানদের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনে বলেন, “তারা আফগান সরকারের যে টাকা নিয়ে গেছে তা যেন আল্লাহর নামে ফেরত দেয় এবং তা যেন আফগানিস্তান পুন:নির্মাণে ব্যবহার হয়।“

    এদিকে ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র বিক্রি করে খাবার কিনছেন কাবুলের মধ্যবিত্ত পরিবার গুলো। তবে সেখানেও বিপত্তি, পুরোনো জিনিসের ক্রেতাদের হাতেও পয়সা নেই।

    দেশটিতে দরিদ্যসীমার নিচে থাকা হাজারও নাগরিক এতদিন জীবন ধারণ করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দাতা সংস্থার অর্থায়নে। এসব অর্থায়নের প্রায় ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এখনও আফগানিস্তানের দেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে জমা আছে। তবে তা তালেবানের হাতে যাতে না যায়, সেই ব্যবস্থাই করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। যেকারণে এই অর্থ দেশটির দরিদ্য জনগোষ্ঠীর কাজেও লাগছে না।

    তালেবান নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর আফগান নাগরিকের ব্যক্তি স্বাধীনতা , নারী শিক্ষা এবং নারী অধিকার নিয়ে বিশ্বজুড়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু এর চেয়েও বেশি জরুরী, ক্ষুধার সমস্যা সমাধান করা, বলছেন সেখানকার খেটে খাওয়া মানুষ।

    এ অবস্থায় যেসব দেশ তালেবানের বিরুদ্ধে কিন্তু আফগানদের সাহায্য করতে চায় তারাই এখন দ্বিধায়। এমন দেশ গুলো বলছে, সাহায্য পেতে হলে তালেবান কে একটি কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে।

    তা না হলে দেশটি আবারও ব্যার্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে এবং জিহাদি ও চরমপন্থীদের ঘাঁটি হয়ে উঠতে পারে।

    এন-কে

  • জালালাবাদ ও কাবুলে সিরিজ বোমা হামলা, আইএসের দায় স্বীকার

    জালালাবাদ ও কাবুলে সিরিজ বোমা হামলা, আইএসের দায় স্বীকার

    আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় জালালাবাদ শহরে এবং রাজধানী কাবুলে সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় সাত জন নিহত এবং অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

    বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার দায় স্বীকার করেছে কট্টরপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট ইন খোরাসান (আইএসকে)।

    শনিবার ও রোববারের বিস্ফোরণের কথা উল্লেখ করে আইএসকে তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানায়, ‘সিরিজ বিস্ফোরণে ৩৫ জনের বেশি তালেবান মিলিশিয়া হতাহত হয়েছে।’

    নানগারহার প্রদেশের রাজধানী জালালাবাদকে আইএসকে’র ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গত শনিবার জালালাবাদে অন্তত চারটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। একটি বিস্ফোরণস্থলে তালেবানের সাদা পতাকাওয়ালা একটি সবুজ পিকআপভ্যান দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন তালেবান কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘জালালাবাদের একটি হামলায় তালেবানের টহলরত একটি গাড়িকে টার্গেট করা হয়।’

    অন্য দিকে, কাবুলে দশত-এ-বারচি এলাকায় একটি গাড়িবোমা বিস্ফোরণে অন্তত দুজন ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছে।

    এন-কে

  • পাকিস্তানকে মারাত্মক খেসারত দিতে হয়েছে: ইমরান খান

    পাকিস্তানকে মারাত্মক খেসারত দিতে হয়েছে: ইমরান খান

    আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের পক্ষ নিয়ে পাকিস্তানকে মারাত্মক খেসারত দিতে হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এমন দাবি করেছেন।

    আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসলামাবাদের পিছুহটা নিয়ে মার্কিন রাজনীতিবিদদের দোষারোপের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে এমন বক্তব্য এসেছে।-খবর এনডিটিভির

    রাশিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্ষোভ ঝাড়তে দেখা গেছে ইমরান খানকে। আফগানিস্তানে আমেরিকান ব্যর্থতার দায় ইসলামাবাদের ওপরও চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার জবাবে তিনি আরও বলেন, একজন পাকিস্তানি হিসেবে কয়েকজন আমেরিকান সিনেটরের মন্তব্যে মর্মাহত হয়েছি।

    আফগানিস্তানের বিপর্যয়ের পাকিস্তানকে দায়ী করা হচ্ছে, যা খুবই যন্ত্রণাদায়ক বলে মনে করছেন সাবেক এই ক্রিকেট তারকা। ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার সময় পাকিস্তানি অস্থিরতা চলছিল। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা পারভেজ মোশাররফ সবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। টিকে থাকার জন্য তার মার্কিন সহায়তার দরকার ছিল।

    আমেরিকার সামরিক সহায়তার বিনিময়ে আফগানিস্তানের অভিযানে সহায়তা মারাত্মক ভুল ছিল বলে মনে করেন ইমরান খান। এতে মুজাহিদ বাহিনীকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তানে সোভিয়েতবিরোধী মার্কিন অভিযানের অংশ হিসেবে দুদশক আগে ওই মুজাহিদ বাহিনী গড়ে তুলেছিল পাকিস্তানি গোয়েন্দারা।

    তিনি বলেন, বিদেশি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুজাহিদদের আমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এটি ছিল পবিত্র যুদ্ধ জিহাদ।

    ইমরান খান বলেন, কিন্তু যখন আমেরিকা অভিযান চালায়, সেই সব লোকদেরই বলা হচ্ছে, আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হচ্ছে সন্ত্রাসবাদ। তখন তারা আমাদের বিপক্ষে চলে গেলেন। আমাদের মার্কিন দোসর বলে আখ্যায়িত করলেন।

  • আফগানিস্তানে ক্লাসে ফিরল প্রাথমিকের ছাত্রীরা, উৎকণ্ঠায় মাধ্যমিকের মেয়েরা

    আফগানিস্তানে ক্লাসে ফিরল প্রাথমিকের ছাত্রীরা, উৎকণ্ঠায় মাধ্যমিকের মেয়েরা

    আফগানিস্তানের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কিছু ছাত্রী গতকাল শনিবার থেকে ক্লাসে ফিরেছে। তবে, একই দিনে মাধ্যমিক বিদ্যালয় খুললেও ক্লাস করেছে শুধু ছাত্ররা। মাধ্যমিকের মেয়েরা তাদের শিক্ষাঙ্গনে ফিরতে পারেনি। ফলে, তাদের মধ্যে উদ্‌বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব কথা জানানো হয়েছে।

    গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। এরপর থেকে মাসখানেক ধরে কাবুলের বেশির ভাগ স্কুল বন্ধ ছিল। গতকাল শনিবার থেকে স্কুলগুলোতে ক্লাস শুরু হয়েছে।

    তালেবান সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের শাসনামলের মতো কট্টর নীতিতে ফিরে যাবেন না। সে সময় নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এবার তালেবান নারী শিক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে, সেটি অবশ্যই ছেলে-মেয়ে আলাদা শ্রেণিকক্ষে এবং নারী ও পুরুষ শিক্ষকের মাধ্যমে হতে হবে বলে জানিয়েছে তারা।

    কাবুলের একটি স্কুলের নারী শিক্ষক নাজিফে রয়টার্সকে বলেন, পুনরায় স্কুল খুলতে কিছু পরিবর্তন আনতে হয়েছে। মেয়েরা সকালে এবং ছেলেরা দুপুরে ক্লাস করছে। পুরুষ শিক্ষকেরা ছেলেদের, আর নারী শিক্ষকেরা মেয়েদের ক্লাস নিচ্ছেন।

    গত শুক্রবার মাধ্যমিক স্কুলে ছেলেদের ক্লাস শুরুর ঘোষণা দেন আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু, তিনি মাধ্যমিকের মেয়েদের ক্লাস কবে শুরু হবে, তা জানাননি। এ সম্পর্কে কিছুই বলেননি।

    তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ আফগানিস্তানের বাখতার নিউজ এজেন্সিকে শনিবার বলেন, ‘মাধ্যমিক পর্যায়ের মেয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল খোলার জন্য আয়োজন চলমান রয়েছে।’ তবে, ঠিক কবে নাগাদ মাধ্যমিকের মেয়েরা স্কুলে যেতে পারবে তার নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেননি তালেবান মুখপাত্র।

    এন-কে

  • ভিডিও বার্তায় বিরোধের খবর অস্বীকার বারাদারের

    ভিডিও বার্তায় বিরোধের খবর অস্বীকার বারাদারের

    তালেবানের মধ্যে বিরোধের খবর অস্বীকার করেছেন গোষ্ঠীটির সহপ্রতিষ্ঠাতা আবদুল ঘানি বারাদার। তালেবানের মধ্যকার বিরোধে তার নিহতের গুজব ছড়ানোর মধ্যেই তিনি বুধবার একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন এবং তিনি ভালো আছেন বলে জানান। খবর রয়টার্স ও বিবিসির

    পাকিস্তানের সীমান্তে মিত্র হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংঘর্ষে তালেবানের শীর্ষ নেতা ও আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত উপপ্রধানমন্ত্রী মোল্লাহ আবদুল ঘানি বারাদারের মৃত্যুর খবরটি ছিল স্রেফ গুজব। বুধবার অনলাইনে পোস্ট করা এই সাক্ষাত্কারে তিনি সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে তার হতাহত হওয়ার খবর অস্বীকার করেছেন। রাষ্ট্রীয় টিভিকে সাক্ষাত্কার দিয়েছেন বারাদার। তার এই সাক্ষাত্কার টুইটারে পোস্ট করেছে দোহাভিত্তিক তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়। সংগঠনের ভেতরে প্রতিপক্ষের সঙ্গে সংঘাতে হতাহত হওয়ার খবর প্রসঙ্গে সাক্ষাত্কারে বারাদার বলেন, ‘না, এটা সত্য নয়। আমি ঠিক আছি। ভালো আছি।’ বারাদার বলেন, ‘গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে যে তালেবানের ভেতরে বিরোধ আছে। কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। এসংক্রান্ত খবর সত্য নয়। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।’

    তালেবান সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি সম্প্রতি জানিয়েছিল, নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের পদ-পদবি নিয়ে বারাদারের সঙ্গে মন্ত্রিসভার সদস্য ও হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রভাবশালী নেতা খলিল উর-রহমান হাক্কানির তুমুল বিবাদ হয়েছে। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর বারাদার কাবুল ছেড়ে কান্দাহারে চলে যান। বারাদারের নিহত হওয়ার খবর আগেই নাকচ করে তালেবান। তাছাড়া এ খবর যে ভিত্তিহীন, তা প্রমাণ করতে আগে বারাদারের একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করেছিল তালেবান।

    এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী তালিকায় থাকা তালেবান আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের দূত দেবোরাহ লিওনস। গতকাল বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক মিডিয়া ডন। তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন গতকাল বৃহস্পতিবার টুইটারে এক বিবৃতিতে জানান, আফগান জনগণের জন্য জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে কাবুলে নিযুক্ত জাতিসংঘ মিশনের প্রধান দেবোরাহ লিওনস ও সিরাজউদ্দিন হাক্কানির মধ্যে বৈঠক হয়।

    এন-কে

  • কাবুলের বিদ্যুৎকেন্দ্রে রকেট হামলা

    কাবুলের বিদ্যুৎকেন্দ্রে রকেট হামলা

    আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের খইর খানেহ এলাকায় রকেট হামলার খবর জানিয়েছে দেশটির সংবাদ মাধ্যম টলো নিউজ।

    আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের খইর খানেহ এলাকায় রকেট হামলার খবর জানিয়েছে দেশটির সংবাদ মাধ্যম টলো নিউজ। টলো নিউজের বরাত দিয়ে রুশ সংবাদ মাধ্যম স্পুটনিক জানায়, বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত নয়টাই এই রকেট হামলার হয়।

    এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ছামতালা বিদ্যুৎকেন্দ্রে এই রকেট হামলার ঘটনা ঘটে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কেও কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। কী উদ্দেশ্যে এই আক্রমণ, তাও স্পষ্ট নয়।

    কোনও গোষ্ঠী এখনও পর্যন্ত এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে আইএস-কে (ইসলামিক স্টেট-খোরাসান) এই হামলায় জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

    দুই দশক পর গেল ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। এদিন তালেবানের ভয়ে দেশত্যাগে মরিয়া সাধারণ আফগানরা ভিড় করেন কাবুল বিমানবন্দরে। বিমানের চাকায় উঠে কেউবা কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে পালানোর সময় ঘটে হতাহতের ঘটনাও।

    আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে তালেবানরা তাদের বিজয় দাবি করে ১৭ আগস্ট। নিয়ন্ত্রণ নিলেও বিভিন্ন প্রদেশে তালেবানবিরোধী বিক্ষোভ চলতেই থাকে দেশটিতে। ১৮ আগস্টে জালালাবাদে তালেবানবিরোধী বিক্ষোভে নিহত হন তিনজন।

    দেশটিতে ক্রমেই অর্থনৈতিক সংকটের খবর সামনে আসতে থাকে। এরমধ্যেই হাজি মোহাম্মদ ইদ্রিসকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর করার খবর আসে ২৩ আগস্ট। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি আফগানিস্তানে খাদ্যসংকটের কথা জানায় এরপরদিনই।

    কাবুল বিমানবন্দরের কাছে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ মার্কিন সেনাসহ ২০০ জনের বেশি নিহত হওয়ার দিনটি ছিল ২৬ আগস্ট। আর মার্কিন সামরিক বাহিনী আইএস সদস্যকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালায় এরপরদিন।

    ৩১ আগস্টের মধ্যে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর থেকেই আফগানিস্তান দখলে নিতে মরিয়া ছিল তালেবান। মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড আফগানিস্তান থেকে সেই সেনা প্রত্যাহার করে নেয় ৩০ আগস্টে।
    এদিকে পানশির নিয়ন্ত্রণে বিরোধীরা চেষ্টা করলেও তালেবান সদস্যরা পানশির উপত্যকা নিয়ন্ত্রণের দাবি করে। কাবুল বিমানবন্দর স্থানীয় সেবার জন্য আবার চালু হয় ৪ সেপ্টেম্বরে। এরমধ্যেই সরকার গঠনের তোড়জোড় চলতে থাকে দেশটিতে।

    সব জল্পনা-কল্পনা ছাপিয়ে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করে ৭ সেপ্টেম্বর। এরপর একে একে মন্ত্রীপরিষদ গঠন হয় দেশটিতে। মন্ত্রীপরিষদে নারীসদস্য না থাকায় এর জের ধরে নারীরা বিক্ষোভ করে কাবুলসহ বিভিন্ন দেশে।

    সেখান থেকে সাংবাদিকরা বিক্ষোভের ফুটেজ সংগ্রহ করতে গেলে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে নিপীড়নের ঘটনাও ঘটেছে। তবে এখনও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়নি দেশটিতে।এদিকে, ৯ সেপ্টেম্বর তালেবান সরকারের অধীনে প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট কাবুল ছাড়ে।

    ১৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আফগানিস্তানকে শতকোটি মার্কিন ডলার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়। আর ১৪ সেপ্টেম্বর দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার শহরেও হাজারো আফগান নাগরিক বিক্ষোভ করেছেন।

    সবশেষ আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে সদ্যঘোষিত তালেবান সরকারের গঠন নিয়ে সংগঠনটির নেতাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। তবে গেল এক মাসে এসেছে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন, হয়নি নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এমনকি এখনও বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছ থেকে স্বীকৃতি মেলেনি তালেবানের।

    এন-কে

  • আফগান শরণার্থীদের সহায়তায় এক মঞ্চে ওবামা, ক্লিনটন, বুশ

    আফগান শরণার্থীদের সহায়তায় এক মঞ্চে ওবামা, ক্লিনটন, বুশ

    আফগান শরণার্থীদের পুনর্বাসন কাজে সহায়তা দিতে একটি জোটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন সাবেক তিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট – বিল ক্লিনটন, জর্জ ডাব্লিউ বুশ এবং বারাক ওবামা।

    ‘ওয়েলকাম ইউএস’ নামে ওই জোটের সঙ্গে সাবেক তিন প্রেসিডেন্ট এবং তাদের স্ত্রীরাও কাজ করবেন বলে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। খবর রয়টার্সের।

    জোটের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক নেতা মঙ্গলবার এ জোটের উদ্বোধন করেন।

    আফগানিস্তান থেকে পালানো লাখো আফগান নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে আনার পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বর্তমান প্রশাসন তাদের পুনর্বাসনের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে সমর্থন দিচ্ছে ‘ওয়েলকাম ইউএস’।

    তালেবানের বিরুদ্ধে ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র এবং জোটের সেনাদের সঙ্গে কিংবা আমেরিকান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করা আফগান নাগরিকরা এখন সেদেশে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

    সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিও বুশ এবং তার স্ত্রী লরা বুশ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘হাজারো আফগান নিরাপদ একটি পৃথিবী গড়ার লড়াইয়ে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধের মাঠে দাঁড়িয়েছে এবং এখন তাদের সহায়তা দরকার। আফগান পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে এবং তাদের নতুন জীবন গড়ার লক্ষ্যে ওয়েলকাম ইউএস এবং তাদের কাজকে সমর্থন জানাতে পেরে আমরা গর্বিত।’

    এ বিষয়ে জানতে সাবেক ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, তার স্ত্রী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তার স্ত্রী মিশেল ওবামার প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করতে পারেনি রয়টার্স।

    প্রতিবেদনে বলা হয়, এরই মধ্যে ২৮০টি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ওই জোটে সমর্থন দিয়েছে, যার মধ্যে মাইক্রোসফট, স্টারবাকস, সিভিএস হেলথ এবং এয়ারবিএনবির মত কোম্পানি এবং বেশ কিছু অলাভজন প্রতিষ্ঠান এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনাদের সংগঠন ও পুনর্বাসন সংস্থা রয়েছে।

    এ ছাড়া রিপালিকান ও ডেমোক্রেট দলের বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান গভর্নর এবং মেয়র এর সঙ্গে জড়িত আছেন। দেশটিতে অভিবাসন প্রশ্নে ‘বিভক্তি’ থাকলেও বেশ কিছু রাজ্য এবং স্থানীয় নেতা আফগান শরণার্থীদের স্বাগত জানিয়েছেন।

    এন-কে

  • পানশিরে বেসামরিক লোকজন হত্যা করেছিল তালেবান : বিবিসি

    পানশিরে বেসামরিক লোকজন হত্যা করেছিল তালেবান : বিবিসি

    পাঞ্জশির উপত্যকায় কমপক্ষে ২০ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে তালেবান। সেইসাথে এই উপত্যকার সাথে সবরকমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ অবস্থায় সংবাদ সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়লেও, তালেবানের মানুষ হত্যার প্রমাণ রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

    বিবিসির তথ্য মতে, উপত্যকার একটি রাস্তার ধারের ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে, যেখানে দেখা যায়, একজন সাধারণ ব্যক্তিকে ঘিরে রেখেছে সশস্ত্র তালেবান সদস্যরা। এরপর গুলির শব্দ এবং দেখা যায় লোকটি মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। নিহত ওই ব্যক্তি সেনাবাহিনীর সদস্য কিনা তা ভিডিওতে স্পষ্ট বোঝা না গেলেও একজন প্রত্যক্ষদর্শী জোর দাবি জানিয়েছেন যে, ওই ব্যাক্তি সাধারণ মানুষ।

    এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, এলাকার এক দোকানদারেরও মৃত্যু হয়েছে তালেবানের নির্যাতনে। আবদুল সামি নামের ওই দোকানদার ভেবেছিলেন, সাধারণ দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষ, যার সাথে যুদ্ধের কোন সম্পর্ক নেই, তাকে কেন হত্যা করবে তালেবান? কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কাছে মোবাইল ফোনের সিম কার্ড বিক্রি করার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির মরদেহে নৃশংস নির্যাতনের চিহ্ন দেখেছেন তারা।

    পাঞ্জশিরে এ ধরণের কমপক্ষে ২০টি হত্যার প্রমাণ রয়েছে বিবিসি’র কাছে।

    তালেবান আফগানিস্তানের দখল নিলেও শুধুমাত্র এই উপত্যকাটিই এর বাইরে ছিল। আর এই পাঞ্জশির উপত্যকা বরাবরই প্রতিরোধের কেন্দ্রবিন্দু। এখানকার নেতা আহমদ শাহ মাসউদের অধীনে গড়ে ওঠা তালেবান প্রতিরোধ বাহিনী এর আগে ২০০১ সালেও একইভাবে তালেবান প্রতিরোধ করেছিল। শুধু তাই নয়, তার আগে সোভিয়েত বাহিনীর আগ্রাসনের সময়ও এই উপত্যকা থেকে জোর প্রতিরোধ ছিল তাদের। উপত্যকাটি পুরোটাই ঘিরে রেখেছে পাহাড়। যেকারণে কারও পক্ষেই এই অঞ্চলের দখল নেয়া সহজ নয়। এখন দেখার বিষয় এবারে কী হতে চলেছে।

    এদিকে পাঞ্জশিরের সাধারণ জনগণকে স্বাভাবিক জীবন যাপনের পরামর্শ দিচ্ছেন তালেবান শীর্ষ নেতারা। যদিও বাস্তবের চিত্র অনেকটাই আলাদা। এখন এই উপত্যকার বেশিরভাগ রাস্তা-ঘাট ফাঁকা, হাট-বাজারেও মানুষের ভিড় নেই। লোকজন এলাকা ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছে। এরইমধ্যে এই উপত্যকায় খাদ্য ও খাবারের ঘাটতি হতে পারে বলেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

    এন-কে

  • আফগানিস্তানের জন্য ১০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি

    আফগানিস্তানের জন্য ১০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি

    আফগানিস্তানের জন্য ১০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে জাতিসংঘ। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে জাতিসংঘের সতর্কবার্তার পর এই প্রতিশ্রুতি এলো। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

    সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের আহ্বানে গতকাল সোমবার আফগানিস্তানের জন্য সহযোগিতা কনফারেন্স হয়। সেখানে ৬০৬ মিলিয়ন ডলার চাওয়া হয়েছিল। সে আহ্বানের পর অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি ডলারের অঙ্কে এক হাজার মিলিয়ন অর্থাৎ এক বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। কনফারেন্সটিতে জাতিসংঘ ও রেড ক্রসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

    কনফারেন্সে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, দুই দশকের যুদ্ধ শেষে আফগানিস্তান বর্তমানে নাজুক সময় পার করছে। দারিদ্র্যের হার বেড়েই যাচ্ছে, সরকারি সেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

    এই মাসের শেষে আফগানিস্তানের বহু মানুষ অনাহারী হয়ে পড়বে বলে জানান জাতিসংঘের মহাসচিব।

    গত ১৫ আগস্ট তালেবানের আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের আগপর্যন্ত আফগানিস্তানের অর্ধেক জনগোষ্ঠী, অর্থাৎ এক কোটি ৮০ লাখ মানুষ সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল ছিল। খরা, খাদ্য ও নগদ অর্থ সংকটে এবং রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট অস্থিরতায় এই নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘসহ অন্যান্য সাহায্য সংস্থাগুলো।

    পশ্চিমা মদদপুষ্ট সরকারের পতনে এবং তালেবানের বিজয়ের ফলে আফগানিস্তানে শত শত কোটি ডলারের বিদেশি সাহায্য বন্ধ হয়ে গেছে। দেশটিতে জাতিসংঘের কার্যক্রম চালানো নিয়েও চাপ তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব গত শুক্রবার জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে জাতিসংঘ নিজের কর্মীদের বেতনই দিতে পারছে না।

    আহ্বান করা ৬০৬ মিলিয়ন ডলারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহে ব্যয় করার কথা হয়েছে।

    আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ডব্লিউএফপি আফগানিস্তানে একটি জরিপ চালিয়ে জানায়, দেশটির ৯৩ শতাংশ মানুষ পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার পায় না।

    এ ছাড়া জাতিসংঘের আরেকটি প্রতিষ্ঠান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) এই সাহায্যের অর্থ আফগানিস্তানে তাদের স্বাস্থ্য কার্যক্রম পরিচলানায় ব্যয় করবে।

    এন-কে

  • আফগানিস্তানে আইএসের ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলা

    আফগানিস্তানে আইএসের ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলা

    আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ নানগাহারে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হামলায় একজন আইএস সদস্যের নিহত হয়েছেন, যিনি আইএসের আফগানিস্তান শাখার একজন পরিকল্পনাকারী (মাস্টারমাইন্ড) ছিলেন বলে জানা গেছে।

    বিবিসি ও সিএনএনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র সেনা বাহিনীর মুখপাত্র ক্যাপ্টেন বিল আরবান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মার্কিন সামরিক বাহিনী আজ আইএস-কে (খোরাসান) ঘাঁটিতে হামলা করেছে। আফগানিস্তানের নানগাহার প্রদেশে এই হামলা চালানো হয়েছে।’

    ‘আইএস-কে’র একজন মাস্টারমাইন্ডকে লক্ষ্য করে এই হামলা পরিচালনা করা হয়েছিল। প্রাথমিক ইঙ্গিতসমূহ বলছে, আমরা টার্গেটকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছি। কোনো বেসামরিক মানুষ এই হামলায় হতাহত হয়েছেন- এমন সংবাদ পাওয়া যায়নি।’

    বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় পরপর দু’ টি বিস্ফোরণ ঘটে। প্রথম বিস্ফোরণটি হয় বিমানবন্দরের অ্যাবেই গেটের কাছে, যেখানে মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী বিমানবন্দরের দায়িত্বে ছিলেন। হামলার পর গোলাগুলিও হয়েছে সেখানে।

    এর কিছুক্ষণ পরেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটে বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী ব্যারন হোটেলের পাশে, যেখানে ব্রিটিশ কর্মকর্তারা যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ প্রত্যাশী আফগানদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছিলেন।

    ভয়াবহ সেই হামলায় এখন পর্যন্ত ১৭০ জন মানুষ মারা গেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি, সিএনএনসহ কয়েকটি প্রথম সারির আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। এছড়া আহত হয়েছেন আরও কয়েকশ’।

    নিহতদের মধ্যে ১৩ জন মার্কিন সেনা সদস্য আছেন, বাকিরা সবাই বেসামরিক আফগান নাগরিক।

    হামলার এই ঘটনায় বৃহস্পতিবারই ব্যাপক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমা করবো না, এই হামলার কথা ভুলেও যাবো না। হামলাকারীদের অবশ্যই খুঁজে বের করবো এবং জড়িতদেরকে এর মূল্য দিতে হবে।’

    যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা ‍সিএনএনকে জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে হামলার পর সেনা কর্মকর্তারা আফগানিস্তানে আইএস ঘাঁটিতে হামলার অনুমোদন চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তা অনুমোদন করেন। তারপরই নানগাহারে ড্রোন হামলা চালানো হয়।

    শুক্রবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কাবুলে ফের সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে জানিয়েছেন দেশটির গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

    এর জেরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিমানবন্দরের বিভিন্ন গেটে অবস্থান করা মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কাবুলের মার্কিন দূতাবাস।

  • আফগানিস্তান ছাড়তে চাইছে মানুষজন

    আফগানিস্তান ছাড়তে চাইছে মানুষজন

    হাজার হাজার আফগান ও বিদেশি নাগরিক মরিয়া হয়ে আফগানিস্তান ছাড়তে চাইছে। এমতাবস্থায় কাবুল এয়ারপোর্টের বাইরে মানুষের দেশ ছাড়তে যাওয়ার করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে। খবর বিবিসির।

    তালেবানরা রোববার আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর স্থল সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয় তারা। তাই কাবুল বিমানবন্দরই দেশ ছাড়তে চাওয়াদের কাছে একমাত্র পথ হয়ে ওঠে।

    কিন্তু তালেবানরা বলছে, তারা চায় না আফগানরা দেশ ছাড়ুক। তারা কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের রাস্তায় চেকপয়েন্ট বসিয়েছে। আর যারা বিমানবন্দর যেতে চাইছে তাদের ওপর হামলা করছে।

    এসব হামলায় এ পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। হয় তারা বন্দুকের গুলিতে, না হয় পদপিষ্ট হয়ে মারা গেছে। তাই বিমানবন্দরে যাওয়াটা ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে সবার জন্য।

    এয়ারপোর্টের ভেতর ৪ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা রয়েছে। তারা সাময়িকভাবে বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু বিমানবন্দরকে ঘিরে রেখেছে তালেবান যোদ্ধারা। তাই একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

    জানা গেছে, যারা আফগানিস্তান ছাড়তে চাইছে, তাদের বাধা দিচ্ছে তালেবানরা। এমনকি যাদের ভিসা আছে তাদের ক্ষেত্রেও সমস্যা সৃষ্টি করছে তারা।

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, এসব লোকরা কোনও মতে বিমানবন্দরের কাছাকাছি পৌঁছানোর আগেই রাস্তায় হামলা শিকার হচ্ছে।

    লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসের একজন সংবাদদাতা জানান, তিনি কয়েক ডজন তালেবানকে শূন্যে গুলি ছুঁড়তে দেখেছেন। জনতার দিকে বন্দুক তাক করেছে তারা। লাঠি এবং দড়ি দিয়ে তারা পালাতে চাওয়াদের মারধর করেছে।

    মার্কাস ইয়ামের ধারণকৃত গ্রাফিক ইমেজে দেখা যায়, এই ঘটনায় অন্তত একজন নারী এবং এক শিশু আহত হয়েছে। হামলায় রক্তাক্ত ওই শিশু মাথায় আঘাত পেয়েছে।