Tag: আবরার ফাহাদ

  • অপরাধীরা প্রটেকশন পায় সরকারের কাছ থেকে:রিজভী

    অপরাধীরা প্রটেকশন পায় সরকারের কাছ থেকে:রিজভী

    খুনিরা সরকারের আশ্রয়ে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

    শনিবার (২৬ অক্টোবর) নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন।

    সমাবেশের পর আবরার হত্যার প্রতিবাদে ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল। নয়াপল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে আবারও বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

    রিজভী বলেন, ‘আমরা দেখেছি, সরকারের সোনার ছেলেরা অপরাধ করলে সেই অপরাধকে প্রটেকশন দেন এ সরকার বা সরকার প্রধান। নাটোরের নুর হোসেন বাবুর হত্যাকারীদের বিচার হয়নি, নাটারের রানার হত্যাকারীদের ফাঁসি হয়েছিলো সেটা রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পেয়েছেন। খবরের কাগজে বেরিয়েছে এই আওয়ামী লীগের আমলে দুইজন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এবং আবদুল হামিদ সাহেবের আমলে ৩৪ থেকে ৩৫ জন হত্যাকারীরা যাদের ফাঁসি হয়েছে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পেয়েছেন।’

    তিনি বলেন, ‘অপরাধীরা প্রটেকশন পায় সরকারের কাছ থেকে। সেই সরকারের হঠাৎ করে সোনারকাঠি-রুপাকাঠি পরিবর্তন করে আজকে রাক্ষস থেকে মানবতার মূর্ত প্রতীক হলেন কি করে? ঘটনা কি? বিশ্বজিৎকে যারা হত্যা করেছে তাদেরও কিন্তু কিছু হয়নি। একের পর এক খুন, একের পর এক হত্যা, এই হত্যার সঙ্গে এই সরকার দলীয় যারা জড়িত তারা কোনো না কোনোভাবে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে।’

    রিজভী বলেন, ‘আজকে হঠাৎ করে টাকার খনি, ডলারের খনি, ক্যাসিনোর খনি। গত ১০ বছর কিছুই হলো না তাহলে হচ্ছে কেনো? এ নিয়ে জনমনে বড় বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কেউ বলেন গৃহ বিবাদ, কেউ বলেন অন্য কোনো বিষয় আছে।’

    তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। আমরা বলতে চাই, দুর্নীতি করা নিশ্চয় অপরাধ। সবচাইতে বড় দুর্নীতি হচ্ছে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে জনগণকে প্রতারিত করে দিনের ভোটকে রাতে করা। এটা হলো মহাদুর্নীতি। এই দুর্নীতির জন্য সবার আগে এই সরকারের বিচার হওয়া উচিত ছিলো।’

    তিনি বলেন, ‘এই ভোটারবিহীন সরকার জনগণের সরকার নয়, এটি একটি মাফিয়া সিন্ডিকেট। তা না হলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন হবে না কেনো? এরকম মামলায় অসংখ্য জামিন হয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীই বলেছেন, তারেক যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে তার মা মুক্ত হবে না। ওই জামিনের চাবিটা শেখ হাসিনার হাতে আছে, ওই চাবিটা শেখ হাসিনা যতক্ষন পর্যন্ত না তালা খুলবেন ততক্ষন পর্যন্ত দেশনেত্রী মুক্ত হবেন না।’

    রিজভী বলেন, ‘দেশনেত্রীর কাছে তার আত্বীয়-স্বজনরা যাচ্ছেন, খবর নিয়ে আসছেন। তিনি ডান হাত বাম হাত নাড়াতে পারছেন না, প্রতিদিন সেটা ফিক্সড হয়ে যাচ্ছে। যে ভদ্র মহিলা, যে জাতীয় নেত্রী তিনি আজকে ‘হুইল চেয়ারবাউন্ড’ হয়ে গেছেন। তাকে দুইজন লোক ধরে তুলতে হয়। কিন্তু আমরা দেখলাম তিনি হেঁটে কারাগারের মধ্যে গেছেন। কেনো তার এই অবস্থা? তার এই চরম শারীরিক অবস্থার জন্য দায়ী আজকের প্রধানমন্ত্রী, তার ক্ষোভ, তার প্রতিহিংসা, তার জিজ্ঞাসা, তার রাষ্ট্রক্ষমতায় ভোগ দখলের জন্য আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ধুঁকে ধুঁকে জেলখানায় আছেন।’

    তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী হাসপাতালে আছেন তার চিকিৎসা নাই। তার আত্বীয়-স্বজনরা বলছেন, দেশনেত্রী মুক্ত হলে তিনি সিদ্ধান্ত নেবে। তারা দেশের বাইরে নিয়ে যাবে, দেশের মধ্যে বা বাইরে যেখানে উন্নতমানে চিকিৎসা হয় তারা করাবেন।’

    তিনি আরও বলেন, ‘পরিবারের এই আকুতি আজকে সরকারের কানে ঢুকে না। আজকে কোথায় যাবো? মানুষের শেষ আশ্রয় আদালত সেখানে কোনো বিচার নেই, কোনো বিচার পাওয়া যায় না। আমরা মনে করি, অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, তার মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

    মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেন, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার। যে প্রদীপ জ্বলে উঠার আগেই এই স্বৈরাচারী সরকার তাকে নিভিয়ে দিলো তার সোনার ছাত্রলীগ বাহিনী দিয়ে। এই আবরারকে যেভাবে তিল তিল করে হত্যা করা হয়েছে শারীরিক ও মানসিক অবর্ণনীয় বর্বর হামলা করে এটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। সে আমার মতোই কোনো মায়ের সন্তান।

    তিনি বলেন, যারা হত্যা করেছে এই হত্যাকারী শুধু ধরলেই হবে না, তাদের প্রত্যেককে দৃশ্যমান ফাঁসি দিতে হবে। হত্যাকারীর পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্যদের আমি বিচার চাই। কারণ যারা এই সন্তানদের জন্ম দিয়েছে, লালন-পালন করেছে অবশ্যই তারা দায়-দায়িত্ব রাখে। আমি সবার বিচার চাই।

    খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যিনি এই দেশের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। গণতন্ত্রের অপর নাম দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বাংলাদেশের অপর নাম দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজকে তিনি কারাগারে মানে বাংলাদেশ কারাগারে, গণতন্ত্র কারাগারে। তাকে অবশ্যই আমাদের মুক্ত করে আনতে হবে।

    সংগঠনের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ সভা পরিচালনা করেন। সমাবেশে মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান ও পেয়ারা মোস্তফা বক্তব্য দেন।

  • কুষ্টিয়ায় ভর্তি হলেন আবরারের ছোট ভাই

    কুষ্টিয়ায় ভর্তি হলেন আবরারের ছোট ভাই

    কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ভর্তি হলেন বুয়েটের নিহত মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফায়াজ।

    আজ বৃহস্পতিবার ফায়াজের বাবা বরকত উল্লাহ ঢাকা কলেজের ছাড়পত্র কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে জমা দেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে ফায়াজকে ভর্তি করে নেয়।

    কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কাজী মনজুর কাদির জানান, বুয়েটে নিহত আবরার ফাহাদের বাবা কলেজে আসেন। তিনি ফায়াজের ঢাকা কলেজের ছাড়পত্রসহ কাগজপত্র জমা দেন। তাৎক্ষণিকভাবে ফায়াজকে ভর্তি করা হয়। এখন থেকে সে এই কলেজেই পড়াশোনা করবে। এখান থেকেই তার শিক্ষাজীবন চলতে থাকবে।

    এবিষয়ে ফায়াজের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ফায়াজ অসুস্থ থাকায় আমিই তার কাগজপত্র নিয়ে এসেছি। কাগজপত্র দেওয়ার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করেছে।

    গত ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন।

    ভাইয়ের মৃত্যুর পর ফায়াজ ঢাকায় পড়ালেখা করতে অনীহা প্রকাশ করেন। ফায়াজ ঢাকা কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

    ভাইয়ের মৃত্যুর নিজ বাড়িতে ফায়াজ জানান, ভাইকে হারিয়ে একা হয়ে পড়েছি। ভাই আমার সব বিষয়ে খোঁজ খবর রাখতেন। আজ ভাই নেই, তাই আমিও আর ঢাকায় থাকবো না। এর আগে গত ১৫ অক্টোবর সে ঢাকা কলেজ থেকে ছাড়পত্র নেন ফায়াজ।

  • প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন, সব দাবি মানার পরও বুয়েটে আন্দোলন কেন?

    প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন, সব দাবি মানার পরও বুয়েটে আন্দোলন কেন?

    সব দাবি মেনে নেয়া নেয়ার পরও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবির সবগুলোইতো মেনে নিয়েছেন ভিসি। এরপর আন্দোলন করার কি যৌক্তিকতা থাকতে পারে?

    আজ শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে জাতীয় মহিলা শ্রমিক লীগের দ্বিতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।

    শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোন দল কর্মীরা অন্যায় করছে আমরা তা দেখিনি। আমরা খুনিকে খুনি হিসেবেই আমরা দেখি। বুয়েটে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যাকাণ্ডের পর কারো আন্দোলনের জন্য অপেক্ষা করি নাই, প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে। কারো নির্দেশেরও অপেক্ষা করিনি। সঙ্গে সঙ্গে আমি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি।

    এদেরকে গ্রেফতার করা এবং ভিডিও ফুটেজ থেকে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা। এই তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশ পড়লো বিপদে। এ ভিডিও ফুটেজ যখন সংগ্রহ করছে তখন তারা বাধা দিয়েছিল। কেন বাধা দিয়েছিল আমি জানি না।’

    তিনি বলেন, ‘আমার কাছে পুলিশের আইজিপি ছুটে আসলো কী করবো? আমি বললাম তারা কী চায়? বললেন, তারা কপি চায়। আমি বললাম কপি করে তাদের দিয়ে দাও। তোমরা তাড়াতাড়ি ফুটেজটা নাও। ফুটেজটা নিলেই তো আমরা আসামি চিহ্নিত করতে পারবো, ধরতে পারবো। কে গেছে না গেছে দেখতে পারবো, ধরতে পারবো।

    বুয়েটের উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি মেনে নিয়েছে। তারপরও না কী তারা আন্দোলন করবে। কেন করবে জানি না। এরপর আন্দোলন কার কী যৌক্তিকতা থাকতে পারে।’

    ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করার সময় তিন চার ঘণ্টা সময় নষ্ট না করলে অপরাধীরা আরও আগে ধরা পরত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসামিদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হলো কী না, এটার জবাব ওই আন্দোলন যারা করেছে তারা বলতে পারবে, আমি বলতে পারবো না। আমি কিন্তু এক মিনিটও দেরি করি নাই। খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এই ধরণের অন্যায় করলে কখনো এটা মেনে নেওয়া যায় না।

  • সন্তানের নাম ‘আবরার ফাহাদ’ রাখলেন পুলিশ কনস্টেবল

    সন্তানের নাম ‘আবরার ফাহাদ’ রাখলেন পুলিশ কনস্টেবল

    বুয়েটের মেধাবি শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে চলছে প্রতিবাদ। এমতবস্থায় এক পুলিশ সদস্য তার নিজের সদ্য জন্ম নেয়া সন্তানের নাম রেখেছেন আবরার ফাহাদ।

    বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে জন্ম নেয় পুলিশ বাহিনীর কনস্টেবল শামীম হাসানের প্রথম পুত্র সন্তান। বর্তমানে তিনি প্রেষণে র‍্যাবে কর্মরত আছেন।

    পুত্র সন্তান জন্ম নেয়ার পর কনস্টেবল শামীম ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আজ (বুধবার) আমি পুত্র সন্তানের বাবা হলাম। মাশাআল্লাহ আমার সন্তানের নাম রেখেছি, এই মুহুর্তে সবার প্রিয় দেশের প্রথম ভাবনা শহীদ এর নামের প্রতি সম্মান রেখে ‘আবরার ফাহাদ।’

    ইনশাআল্লাহ আমার সন্তানকে বর্তমান প্রচলিত পশ্চিমা উচ্চ ডিগ্রী এবং জঙ্গিবাদী ধর্মীয় মোল্লাদের থেকে দুরে রাখিয়া একজন দানশীল,গরীব দু:খী মানুষের সেবক হিসাবে সমাজের বুকে প্রতিষ্ঠিত করব।সবাই দোয়া করবেন মহান আল্লাহ যেন আমার নেক আশা কবুল করেন।

  • পুলিশের মারধরের পর আবরারের ভাইয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস

    পুলিশের মারধরের পর আবরারের ভাইয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস

    নিহত বুয়েটের মেধাবি শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফায়াজকে আজ পিটিয়েছে পুলিশ। ফাহাদের কবর জিয়ারত শেষে বুয়েট উপাচর্য সাইফুল ইসলাম ফাহাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে গেলে বাঁধা দেন গ্রামবাসী। এ সময় গ্রামবাসীর বিক্ষোভের মুখে ভিসি ফাহাদের বাড়ি যেতে পারেননি।

    পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ এগিয়ে আসে। এতে গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় আবরারের ছোট ভাই ফায়াজ ছাড়াও তার ফুপাতো ভাইয়ের স্ত্রী ও আরও একজন নারী আহত হন।

    বুধবার বিকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় রায়ডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এর পর রাতে তাই ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অ্যাডিশনাল এসপিকে নিয়ে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন।

    এতে তিনি লেখেন, আজকে Additional SP (উনি বলেন উনার নাম মোস্তাফিজুর রহমান) কোথা থেকে সাহস পায় আমার গায়ে হাত দেয়ার? আমার ভাবি কে মারছে? নারীদের গায়ে নিষ্ঠুরভাবে হাত দেয়? এই চাটুকারদের কি বিচার হবে না? তিনি কালকে ২ মিনিটে জানাজা শেষ করতে বলেন কিভাবে? যেই ছাত্রলীগ মারল তারা কেন সর্বত্র? আমার বাবাকে হুমকি দেয়া হয়েছে আপনার আর এক ছেলে ঢাকা থাকে আপনি কি চান তার ক্ষতি হোক….. গ্রাম-এ বলা হয়েছে কেউ কিছু করলে ১ সপ্তাহ পর গ্রামের সব পুরুষ জেলে থাকবে। বিচার চাই…আমি বিচার চাই….. নয়তো আমাকে মেরে ফেলুন বাবা-মা কষ্ট একবারে পাবে।

    প্রসঙ্গত, ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জেরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।

    তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।

    হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলেট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।

    এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়।

    এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।

    এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

  • বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ আবরারের পড়ার টেবিলে

    বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ আবরারের পড়ার টেবিলে

    বুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নিহত আবরার ফাহাদের পড়ার টেবিলে পাওয়া গেছে বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, সমরেশ মজুমদারের ‘সাতকাহন’, হুমায়ূন আহমেদের ‘মিসির আলী সমগ্র’, অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের লেখা ‘বঙ্গবন্ধু: মহাকালের মহানায়ক’, শাহাদুজ্জামানের ‘ক্রাচের কর্ণেল’ ইত্যাদি গ্রন্থ। এছাড়া রয়েছে বিভূতিভূষণের ‘উপন্যাস সমগ্র’।

    কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরারের বাড়ি। ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি। পড়ালেখার চাপ থাকায় গত রোববার (৬ অক্টোবর) ফিরে আসেন। সন্ধ্যায় বুয়েট শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে ব্যস্ত ছিলেন পড়ালেখায়।

    রাত ৮টার দিকে আবরারকে ওই হলের দোতলার ২০১১ নম্বর টর্চার সেলে ডেকে নিয়ে হুমকি দিতে শুরু করেন বুয়েট ছাত্রলীগের নেতারা। এ পর্যায়ে ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার আবরারের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ফেসবুক ঘেঁটে বাছ-বিচার না করেই হকি স্টিক দিয়ে পেটাতে শুরু করেন।

    সেখানে অবস্থান করা সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিনও আরেকটি হকি স্টিক নিয়ে আবরারকে পেটানোতে অংশ নেন। ওই সময় ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন আবরারের হাত ধরে রাখেন। আর আবরারের পায়ে পেটাতে থাকেন উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল।

    সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ইশতিয়াক মুন্নাও নির্দয়ভাবে পেটাতে শুরু করেন আবরারকে।

    কেউ হকি স্টিক দিয়ে, কেউ লাঠি দিয়ে, কেউ বা কিল-ঘুষি দিয়ে ইচ্ছামতো আবরারকে পেটানোতে অংশ নেন। এভাবে ২২ জন অংশ নেন এই ভয়ংকর নির্যাতনে। আবরার একটু কাঁদতেও পারেননি। কারণ তখন তাঁর মুখ চেপে ধরা হয়েছিল।

    চরম এই নির্যাতনের মধ্যেও আবরার বলেছিলেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি, আমাকে মেরো না।’ আরো কিছু বলার চেষ্টা করলেও নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তা আর বলতে পারেননি।

    ওই অবস্থার মধ্যেই টর্চার সেলে প্রবেশ করেন বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ও সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ। তাঁরাও অপেক্ষা না করে নিস্তেজ প্রায় আবরারকে পেটাতে শুরু করেন। এভাবেই একপর্যায়ে মেধাবী ছাত্র আবরার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

    তাদের গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন ভয়ংকর তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি।

    প্রসঙ্গত, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার জের ধরে আবরার ফাহাদকে রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দুইতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

    পরদিন সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

    ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

  • স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধে প্রথম শহীদ আবরার: রিজভী

    স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধে প্রথম শহীদ আবরার: রিজভী

    ভারতের সঙ্গে দেশ বিরোধী চুক্তির বিরোধীতা করায় বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরারকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

    তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধে, দেশের মাটি, পানি রক্ষার যুদ্ধে প্রথম শহীদ আবরার ফাহাদ।’

    মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

    রিজভী আহমেদ বলেন, ‘ফেনী নদীর নাম হোক- ‘আবরার নদ’। ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের মাটি বিক্রি, পানি বিক্রি, দেশ বিক্রির অমানবিক নষ্টবুদ্ধির বিরুদ্ধে সকলকে মৃত্যুপণ যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে। ক্ষমতাসীনদের মুঢ় অহমিকার বিরুদ্ধে সকলকে প্রতিরোধে সামিল হতে হবে। আমরা আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রকৃত হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি।’

    শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ফেরাতে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে রিজভী বলেন, ফেসবুকে দেশবিরোধী চুক্তির বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেয়ার অপরাধে নারকীয় কায়দায় রাতভর নির্যাতন চালিয়ে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা খুন করেছে বুয়েটের সোনার টুকরা মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে। আবরার ফাহাদের মত নিরীহ নিরপরাধ দেশপ্রেমিক মেধাবী ছাত্রকে হত্যার মাধ্যমে ছাত্রলীগ প্রমাণ করেছে যে, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জান-মালের কোনো নিরাপত্তা নেই। ইতোপূর্বে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থী এবং কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রলীগের হামলা থেকে রেহাই পায়নি। ছাত্রলীগের খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্য অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগের অতীত ঐতিহ্যকে ম্লান করে দিয়ে এর ডাকনাম এখন হয়ে পড়েছে চাপাতিলীগ। ছাত্রলীগ নামক এই দানব জঙ্গীলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরবে না। শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা থাকবে না।

    নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে হালকাভাবে দেখিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের বুয়েট প্রশাসন বাঁচানোর চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাকে বাঁচাতে বুয়েট প্রশাসন উঠেপড়ে লেগেছে। নির্লজ্জ বুয়েট প্রশাসন এই হত্যাকাণ্ডকে সামান্য অনাকাংখিত মৃত্যু বলে বিবৃতি দিয়েছে। তারা খুনিদের আড়াল করতে সিসিটিভিতে ধারণকৃত ২০ মিনিটের ভিডিও এডিট করে মাত্র দেড় মিনিটের একটি ক্লিপ দিয়েছে আন্দোলনরত ছাত্রদের।

    আজ সারাদেশের সাধারণ ছাত্রসমাজ ফুঁসে উঠেছে। আবরারের খুনিদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন এখন অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। দেশের সাধারণ ছাত্রসমাজের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান- এই মৃত্যু উপত্যাকাকে শান্তিময় করতে রাজপথে এখনই নেমে আসতে হবে।’

    তিনি বলেন, আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের নামে মামলা হওয়া উচিত। বাস পোড়ানোর মিথ্যা অভিযোগে যদি বিএনপি’র সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নামে মামলা হয় তবে আবরার হত্যার জন্য ক্ষমতাসীনদের শীর্ষ নেতাদের নামে মামলা হবে কি না তা জাতি জানতে চায়। আবরার সত্য তথ্য উল্লেখ করে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়েছিল, সেই পোষ্টে ওইসব চুক্তির অসঙ্গতি তুলে ধরেছিল, এজন্য তাকে জীবন দিতে হলো।

    তিনি আরও বলেন, ‘দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে, যাতে আর কোনো মায়ের কোল শুন্য না হয়।’

    এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ‘ভারতের সাথে অসম চুক্তির প্রতিবাদে ধাপে ধাপে বিএনপির পক্ষ থেকে রাজপথে কর্মসূচি দেয়া হবে।’

    সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, আব্দুস সালাম আজাদ, সহ দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

  • আবরার হত্যার বিচারসহ ৭ দফা দাবি বুয়েট শিক্ষার্থীদের

    আবরার হত্যার বিচারসহ ৭ দফা দাবি বুয়েট শিক্ষার্থীদের

    বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে সাত দফা দাবি জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

    ফাহাদ হত্যার বিচার দাবিতে আজ সকাল থেকে বুয়েট ক্যাম্পাস উত্তাল। আবরারের সহপাঠীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে ১০টায় বুয়েট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে ‘বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে একটি মিছিল শুরু করেন তারা।

    এসময় ‘খুনীদের ঠিকানা, এই বুয়েটে হবে না’, ‘ফাঁসি ফাঁসি, ফাঁসি চাই’, ‘প্রশাসনের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘ভিসি তুই নীরব কেন, জবাব চাই, দিতে হবে’ এসব স্লোগান দিতে শোনা যায় শিক্ষার্থীদের।

    মিছিলটি বুয়েটের হলগুলো ঘুরে বেলা সোয়া ১১টার দিকে বুয়েট শহীদ মিনারের সামনে আসেন। সেখানে সাংবাদিকদের কাছে নিজেদের সুনির্দিষ্ট সাতটি দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।

    দাবিগুলো হলো-

    ১. খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

    ২. ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের শনাক্ত করে সবার ছাত্রত্ব আজীবন বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

    ৩. দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করতে হবে।

    ৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কেন ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি, তা তাকে সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে আজ বিকেল ৫ টার মধ্যে জবাবদিহি করতে হবে। একই সঙ্গে ডিএসডব্লিউ স্যার কেন ঘটনাস্থল থেকে পলায়ন করেছেন, এ বিষয়ে তাঁকে আজ বিকেল ৫ টার মধ্যে সবার সামনে জবাবদিহি করতে হবে।

    ৫. আবাসিক হলগুলোতে র‍্যাগের নামে ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর সকল প্রকার শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনকে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে আহসানউল্লা হল এবং সোহরাওয়ার্দী হলের পূর্বের ঘটনাগুলোতে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল ১১ অক্টোবর,২০১৯ তারিখ বিকেল ৫ টার মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।

    ৬. রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আবাসিক হল থেকে ছাত্র উৎখাতের ব্যাপারে অজ্ঞ থাকা এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হওয়ায় শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টকে ১১ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখ বিকেল ৫ টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।

    ৭. মামলা চলাকালে সকল খরচ এবং আবরারের পরিবারের সকল ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করতে হবে।

    এই কর্মসূচি আজ বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই সময়ের মধ্যে ভিসিকে সামনে আসার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ চাই’ স্লোগান দিতে থাকেন।

    এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন নেই।’

    তিনি বলেন, ‘আমাদের বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন নেই।’

    অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতার ঘোষণা দিয়েছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি।

    বুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ কে এম মাসুদ বলেন, অতীতে যেসব বেআইনি ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর কোনো বিচার হয়নি। তারই খেসারত হিসেবে আজকের এই হত্যাকাণ্ড। আগের ঘটনার কোনো ব্যবস্থা নিলে এ ঘটনা ঘটত না। শিক্ষক সমিতির সদস্যরা গতকাল ভিসির সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেছিলেন ব্যবস্থা নেবেন। তারপর আর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। শিক্ষক সমিতি ছাত্রদের এই আন্দোলনের সঙ্গে একমত। এটি যৌক্তিক বলে মনে করে।

    ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।

    ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন।

    গতকাল সোমবার আবরার হত্যার প্রতিবাদে দিনভরই উত্তপ্ত ছিল বুয়েট ক্যাম্পাস। গতকাল দুপুর থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত শেরেবাংলা হলের প্রভোস্টকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। তারা হলের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ করা রোববার রাতের ফুটেজ দেখানোর এবং দোষী ব্যক্তিদের নাম প্রকাশের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

    এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়।

    এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।

    এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

    আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তাকে মারধরের সময় ২০১১ নম্বর কক্ষে উপস্থিত ছিলেন বুয়েট ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু।

    শিক্ষার্থী, পুলিশ ও ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, শনিবার বাংলাদেশ-ভারতে হওয়া চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন আবরার। পরে সেটি শাখা ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্নার নজরে আসে।

    তিনি একই হলের শিক্ষার্থী বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মেজবাউল ইসলাম জিয়ন এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকারকে বিষয়টি জানান।

    এরপর সিদ্ধান্ত হয় আবরারকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসা করা হবে। সে অনুযায়ী শনিবার রাত ৮টার দিকে ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে আবরারকে ডেকে আনার নির্দেশ দেন বুয়েট ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল।

    এ সময় তার সঙ্গে উল্লিখিত নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এরা সবাই ১৬ ও ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে দু’জন রোববার রাত ৮টার দিকে আবরারকে ডেকে ২০১১ নং কক্ষে নিয়ে যান।

    সূত্র আরও জানায়, সেখানে নেয়ার পর আবরারের কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়। তার ফেসবুক মেসেঞ্জার চেক করাসহ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আগে থেকেই ওই রুমে ক্রিকেটের স্টাম্প, হকিস্টিক, বাঁশের লাঠি, চাপাতি রাখা ছিল।

    তা দিয়েই জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে শুরু হয় মারধর। একপর্যায়ে আবরার অচেতন হয়ে পড়লে কোলে করে মুন্নার কক্ষে (২০০৫ নং) নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে দোতলা ও নিচতলার সিঁড়ির মধ্যবর্তী জায়গায় অচেতন আবরারকে নিয়ে যায় তারা।

    যাতে শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা না যায় সে জন্য কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয় তার দেহ। এরপর হল প্রভোস্ট ও চিকিৎসককে খবর দেয়া হয়। চিকিৎসক এসে আবরারকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়।

    পুলিশ এসে আবরারকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে একটি তোশকের ওপর রাখে। এরপর তাকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আবরারকে পেটানো সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজের একটি অংশ সোমবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

    বুয়েট শেরেবাংলা হল শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, আবরারকে জেরা ও পেটানোর সময় ওই কক্ষে সমাজসেবাবিষয়ক উপ-সম্পাদক ও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ইফতি মোশাররফ ওরফে সকালসহ তৃতীয় বর্ষের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন।

    ওই কক্ষে এসে দ্বিতীয় দফা আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়নসহ কয়েকজন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, পেটানোর পর আবরারের মৃত্যু হলে রাতে তারা সহপাঠীদের ডেকে লাশ নিচতলার সিঁড়ির সামনে রাখে।

  • পারিবারিক কবরস্থানে আবরারের দাফন সম্পন্ন

    পারিবারিক কবরস্থানে আবরারের দাফন সম্পন্ন

    বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামে দাফন করা হয়েছে।

    এদিকে, আবরারের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষুব্ধ কয়েক শ মানুষ এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন। তারা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে খুনিদের বিচার ও ফাঁসির দাবি জানান।

    সকাল সাড়ে ৫টার দিকে আবরারের মরদেহ ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডের বাসায় পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে বাতাস। মেধাবী এ শিক্ষার্থীকে এক নজর দেখার জন্য এলাকাবাসীসহ শত শত মানুষ ভিড় জমান। এ সময় অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।

    সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আল ইকরা জামে মসজিদের সামনে আবরারের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক শ মানুষ এতে অংশ নেন। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আবরারের মরদেহ গ্রামের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙ্গা গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সকাল ১০টার দিকে রায়ডাঙ্গা কবরস্থানে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় সহস্রাধিক মানুষ জানাজায় অংশ নেন।

    জানাজা শেষ হওয়া মাত্রই বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রাস্তায় নেমে আসেন এবং বিক্ষোভ দেখান। তারা আবরার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারসহ ফাঁসির দাবি জানান।

    সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রায়ডাঙ্গা কবরস্থানে আবরারকে দাফন করা হয়।

    বুয়েটের ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে (২১) রবিবার রাত ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

    এর আগে ছাত্র শিবিরের সাথে সম্পর্ক থাকার সন্দেহে আবরারকে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে মারধর করেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। এ ঘটনায় সিটিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা নিয়ে পুলিশ ছাত্রলীগের নয় নেতা-কর্মীকে আটক করেছে।

  • আবরার হত্যা: বুয়েট ছাত্রলীগের ১১ জন বহিষ্কার

    আবরার হত্যা: বুয়েট ছাত্রলীগের ১১ জন বহিষ্কার

    বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ মুজাহিদের অনাকাঙ্ক্ষিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ১১ নেতাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

    সোমবার (৭ অক্টোবর) রাত ১০টায় তাদের বহিষ্কারের তথ্য এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়।

    এতে বলা হয়, ছাত্রলীগ কতৃর্ক গঠিত তদন্ত কমিটির তথ্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

    বহিষ্কৃতরা হলেন, বুয়েট শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপ-দফতর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, সদস্য মুনতাসির আল জেমি, সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম, সদস্য মুজাহিদুর রহমান।

    এর আগে, সোমবার (৭ অক্টোবর) রাত ৯টা ৩০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে থেকে লাশবাহী গাড়ি বুয়েট ক্যাম্পাসের সেন্ট্রাল মসজিদের সামনে এসে দাঁড়ায়। ৯টা ৫৫ মিনিটে শুরু হয় জানাজা।

    জানাজায় উপস্থিত আবরার ফাহাদের বাবা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এছাড়া আবরারের পরিবাবারসহ তার সহপাঠী, দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষ এবং শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টরা জানাজায় উপস্থিত ছিলেন। মসজিদের সামনের মূল রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানুষ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।

    রাত ১০টা ১০ মিনিটে বুয়েটের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে গাড়ি ছেড়ে দেয় বাড়ির উদ্দেশে। ছেড়ে গেলেন প্রিয় ক্যাম্পাস, সহপাঠী ও শিক্ষক।

    এ সময় সহপাঠীরা কান্না চোখে আবরারকে শেষ বিদায় জানান। লাশবাহী গাড়ি সঙ্গে রয়েছে দুটি মাইক্রো।

    গত রোববার (৬ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শের-ই–বাংলা হলের নিচতলা থেকে আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

    এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার নয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে চারজন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের পদধারী নেতা।

  • বুয়েটে নেয়া হচ্ছে আবরারের লাশ

    বুয়েটে নেয়া হচ্ছে আবরারের লাশ

    বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের লাশ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বুয়েটের প্রিয় ক্যাম্পাসে। সেখানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

    সোমবার রাতে আবরার লাশ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। নিহত আবরার বাবা বরকতুল্লাহ জানিয়েছেন, মামলার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে তার কাছে ছেলের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। বুয়েট ক্যাম্পাসে জানাজা পড়ানো হবে। পরে রাতেই ছেলের লাশ কুষ্টিয়ায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে।

    এর আগে নিহত আবরার বাবা বরকতউল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। সিসিটিভি ফুটেজে শনাক্ত করে এই ১৯ জনের নামে মামলা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

    বরকতউল্লাহ জানান, মামলার প্রধান আসামি বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল এবং দ্বিতীয় আসামি যুগ্ম সম্পাদক মুহতাসিম ফুয়াদ।

    এর আগে পুলিশ সিসিটিভি ভিডিও দেখে ছাত্রলীগের ৯ নেতাকে আটক করে।

    আটকরা হলেন, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ছাত্রলীগ নেতা রবিন, মুন্না, তানভীরুল আরেফিন ইথান, অমিত সাহা, আল জামি।

    কৃষ্ণপদ রায় জানান, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ (সিসিটিভি), প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান এসব যাচাই-বাছাই করে আবরার হত্যাকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে ৯ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে।

    নিহত ফাহাদ বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তিনি থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে।

    সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে হওয়া চুক্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে রোববার রাতে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষের ভেতর ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ওই কক্ষটিতে ছাত্রলীগের নেতারা থাকতেন। তারা সবাই এখন পলাতক।

    হলের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলের অনুসারী একদল নেতাকর্মী তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

    হল শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ফাহাদকে জেরা ও পেটানোর ওই কক্ষে অমিত সাহা, মুজতাবা রাফিদ থাকেন। এছাড়াও ইফতি মোশারফ ওরফে সকালসহ তৃতীয় বর্ষের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন।

    ওই কক্ষে এসে দ্বিতীয় দফায় ফাহাদকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়নসহ কয়েকজন। তারা সবাই মেহেদী হাসান রাসেলের অনুসারী।

  • আবরার হত্যায় ৯ ছাত্রলীগ নেতা আটক

    আবরার হত্যায় ৯ ছাত্রলীগ নেতা আটক

    বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরার ফাহাদকে (২১) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ৯ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

    ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় সোমবার বিকালে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

    আটকরা হলেন, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ছাত্রলীগ নেতা রবিন, মুন্না, তানভীরুল আরেফিন ইথান, অমিত সাহা, আল জামি।

    কৃষ্ণপদ রায় জানান, ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ (সিসিটিভি), প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান এসব যাচাই-বাছাই করে আবরার হত্যাকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে ৯ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে।

    পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার জানান, নিহত আবরারের বাবা-মায়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা মামলা করবেন। কিছুক্ষণের মধ্যে আবরারের বাবা-মা থানায় যাবেন। সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

    আটক হওয়াদের মধ্যে ছয়জন আছেন ডিবি পুলিশের কাছে, দুইজন আছেন চকবাজার থানায় ও একজন আছেন শাহবাগ থানায়।

    নিহত ফাহাদ বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তিনি থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে।

    সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে হওয়া চুক্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে রোববার রাতে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষের ভেতর ‘শিবির’ আখ্যা দিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ওই কক্ষটিতে ছাত্রলীগের নেতারা থাকতেন। তারা সবাই এখন পলাতক।

    হলের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলের অনুসারী একদল নেতাকর্মী তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

    হল শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ফাহাদকে জেরা ও পেটানোর সময় ওই কক্ষে অমিত সাহা, মুজতাবা রাফিদ, ইফতি মোশারফ ওরফে সকালসহ তৃতীয় বর্ষের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন।

    ওই কক্ষে এসে দ্বিতীয় দফায় ফাহাদকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়নসহ কয়েকজন। তারা সবাই মেহেদী হাসান রাসেলের অনুসারী।