এম.জুনায়েদ: চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আগামী ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিভিন্ন কারণে এবারের সম্মেলন বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই জোর আলোচনা চলছে সর্বোচ্চ পদ সভাপতি-সম্পাদক পদে কারা প্রার্থী হচ্ছেন।
এখন পর্যন্ত সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম. এ সালাম আলোচনায় রয়েছেন।
কিন্তু সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় এ পদটিতে কে আসছে তা নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। উত্তর জেলার আওতাধীন সাত উপজেলা থেকে অন্তত অর্ধ ডজন নেতা এ পদে প্রার্থী হতে নানাভাবে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে চট্টগ্রামের আওয়ামী রাজনীতির উর্বর ভূমি হিসেবে পরিচিত ফটিকছড়ি উপজেলা থেকে এখন পর্যন্ত সভাপতি পদে কারো নাম শোনা না গেলেও সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান কমিটির সদস্য, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ও ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, সাবেক ছাত্রনেতা হোসাইন মুহাম্মদ আবু তৈয়বের নাম বেশ আলোচিত হচ্ছে।
এর মধ্যে আবু তৈয়ব ৮০ দশকে চট্টগ্রামের রাজনীতির মাঠে আলোচিত ছাত্রনেতা। সে সময় জামাত-শিবির অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে খ্যাত ফটিকছড়িসহ সমগ্র চট্টগ্রামে আওয়ামী রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার জামাত-শিবিরের হাতে মৃত্যুর মুখোমুখি হন তিনি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকালে ছাত্রলীগের সুসংগঠিত ইউনিট হিসেবে গড়ে তুলে দলীয় হাইকমান্ডের নজর কাড়তে সক্ষম হন।
পরবর্তীতে তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ও ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ গত উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আবু তৈয়ব।
এবার বৃহত্তর চট্টগ্রামের আওয়ামী রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন আশির দশকের এ ছাত্রনেতা। তিনি পদটি পেতে দলের হাইকমান্ডে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে তৃণমূল নেতাকর্মীরাও আবু তৈয়বকে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত করছেন।
উত্তর জেলার আওতাধীন বিভিন্ন উপজেলার নেতৃস্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিক্ষিত সৈনিক আবু তৈয়ব জীবনে একাধিকবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। চট্টগ্রামের মাটিতে আওয়ামী রাজনীতিকে ছড়িয়ে দিতে ছাত্রজীবন থেকেই জীবনবাজি রেখে কাজ করছেন। জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালনকালে তিনি দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন।’
তারা আরো বলেন, আবু তৈয়ব তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন নেতা। তিনিই আমাদের (তৃণমূল নেতাকর্মী) সুখ-দুঃখ বুঝতে সক্ষম হবেন। সব মিলিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে আবু তৈয়বের বিকল্প নেই।’
এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ নানাভাবে আবু তৈয়বের পক্ষে জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তার কর্মী-সমর্থকরা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হোসাইন মুহাম্মদ তৈয়বের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমার জীবন-যৌবন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ব্যয় করেছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে কোনো মুহুর্তেই আপোষ করিনি। অতীতে দলের যেসব দায়িত্ব পেয়েছি, তা নিষ্ঠার সাথে পালন করতে চেষ্টা করেছি। এবারও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম আরো জোরদার করার লক্ষে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হচ্ছি। ইনশাআল্লাহ, আমার অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতীত কর্মকান্ড মূল্যায়ন পূর্বক আমার উপর আস্থা রাখবেন বলে দৃঢ় বিশ্বাস।’