Tag: আমনের

  • বোয়ালখালীতে আমনের ফলনে বাগড়া দিলো ঝড়ো হাওয়া,কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ

    বোয়ালখালীতে আমনের ফলনে বাগড়া দিলো ঝড়ো হাওয়া,কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ

    পূজন সেন, বোয়াখালী : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে আমনের ফলনে বাগড়া দিয়েছে ঝড়ো হাওয়া। চলতি আমন মৌসুমে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেও ঝড়ো হাওয়ায় কেড়ে নিয়েছে কৃষকের মুখের হাসি। ঝড়ো হাওয়ায় জমিতে হেলে পড়া ধান শেষতক ঘরে তুলতে পারবেন কি না সেই চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা।

    হেমন্তের শিশির ভেজা আমনের সোনালী ধানের শীষ জমিতে জমে থাকা পানিতে ডুবে আছে। উপজেলার বেশিভাগ অঞ্চলে এ দৃশ্যে কৃষকের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। ছিলো রোগ বালাই আর পোকা মাকড়ের আক্রমণ। এরপরও শুরু হয়েছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ।

    উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছে, বোয়ালখালীতে চলতি মৌসুমে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৪হাজার ৫শত ৫০হেক্টর। আমনের চাষাবাদ হয়েছে ৪হাজার ৮শত ৫০হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০হাজার ৫শত মেট্রিক টন। গড় ফলন (ধানে) ৪দশমিক ৫মেট্রিক টন।

    উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ জ্যৈষ্টপুরা, আমুচিয়া, কড়লডেঙ্গা, পোপাদিয়া, কধুরখীল, চরণদ্বীপ, সারোয়াতলী, শাকপুরা ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার বেশিরভাগ জমিতে রয়েছে জলাবদ্ধা। নেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। ফলে হেলে পড়া আমন ধান শেষ পর্যন্ত ঘরে তুলতে পারবে কি না সেই শঙ্কা রয়েছে গেছে।

    জলাবদ্ধতার কারণে উপজেলার বেশিরভাগ আবাদযোগ্য জমিতে চাষ হয় না। যাও হয়েছে তা ঝড়ো হাওয়ায় জমিতে হেলে পড়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন আমন চাষীরা।বোয়ালখালী আমন ধানে ঝড়ো হাওয়ার বাগরা

    শাকপুরা ইউনিয়নের কৃষক মো. শহীদ হাসান, আবুল কাশেম ও মো. নাছের জানান, অন্যান্য বছরের চাইতে এ বছর আমনের ফলন অনেক ভালো হয়েছিলো। কিন্তু গত কয়েক দিনআগের ঝড়ো হাওয়ায় প্রায় ধানের শীষ হেলে পড়েছে। জমিতে পানি জমে থাকায় বেশিভাগ ফলন নস্ট হয়ে যাবে। এছাড়া ছিলো পোকা মাকড়ের আক্রমণ ও রোগ বালাই।

    একই কথা জানালেন শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের নিমাই দে, আমুচিয়ার কৃষক মাহাবুব আলম, কড়লডেঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক মো. দেলোয়ার হোসেন ও পৌরসভার কৃষক মফিজুর রহমান।

    উপজেলা কৃষি উপ সহকারী কর্মকর্তা দূর্গা পদ দেব জানান, যেসব এলাকায় জোয়ারের পানি জমে থাকে সেইসব এলাকার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন। কেন না প্রাকৃতিক ঝড়ো হাওয়ায় হেলে পড়া ধান জমিতে জমে থাকা পানিতে ডুবে থাকলে ফলন কম হয়।

    পানি নিষ্কাশনে ব্যবস্থা না থাকায় এ সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না। তবে এমওপি সার ব্যবহার এবং কয়েকটি ধানের গোছা জড়ো করে বেঁধে দিলেও এর প্রতিকার সম্ভব। ঝড়ো হাওয়ায় দূর্বল ও লম্বা জাতের ধান গাছগুলো হেলে পড়ে।

    ঝড়ো হাওয়ায় হেলে পড়ার কারণের হতাশ হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, শতক প্রতি কমপক্ষে ৫-৮ কেজি ধান পাওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নত প্রজাতির ধান রোপণ করলে এ সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

    ২৪ ঘণ্টা/পুজন/রাজীব

  • রাউজানে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষক পরিবারে হাসি

    রাউজানে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষক পরিবারে হাসি

    চট্টগ্রামের রাউজানের প্রত্যন্ত এলাকায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে আমনের। বিস্তৃত ফসলী জমিতে দোল খাচ্ছে হলদে বর্ণের আমন ফসল। ইতিমধ্যেই উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে শুরু হয়েছে ফসল ঘরে তোলার কাজ। বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফিরেছে হাসির আভা।

    সরেজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য বারের চাইতে এবার আমনের ফলন আশানুরুপ ভালো হয়েছে।

    রাউজান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (উন্নয়রন শাখা) সঞ্জিব কুমার সুশীল ২৪ গন্টা ডট নিউজের প্রতিবেদককে বলেন, চলতি আমন মৌসুমে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৭৬ হেক্টর। এর বিপরীতে চাষাবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৪৮০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০৪ হেক্টর বেশী চাষাবাদ হয়েছে। এরমধ্যে উপশী জাতের ১১ হাজার ২১০, হাইব্রিড জাতের ৮০ হেক্টর, ও স্থানীয় জাতের ১৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ করেছে কৃষকরা।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রায় ৫০হাজার মেক্টিকটন শুকনা ধান উৎপাদন হতে পারে।

    উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবহাওয়া অনকূলে থাকায় এবারের মৌসুমে আমনের ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়া উপজেরা কৃষি অফিস মাঠপর্যায়ে প্রান্তিক চাষীদের নানান পরামর্শ ও সেবা দেওয়ায় মাঠে রোগ বালাইয়ের প্রকোপ ছিল অন্যান্য বারের চেয়ে তুলনামূলক কম। ফলে বাম্পার ফলন দেখা গেছে আমন ক্ষেতে।

    উপজেলার পাহাড়তলী, বাগোয়ান, কদলপুর, নোয়াপাড়া, সুলতানপুর, হলদিয়া, পশ্চিম গুজরা, উরকিরচর, গহিরা, নোয়াজিশপুর, চিকদাইরছাড়াও রাউজার পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কৃষি জমিতে হলদে বর্ণের আমনের দোল খাওয়ার দৃশ্য কৃষকদের মাঝে ফিরে এনেছে স্বস্তি। অনেক ইউনিয়নে আগেভাগেই শুরু হয়েছে আমন ফসল কাটার ধূম। মান্ধাতা আমলের ধান মাড়াইয়ের দৃশ্যও চোখে পড়ছে অনেক স্থানে। পাশাপাশি প্রযুক্তির ছোঁয়ায় উপজেলার কৃষকরা ধান মাড়াইয়ের আধুনিক যন্ত্র ব্যাবহার করে অল্প সময়ে মাঠের ধান মাড়াই করে ঘরে তুলছে।

    আমনের মৌসুম শুরু হওয়ায় বাজারে কামলার উপস্থিতি বেড়ে গেছে। মৌসুমী কামলাদের ভীড় দেখা গেছে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে। ভোলা, নোয়াখালী, সন্দীপ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, বাশঁখালীসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে কামলারা ছুটে আসছে রাউজানসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায়। অতীতের তুলনায় কামলাদের মজুরীও খুব বেশী হওয়ায় বিপাকে পড়েছে অনেক কৃষক। একেকজন কাজের লোকের দৈনিক মজুরি ৫০০-৬০০ টাকা।

    উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রান্তিক জনপদের কৃষকরা মোবাইলে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করে কৃষি বিষয়ক নানান সেবা গ্রহন করে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে এবার উপজেলায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে।