নিয়ন্ত্রণহীন দামে রাশ টানতে এবার ডিমের পর আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বার্তায় এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় বাজারে আলু সরবরাহ বৃদ্ধি ও বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
“আগ্রহী আমদানিকারদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার অনুরোধ জানানো হলো।”
বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ভালো মানের আলু ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে, যা দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সর্বোচ্চ। গত এক দশকে আলুর সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল ৩৫ টাকা প্রতি কেজি।
গত সেপ্টেম্বরে উৎপাদন খরচ বিবেচনায় নিয়ে সরকার আলু, দেশি পেঁয়াজ ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে তা কার্যকর নেই। সরকারি তদারকি প্রতিষ্ঠান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিদিন অভিযান ও জরিমানা করেও দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ডিম আমদানির অনুমোদনও দিয়েছিল সরকার। কিন্তু তাতেও বাজার ঠাণ্ডা করা যায়নি।
এবার ফলন ভালো হওয়ায় গত এপ্রিলে রাশিয়ায় দুই লাখ টন আলু রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছিল কৃষি মন্ত্রণালয়। এর ছয় মাসের মাথায় এখন আবার আমদানি করার প্রয়োজন হল।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে ২০২০-২১ সালে আলু উৎপাদন হয়েছে ৯৯ লাখ টন ও রপ্তানি হয়েছে ৬৮ হাজার ৭৭৩ টন; ২০২১-২২ সালে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ টন ও রপ্তানি হয়েছে ৭৮ হাজার ৯১০ টন এবং ২০২২-২৩ সালে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১১ লাখ টন ও জানুয়ারি পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে ১৩ হাজার টন।
আলু রপ্তানিকারক দেশ হিসাবে এবার উৎপাদনও হয়েছে সবচেয়ে বেশি। তবুও বাজার নিয়ন্ত্রণে আবার আমদানির উদ্যোগ নিতে হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে কৃষিমন্ত্রী বলেছিলেন, বর্তমানে বছরে এক কোটি টনের বেশি আলু উৎপাদন হচ্ছে। আমাদের প্রয়োজন বছরে ৮০ লাখ টন, বাকি ২০ লাখ টন রপ্তানির সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, সম্প্রতি দেশের বাজারে আলুর দামটা বেশ বেড়ে গেছে।
“মানুষের কষ্ট লাঘব করার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় আলু আমদানির আনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেউ রপ্তানি করতে চাইলে রপ্তানি করব, পাশাপাশি আমদানি সুযোগও উন্মুক্ত থাকবে,” বলেন তিনি।