নাশকতার দুই মামালায় হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্টপক্ষের করা পৃথক দুটি আপিল আবেদনের শুনানী শেষে এ আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রোববার(২০জুন) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল বেঞ্চ কারান্তরীন বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব লায়ন আসলাম চৌধুরীকে ইতিপূর্বে হাইকোর্টের দেয়া অন্তর্বর্তিকালিন জামিন আদেশ স্থগিত করেন এবং শোন এ্যারেষ্ট দেখানো মামালাটির দ্রুত চার্জশীট প্রদানের নির্দেশ দেন।
এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরশেদ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার ড. মো. বশির উল্লাহ। অন্যদিকে আসলাম চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান হাসিব।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা গণমাধ্যমকে জানান, কারাবন্দি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব লায়ন আসলাম চৌধুরীকে রাজধানীর কোতোয়ালি ও শাহবাগ থানার দায়ের করা নাশকতার দুই মামলায় হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত রেখেছেন আপিল বিভাগ।
এই দুই মামলায় গত ৩০ মে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ তাকে জামিন দেন। এ জামিনাদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
৬ জুন আসলাম চৌধুরীকে হাইকোর্টে দেয়া জামিন ২০ জুন পর্যন্ত স্থগিত করে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছিল। সেই আবেদনের শুনানি করে জামিন স্থগিত রাখা হয়।
এর আগে গত (৩০ মে) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদনের শুনানিতে কোনো আদেশ না দিয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির উল্লাহ জানান, নাশকতার অভিযোগে রাজধানী ঢাকার কোতোয়ালি থানায় ২০১৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এবং একই বছরের ২২ এপ্রিল অপর মামলাটি শাহবাগ থানায় করা হয়। এই দুটি মামলায় কারাবন্দি আসলাম চৌধুরীকে আসামি হিসেবে চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি গ্রেফতার দেখানো হয়। ওই মামলায় তিনি হাইকোর্টে জামিন পান।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৬ মে রাজধানীর গুলশান থানায় আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করে পুলিশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর দণ্ডবিধির ১২০/বি (রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র), ১২১/এ (রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার ষড়যন্ত্র) এবং ১২৪/এ (রাষ্ট্রদ্রোহ) ধারায় মামলাটি করা হয়।
দণ্ডবিধির ১২০ (বি), ১২১ (৩) ও ১২৪ (এ) ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে মামলায় আসলামের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টের সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করে ‘বাংলাদেশ সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ’ আনা হয়।
ওই মামলায় নিম্ন আদালতে জামিন নামঞ্জুর হলে আসলাম চৌধুরী হাইকোর্টে আবেদন করেন। এরপর ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে রুল জারি করে আসলামকে কেন জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চান হাইকোর্ট। পরে ২০১৭ সালের ১৮ মে ওই রুলের শুনানি নিয়ে তার জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
২০১৬ সালের ১৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে আসলাম চৌধুরীকে গ্রেফতার করে ডিবি। পরদিন ফৌজদারি কার্যবিধির (সন্দেহজনক) ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
২৪ ঘণ্টা/রানা