Tag: আয়ারল্যান্ড

  • শান্তর অভিষেক সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের জয়

    শান্তর অভিষেক সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের জয়

    শেষ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৫ রান। হাতে ছিল ৩ উইকেট। মার্ক অ্যাডেয়ারের করা ওভারের প্রথম দুই বলে বড় শটে যাননি মুশফিক। কিন্তু গ্রাউন্ডে খেলতে গিয়ে গ্যাপ বের করতে পারেননি। তাতে দুই বলই হয় ডট। ফলে সমীকরণ দাঁড়ায় ৪ বলে ৫ রানের।

    তবে রোমাঞ্চের আরও কিছু তখনও বাকি ছিল! তৃতীয় ডেলিভারিটি ফুলটস করতে গিয়ে হাই নো করেন অ্যাডেয়ার, তাতে জোরে হাঁকালেও কোনো রান নিতে পারেননি মুশফিক। তবে নো বল হওয়ায় একটি রান পায় বাংলাদেশ। সমীকরণ দাঁড়ায় ৪ বলে ৪ রানের। পরের বলেই স্কুপ করে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন মুশি। ৩ বল হাতে রেখে ৩২০ রানের টার্গেট ছুঁয়ে ফেলে লাল সবুজরা।

    বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৫ ওভারের ম্যাচে ৪৪ ওভার ৩ বলে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১১৭ রান এসেছে শান্তর ব্যাট থেকে। মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৩৬ রানে। তাওহীদ হৃদয় করেন ৬৮ রান।

    এর আগে প্রথমে ব্যাট করে হ্যারি টেক্টরের সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৪৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৯ রান তোলে আয়ারল্যান্ড। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে আইরিশদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

    ৩২০ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তামিম ইকবাল। মার্ক অ্যাডায়ারের বলে লেগ স্কয়ারে ফ্লিক করতে গিয়ে তিনি শর্ট লেগে থাকা ফিল্ডারের তালুবন্দি হন। সাজঘরে ফেরার আগে অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ বলে ৭ রান। দলীয় ৯ রানেই প্রথম উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে টাইগাররা।

    তামিমের বিদায়ের পর দেখেশুনে খেলছিলেন লিটন। কিন্তু দশম ওভারে গ্রাহাম হিউমের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে অযথাই খোঁচা দিয়ে বসেন তিনি। আইরিশ উইকেটরক্ষক লরকান টাকার সেটি তালুবন্দি করতে মোটেও ভুল করেননি। ২১ বলে ২১ রান করে আউট হয়ে যান লিটন। ৪০ রান তুলতেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বেশ বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ, যেহেতু টার্গেট অনেক বড়।

    সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান। এই দুই বাঁহাতি ব্যাটারে ভর করে ১৬.২ ওভারে বাংলাদেশ শতরান পূর্ণ করে।

    সাকিব ২৬ রান করে বিদায় নিলে ভাঙে ৬১ রানের জুটি। এরপর তাওহীদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সমান ৪৯ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক স্পর্শ করেন দুজনই। এরপর হৃদয় ৬৮ রানে ফিরলে ১৩১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি ভেঙে যায়। সঙ্গীকে হারালেও রানের চাকা সচল রাখেন শান্ত। ৮৩ বলে নিজের প্রথম সাদা বলের সেঞ্চুরি তুলে নেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।

    ১১৭ রান করে শান্ত যখন প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতে। মিরাজ-তাইজুলদের সঙ্গে নিয়ে পাকা হাতে বাকি কাজটুকু সেরেছেন মুশফিকুর রহিম।

    ৩১৯ রানের বড় সংগ্রহ গড়া আয়ারল্যান্ডের শুরুটা অবশ্য খুব একটা ভালো হয়নি। ম্যাচের আগে বৃষ্টি হওয়ায় বাড়তি সুবিধা পেয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। ১ম ওভারে হাসান মাহমুদের ৫ম বলে পেইস আর বাউন্সে পরাস্ত হন পল স্টার্লিং। সিলভার ডাক খাওয়া এই ওপেনার ডিফেন্স করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। যদিও আম্পায়ার আউট দেননি। রিভিউতে নিশ্চিত হয় আউট।

    সপ্তম ওভারে আরও একবার হাসান ম্যাজিক। প্রথম বলটি ব্যাক অব লেন্থে করেছিলেন, পেছনের পায়ে ভর দিয়ে কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে মিরাজের হাতে ধরা পড়েন স্টিফেন ডোহেনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২১ বলে ১২ রান। ১৬ রান তুলতেই দুই ওপেনারকে হারায় আইরিশরা।

    এমন বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক অ্যান্ডু বার্লবির্নি ও হ্যারি টেক্টর। আইরিশ অধিনায়ক ৪২ রান করে ফিরে যান। এতে ৯৮ রানের তৃতীয় উইকেট জুটির সমাপ্তি হয়। এই জুটিতে ভালো ভিত পেয়ে যায় তারা। সেখানে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন টেক্টর। তুলে নেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ১১৩ বলে ১৪০ রানে থামেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। ৪২তম ওভারের শেষ বলে তাকে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন এবাদত হোসেন।

    টেক্টর ফিরলেও রানের গতি কমেনি আইরিশদের। ডকরেলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমান তালে রান তুলেছেন মার্ক অ্যাডায়ার। তিনি সাজঘরে ফেরার আগে ৮ বলে ২০ রানের ক্যামিও উপহার দিয়েছেন। আর এতেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ (রেকর্ড) ৩১৯ রানের সংগ্রহ পেয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। তাও ৪৫ ওভারে! টাইগারদের বিপক্ষে এর আগে তাদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল ২৯২ রান।

    বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট পেয়েছেন হাসান ও শরীফুল। এবাদত ও তাইজুল নেন একটি করে উইকেট।

     

     

  • বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড প্রথম ওয়ানডে

    বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড প্রথম ওয়ানডে

    আর ২১টি বল হলেই হতো। আইরিশ ইনিংসে ১৬.৩ ওভার খেলা হওয়ার পর বৃষ্টি হানা দেয় চেমসফোর্ডে। এমনই বৃষ্টি, তা আর থামেনি। ফলে অনেকটা সময় অপেক্ষা করার পর বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন আম্পায়াররা।

    নিয়ম অনুযায়ী, ওয়ানডেতে বৃষ্টি আইনে কোনো ম্যাচের ফল বের করতে হলে কমপক্ষে ২০ ওভার করে হতে হয় দুই দলের ইনিংসে। ৩.৩ ওভারের জন্য সেটা সম্পূর্ণ হয়নি।

    আইরিশদের সামনে লক্ষ্য ছিল ২৪৭ রানের। ম্যাচ বৃষ্টিতে বন্ধ হওয়ার আগে খুব একটা ভালো অবস্থানে ছিল না তারা। ৩ উইকেটে রান ছিল ৬৫।

    ২৭ রানেই পড়ে গিয়েছিল ২ উইকেট। এরপর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন স্টিফেন দোহেনি আর হ্যারি টেক্টর। ৬২ বল খেলে তারা যোগ করেন ৩৬ রান। অবশেষে এই জুটিটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম।

    ৩৯ বলে ১৭ রানের ধীর ইনিংস খেলা ওপেনার দোহেনিকে ফিরতি ক্যাচ বানান তাইজুল। বাঁহাতি এই স্পিনার উইকেট নেওয়ার পরের ওভারেই ঝমঝমিয়ে নামে বৃষ্টি।

    ছোট পুঁজি নিয়েও প্রতিপক্ষকে চেপে ধরেন বাংলাদেশি বোলারররা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে পল স্টারলিংকে (১৫) মেহেদি হাসান মিরাজের ক্যাচ বানান শরিফুল ইসলাম। পরের ওভারে আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবির্নিকে (৫) বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ।

    এর আগে ইংল্যান্ডের বিরূপ কন্ডিশনে শুরু থেকেই ধুঁকছিল বাংলাদেশ। ১৫ রানে হারায় ২ উইকেট। ১২২ রানে ৫টি। একটা সময় মনে হচ্ছিল, দুইশ করাই কঠিন হয়ে যাবে। তবে বিপদ কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াকু পুঁজি দাঁড় করিয়েছে টাইগাররা।

    নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ভর করে ৯ উইকেটে ২৪৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ। পুঁজিটা আরেকটু বড় হতে পারতো। কিন্তু লোয়ার অর্ডাররা শেষ দুই ওভারে মাত্র ৭ তুলতে পারেন।

    চেমসফোর্ডে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই আইরিশ বোলারদের তোপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। ১৫ রান তুলতেই হারিয়ে বসে ২ উইকেট। আউট হন লিটন দাস আর অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

    লিটলের করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন লিটন। সেটাও আবার গোল্ডেন ডাকে (১ বলে ০)। এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন লিটন। ৩ রানে বাংলাদেশ হারায় প্রথম উইকেট।

    তামিম শুরুটা ভালোই করেছিলেন, কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। চতুর্থ ওভারে মার্ক এডায়ারের বলে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে তামিম করেন ১৪।

    এরপর দুই বাঁহাতি সাকিব আল হাসান আর নাজমুল হোসেন শান্ত গড়েন প্রতিরোধ। সাকিব দলের বিপদের মুখে শান্তকে নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সেই আত্মবিশ্বাসে আঘাত হানলেন গ্রাহাম হুমে।

    অনেকটা এগিয়ে ক্রস খেলতে গিয়ে আইরিশ পেসারের বলে বোল্ড হয়ে যান সাকিব। ২১ বলে ৪ বাউন্ডারিতে তিনি তখন ২০ রানে। শান্তর সঙ্গে তার ৩৭ রানের জুটিটি ভাঙে এই আউটে। ৫২ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

    সেখান থেকে তাওহিদ হৃদয় আর শান্তর দারুণ একটি জুটি। ৬৩ বলে ৫০ রানের এই জুটিটি ভাঙে শান্তর আউটে। দলীয় ১০২ রানে ৪ উইকেট পড়ে টাইগারদের।

    চাপের মুখে শান্ত খেলেছেন ভালো একটি ইনিংস। কিন্তু ইনিংসটা শেষ হলো আক্ষেপ নিয়ে। মাত্র ৬ রানের জন্য যে ফিফটিটা করতে পারলেন না।

    ফিফটি পেলে ব্যাটিং করা সবশেষ ৬ ইনিংসে এটি হতো শান্তর চতুর্থ পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। ৬৬ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৪৪ করে কুর্তিস ক্যাম্ফারের শিকার হন শান্ত। ডিপ মিডউইকেট বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

    এরপর ফিরে যান আরেক সেট ব্যাটার হৃদয়। হুমের বল অফসাইডে অনেকটা বাইরে গিয়ে ব্যাটে লাগান এই তরুণ, উইকেটরক্ষকের হাতে চলে যায় বল। ৩১ বলে গড়া হৃদয়ের ২৭ রানের ইনিংসে ছিল ২টি বাউন্ডারির মার।

    ১২২ রানে ৫ শীর্ষ ব্যাটার সাজঘরে। এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে দারুণ একটি জুটি গড়ে দলকে অনেকটা এগিয়ে নেন মুশফিকুর রহিম আর মেহেদি হাসান মিরাজ।

    ৬৬ বলে তাদের ৬৫ রানের জুটি ভাঙে মিরাজ সুইপে ছক্কা হাঁকাতে গেলে। ডকরেলের শিকার হওয়ার আগে ৩৪ বলে ৪ চারের সাহায্যে ২৭ রান করেন এই অলরাউন্ডার।

    স্বীকৃত ব্যাটারদের মধ্যে মুশফিকুর রহিমই ছিলেন শেষ ভরসা। ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ দেখেশুনে খেলে লোয়ার অর্ডারকে নিয়েই ক্যারিয়ারের ৪৪তম ওয়ানডে ফিফটি তুলে নেন।

    তবে ব্যক্তিগত ৬১ রানেই থামতে হয়েছে ডানহাতি এই ব্যাটারকে। লিটলকে তুলে মারতে গিয়ে দোহেনির ক্যাচ হয়ে ফিরেছেন মুশফিক। ৭০ বলের ইনিংসে ৬টি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। এরপর তাইজুল ইসলাম ১৪ আর শরিফুল ইসলাম আউট হন ১৬ রান করে।

    আইরিশ বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল জশ লিটল। ৬১ রানে তিনি নেন ৩টি উইকেট।

  • শঙ্কার পর বাংলাদেশের স্বস্তির জয়

    শঙ্কার পর বাংলাদেশের স্বস্তির জয়

    আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে এই টেস্ট খেলার আগে মোট ১১টি দলের বিপক্ষে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞ ছিল বাংলাদেশের। আর এই ১১ দলের বিপক্ষেই সাদা পোশাকে প্রথম দেখায় বাংলাদেশের সঙ্গী ছিল হার। তবে এবার সেই ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিতে পেরেছে টাইগাররা। আইরিশদের বিপক্ষে লাল বলের ক্রিকেটে প্রথম দেখায় ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

    ১৩৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ২৭ ওভার ১ বল খেলে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। আর প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল ৩৬৯ রান। আয়ারল্যান্ড নিজেদের প্রথম ইনিংসে করেছিল ২১৪ রান, আর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯২ রানে থেমেছিল আইরিশরা।

    ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল বাংলাদেশ। শুধু খেলার ধরনে নয়, ব্যাটিং অর্ডারেও পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ টিম ম্যানেমজমেন্ট। প্রথম ইনিংসে ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের সঙ্গী ছিল নাজমুল হোসেন শান্ত, তবে আজ ইনিংসের গুরাপত্তন করেছেন লিটন দাস।

    টেস্টে সাধারণত লোয়ার মিডল অর্ডারেই ব্যাটিং করতে দেখা যায় লিটনকে, তবে আজ ওপেনিংয়ে এসে ব্যাটিং করেছেন টি-টোয়েন্টি মেজাজে। তার খেলা ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে কাউ কর্ণার দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে রানের খাতা খুলেন। পরের বলেই আবার পয়েন্টে দারুণ এক কাট শটে বাউন্ডারির দেখা পান এই ওপেনার।

    এমন দুর্দান্ত শুরুর পর সেটা ধরে রেখে ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছেন তিনি। আর তাতেই যেন বিপদ ডেকে এনেছেন লিটন। মার্ক অ্যাডায়ারের করা পঞ্চম ওভারের শেষ বলটি শট লেন্থে ছিল। এমন বলে লোভ সংবরণ করতে পারেননি এই ওপেনার, তাতে পুল করতে গিয়ে ঠিকমতো টাইমিং হয়নি, ফলে বল তার হ্যালমেট ছুঁয়ে স্টাম্পে আঘাত হানে। সাজঘরে ফেরার আগে ১৯ বলে ২৩ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।

    লিটন ফিরে গেলেও অপর প্রান্তে আগ্রাসী ছিলেন তামিম। এই অভিজ্ঞ ওপেনারও শুরু থেকেই হাত খুলে শট খেলেছেন। তিনে খেলতে নেমে একই ভঙ্গিতে ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছেন শান্তও। কিন্তু সুবিধা করতে পারেননি এই ব্যাটার। ৪ রান করে স্লিপে ধরা পড়েন তিনি। তার বিদায়ে দলীয় হাঁফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করার আগেই ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

    এরপর লাঞ্চ বিরতির আগ পর্যন্ত বাকিটা সময় ভালো ভাবেই পার করেছেন মুশফিক এবং তামিম। বিশেষ করে মুশফিক দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৪ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন তামিম ইকবাল। আজ দেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে সেই এলিট ক্লাবে যোগ দিলেন মুশফিকুর রহিম।

    লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না তামিম। ইনিংসের ২১তম ওভারে হোয়াইটের করা শট বলে পুল করতে গিয়ে মিডউইকেটে ধরা পড়েন তামিম। এই ওপেনার সাজঘরে ফেরার আগে নামের পাশে যোগ করেছেন ৬৫ বলে ৩১ রান।

    এরপর বাকি কাজটুকু মুমিনুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে সেরেছেন মুশফিক। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান এই ইনিংসেও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। তুলে নিয়েছেন ব্যাক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি। চতুর্থ উইকেটে এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে সহজেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

    এর আগে গত দিনের ৮ উইকেটে ২৮৬ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড। সকাল বেলা উইকেটে পেসারদের জন্য যে বাড়তি সুবিধা থাকে সেটা পুরোপুরি আদায় করেছেন আজ এবাদত হোসেন। এদিন নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই উইকেটের দেখা পেয়েছেন এই পেসার।

    ইনিংস হার এড়িয়ে আইরিশদের ম্যাচে ফেরানো অ্যান্ডু ম্যাকব্রাইন এবাদতের পোলার লেন্থের ডেলিভারীতে রীতিমতো চোখে সর্ষে ফুল দেখেছেন। ইনিংসের ১১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তার স্টাম্প উপড়ে দিয়েছেন এবাদত। সাজঘরে ফেরার আগে গত দিনের রানের সঙ্গে যোগ করতে পেরেছেন কেবল ১ রান। শেষ পর্যন্ত ৮ চার আর এক ছক্কায় ১৫৬ বল খেলে ৭২ রান করেছেন তিনি।

    এর তিন ওভার পর আবারও এবাদতের আক্রমণ। এবার এই পেসারের শিকার গ্রাহাম হিউম। ১১৬তম ওভারের শেষ বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে গুড লেন্থে রেখেছিলেন এবাদত, সেখানে অফ সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানা ছুয়ে বল চলে উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে। হিউমকে ১৪ রানে ফিরিয়ে আইরিশদের কফিনে শেষ পেরেকটা মারেন এই পেসার। তাতে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯২ রানে অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড।

    সংক্ষিপ্ত স্কোর:

    আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২১৪

    বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৬৯

    আয়ারল্যান্ড ২য় ইনিংস: (আগের দিন ২৮৬/৮) ১১৬ ওভারে ২৯২ (ম্যাকব্রাইন ৭২, হিউম ১৪, হোয়াইট ০*; সাকিব ১৩-৪-২৬-২, তাইজুল ৪২-১৬-৯০-৪, মিরাজ ৩০-৮-৫৮-০, ইবাদত ১৫-৩-৩৭-৩, শরিফুল ৮-১-৩৫-১, খালেদ ৭-২-৩৮-০, মুমিনুল ১-০-২-০)।

    বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৩৮) ২৭.১ ওভারে ১৩৮/৩ (তামিম ৩১, লিটন ২৩, শান্ত ৪, মুশফিক ৫১*, মুমিনুল ২০*; অ্যাডায়ার ৬-০-৩০-১, ম্যাকব্রাইন ১৩.১-০-৫২-১, হোয়াইট ৭-০-৪৩-০, টেক্টর ১-০-৫-০)।

    ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী।

    ম্যান অব দা ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম।

  • স্টারলিংয়ের ব্যাটে হোয়াইটওয়াশ এড়াল আয়ারল্যান্ড

    স্টারলিংয়ের ব্যাটে হোয়াইটওয়াশ এড়াল আয়ারল্যান্ড

    বাংলাদেশ সফরের শুরুতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হারে আয়ারল্যান্ড। এরপর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই খেলায় ৭৭ ও ২২ রানে হেরে সিরিজ হাতছাড়া করে সফরকারীরা।

    শুক্রবার হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়েও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে আইরিশরা।

    বাংলাদেশকে ১৯.২ ওভারে ১২৪ রানে অলআউট করে সহজ টার্গেট তাড়ায় ৩৬ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটের জয় পায়। এই জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-১ এ ভাগ বসাল সফরকারীরা।

    আয়ারল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য ছিল মাত্র ১২৫ রানের। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় আইরিশরা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ওপেনার রস এডায়ারকে (৯ বলে ৭) বোল্ড করেন তাসকিন আহমেদ। এরপর লরকান টাকারকে (৪) উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানান শরিফুল ইসলাম। ওই পর্যন্তই।

    অধিনায়ক পল স্টারলিং আর সুযোগ দেননি টাইগার বোলারদের। ঝোড়ো গতিতে ৩১ বলে ফিফটি পূরণ করেন। অভিষিক্ত রিশাদের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে তিনি যখন ফিরেছেন, আইরিশদের ৪৭ বলে দরকার মাত্র ১৬ রান।

    ৪১ বলে ৭৭ রানের ঝোড়ো ইনিংসটি স্টারলিং সাজিয়েছিলেন ১০ চার আর ৪ ছক্কায়। হ্যারি টেক্টর ১৪ আর কুর্তিস ক্যাম্ফার ১৬ রান নিয়ে বিজয়ীর বেশেই মাঠ ছাড়েন।

    এর আগে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে একশর আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল বাংলাদেশ। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বলতে গেলে একাই লড়াই করেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী।

    তার লড়াকু হাফসেঞ্চুরিতে ভর করে আইরিশদের বিপক্ষে টেনেটুনে সম্মানজনক পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ। ৪ বল বাকি থাকতে অলআউট হয় ১২৪ রানে।

    আগের দুই ম্যাচে টস হারলেও প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচে এসে টস জিতে নিজেরাই বেছে নিয়েছে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত। কিন্তু এবার শুরু থেকেই মহাবিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা।

    ৬১ রানের মধ্যে ৭ ব্যাটার ফেরেন সাজঘরে। অষ্টম উইকেটে নাসুম আহমেদকে নিয়ে ৩৩ বলে ৩৪ রানের একটি জুটি গড়ে দলকে সেই বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করেন শামীম। ৪০ বলে ফিফটি করে এই শামীমই শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হয়েছেন। ৪২ বলে গড়া তার ৫১ রানের ইনিংসে ৫টি চারের সঙ্গে ছিল ২টি ছক্কার মার।

    আগের দুই ম্যাচে বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন দাস এবং রনি তালুকদার তাণ্ডব চালিয়েছিলেন আইরিশ বোলারদের ওপর। দ্বিতীয় ম্যাচে তো রীতিমত ১২৪ রানের রেকর্ড জুটি গড়েছিলেন তারা। এ দুজনের উড়ন্ত সূচনার পর বাংলাদেশের স্কোর ২০০ পার হয়ে গিয়েছিলো দুই ম্যাচেই।
    কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে এসে লিটন, রনি এবং শান্ত- তিনজনই ব্যর্থতার পরিচয় দিলেন। ব্যাট করত নেমেই যথারীতি উড়ন্ত সূচনারই চেষ্টা করেছিলেন লিটন। একটি বাউন্ডারিও মেরেছিলেন তিনি। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই মার্ক অ্যাডেয়ারের বলে জর্জ ডকরেলের হাতে ধরা পড়েন তিনি। দলীয় রান তখন ৯।

    এরপর রনি তালুকদারও তার স্বভাবসুলভ ঝড় তোলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই সেই ঝড় থামিয়ে দিলেন কুর্তিস ক্যাম্ফার। ১০ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৪ রান করেন রনি। দলীয় রান তখন ২৪। তার আগেই ১৮ রানের মাথায় ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। ৮ বল খেলে ধুঁকতে থাকা শান্ত আউট হন কেবল ৪ রান করে।

    ব্যাটিং বিপর্যয় চলমান রেখে দ্রুত আউট হয়ে যান সাকিব আল হাসান এবং তাওহিদ হৃদয়ও। দলকে ৪১ রানের মাথায় বসিয়ে আউট হন দুজনই। ৬ বলে সাকিব ৬ রান করেন। সম্ভাবনাময়ী তরুণ তাওহিদ হৃদয়ের ওপর আস্থা ছিল এই বিপর্যয়ে হাল ধরবেন। কিন্তু তিনিও পারলেন না। দলীয় ৪১ রানের মাথায় আউট হন তিনিও। ১০ বলে একটি করে চার-ছক্কায় হৃদয় করেন ১২ রান।

    সেখান থেকে অভিষিক্ত রিশাদ হোসেন ও শামীম পাটোয়ারী চেষ্টা করেন হাল ধরার। ২০ রানের জুটি গড়ে ৬১ রানের মাথায় আউট হয়ে যান রিশাদ। ৭ বলে ৮ রান করেন তিনি। তাসকিন আহমেদ আউট হন কোনো রান না করেই।
    আইরিশ পেসার মার্ক এডায়ার ২৫ রানে নেন ৩টি উইকেট। অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু হামপ্রিস ১০ রান দিয়ে শিকার করেন ২টি উইকেট।

  • সাকিব-লিটনে আইরিশদের গুঁড়িয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

    সাকিব-লিটনে আইরিশদের গুঁড়িয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

    বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করার পর এবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাওয়া দাপুটে জয়ে টাইগাররা এক ম্যাচ হাতে রেখেই নিশ্চিত করেছে সিরিজ জয়। লিটন দাসের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের দিনে সাকিব আল হাসান বল হাতে শিকার করেছেন ৫ উইকেট।

    চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমেই বাংলাদেশ মারমুখো ব্যাটিং শুরু করে। দুই ওপেনার লিটন ও রনি গড়েন ১২৪ রানের জুটি, যা বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপ। ৬ ওভারে বাংলাদেশ দল জড়ো করে ৮৩ রান। পাওয়ারপ্লে ছিল ৫ ওভার, তাই রেকর্ড বইয়ে আগের ম্যাচের ৮১ রানই অক্ষুণ্ণ থাকছে। তবে লিটন ও রনি ঠিকই তুলে নেন দ্রুততম দলীয় শতক। মাত্র ৪৩ বলে ১০০ রান স্পর্শ করে বাংলাদেশ।

    ১৮ বলে অর্ধশতক হাঁকিয়ে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম অর্ধশতকের কীর্তি গড়েন লিটন। পা বাড়াচ্ছিলেন শতকের দিকেও। তবে ৪১ বলে ৮৩ রান করে থামে তার ১০টি চার ও ৩টি ছক্কার ইনিংস। রনি অল্পের জন্য পঞ্চাশের মাইলফলকে পা রাখতে পারেননি। ২৩ বলে ৪৪ রান করেন তিনটি চার ও দুটি ছক্কায়। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও তৌহিদ হৃদয়। শেষ ওভারে বিদায় নেওয়ার আগে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩ বলে ২৪ রান করেন হৃদয়। তবে সাকিব শেষপর্যন্ত অপরাজিতই ছিলেন। ২৪ বলের মোকাবেলায় তিনটি চার ও দুটি ছক্কায় ৩৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২০২ রান।

    জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নামা আয়ারল্যান্ড প্রথম বলেই উইকেট হারায়। তাসকিন আহমেদের শিকার হয়ে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান পল স্টার্লিং। এরপর শুরু সাকিবের ভেলকি। একে একে সাজঘরে ফেরান লোরকান টাকার, রস এডায়ার, গ্যারেথ ডিলানি, জর্জ ডকরেল ও হ্যারি টেক্টরকে। ৪ ওভারে ২২ রানের খরচায় নামের পাশে ৫ উইকেট লেখার দিনে টিম সাউদিকে ছাড়িয়ে আবারও বনে যান আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি।

    শেষপর্যন্ত আইরিশরা নির্ধারিত ১৭ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৫ রান জড়ো করতে সমর্থ হয়। স্রোতের বিপরীতে হেঁটে ৩০ বলে ৫০ রান করেন কার্টিস ক্যামফার। এছাড়া হ্যারি টেক্টর ১৬ বলে ২২ ও গ্রাহাম হিউম ১৭ বলে অপরাজিত ২০ রানের ইনিংস খেলেন। সাকিবের ৫ উইকেটের দিনে তাসকিন আহমেদ তিনটি ও হাসান মাহমুদ একটি উইকেট শিকার করেন। ৭৭ রানের জয়ে বাংলাদেশ নিশ্চিত করেছে সিরিজ জয়।

  • তাসকিনের বিধ্বংসী বোলিংয়ে আয়ারল্যান্ডকে হারালো বাংলাদেশ

    তাসকিনের বিধ্বংসী বোলিংয়ে আয়ারল্যান্ডকে হারালো বাংলাদেশ

    তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে বৃষ্টি আইনে আয়ারল্যান্ডকে ২২ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ১৯ ওভার ২ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। এরপর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হলে আয়ারল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৮ ওভারে ১০৪ রান। শেষ পর্যন্ত ৮ ওভারে ৮১ রান তুলতে সক্ষম হয় আয়ারল্যান্ড।

    ১০৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে আয়ারল্যান্ডকে ঝড়ো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার পল স্টার্লিং ও রস আডায়ার। উদ্বোধনী জুটিতে ৩২ রান সংগ্রহ করেন এই দুই ব্যাটার। এরপর দলীয় ৩২ রানে রস আডায়ারকে আউট করেন পেসার হাসান মাহমুদ। ১০ বলে ১৩ রান করে আউট হন রস আডায়ার।

    এরপর ইনিংসের চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে তিন আইরিশ ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন আহমেদ। ৮ বলে ১৭ রান করে পল স্টার্লিং, ২ বলে ১ রান করে লোরকান টাকার ও রানের খাতা না খুলেই সাজঘরে ফিরে যান জর্জ ডকরেল।

    এরপর হ্যারি টেক্টর ও গ্যারেথ ডেলানি মিলে ব্যাট করতে থাকেন। শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য ১২ বলে ৩৯ রান প্রয়োজন হয় আয়ারল্যান্ডের। সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন মুস্তাফিজ। এই ওভারে ৭ রান দেন মুস্তাফিজ।

    শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৩২ রান প্রয়োজন হয় আয়ারল্যান্ডের। শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে ওভারের প্রথম বলেই হ্যারি টেক্টরকে আউট করেন তাসকিন। শেষ পর্যন্ত ৮ ওভারে ৮১ রান তুলতে সক্ষম হয় আয়ারল্যান্ড। ফলে ২২ রানের জয়ে সিরিজ শুরু করলো বাংলাদেশ।

  • রেকর্ড জয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

    রেকর্ড জয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

    সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে সফররত আয়ারল্যান্ডকে রীতিমতো উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ। ১৮৩ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতে গড়েছে রেকর্ডও। ওয়ানডেতে এর চেয়ে বেশি রানে জেতেনি টাইগাররা। ম্যাচের শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ৩৩৮ রান তুলে বাংলাদেশ। জবাবে মাত্র ১৫৫ রানে গুটিয়ে যায় আইরিশদের ইনিংস।

    রান তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনারের কল্যাণে ভালো সূচনা পায় সফররত আয়ারল্যান্ড। অতপর সেই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। আর নিজের টানা দুই ওভারে দুই ব্যাটারকে ফেরালেন ইবাদত। এর মাঝেই নিজের প্রথম উইকেট তুলে নেন তাসকিনও। স্টেফেন দোহেনি ৩৪, পল স্টার্লিং ২২, হ্যারি টেক্টর ৩ ও বালবির্নি ৫ রান করেন।

    এরপর নাসুমের ঘূর্ণিতে নাকাল হয়ে পড়ে আইরিশরা। হারাতে থাকে একের পর এক উইকেট। লরকান টাকার ৬, কুর্তিস ক্যাম্ফের ১৬, গ্যারেথ ডেলানি ১ ও শূন্যরানে অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন, ১৩ রানে মার্ক আদায়ের ও ৪৫ রানে জর্জ ডকরেল আউট হন। আর ২ রানে অপরাজিত থাকেন গ্রাহাম হুম।

    বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন ইবাদত হোসেন। তিনটি উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। এছাড়া তাসকিন আহমেদ দুটি ও সাকিব আল হাসান একটি উইকেট নেন।

    এর আগের ম্যাচের শুরুতে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান আইরিশ দলনেতা অ্যান্ডি বালবির্নি। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই সাজঘরে ফেরেন দলনেতা ও ওপেনার তামিম ইকবাল খান। তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৩ রান। আরেক ওপেনার লিটন কুমার দাস করেন ২৩ রান।

    তৃতীয় উইকেট জুটিতে দারুণ ব্যাট করে যাচ্ছিলেন সাকিব-শান্ত। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শান্ত। ম্যাকব্রিনের করা বলে বোল্ড হন ব্যক্তিগত ২০ রানে।

    পরের উইকেটে খেলতে নামেন অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়। তাকে নিয়ে আইরিশ বোলারদের রীতিমতো শাসন করে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। এ সময় দুজন মিলে গড়েন ১৩৫ রানের জুটি। তাতেই বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় বাংলাদেশ। দুজনেই ফিফটির দেখা পান। সাকিব চলে যান সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে। কিন্তু গ্রাহাম হুমের করা বলে ৯৩ রানে ফেরেন সাকিব।

    এরপর মুশফিক-হৃদয় মিলে ক্রিজে ঝড় তোলেন। মাত্র ৪৯ বলে দুজনে গড়েন ৮০ রানের জুটি। হৃদয় সেঞ্চুরির পথে ও মুশফিক ছুটছিলেন অর্ধশতকের পথে। কিন্তু কেউ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি। গ্রাহাম হুমের এক ওভারে ফিরেছেন দুজনই। মাত্র ২৬ বলে ৪৪ রানে মুশি ও ৮৫ বলে ৯২ রানে আউট হন হৃদয়। এরপর তাসকিন ১১, ইয়াসির ১৭, নাসুম ১১ ও মোস্তাফিজ ১ রানে করেন।

  • আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে সেমির পথ গুছিয়ে নিল নিউজিল্যান্ড

    আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে সেমির পথ গুছিয়ে নিল নিউজিল্যান্ড

    আয়ারল্যান্ড পেসার জসুয়া লিটনের হ্যাটট্রিক এবং ওপেনিং জুটিতে তাদের দারুণ শুরুর পরও বড় জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। সুপার টুয়েলভে নিজেদের শেষ ম্যাচে ৩৫ রানে জিতেছে। সেমিফাইনালে যাওয়ার পথ গুছিয়ে নিয়েছে। যেটুকু পথ বাকি আছে তা অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তান ম্যাচেই পূর্ণ হয়ে যেতে পারে।

    পাঁচ ম্যাচ থেকে নিউজিল্যান্ড তিন জয় ও এক টাইয়ে সাত পয়েন্ট পেয়েছে। তবে তাদের নেট রাট রেট + ২.১১। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের পয়েন্ট পাঁচ করে। দুই দলেরই সাত পয়েন্ট হওয়ার জোর সম্ভাবনা আছে। অজিদের নেট রান রেট -০.৩০৪ এবং ইংল্যান্ডের + ০.৫৪৭। নেট রান রেট দুই দলের পক্ষেই কিউইদের ছাড়িয়ে যাওয়া খুবই কঠিন।

    শুক্রবার অ্যাডিলেডের ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৮৫ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। দুই ওপেনার ফিন অ্যালেন ও ডেভন কনওয়ে ৫২ রানের জুটি দেন। অ্যালেন ফিরে যান ১৮ বলে পাঁচ চার ও এক ছক্কায় ৩২ রানের ইনিংস খেলে। ডেভন কনওয়ে আউট হন ৩৩ বলে ২৮ রান করে।

    রান পেয়েছেন নিউজিল্যান্ডের পরের দুই ব্যাটারও। তিনে নামা অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ৩৫ বলে পাঁচটি চার ও তিন ছক্কায় ৬১ রানের ইনিংস খেলেছেন। এছাড়া গ্লেন ফিলিপস ৯ বলে ১৭ রান করেছেন। ডার্লি মিশেল ২১ বলে ৩১ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন।

    জবাবে আইরিশরা ওপেনিং জুটিতে উইকেট না হারিয়ে ৮.১ ওভারে তোলে ৬৮ রান। পল র্স্টালিং ২৭ বলে ৩৭ রান করেন। আন্দ্রে বালব্রেইনি ২৫ বলে করেন ৩০ রান। তারা ফিরতেই নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে আয়ারল্যান্ড। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে করতে পারে ১৫০ রান। লোয়ারে ডকরেল ১৫ বলে ২৩ রান যোগ করেন।

    আয়ারল্যান্ডের হয়ে জসুয়া লিটিল দারুণ বোলিং করেন। ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে তিনি হ্যাটট্রিকসহ নেন ৪ উইকেট। এছাড়া গ্যারেথ ডিলানি নেন দুই উইকেট। নিউজিল্যান্ডের হয়ে লকি ফার্গুসন ৪ ওভারে ২২ রান খরচ করে ৩ উইকেট নেন। টিম সাউদি, মিশেল সাটনার ও ইশ শোধি নেন দুটি করে উইকেট।

    ২৪ঘণ্টা/এনআর

  • বৃষ্টি জিতিয়ে দিল আয়ারল্যান্ডকে

    বৃষ্টি জিতিয়ে দিল আয়ারল্যান্ডকে

    অস্ট্রেলিয়ায় চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়েছে আয়ার‌ল্যান্ডআয়ার‌ল্যান্ড। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) বৃষ্টি আইনে ৫ রানে হেরেছে ইংলিশরা।

    আয়ারল্যান্ডের দেওয়া ১৫৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৪ দশমিক ৩ ওভারে ৫ উইকেটে ১০৫ রানে তুলে ইংল্যান্ড। এরপরই নামে বৃষ্টি। ম্যাচটি পুনরায় শুরু করা সম্ভব হয়নি, তাই বৃষ্টি আইন ডার্কওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ৫ রানে জয় পায় আইরিশরা।

    রান তাড়া করতে নেমেই চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। শূন্য রানে ফিরেন অধিনায়ক জস বাটলার। সুবিধা করতে পারেননি অপর ওপেনার অ্যালেক্স হেলসও (৭)। বেন স্টোকস ৬ রান করে ফিরে গেলে ২৯ রানেই ৩ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। চতুর্থ উইকেটে ৩৮ রানের জুটি গড়ে দলকে বিপর্যয় থেকে বাঁচানোর চেষ্টার করেন ডেভিড মালান ও হ্যারি ব্রুক।

    ২১ বলে ১৮ রান করা ব্রুক আউট হন দলীয় ৬৭ রানে। কিছুক্ষণ পর ফিরেন মালানও, ৩৭ বলে ৩৫ রান করতে পেরেছেন তিনি। ১৪ দশমিক ৩ ওভারে ৫ উইকেটে ১০৫ রানে পৌঁছার পরেই নামে বৃষ্টি। মঈন আলী ১২ বলে ২৪ ও লিয়াম লিভিংস্টোন ২ বলে ১ রানে অপরাজিত ছিলেন।

    আইরিশদের পক্ষে ৩ ওভারে ১৬ রানে ২টি উইকেট নিয়েছেন জশুয়া লিটল। একটি করে শিকার ব্যারি ম্যাকার্থি, ফিয়ন হ্যান্ড ও জর্জ ডকরেলের। এর আগে, ১৫৭ রানে অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড। অধিনায়ক আন্দ্রে বালবিরনি ৪৭ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলেন। লরকান টাকারের ব্যাট থেকে আসে ৩৪ রান।

    এই জয়ের ফলে সুপার টুয়েলভের গ্রুপ ‘১’ এর পয়েন্ট তালিকায় চারে অবস্থান করছে আয়ারল্যান্ড। সমান পয়েন্ট নিয়ে তিনে ইংলিশরা। তবে নেট রানরেটে সবার চেয়ে এগিয়ে থাকায় ২ পয়েন্ট নিয়েই শীর্ষে নিউজিল্যান্ড। দুই রয়েছে শ্রীলঙ্কা।